Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
2 শমূয়েল 1-2

দায়ূদ শৌলের মৃত্যু সম্পর্কে জানলেন

দায়ূদ অমালেকীয়দের পরাজিত করে সিক্লগে ফিরে গেলেন। শৌলের মৃত্যুর ঠিক পরে দায়ূদ সিক্লগে দু’দিন থাকলেন। তৃতীয় দিন একজন তরুণ সৈনিক সিক্লগে এলো। লোকটির জামাকাপড় ছেঁড়া, মাথায় ধূলোবালি ভর্ত্তি।[a] সে দায়ূদের কাছে এসে মাথা নত করে তাঁকে প্রণাম করলো।

দায়ূদ তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কোথা থেকে আসছো?”

লোকটি দায়ূদকে উত্তর দিলো, “আমি এইমাত্র ইস্রায়েলীয় শিবির থেকে আসছি।”

দায়ূদ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “যুদ্ধে কারা জিতেছে বল?”

লোকটি উত্তর দিলো, “আমাদের লোক যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে গেছে। অনেক লোক যুদ্ধে মারা গেছে। এমনকি শৌল এবং তার পুত্র যোনাথনও যুদ্ধে মারা গেছে।”

দায়ূদ সৈনিককে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কেমন করে জানলে যে শৌল এবং তার পুত্র যোনাথন মারা গেছে?”

সৈনিক উত্তর দিলো, “আমি তখন গিলবোয় পর্বতে ছিলাম। আমি শৌলকে তার বর্শার উপর ভর দিয়ে ঝুঁকে পড়তে দেখেছি। তখন পলেষ্টীয় রথ ও অশ্বারোহী সৈনিকরা ক্রমশঃ শৌলের কাছাকাছি এগিয়ে আসছিলো। শৌল পিছন ফিরে আমাকে দেখতে পেলেন, আমাকে ডাকলেন এবং আমি সাড়া দিলাম। শৌল জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমি কে। আমি বলেছিলাম যে আমি একজন অমালেকীয়। তখন শৌল বলেছিলেন, ‘আমাকে মেরে ফেল। আমি প্রচণ্ডভাবে আহত এবং আমি প্রায় মরতে চলেছি।’ 10 তিনি এমন মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন যে আমি বুঝলাম তিনি আর বাঁচবেন না। সুতরাং আমি তাঁকে হত্যা করলাম। তারপর আমি তাঁর মাথা থেকে রাজমুকুট, বাহু থেকে বালা খুলে নিয়েছিলাম। হে আমার মনিব, সেগুলি নিয়ে এখন আমি আপনার কাছে এসেছি।”

11 তখন দায়ূদ নিজের বস্ত্র ছিঁড়ে দুঃখ প্রকাশ করলেন এবং দায়ূদের সঙ্গে যারা ছিল, তারাও সেই ভাবে দুঃখ প্রকাশ করল। 12 তারা দুঃখে কাঁদতে লাগল ও সন্ধ্যা পর্যন্ত উপবাস করে রইল। তারা শৌল এবং তার পুত্র যোনাথনের মৃত্যুর জন্য শোক প্রকাশ করতে লাগল। দায়ূদ এবং তাঁর সঙ্গীরা, প্রভুর যে সমস্ত লোকরা নিহত হয়েছে তাদের জন্য এবং ইস্রায়েলের জন্য কাঁদলেন। কারণ শৌল এবং তাঁর পুত্র যোনাথন এবং বহু ইস্রায়েলীয় যুদ্ধে মারা গিয়েছিল।

দায়ূদ সেই অমালেকীয়কে হত্যার আদেশ দিলেন

13 তখন দায়ূদ, যে সৈনিক তাকে শৌলের মৃত্যুর সংবাদ দিয়েছিল, তার সঙ্গে কথা বললেন। দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কোথা থেকে আসছো?”

সৈনিক উত্তর দিল, “আমি এক বিদেশীর ছেলে। আমি একজন অমালেকীয়।”

14 দায়ূদ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “প্রভুর অভিষিক্ত রাজাকে হত্যা করতে তুমি ভয় পেলে না কেন?”

