Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
যিহোশূয় 13-15

অনধিকৃত দেশ

13 যিহোশূয় যখন বেশ বৃদ্ধ হয়ে গেছেন তখন প্রভু তাঁকে বললেন, “যিহোশূয় যদিও তোমার বেশ বয়স হয়েছে, কিন্তু এখনও অধিকার করার জন্য অনেক দেশ রয়েছে। তুমি এখনও গশূর রাজ্য অথবা পলেষ্টীয়দের রাজ্য জয় করো নি। মিশরের সীহোর নদী থেকে উত্তরে ইক্রোণ সীমান্ত পর্যন্ত অঞ্চল তুমি এখনও অধিকার করো নি। জায়গাটা এখন কনানীয়দেরই থেকে গেছে। তোমাকে এখনও ঘসা, অস্‌দোদ, অস্কিলোন, গাত এবং ইক্রোণের পাঁচজন পলেষ্টীয় নেতাকে পরাজিত করতে হবে। এখনও তোমাকে কনানদের দেশের দক্ষিণে অব্বীয়র লোকদের পরাজিত করতে হবে। তোমাকে মিয়ারা পরাজিত করতে হবে, যেটা অফেক পর্যন্ত সীদোনীয়দের অধিকৃত, যেটি ইমোরীয়দের সীমানা। তুমি গিব্লী সম্প্রদায়ের দেশটাও এখনও দখল করতে পারো নি। তাছাড়াও বাল্গাদের পূর্বদিকে লিবানোন। জায়গাটা হর্মোণ পর্বতশৃঙ্গ পাদদেশ থেকে লেবো হমাথ পর্যন্ত বিস্তৃত।

“সীদোনের লোকরা লিবানোন থেকে মিষ্রফোৎ-ময়িম পর্যন্ত বিস্তৃত পাহাড়ি দেশে বাস করে। কিন্তু ইস্রায়েলের লোকদের স্বার্থে ঐসব দেশের সমস্ত লোককে আমি বার করে দেব। এই দেশের কথা অবশ্যই মনে রাখবে ইস্রায়েলীয়দের কাছে দেশ ভাগ করে দেবার সময় যা বললাম সে রকম করবে। নটি পরিবারগোষ্ঠী এবং মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেকের মধ্যে দেশটা ভাগ করবে।”

দেশভাগ

ইতিমধ্যেই রূবেণ, গাদ, বাকী অর্ধেক মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর লোক তাদের জমি-জায়গা দখল করেছে। প্রভুর দাস মোশি যর্দন নদীর পূর্ব দিকের দেশ তাদের দিয়ে গেছেন। অর্ণোন উপত্যকার ধারে অরোয়ের থেকে শুরু হয়েছে তাদের দেশ আর তা উপত্যকার মাঝখানের শহর পর্যন্ত বিস্তৃত। তাছাড়া এই দেশের মধ্যে আছে মেদবা থেকে দীবোন পর্যন্ত সমস্ত সমতল ভূমিও। 10 ইমোরীয় রাজা সীহোন যেসব শহরের শাসনকর্তা সেসব শহর ঐ দেশেরই মধ্যে রয়েছে। সীহোন শাসন করত হিষ্বোন শহর। সেই ভূখণ্ডটি যেখানে ইমোরীয়রা বাস করত সেই এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। 11 গিলিয়দ শহরটা সে দেশের মধ্যে পড়ে। তাছাড়া গশূর এবং মাখাথ অঞ্চলের লোকরা যেখানে থাকত সেটাও এই দেশের অন্তর্গত। এবং পুরো হর্মোণ পর্বতশৃঙ্গ ও সল্খা পর্যন্ত বিস্তৃত পূরো বাশন ঐ দেশের অন্তর্গত ছিল। 12 রাজা ওগের সমস্ত রাজ্যই সে দেশের অন্তর্গত। ওগ শাসন করত বাশন। একসময় সে শাসন করত অষ্টারোৎ এবং ইদ্রিয়ী। সে ছিল রফায় সম্প্রদায়ের লোক। অতীতে মোশি ঐ সম্প্রদায়ের লোকদের হারিয়ে তাদের দেশ দখল করেছিলেন। 13 ইস্রায়েলীয়রা গশূর এবং মাখাথ অঞ্চলের লোকদের তাড়িয়ে দেয় নি। তারা আজও ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে বসবাস করছে।

