Old/New Testament
মিথ্যে ভাববাদীর দল
13 “কোন ভাববাদী বা স্বপ্নদর্শক, যে স্বপ্ন ব্যাখ্যা করে, তোমাদের কাছে এসে কোনো চিহ্ন বা অলৌকিক কিছু দেখাতে পারে। 2 আর সে তোমাদের যে চিহ্ন বা অলৌকিক কিছুর কথা বলেছিল তা সফল হলে সে হয়তো তোমাদের বলতে পারে, ‘এস আমরা অন্যান্য দেবতাদের (যে সব দেবতাদের তোমরা জান না।) অনুসরণ করি এবং সেবা করি।’ 3 সেই স্বপ্নদর্শকের কথা শুনো না। কেন? কারণ প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের পরীক্ষা করছেন। প্রভু জানতে চাইছেন যে, তোমরা তাঁকে তোমাদের সমস্ত হৃদয় এবং তোমাদের সমস্ত প্রাণ দিয়ে ভালোবাস কিনা। 4 তোমরা অবশ্যই তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরকে, অনুসরণ করবে! তাঁকে শ্রদ্ধা করবে। প্রভুর আজ্ঞাগুলো মেনে চলবে এবং তিনি তোমাদের যা বলেন সেগুলো করবে। প্রভুর সেবা করো এবং তাঁকে কখনও পরিত্যাগ করো না। 5 এছাড়াও তোমরা অবশ্যই সেই ভাববাদী অথবা স্বপ্নদর্শককে হত্যা করবে। কারণ সে তোমাদের সেই প্রভু ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচারণ করতে বলেছিল যে প্রভু তোমাদের মিশর দেশ থেকে বার করে নিয়ে এসেছিলেন এবং দাসত্ব থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের যেভাবে জীবনযাপন করার জন্য আজ্ঞা করেছিলেন সেই লোকটি তোমাদের সেই জীবন থেকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিল। সুতরাং তোমাদের লোকদের মধ্য থেকে সেই মন্দকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য তোমরা অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে হত্যা করবে।
6 “তোমাদের ঘনিষ্ঠ কেউ অন্য দেবতাদের পূজা করার জন্য তোমাদের গোপনে পরামর্শ দিতে পারে। সে তোমাদের ভাই হতে পারে, তোমাদের পুত্র হতে পারে, তোমাদের কন্যা হতে পারে, যাকে ভালোবাসো সেই স্ত্রী হতে পারে অথবা তোমাদের ঘনিষ্ঠতম বন্ধুও হতে পারে। সেই লোকটি বলতে পারে, ‘এবার আমরা যাই এবং অন্যান্য দেবতাদের সেবা করি।’ (এরাই হল সেই দেবতা যাদের তোমরা জানতে না এবং তোমাদের পূর্বপুরুষরাও কোন দিন জানত না। 7 এরাই হল তোমাদের চারপাশের অন্যান্য দেশের বসবাসকারী লোকদের কারোর কাছের বা কারোর দূরের দেবতা।) 8 তোমরা সেই ব্যক্তির সঙ্গে অবশ্যই একমত হবে না। তার কথা শুনবে না। তার জন্য দুঃখিত হবে না। তাকে ছেড়ে দিও না এবং তাকে রক্ষা করো না। 