Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
2 শমূয়েল 23-24

দায়ূদের শেষ বাক্য

23 এইগুলি হল যিশয়ের পুত্র দায়ূদের শেষ বাক্য।

“এই বার্তা এসেছে সেই লোকটির কাছ থেকে
    যাকে ঈশ্বর মহান করেছেন।
যিনি যাকোবের ঈশ্বরের মনোনীত রাজা,
    ইস্রায়েলের সুমধুর গায়ক, এইগুলি তাঁর বাণী।
প্রভুর আত্মা আমার মধ্য দিয়ে কথা বলেছেন।
    আমার মুখ দিয়ে তাঁর বাক্য উচ্চারিত হয়েছে।
ইস্রায়েলের ঈশ্বর কথা বলেছেন।
    ইস্রায়েলের ঈশ্বর আমায় বলেছেন,
‘সেই ব্যক্তি যিনি সৎ‌ভাবে শাসন করেন।
সেই ব্যক্তি যে ঈশ্বরে শ্রদ্ধা রেখে শাসন করে।
    সেই ব্যক্তি ঊষাকালের প্রভাত কিরণের মত,
পরিষ্কার আকাশের মত, বৃষ্টির পর সূর্য কিরণের মত,
    সেই বৃষ্টির মত যার ছোঁয়ায় মাটির ওপর নতুন ঘাস জন্ম নেয়।’

“ঈশ্বর আমার পরিবারকে শক্তিশালী এবং সুরক্ষিত করেছেন।
    আমার সঙ্গে তিনি চিরদিনের জন্য একটি চুক্তি করেছেন।
এই চুক্তিকে ঈশ্বর সবদিক থেকে
    সুরক্ষিত ও সুনিশ্চিত করেছেন।
তাই, নিশ্চিতভাবে তিনি আমায় সকল জয় ও সাফল্য দেবেন।
    আমি যা চাই তার সবই তিনি আমায় দেবেন।

“কিন্তু মন্দ লোকরা কাঁটার মত।
    লোক কাঁটা রাখে না;
    তারা কাঁটাগুলো ছুঁড়ে ফেলে দেয়।
লোক যখন সেই কাঁটাগুলি স্পর্শ করে,
    তারা কাঠের বর্শার মত অথবা লোহার ডাণ্ডার মত নিজেদের আহত করে।
হ্যাঁ, সেইসব লোক কাঁটার মত।
    তাদের আগুনে নিক্ষেপ করা হবে,
    তারা সম্পূর্ণরূপে ভস্মীভূত হবে।”

তিনজন বীর যোদ্ধা

এইগুলি হল দায়ূদের বীর সৈনিকের নাম:

তখমোনীয় যোশেব-বশেবৎ‌‌। যোশেব-বশেবৎ‌‌ তিনজন শৌর্য্যপূর্ণ সেনার অধিনায়ক ছিল। তাকে ইস্নীয আদীনো বলে ডাকা হত। যোশেব-বশেবৎ‌‌ একসঙ্গে 800 লোককে হত্যা করেছিল।

পরবর্ত্তী বীর হল, অহোহীয়ের অধিবাসী, দোদয়ের পুত্র ইলিয়াসর। ইলিয়াসর সেই তিনজন যোদ্ধাদের একজন যারা পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় দায়ূদের সঙ্গে ছিল। তারা যুদ্ধের জন্য জমায়েত হয়েছিল কিন্তু ইস্রায়েলীয় সেনারা দৌড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। 10 ইলিয়াসর প্রচণ্ড অবসন্ন হওয়ার আগে পর্যন্ত পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল। সে দৃঢ়ভাবে তরবারি ধরে যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছিল। সেই দিন প্রভু ইস্রায়েলকে একটা বড় জয় এনে দিলেন। ইলিয়াসর যুদ্ধে জয়ী হলে লোকরা সকলে ফিরে এল। কিন্তু তারা শুধুমাত্র মৃত শত্রুদের থেকে জিনিসপত্র নিতে এসেছিল।

11 পরবর্তী বীর শম্ম। সে হরারীয় আগির সন্তান। পলেষ্টীয়রা একসঙ্গে যুদ্ধ করতে এল। একটি মুসুর ক্ষেতে তাদের লড়াই হল। পলেষ্টীয়দের কাছ থেকে লোকরা ছুটে পালিয়ে গেল। 12 কিন্তু শম্ম যুদ্ধক্ষেত্রের মাঝে দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ করল। সে পলেষ্টীয়দের পরাজিত করল। সেই দিন, প্রভু ইস্রায়েলকে এক মহান বিজয় এনে দিলেন।

