Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 4-6

মহিলা বিচারক দবোরা

এহূদের মৃত্যুর পর, লোকরা আবার যে সব কাজ প্রভুর বিবেচনায় মন্দ তাই করলো। তাই প্রভু কনানের রাজা যাবীনের কাছে ইস্রায়েলীয়দের পরাজিত হতে দিলেন। যাবীন হরোশৎ শহরে রাজত্ব করত। তার সৈন্যবাহিনীর প্রধান ছিল সীষরা। সীষরা হরোশৎ হাগোয়িম শহরে বাস করত। সীষরার 900 লোহার রথ ছিল। সীষরা 20 বছর ইস্রায়েলবাসীদের ওপর অত্যন্ত নিষ্ঠুর ছিল এবং সে তাদের উৎপীড়ন করেছিল। এর ফলে তারা সাহায্যের জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করল।

দবোরা নামের একজন ভাববাদিনী ছিলেন। তাঁর স্বামীর নাম ছিল লপ্পীদোত। সেই দবোরা ইস্রায়েলের বিচার করতেন। একদিন দবোরা খেজুর গাছের নীচে বসে ছিলেন। এই খেজুর গাছের নাম দবোরার খেজুর গাছ। ইস্রায়েলের লোকরা তাঁর কাছে এল। সীষরাকে নিয়ে কি করা যায় সে বিষয়ে তারা তাঁর পরামর্শ চাইল। দবোবার খেজুর গাছটি ছিল ইফ্রয়িমের পাহাড়ি অঞ্চলে রামা আর বৈথেল শহরের মাঝখানে। দবোরা বারক নামের একজন লোককে খবর পাঠালেন। তিনি তাকে দেখা করতে বললেন। বারক, অবীনোয়মের পুত্র থাকত নপ্তালির কেদশ শহরে। বারক দেখা করতে এলে দবোরা তাকে বললেন, “ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর তোমাকে আজ্ঞা দিচ্ছেন; ‘নপ্তালি এবং সবূলুন পরিবারগোষ্ঠীর 10,000 লোক জোগাড় কর এবং তাদের তাবোর পর্বতে নিয়ে যাও। রাজা যাবীনের সেনাপতি সীষরা যাতে তোমার কাছে আসে আমি তার ব্যবস্থা করব। আমি তাকে তার রথ আর সৈন্যদল নিয়ে কীশোন নদীর ধারে পাঠিয়ে দেব। তারপর তোমাদের কাছে সে হেরে যাবে। এ ব্যাপারে আমি হব তোমাদের সহায়।’”

বারক দবোরাকে বলল, “আপনি আমার সঙ্গে গেলে যাব, যা বলবেন করব। কিন্তু আপনি না গেলে আমিও যাবো না।”

দবোরা বললেন, “আমি নিশ্চয়ই যাব। কিন্তু তোমার মনোভাবের জন্য সীষরাকে পরাজিত করবার সম্মান তোমার হবে না। প্রভু একজন মহিলাকেই সীষরাকে পরাজিত করবার জন্য পাঠাবেন।”

দবোরা বারকের সঙ্গে কেদশ শহরে গেলেন। 10 কেদশে বারক সবূলূন এবং নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠীকে ডেকে 10,000 লোককে জড়ো করে তাঁর পেছন পেছন যেতে বললেন। দবোরাও বারকের সঙ্গে গেলেন।

11 এখন, হেবর নামে কেনীয় সম্প্রদায়ের একটি লোক ছিল। সে অন্য কেনীয়দের ত্যাগ করেছিল। কেনীয়রা ছিল মোশির শ্বশুর হোবরের উত্তরপুরুষ। হেবর ওক গাছের পাশে সানন্নীম নামে একটি জায়গায় বাস করত। সানন্নীম কেদশ শহরের খুব কাছেই অবস্থিত।

12 সীষরাকে একজন খবর দিল, অবীনোয়মের পুত্র বারক তাবোর পর্বতে রয়েছে। 13 খবর শুনে সীষরা 900 লোহার রথ আর সমস্ত লোকদের নিয়ে হরোশত্‌ হাগোয়িম শহর থেকে কীশোন নদীর দিকে রওনা হল।