9-10 না! তোমরা অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে হত্যা করবে। তোমরা অবশ্যই তাকে পাথর মেরে হত্যা করবে। তুমিই হবে প্রথম ব্যক্তি যে পাথর তুলবে এবং তার দিকে ছুঁড়ে মারবে। এরপর সমস্ত লোকরা তাকে হত্যা করার জন্য অবশ্যই পাথর ছুঁড়বে। কারণ সেই ব্যক্তি তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরের, কাছ থেকে তোমাদের দূরে সরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছিল; অথচ সেই মিশর দেশ থেকে প্রভুই তোমাদের দাসত্ব থেকে বার করে নিয়ে এসেছিলেন। 11 তখন ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা শুনতে পাবে এবং ভয় পাবে এবং তারা আর কখনও ঐ সমস্ত খারাপ কাজ করবে না।
12 “প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের বাস করার জন্য যে শহরগুলো দিয়েছেন, সেই শহরগুলোর মধ্যে কোনো একটির সম্পর্কে যদি এমন খবর পাও 13 যে তোমাদের মধ্যে থেকে কিছু পাষণ্ড লোক শহরের অন্যান্য লোকদের এই বলে ঈশ্বরবিমুখ করার জন্য প্ররোচিত করছে যে, ‘এবার এস আমরা এমন দেবতাদের সেবা করি যাদের তোমরা আগে কখনও জানতে না,’ 14 তখন এই ধরণের কোনো খবর সত্য কিনা তা জানার জন্য তোমরা অবশ্যই যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। যদি তোমরা জানতে পারো যে এটি সত্য, যদি তোমরা প্রমাণ করতে পার যে সে রকম সাংঘাতিক ঘটনা সত্যই ঘটেছিল 15 তাহলে তোমরা অবশ্যই সেই শহরের লোকদের সকলকে তরবারি দ্বারা হত্যা করবে এবং তোমরা তাদের সমস্ত পশুদেরও হত্যা করবে। তোমরা অবশ্যই সেই শহরটিকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবে। 16 এরপর তোমরা অবশ্যই সমস্ত মুল্যবান জিনিসপত্র এক জায়গায় জড়ো করবে এবং সেগুলোকে শহরের কেন্দ্রস্থলে নিয়ে যাবে। তারপর শহরটিকে ঐ সমস্ত জিনিসপত্র সমেত পুড়িয়ে ফেলবে। এটি হবে তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরের, কাছে হোমবলির নৈবেদ্য। শহরটি যেন অবশ্যই চিরকালের মতো পাথরের স্তুপে পরিণত হয়। সেই শহরটিকে যেন অবশ্যই আবার তৈরী করা না হয়। 17 সেই শহরের প্রতিটি জিনিস ধ্বংস করার জন্য ঈশ্বরকে দান করতে হবে, সুতরাং তোমরা ঐ জিনিসগুলোর কোনটিই নিজেদের জন্য রাখবে না। তোমরা যদি এই আদেশ মেনে চলো, তাহলে প্রভু তোমাদের প্রতি আর এতো ক্রুদ্ধ হবেন না। প্রভু তোমাদের প্রতি কৃপা ও করুণা করবেন। তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সেই অনুযায়ী তিনি তোমাদের জাতিকে বৃহত্তর করবেন। 18 এই রকমটাই হবে যদি তোমরা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, কথা শোনো, তাঁর সমস্ত আজ্ঞাগুলো, যেগুলো আজ আমি তোমাদের দিলাম, সেগুলো সব যদি মেনে চলো এবং প্রভুর দৃষ্টিতে যথার্থ আচরণ করো।
ইস্রায়েলে ঈশ্বরের বিশেষ লোকরা