13 একদিন, দায়ূদ অদুল্লম গুহাতে অবস্থান করছিলেন এবং পলেষ্টীয়রা রফায়ীম উপত্যকায় ছিল। দায়ূদের খুব ঘনিষ্ঠ ত্রিশ জন বীর যোদ্ধার[a] মধ্য থেকে এই তিন জন মাটিতে লম্বা হয়ে শুয়ে পড়ে সরীসৃপের মত বুকে ভর দিয়ে দায়ূদের গুহায় পৌঁছে গিয়েছিল এবং দায়ূদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল।

14 অন্য আর এক সময়, দায়ূদ এক দুর্গের মধ্যে ছিলেন এবং সেই সময় একদল পলেষ্টীয় সেনা বৈৎ‌লেহমে ছিল। 15 একটু জলের জন্য দায়ূদ তৃষ্ণার্ত ছিলেন। তিনি বললেন, “আমার ইচ্ছা, বৈৎ‌লেহমের নগরদ্বারের কুয়ো থেকে কেউ আমায় খানিকটা জল এনে দিক!” আসলে দায়ূদ প্রকৃতই জল চান নি, তিনি এমনি সে কথা বলেছিলেন।

16 কিন্তু সেই তিনজন শৌর্য্যপূর্ণ যোদ্ধা পলেষ্টীয় সেনাদের মধ্যে দিয়ে যুদ্ধ করল এবং গিয়ে বৈৎ‌লেহম শহরের ফটকের কাছে কুয়ো থেকে জল এনেছিল। তারা সেই জল দায়ূদের কাছে পৌঁছে দিয়েছিল। কিন্তু দায়ূদ সেই জল পান করতে অস্বীকার করলেন। তিনি সেই জল মাটিতে ঢেলে দিয়ে তা প্রভুর কাছে উৎসর্গ করলেন। 17 দায়ূদ বললেন, “হে প্রভু, এই জল আমি পান করতে পারি না। যদি আমি এই জল পান করি, তাহলে তা তাদের রক্ত পান করার মতই অন্যায় কাজ হবে, যারা আমার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই জল এনেছে।” এই কারণে দায়ূদ সেই জল পান করতে অস্বীকার করেন। এই তিন জন বীর এই রকম আরও অনেক সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে।

অন্যান্য বীর সৈন্যদের কথা

18 যোয়াবের ভাই এবং সরূয়ার পুত্রের নাম অবীশয়। অবীশয় এই তিনজন যোদ্ধার নেতা ছিল। অবীশয় 300 শত্রুর বিরুদ্ধে তার বর্শাকে ব্যবহার করেছে এবং তাদের হত্যা করেছে। সেও এই তিন জন বীর যোদ্ধার মতই বিখ্যাত হয়েছিল। 19 অবীশয় ঐ তিন জন বীরের মতই বিখ্যাত হয়েছিল। যদিও সে ঐ তিন জন বীরের একজনও নয় তবু সে ঐ তিন বীরের নেতা হয়ে গিয়েছিল।

20 এছাড়া যিহোয়াদার পুত্র বনায় ছিল আর এক বীর। সে এক পরাক্রমশালী পিতার সন্তান। সে কব্‌সেল থেকে এসেছিল। বনায় অনেকগুলি দুঃসাহসের কাজ করেছিল। মোয়াবীয় অরীয়েলের দুই পুত্রকে সে হত্যা করেছিল। একদিন যখন তুষারপাত হচ্ছে, বনায় মাটির একটা গর্তের মধ্যে ঢুকে এক সিংহকে বধ করে। 21 বনায় এক মিশরীয় সৈন্যকেও হত্যা করে। মিশরীয় সৈন্যটির হাতে একটা বর্শা ছিল। কিন্তু বনায়ের হাতে একটি মাত্র মুগুর ছিল। বনায় মিশরীয় সৈন্যটির বর্শাটা মুঠো করে চেপে ধরে এবং তার কাছ থেকে তা ছিনিয়ে নেয়। তারপর তার নিজের বর্শা দিয়ে সেই মিশরীয় সৈন্যকে হত্যা করে। 22 যিহোয়াদার পুত্র বনায় এই রকম নানা দুঃসাহসিক কাজ করেছিল। সে সেই তিন বীরপুরুষের মতই বিখ্যাত ছিল। 23 বনায় সেই ত্রিশ জন বীরের থেকেও বিখ্যাত ছিল, কিন্তু সে সেই তিন জন বীরপুরুষের একজন ছিল না। দায়ূদ বনায়কে তার দেহরক্ষীদের নেতা রূপে মনোনীত করেন।

