Old/New Testament
7 কিরিয়ৎ-যিয়ারীমের লোকরা এসে সেই প্রভুর পবিত্র সিন্দুকটি গ্রহণ করল। তারা সেটা পর্বতের ওপর অবীনাদবের বাড়িতে নিয়ে গেল। অবীনাদবের পুত্র ইলিয়াসকে তৈরী করবার জন্য তারা একটি বিশেষ অনুষ্ঠান করল যাতে সে পবিত্র সিন্দুক পাহারা দিতে পারে। 2 কিরিয়ৎ-যিয়ারীমে সিন্দুকটি দীর্ঘ 20 বছর ধরে ছিল।
প্রভু ইস্রায়েলীয়দের রক্ষা করলেন
ইস্রায়েলীয়রা আবার প্রভুকে অনুসরণ করতে শুরু করল। 3 শমূয়েল ইস্রায়েলীয়দের বলল, “যদি তোমরা সত্যিই মনে প্রাণে প্রভুর কাছে ফিরে আসো তাহলে ভিন-দেশী অন্যান্য মূর্ত্তিকে অবশ্যই তোমাদের ফেলে দিতে হবে। অষ্টারোতের সমস্ত মূর্ত্তিকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে। প্রভুর সেবায় অবশ্যই তোমাদের সম্পূর্ণভাবে নিজেকে সমর্পণ করতে হবে। তোমাদের শুধু মাত্র প্রভুরই সেবা করতে হবে। তাহলেই তিনি তোমাদের পলেষ্টীয়দের হাত থেকে রক্ষা করবেন।”
4 একথা শুনে ইস্রায়েলীয়রা বাল এবং অষ্টারোতের মূর্ত্তি ফেলে দিয়ে কেবলমাত্র প্রভুরই সেবা করতে লাগল।
5 শমূয়েল বলল, “সমস্ত ইস্রায়েলীয়কে মিস্পায় জমায়েত হতে হবে। আমি তোমাদের জন্য প্রভু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করব।”
6 ইস্রায়েলীয়রা মিস্পায় সমবেত হল। তারা জল তুলল এবং সেটা প্রভুর সামনে ঢেলে দিল। এইভাবে তারা উপবাস কাল শুরু করল। সেই দিন তারা কোন খাদ্য গ্রহণ না করে সমস্ত পাপ স্বীকার করল। তারা বলল, “আমরা প্রভুর কাছে পাপ করেছি।” এইভাবে মিস্পায় ইস্রায়েলীয়দের বিচারক হিসেবে শমূয়েল কাজ করতে লাগল।
7 পলেষ্টীয়রা জানতে পারল ইস্রায়েলীয়দের মিস্পায় সমবেত হবার খবর। ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে পলেষ্টীয় শাসকরা যুদ্ধ করতে গেল। পলেষ্টীয়দের আসার সংবাদে ইস্রায়েলীয়রা ভয় পেয়ে গেল। 8 ইস্রায়েলীয়রা শমূয়েলকে বলল, “আমাদের জন্য, আমাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করো, থেমো না! তাঁকে বলো, হে প্রভু পলেষ্টীয়দের হাত থেকে আমাদের বাঁচান!”
9 শমূয়েল একটা মেষশাবক নিয়ে এল। প্রভুকে সে এই মেষটি একটি সম্পূর্ণ হোমবলি হিসাবে নিবেদন করল। ইস্রায়েলের জন্য শমূয়েল প্রভুর কাছে প্রার্থনা করতে লাগল। প্রভু সেই প্রার্থনায় সাড়া দিলেন। 10 শমূয়েল যখন মেষটি পোড়াচ্ছিল, সেই সময় পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এল। আর তখন প্রভু পলেষ্টীয়দের দিকে প্রচণ্ড শব্দে বজ্রপাত করলেন। এতে তারা হতবুদ্ধি হয়ে পড়ল। ভয় পেয়ে গেল। ওদের নেতারাই ওদের সামলাতে পারল না। তাই যুদ্ধে ইস্রায়েলীয়রা পলেষ্টীয়দের হারিয়ে দিল। 11 মিস্পা থেকে বেরিয়ে ইস্রায়েলীয়রা পলেষ্টীয়দের তাড়া করল। বৈৎ-কর পর্যন্ত সারাটা রাস্তা তাড়িয়ে নিয়ে গেল। আর সমস্ত পলেষ্টীয় সৈন্যদের ওরা পথে মেরে ফেলল।
ইস্রায়েলে শান্তি এল
12 এরপর শমূয়েল একটা বিশেষ ধরণের প্রস্তর স্থাপন করল। উদ্দেশ্য, লোকরা যাতে প্রভুর কর্মকাণ্ড ভুলে না যায়। পাথরটা রইল মিস্পা এবং সেন এর মাঝখানে। শমূয়েল পাথরটির নাম দিল “সাহায্যের পাথর।” সে বলল, “প্রভু সমস্ত রাস্তা ঘুরে আমাদের এখানে আসতে সাহায্য করেছেন!”