14 “তোমরা হলে প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, সন্তান। যখন কেউ মারা যায় তখন তোমরা কোনোভাবেই তোমাদের নিজেদের কাটাছেঁড়া করবে না অথবা মাথা কামিয়ে তোমাদের দুঃখ প্রকাশ করবে না। 2 কেন? কারণ তোমরা অন্যান্য লোকদের থেকে আলাদা। তোমরা হলে প্রভুর বিশেষ লোকজন। পৃথিবীর সমস্ত লোকের মধ্য থেকে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তাঁর বিশেষ লোক হিসেবে তোমাদেরই নির্বাচিত করেছিলেন।
যে খাবার খাওয়ার জন্য ইস্রায়েলীয়রা অনুমতি পেয়েছিল
3 “প্রভু যেগুলো ঘৃণা করেন সেগুলো তোমরা খেও না। 4 তোমরা এই সমস্ত পশুদের খেতে পার—গরু, মেষ, ছাগল, 5 হরিণ, বারশিঙ্গা হরিণ, ছোট হরিণী, বুনো মেষ, বুনো ছাগল, কৃষ্ণসার হরিণ এবং পার্বত্য মেষ। 6 যে কোনোও পশু যাদের পায়ে দুভাগে বিভক্ত খুর আছে এবং যারা জাবর কাটে তাদের তোমরা খেতে পারো। 7 কিন্তু তোমরা উট, খরগোশ অথবা পাহাড়ী শ্বাফন পশুদের খেও না। এই সমস্ত পশুরা জাবর কাটে কিন্তু তাদের পায়ে বিভক্ত খুর নেই, সুতরাং ঐ সমস্ত পশুরা শুচি খাদ্য হিসেবে তোমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। 8 তোমরা অবশ্যই শুয়োর খাবে না। তাদের পায়ের খুরগুলো বিভক্ত, কিন্তু তারা জাবর কাটে না। সুতরাং খাদ্য হিসেবে শুয়োরও তোমাদের গ্রহণযোগ্য নয়। শুয়োরের কোনো মাংস খাবে না। এমনকি শুয়োরের মৃত শরীর স্পর্শ করবে না।
9 “পাখনা এবং আঁশ আছে এরকম যে কোনো রকম মাছ তোমরা খেতে পারো। 10 কিন্তু জলে বসবাসকারী জীবন্ত কোনো কিছু, যাদের পাখনা অথবা আঁশ নেই সেগুলো তোমরা খেও না। এগুলো তোমাদের পক্ষে শুচি খাদ্য নয়।
11 “তোমরা যে কোনোও প্রকারের শুচি পাখী খেতে পারো। 12 কিন্তু এই পাখীগুলো খেও না: ঈগল, শকুন, বাজ, 13 লাল চিল, বাজ পাখি এবং যে কোনো প্রকার চিল, 14 যে কোন প্রকার কাক, 15 শিংওয়ালা পেঁচা, লক্ষী পেঁচা, শঙ্খ চিল, যে কোনোও রকম বাজপাখি, 16 ছোট পেঁচা, বড় পেঁচা, সাদা পেঁচা, 17 মরুভূমি অঞ্চলের পেঁচা, সামুদ্রিক ঈগল, লিপ্তপাদ সামুদ্রিক পাখী, 18 সারস, সারস জাতীয় অন্যান্য যে কোনোও পাখী, ঝুঁটিওয়ালা পাখী অথবা বাদুড়।
19 “ডানাওয়ালা সমস্ত পোকারাই অশুচি, সুতরাং তাদের খেও না। 20 কিন্তু তোমরা যে কোনও প্রকার শুচি পাখী খেতে পার।
21 “নিজের থেকে মারা গেছে এমন কোনোও পশু তোমরা খেও না। তোমরা মৃত পশু খাবার জন্য তোমাদের শহরের কোনো বিদেশীকে দিতে পারো। অথবা তোমরা তা তার কাছে বিক্রি করতে পারো। কিন্তু তোমরা নিজেরা অবশ্যই কোনো মৃত পশু খাবে না, কারণ তোমরা প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের। তোমরা তাঁর বিশেষ লোক।
“একটি ছাগশিশুকে তারই মায়ের দুধে রান্না কোরো না।
দশভাগের এক ভাগ দেওয়া
