Chronological
অশূররা শমরিয়া দখল করল
9 অশূররাজ শলমনেষর, হিষ্কিয়র যিহূদায় রাজত্বের চতুর্থ বছরে এবং এলার পুত্র হোশিয়র ইস্রায়েলে রাজত্বের সপ্তম বছরে, শমরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন। অশূররাজের সেনাবাহিনী চতুর্দিক থেকে শমরিয়া ঘিরে ফেলে 10 এবং তৃতীয় বছরে অশূররাজ শলমনেষর শমরিয়া দখল করেন। হিষ্কিয়র যিহূদায় শাসনের ষষ্ঠ বছরে এবং হোশিযর ইস্রায়েলে শাসনের নবম বছরে শমরিয়া অশূররাজের পদানত হয়। 11 অশূররাজ ইস্রায়েলীয়দের বন্দী করে তাঁর সঙ্গে অশূর রাজ্যে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি তাদের হলহ, হাবোর, গোষণ নদীর তীরে মাদীয়দের বিভিন্ন শহরে বসবাস করতে বাধ্য করেন। 12 ইস্রায়েলীয়রা তাদের প্রভু ঈশ্বরের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করায় এবং প্রভুর সঙ্গে তাদের চুক্তি ভঙ্গ করার জন্যই এ ঘটনা ঘটেছিল। প্রভুর দাস মোশি যে আদেশগুলি দিয়েছিলেন বা ইস্রায়েলীয়দের যে নীতি-শিক্ষা দিয়েছিলেন, তা তারা পালন না করার জন্যই এই দুর্যোগ ঘনিয়ে আসে।
অশূর-রাজ যিহূদা দখল করার জন্য প্রস্তুত হলেন
13 হিষ্কিয়র রাজত্বের 14তম বছরে, অশূর-রাজ সন্হেরীব যিহূদার দূর্গ বেষ্টিত সমস্ত শহরগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করেন এবং তাদের পরাজিত করেন। 14 তখন যিহূদার রাজা হিষ্কিয় লাখীশে অশূররাজের কাছে একটা খবর পাঠালেন। হিষ্কিয় বললেন, “আমি অন্যায় করেছি। আপনি আমার রাজত্ব ছেড়ে চলে গেলে, আপনি যা চাইবেন আমি তাই দিতে প্রস্তুত আছি।”
তখন অশূররাজ হিষ্কিয়ের কাছে 11 টন রূপো ও 1 টন সোনা চেয়ে পাঠালেন! 15 হিষ্কিয় প্রভুর মন্দিরে ও রাজকোষে যত রূপো ছিল সবই অশূররাজকে দিয়ে দেন। 16 হিষ্কিয় প্রভুর মন্দিরের দরজা ও দরজার থামে যেসব সোনা বসিয়েছিলেন, সে সবও কেটে অশূররাজকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।
অশূররাজ জেরুশালেমে লোক পাঠালেন
17 অশূররাজ লাখীশ থেকে জেরুশালেমে হিষ্কিয়র কাছে তাঁর সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনজন সেনাপতি, রব্শাকি, তর্ত্তয় ও রব্সারিসের অধীনে একটি বড় সেনাবাহিনী পাঠান। তারা ধোপাদের ঘাটের কাছের রাস্তার ওপরের খাঁড়ির কাছে দাঁড়িয়ে ছিল। 18 তিনি হিল্কিয়ের পুত্র রাজপ্রাসাদের তত্ত্বাবধায়ক ইলিয়াকীম, সচিব শিব্ন ও একজন তথ্যসংগ্রাহক আসফের পুত্র যোয়াহ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বাইরে এল।
19 তিনজন সেনাপতিদের একজন, রব্শাকি বললেন, “হিষ্কিয়কে গিয়ে জানাও যে অশূররাজ বলেছেন:
‘তোমার আত্মবিশ্বাসের পেছনে কি কারণ আছে? 20 তুমি বলো, “যুদ্ধ করবার মতো যথেষ্ট শক্তি তোমার আছে।” কিন্তু সে তো কথার কথা মাত্র! কার ভরসায় তুমি আমার অধীনতা অস্বীকার করেছ? 21 তুমি কি মিশরের ওপর, একটি বেনু বাঁশের তৈরী চলবার ছড়ির ওপর নির্ভর করছ? মনে রেখো এই ছড়ির ওপর বেশী ভর দিলে, ছড়ি তো ভাঙবেই এমন কি তার চোঁচও তোমার হাতে ফুটে তোমায় জখম করতে পারে! মিশরের রাজার উপরে তুমি নির্ভর করতে পার না। 22 একথা শুনে তুমি হয়তো বলবে, “আমাদের প্রভু, ঈশ্বরের ওপরে আস্থা আছে।” কিন্তু আমি এও জানি, তোমার লোকরা প্রভুকে যে উঁচু বেদীগুলোয় উপাসনা করত, তুমি সেই সমস্ত ভেঙে দিয়ে যিহূদার লোকদের বলেছ, “তোমরা শুধুমাত্র জেরুশালেমের বেদীর সামনে উপাসনা করবে।”
