Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Chronological

Read the Bible in the chronological order in which its stories and events occurred.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
2 শমূয়েল 11-12

দায়ূদ বৎ‌শেবার সঙ্গে মিলিত হলেন

11 বসন্তের সময়, যখন রাজারা যুদ্ধে যান, তখন দায়ূদ যোয়াব, তাঁর আধিকারিকদের এবং সমস্ত ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের অম্মোনীয়দের ধ্বংস করতে পাঠালেন। যোয়াবের সৈন্যরা অম্মোনদের রাজধানী শহর রব্বাও আক্রমণ করল।

কিন্তু দায়ূদ জেরুশালেমেই রইলেন। সন্ধ্যায়, তিনি বিছানা ছেড়ে উঠলেন এবং রাজবাড়ীর ছাদে পায়চারি করতে লাগলেন। দায়ূদ যখন ছাদে পায়চারি করছিলেন, তখন তিনি এক মহিলাকে স্নান করতে দেখলেন। সেই মহিলা ছিল পরমা সুন্দরী। দায়ূদ তাঁর আধিকারিককে ঐ মহিলাটির সম্বন্ধে খোঁজ নিতে পাঠালেন। এক আধিকারিক উত্তর দিল, “মেয়েটি ইলিয়ামের কন্যা বৎ‌শেবা। সে হিত্তীয় ঊরিয়ের স্ত্রী।”

দায়ূদ লোক পাঠিয়ে বৎ‌শেবাকে তাঁর কাছে আনলেন। যখন বৎ‌শেবা দায়ূদের কাছে এল, দায়ূদ তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হলেন। বৎ‌শেবা স্নান করে বাড়ী ফিরে গেল। বৎ‌শেবা গর্ভবতী হল। সে দায়ূদকে জানালো, “আমি গর্ভবতী।”

দায়ূদ তাঁর পাপ লুকোতে চাইলেন

দায়ূদ যোয়াবের কাছে খবর পাঠালেন, “হিত্তীয় ঊরিয়কে আমার কাছে পাঠিয়ে দাও।”

যোয়াব ঊরিয়কে দায়ূদের কাছে পাঠিয়ে দিল। ঊরিয় দায়ূদের কাছে এল। দায়ূদ ঊরিয়কে জিজ্ঞাসা করলেন, “যোয়াব কেমন আছে।” সৈনিকরা কেমন আছে এবং যুদ্ধ কেমন হল ইত্যাদি। তারপর দায়ূদ ঊরিয়কে বললেন, “বাড়ী গিয়ে বিশ্রাম কর।”

ঊরিয় রাজার বাড়ী থেকে চলে গেল। রাজা (দায়ূদ) ঊরিয়ের জন্য উপহার পাঠালেন। কিন্তু ঊরিয় বাড়ী গেল না। ঊরিয় রাজবাড়ীর দরজার সামনে ঘুমিয়ে পড়লো। রাজার ভৃত্যের মতই সে সেখানে ঘুমালো। 10 এক দাস দায়ূদকে খবর দিল, “ঊরিয় বাড়ী যায় নি।”

দায়ূদ ঊরিয়কে বললেন, “তুমি দীর্ঘ সফর থেকে ফিরে এসেছ। কেন তুমি বাড়ীতে গেলে না?”

11 ঊরিয় দায়ূদকে বলল, “পবিত্র সিন্দুকটি এবং ইস্রায়েল ও যিহূদার সৈন্যরা তাঁবুগুলিতে রয়েছে। আমার মনিব যোয়াব এবং আমার মনিবের (রাজা দায়ূদ) আধিকারিকরা শিবির গেড়ে মাঠে তাঁবু ফেলেছেন। সুতরাং আমার পক্ষে বাড়ী গিয়ে পান আহার করে স্ত্রীর সঙ্গে শয়ন করা ঠিক নয়।”