22 “তোমাদের জমিতে যে ফসল হয়, প্রতি বছর তার দশ ভাগের এক ভাগ আলাদা করে রাখবে। 23 এরপর প্রভু যে জায়গাটিকে তাঁর বিশেষ বাসস্থান হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, সেখানে তোমরা যাবে। সেই স্থানে তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের উপস্থিতিতে তোমাদের দানা শস্যের, তোমাদের নতুন দ্রাক্ষারসের, তোমাদের তেলের এবং তোমাদের পশুর দলের মধ্যে প্রথম জাত পশুদের এক দশমাংশ ভোজন করবে। এই প্রকারে তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের সম্মান দেখানোর কথা সব সময় মনে রাখবে। 24 কিন্তু জায়গাটা যদি দূরে হয় তবে তোমাদের শস্যের দশ ভাগের এক ভাগ তোমাদের পক্ষে বহন করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। সুতরাং প্রভু যখন তোমাকে আশীর্বাদ করেন তখন ঈশ্বর নিজের নাম স্থাপনের জন্য যে স্থান মনোনীত করেছেন তা দূরে হলে 25 তোমাদের শস্যের সেই অংশটুকু বিক্রি করে যে টাকা পাবে তা সঙ্গে নাও এবং ঈশ্বর যে জায়গা মনোনীত করেছেন সেই বিশেষ জায়গায় যাও। 26 সেই টাকা দিয়ে তোমরা যা চাও তা কেনো—গরু, মেষ, দ্রাক্ষারস অথবা সুরা অথবা যে কোনো রকম খাদ্য। এর পর সেই জায়গায় প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের সঙ্গে তোমরা এবং তোমাদের পরিবারের লোকরা অবশ্যই খাবে এবং আনন্দ উপভোগ করবে। 27 কিন্তু তোমাদের শহরে বসবাসকারী লেবীয়দের ভুলো না। তোমরা তাদের সঙ্গে তোমাদের খাদ্য ভাগ করে নেবে, কারণ তোমাদের মতো তাদের জমির কোনো অংশ নেই।
28 “প্রতি তিন বছরের শেষে তোমরা অবশ্যই সেই বছরের সংগৃহীত ফসলের এক দশমাংশ সংগ্রহ করবে। তোমাদের শহরগুলোতে এই খাদ্য জমা করে রেখো। 29 এই খাদ্য লেবীয় লোকদের জন্য কারণ তাদের নিজেদের কোনো জমি নেই। এই খাদ্য তোমাদের শহরে যাদের খাদ্যের প্রয়োজন তাদেরও জন্য। সেই খাদ্য বিদেশীদের, বিধবাদের এবং অনাথদের জন্য। যদি তোমরা এটি করো তাহলে প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের সমস্ত কাজে আশীর্বাদ করবেন।
দেনা বাতিল করার বিশেষ বৎসর
15 “প্রতি সাত বছরের শেষে তোমরা অবশ্যই ঋণ ক্ষমা করবে। 2 তোমরা এই প্রকারে তা করবে: কোন লোক যে অপর ইস্রায়েলীয়কে টাকা ধার দিয়েছে, সে অবশ্যই সেই ঋণ ক্ষমা করবে। সে তার প্রতিবেশীকে ঋণ শোধ করতে বাধ্য করবে না, কারণ ঈশ্বরের সম্মানার্থে সেই বছরে দেনা বাতিল করার বছর হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। 3 তোমরা কোন বিদেশীর কাছ থেকে ঋণ আদায় করতে পার। কিন্তু আরেকজন ইস্রায়েলীর তোমার কাছে যে দেনা আছে সেটা তোমরা অবশ্যই বাতিল করবে। 4 তোমাদের দেশে কোনো গরীব লোক থাকা উচিৎ নয়, কারণ প্রভু তোমাদের যে দেশ দিয়েছেন সেই দেশে তোমাদের মহৎভাবে আশীর্বাদ করবেন। 