23 ‘এখন অশূররাজের সঙ্গে এই চুক্তিটি করে ফেলো এবং আমি তোমাকে 2000 ভাল ঘোড়া দেব যদি তুমি ততগুলো অশ্বারোহী জোগাতে পার। 24 কারণ তোমরা মিশরের রথ আর অশ্বারোহীদের ওপর ভরসা করে আমাদের সেনাবাহিনীর একজন জমাদারকেও হারাতে পারবে না!
25 ‘আমরা প্রভুর বিনা সম্মতিতে জেরুশালেম ধ্বংস করতে আসি নি। প্রভুই স্বয়ং বলেছেন, “যাও, এই দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এই দেশকে ধ্বংস করো!”’”
26 একথা শুনে, হিল্কিয়ের পুত্র ইলিয়াকিম, শিব্ন ও যোয়াহ সেই সেনাপতিকে বলল, “অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে আরামিক ভাষায় কথা বলুন। কারণ যদি আপনি ইহুদীদের ভাষায় কথা বলেন, তাহলে দেওয়ালের ওপরের লোকরা আমাদের কথাবার্তা শুনতে পাবে!”
27 কিন্তু এই সেনাপতি রব্শাকি তখন বললেন, “আমাদের রাজা আমায় কেবলমাত্র তোমার বা তোমার রাজার সঙ্গে কথা বলতে পাঠান নি। আমি দেওয়ালের ওপরে বসে থাকা লোকদের সঙ্গেও কথা বলছি। কারণ তাদেরও তোমাদের মতো নিজেদের বিষ্ঠা খেতে হবে, আর নিজেদের মূত্র পান করতে হবে!”
28 তারপর এই সেনাপতি উঁচু গলায় ইহুদীদের ভাষায় বললেন:
“মহামান্য অশূররাজের বলে পাঠানো এই কথাগুলো মন দিয়ে শোন! 29 অশূররাজ বলেছেন, ‘হিষ্কিয়র চালাকিতে আকৃষ্ট হয়ো ন! ও কোন ভাবেই আমার হাত থেকে তোমাদের বাঁচাতে পারবে না!’ 30 হিষ্কিয়র কথা মেনো না এবং প্রভুর ওপরেও ভরসা করো না। হিষ্কিয় বলে, ‘প্রভু আমাদের রক্ষা করবেন! অশূররাজ এই শহর দখল করতে পারবে না!’
31 “কিন্তু হিষ্কিয়র কথা শুনো না! ‘অশূররাজ বলে পাঠিয়েছেন; আমার সঙ্গে সন্ধি স্থাপন করো। আমার আনুগত্য স্বীকার করলে তোমরা তোমাদের নিজেদের ক্ষেতের ফসল, বাড়ির কুঁয়োর জল খেতে পারবে। 32 তোমরা যদি আমি আসার পর আমার সঙ্গে সঙ্গে চলে আসো তাহলে তোমাদের এমন এক দেশে নিয়ে যাব, যেখানে সবুজ ক্ষেত শস্যে ভরে থাকে, অপর্যাপ্ত দ্রাক্ষারস আর গাছ-গাছালি ফলে ভরে থাকে। তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে, খাবার ও বস্ত্রসহ থাকতে পারবে। কিন্তু হিষ্কিয়র কথায় তোমরা কান দিও না।’
“ও তোমাদের দলে টানতে চেষ্টা করছে, বলছে, ‘প্রভু আমাদের রক্ষা করবেন।’ 33 কিন্তু ভেবে দেখো কোন দেশের দেবতাই কি তাঁর উপাসকদের অশূররাজের কবল থেকে বাঁচাতে পেরেছেন? না! 34 কোথায় গেল হমাত আর অর্পদের দেবতারা? কিংবা সফর্বযিম, হেনা আর ইব্বার দলবল? তাঁরা কি আমার হাত থেকে শমরিয়াকে বাঁচাতে পারলেন? না! 35 অন্য কোন দেবতা কি আমার হাত থেকে তাঁদের দেশ রক্ষা করতে পেরেছেন? না! প্রভু কেমন করে আমার হাত থেকে জেরুশালেম রক্ষা করবেন?”
