Old/New Testament
7 ভোরবেলা যিরুব্বাল (গিদিয়োন) তার লোকজন নিয়ে হারোদ ঝর্ণার কাছে শিবির স্থাপন করল। মিদিয়োনের লোকরা মোরি পর্বতের নীচে উপত্যকায় তাঁবু খাটাল। জায়গাটা ছিল গিদিয়োনদের শিবিরের উত্তর দিকে।
2 তখন প্রভু গিদিয়োনকে বললেন, “মিদিয়নের লোকদের হারাবার জন্য আমি তোমার লোকদের সাহায্য করতে যাচ্ছি। কিন্তু এই কাজের পক্ষে তোমার লোকজন অনেক বেশী। ইস্রায়েলীয়রাও আমাকে ভুলে থাকুক, আর বড়াই করে বলুক যে, তারা নিজেরাই নিজেদের বাঁচিয়েছে—তা আমি চাই না। 3 সেই জন্য এখন তাদের কাছে জানিয়ে দাও, ‘যে ভীতু সে গিলিয়দ পর্বত থেকে চলে যেতে পারে। সে বাড়ি ফিরে যেতে পারে।’”
তখন 22,000 লোক গিদিয়োনকে ফেলে রেখে ঘরে ফিরে গিয়েছিল। 10,000 লোক অবশ্য তখনও থেকে গেল।
4 তারপর প্রভু গিদিয়োনকে বললেন, “তবুও তোমার সঙ্গে অনেক বেশী লোক রয়েছে। তাদের জলের দিকে নিয়ে যাও, তোমার হয়ে আমি সেখানে তাদের পরীক্ষা করব। আমি যখন বলব, ‘এই লোকটা তোমার সঙ্গে যাবে,’ তখন সে যাবে। আবার যখন বলব, ‘ঐ লোকটা যাবে না,’ তখন সে যাবে না।”
5 সেই মতো গিদিয়োন লোকগুলোকে জলের দিকে নিয়ে গেলেন। সেই জলের কাছে প্রভু গিদিয়োনকে বললেন, “এইভাবে লোকগুলোকে আলাদা আলাদা করো: যারা কুকুরের মতো জিভ দিয়ে চুকচুক্ করে জল পান করবে তারা হবে এক গোষ্ঠী, আর যারা মাথা নীচু করে জল পান করবে তারা হবে অন্য একটি গোষ্ঠী।”
6 তিনশো জন লোক হাত দিয়ে মুখের কাছে জল নিয়ে কুকুরের মত চুকচুক্ করে জল পান করল। অন্যান্যরা পান করল মাথা হেঁট করে। 7 প্রভু গিদিয়োনকে বললেন, “মিদিয়নীয়দের পরাজিত করতে আমি ঐ 300 জন লোককে কাজে লাগাবো। যারা কুকুরের মত চুক্চুক্ করে জল পান করেছিল আমি তাদের দ্বারাই ইস্রায়েলকে রক্ষা করব। বাকি লোকরা বাড়ি চলে যাক।”
8 সেই মতো গিদিয়োন 300 জন লোককে নিজের কাছে রেখে বাদ বাকি ইস্রায়েলীয়দের বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন। সেই 300 জন লোক যারা বাড়ি ফিরে যাচ্ছিল সেই সব লোকদের সরবরাহকৃত জিনিসপত্র এবং শিঙাগুলো রেখে দিল।
মিদিয়নের লোকরা গিদিয়োনের তাঁবুর নীচে উপত্যকায় তাঁবু গেড়েছিল। 9 রাত্রে প্রভু গিদিয়োনের সঙ্গে কথা বললেন। তিনি বললেন, “ওঠো! আমি তোমাকে মিদিয়ন সৈন্যবাহিনীকে পরাজিত করতে দেবো। তাদের তাঁবুর দিকে নেমে যাও। 10 যদি একা যেতে ভয় পাও তাহলে তোমার ভৃত্য ফুরাকে সঙ্গে নাও। 11 মিদিয়নদের শিবিরের লোকরা কি সব বলছে তোমরা তা শুনবে। এসব শোনার পর তোমরা আক্রমণ করতে আর ভয় পাবে না।”