14 একমাত্র লেবি পরিবারগোষ্ঠীই কোনো জমি জায়গা পায় নি। তার বদলে তারা প্রভু, ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বরের কাছে যে সমস্ত পশু আগুনে দেওয়া হয়েছিল সেগুলি পেত। প্রভু তাদের কাছে এই রকম প্রতিশ্রুতিই করেছিলেন।

15 মোশি রূবেণ বংশের প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠীকে কিছু জমি জায়গা দিয়েছিলেন। তারা এইসব জায়গা পেয়েছিল; 16 অর্ণোন উপত্যকার কাছে অরোয়ের থেকে মেদবা শহর পর্যন্ত। এর মধ্যে আছে সমস্ত সমতলভূমি ও উপত্যকার মাঝখানের শহর। 17 হিষ্বোন পর্যন্ত বিস্তৃত এই দেশে রয়েছে সমতলের সমস্ত শহর। শহরগুলি হচ্ছে দীবোন, বামোৎ-বাল, বৈৎ‌-বাল্-মিয়োন, 18 যহস, কদেমোৎ, মেফাত্‌, 19 কিরিয়াথয়িম, সিব‌্মা, সেরত্‌ শহর পাহাড়ের উপরিস্থিত উপত্যকায়। 20 বৈৎ‌-পিয়োর, পিস্গা পাহাড় এবং বৈৎ‌-যিশীমোৎ, 21 ইমোরীয়দের রাজা সীহোন এই সমস্ত অঞ্চলগুলিতে এবং সমতল ভূমির শহরগুলিতে রাজত্ব করত। সীহোন হিষ্বোন শহর শাসন করত। কিন্তু মোশি তাকে এবং মিদিয়নীয়দের নেতাদের পরাজিত করেছিলেন। নেতাদের নামগুলো হচ্ছে ইবি, রেকম, সুর, হূর এবং রেবা। (এরা সকলেই সীহোনের সঙ্গে যোগ দিয়ে যুদ্ধ করেছিল।) ঐসব অঞ্চলেই এরা থাকত। 22 ইস্রায়েলীয়রা বিয়োরের পুত্র বিলিয়মকেও পরাজিত করেছিল। (বিলিয়ম যাদুবিদ্যায় ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারত।) ইস্রায়েলীয়রা যুদ্ধের সময় বহুলোককে হত্যা করেছিল। 23 রূবেণকে যে জায়গা দেওয়া হয়েছিল তার শেষ হয়েছে যর্দন নদীর তীরে। রূবেণ পরিবারগোষ্ঠীর সকলকে যে জায়গা দেওয়া হয়েছিল সেগুলো হচ্ছে তালিকাভুক্ত এইসব শহর আর মাঠঘাট।

24 এই সেই জায়গা যেটি মোশি দিয়েছিলেন গাদ পরিবারগোষ্ঠীকে। তিনি প্রতি পরিবারগোষ্ঠীকে এই জমি-জায়গা দিয়েছিলেন:

25 যাসের এবং গিলিয়দের সমস্ত শহর। মোশি তাদের অম্মোনীয় মানুষদের অর্ধেক জমিও দিয়ে দিয়েছিলেন, যে অঞ্চলটি এইসব রব্বার কাছে অরোয়ের পর্যন্ত বিস্তৃত। 26 এই অঞ্চলের মধ্যে আছে হিষ্বোন থেকে রামৎ‌-মিস্পী এবং বটোনীম, মহনয়িম থেকে দবীর এবং 27 বৈৎ‌-হারম, বৈৎ‌-নিম্রা, সুক্কোৎ ও সাফোন। হিষ্বোনের রাজা সীহোন অন্য যেসব অঞ্চল শাসন করতেন সেগুলি এদেশের মধ্যে। এই রাজ্যের সীমানা গালীল হ্রদের শেষ পর্যন্ত ছিল। 28 এইসব জমিজায়গা মোশি দিয়ে গিয়েছিলেন গাদ পরিবারগোষ্ঠীকে। তালিকভুক্ত সমস্ত শহর এই দেশের মধ্যে আছে। মোশি প্রত্যেকটি পরিবারগোষ্ঠীকে এই দেশ দান করেছিলেন।