12 দায়ূদ ঊরিয়কে বললেন, “আজকের দিনটা এখানে থেকে যাও। কাল আমি তোমাকে যুদ্ধে ফেরৎ‌ পাঠাব।” সেই দিন ঊরিয় জেরুশালেমে থেকে গেল। পরদিন সকাল পর্যন্ত সে জেরুশালেমে থাকল। 13 দায়ূদ ঊরিয়কে তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য ডেকে পাঠালেন। ঊরিয় দায়ূদের সঙ্গে পানাহার করল। দায়ূদ ঊরিয়কে দ্রাক্ষারস পান করালেন। তবুও ঊরিয় বাড়ী গেল না। সেই সন্ধ্যায়, ঊরিয় রাজার ফটকের বাইরে রাজার অন্য ভৃত্যদের সঙ্গে ঘুমিয়েছিল।

দায়ূদ ঊরিয়ের মৃত্যুর পরিকল্পনা করলেন

14 পরদিন সকালে দায়ূদ যোয়াবকে একখানা চিঠি লিখলেন। দায়ূদ চিঠিটাকে ঊরিয়কে দিয়ে পাঠাবার ব্যবস্থা করলেন। 15 চিঠিতে দায়ূদ লিখেছিলেন, “ঊরিয়কে প্রথম সারির ঠিক সেইখানে দাঁড় করাবে যেখানে লড়াইটা কঠিনতম। তারপর ওকে একা ফেলে পালিয়ে আসবে এবং ওকে যুদ্ধ ক্ষেত্রেই মরতে দেবে।”

16 পরদিন যোয়াব সারা শহর ঘুরে দেখলেন কোথায় সব থেকে সাহসী ও শক্তিশালী অম্মোনীয়রা রয়েছে। সেইখানে যাবার জন্য তিনি ঊরিয়কে নির্বাচন করলেন। 17 রব্বা শহরের লোকরা যোয়াবের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এল। দায়ূদের কিছু লোক মারা গেল। হিত্তীয় ঊরিয় তাদেরই মধ্যে একজন।

18 তারপর যোয়াব, যুদ্ধে কি হয়েছে সেই বিষয়ে দায়ূদকে সংবাদ দিলেন। 19 যুদ্ধে যা যা ঘটেছে তা দায়ূদকে বলার জন্য যোয়াব এক বার্তাবাহককে আদেশ করলেন। 20 “হয়তো বা রাজা ক্রুদ্ধ হবেন এবং জিজ্ঞাসা করবেন, ‘লড়াইয়ের জন্য যোয়াবের সেনারা শহরের অত কাছে কেন গেল? তিনি নিশ্চয়ই জানেন যে শহরের প্রাচীরের ওপরে ধনুর্ধররা আছে যারা তার লোকদের শরাঘাতে শুইয়ে দিতে পারে? 21 তাঁর নিশ্চয়ই স্মরণে আছে যে এক মহিলা যিরূব্বেশতের পুত্র অবীমেলককে হত্যা করেছিল। ঘটনাটি তেবেষে ঘটেছিল। মহিলাটি নগরীর প্রাচীরের ওপর থেকে অবীমেলকের ওপর একটা চাকীর ওপরের পাথর ফেলে দিয়েছিল। তাই কেন তারা প্রাচীরের অত কাছে গেল?’ যদি রাজা দায়ূদ ওই ধরণের কিছু বলেন তুমি অবশ্যই তাঁকে এই খবর দেবে: ‘আপনার লোক হিত্তীয় ঊরিয় মারা গেছে।’”

22 বার্তাবাহক দায়ূদের কাছে গেল এবং যোয়াব বার্তাবাহককে যা যা বলতে বলেছিলেন সে সব কিছুই দায়ূদকে বলল। 23 বার্তাবাহক দায়ূদকে বলল, “অম্মোনদের লোকরা যুদ্ধক্ষেত্রে আমাদের আক্রমণ করে। আমরা লড়াই করে, তাদের শহরের প্রবেশ দ্বার পর্যন্ত তাড়া করি। 24 তখন নগর প্রাচীরের ওপর থেকে বিপক্ষের লোকরা আপনার লোকদের ওপর তীর চালায়। এতে আপনার কিছু লোক মারা যায়। আপনার আধিকারিক হিত্তীয় ঊরিয় তাদের মধ্যে একজন।”

