Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
1 শমূয়েল 15-16

পৌল অমালেকীয়দের ধ্বংস করে দিলেন

15 একদিন শমূয়েল শৌলকে বলল, “প্রভু তোমায় ইস্রায়েলে তাঁর লোকদের রাজা হিসাবে অভিষেক করতে আমাকে পাঠিয়েছিলেন। তাই এখন প্রভুর বার্তা শোনো। সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন: ‘যখন ইস্রায়েলীয়রা মিশর থেকে বেরিয়ে আসছিল তখন অমালেকীয়রা তাদের কনানে যেতে বাধা দিয়েছিল। অমালেকীয়রা কি করেছে আমি সব দেখেছি। এখন যাও, অমালেকীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো। ওদের তোমরা একেবারে শেষ করে দাও, ওদের সব কিছু ভেঙ্গে চুরে তছনছ করে দাও। কাউকে বাঁচতে দিও না। ছেলে মেয়ে কাউকে বাদ দেবে না। তাদের সমস্ত গরু, মেষ উটও তোমরা শেষ করে দেবে।’”

শৌল টলায়ীমে সমস্ত সৈন্য জড়ো করলেন। পদাতিক সৈন্য 200,000 জন আর অন্যান্যরা 10,000 জন। এদের মধ্যে যিহূদার লোকরাও ছিল। তারপর শৌল চলে গেলেন অমালেকীয়দের শহরে। উপত্যকায় গিয়ে তিনি অপেক্ষা করতে লাগলেন। কেনীয়দের শৌল বললেন, “তোমরা সবাই অমালেকীয়দের ছেড়ে দিয়ে চলে যাও। তাহলে আমি ওদের সঙ্গে তোমাদের বিনষ্ট করব না। যখন ইস্রায়েলীয়রা মিশর ছেড়ে চলে আসছিল, তোমরা ইস্রায়েলীয়দের দয়াদাক্ষিণ্য দেখিয়েছিলে।” একথা শুনে কেনীয়রা অমালেকীয়দের ছেড়ে চলে গেল।

শৌল অমালেকীয়দের হারিয়ে দিলেন। তাদের তাড়িয়ে নিয়ে গেলেন সেই হবীলা থেকে শূর অবধি যেখানে মিশরের সীমানা। অমালেকীয়দের রাজা ছিল অগাগ। শৌল জীবিত অবস্থায় অগাগকে বন্দী করেছিলেন এবং বাকী অমালেকীয়দের হত্যা করেছিলেন। সব কিছু ধ্বংস করতে শৌলের এবং ইস্রায়েলীয়দের মন চাইল না। সেইজন্য তারা অগাগকে মেরে ফেলে নি। তাছাড়া পুষ্ট গাভী, সেরা মেষগুলোকেও তারা জীবিত রেখেছিল। সেই সঙ্গে আর যে সব জিনিস রেখে দেবার মতো, সেগুলোও রেখে দিয়েছিল। ঐগুলো তারা নষ্ট করতে চায় নি। যেগুলো রাখার যোগ্য নয়, সেগুলোকে তারা নষ্ট করে দিয়েছিল।

শমূয়েল শৌলকে তার পাপের কথা বলল

10 শমূয়েল প্রভুর কাছ থেকে একটি বার্তা পেল। 11 প্রভু বললেন, “শৌল আমাকে মানছে না। ওকে রাজা করেছিলাম বলে আমার অনুশোচনা হচ্ছে। সে আমার কথামত কাজ করছে না।” শমূয়েল একথা শুনে ক্রুদ্ধ হল। সারারাত ধরে কেঁদে কেঁদে সে প্রভুর কাছে প্রার্থনা করল।

12 পরদিন খুব ভোরে শমূয়েল শৌলের সঙ্গে দেখা করতে গেল। কিন্তু লোকরা শমূয়েলকে বলল, “শৌল যিহূদার কর্মিল শহরে চলে গেছেন। সেখানে তিনি নিজের সম্মান বাড়াতে একটা পাথরের মূর্ত্তি তৈরী করেছেন। তিনি এখন নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সবশেষে তিনি গিল‌্গলে যাবেন।”