14 দবোরা তখন বারককে বললেন, “আজ সীষরাকে পরাজিত করবার জন্য প্রভু তোমার সহায় হবেন। প্রভু যে ইতিমধ্যেই তোমার জন্য রাস্তা ফাঁকা করে দিয়েছেন তা তুমি নিশ্চয়ই জানো।” তাই বারক 10,000 লোক নিয়ে তাবোর পর্বত থেকে নেমে এল। 15 লোকজন নিয়ে বারক এবার সীষরাকে আক্রমণ করল। যুদ্ধের সময় প্রভু সীষরা আর তার রথ, লোকজন সবকিছুর মধ্যে একটা তালগোল পাকিয়ে দিলেন। লোকজন সব কি যে করবে বুঝতে পারছিল না। এই সুযোগে বারক ও তার সৈন্যবাহিনী সীষরার বাহিনীকে হারিয়ে দিল। কিন্তু সীষরা রথ ফেলে দিয়ে পায়ে হেঁটে পালিয়ে গেল। 16 বারক যুদ্ধ চালিয়ে গেল। সে আর তার সৈন্যরা রথ আর বাহিনীকে হরোশৎ হাগোয়িম পর্যন্ত তাড়িয়ে নিয়ে গেল। তারা সব লোককে তরবারি দিয়ে কেটে ফেলল। একজনও বেঁচে রইল না।

17 কিন্তু সীষরা পালিয়ে গেল। সে একটা তাঁবুতে এলো। সেই তাঁবুতে যায়েল নামে একজন স্ত্রীলোক বাস করত। তার স্বামীর নাম ছির হেবর। হেবর ছিল কেনীয় সম্প্রদায়ের লোক। তার পরিবার হাৎসোরের রাজা যাবীনের সঙ্গে শান্তিতে বসবাস করত। সীষরা যায়েলের তাঁবুর দিকে ছুটে যাচ্ছিল। 18 সীষরাকে ছুটে আসতে দেখে যায়েল তার তাঁবু থেকে বেরিয়ে তার সঙ্গে দেখা করলো। যায়েল সীষরাকে বলল, “আমার তাঁবুতে আসুন। কোন ভয় নেই।” সীষরা যায়েলের তাঁবুতে ঢুকলো। যায়েল একটা কম্বল দিয়ে তাকে ঢেকে দিলো।

19 সীষরা বলল, “আমি তৃষ্ণার্ত। দয়া করে আমায় এক গ্লাস জল দিন।” একটা চামড়ার বোতলে যায়েল দুধ রাখত। সীষরাকে দুধ খাইয়ে যায়েল আবার তাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দিল।

20 সীষরা যায়েলকে বলল, “তাঁবুর দরজার পাশে আপনি দাঁড়িয়ে থাকবেন। যদি কেউ জিজ্ঞাসা করে, ভেতরে কেউ আছে কি না, বলবেন ‘না কেউ নেই।’”

21 কিন্তু যায়েল তাঁবু খাটানোর একটা গোঁজ আর একটা হাতুড়ি পেয়ে গেল। তারপর চুপিচুপি সীষরার কাছে গেল। সীষরা খুবই ক্লান্ত ছিল, তাই সে ঘুমাচ্ছিল। যায়েল গোঁজটা সীষরার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে ঠুকে দিল। গোঁজটা তার মাথার মধ্যে ঢুকে বেরিয়ে এসে মাটিতে ঢুকে গেল। সীষরা মারা গেল।

22 আর ঠিক তখনই বারক সীষরার খোঁজে যায়েলের তাঁবুর কাছে এলো। যায়েল তাঁবুর বাইরে বেরিয়ে বারককে বলল, “ভেতরে আসুন। যাকে খুঁজছেন তাকে দেখাচ্ছি।” বারক যায়েলের সঙ্গে ভেতরে এল। দেখল সীষরা মরে মাটিতে পড়ে আছে। তার মাথার ভেতর গোঁজ ঢুকে আছে।

23 সেদিন ঈশ্বর ইস্রায়েলের লোকদের হয়ে কনানদের রাজা যাবীনকে পরাজিত করলেন। 24 ইস্রায়েলবাসীরা ক্রমে আরো শক্তিশালী হয়ে উঠলো, যে পর্যন্ত না তারা কনানদের রাজা যাবীনকে পরাজিত করল। শেষে তারা যাবীনকে বিনষ্ট করল।

দবোরার গান

যেদিন ইস্রায়েলবাসীরা সীষরাকে পরাজিত করলো, সে দিন দবোরা আর অবীনোযমের পুত্র বারক এই গানটি গেয়েছিল:

“ইস্রায়েলের লোকরা যুদ্ধের প্রস্তুতি করল।
    তারা স্বেচ্ছায় যুদ্ধক্ষেত্রে যেতে চাইল।
প্রভুর নাম ধন্য হোক্।

“রাজারা সকলে শোন,
    শাসকরা মন দিয়ে শোন।
আমি, আমিই প্রভুর উদ্দেশ্যে গান গাইব,
    ইস্রায়েলের ঈশ্বর ও প্রভুর উদ্দেশ্যে গানটি গাইব।