36 কিন্তু একথা শুনেও লোকরা নিশ্চুপ হয়ে থাকল। তারা একটা কথাও উচ্চারণ করল না কারণ মহারাজ হিষ্কিয় তাদের বলে দিয়েছিলেন, “ওর সঙ্গে তোমরা কোন কথা বলো না।”
37 রাজপ্রাসাদের তত্ত্বাবধায়ক (হিল্কিয়ের পুত্র ইলিয়াকীম), রাজ-সচিব (শেব্ন) এবং তথ্যসংগ্রাহক (আসফের পুত্র যোয়াহ) হিষ্কিয়র কাছে এল। শোকপ্রকাশের জন্য তারা ছেঁড়া জামাকাপড় পরেছিল। অশূররাজের সেনাপতি তাদের কি বলেছেন, তারা সেই সব রাজা হিষ্কিয়কে জানাল।
হিষ্কিয় ভাববাদী যিশাইয়র সঙ্গে কথা বললেন
19 সমস্ত কথা শুনে রাজা হিষ্কিয়ও শোকার্ত হয়ে ভাল পোশাক ছিঁড়ে চটের পোশাক পরে প্রভুর মন্দিরে গেলেন।
2 হিষ্কিয় রাজপ্রাসাদের তত্ত্বাবধায়ক ইলীয়াকীম, রাজ-সচিব শিব্ন ও প্রধান যাজকদের আমোসের পুত্র ভাববাদী যিশাইয়র কাছে পাঠালেন। তারাও সকলে শোক প্রকাশের জন্য চটের পোশাক পরেছিল। 3 এরা সকলে গিয়ে যিশাইয়কে বলল, “হিষ্কিয় বলেছেন, ‘এই সঙ্কটের দিনে আমাদের করা ভুল-ভ্রান্তি ও পাপ আচরণের কথা স্মরণ করা উচিৎ। কিন্তু অবস্থা এখন এরকম যে নবজাতকের জন্ম দিতে হবে অথচ প্রসূতির কোন শক্তি নেই। 4 অশূররাজের সেনাপতি এসে ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে পর্যন্ত প্রশ্ন তুলেছে, অনেক খারাপ কথা শুনিয়ে গিয়েছে। সম্ভবতঃ আপনার প্রভু ঈশ্বর সে সবই শুনতে পেয়েছেন, হয়তো এর জন্য প্রভু তাঁর শত্রুদের যথোচিত শাস্তিও দেবেন। অনুগ্রহ করে আপনি, যে সমস্ত লোক এখনও জীবিত আছে তাদের জন্য প্রার্থনা করুন।’”
5 মহারাজ হিষ্কিয়র উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারীরা যিশাইয়র কাছে গেলে 6 তিনি তাদের বললেন, “তোমাদের গুরুকে গিয়ে খবর দাও: ‘প্রভু বলেছেন: অশূররাজের কর্মচারীরা আমাকে অপমান করার জন্য যে সব কথা বলে গিয়েছে, তা শুনে ভয় পাবার কোন কারণ নেই! 7 আমি ওর ওপর ভর করার জন্য এক অপদেবতাকে পাঠাচ্ছি। তারপর দেখো, গুজবে ভয় পেয়ে ও নিজেই নিজের দেশে ছুটে পালাবে। সেখানে আমি তরবারির আঘাতে ওর মৃত্যুর জন্য সমস্ত আয়োজন করে রাখছি।’”
হিষ্কিয়কে অশূর-রাজ আবার সতর্ক করলেন
8 অশূর-রাজের সেনাপতি খবর পেলেন, তাদের মহারাজ লাখীশ ছেড়ে গিয়ে লিব্নার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন। 9 ইতিমধ্যে অশূর-রাজ গুজব শুনলেন, “কূশদেশের রাজা তির্হকঃ তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসছেন!”