15-16 তখন দায়ূদ সেই অমালেকীয়কে বললেন, “তুমিই তোমার মৃত্যুর জন্য দায়ী। তুমিই বলেছিলে যে তুমি প্রভুর অভিষিক্ত রাজাকে হত্যা করেছ। সুতরাং তোমার নিজের কথাই তোমার অপরাধের প্রমাণ দিচ্ছে।” এরপর দায়ূদ তাঁর এক তরুণ ভৃত্যকে ডেকে এই অমালেকীয়কে হত্যা করতে আদেশ দিলেন। তখন সেই ইস্রায়েলীয় যুবক সেই অমালেকীয়কে হত্যা করল।

শৌল এবং যোনাথনের সম্বন্ধে দায়ূদের শোক গীত

17 শৌল ও যোনাথন সম্পর্কে দায়ূদ একটি শোক গীত গাইলেন। 18 সেই গান যিহূদার অধিবাসীদের শিখিয়ে দেবার জন্য দায়ূদ তাঁর অনুগামীদের আদেশ দিলেন। এ গান “ধনু” নামে পরিচিত যা যাশের গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে।

19 “হে ইস্রায়েল, তোমার পাহাড়ে তোমার সৌন্দর্য বিনষ্ট হয়েছিল।
    হায়! সেই বীরদের কেমন করে পতন হল!
20 এ খবর গাতে জানিও না।
    অস্কিলোনের পথে পথে এ খবর প্রচার করো না।
এতে পলেষ্টীয়রা উল্লাস করবে।
    ঐ সব বিদেশীরা[b] আনন্দিত হবে।

21 “গিল্‌বোয় পর্বতে উৎসর্গ ক্ষেত্রগুলির[c] ওপরে
    যেন কোন বৃষ্টি বা শিশির কণা না পড়ে।
সেখানে বীরপুরুষদের ঢালগুলিতে মরচে পড়েছে।
    শৌলের ঢাল তেল দিয়ে ঘষা হয় নি।
22 যোনাথনের ধনুক তার শত্রুদের হত্যা করেছে।
    শৌলের তরবারিও শত্রুদের হত্যা করেছে।
যোনাথন ও শৌল পরাক্রান্ত শত্রু সৈন্যদের রক্তপাত ঘটিয়েছে।
তাঁরা শক্তিমান লোকদের মেদ মাংস ছিন্নভিন্ন করেছেন।

23 “শৌল এবং যোনাথন একে অপরকে ভালোবাসতেন
    এবং জীবনভর একে অপরের সঙ্গ উপভোগ করেছিলেন।
    মৃত্যুও তাঁদের আলাদা করতে পারে নি।
তাঁদের গতি ঈগলের থেকেও তীব্র ছিলো।
    তাঁরা সিংহের থেকেও বলবান ছিলেন।
24 হে ইস্রায়েলের কন্যাগণ, শৌলের জন্য বিলাপ কর।
    শৌল তোমাদের সুন্দর লাল পোষাক দিয়েছেন
    এবং তা সোনার অলঙ্কারে ঢেকে দিয়েছেন।

25 “বীরগণ যুদ্ধে ভূপতিত হলেন।
    যোনাথন গিলবোয় পর্বতে মৃত্যুবরণ করলেন।
26 যোনাথন, ভাই আমার, আমি তোমার জন্য শোকাভিভূত।
    তুমি আমার সঙ্গে খুব ভাল ব্যবহার করেছ।
আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা
    একজন নারীর ভালোবাসার থেকেও অনুপম ছিল।
27 বীরগণ যুদ্ধে ভূপতিত হলেন।
    যুদ্ধের সকল অস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রে হারিয়ে গিয়েছিল।”

দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীরা হিব্রোণে গেলেন

পরে দায়ূদ প্রভুর কাছ থেকে উপদেশ চাইলেন। দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি যিহূদার শহরগুলির কোন একটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব?”