“হে প্রভু, তুমি সেয়ীর থেকে এসেছিলে।
    তোমার অভিযান ইদোম দেশ থেকে শুরু হয়েছিল।
তোমার পদপাতে কেঁপে উঠেছিল পৃথিবী।
    আকাশ থেকে অঝোরে বৃষ্টি পড়ছিল।
    মেঘরা ঝরিয়ে ছিল জল।
প্রভু, সীনয় পর্বতের ঈশ্বরের সামনে,
    প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সামনে পর্বতমালা কেঁপে উঠেছিল।

“অনাতের পুত্র শম‌্গর
    এবং যায়েলের সময়ে সমস্ত রাজপথ জনমানবহীন।
    বণিকরা এবং পথিকরা অন্য পথ দিয়ে যাতায়াত করত।

“সেখানে কোন সৈন্য ছিল না।
    দবোরা যতদিন তুমি ইস্রায়েলের মা হয়ে আসোনি
    ততদিন ইস্রায়েলে কোন সৈন্য ছিল না।

“ঈশ্বর নতুন নেতাদের নির্বাচন করেছিলেন।
    তারা নগরের প্রবেশদ্বারে যুদ্ধে রত ছিল।
ইস্রায়েলে 40,000 সৈন্য ছিল।
    তাদের মধ্যে কেউ একটাও ঢাল অথবা বর্শা খুঁজে পায় নি।

“আমার হৃদয় ইস্রায়েলের সেই সেনাপতিদের সঙ্গে রয়েছে,
    যারা স্বেচ্ছায় যুদ্ধে গিয়েছিল।
প্রভুর নাম ধন্য হোক্।

10 “তোমরা যারা সাদা গর্দভের পিঠে চড়ে
    কম্বলের জিনে বসে আছো
    এবং যারা রাস্তায় হাঁটো,
    তারা এ সম্বন্ধে গান কর।
11 পশুরা যেখানে জল পান করে
    সেই চৌবাচ্চায় শুনি রণদামামার মহাসঙ্গীত ধ্বনি।
লোকরা গায় প্রভুর বিজয়গীতি,
    ইস্রায়েলে তাঁর সৈন্যের জয় গৌরব গীতি
    যখন তাঁরই বাহিনী নগরদ্বারে করেছে যুদ্ধ আর তাদেরই কেবল শোন জয় জয়কার।

12 “জাগো হে মা দবোরা,
    জেগে ওঠো, গাও গান!
বারক তুমিও জাগো।
    হে অবীনোয়মের পুত্র তোমার শত্রুদিগকে বন্দী করো।

13 “তারপর তিনি ইস্রায়েলে যারা বেঁচে আছে তাদের শক্তিমান লোকদের বিজয়ী করলেন।
    প্রভু আমায় যোদ্ধাদের ওপর শাসন করতে দিলেন।

14 “অমালেকদের পাহাড়ী দেশ হতে
    ইফ্রয়িমের লোকরা এসেছিল।
হে বিন্যামীন, তারা তোমায়
    ও তোমার লোকদের
এবং মাখীর পরিবার থেকে আসা অধ্যক্ষগণকে অনুসরণ করেছিল।
হে সবূলূন তোমার নেতারা
    সেনাপতির দণ্ড নিয়ে এসেছিল।
15 ইষাখরের নেতারা দবোরার সঙ্গে ছিল।
    ইষাখরের লোকরা বারকের প্রতি বিশ্বস্ত ছিল।
    দেখ, ঐ লোকরা কুচকাওয়াজ করে উপত্যকায় নামছে।

“রূবেণ, তোমার সেনাদলে প্রচুর সাহসী সৈন্য আছে।
16 তবে কেন তোমাদের মেষপালের আশেপাশে বসে রয়েছ?
রূবেণ তোমার সাহসী সেনারা যুদ্ধ সম্পর্কে এত চিন্তা করেছিল।
    তবু কেন তারা বাড়ীতে বসে মেষপালকের বাঁশীর বাজনা শোনে?
17 যর্দন নদীর ওপারে গিলিয়দবাসী তাঁবুতেই বসে ছিল।
এবং তোমার দান এর লোকরা,
    কেন জাহাজের আশেপাশে বসেছিল?
আশের গোষ্ঠী সাগরের তীরে নিরাপদ বন্দরে
    মনের মতন করে তাঁবু গেড়েছিল।