তাদের কথা শুনে শমূয়েল শৌল যেখানে ছিলেন সেখানে গেল। তখন শৌল সবে অমালেকীয়দের কাছ থেকে নেওয়া জিনিসগুলোর প্রথম অংশ প্রভুকে নিবেদন করেছিলেন। এগুলো সবই শৌল হোমবলি রূপে প্রভুকে উৎসর্গ করেছিলেন। 13 শমূয়েল শৌলের কাছে গেল। শৌল তাকে বললেন, “প্রভু তোমার মঙ্গল করুন। আমি প্রভুর নির্দেশ পালন করেছি।”

14 তখন শমূয়েল বলল, “তাহলে আমি কিসের শব্দ শুনলাম? আমি কেন মেষ আর গরুর ডাক শুনতে পেলাম?”

15 শৌল বললেন, “ওগুলো সৈন্যরা অমালেকীয়দের কাছ থেকে নিয়ে এসেছে। তারা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছে হোমবলি হিসেবে উৎসর্গ করবার জন্য সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মেষ আর গবাদি পশু প্রদান করেছিল। কিন্তু বাকি সবকিছুই আমরা শেষ করে দিয়েছি।”

16 শমূয়েল বলল, “চুপ করো। গত রাত্রে প্রভু আমাকে যা বলেছিলেন শোনো।”

শৌল বললেন, “বেশ, বলো তিনি কি বলেছিলেন।”

17 শমূয়েল বলল, “অতীতে তুমি ভাবতে তুমি গুরুত্বহীন ছিলে। কিন্তু পরে তুমি হয়ে গেলে ইস্রায়েলের পরিবারগোষ্ঠীর নেতা। প্রভু ইস্রায়েলের রাজা হিসাবে তোমাকে মনোনীত করেছিলেন। 18 প্রভু তোমাকে একটা বিশেষ কাজে পাঠিয়েছিলেন। প্রভু বললেন, ‘যাও, সমস্ত অমালেকীয়দের হত্যা কর। কারণ তারা সবাই পাপী। সবাইকে শেষ করে দাও। তারা নিঃশেষে বিনষ্ট না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাও।’ 19 কিন্তু তুমি প্রভুর সে কথা শোন নি। কারণ তুমি জিনিসপত্র নিজের কাছে রেখে দিতে চেয়েছিলে, তাই প্রভুর কথা অনুযায়ী কাজ করো নি। তাঁর মতে যা খারাপ, সেই কাজ তুমি করেছ!”

20 শৌল বললেন, “কিন্তু আমি তো প্রভুর কথা পালন করেছি। তিনি আমায় যেখানে যেতে বলেছিলেন সেখানে গিয়েছিলাম। আমি অমালেকীয়দের সবাইকে হত্যা করেছি। কেবলমাত্র একজনকেই আমি এনে রেখেছি। তিনি হচ্ছেন তাদের রাজা, অগাগ। 21 আর সৈন্যরা নিয়েছে সেরা মেষ এবং গরু। তাদের বলি দিতে হবে গিল‌্গলে তোমার প্রভু ঈশ্বরের কাছে।”

22 শমূয়েল বলল, “কিন্তু প্রভু কিসে সবচেয়ে বেশী খুশী হন? হোমবলিতে না তাঁর আদেশ পালনে? বলির চেয়ে তাঁর আদেশ পালন করাই শ্রেয়। ভেড়ার চর্বি উৎসর্গ করার চেয়ে ঈশ্বরের বাধ্য হওয়া অনেক ভালো। 23 ঈশ্বরের অবাধ্যতা করা মায়াবিদ্যার পাপের মতোই খারাপ। একগুঁয়েমি করা এবং তুমি যা চাও তা করা মূর্ত্তি পূজো করার পাপের মতোই ততটা খারাপ। প্রভুর আদেশ তুমি অমান্য করেছ। তাই তিনি তোমাকে রাজা হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকার করছেন।”