তখন অশূর-রাজ হিষ্কিয়র কাছে আবার দূত মারফৎ খবর পাঠালেন। এই বার্তায় বলা হল: 10 “যিহূদা-রাজা হিষ্কিয় সমীপেষু,
‘আপনাদের ঈশ্বরের দ্বারা প্রতারিত হয়ে যদি আস্থা রাখেন অশূর-রাজ জেরুশালেমকে পদানত করতে পারবেন না তাহলে ভুল করবেন। 11 আপনি নিশ্চয়ই অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে অশূর-রাজের যুদ্ধযাত্রা ও তাদের পরিণতির কথা অবগত আছেন। এই সমস্ত দেশকে আমরা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছি। আপনারা কি ভাবছেন যে আপনারা উদ্ধার পাবেন? 12 এই সমস্ত জাতির দেবতা তাঁদের নিজেদের লোকদের বাঁচাতে পারেন নি। আমার পূর্বপুরুষরা, গোষণ, হারণ, রেৎসফ, তলঃশর এদোনের লোকরা এদের সবাইকেই ধ্বংস করেছিলেন। 13 কোথায় গেলেন হমাৎ, অর্পদ, সফর্বয়িম, হেনা, ইব্বার রাজারা? এঁরা সকলেই মরে ভূত হয়ে গিয়েছেন!’”
হিষ্কিয় প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন
14 দূতদের কাছ থেকে এই চিঠি নিয়ে পড়ার পর হিষ্কিয় প্রভুর মন্দিরে গিয়ে প্রভুর সামনে চিঠিখানা মেলে ধরলেন। 15 তারপর তিনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বললেন, “প্রভু করূব দূতদের মধ্যে আসীন ইস্রায়েলের ঈশ্বর আপনি এই পৃথিবীর সমস্ত ভূ-ভাগ, সমস্ত দেশেরই নিয়ামক। স্বর্গ ও পৃথিবী আপনারই হাতে গড়া। 16 প্রভু, অনুগ্রহ করে আমার কথা শুনুন, চোখ খুলে এই চিঠিখানা দেখুন। কিভাবে সন্হেরীব জীবন্ত ঈশ্বরকে অপমান করেছেন তা শুনুন। 17 প্রভু এটা সত্য অশূর-রাজ এসমস্ত দেশ ধ্বংস করেছেন। 18 তারা তাদের মূর্ত্তিসমূহকে আগুনে ছুঁড়ে ফেলেছেন এসবই সত্যি কথা। কিন্তু সেই সব মূর্ত্তি তো আসলে মানুষের বানানো কাঠ এবং পাথরের পুতুল মাত্র ছিল। যে কারণে অশূর-রাজ ওদের ধ্বংস করতে পেরেছিলেন। 19 কিন্তু এখন প্রভু, আমাদের ঈশ্বর অশূর-রাজের কবল থেকে উদ্ধার করুন। তাহলে পৃথিবীর সর্বত্র সবাই জানবে প্রভুই একমাত্র ঈশ্বর।”
20 আমোসের পুত্র যিশাইয়, হিষ্কিয়কে খবর পাঠালেন, “প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর জানিয়েছেন: তুমি সন্হেরীবের বিরুদ্ধে আমার কাছে যে প্রার্থনা করেছো, আমি তা শুনতে পেয়েছি।
21 “সন্হেরীব সম্পর্কে প্রভু বলেন:
‘সিয়োনের কুমারী কন্যা মনে করে তুমি খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নও।
তাই সে তোমায় টিটকিরি করে,
তোমার পেছনে তোমায় অপমান করছে।
22 তুমি কাকে অপমান করেছ এবং ঈশ্বরের নামে কাকে অভিশাপ দিয়েছ বলে মনে কর?
তুমি কার বিরুদ্ধে গলা তুলেছ এবং গর্বিত ভাবে তাকিয়েছ?