13 পলেষ্টীয়রা হেরে গেল। তারা আর ইস্রায়েলে ঢুকল না। শমূয়েলের বাকি জীবনে প্রভু পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে ছিলেন। 14 পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলের কিছু শহর দখল করেছিল। তারা ইক্রোণ থেকে গাৎ পর্যন্ত সমস্ত শহর নিয়ে নিয়েছিল। সে সব ইস্রায়েলীয়রা আবার ফিরে পেল। এই শহরগুলোর চারপাশের ভূখণ্ডগুলিও তারা জিতে নিল।
ইস্রায়েল এবং ইমোরীয়দের মধ্যে শান্তি স্থাপিত হল।
15 শমূয়েল সারাজীবন ধরে ইস্রায়েলকে নেতৃত্ব দিয়েছিল। 16 নানা জায়গায় ঘুরে ঘুরে সে ইস্রায়েলীয়দের বিচার করত। প্রত্যেক বছর সে সারা দেশ ঘুরত। বৈথেল, গিল্গাল, আর মিস্পা এইসব জায়গায় গিয়ে ইস্রায়েলের লোকের শাসন ও বিচার করত। 17 শমূয়েলের বাড়ী ছিল রামাতে। তাই প্রত্যেকবার তাকে রামায় ফিরে যেতে হত। ঐ শহর থেকেই সে ইস্রায়েল শাসন করত, বিচারের কাজকর্ম চালাত। রামায় শমূয়েল প্রভুর উদ্দেশ্যে একটা বেদী তৈরী করেছিল।
ইস্রায়েলীয়রা একজন রাজা চাইল
8 শমূয়েল বৃদ্ধ হলে সে তার পুত্রদের ইস্রায়েলের বিচারক করল। 2 শমূয়েলের প্রথম পুত্রের নাম যোয়েল। দ্বিতীয় পুত্রের নাম অবিয়। যোয়েল ও অবিয় ছিল বের্-শেবার বিচারক। 3 পুত্ররা শমূয়েলের মতো জীবনযাপন করত না। যোয়েল ও অবিয় ঘুষ নিত, গোপনে টাকা নিয়ে বিচারসভায় রায় বদলে দিত। এমন কি বিচারালয়ে লোক ঠকাত। 4 এই কারণে ইস্রায়েলের প্রবীণরা সবাই মিলে শমূয়েলের সঙ্গে দেখা করতে রামায় গেল। 5 তারা শমূয়েলকে বলল, “আপনি বৃদ্ধ হয়েছেন, আর আপনার পুত্ররা ঠিকভাবে জীবন কাটাচ্ছে না। তারা আপনার মতো নয়। তাই বলছি, আপনি আমাদের একটা রাজার ব্যবস্থা করুন, অন্যান্য সব দেশে যেমন থাকে।”
6 এইভাবে প্রবীণরা তাদের নেতৃত্ব দিতে পারে এমন একজন রাজা চাইল। কিন্তু শমূয়েলের মনে হল এটা একটা খারাপ চিন্তা। তাই তিনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন। 7 প্রভু বললেন, “লোকরা যা বলছে তাই করো। তারা তোমাকে প্রত্যাখ্যান করে নি। তারা আমাকে প্রত্যাখ্যান করেছে, কারণ তারা রাজা হিসেবে আমাকে চায় না। 8 অতীতের মত বার বার সেই একই কাজ তারা করছে। আমি ওদের মিশর থেকে বার করে নিয়ে এসেছিলাম; কিন্তু সেই ওরা আমাকেই ছেড়ে দিয়ে অন্য সব দেবতার পূজো করেছিল। তোমার ক্ষেত্রেও এরা সেই এক কাজ করছে। 9 ঠিক আছে, ওদের কথা মতোই চলো; কিন্তু তাদের একবার সাবধান করো, ওদের বলে দিও একজন রাজা তাদের প্রতি কি ব্যবহার করবে এবং কিভাবে একজন রাজা তাদের শাসন করবে।”
10 লোকরা একজন রাজা চাইছিল। তখন শমূয়েল তাদের কাছে প্রভুর কথিত সমস্ত কথাই শোনাল। 11 শমূয়েল বলল, “যদি তোমরা রাজা চাও তাহলে সে কি কি করবে শোন। সে তোমাদের পুত্রদের তোমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেবে এবং জোর করে তাদের দিয়ে নিজের সেবা করিয়ে নেবে। তাদের জোর করে সৈন্য করবে, রথ আর অশ্ববাহিনীতে ঢুকিয়ে তাদের দিয়ে লড়াই করাবে। রাজার রথকে সামলানোর জন্য সেই রথের সামনে ছুটে ছুটে তারা পাহারা দেবে।