24 এর উত্তরে শৌল শমূয়েলকে বললেন, “আমি পাপ করেছি। প্রভুর আদেশ আমি শুনি নি, আপনার কথাও আমি শুনি নি। লোকদের আমি ভয় পাই, তারা যা চায় আমি তাই করেছি। 25 আমার এই পাপের জন্য আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি। আমার সঙ্গে ফিরে চলুন, যেন আমি প্রভুকে উপাসনা করতে পারি।”

26 শমূয়েল বলল, “না তোমার সঙ্গে যাব না। তুমি প্রভুর আদেশ মানো নি। তাই প্রভুও ইস্রায়েলের রাজা হিসাবে তোমাকে অস্বীকার করেছেন।”

27 শমূয়েল যখন যাবার জন্য পা বাড়িয়েছে, এমন সময় শৌল তাঁর পোশাকটি খপ্ করে ধরে ফেললেন এবং সেটি ছিঁড়ে গেল। 28 শমূয়েল শৌলকে বলল, “তুমি যেভাবে আমার আলখাল্লা ছিঁড়ে নিয়েছ সেই ভাবেই প্রভু আজ ইস্রায়েল রাজ্য তোমার কাছ থেকে নিয়ে নিয়েছেন। তিনি এই রাজ্য দিয়েছেন তোমারই বন্ধুদের মধ্যে একজনকে। সে তোমার চেয়ে ভাল লোক। 29 প্রভু হচ্ছেন ইস্রায়েলের ঈশ্বর। তিনি অমর। তিনি মিথ্যা বলেন না, মত বদলান না। তিনি মানুষের মতো নন। মানুষই ঘন ঘন মত বদলায়।”

30 শৌল বললেন, “স্বীকার করছি, আমি পাপ করেছি। কিন্তু দয়া করে আমার সঙ্গে ফিরে আসুন। প্রবীণদের এবং ইস্রায়েলের লোকদের সামনে আমার সম্মান রাখুন যেন আমি আপনার প্রভু ও ঈশ্বরকে প্রণাম করতে পারি।” 31 শমূয়েল শৌলের সঙ্গে ফিরে এলে শৌল প্রভুকে উপাসনা করলেন।

32 শমূয়েল বলল, “অমালেকীয়দের রাজা অগাগকে আমার কাছে নিয়ে এসো।”

অগাগ শমূয়েলের কাছে এল। তাকে শিকল দিয়ে বাঁধা হয়েছিল। অগাগ মনে করল, “সে নিশ্চয়ই আমাকে মেরে ফেলবে না।”

33 কিন্তু শমূয়েল অগাগকে বলল, “তোমার তরবারি কত মায়ের কোল খালি করেছে। এবার তোমার মায়েরও সেই দশা হবে।” এই বলে শমূয়েল গিল‌্গলে প্রভুর সামনে অগাগকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলল।

34 তারপর শমূয়েল রামাতে চলে গেল। শৌল গিবিয়ায় তাঁর বাড়িতে চলে গেলেন। 35 এরপর শমূয়েল তার জীবনে আর কখনও শৌলকে দেখতে পায় নি। সে শৌলের জন্যে খুব দুঃখ বোধ করল। এমনকি প্রভুও শৌলকে ইস্রায়েলের রাজা করেছিলেন বলে খুব দুঃখ পেয়েছিলেন।

শমূয়েল বৈৎ‌লেহমে গেল

16 প্রভু শমূয়েলকে বললেন, “শৌলের জন্য আর কতদিন তুমি দুঃখ বোধ করবে? শৌলকে আমি ইস্রায়েলের রাজা হিসাবে অস্বীকার করেছি একথা তোমাকে বলবার পরও তুমি ওর জন্য দুঃখ করছ। শিঙায় তেল ভর্ত্তি করে বৈৎ‌লেহেমে যাও। তোমাকে আমি একজনের কাছে পাঠাচ্ছি। তার নাম যিশয়। ও বৈৎ‌লেহমেই থাকে। তারই একজন পুত্রকে আমি নতুন রাজা হিসাবে মনোনীত করেছি।”

