Old/New Testament
ইস্রায়েল ও যিহূদার মধ্যে যুদ্ধ হল
3 শৌলের পরিবার ও দায়ূদের পরিবারের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে যুদ্ধ চলছিল। দায়ূদ ক্রমশঃই আরো শক্তিশালী হয়ে উঠছিলেন এবং শৌলের পরিবার ক্রমশঃই দুর্বল হয়ে পড়ছিল।
হিব্রোণে দায়ূদের ছয় সন্তানের জন্ম হল
2 দায়ূদের এইসব সন্তান হিব্রোণে জন্মগ্রহণ করেছিল।
প্রথম সন্তান ছিল অম্নোন। অম্নোনের মা ছিলেন যিষ্রিয়েলের অহীনোয়ম।
3 দ্বিতীয় সন্তান ছিল কিলাব। কিলাবের মা অবীগল ছিলেন কর্ম্মিলীয় নাবলের বিধবা পত্নী।
তৃতীয় সন্তানের নাম অবশালোম। অবশালোমের মা ছিলেন গশূর রাজ্যের রাজা তল্ময়ের কন্যা মাখা।
4 চতুর্থ সন্তান আদোনিয়। আদোনিয়র মা ছিলেন হগীত।
পঞ্চম সন্তান শফটিয়। শফটিয়ের মায়ের নাম অবীটল।
5 ষষ্ঠ সন্তানের নাম যিত্রিয়ম। যিত্রিয়মের মা ছিলেন দায়ূদের স্ত্রী ইগ্লা। দায়ূদের এই কটি সন্তান হিব্রোণে জন্মেছিলো।
অব্নের দায়ূদের সঙ্গে যোগ দেবার সিদ্ধান্ত নিল
6 শৌল এবং দায়ূদের পরিবারের মধ্যে যখন যুদ্ধ চলছিল তখন শৌলের সৈন্যবাহিনীতে অব্নের ক্রমশঃই শক্তিশালী হয়ে উঠছিল। 7 রিস্পা নামে শৌলের এক দাসী ছিল। রিস্পা ছিল অয়ার কন্যা। ঈশ্বোশ অব্নেরকে বলল, “আমার পিতার দাসীর সঙ্গে তুমি কেন যৌন সম্পর্ক করলে?”
8 ঈশ্বোশতের কথায় অব্নের ভীষণভাবে রেগে গেল। অব্নের বলল, “আমি শৌল এবং তার পরিবারের প্রতি বরাবরই অনুগত। আমি তোমাকে দায়ূদের হাতে তুলে দিই নি। দায়ূদকে তোমার উপর জয়ী হতে দিই নি। যিহূদার অধিকারভুক্ত আমি বিশ্বাসঘাতক নই। কিন্তু এখন তুমি বলছো যে আমি এই অপকর্ম করেছি। 9-10 আমি প্রতিজ্ঞা করছি ঈশ্বর যা বলেছেন তা নিশ্চিতভাবে ঘটবে। প্রভু বলেছেন শৌলের পরিবার থেকে রাজ্য ছিনিয়ে নিয়ে তিনি দায়ূদকে দেবেন। প্রভু দায়ূদকেই যিহূদা এবং ইস্রায়েলের রাজা করবেন। তিনি দান থেকে বের্-শেবা পর্যন্ত[a] শাসন করবেন। আমার মনে হয় তা ঘটাতে আমি যদি তৎপর না হই ঈশ্বর আমায় শাস্তি দেবেন।” 11 ঈশ্বোশৎ অব্নেরকে আর কিছু বলতে পারলেন না। ঈশ্বোশৎ তাকে খুব ভয় পেতেন।
12 অব্নের দায়ূদকে বার্তাবাহক পাঠাল। অব্নের বলল, “এই দেশ কার শাসন করা উচিৎ বলে আপনি মনে করেন? আপনি আমার সঙ্গে চুক্তি করুন। আমি আপনাকে ইস্রায়েলের সমস্ত লোকের শাসক হতে সাহায্য করবো।”
