Old/New Testament
শৌলের পরিবার শাস্তি পেল
21 দায়ূদ যখন রাজা ছিলেন তখন একটা দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। সেই দুর্ভিক্ষ কবলিত অনাহারের দিন টানা তিন বছর চলেছিল। দায়ূদ প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন এবং প্রভু তার উত্তর দিলেন। প্রভু বললেন, “শৌল এবং তার খুনী পরিবারই এই দুর্ভিক্ষের কারণ। শৌল গিবিয়োনীয়দের মেরে ফেলেছে বলে এই দুর্ভিক্ষ এসেছে।” 2 গিবিয়োনীয়রা ইস্রায়েলী ছিল না। তারা ইমোরীয়দের একটি গোষ্ঠী। ইস্রায়েলীয়রা শপথ করেছিল যে তারা গিবিয়োনীয়দের আঘাত করবে না। কিন্তু শৌল গিবিয়োনীয়দের হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। শৌল এ কাজ করেছিল কারণ ইস্রায়েল এবং যিহূদার লোকদের সম্পর্কে তার ভাবানুভূতি অত্যন্ত তীব্র ছিল।
রাজা দায়ূদ গিবিয়োনীয়দের একসঙ্গে ডেকে তাদের সঙ্গে কথা বললেন। 3 দায়ূদ গিবিয়োনীয়দের বললেন, “তোমাদের জন্য আমি কি করতে পারি? ইস্রায়েলের পাপ খণ্ডনের জন্য আমি কি করলে তোমরা প্রভুর সন্তানদের আশীর্বাদ করবে?”
4 গিবিয়োনীয়রা দায়ূদকে বলল, “শৌলের পরিবারের লোকরা যা করেছে তার মূল্য দেওয়ার জন্য তাদের পরিবারের যথেষ্ট সোনা ও রূপো নেই। কিন্তু আমাদের কোন অধিকার নেই যে ইস্রায়েলের কোন লোককে হত্যা করি।”
দায়ূদ বলল, “বেশ, তা হলে আমি তোমাদের জন্য কি করব?”
5 গিবিয়োনীয়রা উত্তর দিল, “শৌল আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। আমাদের যত লোক ইস্রায়েলে বাস করে তাদের সকলকে সে হত্যা করতে চেয়েছিল। 6 শৌলের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে থেকে সাতটি পুত্র আমাদের দাও। শৌল প্রভুর মনোনীত রাজা ছিল। তাই আমরা শৌলের গিবিয়া পর্বতে, প্রভুর সামনে তার ছেলেদের ফাঁসি দেব।”
রাজা দায়ূদ বললেন, “উত্তম, তাদের আমি তোমাদের হাতে সঁপে দেব।” 7 কিন্তু যোনাথনের পুত্র মফীবোশতকে রাজা নিরাপত্তা দিলেন। যোনাথনও শৌলের পুত্র, কিন্তু রাজা যোনাথনের কাছে প্রভুর নামে একটি শপথ গ্রহণ করেছিলেন।[a] 8 দায়ূদ অর্মোণি এবং মফীবোশতকে[b] তাদের হাতে তুলে দিলেন। এরা ছিল শৌল এবং তার স্ত্রী রিস্পার পুত্র। মেরাব নামে শৌলের এক কন্যাও ছিল। মহোলাতীয় বর্সিল্লয়ের পুত্র অদ্রীয়েলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। দায়ূদ মেরাব এবং অদ্রীয়েলের পাঁচ ছেলেকে নিলেন। 9 দায়ূদ এই সাতজন পুরুষকে গিবিয়োনীয়দের দিয়ে দিলেন যারা তাদের গিবিয়া পর্বতে নিয়ে গিয়েছিল এবং প্রভুর সামনে ফাঁসি দিয়েছিল। এই সাতজন পুরুষ একই সঙ্গে মারা গেল। ফসল তোলার প্রথম দিকেই তাদের হত্যা করা হল। সময়টা ছিল বসন্তকাল এবং এটা ছিল যবের ফসল তোলার গোড়ার দিকে।