5 কিন্তু এটা একমাত্র তখনই সম্ভব যদি তোমরা প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে মেনে চলো। আমি আজ তোমাদের যেগুলো বললাম সেই আজ্ঞাগুলো মেনে চলার ব্যাপারে তোমরা অবশ্যই সতর্ক থাকবে। 6 তাহলে তিনি যেরকম প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সেই মতো তোমাদের আশীর্বাদ করবেন। তখন তোমরা অন্যান্য জাতিকে ঋণ দেবে। কিন্তু অন্যদের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন তোমাদের হবে না। তোমরা বহু জাতিকে শাসন করতে পারবে, কিন্তু ঐ সমস্ত জাতির কেউই তোমাদের শাসন করবে না।
7 “প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের যে দেশ দিয়েছেন, সেখানকার কোন শহরে তোমার কেউ যদি দরিদ্র হয় তবে তুমি অবশ্যই স্বার্থপর হবে না, সেই দরিদ্র ব্যক্তিকে সাহায্য করবে, তাকে অবশ্যই সাহায্য করতে অস্বীকার করবে না। 8 তার সাথে উদারভাবে ভাগ করে নিতে তোমরা অবশ্যই রাজি হবে এবং সেই লোকটির যা কিছু প্রয়োজন সব কিছু তোমরা তাকে ধার দেবে।
9 “সপ্তম বছর, দেনা বাতিল করার বছর এগিয়ে এসেছে বলে, শুধু মাত্র এই কারণেই কাউকে সাহায্য করতে অস্বীকার কোরো না। এই ধরণের কোন খারাপ চিন্তা তোমাদের মনে প্রবেশ করতে দিও না। যে ব্যক্তির সাহায্যের প্রয়োজন, তার সম্বন্ধে তোমরা অবশ্যই কোনো খারাপ মনোভাব পোষণ করবে না। তোমরা অবশ্যই তাকে সাহায্য করতে অস্বীকার করবে না। তোমরা যদি সেই গরীব লোকটিকে সাহায্য না করো, তাহলে সে প্রভুর কাছে তোমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবে এবং প্রভু তোমাদের এই পাপের জন্য অভিযুক্ত করবেন।
10 “তোমরা তোমাদের যথাসাধ্য সেই গরীব লোকটিকে দেবে। তাকে দেওয়ার সময় মনে কোনো কুচিন্তা রেখো না। কেন? কারণ এই ভালো কাজ করার জন্য প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের আশীর্বাদ করবেন। তোমাদের সমস্ত কাজে এবং তোমরা যা করো তার প্রত্যেকটিতে তিনি তোমাদের আশীর্বাদ করবেন। 11 তোমাদের দেশে সবসময়ই গরীব লোক থাকবে; সেই কারণে আমি তোমাদের আদেশ করছি তোমরা অবশ্যই তোমাদের ভাইদের এবং তোমাদের দেশে যে দরিদ্র লোকদের সাহায্যের প্রয়োজন তাদের মুক্ত হস্তে সাহায্য করবে।
ক্রীতদাসদের মুক্ত করে দেওয়া