13 দায়ূদ উত্তরে জানালেন, “বেশ! আমি আপনার সঙ্গে চুক্তি করব। কিন্তু আমি আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করতে চাই; যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি শৌলের কন্যা মীখলকে আমার কাছে আনতে না পারবেন ততক্ষণ পর্যন্ত আমি আপনার সঙ্গে দেখা করব না।”
14 দায়ূদ শৌলের পুত্র ইশ্বোশতের কাছে বার্তাবাহক পাঠালেন। দায়ূদ বললেন, “আমার স্ত্রী মীখলকে ফেরত দিন। সে আমার কাছে স্ত্রী হিসেবে প্রতিশ্রুত। তাকে পাবার জন্য আমি 100 পলেষ্টীয় শিশ্নের দাম দিয়েছি।”
15 তখন ঈশ্বোশৎ সেই লোকটিকে লয়িশের পুত্র পল্টিয়েল নামক এক লোকের কাছ থেকে মীখলকে নিয়ে যেতে বললেন। 16 মীখলের স্বামী পল্টিয়েল মীখলের সঙ্গে গেল। বহুরীমে যাবার সময় পল্টিয়েল মীখলের পিছু পিছু যাচ্ছিল এবং কাঁদছিল। কিন্তু অব্নের পল্টিয়েলকে বলল, “বাড়ী ফিরে যাও।” তখন পল্টিয়েল বাড়ী ফিরে গেল।
17 অব্নের ইস্রায়েলের নেতাদের কাছে এই বার্তা দিল। সে বলল, “দীর্ঘদিন ধরে তোমরা দায়ূদকে তোমাদের রাজা হিসেবে চেয়ে আসছ। 18 এখন তা সম্পাদন কর। প্রভু দায়ূদ সম্পর্কে বলার সময় বললেন, ‘আমি আমার ইস্রায়েলীয় লোকদের পলেষ্টীয় এবং অন্যান্য শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করব। আমি দায়ূদের মাধ্যমে এটা করাবো।’”
19 এসব কথা অব্নের দায়ূদকে হিব্রোণে বলেছিল। এসব কথা সে বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর লোকদের কাছেও বলেছিল। অব্নের যা বলেছিল সেগুলো বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠী এবং ইস্রায়েলের সব লোকদের কাছে ভাল লেগেছিল।
20 তখন অব্নের হিব্রোণে দায়ূদের কাছে চলে এল। অব্নের তার সঙ্গে 20 জন লোক এনেছিল। অব্নের এবং অব্নেরের সঙ্গে যারা এসেছিল তাদের জন্য দায়ূদ একটি ভোজ দিয়েছিলেন।
21 অব্নের দায়ূদকে বলল, “হে আমার মনিব এবং রাজা, আমাকে যেতে দিন এবং সব ইস্রায়েলীয়কে আপনার কাছে আনতে দিন। তারা আপনার সঙ্গে চুক্তি করবে। যেমনটি আপনি চেয়েছিলেন যে আপনি সারা ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করবেন।”
তখন দায়ূদ অব্নেরকে যেতে দিলেন। অব্নের শান্তিতে চলে গেলেন।
অব্নেরের মৃত্যু