25 দায়ূদ বার্তাবাহককে বললেন, “যোয়াবকে গিয়ে বল, ‘এ নিয়ে অতিরিক্ত বিমর্ষ হয়ো না। একটা তরবারি একজনের পর আর একজনকে হত্যা করতে পারে। রাজাদের বিরুদ্ধে আরও জোরদার আক্রমণ চালাও—তোমাদের জয় হবেই।’ এই কথাগুলি বলে যোয়াবকে উৎসাহিত কর।”

দায়ূদ বৎ‌শেবাকে বিয়ে করলেন

26 বৎ‌শেবা তাঁর স্বামীর মৃত্যুর খবর পেলেন এবং তাঁর জন্য কাঁদলেন। 27 তাঁর দুঃখের দিন অতিক্রান্ত হলে, দায়ূদ তাঁকে তাঁর বাড়ীতে নিয়ে যাবার জন্য ভৃত্য পাঠালেন। তিনি দায়ূদের পত্নী হলেন এবং দায়ূদের জন্য একটা সন্তানের জন্ম দিলেন। কিন্তু দায়ূদের এই পাপ প্রভু পছন্দ করলেন না।

নাথন দায়ূদের সঙ্গে কথা বললেন

12 প্রভু নাথনকে দায়ূদের কাছে পাঠালেন। নাথন দায়ূদের কাছে গেলেন। নাথন বললনে, “এক শহরে দু’জন লোক ছিল। একজন ছিল ধনী, অন্যজন দরিদ্র। ধনী লোকটির অনেক মেষ ও গবাদি পশু ছিল। দরিদ্র লোকটির একটা স্ত্রী মেষ ছাড়া আর কিছুই ছিল না। দরিদ্র লোকটি মেষটাকে খাওয়াতো। মেষটা ঐ দরিদ্র লোক ও তার সন্তান-সন্ততিদের সঙ্গেই বড় হল। মেষটা গরীব লোকটার থেকেই খাবার খেত এবং তার পেয়ালা থেকেই পান করত। মেষটা ঐ লোকটির বুকের ওপর ঘুমাতো। মেষটা লোকটির মেয়ের মতই ছিল।

“একদিন এক পথিক ধনী লোকটির সঙ্গে দেখা করতে এলো। ধনী লোকটি পথিককে কিছু খাবার দিতে চাইলো। কিন্তু পথিককে দেবার জন্য ধনী লোকটি তার মেষ বা গবাদি পশুর থেকে কিছুই নিতে চাইল না। ধনী লোকটি, দরিদ্র লোকটির মেষটা নিয়ে এলো এবং তাকে কেটে পথিকের জন্য রান্না করলো।”

দায়ূদ ধনী লোকটির ওপর ভীষণ রেগে গেলেন। তিনি নাথনকে বললেন, “এ কথা জীবন্ত প্রভুর মতই সত্য যে, যে লোক এ কাজ করেছে সে অবশ্যই মারা যাবে। তাকে ঐ মেষের মূল্যের চারগুণ বেশী দিতে হবে কারণ সে এমন ভয়াবহ কাজ করেছে এবং তার কোন করুণা ছিল না।”