তাই গিদিয়োন আর তার ভৃত্য ফুরা শত্রুপক্ষের শিবিরের একেবারে সীমানার দিকে চলে গেল। 12 মিদিয়ন, অমালেক আর পূর্ব দেশের লোকরা সেই উপত্যকায় তাঁবু ফেলল। এত লোকজন যে দেখে মনে হত পঙ্গপালের ঝাঁক। আর তাদের এত উট যে মনে হত তারা যেন সমুদ্রের ধারের অসংখ্য বালির কণা।
13 গিদিয়োন শত্রু শিবিরে এলেন। তিনি শুনতে পেলেন একজন ব্যক্তি তার বন্ধুকে একটা স্বপ্নের কথা বলছে। লোকটা বলছে, “আমি স্বপ্ন দেখলাম একটা গোল রুটি মিদিয়নদের তাঁবুর ওপর নেমে এসে এত জোরে ধাক্কা দিল যে তাঁবু উল্টে গিয়ে ধুলোয লুটিয়ে গেল।”
14 বন্ধুটি স্বপ্নের অর্থ বুঝতে পারল। সে বলল, “তোমার স্বপ্নের একটিই অর্থ হয়। স্বপ্নটি হচ্ছে ইস্রায়েলের সেই পুরুষটিকে নিয়ে। তার নাম যোয়াশের পুত্র গিদিয়োন। অর্থাৎ মিদিয়নের সৈন্যবাহিনীকে পরাজিত করার জন্য ঈশ্বর গিদিয়োনকে পাঠিয়েছেন।”
15 গিদিয়োন তাদের স্বপ্ন নিয়ে কথাবার্তা শুনলে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে মাথা নুইয়ে প্রণাম জানালেন। তারপর ইস্রায়েলীয়দের তাঁবুতে ফিরে গিয়ে তাদের বললেন, “ওঠ! মিদিয়নদের পরাজিত করতে প্রভু আমাদের সাহায্য করবেন।” 16 গিদিয়োন 300 জন লোককে তিনটি দলে ভাগ করে দিলেন। প্রত্যেককে একটি করে শিঙা আর খালি ঘট দিলেন। ঘটের মধ্যে ছিল একটা করে জ্বলন্ত মশাল। 17 তারপর গিদিয়োন বললেন, “তোমরা আমাকে লক্ষ্য করবে। আমি যা করি তোমরা তাই করবে। তোমরা আমার পেছনে পেছনে শত্রু শিবিরের সীমানার কাছে চলে আসবে। ওখানে গিয়ে আমি যা করব তোমরাও ঠিক তাই করবে। 18 শত্রু শিবিরগুলো তোমরা ঘিরে ফেলবে। আমার সঙ্গে যারা আছে তাদের নিয়ে আমরা শিঙা বাজাব। তখন তোমরাও শিঙা বাজাবে। তারপর চিৎকার করে বলে উঠবে: ‘জয় প্রভুর জন্য ও গিদিয়োনের জন্য!’”
19 গিদিয়োন 100 জন লোক নিয়ে শত্রু শিবিরের সীমানায় পৌঁছলেন। ওখানে প্রহরীদের পালা শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গেই তারা এসে পড়ল। রাত্রির মাঝামাঝি পাহারাদারির সময় তারা হানা দিল। গিদিয়োন ও তাঁর লোকরা শিঙা বাজাবার পর ঘটগুলো ভেঙ্গে ফেলল। 20 তারপর গিদিয়োনের তিনটি বাহিনীর সকলেই শিঙা বাজিয়ে দিয়ে ঘটগুলি ভেঙে দিলো। লোকরা বাঁ হাতে মশালগুলো আর ডান হাতে শিঙা ধরেছিল। শিঙা বাজাতে বাজাতে তারা ধ্বনি দিল: “প্রভুর তরবারি, গিদিয়োনের তরবারি!”