22 যোয়াব এবং দায়ূদের আধিকারিকরা যুদ্ধ থেকে ফিরে এল। তারা শত্রুদের কাছ থেকে বহু মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে এনেছিল। দায়ূদ সবেমাত্র অব্নেরকে শান্তিতে পাঠিয়ে দিয়েছেন, তাই অব্নের দায়ূদের সঙ্গে হিব্রোণে ছিলেন না। 23 যোয়াব তার সৈন্যসামন্ত সহ হিব্রোণে এসে পৌঁছল। সৈন্যরা যোয়াবকে বলল, “নেরের পুত্র অব্নের রাজা দায়ূদের কাছে এসেছিল। রাজা দায়ূদ অব্নেরকে শান্তিতে যেতে দিয়েছেন।”
24 যোয়াব রাজাকে বলল, “এ আপনি কি করেছেন? অব্নের আপনার কাছে এলো আর আপনি তাকে আঘাত না করেই ছেড়ে দিলেন। কেন? 25 আপনি কি জানেন অব্নের নেরের পুত্র? সে আপনার সঙ্গে চালাকি করতে এসেছিল এবং আপনি কি কি করছেন সেই সমস্ত বিষয়ে সে শিখতে এসেছিল।”
26 যোয়াব দায়ূদের কাছ থেকে ফিরে গেল এবং সিরা কুয়োর কাছে অব্নেরের কাছে বার্তাবাহকদের পাঠালো। বার্তাবাহক অব্নেরকে ফিরিয়ে নিয়ে এল। দায়ূদ এসবের কিছুই জানতে পারলেন না। 27 অব্নের যখন হিব্রোণে এল, তখন যোয়াব তার সঙ্গে কথা বলতে চায় এইভাবে তাকে প্রবেশ পথের মাঝখানে একধারে নিয়ে গেল। সেখানে অব্নেরের পেটে ছুরিকাঘাত করল এবং অব্নের মারা গেল। অব্নের যোয়াবের ভাই অসাহেলকে হত্যা করেছিল তাই যোয়াব অব্নেরকে হত্যা করল।
দায়ূদ অব্নেরের জন্য কাঁদলেন
28 পরে দায়ূদ এই খবর শুনলেন। দায়ূদ বললেন, “নেরের পুত্র অব্নেরের মৃত্যুর ব্যাপারে আমি এবং আমার রাজ্য একেবারে নির্দোষ। প্রভু তা নিশ্চয়ই জানেন। 29 যোয়াব এবং তার পরিবার এর জন্য দায়ী এবং এই পরিবারগুলিকেই দোষ দেওয়া হবে। তাদের পরিবারের ওপর বহু সঙ্কট নেমে আসুক। এই পরিবারের লোকরা কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হবে, পঙ্গু হবে, যুদ্ধে মারা যাবে এবং ওদের খাদ্যাভাব হবে।”
30 যোয়াব এবং তার ভাই অবীশয় অব্নেরকে হত্যা করলো কারণ অব্নের তাদের ভাই অসাহেলকে গিবিয়োনের যুদ্ধে হত্যা করেছিল।
31-32 যোয়াব এবং তার লোকদের দায়ূদ বললেন, “তোমাদের জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেল এবং শোক প্রকাশ পায় এমন জামাকাপড় পর। অব্নেরের জন্য কাঁদ।” তারা অব্নেরকে হিব্রোণে কবর দিল। দায়ূদও অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়াতে গেলেন। রাজা দায়ূদ এবং অন্যান্য সব লোক অব্নেরের অন্ত্যেষ্টিতে কাঁদলেন।
33 রাজা দায়ূদ অব্নেরের অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়াতে এই শোকগীত গাইলেন:
“অবনের কি কয়েকজন দুষ্ট অপরাধীদের মত মারা গেল?