সেটা ইস্রায়েলের সেই পবিত্র একজনের বিরুদ্ধে।
23 তাই তুমি তোমার বার্তাবাহকদের এই কথা বলবার জন্য পাঠিয়ে প্রভুকে অপমান করেছ।
তুমি বলেছ, “আমার অজস্র রথবাহিনী নিয়ে আমি উচ্চতম পর্বত থেকে লিবানোনের গভীরতম প্রদেশ পর্যন্ত গিয়েছি।
সেখানকার উচ্চতম দেবদারু গাছ থেকে শুরু করে সব চেয়ে ভাল আর দুর্মূল্য গাছও কেটে টুকরো করেছি।
আমি লিবানোনের সবচেয়ে উঁচু প্রান্তর থেকে গভীর জঙ্গল পর্যন্ত গিয়েছি।
24 আমি কুয়ো খুঁড়ে নিত্যনতুন জায়গার জল পান করেছি।
মিশরের নদীর জল শুকিয়ে,
খট্খটে শুকনো জমিতে পায়ে হেঁটেছি।”
25 ‘তুমি তো তাই বললে। কিন্তু প্রভু যা বলেন তা তুমি তোমার দূরদেশে শোনোনি।
এসবই আমার (ঈশ্বর) পূর্ব পরিকল্পিত।
সেই অনাদি-অনন্তকাল থেকে
আমিই সব ঠিক করে ঘটিয়ে চলেছি!
যে কারণে তুমি একের পর এক শক্তিশালী দেশ ধ্বংস করে,
তাদের পাথরের ভগ্নস্তূপে পরিণত করতে পেরেছ।
26 এই সমস্ত দেশের লোক শক্তিহীন।
এই লোকরা ভীত এবং বিভ্রান্ত
তারা জমিতে ঘাস ও গাছপালা
এবং বাড়ীর ছাদের উপর ঘাস ও গাছপালা বড় না হতেই মারা যায়।
27 আমি এটা জানি তুমি কখন বসে থাকো,
কখন আসো, কখন যাও
এবং কখন তুমি আমার বিরুদ্ধে।
28 তুমি কখন আমাকে অপমান করো,
কখন তোমার সঙ্গীত নাসা শূন্যে তুলে গর্ব কর, সে সবই আমি খেয়াল রাখি।
এবার তাই আমি তোমার এই সঙ্গীত নাসায় দড়ি বেঁধে
তোমায় কলুর বলদের মতো ঘোরাবো আর জাবর কাটাবো,
ঠিক যে ভাবে তোমায় টেনে তুলেছিলাম
সে ভাবেই এক ফুঁয়ে তোমায় নীচে ফেলবো।’”
হিষ্কিয়র প্রতি প্রভুর বার্তা
29 এটি হবে তোমার পক্ষে একটি চিহ্নস্বরূপ। এবছর তুমি মাঠে যে শস্য আপনিই জন্মায় তাই খাবে। পরের বছর তুমি বীজ থেকে যে শস্য হয় তাই খাবে। আর তার পরের বছর, তৃতীয় বছরে তুমি তোমার নিজের বোনা বীজের শস্য থেকে খেতে পারবে। এর থেকেই, আমি যে তোমার সহায় তা প্রমাণিত হবে। তুমি দ্রাক্ষা ক্ষেতে গাছ পুঁতে সেই দ্রাক্ষা নিজে খাবে। 30 যিহূদার যে সমস্ত লোক পালিয়ে গিয়েছে এবং বেঁচে আছে আবার সংখ্যায় বৃদ্ধি পাবে। 31 যে সমস্ত অল্প সংখ্যক লোক বাকী আছে তারা জেরুশালেম থেকে বেরিয়ে আসবে এবং কিছু সংখ্যক সিয়োন পর্বত ছেড়ে চলে যাবে।
32 “তাই প্রভু অশূর-রাজ সম্পর্কে জানিয়েছেন:
‘অশূর-রাজ এ শহরে নিজের দল নিয়ে আসবে না
বা এখানে একটা তীরও ছুঁড়তে পারবে না।
এ শহর আক্রমণ করে, দেয়াল ভেঙে
ধূলোর পাহাড়ও বানাতে পারবে না।
33 যে পথ দিয়ে অশূর-রাজ এসেছিল, সে পথেই আবার ফিরে যাবে।
এ শহরে তার ঢোকা আর হবে না!