প্রভু দায়ূদকে বললেন, “হ্যাঁ।”

দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কোথায় যাব?”

প্রভু বললেন, “হিব্রোণে।”

তখন দায়ূদ এবং তাঁর দুই স্ত্রী হিব্রোণে রওনা হলেন। (তাঁর স্ত্রীরা ছিলেন যিষ্রিয়েলের অহীনোয়ম এবং কর্ম্মিলের নাবলের বিধবা পত্নী অবীগল।) দায়ূদ তাঁর সঙ্গীগণ এবং তাদের পরিবারকেও সঙ্গে নিলেন। তারা প্রত্যেকে হিব্রোণ এবং নিকটবর্তী শহরগুলিতে বসবাস করতে লাগল।

যিহূদার লোকরা হিব্রোণে এসে দায়ূদকে যিহূদার রাজারূপে অভিষিক্ত করল। তারপর তারা দায়ূদকে বলল, “যাবেশ গিলিয়দের লোকরা শৌলকে কবর দিয়েছে।”

দায়ূদ যাবেশ গিলিয়দের লোকদের কাছে বার্তাবাহক পাঠালেন। বার্তাবাহকরা যাবেশের লোকদের বলল, “প্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করুন কেননা তোমরা তোমাদের গুরু শৌলের ছাই[d] কবর দিয়ে তাঁর প্রতি দয়া দেখিয়েছ। প্রভু তোমাদের প্রতি ন্যায়সঙ্গত আচরণ করবেন এবং সদয় হবেন। আমিও তোমাদের প্রতি সদয় হব। এখন তোমরা শক্তিশালী ও সাহসী হও। তোমাদের মনিব শৌল নিহত হয়েছেন। কিন্তু যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী আমাকে তাদের রাজারূপে অভিষিক্ত করেছে।”

ঈশ্ বোশত্‌ রাজা হলেন

নেরের পুত্র অব্নের শৌলের সৈন্যবাহিনীর সেনাপতি ছিলেন। অব্নের শৌলের পুত্র ঈশ্ বোশত্‌কে মহনয়িমে নিয়ে গেলেন এবং তাকে গিলিয়দ, অশূরীয়, যিষিয়েল, ইফ্রয়িম, বিন্যামীন এবং সারা ইস্রায়েলের রাজা করে দিলেন।

10 ঈশ্ বোশত্‌ শৌলের পুত্র ছিলেন। যখন তিনি ইস্রায়েলের শাসনভার নেন, তখন তাঁর বয়স 40 বছর। তিনি ইস্রায়েলে দুবছর রাজত্ব করেছিলেন। কিন্তু যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী দায়ূদকে অনুসরণ করল। 11 দায়ূদ ছিলেন হিব্রোণের রাজা। দায়ূদ যিহূদার পরিবারগোষ্ঠীর ওপর সাত বছর ছ’মাস শাসনকার্য চালিয়েছিলেন।

একটি মারাত্মক লড়াই

12 নেরের পুত্র অব্নের এবং শৌলের পুত্র ইশ্বোশতের কিছু আধিকারিকগণ মহনয়িম থেকে গিবিয়োনে গেল। 13 সরূয়ার পুত্র যোয়াব এবং দায়ূদের আধিকারিকরাও গিবিয়োনে গেল। গিবিয়োনের এক পুকুরের কাছে তাদের দেখা হল। পুকুরের একদিকে অব্নেরের দল এবং অন্যদিকে যোয়াবের দল বসল।

14 অব্নের যোয়াবকে বলল, “আমাদের তরুণ যোদ্ধারা উঠে দাঁড়াক এবং তাদের মধ্যে একটা লড়াই হয়ে যাক।”

যোয়াব বলল, “নিশ্চয়ই, লড়াই হোক্।”