34 অব্নের, তোমার হাত বাঁধা ছিল না।
তোমার পায়ে কোন শিকল ছিল না।
না, অব্নের, মন্দ লোকরা তোমাকে হত্যা করেছে।”
প্রত্যেকে আবার অব্নেরের জন্য কাঁদল। 35 সারাদিন ধরে লোকরা এসে দায়ূদকে কিছু খাবার জন্য উৎসাহ দিল। কিন্তু দায়ূদ একটা বিশেষ প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। তিনি বললেন, “হে আমার ঈশ্বর, যদি আমি সূর্য ডোবার আগে রুটি বা অন্য কিছু খাই তবে তুমি আমাকে শাস্তি দিও এবং বহু সমস্যার মধ্যে ফেলো।” 36 এরপর কি ঘটলো তা সব লোকরা দেখল এবং রাজা দায়ূদ যা করেছিলেন তাতে সবাই খুব খুশী হল। 37 যিহূদা এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোক বুঝতে পারলো যে রাজা দায়ূদ নেরের পুত্র অব্নেরকে হত্যার আদেশ দেন নি।
38 রাজা দায়ূদ তাঁর আধিকারিকদের বললেন, “তোমরা কি জানো যে একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নেতা আজ ইস্রায়েলে মারা গেছে? 39 যে দিন আমি রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছি এ ঘটনা ঠিক সেই দিনই ঘটেছে। সরূয়ার এইসব সন্তান আমাকে বহু অসুবিধায় ফেলেছে। আমি আশা করি যে শাস্তি তাদের প্রাপ্য, প্রভু ওদের তা দেবেন।”
শৌলের পরিবারে সমস্যা ঘনিয়ে এলো
4 শৌলের পুত্র ঈশ্ বোশত্ শুনলেন যে হিব্রোণে অব্নের মারা গেছেন। ঈশ্বোশৎ এবং তাঁর লোকরা ভীষণ ভয় পেয়ে গেল। 2 দুজন লোক শৌলের পুত্র ঈশ্বোশতের সঙ্গে দেখা করতে গেল। ঐ দুজন লোক সৈন্যবাহিনীর প্রধান ছিল। তারা ছিল বেরোতীয় রিম্মোণের পুত্র রেখব এবং বানা। (এরা ছিল বিন্যামীনীয় যেহেতু বেরোত শহর বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর ছিল। 3 কিন্তু বেরোতের সব লোক গিত্তয়িমে পালিয়ে গিয়েছিল এবং এখনও পর্যন্ত তারা সেখানেই বসবাস করছে।)
4 শৌলের পুত্র যোনাথনের মফীবোশৎ নামে একটি পুত্র ছিল। শৌল এবং যোনাথন নিহত হয়েছেন এই খবর যখন যিষ্রিয়েল থেকে এল তখন মফীবোশতের বয়স পাঁচ বছর। মফীবোশৎকে যে মহিলা দেখাশোনা করতো এই সংবাদে সে অত্যন্ত ভীত হল এবং শত্রুরা আসছে এই ভেবে সে মফীবোশতকে নিয়ে পালিয়ে গেল। কিন্তু দৌড়ে পালাবার সময়, সে ছেলেটিকে ফেলে দিল, তাই তার দুটো পা-ই পঙ্গু।