12 “রাজা তোমাদের পুত্রদের জোর করে সৈন্যবাহিনীতে ঢোকাবে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ 1000 জনের ওপর অধিকর্তা হবে। আবার কেউ কেউ 50 জনের ওপর অধিকর্তা হবে।
“তাছাড়া সে তোমাদের পুত্রদের দিয়ে জোর করে চাষ করাবে, ফসল তোলাবে। সে জোর করে যুদ্ধের জন্য অস্ত্র ও রথের জন্য জিনিসপত্র তৈরী করাবে।
13 “একজন রাজা তোমাদের কন্যাদের ধরবে এবং তাদের নিয়ে যাবে। তাদের দিয়ে রাজা নিজের জন্য সুগন্ধি দ্রব্য তৈরী করাবে। এছাড়া তাদের দ্বারা রান্নাবান্না, রুটি বানানো এইসব কাজও করিয়ে নেবে।
14 “রাজা তোমাদের ভাল ভাল জমি, দ্রাক্ষা আর জলপাইয়ের বাগান কেড়ে নিয়ে তা তার কর্মচারীদের বিলিয়ে দেবে। 15 তোমাদের শস্য আর দ্রাক্ষার দশভাগের একভাগ নিয়ে তার কর্মচারী আর ভৃত্যদের দিয়ে দেবে।
16 “একজন রাজা তোমাদের দাস ও দাসীদের নিয়ে নেবে। সে তোমাদের সব চেয়ে সেরা গবাদি পশু ও গাধাদের নেবে। সে তার নিজের উদ্দেশ্যে তাদের ব্যবহার করবে। 17 তোমাদের পালের পশুদের দশ ভাগের একভাগ রাজা নিয়ে নেবে।
“আর তোমরা সবাই হবে রাজার ক্রীতদাস। 18 এমন একটা সময় আসবে যখন তোমরা তোমাদের মনোনীত করা রাজার জন্য কাঁদবে। কিন্তু সেই সময় প্রভু তোমাদের ডাকে সাড়া দেবেন না।”
19 কিন্তু শমূয়েলের কথা লোকরা শুনল না। তারা বলল, “না, আমরা আমাদের শাসক হিসেবে একজন রাজাই চাইছি। 20 রাজা থাকলে আমরা সবাই অন্যান্য দেশের লোকদের মতো থাকতে পারব। আমাদের রাজাই আমাদের চালাবেন। যুদ্ধের সময় তিনি আমাদের আগে যাবেন এবং আমাদের যুদ্ধে লড়াই করবেন।”
21 এই শুনে শমূয়েল প্রভুর কাছে লোকের কথাগুলো সব শোনালেন। 22 প্রভু বললেন, “ওদের কথা শোন! ওদের জন্য একজন রাজার ব্যবস্থা করে দাও।”
তখন শমূয়েল ইস্রায়েলবাসীদের বলল, “বেশ তাই হবে। তোমরা একজন নতুন রাজা পাবে। এখন তোমরা সবাই বাড়ি যাও।”
পিতার গাধাগুলোর খোঁজে শৌল
9 কীশ ছিলেন বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি। কীশের পিতার নাম অবীয়েল। অবীয়েলের পিতা সরোর। সরোরের পিতা বখোরত, বখোরতের পিতা অফীহ, তিনি বিন্যামীনের লোক। 2 কীশের একজন পুত্র ছিল, তার নাম শৌল। সুদর্শন যুবক শৌলের মতো এত সুন্দর আর কেউ ছিল না। ইস্রায়েলের সকলের চেয়ে সে ছিল মাথায় লম্বা।
3 একদিন কীশের গাধা হারিয়ে গেলে তিনি তাঁর পুত্র শৌলকে বললেন, “একজন ভৃত্যকে নিয়ে গাধাগুলো খুঁজে আনো।” 4 শৌল গাধাগুলো খুঁজতে বেরিয়ে গেল। সে ইফ্রয়িম পাহাড়ের মধ্যে এবং শালিশার আশেপাশের জায়গার মধ্যে দিয়ে গেল। কিন্তু শৌল আর তার ভৃত্য গাধাগুলো খুঁজে পেল না। এবার তারা শালীমের দিকে হাঁটা শুরু করল, সেদিকেও গাধাগুলোর খোঁজ পেল না। অগত্যা শৌল বিন্যামীনদের দেশের দিকে রওনা হল। এমনকি সেখানেও তারা গাধাগুলো খুঁজে পেল না।