29 মনঃশির অর্ধেক পরিবারগোষ্ঠীকে মোসি এই দেশ দিয়ে গিয়েছেন। মনঃশির অর্ধেক পরিবার এই দেশ পেয়েছিল। সে দেশের পরিচয় এইরকম:

30 দেশ শুরু হয়েছে মহনয়িম থেকে। এর মধ্যে আছে সমস্ত বাশন যার শাসনকর্তা রাজা ওগ। বাশনের অন্তর্গত যায়ীরের সমস্ত শহর। (মোট 60 টি শহর) 31 এ দেশের মধ্যে আছে গিলিয়দের অর্ধেকটা, অষ্টারোৎ এবং ইদ্রিয়ী। (গিলিয়দ, অষ্টারোৎ আর ইদ্রিয়ী শহরে রাজা ওগ বাস করত।) এইসব জায়গা দেওয়া হয়েছিল মনঃশির পুত্র মাখীরের পরিবারকে। সেই পরিবারের অর্ধেক লোক এই জায়গা পেয়েছিল।

32 এই সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীকে মোশি এই জমি দিয়েছিলেন। যখন মোয়াব সমতলে লোকরা তাঁবু গেড়েছিল তখন মোশি এই জমিটি দান করেছিলেন। জায়গাটা হচ্ছে যিরীহোর পূর্বে যর্দন নদীর পারে। 33 লেবি পরিবারগোষ্ঠীকে মোশি কোন জমি জায়গা দেন নি। ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর কথা দিয়েছিলেন লেবি পরিবারগোষ্ঠীর জন্য তিনি নিজেই হবেন তাদের অধিকার।

14 যাজক ইলীয়াসর, নূনের পুত্র যিহোশূয় এবং ইস্রায়েলের পরিবারগোষ্ঠীর প্রধানরা লোকদের মধ্যে জমিটি ভাগ করে দিল। বহুকাল আগে প্রভু মোশিকে কিভাবে তাঁর ইচ্ছেমতো লোকরা নিজেদের জমি জায়গা বেছে নেবে সে বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সাড়ে নটি পরিবারগোষ্ঠীর লোক ঘুঁটি চেলে[a] জমি পেয়েছিল। মোশি ইতিমধ্যেই আড়াইটি পরিবারগোষ্ঠীকে যর্দন নদীর পূর্বতীরের জমি দান করেছিলেন। কিন্তু অন্যান্যদের মতো লেবি পরিবারগোষ্ঠী কোনো জমি জায়গা পায় নি। বারোটি পরিবারগোষ্ঠীকে জমিজায়গা দেওয়া হয়েছিল। যোষেফের পুত্ররা মনঃশি ও ইফ্রয়িম এই দুটি পরিবারগোষ্ঠীতে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠীই কিছু জমি জায়গা পেয়েছিল। কিন্তু লেবি পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা কোন জমিজায়গা পায়নি। তারা বসবাসের জন্য মাত্র কয়েকটি শহর পেয়েছিল। প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠীর জমি-জায়গার মধ্যেই এইসব শহরগুলি ছিল। পশুদের জন্য তারা মাঠও পেয়েছিল। ইস্রায়েলীয় পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে কি করে জমি ভাগ বাঁটোয়ারা করে দিতে হবে প্রভু মোশিকে তা বলে দিয়েছিলেন। প্রভু যেমন নির্দেশ দিয়েছিলেন সেই ভাবেই ইস্রায়েলবাসীরা জমি ভাগ করে নিয়েছিল।