5 রিম্মোণের পুত্ররা রেখব ও বানা বিরোত থেকে দুপুর বেলায় ঈশ্বোশতের বাড়ী গিয়েছিল। প্রচণ্ড গরম ছিল বলে ঈশ্বোশৎ বিশ্রাম করছিলেন। 6-7 রেখব ও বানা এমন ভাবে বাড়ীতে এল যেন তারা কিছু গম নিতে এসেছে। ঈশ্বোশৎ শোয়ার ঘরে তাঁর বিছানায় শুয়েছিলেন। রেখব ও বানা ছুরি বিদ্ধ করে তাঁকে হত্যা করল। তারা তাঁর মাথা কেটে সঙ্গে নিয়ে নিল। এরপর সারারাত তারা যর্দন উপত্যকার মধ্য দিয়ে হাঁটল। 8 তারা হিব্রোণে এলো এবং মাথাটি দায়ূদকে দিল।
রেখব এবং বানা রাজা দায়ূদকে বলল, “এই যে আপনার শত্রু শৌলের পুত্র ঈশ্বোশতের মাথা। সে আপনাকে হত্যার চেষ্টা করছিল। আপনার জন্য, শৌল এবং তার পরিবারকে প্রভু আজ শাস্তি দিলেন।”
9 কিন্তু দায়ূদ রেখব এবং তার ভাই বানাকে বললেন, “এ কথা জীবিত প্রভুর মতই সত্য যে তিনি সব সমস্যা থেকে আমাকে রক্ষা করেছেন। 10 এর আগে একবার এক ব্যক্তি ভেবেছিল সে আমার কাছে সুসংবাদ আনবে। সে বলেছিল, ‘দেখুন শৌল মারা গেছে।’ সে ভেবেছিল যে আমার কাছে এই খবর আনার জন্য আমি তাকে পুরস্কার দেব। কিন্তু আমি এই লোকটিকে ধরে ফেলেছিলাম এবং তাকে সিক্লগে হত্যা করি। 11 সেই মত আমি তোমাদের হত্যা করে এই দেশ থেকে সরিয়ে দেব। কেন? কারণ একজন সৎ লোককে তার বাড়ীতে, তার বিছানায় ঘুমন্ত অবস্থায়, তোমরা মন্দ লোকরা হত্যা করেছ।”
12 তখন দায়ূদ রেখব ও বানাকে হত্যা করার জন্য তরুণ সেনাদের আদেশ দিলেন। সেনারা রেখব ও বানার হাত পা কেটে নিল এবং হিব্রোণের একটি পুকুরের পাড়ে তাদের দেহ ঝুলিয়ে দিল। তারপর তারা ঈশ্বোশতের মাথাটি নিয়ে হিব্রোণে ঠিক সেখানেই কবর দিল যেখানে অব্নেরকে কবর দেওয়া হয়েছিল।
ইস্রায়েলীয়রা দায়ূদকে রাজা মনোনীত করল
5 তারপর ইস্রায়েলের সব কটি পরিবারগোষ্ঠী হিব্রোণে দায়ূদের কাছে এল এবং তারা তাঁকে বলল, “দেখুন, আমরা একই পরিবারভুক্ত।[b] 2 এমন কি শৌল যখন আমাদের রাজা ছিলেন, তখনও যুদ্ধে আপনি আমাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং আপনিই ইস্রায়েলকে যুদ্ধ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছেন। এমনকি প্রভু স্বয়ং আপনাকে বলেছেন ‘তুমিই আমার প্রজা সকলের মেষপালক হবে। তুমিই ইস্রায়েলের শাসনকর্তা হবে।’”
3 তাই ইস্রায়েলের নেতারা রাজা দায়ূদের সঙ্গে দেখা করতে হিব্রোণে এলেন। রাজা দায়ূদ প্রভুর সামনে, সেই নেতাদের সঙ্গে একটা চুক্তি করলেন। তারপর ঐ নেতারা দায়ূদকে ইস্রায়েলের রাজারূপে অভিষিক্ত করলেন।
4 দায়ূদের যখন 30 বছর বয়স তখন তিনি শাসনকার্য শুরু করেন এবং 40 বছর ধরে তিনি রাজা হিসেবে বহাল ছিলেন। 5 হিব্রোণে তিনি 7 বছর 6 মাস ধরে যিহূদা শাসন করেন এবং জেরুশালেমে থাকার সময় ইস্রায়েল ও যিহূদাকে 33 বছর শাসন করেন।