তিরিশ জন বীরের কথা

24 ত্রিশ জন যোদ্ধার অন্যান্য বীররা হল:

যোয়াবের ভাই অসাহেল;

বৈৎ‌লেহমের দোদয়ের পুত্র ইল্হানন;

25 হরোদীয় শম্ম;

সহরোদীয় ইলীকা;

26 পল্টীয় হেলস্;

তকোয়ীয় ইক্কেশের পুত্র ঈরা;

27 অনাথোতীয় অবীয়েষর;

হূশাতীয় মবুন্নয়;

28 অহোহীয় সল্‌মোন;

নটোফাতীয় মহরয়;

29 নটোফৎ থেকে বানা এর পুত্র হেলব;

গিবিয়ার বিন্যামীনের রীবয়ের পুত্র ইত্তয়;

30 পিরিয়াথোনীয় বনায়;

গাশ উপত্যকা নিবাসী হিদ্দয়;

31 অর্বতীয় অবি-যলবোন;

বরহূমীয় অস্মাবৎ;

32 শাল্বোনীয় ইলিয়হবা;

যাশেনের পুত্ররা;

33 হরার থেকে শম্মের পুত্র যোনাথন;

হরার থেকে সাররের পুত্র অহীয়াম;

34 মাখাথীয় অহসবয়ের পুত্র ইলীফেলট;

গীলোনীয় অহীথোফলের পুত্র ইলীয়াম;

35 কর্মিলীয় হিষ্রয়;

অব্বীয় পারয়;

36 সোবা নিবাসী নাথনের পুত্র যিগাল;

গাদীয় বানী;

37 অম্মোনীয় সেলক;

বেরোতীয় নহরয় (যে সরূয়ার পুত্র যোয়াবের বর্ম বহন করেছিল।)

38 যিত্রীয় ঈরা;

যিত্রীয় গারেব;

39 এবং হিত্তীয় ঊরিয়।

সেই দলে মোট 37জন ছিল।

দায়ূদ তাঁর সৈন্য গণনার সিদ্ধান্ত নিলেন

24 প্রভু ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে আবার ক্রুদ্ধ হলেন। প্রভু দায়ূদকে ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করলেন। তিনি দায়ূদকে বললেন, “যাও, গিয়ে ইস্রায়েল এবং যিহূদার লোকসংখ্যা গণনা কর।”

রাজা দায়ূদ তাঁর সেনাপতি যোয়াবকে বললেন, “যাও, দান থেকে বের-শেবা পর্যন্ত লোকসংখ্যা গণনা করে এসো। তাহলে আমি জানতে পারব সেখানে কত লোকজন আছে।”

যোয়াব রাজাকে বললেন, “ঠিক কত সংখ্যক লোক আছে তাতে কিছু এসে যায় না। প্রভু, আপনার ঈশ্বর যেন তার 100 গুণ বেশী লোকজন আপনাকে দেন। এই ঘটনাগুলি যেন আপনি নিজের চোখে ঘটতে দেখেন। কিন্তু কেন আপনি এই গণনার কাজ করতে চাইছেন?”

রাজা দায়ূদ বেশ দৃঢ়তার সঙ্গে তাঁর সেনাপতিদের এবং যোয়াবকে লোকগণনার হুকুম দিলেন। তখন যোয়াব এবং সেনাপতি রাজার কাছ থেকে চলে গেল এবং লোকগণনার কাজ করতে লাগল। তারা যর্দন নদী পার হয়ে গেল। অরোয়ের নামক স্থানে তারা ঘাঁটি গাড়লো। তাদের ঘাঁটি শহরের ডানদিকে অবস্থিত ছিল। (এই শহরটি যাসেরের পথে যেতে গাদ উপত্যকার মধ্যে অবস্থিত ছিল।)