তখন শমূয়েল বলল, “আমি যদি যাই তবে শৌল জানতে পারবে। তখন সে আমায় হত্যা করতে চাইবে।”

প্রভু বললেন, “তুমি বৈৎ‌লেহমে যাও। সঙ্গে একটা বাছুরকে নিও। তুমি বলবে, ‘আমি প্রভুর কাছে একে বলি দিতে এসেছি।’ যিশয়কে এই বলি দেখতে আমন্ত্রণ জানাবে। তারপর কি করবে আমি বলে দেব। যাকে আমি দেখিয়ে দেব তার মাথায় জলপাই তেল ঢেলে দিও।”

প্রভুর কথামতো শমূয়েল যা যা করার করল। সে বৈৎ‌লেহমে চলে গেল। সেখানকার প্রবীণরা ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে এল। শমূয়েলের সঙ্গে দেখা করে তারা বলল, “আপনি কি শান্তির ভাব নিয়ে এসেছেন?”

শমূয়েল জবাব দিল, “হ্যাঁ, আমি শান্তির ভাব নিয়েই এসেছি। আমি প্রভুর কাছে একটা বলি দিতে এসেছি। তোমরা তৈরী হও। আমার সঙ্গে বলিদানে এসো।” শমূয়েল যিশয় আর তার পুত্রদের প্রস্তুত করে বলিদানের অনুষ্ঠান দেখবার জন্য ডেকে আনল।

যিশয় তার পুত্রদের নিয়ে পৌঁছলে শমূয়েল ইলিয়াবকে দেখতে পেল। শমূয়েল ভাবল, “এই সেই যাকে প্রভু বিশেষভাবে পছন্দ করেছেন।”

কিন্তু প্রভু শমূয়েলকে বললেন, “ইলীয়াব লম্বা আর সুন্দর দেখতে হলেও এভাবে ব্যাপারটা দেখো না। লোকে যেভাবে কোন জিনিস দেখে বিচার করে ঈশ্বর সেভাবে করেন না। লোকরা মানুষের বাইরের রূপটাই দেখে, কিন্তু ঈশ্বর দেখেন তার অন্তরের রূপ। সেদিক থেকে ইলীয়াব উপযুক্ত লোক নয়।”

তখন যিশয় তার দ্বিতীয় পুত্র অবীনাদবকে ডাকলো। অবীনাদব শমূয়েলের পাশ দিয়ে হেঁটে গেল। শমূয়েল বলল, “না একেও প্রভু মনোনীত করেন নি।”

একথা শুনে যিশয় শম্মকে শমূয়েলের পাশে আসতে বলল। শমূয়েল বলল, “না এও চলবে না।”

10 যিশয় শমূয়েলকে তার সাত পুত্রকে দেখাল। শমূয়েল বলল, “প্রভু এদের একজনকেও মনোনীত করেন নি।”

11 শমূয়েল বলল, “তোমার পুত্র বলতে এরাই কি সব?”

যিশয় বলল, “না আমার আরেকটা পুত্র আছে। সে সবচেয়ে ছোট, কিন্তু সে এখন মেষ চরাচ্ছে।”

শমূয়েল বলল, “তাকে ডেকে নিয়ে এসো। সে না আসা পর্যন্ত আমরা কেউ খেতে বসব না।”

12 যিশয় একজনকে পাঠালো তার ছোট ছেলেটিকে ডেকে আনতে। তার ছোট ছেলেটি দেখতে ভাল, রক্ত বর্ণের যুবক।

প্রভু শমূয়েলকে বলল, “এই তো সেই ছেলে। ওঠো, একে অভিষেক করো।”