5 অবশেষে শৌল ও তার ভৃত্য সূফ শহরে এল। শৌল ভৃত্যটিকে বলল, “চল আমরা বাড়ী ফিরি। আমার পিতা গাধাগুলোর জন্য চিন্তা থামিয়ে তার পরিবর্তে আমাদের নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু করবেন।”
6 ভৃত্যটি বলল, “এই শহরেই ঈশ্বরের একজন ভাববাদী রয়েছেন যাকে লোকরা খুবই ভক্তি করে। তিনি যা বলেন তাই সত্য হয়। চলুন আমরা শহরের ভেতরে যাই। তিনি হয়তো আমাদের বলে দিতে পারেন, এরপর আমাদের কোথায় যেতে হবে।”
7 শৌল তাকে বলল, “বেশ, আমরা নয় শহরের ভেতরে ঢুকলাম; কিন্তু তাকে আমরা কি দিতে পারি? তাকে দেবার মত কোন উপহার তো আমাদের হাতে নেই। এমন কি আমাদের ঝুলিতে খাদ্যদ্রব্যও শেষ। কি দেব তাকে?”
8 ভৃত্যটি শৌলকে বলল, “শোন, আমার কাছে যৎসামান্য কিছু অর্থ আছে, সেটা আমি ঈশ্বরের লোককে দেব। তিনিই আমাদের রাস্তা বলে দেবেন।”
9-11 শৌল বলল, “ভাল কথা, তাহলে চলো।” তাই তারা সেই শহরে গেল, যেখানে ঈশ্বরের ভাববাদী থাকত।
শৌল ও তার ভৃত্যটি পর্বতের পথ দিয়ে শহরের দিকে যাচ্ছিল। সেই সময় যুবতীরা জল নিতে আসছে দেখে তারা জিজ্ঞাসা করল, “দর্শনকারী কি এই জায়গায় রয়েছেন?” (অতীতে ইস্রায়েলের লোকরা ভাববাদীকে “দর্শনকারী” বলেও ডাকত। তাই ঈশ্বরের কাছে কিছু বিষয়ে প্রশ্ন করতে চাইলে তারা বলত, “চলো দর্শনকারীর কাছে যাই।”)
12 যুবতীরা উত্তর দিলো, “হ্যাঁ, দর্শনকারী এখানেই আছেন। তিনি ওখানে আছেন, তোমাদের আগে। তিনি আজ এই শহরে এসেছেন। কিছু লোক মঙ্গল নৈবেদ্য উৎসর্গ করার জন্য আজ উপাসনা স্থানে সমবেত হচ্ছে। 13 তাই শহরে গেলে তোমরা তাঁর দেখা পাবে। যদি তোমরা দ্রুত পথ চল তবে তিনি উপাসনার স্থানে খেতে বসার আগেই তোমরা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবে। দর্শনকারী নৈবেদ্য বলি আশীর্বাদ করেন। তাই তিনি সেখানে না পৌঁছানো পর্যন্ত লোকে খেতে বসবে না। তাড়াতাড়ি পথ চললে তোমরা দর্শনকারীর দেখা পাবে।”
14 শৌল ও তার ভৃত্য শহরে যাবার জন্যে পাহাড়ে উঠলে, শহরে ঢোকার সময়ই তারা দেখল শমূয়েল তাদের দিকেই আসছে। শমূয়েল তখন সবে উপাসনার স্থানে যাবার জন্যে বার হয়েছে।
15 এর আগের দিন প্রভু শমূয়েলকে বলেছিলেন, 16 “আগামীকাল ঠিক এই সময়েই আমি তোমার কাছে একজনকে পাঠাবো। সে বিন্যামীন পরিবারের লোক। তুমি তার অভিষেক করে তাকে ইস্রায়েলের নতুন নেতা করবে। এই লোকটিই পলেষ্টীয়দের হাত থেকে আমার লোকদের রক্ষা করবে। আমি তাদের দুঃখ দুর্দশা দেখেছি, আমি তাদের কান্না শুনেছি।”
17 শমূয়েল শৌলকে দেখতে পেল এবং প্রভু শমূয়েলকে বললেন, “আমি এই লোকটার কথাই তোমাকে বলেছিলাম। সে আমার লোকদের ওপর শাসন করবে।”