34 আমি এই শহরকে রক্ষা করব আর বাঁচাব।
আমার নিজের জন্য আর আমার সেবক দায়ূদের জন্যই আমি এই কাজ করব।’”
অশূর-রাজের সেনাবাহিনী ধ্বংস হল
35 সেই রাতেই প্রভুর পাঠানো দূত গিয়ে অশূর-রাজের 185,000 সেনা ধ্বংস করলেন। সকালে উঠে সবাই শুধু মৃতদেহ দেখতে পেল।
36 সন্হেরীব তখন নীনবীতে ফিরে গিয়ে বাস করতে শুরু করলেন। 37 এক দিন তিনি যখন তাঁর ইষ্টদেবতা নিষ্রোকের মন্দিরে পূজা করছিলেন, সে সময় তাঁর দুই পুত্র অদ্রম্মেলক ও শরেৎসর তাঁকে তরবারির আঘাতে হত্যা করে অরারট দেশে পালিয়ে গেলে, তাঁর আর এক পুত্র এসর-হদ্দোন তাঁর জায়গায় নতুন রাজা হলেন।
পরিচালকের প্রতি: কোরহ পরিবারের একটি গীত। অলামোতের দ্বারা একটি গীত।
46 ঈশ্বর আমাদের আশ্রয় এবং আমাদের শক্তির উৎস।
সমস্যার সময় তাঁর মধ্যেই আমরা সব সাহায্য খুঁজে পাবো।
2 তাই যখন ভূমিকম্প হয়, যখন পর্বত ভেঙে সমুদ্রে পড়ে যায়
তখন আমরা ভয় পাই না।
3 যখন সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠে আর গর্জন করে
এবং পর্বত যখন কেঁপে ওঠে, তখন আমরা ভয় পাই না।
4 একটি নদী আছে যার স্রোত ঈশ্বরের শহরে
পরাৎপরের পবিত্র শহরে আনন্দ বয়ে আনে।
5 সেই শহরে ঈশ্বর আছেন, তাই কোনদিন তা ধ্বংস হবে না।
সূর্যোদয়ের আগেই ঈশ্বর সেখানে সাহায্যের জন্য উপস্থিত থাকবেন।
6 যখন প্রভু গর্জন করবেন, পৃথিবী ভেঙে পড়বে,
জাতিগুলি ভয়ে কাঁপবে এবং রাজত্বগুলি ভেঙে পড়বে।
7 সর্বশক্তিমান প্রভু আমাদের সঙ্গে আছেন।
যাকোবের ঈশ্বরই আমাদের নিরাপদ স্থান।
8 প্রভু যে সব ক্ষমতা সম্পন্ন কাজ করেন তা দেখ।
পৃথিবীতে তিনি যে সব বিস্ময়কর জিনিসগুলি করেছেন সেগুলো দেখ।
9 প্রভু এই পৃথিবীর যে কোন জায়গার যুদ্ধ থামিয়ে দিতে পারেন।
তিনি একজন সৈনিকের ধনু ভেঙে দিতে পারেন।
তিনি তাদের বল্লম চূর্ণবিচূর্ণ করে দিতে পারেন
এবং তিনি তাদের রথও পুড়িয়ে দিতে পারেন।
10 ঈশ্বর বলেন, “লড়াই বন্ধ কর এবং আমিই যে ঈশ্বর এই শিক্ষা গ্রহণ কর!
আমিই সেই জন, যে জাতিগণকে পরাজিত করি!
আমিই পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করি!”
11 সর্বশক্তিমান প্রভু আমাদের সঙ্গে আছেন।
যাকোবের ঈশ্বরই আমাদের নিরাপদ স্থান।
সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: “চুক্তির লিলিফুল” গানটির পর্দায় গাওয়া আসফের একটি প্রশংসা গীত।
80 হে ইস্রায়েলের মেষপালক, আমার কথা শুনুন।
আপনি যোষেফের লোকদের মেষের মত পরিচালিত করেছেন।
করূব দূতের ওপর আপনি রাজার মত বসেন।
আপনাকে আমাদের দেখতে দিন।
2 হে ইস্রায়েলের মেষপালক ইফ্রয়িম, বিন্যামীন এবং মনঃশির প্রতি আপনার মহত্ব প্রদর্শন করুন।
আপনি এসে আমাদের রক্ষা করুন।
3 ঈশ্বর, পুনর্বার আমাদের গ্রহণ করুন।
আমাদের গ্রহণ করুন, আমাদের রক্ষা করুন!