কালেব তার জমি পেল

একদিন যিহূদার পরিবারগোষ্ঠীর কয়েকজন লোক গিল‌্গলে গিয়েছিল যিহোশূয়ের সঙ্গে দেখা করতে। এদের মধ্যে একজনের নাম কালেব। সে হচ্ছে কনিসীয় যিফুন্নির পুত্র। কালেব যিহোশূয়কে বলল, “আপনার মনে আছে প্রভু কাদেশ বর্ণেয়তে কি কি বলেছিলেন? প্রভু তাঁর দাস মোশিকে আমার এবং আপনার সম্বন্ধে বলেছিলেন। প্রভুর দাস মোশি আমরা যে দেশে যাচ্ছিলাম সেটা দেখবার জন্য আমাকে পাঠিয়েছিলেন। তখন আমার বয়স ছিল চল্লিশ। ফিরে এসে জায়গাটা সম্বন্ধে আমার মনোভাব আমি মোশিকে বলেছিলাম। আমার সঙ্গীরা লোকদের এমন সব কথা বলল যে তারা ভয় পেয়ে গেল। কিন্তু আমি সত্যিই বিশ্বাস করতাম যে প্রভু আমাদের সেই দেশ নেবার অনুমতি দেবেন। তাই মোশি আমার কাছে সেদিন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মোশি বললেন, ‘যে দেশে তোমরা গুপ্তচরবৃত্তি করতে গিয়েছিলে সে দেশ তোমাদেরই হবে। তোমার উত্তরপুরুষরা চিরকাল সে দেশ ভোগ করবে। আমি তোমাদের সে দেশ দেব, কারণ তুমি সত্যিই আমার প্রভু ঈশ্বরকে বিশ্বাস করেছিলে।’

10 “এখন প্রভু তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুসারে আমাকে 45 বছর বাঁচিয়ে রেখেছেন। এতদিন আমরা সকলে মরুভূমিতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। এখন আমার বয়স 85 বছর। 11 আজও আমি সেদিনের মতোই শক্ত সমর্থ যেদিন মোশি আমাকে বাইরে পাঠিয়েছিলেন। সেই দিনের মতো আজও আমি যুদ্ধের জন্য তৈরী আছি। 12 তাই বলছি বহুকাল আগে প্রভু যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেই অনুসারে পাহাড়ী দেশটা আমাকে দিন। আপনি জানতেন তখন সেখানে শক্তিশালী অনাক বংশীয় লোকরা বসবাস করত। শহরগুলো ছিল বেশ বড় আর সুরক্ষিত। কিন্তু এখন প্রভু আমার সহায় এবং প্রভুর কথামতো সেই দেশের ভার আমি নেব।”

13 যিফুন্নির পুত্র কালেবকে যিহোশূয় আশীর্বাদ করলেন। তিনি তাকে দিলেন হিব্রোণ শহর। 14 সেই শহরে আজও কনিস বংশীয় যিফূন্নির পুত্র কালেবের পরিবারের লোকরা বাস করছে। সেই শহর আজও তার বংশধরদের জন্য থেকে গেছে, কারণ সে ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বরকে বিশ্বাস করত। 15 আগে সেই শহরটার নাম ছিল কিরিয়ৎ-অর্ব। অনাক বংশীয় লোকেদের মধ্যে দানবীয় চেহারার বৃহত্তম মানুষ অর্বর নামেই সেই শহরের নাম রাখা হয়েছিল।

এরপর সে দেশে শান্তি বিরাজ করল।

যিহূদার জন্য জমিজমা

15 যিহূদাকে যে দেশ দেওয়া হয়েছিল তা তার পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হল। দেশটি বিস্তৃত ছিল একদিকে ইদোমের সীমানা পর্যন্ত এবং অন্যদিকে দক্ষিণে তিম্নার ধার দিয়ে সিন মরুভূমি পর্যন্ত। যিহূদা দেশের দক্ষিণের সীমা লবণ সাগরের দক্ষিণ দিক থেকে শুরু। সেই সীমা দক্ষিণে অক্রব্বীম গিরিপথ হয়ে সিন পর্যন্ত গেছে। তারপর আবার দক্ষিণে কাদেশ-বর্ণেয় পর্যন্ত। এই সীমা হিষ্রোণ থেকে অদ্দর পর্যন্ত দেশ ছাড়িয়ে ঘুরে গিয়ে কর্ক্কা পর্যন্ত গেছে। মিশরের নদী অসমোন এবং ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত এই সীমা প্রসারিত। ঐ সমস্ত ভূমি তাদের দক্ষিণ সীমানার ওপর ছিল।