18 “কিন্তু সমস্ত সবূলূনবাসী, নপ্তালি অধিবাসী পাহাড়ের গায়ে জীবনের বাজী রেখে প্রত্যেকে মহাসংগ্রামে মেতেছিল।
19 কনানের রাজারা যুদ্ধে এলেন,
    তানক শহরে মগিদ্দোর জলের ধারে যুদ্ধ চলল,
তবু কোন সম্পদ না নিয়ে তাঁরা ঘরে ফিরলেন।
20 আকাশের যত তারা, নিজ নিজ পথ হতে
    মেতেছিল যুদ্ধে সেদিন সীষরার বিরুদ্ধে।
21 প্রাচীন কালের কীশন নদী
    সীষরার সৈন্যবাহিনীকে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।
হে আমার আত্মা, শক্তির সঙ্গে বেরিয়ে এস।
22 অশ্ব ক্ষুরের আঘাতে মাটি কেঁপে ওঠে।
    সীষরার পরাক্রমী অশ্বরা সব ছুটে যাও, ছুটে যাও।

23 “প্রভুর দূত বলল,
মেরোস শহরকে অভিশাপ দাও।
    তার শহরবাসীদের অভিশাপ দাও।
কারণ তারা সৈন্যবাহিনী নিয়ে
    প্রভুকে সাহায্য করতে আসে নি।”
24 কেনীয় হেবরের পত্নী—যায়েল তার নাম।
    সর্বোত্তমা মহীয়সী নারী, প্রণাম তারে প্রণাম।
25 সীষরা চাইল জল;
    জল নয়, যায়েল তাকে দুধের পাত্র এগিয়ে দিল।
রাজারই পক্ষে মানায় তেমন পাত্র।
    তাতে ক্ষীর ননী সাজিয়ে দিল যায়েল।
26 যায়েল তার হাত বাড়ালো, তাঁবু খাটানোর গোঁজ হাতে পেলো।
    ডান হাত বাড়ালে কর্মকারের হাতুড়ি উঠে এলো।
তারপর সে সীষরার মস্তকে আঘাত হানল।
    সে হাতুড়ির আঘাতে তার কপালের দুই পাশের মধ্য দিয়ে একটা ছিদ্র করল।
27 যায়েলের পায়ে মাথা গুঁজে দিয়ে
    পড়ে গেল সীষরা।
ভূতলশায়িত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল
    এক চরম বিপর্যয়।

28 “সীষরার মা জানালা থেকে উঁকি দেয়।
    সীষরার মা পর্দা সরিয়ে তাকায় আর কাঁদে,
‘সীষরার রথ ফিরতে দেরী করে কেন?
    কেন আমি এখন অবধি তার মালগাড়ীর শব্দ শুনছি না?’

29 “তার প্রজ্ঞাবতী দাসী উত্তর দিল,
    ব্যাকুলা মায়ের দেখ এই দুর্গতি।
30 দাসীটি বলল, ‘আমি নিশ্চিত তারা যুদ্ধে জিতেছে,
    এবং এখন তারা তাদের লুটের প্রচুর দ্রব্যসামগ্রী
নিজেদের মধ্যে ভাগ করছে।
    প্রত্যেক সৈন্য নেবে দু একটি করে রমণী
এবং বিজয়ী সীষরা হয়তো পরবার জন্য
    দু-একটি রঙীন সুতোর কাজ করা পোশাক পাবে।’

31 “ওগো প্রভু, যেন এভাবেই মরে তোমার শত্রুরা।
    যারা তোমায় ভালবাসে তারা যেন প্রভাত সূর্যসম শক্তি অর্জন করে।”

এইভাবেই 40 বছর সে দেশে শান্তি বিরাজ করছিল।

মিদিয়নীয়দের সঙ্গে ইস্রায়েলীয়দের যুদ্ধ

আবার ইস্রায়েলবাসীরা পাপ কর্মে মেতে উঠল। তাই সাত বছর ধরে প্রভু মিদিয়নদের সহায় হয়ে রইলেন যাতে তারা ইস্রায়েলীয়দের দমিয়ে রাখতে পারে।