4 প্রভু, হে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, কখন আপনি আমাদের প্রার্থনা শুনবেন?
আপনি কি চিরদিনের মত আমাদের ওপর ক্রুদ্ধ হয়ে থাকবেন?
5 খাদ্য হিসেবে আপনার লোকদের আপনি চোখের জল দিয়েছেন।
আপনার লোকদের আপনি তাদেরই চোখের জলে ভর্ত্তি গামলা দিয়েছেন।
সেটাই ছিল তাদের পানীয় জল।
6 আমাদের শত্রুদের জন্য আপনি আমাদের ঝগড়ার কারণ হবার লক্ষ্য বানিয়েছেন
এবং শত্রুরা আমাদের বিদ্রূপ করে।
7 হে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, পুনরায় আমাদের গ্রহণ করুন।
আমাদের গ্রহণ করুন, আমাদের রক্ষা করুন।
8 অতীতে আপনি আমাদের প্রতি
গুরুত্বপূর্ণ চারা গাছের মতই যত্ন নিয়েছিলেন।
মিশর থেকে আপনি আপনার দ্রাক্ষালতা এনেছিলেন।
অন্যান্য লোকদের আপনি এদেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন এবং আপনার দ্রাক্ষালতা আপনি এখানে রোপণ করেছিলেন।
9 সেই দ্রাক্ষালতার জন্য আপনি জমি তৈরী করেছিলেন।
এর শিকড়গুলোকে আপনি জমির গভীরে বাড়তে সাহায্য করেছিলেন, খুব তাড়াতাড়ি এই দ্রাক্ষালতা সারা দেশ ছেয়ে ফেলেছে।
10 এটি পর্বতকে ঢেকে দিয়েছে।
এর পাতাগুলি বৃহৎ এরস গাছকেও ছায়া দিয়েছে।
11 এই দ্রাক্ষালতা ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে।
এর লতাপাতা ফরাৎ নদী পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।
12 ঈশ্বর, যে প্রাচীর আপনার দ্রাক্ষালতাকে রক্ষা করতো, কেন তাকে ভেঙে ফেললেন?
এখন যে কোন ব্যক্তিই এর ধার দিয়ে যায়, সেই এর দ্রাক্ষা তুলে নিয়ে যায়।
13 বুনো শূকররা এসে আমাদের দ্রাক্ষাক্ষেতে ঘুরে বেড়ায়।
বুনো জন্তুরা এসে এর পাতা খায়।
14 হে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আপনি আসুন।
স্বর্গ থেকে আপনার দ্রাক্ষাক্ষেত দেখুন এবং তাকে রক্ষা করুন।
15 হে ঈশ্বর, নিজ হাতে যে দ্রাক্ষালতা আপনি লাগিয়েছিলেন, তার দিকে দেখুন।
যে চারাগাছকে[a] আপনি বড় হতে দিয়েছেন তার দিকে দেখুন।
16 শুকনো গোবরের মত আপনার দ্রাক্ষালতা পুড়ে গিয়েছিলো।
আপনি এর প্রতি ক্রুদ্ধ হয়ে একে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন।
17 হে ঈশ্বর, যে সন্তান আপনার ডানদিকে দাঁড়িয়ে ছিল তার দিকে হাত বাড়ান।
যে সন্তানকে আপনি বড় করেছেন তার দিকে হাত বাড়ান।
18 সে আর আপনাকে ছেড়ে যাবে না।
তাকে বাঁচতে দিন, সে আপনার নামের উপাসনা করবে।
19 হে প্রভু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, আমাদের কাছে ফিরে আসুন।
আমাদের গ্রহণ করুন। আমাদের রক্ষা করুন।
135 প্রভুর প্রশংসা কর!
প্রভু নামের প্রশংসা কর!