18 ফটকের কাছে শৌল একজন লোকের কাছে পথ নির্দেশ জিজ্ঞেস করতে গেল। ঘটনাচক্রে এই লোকটি ছিল শমূয়েল। শৌল তাকে জিজ্ঞাসা করল, “কোথায় সেই দর্শনকারীর বাড়ি আমায় দয়া করে বলে দিন।”
19 শমূয়েল বলল, “আমিই সেই দর্শক। আমার আগে আগে উপাসনার স্থানের দিকে এগিয়ে যাও। তুমি তোমার ভৃত্যকে নিয়ে আজ আমার সঙ্গে খাবে। কাল সকালে তোমার বাড়ি যেও। আমি তোমার সব প্রশ্নেরই উত্তর দেব। 20 তিন দিন আগে যে গাধাগুলো তুমি হারিয়েছ, তাদের নিয়ে আর মন খারাপ করো না; তাদের পাওয়া গেছে। এখন ইস্রায়েলের প্রত্যেকে একজনকে খুঁজছে। তুমিই সেই ব্যক্তি। তারা তোমাকে এবং তোমার পিতার পরিবারের সকলকে চায়।”
21 শৌল বলল, “কিন্তু আমি তো বিন্যামীন পরিবারের একজন। ইস্রায়েলের এটাই সবচেয়ে ছোট পরিবারগোষ্ঠী এবং এই পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে ছোট হচ্ছে আমার পরিবার। তবে আপনি কেন বলছেন ইস্রায়েলের আমাকে প্রয়োজন?”
22 তারপর শমূয়েল, শৌল ও তার ভৃত্যকে নিয়ে খাবার জায়গায় গেল। বলির নৈবেদ্য ভাগ করে খাবার জন্য প্রায় 30 জন লোককে পংক্তি ভোজনে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল। শৌল ও তার ভৃত্যটিকে শমূয়েল টেবিলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসালো। 23 শমূয়েল পাচককে বলল, “সরিয়ে রাখার জন্য যে মাংস আমি তোমাকে দিয়েছিলাম সেটা এবার আমায় দাও।”
24 পাচক ঊরু দেশের মাংসটা শৌলের টেবিলের সামনে রেখে দিলে শমূয়েল শৌলকে বলল, “তোমার সামনে রাখা মাংসটা খাও। আমি এটা তোমার জন্য রেখেছি। এই বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য আমি এটা রেখেছিলাম।” তাই সেদিন শৌল শমূয়েলের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করল।
25 খাওয়ার পর তারা উপাসনার স্থান থেকে নেমে এসে শহরে ফিরে গেল। শমূয়েল শৌলের জন্য ছাদে বিছানা পেতেছিল। শৌল ঘুমোতে গেল। 26 পরদিন ভোরে শমূয়েল চেঁচিয়ে শৌলকে ডাকল। সে বলল, “উঠে পড়ো। আমি তোমায় রাস্তায় পৌঁছে দেব।” শৌল উঠে শমূয়েলের সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ল।
27 শমূয়েল, শৌল ও তার ভৃত্য সবাই মিলে শহরের সীমানা পর্যন্ত গেল। তখন শমূয়েল শৌলকে বলল, “তোমার ভৃত্যকে এগিয়ে যেতে বলো। তোমাকে একটা বাণী দেব। ঈশ্বরের কাছ থেকে এই বাণী এসেছে।” তাই ভৃত্যটি এগিয়ে গেল।
যীশুই খ্রীষ্ট
(মথি 16:13-19; মার্ক 8:27-29)
18 একদিন যীশু কোন এক জায়গায় নিভৃতে প্রার্থনা করছিলেন। তাঁর শিষ্যরা সেখানে এলে তিনি তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, “লোকেরা কি বলে, আমি কে?”
19 তাঁরা বললেন, “কেউ কেউ বলে আপনি বাপ্তিস্মদাতা যোহন, কেউ বা বলে এলিয়, আবার কেউ কেউ বলে প্রাচীনকালের ভাববাদীদের মধ্যে একজন বেঁচে উঠেছেন।”
20 তিনি তাঁদের বললেন, “কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে?”