দায়ূদ জেরুশালেম শহর জয় করলেন
6 রাজা দায়ূদ এবং তাঁর অনুচররা, জেরুশালেমে বসবাসকারী যিবূষীয়দের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গেলেন। যিবূষীয়রা দায়ূদকে বলল, “তুমি এই শহরে ঢুকতেই পারবে না।[c] আমাদের অন্ধ ও পঙ্গু লোকরাই তোমাকে আটকে দেবে।” (তারা এই কথা বলেছিল কারণ তারা ভেবেছিল দায়ূদ তাদের শহরে ঢুকতে পারবেন না। 7 কিন্তু দায়ূদ সিয়োন দুর্গ দখল করলেন। এই দুর্গটি দায়ূদের শহর হল।)
8 সেইদিন দায়ূদ তাঁর সঙ্গীদের বললেন, “যদি তোমরা যিবুষীয়দের হারাতে চাও তবে জলের সুড়ঙ্গ[d] পথ দিয়ে সেই সব ‘পঙ্গু ও অন্ধ’ শত্রুদের কাছে পৌঁছে যাও।” এই জন্য লোকে বলে, “অন্ধ ও পঙ্গুরা মন্দিরে ঢুকতে পারে না।”
9 দায়ূদ সেই দুর্গে বাস করতে লাগলেন এবং সেই শহরকে “দায়ূদের শহর” বললেন। দায়ূদ মিল্লো নামে একটি অঞ্চল নির্মাণ করলেন। তিনি শহরের মধ্যে আরও অনেক বাড়ী তৈরী করলেন। 10 দায়ূদ ক্রমশঃই শক্তিশালী হয়ে উঠলেন কারণ সর্বশক্তিমান প্রভু তার সঙ্গে ছিলেন।
11 সোরের রাজা হীরম দায়ূদের কাছে বার্তাবাহক পাঠালেন। হীরম এরস গাছসমূহ, ছুতোর মিস্ত্রীগণ এবং পাথর দিয়ে বাড়ী তৈরীর মিস্ত্রীও পাঠালেন। তারা দায়ূদের জন্য একটা বাড়ী তৈরী করল। 12 তখন দায়ূদ বুঝতে পারলেন, যে প্রভু সত্যিসত্যিই তাঁকে ইস্রায়েলের রাজা করেছেন এবং তাঁর রাজ্যকে (দায়ূদের রাজ্যকে), তাঁর লোকদের, ইস্রায়েলীয়দের জন্য উন্নীত করেছেন।
13 দায়ূদ হিব্রোণ থেকে জেরুশালেমে এলেন। জেরুশালেমে এসে দায়ূদ আরও স্ত্রী এবং দাসী পেলেন। জেরুশালেমে দায়ূদের আরও সন্তানাদি হল। 14 জেরুশালেমে দায়ূদের যে সব পুত্র জন্মেছিল তাদের নাম: সম্মূয়, শোবব, নাথন, শলোমন, 15 যিভর ইলীশূয়, নেফগ, যাফিয়, 16 ইলিয়াদা, ইলীশামা এবং ইলীফেলট।
দায়ূদ পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন
17 পলেষ্টীয়রা শুনল যে ইস্রায়েলীয়রা দায়ূদকে তাদের রাজারূপে অভিষিক্ত করেছে। সেইজন্য পলেষ্টীয়রা দায়ূদকে হত্যা করবার জন্য খুঁজে বেড়াতে লাগল। দায়ূদ তা জানতে পেরে জেরুশালেমের দুর্গের মধ্যে চলে গেলেন। 18 পলেষ্টীয়রা এসে রফায়ীম উপত্যকায় তাঁবু গাড়লো।
19 দায়ূদ প্রভুকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাব? পলেষ্টীয়দের হারাতে আপনি কি আমায় সাহায্য করবেন?”