দায়ূদ এবং রিস্পা
10 অয়ার কন্যা রিস্পা দুঃখের পোশাক গ্রহণ করল এবং শিলার উপরে তা রাখল। চাষবাসের শুরুর সময় থেকে বৃষ্টি আসা পর্যন্ত সেই দুঃখের পোশাক সেই পাথরেই পড়ে রইল। রিস্পা দিনরাত সেই দেহগুলি পাহারা দিত। দিনের বেলায় কোন হিংস্র পাখী বা রাতের বেলায় কোন হিংস্র প্রাণীকে সে দেহগুলির কাছে আসতে দিত না।
11 শৌলের দাসী রিস্পা যা করছে, সে সম্পর্কে লোকরা রাজা দায়ূদকে বলল। 12 তখন রাজা দায়ূদ শৌল ও যোনাথনের হাড়গুলো যাবেশ গিলিয়দের কাছ থেকে নিয়ে নিলেন। (শৌল ও যোনাথনের গিল্বোয়াতে মৃত্যুর পর যাবেশ গিলিয়দরা সেই হাড়গুলি এনেছিল। পলেষ্টীয়রা শৌল ও যোনাথনের দেহ দুটি বৈৎশানের (নিকটস্থ) দেওয়ালে ঝুলিয়ে রেখেছিল। কিন্তু বৈৎশানের লোকরা সেখানে গিয়ে দেহগুলি চুরি করে আনে।) 13 যাবেশ গিলিয়দের কাছ থেকে দায়ূদ শৌল এবং তার পুত্র যোনাথনের হাড়গুলি নিয়ে আসেন। সেই সাত জন যাদের ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল, তাদের দেহও তারা নিয়ে গিয়েছিল। 14 শৌল এবং যোনাথনের হাড় তারা বিন্যামীন দেশে কবরস্থ করল। শৌলের পিতা কীশের কবরের মধ্যে তারা তাদের কবর দিল। রাজা যা যা বলেছিলেন, লোকরা ঠিক তাই তাই করল। তাই ঈশ্বর সেই দেশের লোকের প্রার্থনা শুনলেন।
পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ
15 পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে আর একটি যুদ্ধে লিপ্ত হল। দায়ূদ এবং তার লোকরা পলেষ্টীয়দের সঙ্গে লড়াই করতে গেলেন। কিন্তু দায়ূদ প্রচণ্ড ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়লেন। 16 যিশ্বী-বনোব একজন দৈত্য ছিল। তার বর্শার ওজন ছিল প্রায় 7.5 পাউণ্ড পিতল। তার একটা নতুন তরবারি ছিল। সে দায়ূদকে হত্যা করার চেষ্টা করল। 17 কিন্তু সরূয়ার পুত্র অবীশয় সেই পলেষ্টীয়কে হত্যা করে দায়ূদকে বাঁচিয়ে দিল।
তখন দায়ূদের লোকরা দায়ূদের কাছে একটা শপথ করল। তারা তাঁকে বলল, “আপনি আর কোনভাবেই আমাদের সঙ্গে যুদ্ধে যেতে পারবেন না। যদি যান তাহলে ইস্রায়েল হয়তো তার মহান নেতাকে হারাবে।”
18 পরে গোব নামক স্থানে পলেষ্টীয়দের সঙ্গে আর একটি যুদ্ধ হল। হূশাতীয় সিব্বখয় দৈত্যদের মধ্যে সফ নামে আর একজনকে হত্যা করল।
19 পরে পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে গোব নামক স্থানে আর একটা যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধ বৈৎলেহমবাসী যারেওরগীমের পুত্র ইলহানন, গাতীয় গলিয়াতকে হত্যা করল। তার বর্শা তাঁতির তাঁতের দণ্ডের মতই বড় ছিল।