21 গিদিয়োনের লোকরা যেখানে ছিল, সেখানেই রইল। কিন্তু তাঁবুর ভেতরে মিদিয়নের লোকরা চিৎকার করতে করতে পালাতে লাগল। 22 যখন 300 জন লোক শিঙা বাজাল, প্রভু মিদিয়নের লোকদের পরস্পরকে তরবারি দিয়ে হত্যা করালেন। শত্রু সৈন্যরা বৈৎ-শিট্ট নগরের দিকে পালাতে লাগল। বৈৎ-শিট্টা সরোরা নগরের কাছাকাছি ছিল। লোকগুলো দৌড়াতে দৌড়াতে একেবারে টব্বতের শহরের কাছে আবেল-মহোলা শহরের সীমানা পর্যন্ত চলে এল।
23 তারপর নপ্তালি, আশের এবং মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর সবাইকে বলা হল মিদিয়নদের হঠিয়ে দেবার জন্যে। 24 ইফ্রয়িমের পাহাড়ে দেশগুলোয় গিদিয়োন দূত পাঠিয়ে দিলেন। দূতরা বলল, “তোমরা নেমে এসো। মিদিয়নদের আক্রমণ করো। বৈৎ-বারা আর যর্দন নদী পর্যন্ত যে নদী চলে গেছে তোমরা তার দখল নাও। মিদিয়নরা সেখানে যাবার আগেই এই কাজটা তোমরা করে নাও।”
এইভাবে ইফ্রয়িম পরিবারগোষ্ঠীর সবাইকে দূতরা আহ্বান করল। যে নদী বৈৎ-বারা পর্যন্ত বয়ে গেছে সেই নদী তারা অধিকার করল। 25 ইফ্রয়িমের লোকরা দুজন মিদিয়ন নেতাকে ধরল। এদের নাম ওরেব আর সেব। তারা ওরেবকে “ওরেবের শিলা” নামে এক জায়গাতে হত্যা করল। সেবকে হত্যা করল সেবের দ্রাক্ষা মাড়াই ক্ষেত্রে। ইফ্রয়িমের লোকরা মিদিয়নদের তাড়িয়ে দেবার কাজ চালিয়ে গেল। প্রথমে তারা ওরেব আর সেবের মস্তক কেটে নিয়ে গিদিয়োনের কাছে গেল। যেখান থেকে লোকরা যর্দন নদী পার হয় গিদিয়োন সেখানেই ছিলেন।
8 ইফ্রয়িমের লোকরা গিদিয়োনের উপর রেগে গেল। গিদিয়োনকে দেখতে পেয়ে তারা জিজ্ঞাসা করল, “আমাদের সঙ্গে কেন তুমি এমন ব্যবহার করলে? মিদিয়নদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাবার সময় কেন তুমি আমাদের ডাকো নি?”
2 গিদিয়োন বললেন, “দেখো তোমরা যা করেছ আমি তা করতে পারি নি। আমার অবীয়েষরের গোষ্ঠী যত ফসল তুলেছে, তোমরা ইফ্রয়িমরা তার চেয়ে অনেক বেশী ফসল তুলেছ। ফসল তোলার সময় ক্ষেতে তোমরা যত দ্রাক্ষা ফেলে রেখে যাও, আমার লোকরা তার চেয়ে কম কুড়ায়। ঠিক কি না? 3 একইভাবে তোমাদের ফসল এখন দারুণ ভালো হয়েছে। ঈশ্বরই তোমাদের হাতে মিদিয়ন নেতা ওরেব আর সেবকে পরাজিত করতে দিয়েছেন। তোমাদের কর্ম সাফল্যের সঙ্গে আমার সাফল্যের কি কোনো তুলনা চলে?” গিদিয়োনের উত্তর শুনে ইফ্রয়িমের লোকদের রাগ পডে গেল।
গিদিয়োন মিদিয়নের দুই রাজাকে ধরলেন
4 গিদিয়োন 300 জন লোক নিয়ে যর্দন নদীর ওপারে গেলেন। ওরা খুবই ক্লান্ত আর ক্ষুধার্ত ছিল। 5 গিদিয়োন সুক্কোৎ শহরের অধিবাসীদের বললেন, “আমার সৈন্যদের তোমরা কিছু খেতে দাও। ওরা খুব পরিশ্রান্ত। আমরা এখনও মিদিয়নদের রাজা সেরহ আর সলমুন্নকে ধরতে পারি নি।”
6 সুক্কোতের নেতারা বলল, “কেন আমরা তোমার সৈন্যদের খাওয়াব? তোমরা তো এখনও সেবহ আর সলমুন্নকে ধরতে পারো নি।”