13 শমূয়েল তেল ভর্ত্তি শিঙাটা নিয়ে যিশয়ের সব চেয়ে ছোট ছেলেটার মাথায় ঢেলে দিল। তার ভাই়রা এই ঘটনা দেখল। সেদিন থেকেই প্রভুর আত্মা মহাশক্তিতে দায়ূদের ওপর এল। এরপর শমূয়েল রামায় ফিরে এল।

একটি দুষ্ট আত্মা শৌলকে বিরক্ত করল

14 প্রভুর আত্মা শৌলকে ছেড়ে চলে গেলেন। তখন শৌলের কাছে প্রভু এক দুষ্ট আত্মা পাঠালেন। এর ফলে তিনি বেশ মুশকিলে পড়লেন। 15 শৌলের ভৃত্যরা তাঁকে বলল, “ঈশ্বরের কাছ থেকে এক দুষ্ট আত্মা এসে আপনাকে উদ্বিগ্ন করছে। 16 যদি আপনি আদেশ করেন তাহলে একজন বীণা বাজিয়েকে খুঁজে আনি। প্রভুর কাছ থেকে দুষ্ট আত্মা এলে সে বীণা বাজাবে। তখন আপনি বেশ ভালো বোধ করবেন।”

17 শৌল বললেন, “তাহলে একজন ভালো বাজিয়েকে আমার কাছে নিয়ে এসো।”

18 একজন ভৃত্য বলল, “যিশয় নামে এক ব্যক্তি আছেন যিনি বৈৎ‌লেহমে বাস করেন। আমি যিশয়ের পুত্রকে দেখেছি সে বীণা বাজাতে জানে। সে সাহসী এবং যুদ্ধ করতেও জানে। সে চতুর, দেখতেও সুন্দর। স্বয়ং প্রভু তার সহায়।”

19 তাই শৌল যিশয়ের কাছে কয়েকজন দূত পাঠাল। তারা যিশয়কে বলল, “তোমার দায়ূদ নামে একজন পুত্র আছে, সে তোমার মেষদের দেখাশোনা করে। ওকে আমাদের কাছে ডেকে আনো।”

20 যিশয় শৌলের জন্য কিছু উপহার জোগাড় করলো। যিশয় একটা গাধা, কিছু রুটি, এক বোতল দ্রাক্ষারস আর একটা কচি ছাগল দায়ূদের হাতে করে শৌলের কাছে পাঠালো। 21 দায়ূদ শৌলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে শৌল দায়ূদকে খুব ভালবেসে ফেললেন। দায়ূদ শৌলের সহকারী হয়ে শৌলের অস্ত্র বইতে লাগল। 22 শৌল যিশয়ের কাছে খবর পাঠিয়ে জানিয়ে দিলেন, “দায়ূদ এখানেই থাকুক, আমার কাজকর্ম করুক। আমার ওকে খুব ভাল লেগেছে।”

23 যখনই ঈশ্বর হতে শৌলের ওপর দুষ্ট আত্মা আসত, তখন দায়ূদ বীণা তুলে নিয়ে বাজাতেন। সঙ্গে সঙ্গে দুষ্ট আত্মা শৌলকে ছেড়ে যেত, আর তিনি আরাম বোধ করতেন।

লূক 10:25-42

দয়ালু শমরীয়ের দৃষ্টান্তমূলক কাহিনী

25 এরপর একজন ব্যবস্থার শিক্ষক যীশুকে পরীক্ষার ছলে জিজ্ঞাসা করল, “গুরু, অনন্ত জীবন লাভ করার জন্য আমায় কি করতে হবে?”

26 যীশু তাকে বললেন, “বিধি-ব্যবস্থায় এ বিষয়ে কি লেখা আছে? সেখানে তুমি কি পড়েছ?”