20 গাতে আরও একটা যুদ্ধ হয়। একজন খুব লম্বা চেহারার লোক ছিল যার প্রত্যেকটি হাতে এবং পায়ের পাতায় ছটা করে, মোট 24টা আঙ্গুল ছিল। এই লোকটাও একজন রাফার সন্তান। 21 ঐ লোকটা ইস্রায়েলকে বিদ্রূপ করল (কিন্তু যোনাথন, শিমিয়ির পুত্র যে ছিল দায়ূদের ভাই, তাকে হত্যা করল।)
22 এই চারজন প্রত্যেকেই দৈত্যদের সন্তান এবং এরা গাত থেকে এসেছিল। তারা দায়ূদ এবং তার লোকদের দ্বারা নিহত হয়েছিল।
প্রভুর উদ্দেশ্যে দায়ূদের প্রশংসা গীত
22 প্রভু যখন দায়ূদকে শৌল এবং অন্যান্য শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করলেন তখন দায়ূদ এই গীত গাইলেন:
2 প্রভু আমার শিলা, আমার দুর্গ, আমার নিরাপদ আশ্রয়।
3 আমার ঈশ্বর হচ্ছেন আমার শিলা যার কাছে আমি নিরাপত্তার জন্য ছুটে যাই।
ঈশ্বর আমার ঢাল, তাঁর ক্ষমতা আমায় রক্ষা করে।
প্রভু আমার লুকিয়ে থাকার জায়গা।
উঁচু পাহাড়ে, তিনি আমার নিরাপদ স্থান।
নৃশংস শত্রুর থেকে তিনি আমায় রক্ষা করেন।
4 প্রভু প্রশংসার যোগ্য।
আমি প্রভুর কাছে সাহায্য চেয়েছি
এবং তিনি আমাকে আমার শত্রুর কাছ থেকে রক্ষা করেছেন।
5 আমার শত্রুরা আমায় হত্যা করতে চাইছিল।
আমার চারপাশে মৃত্যুর তরঙ্গ মালার উচ্ছসিত কোলাহল অদম্য স্রোতে আমি মৃত্যুর দিকে ভেসে যাচ্ছিলাম।
6 আমার সামনে মৃত্যুর ফাঁদ,
আমার চারপাশে কবরের দড়ি।
7 বদ্ধ আমি, আমার প্রভুর কাছে সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করলাম,
হ্যাঁ, আমার ঈশ্বরকে ডাকলাম।
ঈশ্বর তাঁর মন্দিরে ছিলেন। তিনি আমার ডাক শুনলেন।
আমার সাহায্যের জন্য প্রার্থনা তাঁর কানে গেল।
8 তখন মাটি কেঁপে উঠল।
অন্তরীক্ষের ভিত নড়ে উঠল।
কেন? কারণ, প্রভু ক্রোধান্বিত হলেন।
9 ঈশ্বরের নাক থেকে ধোঁয়া বেরিয়ে এল।
তাঁর মুখ থেকে অগ্নিশিখা
এবং স্ফুলিঙ্গ বিচ্ছুরিত হতে লাগল।
10 প্রভু গগনমণ্ডল বিদীর্ণ করে নীচে নেমে এলেন।
একটি গাঢ় কৃষ্ণবর্ণ মেঘের ওপর তিনি দাঁড়ালেন।
11 তিনি করূব দূতগণের পিঠে চড়ে
এবং বাতাসে ভর দিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছিলেন।
12 তাঁর চারপাশে, একটা তাঁবুর মত গাঢ় কাল মেঘ দিয়ে প্রভু নিজেকে ঘিরে রেখেছিলেন।
সেই বজ্র বিদ্যুৎময় মেঘে, তিনি জলরাশি জমা করেছিলেন।
13 তাঁর চারপাশ থেকে জ্বলন্ত কয়লার মত
আলোকমালা বিকীর্ণ হতে লাগল।
14 প্রভু আকাশ থেকে বজ্রপাত করলেন।
পরাৎপর তাঁর কন্ঠস্বর শ্রুতিগোচর করলেন।
15 প্রভু শত্রুদের ছিন্ন ভিন্ন করবার জন্য তাঁর শর নিক্ষেপ করলেন।
প্রভু বিদ্যুৎ প্রেরণ করলেন এবং লোকরা বিভ্রান্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়লো।
16 হে প্রভু, আপনি দৃঢ়কণ্ঠে কথা বলেছিলেন।
তাঁর মুখ থেকে তীব্রগতি বাতাস বয়ে গিয়েছিল এবং জলকে পিছনে ঠেলে দিয়েছিলেন।