7 তখন গিদিয়োন বললেন, “তোমরা আমাদের খাবার দিও না। সেবহ আর সলমুন্নকে ধরবার জন্য প্রভু স্বয়ং আমাদের সাহায্য করবেন। তারপর আমরা ফিরে এসে মরুভূমির কাঁটাঝোপ দিয়ে তোমাদের ছাল ছাড়াব।”
8 সুক্কোৎ শহর থেকে বেরিয়ে গিদিয়োন চলে গেল পনুয়েল শহরে। সুক্কোতবাসীদের কাছে সে যেমন খাদ্য চেয়েছিল তেমনি পনূয়েলবাসীদের কাছেও খাদ্য চাইল। তারাও সুক্কোতের লোকদের মতো একই কথা বলল। 9 পনূয়েলের লোকদের গিদিয়োন বললেন, “যুদ্ধে জিতে আমাকে ফিরে আসতে দাও। তারপর তোমাদের এই মিনার আমি ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেব।”
10 সেবহ আর সলমুন্না আর তাদের সৈন্যদের শিবির ছিল কর্কোর শহরে। তাদের সৈন্যরা সংখ্যায় ছিল 15,000 জন। পূর্বদেশের সৈন্যদের মধ্যে এরাই শুধু বেঁচে ছিল। 120,000 সৈন্য ইতিমধ্যেই হত হয়েছিল। 11 গিদিয়োন সদলবলে তাঁবুবাসীদের রাস্তা ধরলেন। রাস্তাটা নোবহ আর যগবিহ শহরের পূর্বদিকে। কর্কোর শহরে এসে গিদিয়োন শত্রুদের আক্রমণ করলেন। শত্রুরা এই ধরণের আক্রমণের কথা ভাবতেই পারে নি। 12 মিদিয়নদের দুই রাজা সেবহ আর সল্মুন্ন পালিয়ে গেল। কিন্তু গিদিয়োন ঠিক তাদের ধরে ফেললেন। তাঁর সৈন্যরা শত্রু সৈন্যদের পরাজিত করল।
13 তারপর যোয়াশের পুত্র গিদিয়োন ফিরে এলেন। তিনি এবং তাঁর লোকরা হেরসের গিরিপথ দিয়ে ফিরে এসেছিল। 14 সুক্কোৎ শহর থেকে একটি যুবককে গিদিয়োন ধরে এনেছিলেন। যুবকটিকে সে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করতে যুবকটি সুক্কোৎ শহরের দলপতি আর প্রবীণ লোকদের মিলিয়ে মোট 77 জনের নাম লিখে দিল।
15 অতঃপর গিদিয়োন সুক্কোৎ শহরে ফিরে এলেন। সেখানকার অধিবাসীদের কাছে এসে বললেন, “এই দেখো সেবহ আর সল্মুন্ন। তোমরা আমায় নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করে বলেছিলে, ‘কেন আমরা তোমার সৈন্যদের খেতে দেব? তোমরা তো সেবহ আর সল্মুন্নকে ধরতে পার নি।’” 16 এই বলে, গিদিয়োন সুক্কোৎ শহরের প্রবীণদের নিলেন। তারপর মরুভূমির কাঁটাঝোপ দিয়ে তিনি তাদের উচিৎ শিক্ষা দিলেন। 17 গিদিয়োন পনূয়েল শহরের মিনার ভেঙ্গে ফেললেন। তারপর তিনি সেই শহরের নাগরিকদের হত্যা করলেন।
18 সেবহ ও সল্মুন্নকে গিদিয়োন বললেন, “তাবোর পর্বতে কয়েকজনকে তোমরা হত্যা করেছিলে। তাদের কেমন দেখতে?”
তারা বলল, “তোমার মতই দেখতে। প্রত্যেকের চেহারাই ছিল রাজপুরুষের মতো।”
19 গিদিয়োন বললেন, “ওরা আমার ভাই ছিল, আমার সহোদর ভাই। তাদের তোমরা মেরে না ফেললে আমি আজ তোমাদের হত্যা করতে চাইতাম না।”
20 গিদিয়োন তাঁর জ্যোষ্ঠ পুত্র যেথরের দিকে ফিরে বললেন, “এই রাজাদের হত্যা করো।” কিন্তু যেথর একটি ছোট ছেলে ছিল বলে ভয় পেয়ে গেল। সে তরবারি তুলল না।
21 তারপর সেবহ ও সল্মুন্ন গিদিয়োনকে বলল, “তুমি নিজেই আমাদের হত্যা করো। এই কাজের পক্ষে তোমার যথেষ্ট শক্তি আছে।” গিদিয়োন তাদের মেরে ফেললেন। তিনি ওদের উটের ঘাড় থেকে চাঁদের আকারের সাজসজ্জাগুলি নিয়ে নিলেন।