তারপর তারা পূর্বদিকে গিয়ে তহতীম-হদ্শি দেশের দিকে গিলিয়দে এল। তারপর তারা উত্তরদিকে দান-যান হয়ে সীদোন পর্যন্ত গেল। তারা সোর দূর্গেও গিয়েছিল। তারা হিব্বীয় ও কনানীয়দের প্রত্যেকটি শহরে গিয়েছিল। দক্ষিণ দিকে তারা যিহূদার দক্ষিণস্থ বের্-শেবা পর্যন্ত গিয়েছিল। গোটা দেশে যেতে তাদের 9 মাস 20 দিন সময় লেগেছিল। তারা 9 মাস 20 দিন পরে জেরুশালেমে ফিরে এসেছিল।

যোয়াব রাজার হাতে লোকসংখ্যার তালিকা তুলে দিল। তরবারি ব্যবহার করতে পারে এমন লোকের সংখ্যা ইস্রায়েলে ছিল 800,000 এবং যিহূদার লোকসংখ্যা ছিল 500,000 জন।

প্রভু দায়ূদকে শাস্তি দিলেন

10 লোকসংখ্যা গণনার পর দায়ূদ লজ্জিত হলেন। দায়ূদ প্রভুকে বললেন, “আমি যা করেছি তাতে আমার মস্ত বড় পাপ হয়েছে। হে প্রভু, মিনতি করি, আপনি আমার পাপ ক্ষমা করে দিন। আমি সত্যি বোকার মত কাজ করেছি।”

11 দায়ূদ যখন সকালে ঘুম থেকে উঠলেন, তখন দায়ূদের ভাববাদী গাদের কাছে প্রভুর বাক্য নেমে এল। 12 প্রভু গাদকে বললেন, “যাও গিয়ে দায়ূদকে বল, ‘প্রভু এই কথাই বললেন: আমি তোমাকে তিনটি বিষয় দিচ্ছি। তুমি পছন্দ কর কোনটা আমি তোমার প্রতি বরাদ্দ করব।’”

13 গাদ দায়ূদের কাছে এসে বলল, “তিনটি বিষয়ের মধ্যে থেকে একটা বেছে নাও: তোমার রাজ্যে সাত বছরের দুর্ভিক্ষ। তোমার শত্রুরা তিন মাস ধরে তোমায় তাড়া করবে। তোমার দেশে তিন দিনের মহামারী আসবে। এ বিষয়ে চিন্তা করে, তিনটের মধ্যে একটা বিষয় বেছে নাও। তোমার কোনটা পছন্দ হল সে সম্পর্কে আমি প্রভুকে বলব। প্রভু আমাকে তোমার কাছে পাঠিয়েছেন।”

14 দায়ূদ গাদকে বলল, “আমি সত্যিই খুব সমস্যায় পড়েছি। কিন্তু প্রভু সত্যি বড় ক্ষমাশীল। সুতরাং প্রভুই আমাদের শাস্তি দিন। আমার শাস্তি যেন লোকদের কাছ থেকে না আসে।”

15 অতএব প্রভু ইস্রায়েলে একটি মহামারী পাঠালেন। এই মহামারী সকালে শুরু হল এবং মনোনীত সময় পর্যন্ত চলল। দান থেকে বের্-শেবা পর্যন্ত সারা ইস্রায়েলের 70,000 লোক মারা গেল। 16 দেবদূত জেরুশালেমকে ধ্বংস করার জন্য তাঁর বাহু ওপরে ওঠালেন। ঈশ্বর শাস্তির ব্যাপারে তাঁর মন পরিবর্তন করলেন। যে দূত ধ্বংস করছিলেন, প্রভু তাঁকে বললেন, “অনেক হয়েছে। তোমার হাত গুটিয়ে নাও।” সেই সময় তাঁরা যিবূষীয় অরৌনার খামারের কাছে ছিলেন।

দায়ূদ অরৌণার শস্য মাড়ানোর জমি কিনলেন

17 যে দূত লোকদের হত্যা করছিল দায়ূদ তাকে দেখলেন। দায়ূদ প্রভুর সঙ্গে কথা বললেন। দায়ূদ বললেন, “আমি পাপ করেছি। আমি গর্হিত কাজ করেছি। আমি ওদের যা করতে বলেছি এইসব লোক তাই করেছে। তারা বাধ্য মেষের মত আমায় অনুসরণ করেছে। তারা কোন ভুল করে নি। দয়া করে আপনার শাস্তি আমাকে এবং আমার পিতার পরিবারকে দিন।”