15 তখন তরুণ যোদ্ধারা উঠে দাঁড়াল। দুই দেশই, লড়াইয়ের জন্য তাদের কত লোকজন আছে তা গুনে নিল। তারা বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠী থেকে শৌলের পুত্র ঈশ্বোশতের পক্ষে লড়াইয়ের জন্য বারো জনকে বেছে নিলো। অন্যদিকে যোয়াবের দল দায়ূদের আধিকারিকদের মধ্যে থেকে বারো জনকে বেছে নিল। 16 তাদের প্রত্যেকে প্রত্যেকের প্রতি পক্ষের মাথা আঁকড়ে ধরে তাদের তরবারি দিয়ে পাশে ঢুকিয়ে দিল, তাই তারা একসঙ্গে মাটিতে পড়ে গেল। এই জন্য এই জায়গাকে বলা হয় “ছুরিকা ভূমি।” এটা গিবিয়োনের একটা জায়গা।

17 সেই লড়াই একটা ভয়ঙ্কর যুদ্ধের রূপ নিয়েছিল এবং দায়ূদের লোকজন সেদিন অব্নের এবং ইস্রায়েলীয়দের হারিয়ে দিয়েছিল।

অব্নের আসাহেলকে হত্যা করল

18 সরূয়ার তিন পুত্র ছিল: যোয়াব, অবীশয় এবং অসাহেল। অসাহেল খুব দ্রুত দৌড়াতে পারত। সে বন্য হরিণের মতই দ্রুতগামী ছিল। 19 অসাহেল সোজা অব্নেরের দিকে দৌড়ে গেল এবং তাকে তাড়া করল। 20 অব্নের পিছনে তাকিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করল, “তুমিই কি অসাহেল?”

অসাহেল বললেন, “হ্যাঁ, আমিই অসাহেল।”

21 অব্নের অসাহেলকে আঘাত করতে চায় নি। তাই, অব্নের অসাহেলকে বলল, “আমাকে তাড়া কর না। বরং একজন তরুণ সৈনিককে তাড়া কর। খুব সহজেই তুমি তার বর্মটি তোমার জন্য পেয়ে যেতে পারো।” কিন্তু অসাহেল অবনেরকে তাড়া করা থেকে ক্ষান্ত হল না।

22 অব্নের আবার অসাহেলকে বলল, “দাঁড়াও, না হলে আমি তোমাকে হত্যা করতে বাধ্য হব। তাহলে কেমন করে আমি আবার তোমার ভাই যোয়াবের মুখের দিকে তাকাবো?”

23 কিন্তু অসাহেল অব্নেরকে তাড়া করা থেকে ক্ষান্ত হল না। তখন অব্নের তার বর্শার গোড়ার দিকটা অসাহেলের পেটে ঢুকিয়ে দিল। বর্শা তার পেটে ঢুকে এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে গেল এবং সেখানেই অসাহেলের মৃত্যু হল।

যোয়াব এবং অবীশয় অব্নেরকে তাড়া করলো

অসাহেলের দেহ মাটিতে পড়ে রইলো। সেই রাস্তা দিয়ে যারা ছুটে যাচ্ছিল তারা সবাই অসাহেলকে দেখার জন্য দাঁড়িয়ে পড়লো। 24 কিন্তু যোয়াব এবং অবীশয় অব্নেরকে তাড়া করতে লাগল। যখন তারা অম্মা পাহাড়ের কাছে এলো তখন সূর্য অস্ত যেতে বসেছে। (গিবিয়োন মরুভূমির দিকে যেতে গীহের সামনেই ছিল অম্মা পাহাড়।) 25 পর্বতের চূড়ায়, বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা অব্নেরের চারদিকে একত্রিত হল।

26 অব্নের চিৎকার করে যোয়াবকে বলল, “আমরা কি চিরদিন লড়াই করে একে অপরকে হত্যা করে যাবো? তুমি খুব ভালো করেই জানো যে এর পরিণাম হবে শুধুই দুঃখ। এইসব লোকদের বল তারা যেন তাদের নিজের ভাইকে তাড়া না করে।”