পিতর বললেন, “ঈশ্বরের সেই খ্রীষ্ট।”
21 তখন তিনি তাঁদের সতর্ক করে দিলেন যেন একথা তাঁরা কারো কাছে প্রকাশ না করেন।
যীশু বললেন যে তাঁকে মৃত্যুবরণ করতেই হবে
(মথি 16:21-28; মার্ক 8:31–9:1)
22 তিনি আরো বললেন, “মানবপুত্রের অনেক দুঃখ ও যাতনা ভোগ করার প্রয়োজন আছে; ইহুদী নেতারা, প্রধান যাজকেরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে, তারা তাঁকে হত্যা করবে; আর তিন দিনের মাথায় তিনি মৃত্যুলোক থেকে পুনরুত্থিত হবেন।”
23 পরে তিনি তাঁদের সকলের উদ্দেশ্যে বললেন, “যদি কেউ আমার সঙ্গে আসতে চায়, তবে সে নিজেকে অস্বীকার করুক; আর প্রতিদিন নিজের ক্রুশ তুলে নিক এবং আমায় অনুসরণ করুক। 24 যে কেউ নিজের জীবন রক্ষা করতে চায় সে তা হারাবে, কিন্তু যে কেউ আমার জন্য নিজের জীবন হারায় সে তা রক্ষা করবে। 25 সমগ্র জগৎ লাভ করে কেউ যদি নিজেকে ধ্বংস করে তবে তার কি লাভ হল? 26 যদি কেউ আমার জন্য ও আমার শিক্ষার জন্য লজ্জা বোধ করে, তবে যখন মানবপুত্র নিজ মহিমায় এবং পিতা ও পবিত্র স্বর্গদূতদের মহিমায় আসবেন তখন তিনিও তার জন্য লজ্জিত হবেন। 27 কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এখানে এমন কয়েকজন আছে যাঁরা ঈশ্বরের রাজ্য না দেখা পর্যন্ত মৃত্যুর মুখ দেখবে না।”
মোশি, এলিয় ও যীশু
(মথি 17:1-8; মার্ক 9:2-8)
28 এইসব কথা বলার প্রায় আট দিন পর, তিনি পিতর, যাকোব ও যোহনকে নিয়ে প্রার্থনা করার জন্য একটা পর্বতে গেলেন। 29 যীশু যখন প্রার্থনা করছিলেন, তখন তাঁর মুখের চেহারা অন্যরকম হয়ে গেল, তাঁর পোশাক আলোক শুভ্র হয়ে উঠল। 30 দুই ব্যক্তি, মোশি ও এলিয় মহিমান্বিত হয়ে সেখানে এসে যীশুর সঙ্গে কথা বলতে লাগলেন। 31 তাঁরা ঈশ্বরের পরিকল্পনা অনুযায়ী জেরুশালেমে কিভাবে যীশুর মৃত্যু হবে তাই নিয়ে কথা বলছিলেন। 32 কিন্তু পিতর ও তাঁর অন্য সঙ্গীরা সেই সময় ঢুলতে ঢুলতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তাঁরা জেগে উঠে যীশুকে মহিমান্বিত রূপে দেখতে পেলেন, আর ঐ দুই ব্যক্তিকে যীশুর সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন। 33 সেই ব্যক্তিরা যখন যীশুর কাছ থেকে চলে যাচ্ছিলেন, তখন পিতর যীশুকে বললেন, “গুরু, ভালোই হয়েছে যে আমরা এখানে আছি। আমরা এখানে তিনটে কুটীর তৈরী করি, একটা আপনার জন্য, একটা মোশির জন্য আর একটা এলিয়র জন্য।” তিনি জানতেন না যে তিনি কি বলছিলেন।
34 কিন্তু তিনি যখন এইসব কথা বলছিলেন, সেই সময় এক খণ্ড মেঘ এসে তাঁদের ঢেকে ফেলল, মেঘের মধ্যে প্রবেশ করে তাঁরা ভীত হলেন। 35 সেই মেঘের মধ্য থেকে এক রব শোনা গেল। সেই রব বলল, “এই আমার পুত্র, আমার মনোনীত পাত্র, তাঁর কথা শোন।”
36 সেই রব মিলিয়ে যাবার পরই দেখা গেল কেবল যীশু একা সেখানে রয়েছেন আর শিষ্যরা যা দেখলেন সে বিষয়ে কাউকে কিছু না বলে চুপ করে রইলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International