18 সেই দিন গাদ দায়ূদের কাছে এল। গাদ দায়ূদকে বলল, “যাও, যিবূষীয় অরৌণার শস্য মাড়ানোর জমিতে প্রভুর জন্য একটি বেদী তৈরী কর।” 19 যেমন গাদ তাকে বলল সেইমত দায়ূদ করল। প্রভু যা চান দায়ূদ ঠিক তাই করল। দায়ূদ অরৌণার সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। 20 অরৌণা দেখল যে রাজা দায়ূদ এবং তাঁর আধিকারিকরা তার সঙ্গে দেখা করতে আসছে। অরৌণা বাইরে বেরিয়ে গিয়ে মাথা নত করে প্রণাম করল। 21 অরৌণা বলল, “আমার গুরু এবং রাজা কেন আমার কাছে এসেছেন?”

দায়ূদ উত্তর দিলেন, “আমি তোমার কাছ থেকে খামার বাড়ীটি কিনতে এসেছি। তারপর আমি প্রভুর জন্য একটা বেদী বানাব। তাহলে এই মহামারী বন্ধ হয়ে যাবে।”

22 অরৌণা দায়ূদকে বলল, “হে আমার গুরু এবং রাজা, ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ হিসেবে আপনি যা খুশী তাই নিতে পারেন। এখানে হোমবলির জন্য কিছু গরু এবং কাঠের জন্য এই ধান ঝাড়াইয়ের পাটাতন এবং বাঁকগুলোও দিয়ে দিচ্ছি। 23 হে রাজা, এইসব আমি আপনাকে দিয়ে দিচ্ছি!” অরৌণা রাজাকে আরও বলল, “প্রভু, আপনার ঈশ্বর, যেন আপনার প্রতি প্রসন্ন হন।”

24 কিন্তু রাজা অরৌণাকে বললেন, “না! আমি তোমাকে এই জমির দাম দিয়ে দেব। আমি আমার প্রভু ঈশ্বরকে হোমবলি উৎসর্গ করব না যার জন্য আমি কোন অর্থ দিইনি।”

তখন দায়ূদ 50 শেকেল রূপোর বিনিময়ে সেই ঢেঁকি এবং গরুগুলো কিনে নিলেন। 25 তারপর দায়ূদ প্রভুর উদ্দেশ্যে সেখানে এক বেদী নির্মাণ করলেন। তিনি তার ওপরে হোমবলি এবং মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করলেন।

সারা দেশের জন্য দায়ূদের প্রার্থনায় প্রভু সাড়া দিলেন। প্রভু সেই মহামারীকে ইস্রায়েলে থামিয়ে দিলেন।

লূক 19:1-27

সক্কেয়

19 যীশু যিরীহো শহরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেখানে সক্কেয় নামে একজন লোক ছিল। সে ছিল একজন উচ্চ-পদস্থ কর আদায়কারী ও খুব ধনী ব্যক্তি। কে যীশু তা দেখার জন্য সক্কেয় খুবই চেষ্টা করছিল, কিন্তু বেঁটে হওয়াতে ভীড়ের জন্য যীশুকে দেখতে পাচ্ছিল না। তাই সবার আগে ছুটে গিয়ে যে পথ ধরে যীশু আসছিলেন, সেই পথের পাশে একটা সুকমোর গাছে উঠল যাতে সেখান থেকে যীশুকে দেখতে পায়। যীশু সেখানে এসে ওপর দিকে তাকিয়ে বললেন, “সক্কেয় তাড়াতাড়ি নেমে এস, কারণ আজ আমায় তোমার ঘরে থাকতে হবে।”

সক্কেয় তাড়াতাড়ি নেমে এসে মহানন্দে যীশুকে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে অভ্যর্থনা জানাল। সেখানে যারা ছিল, এই দেখে তারা সকলে অনুযোগের সুরে বলল, “উনি একজন পাপীর ঘরে অতিথি হয়ে গেলেন।”

কিন্তু সক্কেয় উঠে দাঁড়িয়ে প্রভুকে বলল, “প্রভু দেখুন, আমি আমার সম্পদের অর্ধেক গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দেব, আর যদি কাউকে ঠকিয়ে থাকি তবে তার চতুর্গুণ ফিরিয়ে দেব।”