সেদিন আমরা সমুদ্রের তলদেশ দেখেছিলাম।
আমরা সেদিন পৃথিবীর ভিত্তিভূমিও দেখেছিলাম।
17 সেইভাবে প্রভু আমাকেও সাহায্য করেছিলেন। প্রভু ওপর থেকে আমার কাছে নেমে এসেছিলেন।
প্রভু তাঁর দুটি হাত দিয়ে আমায় জড়িয়ে ধরে বিপদ থেকে টেনে উদ্ধার করেছিলেন।
18 আমার শত্রুরা আমার চেয়ে শক্তিশালী ছিল। সেই লোকরা আমায় ঘৃণা করত।
আমার শত্রুরা আমার পক্ষে একটু বেশী শক্তিশালীই ছিল, তাই ঈশ্বর আমায় রক্ষা করলেন।
19 যখন আমি সমস্যায় জর্জরিত তখন শত্রুরা আমায় আক্রমণ করে।
কিন্তু, একমাত্র প্রভুই আমার পাশে ছিলেন।
20 প্রভু আমায় ভালোবাসেন, তিনি আমায় উদ্ধার করেছেন।
তিনি আমায় নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে গেছেন।
21 প্রভু আমাকে আমার পুরস্কার দেবেন, কারণ যা সত্য আমি তাই করেছি।
তাই তিনি আমার ভাল করবেন।
22 কেন? কারণ আমি প্রভুকে মান্য করে চলেছি।
আমার প্রভুর বিরুদ্ধে আমি কোন পাপ করি নি।
23 আমি সর্বদাই প্রভুর সিদ্ধান্তসকল স্মরণে রাখি
ও তাঁর বিধিগুলি অনুসরণ করি।
24 তাঁর সামনে আমি নিজেকে সর্বদাই
শুচি এবং নির্দোষ রাখি।
25 এই জন্য প্রভু আমাকে আমার পুরস্কার দেবেন। কেন? কারণ যা সত্য আমি তাই করেছি।
আমি কোন অন্যায় করি নি, তাই তিনি আমার মঙ্গল করবেন।
26 যদি কোন ব্যক্তি আপনাকে প্রকৃতই ভালবাসে, তাহলে তার প্রতি আপনি প্রকৃত ভালোবাসা দেখাবেন।
যদি কোন ব্যক্তি আপনার প্রতি নিষ্ঠাবান হন তাহলে তার প্রতি আপনিও নিষ্ঠাবান হন।
27 হে প্রভু, যারা শুচি এবং ভাল আপনিও তাদের প্রতি শুচি ও ভাল।
কিন্তু আপনি চতুর ও কুচক্রী ব্যক্তিকে পরাস্ত করতে সক্ষম।
28 হে প্রভু, সরল সৎ লোকদের আপনি সাহায্য করেন।
কিন্তু অহঙ্কারীদের আপনি লজ্জিত করেন।
29 হে প্রভু, আপনি আমার জ্বলন্ত দ্বীপ,
প্রভু আমার চারপাশের অন্ধকারকে আলোকিত করেন।
30 হে প্রভু, আপনার সহায়তায় আমি সৈন্যদের সঙ্গে দৌড়তে পারি।
ঈশ্বরের সহায়তায় আমি শত্রু পক্ষের দেওয়াল অতিক্রম করতে পারি।
31 ঈশ্বরের পথই পরিপূর্ণ।
প্রভুর বাক্য পরীক্ষিত সত্য।
যারা তাঁকে বিশ্বাস করে, তিনি তাদের রক্ষা করেন।
32 প্রভু ছাড়া দ্বিতীয় কোন ঈশ্বর নেই।
আমাদের ঈশ্বর ব্যতীত অন্য কোন শিলা নেই।
33 ঈশ্বরই আমার দূর্গ।
তিনি সৎ মানুষকে জীবনের সঠিক পথ দেখান।
34 প্রভু আমাকে হরিণের মত দ্রুত দৌড়াতে সাহায্য করেন।
উচ্চস্থানে তিনি আমায় অবিচল রাখেন।
35 প্রভু আমাকে যুদ্ধ বিদ্যা শিখিয়েছিলেন।
সেই কারণে আমার বাহু একটি শক্তিশালী শর নিক্ষেপ করতে পারে।
36 হে প্রভু! আপনি আমায় রক্ষা করেছেন। আপনি আমাকে জয়ী হতে সাহায্য করেছেন।
আপনি আমার শত্রুকে পরাজিত করতে সাহায্য করেছেন।