মিদিয়ন সম্প্রদায়ের লোকরা ছিল ভীষণ শক্তিশালী। ইস্রায়েলবাসীদের ওপর তারা বেশ অত্যাচার করত। তাই ইস্রায়েলীয়রা পর্বতের নানা গোপন জায়গায় লুকিয়ে থাকত। সেখানেই খাবার দাবার লুকিয়ে রাখত। সেসব জায়গা খুঁজে পাওয়া খুব শক্ত ছিল। তারা যে এরকম সাবধান হয়ে গিয়েছিল তার কারণ মিদিয়নীয় এবং অমালেকীয় সম্প্রদায়ের লোকরা পূর্বদেশ থেকে সবসময় আক্রমণ করতো এবং তাদের ফসল নষ্ট করতো। আক্রমণকারীরা ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শিবির গেড়েছিল। তারা অনেক দূরে ঘসা শহর পর্যন্ত ইস্রায়েলীয়দের সমস্ত শস্য নষ্ট করে দিয়েছিল। তারা ইস্রায়েলীয়দের খাবার মতো কিছুই অবশিষ্ট রাখল না। তারা তাদের মেষ, গরু, গাধা এসবও কেড়ে নিয়ে গিয়েছিল। মিদিয়নী়রা ওদের দেশে তাঁবু গেড়েছিল এবং সঙ্গে এনেছিল পরিবারের লোকজন, জীবজন্তু। পঙ্গপালের ঝাঁকের মতো অগুনতি মানুষ তারা এবং তাদের আনা উটের সংখ্যা গোণা অসম্ভব ছিল। দেশটাকে ওরা একেবারে ছারখার করে দিল। মিদিয়নী়দের অত্যাচারে ইস্রায়েলীয়রা একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেল। তাই তারা প্রভুর দয়া পাবার জন্যে কেঁদে আকুল হয়ে উঠল।

মিদিয়নের লোকরা অত্যাচারে মেতে উঠেছিল। সেই জন্য ইস্রায়েলীয়রা প্রভুর কৃপার জন্য কেঁদে আকুল হয়ে উঠল। তাই প্রভু তাদের কাছে একজন ভাববাদীকে পাঠালেন। ভাববাদী ইস্রায়েলবাসীদের বললেন, “প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর কি বলেন তা শোন। তিনি বলেছেন, ‘মিশরে তোমরা ক্রীতদাস ছিলে। আমি তোমাদের মুক্ত করে সেই দেশ থেকে নিয়ে এসেছি। আমি তোমাদের মিশরের এবং যারা তোমাদের নির্যাতন করেছে, তাদের সকলের হাত থেকে রক্ষা করেছি। আমি আবার সেই লোকদের তাড়িয়ে বার করে দিয়েছি এবং তাদের দেশ তোমাদের দিয়েছি।’ 10 তারপর আমি তোমাদের বলেছিলাম, ‘আমি তোমাদের প্রভু ঈশ্বর। তোমরা ইমোরীয়দের দেশে বসবাস করবে বটে, কিন্তু কখনই তোমরা তাদের মূর্ত্তির পূজা করবে না।’ কিন্তু তোমরা আমার কথা শোনো নি।”

প্রভুর দূত গিদিয়োন দর্শন করলেন

11-12 সেই সময়, প্রভুর দূত একজন লোকের কাছে এলেন। তার নাম ছিল গিদিয়োন। প্রভুর দূত অফ্রা নামক একটি জায়গায় একটি ওক গাছের নীচে বসলেন। ওক গাছটা ছিল যোয়াশ নামে একজন লোকের। যোয়াশ, গিদিয়োনের পিতা, অবীয়েষ্রীয় বংশের লোক ছিলেন। গিদিয়োন একটি দ্রাক্ষা মাড়াবার জায়গায় কিছু গম মাড়াই করছিলেন। প্রভুর দূত গিদিয়োনের কাছে বসলেন। গিদিয়োন লুকিয়েছিলেন যাতে মিদিয়নরা তাঁকে দেখতে না পায়। প্রভুর দূত গিদিয়োনের সামনে দেখা দিয়ে তাকে বললেন, “হে মহাসৈনিক, প্রভু তোমার সহায়!”

13 গিদিয়োন বললেন, “মহাশয় আপনাকে একটা কথা বলব। প্রভু যদি সত্যিই আমাদের সহায়, তাহলে এত দুঃখ কষ্ট কেন? আমি শুনেছি আমাদের পূর্বপুরুষদের জন্য তিনি অনেক আশ্চর্য কাজ করেছিলেন। তাঁরা বলেছিলেন যে প্রভু তাঁদের মিশর থেকে সরিয়ে এনেছিলেন। কিন্তু তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। কেবলমাত্র প্রভুর জন্যই মিদিয়নরা আমাদের পরাজিত করতে পেরেছে।”

14 প্রভু গিদিয়োনের দিকে ফিরে বললেন, “তোমার নিজের শক্তিকে কাজে লাগাও। যাও, মিদিয়নের হাত থেকে ইস্রায়েলবাসীদের রক্ষা করো। এ কাজে আমি তোমাকেই পাঠাচ্ছি।”

15 গিদিয়োন বলল, “ক্ষমা করবেন। কি করে আমি ইস্রায়েলকে রক্ষা করব? মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে আমার পরিবারই হচ্ছে সবচেয়ে দুর্বল। তাছাড়া এই পরিবারে আমিই সবচেয়ে ছোট।”