নাথন দায়ূদকে তার পাপকর্মের কথা বললেন

নাথন দায়ূদকে বললেন, “তুমিই সেই ধনী ব্যক্তি। প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর এই কথাই বলেন, ‘আমি তোমাকে ইস্রায়েলের রাজারূপে মনোনীত করেছি। আমি তোমাকে শৌলের হাত থেকে রক্ষা করেছি। আমিই তোমাকে তার পরিবার এবং স্ত্রীগণকে দিয়েছি। এবং আমি তোমাকে ইস্রায়েল এবং যিহূদার রাজা করেছিলাম। তাও যেন যথেষ্ট ছিল না, আমি তোমাকে আরো আরো অনেক কিছু দিয়েছি। কিন্তু কেন তুমি প্রভুর আদেশ অমান্য করলে? কেন তুমি সেই কাজ করলে যা তিনি (ঈশ্বর) গর্হিত বলে ঘোষণা করেছেন? তুমি হিত্তীয় ঊরিয়কে অম্মোনদের দ্বারা হত্যা করালে এবং তার স্ত্রীকে ছিনিয়ে নিলে। এইভাবে তুমি তরবারির দ্বারা ঊরিয়কে হত্যা করালে। 10 এই কারণে তোমার পরিবারও তরবারি থেকে রক্ষা পাবে না। তুমি ঊরিয় হিত্তীয়ের স্ত্রীকে তোমার স্ত্রী করার জন্য নিয়ে এসেছ। এইভাবে তুমি বুঝিয়ে দিয়েছ যে তুমি আমায় ঘৃণা করেছ।’

11 “প্রভু এ কথাই বলেন: ‘আমি তোমাকে সমস্যায় ফেলব। এই সমস্যা তোমার নিজের পরিবার থেকেই আসবে। আমি তোমার স্ত্রীদের তোমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাবো এবং তোমারই ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের একজনকে দিয়ে দেব। সে তাদের সঙ্গে শয়ন করবে এবং প্রত্যেকে তা দিনের আলোর মত জানতে পারবে। 12 তুমি বৎ‌শেবার সঙ্গে গোপনে শয়ন করেছিলে। কিন্তু আমি তোমাকে এমন শাস্তি দেব যাতে সব ইস্রায়েলীয় তা জানতে পারে।’”[a]

13 তখন দায়ূদ নাথনকে বললেন, “আমি প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছি।”

নাথন দায়ূদকে বললেন, “এই পাপের জন্যও প্রভু তোমায় ক্ষমা করে দেবেন। তুমি মরবে না। 14 কিন্তু তুমি এমন কাজ করেছ যাতে প্রভুর বিরোধীরা তাঁর ওপর থেকে শ্রদ্ধা হারিয়েছে। তাই তোমার শিশু সন্তান মারা যাবে।”

দায়ূদ ও বৎ‌শেবার সন্তান মারা গেল

15 তারপর নাথন বাড়ী চলে গেলেন। দায়ূদ এবং বৎ‌শেবার যে শিশুপুত্র জন্মেছিল, প্রভু তাকে অসুস্থ করলেন। 16 শিশু সন্তানটির জন্য দায়ূদ ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন। দায়ূদ খাওয়া দাওয়া ত্যাগ করলেন। তিনি ঘরের ভিতরে গিয়ে সারারাত সেখানে থাকলেন। সারারাত তিনি মেঝেতে শুয়ে কাটালেন।

17 দায়ূদের পরিবারের লোকরা এসে তাঁকে মেঝে থেকে ওঠানোর চেষ্টা করল। তিনি সেই সব নেতাদের সঙ্গে খাবার খেতে অস্বীকার করলেন। 18 সপ্তম দিনে, শিশুটি মারা গেল। শিশুটি যে মারা গেছে এ কথা দায়ূদের ভৃত্যরা দায়ূদকে বলতে ভয় পেল। তারা বলল, “দেখ, শিশুটি যখন বেঁচেছিল তখন আমরা দায়ূদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। তিনি কিন্তু আমাদের কথা শুনতে চান নি। যদি আমরা বলি যে শিশুটি মারা গেছে, হয়তো তিনি নিজের ক্ষতি করবেন।”

19 দায়ূদ তাঁর ভৃত্যদের ফিসফিস করে কথা বলতে দেখলেন। তখন তিনি বুঝতে পারলেন শিশুটি মারা গেছে। দায়ূদ তাঁর ভৃত্যদের জিজ্ঞাসা করলেন, “শিশুটি কি মারা গেছে?”