37 আমার হাঁটু এবং পা দুটিকে সবল করে দিন
যেন না খুঁড়িয়ে দ্রুত দৌড়াতে পারি।
38 আমার শত্রুদের নিধন না করা পর্যন্ত আমি তাদের তাড়া করতে চাই।
তারা ধ্বংস প্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত আমি ফিরে আসতে চাই না।
39 আমি আমার শত্রুদের ধ্বংস করেছি
আমি তাদের পরাজিত করেছি।
তারা আর উঠে দাঁড়াবে না।
হ্যাঁ, আমার শত্রুরা আমার পায়ের কাছে লুটিয়ে পড়েছে।
40 হে ঈশ্বর, আপনিই আমায় যুদ্ধে শক্তিশালী করেছেন,
আপনিই আমার শত্রুদের আমার পায়ের কাছে লুটিয়ে দিয়েছেন।
41 আমার শত্রুর গলা কেটে তাদের লুটিয়ে ফেলার সুযোগ
আপনিই আমাকে দিয়েছেন।
42 আমার শত্রুরা সাহায্য চেয়েছিল কিন্তু তাদের সাহায্য করার কেউ ছিল না।
এমনকি তারা প্রভুর কাছেও সাহায্য চেয়েছিল কিন্তু প্রভু তার কোন উত্তর দেন নি।
43 আমি শত্রুদের ছিন্ন ভিন্ন করে
তাদের ধূলোয় পরিণত করেছি।
তাদের আমি চূর্ণবিচূর্ণ করেছি।
রাস্তার কাদার মত আমি তাদের মাড়িয়ে গিয়েছি।
44 আমার বিরুদ্ধে আমার নিজের লোক যারা লড়াই করেছে, হে প্রভু, আপনি তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করেছেন।
আপনি আমাকে জাতির শাসক করেছেন।
যে লোকদের আমি জানতাম না, তারা এখন আমার সেবা করে।
45 অন্য দেশের লোকরাও আমায় মান্য করেছে। যখন তারা আমার নির্দেশ শুনেছে, তৎক্ষনাৎ তারা তা পালন করেছে।
সেই সব বিদেশীরা আমাকে ভয় করেছে।
46 সেই সব বিদেশীরা ভয়ে শুকিয়ে গেছে।
ভয়ে ভীত হয়ে তারা গোপন আস্তানা থেকে বেরিয়ে এসেছে।
47 প্রভু জীবিত!
আমি আমার শিলাকে প্রশংসা করি!
ঈশ্বর মহান! তিনিই সেই শিলা যিনি আমাকে রক্ষা করেন।
48 তিনি সেই ঈশ্বর যিনি আমার জন্য আমার শত্রুদের শাস্তি দিয়েছেন।
লোকদের তিনি আমার শাসনের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
49 হে ঈশ্বর, আপনি আমায় শত্রুদের থেকে রক্ষা করেছেন।
যারা আমার বিরোধিতা করেছিল তাদের পরাজিত করতে আপনি আমায় সাহায্য করেছেন।
শত্রুদের হাত থেকে আপনি আমায় রক্ষা করেছেন।
50 তাই হে প্রভু, আমি জাতিগুলির মধ্যে আপনার প্রশংসা করি!
এই কারণে আমি আপনার নামে গান গাই।
51 প্রভু তাঁর মনোনীত রাজাকে যে কোন যুদ্ধে জয়ী হতে সাহায্য করেন।
তাঁর মনোনীত রাজার জন্য প্রভু তাঁর করুণা বর্ষণ করেন।
তিনি দায়ূদের প্রতি এবং তাঁর উত্তরসূরীদের প্রতি সর্বদা বিশ্বস্ত থাকবেন।
24 যীশু তাকে দুঃখিত হতে দেখে বললেন, “যাদের ধন-সম্পদ আছে তাদের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা কত কঠিন! 25 হ্যাঁ, একজন ধনীর পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা অপেক্ষা ছুঁচের মধ্য দিয়ে উটের পার হওয়া সহজ।”
কারা উদ্ধার পাবে?