16 প্রভু বললেন, “আমি তোমার সঙ্গে আছি। সুতরাং মিদিয়নদের তুমি সহজেই পরাজিত করতে পারবে। এতই সহজ যে, মনে হবে তুমি যেন শুধু একজনের সঙ্গেই যুদ্ধ করছ।”

17 তখন গিদিয়োন প্রভুকে বলল, “যদি আপনি সত্যিই আমার ওপর প্রসন্ন হন তাহলে আপনি যে স্বয়ং প্রভু তার একটা প্রমাণ দিন। 18 দয়া করে একটু অপেক্ষা করুন। আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত যেন চলে যাবেন না। আমি আপনার জন্য নৈবেদ্য আনতে যাচ্ছি। সেই নৈবেদ্য আপনার কাছে নিবেদন করব। আপনি দয়া করে অনুমতি দিন।”

প্রভু বললেন, “আমি তোমার ফিরে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করবো।”

19 গিদিয়োন ভেতরে গিয়ে একটি কচি পাঁঠা গরম জলে ফোটালো। তাছাড়া সে প্রায় 20 পাউণ্ড ময়দা দিয়ে খামিরবিহীন রুটি তৈরী করালো। তারপর মাংসটা সে একটা ঝুড়িতে আর ঝোলটা একটা পাত্রে রাখলো। সে মাংস, ঝোল আর রুটি নিয়ে ওক গাছের নীচে প্রভুকে পরিবেশন করল।

20 প্রভুর দূত গিদিয়োনকে বললেন, “মাংস, রুটি ঐখানে পাথরের ওপর রাখো। ঝোলটা ঢেলে দাও।” গিদিয়োন তাই করলো।

21 প্রভুর দূতের হাতে একটি ছড়ি ছিল। মাংস আর রুটির ওপর ছড়িটার ডগা ছোঁয়াতেই পাথর থেকে আগুন ছিটকে বেরল। মাংস রুটি একেবারে পুড়ে গেল। তারপর প্রভুর দূত কোথায় মিলিয়ে গেলেন।

22 তখন গিদিয়োন বুঝতে পারলেন যে তিনি এতক্ষণ প্রভুর দূতের সঙ্গেই কথা বলছিলেন। গিদিয়োন চেঁচিয়ে উঠল, “সর্বশক্তিমান প্রভু! আমি প্রভুর দূতকে মুখোমুখি দেখেছি।”

23 প্রভু বললেন, “শান্ত হও! এর জন্য ভয় পেও না, তুমি মরবে না!”

24 অতঃপর গিদিয়োন সেই জায়গায় প্রভুর উপাসনার জন্য একটি বেদী তৈরী করলেন। সে বেদীর নাম দিলেন, “প্রভুই শান্তি।” অফ্রা শহরে সেই বেদী আজও রয়েছে। এখানেই অবীয়েষ্রীয়দের বংশের লোকরা বসবাস করে।

গিদিয়োন বালের বেদী ভেঙ্গে ফেললেন

25 সেই রাত্রেই প্রভু গিদিয়োনকে বললেন, “তোমার পিতার একটা সাত বছরের বেশ শক্তসমর্থ ষাঁড় আছে, তাকে সঙ্গে নাও। বালের মূর্ত্তি পূজার জন্য একটি বেদী আছে যেটা তোমার পিতা তৈরী করেছিলেন। বেদীর পাশে একটা কাঠের খুঁটি রয়েছে। খুঁটিটা আশেরার মূর্ত্তিকে পূজা করার জন্য। এবার ঐ ষাঁড়টিকে কাজে লাগাও, যাতে সে ঐ বালের বেদী, আশেরার খুঁটি ভেঙ্গে ফেলতে পারে। 26 ভাঙ্গার পর তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের জন্য উপযুক্ত বেদী তৈরী করো। এই উঁচু জায়গাতেই সেটা তৈরি করো। তারপর এই বেদীতেই ঐ ষাঁড়টিকে বলি দিয়ে পুড়িয়ে দাও। জ্বালানোর জন্য আশেরার খুঁটিটাকে ব্যবহার করো।”

27 গিদিয়োন প্রভুর কথামতো দশ জন ভৃত্য নিয়ে কাজটি করলেন। কিন্তু তাঁর মনে ভয় হল যে, বাড়ির লোকরা আর শহরের সবাই তাঁর কাণ্ড দেখে ফেলবে। অথচ প্রভুর নির্দেশ তাঁকে পালন করতেই হবে। কাজটা তিনি দিনের বেলায় নয়, রাত্রিতেই করলেন।