তাদের পূর্বদিকে সীমানা ছিল লবণ নদীর তীর থেকে সেখান পর্যন্ত যেখানে যর্দন নদী সাগরে মিশেছে।

উত্তরের সীমানা শুরু হয়েছে যেখানে যর্দন নদী মৃত সাগরে মিশেছে। তারপর উত্তরের সীমা বৈৎ‌-হগ্লা হয়ে বৈৎ‌-অরাবা পর্যন্ত গেছে। সীমা আরও গেছে বোহনের পাথরের দিকে। (বোহন হচ্ছে রূবেণের পুত্র।) উত্তরের সীমা আখোর উপত্যকা হয়ে দবীর পর্যন্ত গেছে। তারপর উত্তরে বাঁক নিয়ে গিল‌্গল পর্যন্ত গেছে। গিল‌্গল হচ্ছে সেই রাস্তার ওপারে যে রাস্তাটি অদুম্মীম পর্বতের মাঝখান দিয়ে গেছে। সেটা নদীর দক্ষিণে। ঐন্-শেমশ নদী পর্যন্ত সীমানা প্রসারিত। সীমার শেষ হচ্ছে ঐন্-রোগেলে। তারপর সেই সীমানা আরো এগিয়ে গেছে যিবুষদের শহরের দক্ষিণ ঘেঁষে বেন হিন্নোম উপত্যকা পর্যন্ত। (ঐ শহরটি জেরুশালেম নামে পরিচিত ছিল।) সেখানে সীমানা গেছে হিন্নোম উপত্যকার পশ্চিমে পাহাড়ের চূড়া পর্যন্ত। সেটা রফায়ীম উপত্যকার উত্তর দিকে। সেখান থেকে সীমানা আবার গেছে নিপ্তোহের ঝর্ণা পর্যন্ত। তারপর ইফ্রোণ পাহাড় চূড়ার কাছাকাছি শহরগুলো পর্যন্ত। সেখান থেকে ওটা বাঁক নিয়েছে এবং বালায় গেছে। (বালার অপর নাম কিরিয়ৎ যিয়ারীম) 10 বালা থেকে সীমা পশ্চিমে বাঁক নিয়ে পাহাড়ী দেশ সেয়ীর পর্যন্ত গেছে। তারপর যিয়ারীম পাহাড় চূড়ার উত্তর দিক ঘেঁষে নীচে বৈৎ‌-শেমশে পর্যন্ত। সেখান থেকে সেটি তিম্নার পাশ দিয়ে গেছে। 11 তারপর ইক্রোণের উত্তর দিকের পাহাড়। পাহাড় থেকে শিক্করোণ আর বালা পর্বতের পাশ দিয়ে যব্নিয়েল হয়ে ভূমধ্যসাগরে শেষ হয়েছে। 12 ভূমধ্যসাগর যিহূদার দেশের পশ্চিম দিকে এই চৌহদ্দির মধ্যেই যিহূদার দেশ। যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী এই অঞ্চলে বসবাস করত।

13 প্রভু যিহোশূয়কে বলেছিলেন, যিফুন্নির পুত্র কালেবকে যিহূদার দেশের একটা অংশ যেন তিনি দিয়ে দেন। তাই যিহোশূয় ঈশ্বরের আদেশমত তাকে সেই জায়গা দিয়ে দিলেন। যিহোশূয় তাকে কিরিয়ৎ-অর্ব (হিব্রোণ) শহর দান করলেন। (অর্ব হচ্ছে অনাকের পিতা।) 14 হিব্রোণে বসবাসকারী তিনটি অনাক পরিবারকে কালেব তাড়িয়ে দিলেন। ঐ তিনটি পরিবার হচ্ছে শেশয়, অহীমান আর তল্ময়। এরা সবাই অনাকীয় লোক। 15 তারপর কালেব দবীরে বসবাসকারী লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল। (আগে দবীরকে কিরিয়ৎ-সেফরও বলা হত।) 16 কালেব বলল, “আমি কিরিয়ৎ-সেফর আক্রমণ করতে চাই। আমি আমার কন্যা অক্ষার বিয়ে তারই সঙ্গে দেব যে যুদ্ধে জয়লাভ করে আসবে।”