ভৃত্যরা উত্তর দিল, “হ্যাঁ, সে মারা গেছে।”

20 তখন দায়ূদ মেঝে থেকে উঠে পড়লেন। তিনি স্নান করলেন। জামাকাপড় বদল করে, অন্য কাপড় পরলেন। প্রভুর উপাসনার জন্য তিনি প্রভুর ঘরে গেলেন। তারপর তিনি বাড়ী গেলেন এবং কিছু খাবার চাইলেন। তাঁর ভৃত্যরা তাঁকে কিছু খাবার এনে দিল এবং তিনি খেলেন।

21 দায়ূদের দাসরা তাঁকে বলল, “কেন আপনি এইসব কাজ করছেন? শিশুটি যখন বেঁচেছিল তখন আপনি কিছু খেলেন না। আপনি কাঁদলেন। কিন্তু শিশুটি মারা যেতে আপনি উঠলেন এবং খাবার খেলেন।”

22 দায়ূদ বলল, “শিশুটি যখন বেঁচেছিল তখন আমি আহার ত্যাগ করেছিলাম এবং কেঁদেছিলাম কারণ আমি ভেবেছিলাম, ‘কে বলতে পারে? হয়তো প্রভু আমার প্রতি করুণা করবেন এবং শিশুটিকে বাঁচতে দেবেন।’ 23 কিন্তু এখন তো শিশুটি মৃত। তাই আমি কি আহার ত্যাগ করব? আমি কি শিশুটিকে আর ফিরে পাবো? না! একদিন আমি তার সঙ্গে মিলিত হব, কিন্তু সে আমার কাছে ফিরে আসতে পারে না।”

শলোমনের জন্ম হল

24 দায়ূদ তাঁর স্ত্রী বৎ‌শেবাকে সান্ত্বনা দিলেন। তিনি তাঁর সঙ্গে শুলেন এবং মিলিত হলেন। বৎ‌শেবা পুনর্বার গর্ভবতী হলেন। তাঁর আর একটি সন্তান হল। দায়ূদ তার নাম রাখলেন শলোমন। 25 প্রভু ভাববাদী নাথনের মারফৎ তাঁর বার্তা পাঠালেন। নাথন শলোমনের নাম রাখলেন যিদীদীয়। প্রভুর জন্যেই নাথন এই কাজ করলেন।

দায়ূদ রব্বা অধিকার করলেন

26 রব্বা অম্মোনদের রাজধানী শহর ছিল। যোয়াব রব্বার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তা দখল করেন। 27 যোয়াব দায়ূদের কাছে বার্তাবাহক পাঠালেন এবং বললেন, “আমি রব্বার জলের শহরটি যুদ্ধ করে জয় করেছি। 28 এখন অন্যান্য লোকদের পাঠিয়ে এই শহর আক্রমণ করুন। আমি অধিকার করবার আগেই আপনাকে এই শহর দখল করতে হবে। যদি আমি এই শহর দখল করি তবে এই শহর আমার নামে পরিচিত হবে।”

29 তখন দায়ূদ সব লোকদের একসঙ্গে জড়ো করলেন এবং রব্বার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। তিনি রব্বার বিরুদ্ধে লড়াই করলেন এবং রব্বা শহর দখল করলেন। 30 দায়ূদ তাদের রাজার মাথা[b] থেকে মুকুট কেড়ে নিলেন। মুকুটটিতে প্রায় 75 পাউণ্ড সোনা ছিল। মুকুটটিতে অনেক মূল্যবান মনিমুক্তো ছিল। তারা সেই মুকুট দায়ূদের মাথায় পরিয়ে দিল। সেই শহর থেকে দায়ূদ অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে এসেছিলেন।