গিদিয়োন এফোদ তৈরী করলেন
22 ইস্রায়েলবাসীরা গিদিয়োনকে বলল, “মিদিয়নদের হাত থেকে তুমি আমাদের রক্ষা করেছ। এখন আমাদের শাসন করো। আমরা তোমাকে চাই, তোমার ছেলে, তোমার নাতি—সবাইকে চাই। তোমরা সবাই আমাদের রাজা হও।”
23 কিন্তু গিদিয়োন বললেন, “স্বয়ং প্রভুই তোমাদের রাজা। আমি বা আমার পুত্র তোমাদের শাসন করব না।”
24 ইস্রায়েলীয়রা যাদের পরাজিত করেছিল, তাদের মধ্যে কিছু লোক ছিল ইশ্মায়েল বংশীয়। এরা সোনার দুল পরত। গিদিয়োন ইস্রায়েলীয়দের বললেন, “আমার জন্য তোমরা একটা কাজ করো। যুদ্ধের সময় তোমরা তো অনেক জিনিসই পেয়েছিলে। তার থেকে তোমরা প্রত্যেকেই আমাকে একটি করে কানের দুল দিয়ে দাও।”
25 ইস্রায়েলবাসীরা বলল, “তুমি যা চাইছ আমরা তা খুশি হয়েই দেব।” এই বলে তারা মাটির ওপর একটা কাপড় পেতে দিল। প্রত্যেকে সেই কাপড়ের ওপর একটি করে দুল ফেলে দিল। 26 সেই সব দুল জড়ো করা হলে তাদের ওজন হল প্রায় 43 পাউণ্ড। এছাড়াও গিদিয়োনকে ইস্রায়েলীয়রা অন্যান্য উপহার দিয়েছিল। চাঁদের মতো, অশ্রুবিন্দুর মতো দেখতে জড়োয়া গয়নাও তারা তাকে দিয়েছিল। আর দিয়েছিল বেগুনী রঙের পোশাক। মিদিয়নরা এইসব জিনিস ব্যবহার করত। মিদিয়ন রাজাদের উটের শেকলও তারা তাকে দিয়েছিল।
27 গিদিয়োন সেই সোনা দিয়ে একটা এফোদ তৈরী করলেন। তাঁর নিজের শহর অফ্রাতে সেই এফোদকে তিনি স্থাপন করলেন। সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা এফোদটিকে পূজা করেছিল। এইভাবে তারা ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকল না, কারণ তারা এফোদের পূজা করেছিল। এটা গিদিয়োন এবং তার পরিবারের কাছে একটা ফাঁদের মত হল এবং তাদের দিয়ে পাপ কাজ করালো।
গিদিয়োনের মৃত্যু
28 মিদিয়নদের বাধ্য হয়েই ইস্রায়েলীয়দের প্রভুত্ব মেনে নিতে হল। ওরা আর কোন অশান্তি করল না। 40 বছর ধরে দেশে শান্তি ছিল। যতদিন গিদিয়োন বেঁচেছিলেন ততদিন পর্যন্ত শান্তি ছিল।
29 যোয়াশের পুত্র যিরুব্বাল অতঃপর গিদিয়োন দেশে গেলেন। 30 তাঁর ছিল 70টি সন্তান। অনেকগুলি বিয়ে করেছিলেন বলেই তাঁর এতগুলো সন্তান। 31 শিখিমে গিদিয়োনের একজন উপপত্নী থাকত। তার গর্ভে গিদিয়োনের একটি পুত্র হল। গিদিয়োন তার নাম রাখলেন অবীমেলক।
32 যোয়াশের পুত্র গিদিয়োন বৃদ্ধ বয়সে মারা গেলেন। যোয়াশের সমাধিস্থলেই তাঁকে কবর দেওয়া হল। সেই সমাধিটি অফ্রা শহরে অবস্থিত যেখানে অবীয়েষর পরিবার বাস করে। 33 গিদিয়োনের মৃত্যুর পর ইস্রায়েলীয়রা আবার ঈশ্বরকে ভুলে গেল। তারা বালের ভক্ত হয়ে গেল। তারা বাল বরীৎকে তাদের দেবতা মেনে নিল। 34 তারা তাদের প্রভু ঈশ্বরকে ভুলে গেল। অথচ তিনিই তাদের চারিদিকের শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। 35 যিরুব্বাল (গিদিয়োন) পরিবারের অনুগত হয়ে তারা আর রইল না। তিনি তাদের যথেষ্ট উপকার করলেও তাঁরা তাকে মনে রাখল না।