হে প্রভুর দাসগণ, তাঁর প্রশংসা কর!
2 তোমরা যারা প্রভুর মন্দিরে দাঁড়িয়ে আছো,
আমাদের ঈশ্বরের মন্দিরের আঙিনায়, তারা তাঁর প্রশংসা কর।
3 প্রভুর প্রশংসা কর, কারণ তিনি ভালো।
তাঁর নামের প্রশংসা কর, কারণ তা অত্যন্ত মনোরম।
4 প্রভু যাকোবকে মনোনীত করেছেন।
ইস্রায়েল ঈশ্বরের অধিকারভুক্ত।
5 আমি জানি প্রভু মহান!
আমাদের প্রভু সব দেবতাদের চেয়ে মহান!
6 স্বর্গে এবং পৃথিবীতে, সমুদ্র বা গভীর মহাসাগরে
ঈশ্বর যা চান তাই করতে পারেন।
7 ঈশ্বরই, সারা পৃথিবীতে মেঘ সৃষ্টি করেন।
ঈশ্বরই বৃষ্টি এবং বিদ্যুৎ সৃষ্টি করেন
এবং ঈশ্বরই বাতাস সৃষ্টি করেন।
8 ঈশ্বর, মিশরবাসীদের প্রথম সন্তান এবং সেখানকার পশুদের প্রথম শাবককে ধ্বংস করেছিলেন।
9 ঈশ্বর, মিশরে অনেক চমৎকার ও অলৌকিক কাজ করেছিলেন।
এমনকি ফরৌণ এবং তার আধিকারিকদের জন্যও ঈশ্বর এইসব ঘটনা ঘটিয়েছিলেন।
10 ঈশ্বর অনেক জাতিকে পরাজিত করেছিলেন।
অনেক শক্তিশালী রাজাকে ঈশ্বর হত্যা করেছিলেন।
11 ইমোরীয়দের রাজা সীহোনকে ঈশ্বর পরাজিত করেছিলেন।
বাশনের রাজা ওগকে ঈশ্বর পরাজিত করেছিলেন।
কনানের সব রাজ্যগুলিকে ঈশ্বর পরাস্ত করেছিলেন।
12 এবং তাদের ভূখণ্ডগুলি প্রভু ইস্রায়েলকে দিয়েছেন।
তাদের ভূখণ্ড প্রভু তাঁর লোকদের দিয়েছেন।
13 প্রভু আপনার নাম চিরদিন ধরে বিখ্যাত থাকবে!
প্রভু মানুষ আপনাকে চিরকাল মনে রাখবে।
14 প্রভু জাতিগুলিকে শাস্তি দিয়েছিলেন।
কিন্তু প্রভু তাঁর সেবকদের প্রতি সদয় ছিলেন।
15 অন্যান্য লোকদের দেবতারা শুধুই সোনা ও রূপোর মূর্ত্তি।
ওদের দেবতারা নিছকই মানুষের হাতের তৈরী মূর্ত্তি মাত্র।
16 ওই মূর্ত্তিগুলোর মুখ ছিলো কিন্তু কথা বলতে পেতো না।
ওই মূর্ত্তিগুলোর চোখ ছিলো কিন্তু দেখতে পেতো না।
17 ওই মূর্ত্তিগুলোর কান ছিলো কিন্তু শুনতে পেতো না।
ওই মূর্ত্তিগূলোর নাক ছিলো কিন্তু ঘ্রাণ নিতে পারতো না।
18 যে লোকগুলো ওই মূর্ত্তিগুলো তৈরী করেছে তারাও ওই রকম হয়ে যাবে!
কেন? কারণ ওরা বিশ্বাস করে যে মূর্ত্তিগুলোই ওদের সাহায্য করবে।
19 হে ইস্রায়েলের পরিবারবর্গ, প্রভুর প্রশংসা কর!
হে হারোণের পরিবার, প্রভুর প্রশংসা কর!
20 হে লেবীয় পরিবার প্রভুর প্রশংসা কর!
হে প্রভুর অনুগামীরা, প্রভুর প্রশংসা কর!
21 সিয়োন থেকে, তাঁর গৃহ জেরুশালেম থেকে,
প্রভু প্রশংসা প্রাপ্ত হন।
প্রভুর প্রশংসা কর!
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International