12 “ক্রীতদাস হিসেবে তোমাদের সেবা করার জন্য যদি কোনো হিব্রু পুরুষ অথবা স্ত্রীলোক তোমাদের কাছে নিজেকে বিক্রি করে তবে তোমরা তাকে ছ’বছর পর্যন্ত ক্রীতদাস হিসেবে রাখতে পার; কিন্তু সপ্তম বছরে তোমরা অবশ্যই তাকে ছেড়ে দেবে। 13 কিন্তু যখন তোমরা তোমাদের ক্রীতদাসকে স্বাধীন করছ, তখন তাকে খালি হাতে পাঠিও না। 14 তোমরা অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে মুক্ত হস্তে তোমাদের পশু, দানাশস্য এবং দ্রাক্ষারস দেবে। প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের যেভাবে আশীর্বাদ করেছেন সেই ভাবেই তোমরা তোমাদের ক্রীতদাসকে দেবে। 15 মনে রাখবে, তোমরা মিশরে ক্রীতদাস ছিলে এবং প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের মুক্ত করেছিলেন। সেই কারণেই আমি আজ তোমাদের এই আদেশ দিচ্ছি।
16 “কিন্তু সেই ক্রীতদাস যদি বলে, ‘আমি তোমাদের ছেড়ে যাবো না।’ সে তোমাকে এবং তোমাদের পরিবারকে ভালোবাসে এবং তোমাদের সঙ্গে সে ভালোভাবে আছে বলে এটা বলতে পারে। 17 এরকম হলে তোমরা সেই ক্রীতদাসকে তোমাদের দরজায় কান রাখতে বলো এবং একটি ধারালো যন্ত্রের সাহায্যে তার কানে ফুটো করো। এর থেকেই বোঝা যাবে যে সে চিরকালের জন্য তোমাদেরই ক্রীতদাস। যে ক্রীতদাসী তোমাদের সঙ্গে থাকতে চায় তার জন্যও এই ব্যবস্থা।
18 “ক্রীতদাসদের মুক্ত করে দেওয়ার ব্যাপারে মন কঠিন কোরো না। মনে রাখবে, কোনো ভাড়া করা লোককে তোমাদের যে টাকা দিতে হত তার অর্ধেক টাকায় সে ছ’বছর তোমাদের সেবা করেছে। আর তাহলে তোমাদের প্রত্যেক কাজে প্রভু ঈশ্বর তোমাদের আশীর্বাদ করবেন।
প্রথমজাত পশুদের সম্বন্ধে নিয়ম
19 “তোমাদের পশুপালের সমস্ত প্রথমজাত পুরুষ পশুদের তোমরা অবশ্যই প্রভুর উদ্দেশ্যে পৃথক করবে। তোমাদের কাজে ঐ পশুদের কাউকে ব্যবহার করবে না এবং ঐ সমস্ত মেষের থেকে কোনো পশম ছাঁটবে না। 20 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, যে স্থান পছন্দ করবেন প্রত্যেক বছর সেই জায়গায় তোমরা ঐ সমস্ত পশুদের নিয়ে আসবে। সেখানে প্রভুর উপস্থিতিতে তোমরা এবং তোমাদের পরিবারের লোকরা ঐ সমস্ত পশুদের খাবে।
21 “কিন্তু যদি কোনো পশুর কোনো খুঁত থাকে—যদি খোঁড়া হয় অথবা অন্ধ অথবা অন্য যে কোনরকম খুঁত যদি থাকে, তাহলে তোমরা অবশ্যই সেই পশুটিকে তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছে উৎসর্গ করবে না। 22 কিন্তু তোমরা বাড়ীতে সেই পশুর মাংস খেতে পারো। যে কোনোও লোকই এটি খেতে পারে—সে শুচিই হোক্ বা অশুচি হোক্। এই মাংস খাওয়ার নিয়ম কৃষ্ণসার এবং হরিণের মাংস খাওয়ার মতো। 23 কিন্তু তোমরা পশুর রক্ত অবশ্যই খাবে না। তোমরা জলের মতোই সেই রক্ত মাটিতে ঢেলে দেবে।
কোন্ আজ্ঞা শ্রেষ্ঠ
(মথি 22:34-40; লূক 10:25-28)
28 ব্যবস্থার শিক্ষকদের মধ্যে একজন কাছে এসে তাদের আলোচনা শুনলেন। যীশু তাদের ঠিক উত্তর দিয়েছেন জেনে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “শাস্ত্রে সমস্ত আদেশের মধ্যে কোনটি প্রধান?”