27 সে জবাব দিল, “‘তোমার সমস্ত অন্তর, মন, প্রাণ ও শক্তি দিয়ে অবশ্যই তোমার প্রভু ঈশ্বরকে ভালবাসো।’(A) আর ‘তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবাসো।’(B)

28 তখন যীশু তাকে বললেন, “তুমি ঠিক উত্তরই দিয়েছ; ঐ সবই কর, তাহলে অনন্ত জীবন লাভ করবে।”

29 কিন্তু সে নিজেকে ধার্মিক দেখাতে চেয়ে যীশুকে জিজ্ঞেস করল, “আমার প্রতিবেশী কে?”

30 এর উত্তরে যীশু বললেন, “একজন লোক জেরুশালেম থেকে যিরীহোর দিকে নেমে যাচ্ছিল, পথে সে ডাকাতের হাতে ধরা পড়ল। তারা লোকটির জামা কাপড় খুলে নিয়ে তাকে মারধোর করে আধমরা অবস্থায় সেখানে ফেলে রেখে চলে গেল।

31 “ঘটনাক্রমে সেই পথ দিয়ে একজন ইহুদী যাজক যাচ্ছিল, যাজক তাকে দেখতে পেয়ে পথের অন্য ধার দিয়ে চলে গেল। 32 সেই পথে এরপর একজন লেবীয়[a] এল। তাকে দেখে সেও পথের অন্য ধার দিয়ে চলে গেল।

33 “কিন্তু একজন শমরীয় ঐ পথে যেতে যেতে সেই লোকটির কাছাকাছি এল। লোকটিকে দেখে তার মমতা হল। 34 সে ঐ লোকটির কাছে গিয়ে তার ক্ষতস্থান দ্রাক্ষারস দিয়ে ধুয়ে তাতে তেল ঢেলে বেঁধে দিল। এরপর সেই শমরীয় লোকটিকে তার নিজের গাধার ওপর চাপিয়ে একটি সরাইখানায় নিয়ে এসে তার সেবা যত্ন করল। 35 পরের দিন সেই শমরীয় দুটি রৌপ্যমুদ্রা বার করে সরাইখানার মালিককে দিয়ে বলল, ‘এই লোকটির যত্ন করবেন আর আপনি যদি এর চেয়ে বেশী খরচ করেন, তবে আমি ফিরে এসে আপনাকে তা শোধ করে দেব।’”

36 এখন বল, “এই তিন জনের মধ্যে সেই ডাকাত দলের হাতে পড়া লোকটির প্রকৃত প্রতিবেশী কে?”

37 সে বলল, “যে লোকটি তার প্রতি দয়া করল।”

তখন যীশু তাকে বললেন, “সে যেমন করল, যাও তুমি গিয়ে তেমন কর।”

মরিয়ম ও মার্থা

38 এরপর যীশু ও তাঁর শিষ্যরা জেরুশালেমের পথে যেতে যেতে কোন এক গ্রামে প্রবেশ করলেন। সেখানে মার্থা নামে একজন স্ত্রীলোক তাঁদের সাদর অভ্যর্থনা করলেন। 39 মরিয়ম নামে তাঁর একটি বোন ছিল, তিনি যীশুর পায়ের কাছে বসে তাঁর শিক্ষা শুনছিলেন। 40 কিন্তু খাওয়া-দাওয়ার নানা রকম আয়োজন করতে মার্থা খুবই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি যীশুর কাছে এসে বললেন, “প্রভু, আপনি কি দেখছেন না, আমার বোন সমস্ত কাজ একা আমার ঘাড়ে ফেলে দিয়েছে? ওকে বলুন ও যেন আমায় সাহায্য করে।”

41 প্রভু তখন মার্থাকে বললেন, “মার্থা, মার্থা তুমি অনেক বিষয় নিয়ে বড়ই উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত হয়ে পড়েছ। 42 কিন্তু কেবলমাত্র একটা বিষয়ের প্রয়োজন আছে। আর মরিয়ম সেই উত্তম বিষয়টি মনোনীত করেছে, যা তার কাছ থেকে কখনও কেড়ে নেওয়া হবে না।”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International