28 পরদিন সকালে শহরের লোকরা ঘুম থেকে উঠে দেখল, বালের বেদীটা শেষ হয়ে গেছে। তারা এটাও দেখল যে আশেরার খুঁটিও কেটে ফেলা হয়েছে। বালের বেদীর পাশেই ছিল সেই খুঁটি। সেই সঙ্গে তারা দেখলো গিদিয়োনের তৈরি সেই বেদীটা। বেদীর উপর বলি দেওয়া ষাঁড়টিও তাদের চোখে পড়লো।

29 লোকরা এ ওর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করল, “কে আমাদের বেদীটা ভেঙ্গেছে? কে আশেরার খুঁটি কেটেছে? কে এই নতুন বেদীটায ষাঁড় বলি দিয়েছে?” এই রকম নানা প্রশ্ন তারা নিজেদের মধ্যে করতে থাকল।

একজন বলল, “যোয়াশের পুত্র গিদিয়োন এসব করেছে।”

30 তারা যোয়াশের কাছে এল। তারা তাঁকে বলল, “তোমার পুত্রকে নিয়ে এসো। সে বালের বেদী ভেঙ্গেছে। সেই বেদীর পাশে আশেরার খুঁটি সে কেটে ফেলেছে। তার মরণ কেউ ঠেকাতে পারবে না। তাকে মরতে হবেই।”

31 ঘিরে থাকা লোকদের সামনে যোয়াশ বলল, “তোমরা কি বালের পক্ষ নিতে যাচ্ছ? তোমরা কি বালকে রক্ষা করতে যাচ্ছ? যদি কেউ তার পক্ষ নাও তাহলে কাল সকালের মধ্যেই তাকে মরতে হবে। বাল যদি সত্যিই দেবতা হয় তাহলে যে তার বেদী ভেঙেছে তার বিরুদ্ধে সে নিজেকে রক্ষা করুক।” 32 যোয়াশ বলল, “যদি গিদিয়োন বালের বেদী ভেঙে থাকে তবে বাল তার সঙ্গে বিবাদ করুক।” সেদিন থেকে যোয়াশ গিদিয়োনের একটা নতুন নাম দিলেন। যিরুব্বাল হচ্ছে সেই নতুন নাম।

গিদিয়োনের হাতে মিদিয়নীয়দের পরাজয়

33 মিদিয়নীয়, অমালেকীয় এবং পুর্বদেশের অন্যান্য লোকরা একসঙ্গে মিলে ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেল। যর্দন নদী পেরিয়ে তারা যিষ্রিয়েল উপত্যকায় শিবির গাড়ল। 34 প্রভুর আত্মা গিদিয়োনের ওপর ভর করলেন। তিনি তাকে প্রচণ্ড শক্তি দিলেন। গিদিয়োন অবীয়েষ্রীয় পরিবারকে আহ্বান করার জন্য শিঙা বাজাল। 35 মনঃশি পরিবারগোষ্ঠী সকলের কাছে সে বার্তাবাহক পাঠাল। বার্তাবাহকরা তাদের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যুদ্ধের জন্য তৈরি হতে বলল। তাছাড়া গিদিয়োন আশের, সবুলূন আর নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠীর কাছেও বার্তাবাহক পাঠালেন। এই কথা বার্তাবাহকরা তাদের বললে তারাও গিদিয়োন ও তাঁর সঙ্গীদের সঙ্গে দেখা করলো।

36 তখন গিদিয়োন ঈশ্বরকে বললেন, “আপনি আমাকে সাহায্য করবেন বলেছিলেন যাতে ইস্রায়েলবাসীরা রক্ষা পায়। এ কথা যে সত্যি তা প্রমাণ করুন। 37 যে জায়গায় শস্য ঝাড়াই হয় সেখানে আমি একটা মেষের ছাল রেখে দেব। যদি দেখি সব জায়গাই শুকনো অথচ সেই মেষের ছালে শিশির পড়েছে তাহলে বুঝব আপনি আমাকে দিয়ে ইস্রায়েল রক্ষা করবেন। এরকম কথাই তো আপনি বলেছিলেন।”

38 ঠিক সে রকমই ঘটল। পরদিন খুব ভোরে গিদিয়োন ঘুম থেকে উঠে মেষের ছাল নিংড়ে নিলে ছাল থেকে এক বাটি ভর্ত্তি জল বার হল।