27 তখন যোয়াব বলল, “এ কথা বলে তুমি খুব ভালো করলে। যদি তুমি কিছু না বলতে, এইসব লোকরা সকাল পর্যন্ত তাদের ভাইকে তাড়া করতে থাকত। ঈশ্বর যেমন আছেন এ কথা যেমন সত্য তেমনি এটাও সত্য।” 28 তখন যোয়াব একটি শিঙা বাজাল এবং তার লোকরা ইস্রায়েলীয়দের পেছনে তাড়া করা বন্ধ করল। তারা ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে আর লড়াই করার চেষ্টাও করল না।

29 অব্নের এবং তার অনুগামীরা সারারাত ধরে যর্দন উপত্যকায় হেঁটে যর্দন নদী পার হল এবং পরদিন সারা দিন হেঁটে মহানয়িমে উপস্থিত হল।

30 যোয়াব অব্নেরকে তাড়া করা থেকে বিরত হল ও ফিরে গেল। যোয়াব তার লোকদের জড়ো করল এবং জানতে পারল যে অসাহেল সহ দায়ূদের 19 জন আধিকারিকরা নিখোঁজ। 31 কিন্তু দায়ূদের আধিকারিকরা, অব্নেরের দল থেকে বিন্যামীনের পরিবারের 360 জনকে হত্যা করেছিল। 32 দায়ূদের আধিকারিকরা অসাহেলকে নিয়ে গিয়ে বৈৎ‌লেহেমে তার পিতার কবরে কবর দিলো।

যোয়াব এবং তার সঙ্গীরা সারারাত ধরে হেঁটে চলল। যখন তারা হিব্রোণে পৌঁছালো তখন সকালের সূর্য সবে উঠেছে।

লূক 14:1-24

বিশ্রামবারে আরোগ্যদান করা কি উচিত?

14 এক বিশ্রামবারে যীশু ফরীশীদের একজন নেতৃস্থানীয় লোকের বাড়িতে নিমন্ত্রণ খেতে গেলেন। সেখানে সমবেত লোকেরা যীশুর প্রতি লক্ষ্য রাখছিল। যীশুর সামনে একটি লোক ছিল যে উদরী রোগে ভুগছিল। যীশু তখন ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীদের লক্ষ্য করে জিজ্ঞেস করলেন, “বিশ্রামবারে কাউকে সুস্থ করা কি বিধিসম্মত?” কিন্তু তারা সকলে চুপ করে রইল। তখন যীশু সেই অসুস্থ লোকটিকে ধরে তাকে সুস্থ করলেন, পরে বিদায় নিলেন। এরপর তিনি তাদের দিকে লক্ষ্য করে বললেন, “তোমাদের মধ্যে কারোর সন্তান বা গরু যদি বিশ্রামবারে কুয়োয় পড়ে যায় তাহলে তোমরা কি সঙ্গে সঙ্গে তাকে সেখান থেকে টেনে তুলবে না?” তারা কেউ এই কথার জবাব দিতে পারল না।

নিজেকে বড় করে তুলো না

যীশু দেখলেন নিমন্ত্রিত অতিথিরা কিভাবে নিজেরাই ভোজের শ্রেষ্ঠ আসন দখল করার চেষ্টা করছে। তাই তিনি তাদের কাছে এই দৃষ্টান্তটি নিয়ে বললেন, “বিয়ের ভোজে যখন কেউ তোমাদের নিমন্ত্রণ করে তখন সেখানে গিয়ে সম্মানের আসনটা দখল করে বসবে না। কারণ তোমার চেয়ে হয়তো আরো সম্মানিত কাউকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। তা করলে যিনি তোমাদের উভয়কেই নিমন্ত্রণ করেছেন, তিনি এসে তোমায় বলবেন, ‘এঁকে তোমার জায়গাটা ছেড়ে দাও!’ তখন তুমি লজ্জায় পড়বে, কারণ তোমাকে সবচেয়ে নীচু জায়গায় বসতে হবে।