31 দায়ূদ রব্বার লোকদেরও বার করে আনেন এবং তাদের দিয়ে করাত, গাঁইতি ও কুড়ুল দিয়ে কাজ করিয়েছিলেন। তিনি তাদের ইঁট দিয়ে গাঁথুনির কাজ করতে বাধ্য করেছিলেন। অম্মোনদের শহরগুলোর সকলের সঙ্গে দায়ূদ এই একই রকম কাজ করেছিলেন। তারপর দায়ূদ এবং তাঁর সব সৈন্যসামন্ত জেরুশালেমে ফিরে গিয়েছিল।

1 বংশাবলি 20

যোয়াব অম্মোনীয়দের ধ্বংস করলেন

20 বসন্তের সময় যোয়াবের নেতৃত্বে ইস্রায়েলের সেনাবাহিনী আবার যুদ্ধ করতে বেরোল। সচরাচর এসময়ই রাজা-মহারাজারা যুদ্ধযাত্রা করলেও দায়ূদ কিন্তু জেরুশালেমেই থাকলেন। ইস্রায়েলীয় সেনাবাহিনী অম্মোনে গিয়ে অম্মোন ধ্বংস করে রব্বা শহর চারপাশ থেকে অবরোধ করে সেখানে শিবির গাড়লো। এইভাবে রব্বা অবরোধ করে শেষ পর্যন্ত যোয়াবের নেতৃত্বে ইস্রায়েলীয় বাহিনী যুদ্ধ করে রব্বাও ধ্বংস করল।

দায়ূদ এসে তাদের রাজার মাথা থেকে মুকুট খুলে নিলেন। মুকুটের ওজন ছিল প্রায় 75 পাউণ্ড এবং এটি ছিল বহুমূল্য পাথর খচিত ও সোনার তৈরী। এবং সেই মুকুটটি দায়ূদের মাথায় পরানো হল, তবে তিনিও রব্বা থেকে আরো অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে এলেন। দায়ূদ রব্বার লোকদের ও অম্মোন শহরের বাসিন্দাদের নিয়ে এলেন এবং তাদের করাত, গাঁইতি আর কুঠার দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করে, আবার জেরুশালেমে ফিরে গেলেন।

পলেষ্টীয় দানব সন্তান মারা গেল

পরবর্তী কালে, পলেষ্টীয়দের সঙ্গে গেষর শহরে ইস্রায়েলীয়দের যুদ্ধ হয়। সে সময়ে, হূশার সিব্বখয় সিপ্পয় নামে এক দানব সন্তানকে হত্যা করল। তাই পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলের কাছে নিজেদের সমর্পণ করল।

আর একবার পলেষ্টীয়দের সঙ্গে ইস্রায়েলীয়দের যখন যুদ্ধ হচ্ছিল, যায়ীরের পুত্র ইল্হানন লহমিকে হত্যা করেন, যদিও লহমির হাতে একটি বিশাল ও তীক্ষ্ণ বর্শা ছিল। লহমি ছিল গলিয়াতের ভাই। গলিয়াত ছিল গাতের লোক।

এরপর গাতে ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে পলেষ্টীয়দের আবার যুদ্ধ হয়। সে সময় গাতে এক ব্যক্তি বাস করত; তার প্রতি হাতে-পায়ে ছ’টি করে মোট 24টা আঙুল ছিল। দানবের পুত্র ছিল বলে সে এক বিশাল আকার পুরুষ ছিল। ইস্রায়েলকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করার অপরাধে দায়ূদের ভাই শিমিয়র পুত্র যোনাথন তাকে হত্যা করে।

এই পলেষ্টীয়রা ছিল গাতের দানবদের সন্তান। দায়ূদ ও তাঁর লোকরা এই সমস্ত দানবদের হত্যা করেছিলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International