29 যীশু উত্তর দিলেন, “এটাই প্রধান! ‘শোন, হে ইস্রায়েল, আমাদের ঈশ্বর প্রভু একমাত্র প্রভু। 30 তুমি তোমার সমস্ত হৃদয়, মন, প্রাণ ও সমস্ত শক্তি দিয়ে তোমার ঈশ্বর প্রভুকে ভালবাসবে।’(A) 31 আর দ্বিতীয় আদেশ হল, এই, ‘তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবাসবে।’(B) এই আদেশ দুটি থেকে আর কোন বড় আদেশ নেই।”
32 তখন ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাঁকে বললেন, “বেশ, গুরু, আপনি ঠিক বলেছেন যে ঈশ্বরই প্রভু, তিনি ছাড়া অন্য কেউ নেই। 33 আর সমস্ত হৃদয়, সমস্ত শক্তি দিয়ে তাঁকে ভালবাসো এবং প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবাসা হচ্ছে সমস্ত রকম বলিদান ও উৎসর্গের থেকে অনেক ভাল।”
34 তখন তিনি বুদ্ধির সঙ্গে উত্তর দিয়েছেন দেখে যীশু তাঁকে বললেন, “ঈশ্বরের রাজ্য থেকে তুমি খুব বেশী দূরে নও।” এরপরে তাঁকে কোন কথা জিজ্ঞেস করতে আর কারো সাহস হল না।
খ্রীষ্ট কি দায়ূদের পুত্র অথবা দায়ূদের প্রভু?
(মথি 22:41-46; লূক 20:41-44)
35 যীশু মন্দিরে শিক্ষা দেবার সময় বললেন, “ব্যবস্থার শিক্ষকরা কেমন করে বলে যে খ্রীষ্ট দায়ূদের পুত্র? 36 দায়ূদ তো নিজেই পবিত্র আত্মার প্রেরণাতেই এই কথা বলেছেন:
‘প্রভু আমার প্রভুকে বললেন,
তুমি আমার ডানদিকে বস
যতক্ষণ না তোমার শত্রুদের তোমার পায়ের তলায় রাখি।’(C)
37 দায়ূদ নিজেই খ্রীষ্টকে ‘প্রভু’ বলেন। তবে কেমন করে খ্রীষ্ট দায়ূদের পুত্র হলেন?” অনেক লোক আনন্দের সাথে তাঁর কথা শুনল।
যীশু ব্যবস্থার শিক্ষকদের সমালোচনা করলেন
(মথি 23:6-7; লূক 11:43; 20:45-47)
38 আর তাঁর শিক্ষায় তিনি তাদের বললেন, “ব্যবস্থার শিক্ষকদের থেকে সাবধান, তারা লম্বা লম্বা পোশাক পরতে চায়, হাটে বাজারে লোকদের সম্মান, 39 সমাজগৃহে গুরুত্বপূর্ণ আসন এবং নৈশ ভোজে গুরুত্বপূর্ণ আসন পেতে ভালবাসে। 40 এই লোকেরাই বিধবাদের বাড়িগুলি আত্মসাতৎ করে, আর সেই দোষ ঢাকতে লম্বা লম্বা প্রার্থনা করে। ঐ সমস্ত লোকেরা বিচারে আরো কড়া শাস্তি পাবে।”
বিধবার দেওয়া দানের দৃষ্টান্ত
(লূক 21:1-4)
41 যীশু দানের বাক্সের সামনে বসে, লোকেরা কেমন করে তাতে টাকা পয়সা ফেলছে তা দেখছিলেন। বহু ধনী লোক প্রচুর টাকা পয়সা তার মধ্যে রাখল। 42 পরে একজন গরীব বিধবা এসে তাতে দুটি তামার মুদ্রা ফেলল, যার মূল্য এক সিকিরও কম।
43 তখন যীশু নিজের শিষ্যদের কাছে ডেকে বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, দানবাক্সে যাঁরা টাকা পয়সা রেখেছে, তাদের সবার থেকে এই গরীব বিধবা বেশী রাখল। 44 কারণ তারা সকলে নিজের নিজের অতিরিক্ত অর্থ থেকে কিছু কিছু রেখেছে কিন্তু এই গরীব বিধবা তার যা কিছু সম্বল ছিল, তার সবটুকুই দিয়ে গেল।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International