10 “কিন্তু তুমি যখন নিমন্ত্রিত হয়ে যাও, সেখানে গিয়ে সবচেয়ে নীচু জায়গায় বসবে। যিনি তোমায় নিমন্ত্রণ করেছেন তিনি এসে এরকম দেখে তোমায় বলবেন, ‘বন্ধু এস, এই ভাল আসনে বস।’ তখন নিমন্ত্রিত অন্য সব অতিথিদের সামনে তোমার সম্মান হবে। 11 যে কেউ নিজেকে সম্মান দিতে চায় তাকে নত করা হবে, আর যে নিজেকে নত করে তাকে সম্মানিত করা হবে।”

কি করলে তুমি পুরস্কৃত হবে

12 তখন যে তাঁকে নিমন্ত্রণ করেছিল, তাকে যীশু বললেন, “তুমি যখন ভোজের আয়োজন করবে তখন তোমার বন্ধু, ভাই, আত্মীয়স্বজন বা ধনী প্রতিবেশীদের নিমন্ত্রণ করো না, কারণ তারা তোমাকে পাল্টা নিমন্ত্রণ করে প্রতিদান দেবে। 13 কিন্তু তুমি যখন ভোজের আয়োজন করবে তখন দরিদ্র, খোঁড়া, বিকলাঙ্গ ও অন্ধদের নিমন্ত্রণ করো। 14 তাতে যাদের প্রতিদান দেবার ক্ষমতা নেই, সেই রকম লোকদের নিমন্ত্রণ করার জন্য ধার্মিকদের পুনরুত্থানের সময় ঈশ্বর তোমায় পুরস্কার দেবেন।”

এক বিরাট ভোজের কাহিনী

(মথি 22:1-10)

15 যারা খেতে বসেছিল তাদের মধ্যে একজন এই কথা শুনে যীশুকে বলল, “ঈশ্বরের রাজ্যে যারা খেতে বসবে তারা সকলে ধন্য।”

16 তখন যীশু তাকে বললেন, “একজন লোক এক বিরাট ভোজের আয়োজন করেছিল আর সে অনেক লোককে নিমন্ত্রণ করেছিল। 17 ভোজ খাওয়ার সময় হলে সে তার দাসকে দিয়ে নিমন্ত্রিত লোকদের বলে পাঠাল, ‘তোমরা এস! কারণ এখন সবকিছু প্রস্তুত হয়েছে!’ 18 তারা সকলেই নানা অজুহাত দেখাতে শুরু করল। প্রথম জন তাকে বলল, ‘আমায় মাপ কর, কারণ আমি একটা ক্ষেত কিনেছি, তা এখন আমায় দেখতে যেতে হবে।’ 19 আর একজন বলল, ‘আমি পাঁচ জোড়া বলদ কিনেছি, এখন সেগুলি একটু পরখ করে নিতে চাই, তাই আমি যেতে পারব না; আমায় মাপ কর।’ 20 এরপর আর একজন বলল, ‘আমি সবে মাত্র বিয়ে করেছি, সেই কারণে আমি আসতে পারব না।’

21 “সেই দাস ফিরে গিয়ে তার মনিবকে একথা জানালে, তার মনিব রেগে গিয়ে তার দাসকে বলল, ‘যাও, শহরের পথে পথে, অলিতে গলিতে গিয়ে গরীব, খোঁড়া, পঙ্গু ও অন্ধদের ডেকে নিয়ে এস।’

22 “এরপর সেই দাস মনিবকে বলল, ‘প্রভু, আপনি যা যা বলেছেন তা করেছি, তা সত্ত্বেও এখনও অনেক জায়গা আছে।’ 23 তখন মনিব সেই দাসকে বলল, ‘এবার তুমি গ্রামের পথে পথে, বেড়ার ধারে ধারে যাও, যাকে পাও তাকেই এখানে আসবার জন্য জোর কর, যেন আমার বাড়ি ভরে যায়। 24 আমি তোমাদের বলছি, যাদের প্রথমে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল, তাদের কেউই আমার এই ভোজের স্বাদ পাবে না!’”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International