প্রভু দায়ূদকে উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, পলেষ্টীয়দের হারাতে আমি নিশ্চয়ই তোমাকে সাহায্য করব।”
20 তখন দায়ূদ বাল পরাসীমে গিয়ে সেই জায়গায় পলেষ্টীয়দের পরাজিত করলেন। দায়ূদ বললেন, “প্রভু আমার শত্রুদের ঠিক তেমনভাবেই ভেদ করলেন যেমন ভাবে বন্যার জল একটি বাঁধের মধ্যে দিয়ে সবলে পথ করে বেরিয়ে যায়।” এই কারণে দায়ূদ এই জায়গার নাম “বাল পরাসীম” রাখলেন। 21 পলেষ্টীয়রা বাল্-পরাসীমে তাদের দেবতাদের মূর্ত্তি ফেলে গিয়েছিল। দায়ূদ এবং তাঁর লোকরা সেইসব মূর্ত্তি নিয়ে গেলেন।
22 পলেষ্টীয়রা আবার এসে রফায়ীম উপত্যকায় তাঁবু গেড়ে বসল।
23 দায়ূদ প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন। এবারে প্রভু দায়ূদকে বললেন, “ওখানে যেও না। তুমি ওদের সৈন্যবাহিনীর পিছন দিকে যাও। তুমি বালসাম গাছের উল্টো দিক থেকে ওদের আক্রমণ কর। 24 বালসাম গাছগুলোর ওপর থেকে তোমরা পলেষ্টীয়দের যুদ্ধ ক্ষেত্রে যাবার কুচকাওয়াজের শব্দ শুনতে পাবে। সেই সময় তোমরা তাড়াতাড়ি করবে, কারণ সেই সময় তোমাদের জন্য পলেষ্টীয়দের পরাজিত করতে প্রভু তোমাদের সামনে সামনে যাবেন।”
25 প্রভু যা যা করার আদেশ দিলেন, দায়ূদ সেইমত করলেন এবং তিনি পলেষ্টীয়দের হারিয়ে দিলেন। তিনি গেবা থেকে গেষর পর্যন্ত পলেষ্টীয়দের তাড়া করতে করতে এবং হত্যা করতে করতে গেলেন।
প্রথমে পরিকল্পনা কর
(মথি 10:37-38)
25 যীশুর সঙ্গে সঙ্গে এক বিরাট জনতা চলেছিল, তাদের দিকে ফিরে যীশু বললেন, 26 “যদি কেউ আমার কাছে আসে অথচ তার বাবা, মা, স্ত্রী, সন্তান, ভাই-বোন, এমন কি নিজের প্রাণকেও আমার চেয়ে বেশী ভালবাসে সে আমার শিষ্য হতে পারবে না। 27 যে কেউ নিজের ক্রুশ কাঁধে তুলে নিয়ে আমায় অনুসরণ না করে, সে আমার শিষ্য হতে পারে না।
28 “তোমাদের মধ্যে কেউ যদি উঁচু একটি ঘর তুলতে চায়, তবে সে কি প্রথমে তা নির্মাণ করতে কত খরচ পড়বে তার হিসাব করে দেখবে না, যে তা শেষ করার মতো যথেষ্ট অর্থ তার আছে কি না? 29 তা না হলে সে ভিত গাঁথবার পর যদি তা শেষ করতে না পারে, তবে যারা সেটা দেখবে তারা সবাই তাকে নিয়ে ঠাট্টা করবে, আর বলবে, 30 এই লোকটা গাঁথতে শুরু করেছিল ঠিকই কিন্তু শেষ করতে পারল না।
31 “যদি একজন রাজা আর একজন রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যায়, তবে সে প্রথমে বসে চিন্তা করবে না যে তার মাত্র দশ হাজার সৈন্য বিপক্ষের বিশ হাজার সৈন্যের মোকাবিলা করতে পারবে কিনা? 32 যদি তা না পারে তবে তার শত্রু পক্ষ দূরে থাকতেই সে তার প্রতিনিধি পাঠিয়ে সন্ধির প্রস্তাব দেবে।
33 “ঠিক সেই রকম ভাবে তোমাদের মধ্যে যে কেউ তার সর্বস্ব ত্যাগ না করে, সে আমার শিষ্য হতে পারে না।”
তোমার প্রভাব যেন নষ্ট না হয়
(মথি 5:13; মার্ক 9:50)
34 “লবণ ভাল, তবে লবণের নোনতা স্বাদ যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে তা কি আবার নোনতা করা যায়? 35 তখন তা না জমির জন্য, না সারের গাদার জন্য উপযুক্ত থাকে, লোকে তা বাইরেই ফেলে দেয়।
“যার শোনার মতো কান আছে সে শুনুক।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International