17 কালেবের ভাই কনষের পুত্র অৎনীয়েল শহর জয় করল। কালেব অৎনীয়েলের সঙ্গে কন্যা অক্ষার বিয়ে দিলেন। 18 অক্ষা অৎনীয়েলের সঙ্গে ঘর করতে লাগল। অৎনীয়েল অক্ষাকে বলল তার পিতা কালেবের কাছ থেকে আরও কিছু জায়গা চাইতে। অক্ষা পিতার কাছে গেল। গাধার পিঠ থেকে নেমে সে পিতার কাছে গেলে কালেব জিজ্ঞাসা করল, “তোমার কি চাই?”

19 অক্ষা বলল, “আমাকে আশীর্বাদ করো। তুমি আমাকে নেগেভের শুকনো মরুভূমি দিয়েছ। দয়া করে এমন কিছু জায়গা দাও যেখানে জল পাওয়া যায়।” সেই মতো কালেব সেরকম জায়গাই অর্থাৎ‌ সেই দেশের উপর ও নীচের দিকের জলাভূমিগুলি মেয়েকে দিল।

20 প্রভু যেমন কথা দিয়েছিলেন সেই মতো যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী জমি-জায়গা পেয়েছিল।

21 এই শহরগুলি হচ্ছে যিহূদার সেই অংশে যেখানে যিহূদার দক্ষিণের সীমা বরাবর এদোমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে:

কব্‌সেল, এদর, যাগুর, 22 কীনা, দীমোনা, অদাদা, 23 কেদশ, হাৎসোর, যিত্‌নন, 24 সীফ, টেলম, বালোত্‌, 25 হাৎসোর, হদত্তা, কিরিয়োৎ হিষ্রোণ (হাৎসোর), 26 অমাম, শমা, মোলদা, 27 হৎসর-গদ্দা, হিষ্মোন, বৈৎ‌-পেলট, 28 হৎসয়-শূয়াল, বের্-শেবা, বিষিয়োথিয়া, 29 বালা, ইয়ীম, এৎ‌সম, 30 ইল্তোলদ, কসীল, হর্মা, 31 সিক্লগ, মদ্‌মন্ন, সন্‌সন্না, 32 লবায়োৎ, শিল‌্হীম, ঐন এবং রিম্মোণ। মোট 29টি শহর এবং সেখানকার সব মাঠঘাট।

33 যিহূদার পরিবারগোষ্ঠীরা পশ্চিমের পাহাড়ী অঞ্চলের শহরগুলি পেয়েছিল।

ইষ্টায়োল, সরা, অশ্না, 34 সানোহ, ঐন্-গন্নীম, তপূহ, ঐনম, 35 যর্মুৎ, অদুল্লম, সোখো, অসেকা, 36 শারয়িম, অদীথয়িম এবং গদেরা (গদেরোথয়িম)। মোট 14টি শহর এবং সেখানকার সব মাঠঘাট।

37 যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী আবার এইসব শহরও পেয়েছিল:

সনান, হদাশা, মিগ্দল-গাদ, 38 দিলিয়ন, মিস‌্পী, যক্তেল, 39 লাখীশ, বস্কৎ‌, ইগ্লোন, 40 কব্বোন, লহমম, কিত্‌লীশ, 41 গদেরোৎ‌, বৈৎ‌-দাগোন, নয়মা এবং মক্কেদা। মোট 16টি শহর আর তার চারপাশের মাঠঘাট।

42 যিহূদার লোকরা এইসব শহরও পেয়েছিল:

লিব‌্না, এথর, আশন, 43 যিপ্তহ, অশ্না, নৎসীব, 44 কিয়িলা, অক্ষীব এবং মারেশা। মোট 9টি শহর এবং তাদের চারপাশের মাঠঘাট।

45 যিহূদার লোকরা ইক্রোণ এবং অন্যান্য ছোটখাট শহর এবং তাদের চারপাশের মাঠঘাটও পেয়েছিল। 46 তারা ইক্রোণের পশ্চিমদিকের জায়গা এবং অস্‌দোদের কাছাকাছি শহর আর মাঠঘাটও পেয়েছিল। 47 অস্‌দোদের চারদিকের সমস্ত জায়গা এবং ছোটখাট শহরগুলো যিহূদার অন্তর্গত ছিল। যিহূদার অধিবাসীরা ঘসার চারপাশের জায়গা, মাঠ ও কাছাকাছি সমস্ত শহরও পেয়েছিল। তাদের দেশ মিশরের নদী এবং ভূমধ্যসাগরের উপকূল পর্যন্ত ছড়ানো।

48 পাহাড়ি দেশের শহরগুলোও যিহূদার অধিবাসীরা পেয়েছিল, শহরগুলো হচ্ছে:

শামীর, যত্তীর সোখো, 49 দন্না, কিরিয়ৎ-সন্না (দবীর), 50 অনাব, ইষ্টিমোয়, আনীম, 51 গোশন, হোলোন এবং গীলো। মোট 11টি শহর ও তাদের চারিদিকের মাঠঘাট।

52 যিহূদার বাসিন্দারা এইসব শহরও পেয়েছিল:

অরাব, দূমা, ইশিয়ন, 53 যানীম, বৈৎ‌-তপূহ, অফেকা 54 হুমটা, কিরিয়ৎ-অর্ব (হিব্রোণ) এবং সীয়োর। 9টি শহর এবং চারপাশের মাঠসমূহ।

55 যিহূদার লোকরা এইসব শহরও পেয়েছিল:

মায়োন, কর্মিল, সীফ, যুটা 56 যিষ্রিয়েল, যক্দিযাম, সানোহ্, 57 কয়িন, গিবিয়া এবং তিম্না। মোট 10টি শহর এবং তাদের চারিদিকের মাঠগুলি।

58 যিহূদার অধিবাসীরা এই শহরগুলোও পেয়েছিল:

হলহূল, বৈৎ‌-সূর, গদোর, 59 মারৎ, বৈৎ‌-অনোত্‌ এবং ইল্তকোন, মোট 6টি শহর এবং তাদের চারিদিকের মাঠগুলো।

60 যিহূদার লোকদের রব্বা এবং কিরিয়ৎ-বাল (কিরিয়ৎ-যিয়ারীম) এই শহর দুটি দেওয়া হয়েছিল।

61 মরুভূমির শহরগুলোও যিহূদার বাসিন্দারা পেয়েছিল। সেগুলো হচ্ছে:

বৈৎ‌-অরাবা, মিদ্দীন, সকাখা, 62 নিব্শন, লবন শহর এবং ঐন্-গদী। মোট 6টি শহর এবং তাদের চারপাশের মাঠগুলো।

63 যিহূদার সৈন্যবাহিনী জেরুশালেমে বসবাসকারী যিবূষ লোকদের তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয় নি। তাই আজ জেরুশালেমে যিহূদাবাসীদের সঙ্গে যিবূষরাও বাস করছে।

লূক 1:57-80

যোহনের জন্ম

57 ইলীশাবেতের প্রসবের সময় হলে তিনি একটি পুত্র সন্তান প্রসব করলেন। 58 তাঁর প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনরা যখন শুনল যে প্রভু তাঁর প্রতি কি মহা দয়া করেছেন, তখন তারা তাঁর আনন্দে আনন্দিত হল।

59 শিশুটি যখন আট দিনের, সেই সময় তাঁরা শিশুটিকে নিয়ে সুন্নত করাতে এলেন। সবাই শিশুটির বাবার নাম অনুসারে শিশুর নাম সখরিয় রাখার কথা চিন্তা করছিলেন। 60 কিন্তু তার মা বলে উঠলেন, “না! ওর নাম হবে যোহন।”