পিতর, যাকোব এবং যোহন যীশুকে অনুসরণ করলেন
(মথি 4:18-22; মার্ক 1:16-20)
5 একদিন যীশু গিনেষরত হ্রদের ধারে দাঁড়িয়েছিলেন। বহুলোক তাঁর চারপাশে ভীড় করে দাঁড়িয়ে ঈশ্বরের শিক্ষা শুনছিল। 2 তিনি দেখলেন, হ্রদের ধারে দুটি নৌকা দাঁড়িয়ে আছে আর জেলেরা নৌকা থেকে নেমে জাল ধুচ্ছে। 3 তিনি একটি নৌকায় উঠলেন, সেই নৌকাটি ছিল শিমোনের। যীশু তাঁকে তীর থেকে নৌকাটিকে একটু দূরে নিয়ে যেতে বললেন। তারপর তিনি নৌকায় বসে সেখান থেকে লোকদের শিক্ষা দিতে লাগলেন।
4 তাঁর কথা শেষ হলে তিনি শিমোনকে বললেন, “এখন গভীর জলে নৌকা নিয়ে চল, আর সেখানে মাছ ধরার জন্য তোমাদের জাল ফেল।”
5 শিমোন উত্তর দিলেন, “প্রভু, আমরা সারা রাত ধরে কঠোর পরিশ্রম করে কিছুই ধরতে পারি নি; কিন্তু আপনি যখন বলছেন তখন আমি জাল ফেলব।” 6 তাঁরা জাল ফেললে প্রচুর মাছ জালে ধরা পড়ল। মাছের ভারে তাদের জাল ছিঁড়ে যাবার উপক্রম হল। 7 তখন তাঁরা সাহায্যের জন্য ইশারা করে অন্য নৌকার সঙ্গীদের ডাকলেন। সঙ্গীরা এসে দুটো নৌকায় এত মাছ বোঝাই করলেন যে সেগুলো ডুবে যাবার উপক্রম হল।
8-9 এই দেখে পিতর যীশুর পায়ে পড়ে বললেন, “প্রভু আমি একজন পাপী। আপনি আমার কাছ থেকে চলে যান।” কারণ জালে এত মাছ ধরা পড়েছে দেখে তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা সকলে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। 10 সিবদিয়ের ছেলে যাকোব ও যোহন যাঁরা তাঁর ভাগীদার ছিলেন তাঁরাও অবাক হয়ে গিয়েছিলেন।
তখন যীশু শিমোনকে বললেন, “ভয় পেও না, এখন থেকে তুমি মাছ নয় বরং মানুষ ধরবে।”
11 এরপর তাঁরা নৌকাগুলো তীরে এনে সব কিছু ফেলে রেখে যীশুর সঙ্গে চললেন।
একজন কুষ্ঠ রোগীকে যীশু আরোগ্যদান করলেন
(মথি 8:1-4; মার্ক 1:40-45)
12 একবার যীশু কোন এক নগরে ছিলেন, সেখানে একজন লোক যার সর্বাঙ্গ কুষ্ঠরোগে ভরে গিয়েছিল, সে যীশুকে দেখে তাঁর সামনে উপুড় হয়ে পড়ে মিনতি করে বলল, “প্রভু, আপনি যদি ইচ্ছা করেন তাহলেই আমাকে ভালো করতে পারেন।”
13 তখন যীশু হাত বাড়িয়ে তাকে ছুঁয়ে বললেন, “আমি তা-ই চাই। তুমি আরোগ্য লাভ কর!” আর সঙ্গে সঙ্গে তার কুষ্ঠ ভালো হয়ে গেল। 14 তখন যীশু তাকে আদেশ করলেন, “দেখ, একথা কাউকে বোলো না; কিন্তু যাও, যাজকদের কাছে গিয়ে নিজেকে দেখাও, আর শুচি হবার জন্য মোশির নির্দেশ মতো বলি উৎসর্গ কর। তুমি যে আরোগ্য লাভ করেছ, সবার সামনে এইভাবে তা প্রকাশ কর।”[a]
15 যীশুর বিষয়ে নানা খবর চতুর্দিকে আরো ছড়িয়ে পড়তে লাগল, আর বহুলোক ভীড় করে তাঁর কথা শুনতে ও রোগ থেকে সুস্থ হবার জন্য তাঁর কাছে আসতে লাগল। 16 কিন্তু যীশু প্রায়ই নির্জন জায়গায় প্রান্তরের মধ্যে গিয়ে প্রার্থনা করতেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International