26 যে সব লোক একথা শুনল তারা বলে উঠল, “তাহলে কে উদ্ধার পেতে পারে?”
27 যীশু বললেন, “মানুষের পক্ষে যা সম্ভব নয় ঈশ্বরের পক্ষে তা সম্ভব।”
28 তখন পিতর বললেন, “দেখুন, আমরা তো সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে আপনার অনুসারী হয়েছি।”
29 যীশু তখন তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি যারা ঈশ্বরের রাজ্যের জন্য ঘর-বাড়ি, স্ত্রী, ভাই-বোন, মা-বাবা কিংবা ছেলে-মেয়ে ত্যাগ করেছে, 30 তারা প্রত্যেকে এ জীবনেই সেই সব বহুগুণে ফিরে পাবে, এছাড়া আগামী যুগে লাভ করবে অনন্ত জীবন।”
যীশু মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হবেন
(মথি 20:17-19; মার্ক 10:32-34)
31 যীশু তাঁর বারোজন প্রেরিতকে একপাশে ডেকে নিয়ে গিয়ে বললেন, “শোন! আমরা জেরুশালেমে যাচ্ছি; আর ভাববাদীরা মানবপুত্রের বিষয়ে যা কিছু লিখে গেছেন, সে সবই পূর্ণ হবে। 32 হ্যাঁ, অইহুদীদের হাতে তাঁকে তুলে দেওয়া হবে, তারা তাঁকে উপহাস করবে, গালাগালি দেবে, তাঁর গায়ে থুতু ছেটাবে। 33 তারা তাঁকে কশাঘাত করবে ও শেষ পর্যন্ত হত্যাই করবে; আর তৃতীয় দিনে মৃত্যুর মধ্য থেকে তিনি পুনরুত্থিত হবেন।” 34 তিনি কি বলতে চাইছেন, প্রেরিতেরা কিন্তু তার কিছুই বুঝতে পারলেন না। তিনি যে কি বলছেন তা তাঁরা বুঝতে পারলেন না, কারণ এসব কথার অর্থ তাদের কাছে গোপন রাখা হয়েছিল।
যীশু অন্ধকে দৃষ্টি দান করলেন
(মথি 20:29-34; মার্ক 10:46-52)
35 যীশু যখন যিরীহোর কাছাকাছি পৌঁছালেন, তখন সেখানে রাস্তার ধারে বসে একজন অন্ধ ভিক্ষা করছিল। 36 অনেক লোকজন যাওযার আওয়াজ শুনে সেই ভিখারী ব্যাপার কি তা জিজ্ঞাসা করল।
37 লোকেরা তাকে বলল, “নাসরতীয় যীশু সেখান দিয়ে যাচ্ছেন।”
38 তখন সে চিৎকার করে বলে উঠল, “হে দায়ূদের বংশধর যীশু, আমাকে দয়া করুন।”
39 যে সব লোক সেই ভীড়ের সামনে ছিল তারা তাকে চুপ করতে বলল, কিন্তু সে আরও চিৎকার করে বলল, “হে দায়ূদের বংশধর, আমায় দয়া করুন!”
40 যীশু থেমে গেলেন, তিনি সেই অন্ধকে তাঁর কাছে নিয়ে আসতে বললেন। সেই অন্ধ তাঁর কাছে এলে পর তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, 41 “তুমি কি চাও? তোমার জন্য আমি কি করব?”
সে বলল, “প্রভু, আমি যেন দেখতে পাই।”
42 যীশু তাকে বললেন, “বেশ! তুমি চোখে দেখতে পাও, তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সুস্থ করল।”
43 সঙ্গে সঙ্গে সে দেখতে পেল আর ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে যীশুর পেছনে পেছনে চলল। যাঁরা এই ঘটনা দেখল তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International