39 গিদিয়োন ঈশ্বরকে বলল, “হে প্রভু আমার প্রতি ক্রুদ্ধ হবেন না। আমি আপনার কাছে শুধু আর একটি জিনিস চাইব। মেষের ছাল নিয়ে আর একবার আপনাকে পরীক্ষা করতে দিন। এবারে ছালটা যেন শুকিয়ে যায় আর চারিদিকের মাটি যেন শিশিরে ভিজে থাকে।”

40 সেদিন রাত্রে ঈশ্বর সে রকমই করলেন। মেষের ছালটাই শুধু শুকিয়ে গেলো আর চারপাশের সমস্ত মাটি শিশিরে শিশিরে ভেজা ভেজা হয়ে রইল।

লূক 4:31-44

অশুচি আত্মায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে যীশু সুস্থ করলেন

(মার্ক 1:21-28)

31 এরপর যীশু গালীলের কফরনাহূম শহরে গেলেন। সেখানে তিনি বিশ্রামবারে তাদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন। 32 তাঁর দেওয়া শিক্ষায় তারা আশ্চর্য হয়ে গেল, কারণ তাঁর শিক্ষা ছিল ক্ষমতাযুক্ত।

33 সেই সমাজগৃহে অশুচি আত্মায় পাওয়া একজন লোক ছিল, সে চিৎকার করে বলে উঠল, 34 “ওহে নাসরতীয় যীশু! আমাদের কাছে আপনার কি দরকার? আপনি কি আমাদের ধ্বংস করতে এসেছেন? আমি জানি আপনি কে, আপনি ঈশ্বরের পবিত্র ব্যক্তি!” 35 যীশু তাকে ধমক দিয়ে বললেন, “চুপ করো! আর ওর মধ্য থেকে বার হয়ে যাও!” তখন সেই অশুচি আত্মা লোকটিকে সকলের মাঝখানে আছড়ে ফেলে দিয়ে তার কোন ক্ষতি না করে তার মধ্যে থেকে বার হয়ে গেল।

36 এই দেখে লোকেরা অবাক হয়ে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল, “এর মানে কি? সম্পূর্ণ ক্ষমতা ও কর্ত্তৃত্বের সঙ্গে তিনি অশুচি আত্মাদের হুকুম করেন আর তারা বার হয়ে যায়।” 37 তাঁর বিষয়ে এই কথা সেই অঞ্চলের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল।

যীশু এক স্ত্রীলোককে আরোগ্যদান করলেন

(মথি 8:14-17; মার্ক 1:29-34)

38 যীশু সমাজ-গৃহ থেকে বেরিয়ে শিমোনের বাড়িতে গেলেন। সেখানে শিমোনের শাশুড়ী খুব জ্বরে ভুগছিলেন, তাই তারা এসে তাঁকে অনুরোধ করল যেন তিনি তাঁকে সুস্থ করেন। 39 তখন যীশু তাঁর কাছে দাঁড়িয়ে জ্বরকে ধমক দিলেন, এর ফলে জ্বর ছেড়ে গেল, আর তিনি তখনই উঠে তাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করতে লাগলেন।

আরো বহু লোককে যীশু সুস্থ করলেন

40 সূর্য অস্ত যাবার সময় লোকরা তাদের বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের লোকজন, যারা নানা রোগে অসুস্থ ছিল তাদের যীশুর কাছে নিয়ে এল। যীশু তাদের প্রত্যেকের ওপরে হাত রেখে তাদের সুস্থ করলেন। 41 তাদের অনেকের মধ্যে থেকে ভূত বার হয়ে এল। তারা চিৎকার করে বলতে লাগল, “আপনি ঈশ্বরের পুত্র।” কিন্তু তিনি তাদের ধমক দিলেন, তাদের কথা বলতে দিলেন না, কারণ তারা জানত যে তিনিই সেই খ্রীষ্ট।

যীশু অন্যান্য শহরে গেলেন

(মার্ক 1:35-39)

42 ভোর হলে যীশু সেই জায়গা ছেড়ে এক নির্জন জায়গায় চলে গেলেন। কিন্তু বিরাট জনতা তাঁর খোঁজ করতে লাগল; আর তিনি যেখানে ছিলেন সেখানে এসে হাজির হল এবং তিনি যেন তাদের কাছ থেকে চলে না যান সেজন্য তাঁকে আটকাতে চেষ্টা করল। 43 কিন্তু তিনি তাদের বললেন, “ঈশ্বরের রাজ্যের এই সুসমাচার আমাকে অন্যান্য শহরেও বলতে হবে, কারণ এরই জন্য আমাকে পাঠানো হয়েছে।”

44 এরপর তিনি যিহূদিযার বিভিন্ন সমাজ-গৃহে প্রচার করতে লাগলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International