61 তখন তাঁরা ইলীশাবেতকে বললেন, “আপনার আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে তো কারও ঐ নাম নেই!” 62 এরপর তারা ইশারা করে ছেলেটির বাবার কাছে জানতে চাইলেন তিনি কি নাম দিতে চান।

63 সখরিয় ইশারা করে লেখার ফলক চেয়ে নিলেন ও তাতে লিখলেন, “ওর নাম যোহন।” এতে তাঁরা সকলে আশ্চর্য হয়ে গেলেন, 64 তখনই সখরিয়র জিভের জড়তা চলে গেল ও মুখ খুলে গেল, আর তিনি ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগলেন। 65 আশপাশের সকলে এতে খুব ভয় পেয়ে গেল, যিহূদিয়ার পার্বত্য অঞ্চলের লোকরা সকলে এবিষয়ে বলাবলি করতে লাগল। 66 যারা এসব কথা শুনল তারা সকলেই আশ্চর্য হয়ে বলতে লাগল, “ভবিষ্যতে এই ছেলেটি কি হবে? কারণ প্রভুর শক্তি এর সঙ্গে আছে।”

সখরিয় ঈশ্বরের প্রশংসা করলেন

67 পরে ছেলেটির বাবা সখরিয় পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে ভাববাণী বলতে লাগলেন:

68 “ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা হোক্,
    কারণ তিনি তাঁর নিজের লোকদের সাহায্য করতে
    ও তাদের মুক্ত করতে এসেছেন।
69 আমাদের জন্য তিনি তাঁর দাস দায়ূদের বংশে
    একজন মহাশক্তিসম্পন্ন ত্রাণকর্তাকে দিয়েছেন।
70 এ বিষয়ে তাঁর পবিত্র ভাববাদীদের[a] মাধ্যমে
    তিনি বহুপূর্বেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
71 শত্রুদের হাত থেকে ও যারা আমাদের ঘৃণা করে
    তাদের কবল থেকে উদ্ধার করার প্রতিশ্রুতি।
72 তিনি বলেছিলেন, আমাদের পিতৃপুরুষদের প্রতি দয়া করবেন
    এবং তিনি সেই প্রতিশ্রুতি স্মরণে রেখেছেন।
73 এ সেই প্রতিশ্রুতি যা তিনি আমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহামের কাছে করেছিলেন।
74     শত্রুদের হাত থেকে আমাদের উদ্ধার করার প্রতিশ্রুতি
যেন আমরা নির্ভয়ে তাঁর সেবা করতে পারি:
75     আর আমাদের জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাঁর দৃষ্টিতে পবিত্র ও ধার্মিক থেকে তাঁর সেবা করে যেতে পারি।

76 “এখন হে বালক, তোমাকে বলা হবে পরমেশ্বরের ভাববাদী;
    কারণ তুমি প্রভুর পথ প্রস্তুত করবার জন্য তাঁর আগে আগে চলবে।
77 তুমি তাঁর লোকদের বলবে, ঈশ্বরের দয়ায়
    তোমরা পাপের ক্ষমা দ্বারা উদ্ধার পাবে।

78 “কারণ আমাদের ঈশ্বরের দয়া ও করুণার উর্দ্ধ থেকে
    এক নতুন দিনের ভোরের আলো আমাদের ওপর ঝরে পড়বে।
79 যারা অন্ধকার ও মৃত্যুর ছায়ায় বসে আছে তাদের ওপর সেই আলো এসে পড়বে;
    আর তা আমাদের শান্তির পথে পরিচালিত করবে।”

80 সেই শিশু যোহন বড় হয়ে উঠতে লাগলেন, আর দিন দিন আত্মায় শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকলেন। ইস্রায়েলীয়দের কাছে প্রকাশ্যে বেরিয়ে আসার আগে পর্যন্ত তিনি নির্জন স্থানগুলিতে জীবনযাপন করছিলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International