যীশু তাকে বললেন, “আজ এই বাড়িতে পরিত্রাণ এসেছে, যেহেতু এই মানুষটি অব্রাহামের পুত্র। 10 কারণ যা হারিয়ে গিয়েছিল তা খুঁজে বার করতে ও উদ্ধার করতেই মানবপুত্র এ জগতে এসেছেন।”

ঈশ্বর প্রদত্ত জিনিস ব্যবহর কর

(মথি 25:14-30)

11 যীশু জেরুশালেমের কাছাকাছি এগিয়ে গেলে লোকদের ধারণা হল যে তখনই বুঝি ঈশ্বরের রাজ্য এসে পড়ল। তাই তিনি তাদের কাছে এই দৃষ্টান্তটি দিলেন। 12 যীশু বললেন, “একজন সম্ভ্রান্ত বংশের লোক রাজ পদ নিয়ে ফিরে আসার জন্য দূর দেশে যাত্রা করলেন। 13 যাবার আগে তিনি তাঁর দশজন কর্মচারীকে ডেকে প্রত্যেকের হাতে একটি করে মোট দশটি মোহর দিয়ে বললেন, ‘আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত এই দিয়ে ব্যবসা করো।’ 14 কিন্তু তাঁর প্রজারা তাকে ঘৃণা করত; আর তিনি চলে যাওযার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় লোকেরা একজন প্রতিনিধির মাধ্যমে বলে পাঠাল, ‘আমরা চাই না যে এই লোক আমাদের রাজা হোক্!’

15 “কিন্তু সেই ব্যক্তি রাজপদ নিয়ে বাড়ি ফিরে এলেন; আর যে কর্মচারীদের তিনি টাকা দিয়েছিলেন তাদের সকলকে ডেকে পাঠালেন। তিনি দেখতে চাইলেন যে তারা কে কত লাভ করেছে। 16 প্রথম জন এসে বলল, ‘প্রভু, আপনার এক মোহর খাটিয়ে দশ মোহর লাভ হয়েছে।’ 17 তখন মনিব তাকে বললেন, ‘খুব ভাল করেছ, তুমি খুব ভাল কর্মচারী। তুমি অল্প বিষয়ে বিশ্বস্ত ছিলে তাই তোমাকে দশটি শহরের শাসক হিসেবে নিয়োগ করা হবে।’

18 “এরপর দ্বিতীয় জন এসে বলল, ‘প্রভু আপনার এক মোহর খাটিয়ে পাঁচ মোহর লাভ হয়েছে।’ 19 তিনি তাকে বললেন, ‘তোমাকে পাঁচটি শহরের শাসনভার দেওয়া হবে।’

20 “এরপর আর একজন এসে বলল, ‘প্রভু, এই নিন আপনার মোহর, এটা আমি রুমালে বেঁধে আলাদা করে রেখে দিয়েছিলাম। 21 আপনার বিষয়ে আমার খুব ভয় ছিল, কারণ আপনি খুব কঠিন লোক। আপনি যা জমা করেন নি তাই নিয়ে থাকেন, আর যা বোনেন না তার ফসল কাটেন।’

22 “তখন তার প্রভু তাকে বললেন, ‘তোমার কথা অনুসারেই আমি তোমার বিচার করব, তুমি একজন দুষ্ট কর্মচারী। তুমি জানতে আমি একজন কঠিন লোক, আমি যা জমা করি না তাই পেতে চাই, যা বুনি না তাই কাটি। 23 তবে তুমি আমার টাকা কেন মহাজনদের কাছে জমা রাখনি? তাহলে তো আমি টাকার সুদটাও অন্তত পেতাম।’ 24 আর যারা সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল তিনি তাদের বললেন, ‘এর কাছ থেকে ঐ মোহর নিয়ে নাও আর যার দশ মোহর আছে তাকে ওটা দাও।’

25 “তখন তারা তাকে বলল, ‘প্রভু, ওর তো দশটা মোহর আছে!’

26 “প্রভু বললেন, ‘আমি তোমাদের বলছি, যার আছে তাকে আরো দেওয়া হবে আর যার নেই, তার যেটুকু আছে তাও কেড়ে নেওয়া হবে। 27 কিন্তু যারা আমার শত্রু, যারা চায় নি যে আমি তাদের ওপর রাজত্ব করি, তাদের এখানে নিয়ে এসে আমার সামনেই মেরে ফেল।’”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International