Chronological
ইস্রায়েলীয়রা দায়ূদকে রাজা মনোনীত করল
5 তারপর ইস্রায়েলের সব কটি পরিবারগোষ্ঠী হিব্রোণে দায়ূদের কাছে এল এবং তারা তাঁকে বলল, “দেখুন, আমরা একই পরিবারভুক্ত।[a] 2 এমন কি শৌল যখন আমাদের রাজা ছিলেন, তখনও যুদ্ধে আপনি আমাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং আপনিই ইস্রায়েলকে যুদ্ধ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছেন। এমনকি প্রভু স্বয়ং আপনাকে বলেছেন ‘তুমিই আমার প্রজা সকলের মেষপালক হবে। তুমিই ইস্রায়েলের শাসনকর্তা হবে।’”
3 তাই ইস্রায়েলের নেতারা রাজা দায়ূদের সঙ্গে দেখা করতে হিব্রোণে এলেন। রাজা দায়ূদ প্রভুর সামনে, সেই নেতাদের সঙ্গে একটা চুক্তি করলেন। তারপর ঐ নেতারা দায়ূদকে ইস্রায়েলের রাজারূপে অভিষিক্ত করলেন।
4 দায়ূদের যখন 30 বছর বয়স তখন তিনি শাসনকার্য শুরু করেন এবং 40 বছর ধরে তিনি রাজা হিসেবে বহাল ছিলেন। 5 হিব্রোণে তিনি 7 বছর 6 মাস ধরে যিহূদা শাসন করেন এবং জেরুশালেমে থাকার সময় ইস্রায়েল ও যিহূদাকে 33 বছর শাসন করেন।
দায়ূদ জেরুশালেম শহর জয় করলেন
6 রাজা দায়ূদ এবং তাঁর অনুচররা, জেরুশালেমে বসবাসকারী যিবূষীয়দের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গেলেন। যিবূষীয়রা দায়ূদকে বলল, “তুমি এই শহরে ঢুকতেই পারবে না।[b] আমাদের অন্ধ ও পঙ্গু লোকরাই তোমাকে আটকে দেবে।” (তারা এই কথা বলেছিল কারণ তারা ভেবেছিল দায়ূদ তাদের শহরে ঢুকতে পারবেন না। 7 কিন্তু দায়ূদ সিয়োন দুর্গ দখল করলেন। এই দুর্গটি দায়ূদের শহর হল।)
8 সেইদিন দায়ূদ তাঁর সঙ্গীদের বললেন, “যদি তোমরা যিবুষীয়দের হারাতে চাও তবে জলের সুড়ঙ্গ[c] পথ দিয়ে সেই সব ‘পঙ্গু ও অন্ধ’ শত্রুদের কাছে পৌঁছে যাও।” এই জন্য লোকে বলে, “অন্ধ ও পঙ্গুরা মন্দিরে ঢুকতে পারে না।”
9 দায়ূদ সেই দুর্গে বাস করতে লাগলেন এবং সেই শহরকে “দায়ূদের শহর” বললেন। দায়ূদ মিল্লো নামে একটি অঞ্চল নির্মাণ করলেন। তিনি শহরের মধ্যে আরও অনেক বাড়ী তৈরী করলেন। 10 দায়ূদ ক্রমশঃই শক্তিশালী হয়ে উঠলেন কারণ সর্বশক্তিমান প্রভু তার সঙ্গে ছিলেন।
দায়ূদ ইস্রায়েলের রাজা হলেন
11 হিব্রোণে ইস্রায়েলের সমস্ত লোক দায়ূদের কাছে এসে বলল, “আপনার সঙ্গে আমাদের রক্তের সম্পর্ক। 2 আগে, রাজা শৌল জীবিত থাকা কালীন আপনি আমাদের যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। প্রভু স্বয়ং আপনাকে বলেছিলেন, ‘দায়ূদ, তুমি আমার লোকদের, ইস্রায়েলের লোকদের মেষপালক হবে। একদিন তুমিই তাদের নেতা হবে।’”
3 ইস্রায়েলের সমস্ত নেতারাও হিব্রোণে দায়ূদের সঙ্গে দেখা করতে এলে, তিনি প্রভুর সাক্ষাতে তাঁদের সকলের সঙ্গে সেখানে চুক্তিবদ্ধ হলেন এবং নেতারা সকলে তাঁর গায়ে সুগন্ধী তেল ছিটিয়ে তাঁকে ইস্রায়েলের নতুন রাজা হিসেবে অভিষেক করলেন। শমূয়েলের মাধ্যমে প্রভু আগেই একথা ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন।
দায়ূদ জেরুশালেম দখল করলেন
4 দায়ূদ এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা তখন জেরুশালেমে গেলেন। সে সময়ে জেরুশালেম শহরের নাম ছিল যিবূষ। আর সেখানে যারা বাস করত তাদের যিবূষীয় বলা হত। এই সমস্ত যিবূষীয়রা 5 দায়ূদকে তাদের শহরে ঢুকতে দিতে অস্বীকার করলে, দায়ূদ তাদের যুদ্ধে পরাজিত করে সিয়োনের দুর্গ দখল করলেন। এই অঞ্চলটিই পরবর্তী কালে দায়ূদ নগরী বা দায়ূদের শহর নামে পরিচিত হয়।
6 দায়ূদ বললেন, “যিবূষীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যে আমার সেনাবাহিনীকে নেতৃত্ব দেবে তাকেই আমি আমার সেনাবাহিনীর সেনাপতি করব।” তখন সরূয়ার পুত্র যোয়াব সেই আক্রমণের নেতৃত্ব দিলেন এবং তাঁকে ইস্রায়েলীয় সেনাবাহিনীর সেনাপতি করা হল।
7-8 দায়ূদ ঐ দুর্গে তাঁর বসতি বিস্তার করে দুর্গের চারপাশে শহর বানিয়ে ছিলেন বলেই এই জায়গার নাম দায়ূদ নগরী হয়েছিল। দায়ূদ মিল্লো থেকে দুর্গের প্রাচীর পর্যন্ত অঞ্চলে শহর স্থাপন করেছিলেন। যোয়াব শহরের অন্যান্য অঞ্চলের সংস্কার সাধন করেছিলেন। 9 এদিকে সর্বশক্তিমান প্রভুর সহায়তায় উত্তরোত্তর দায়ূদের শক্তিবৃদ্ধি হতে থাকল।
তিন জন বীর সৈনিক
10 ইস্রায়েলে দায়ূদের শাসন কালে তিনজন নেতা ক্ষমতা ও খ্যাতির শিখর স্পর্শ করেছিলেন। এঁরা দায়ূদের বিশিষ্ট সেনাবাহিনীর ওপর কর্তৃত্ব করতেন এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের সঙ্গে একত্রিতভাবে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দায়ূদের রাজ্যকে সহায়তা করতেন।
11 এই তিন জন ব্যক্তির মধ্যে প্রথম জন হলেন হক্মোনীয়ের পুত্র যাশবিয়াম।
তিনি ছিলেন রথ-পরিচালক অধিকর্তাদের নেতা। একবার যাশবিয়াম তাঁর বর্শা দিয়ে এক সঙ্গে 300 জনকে হত্যা করেছিলেন।
12 দ্বিতীয় জন হলেন অহোহের দোদোর পুত্র ইলিয়াসর। 13-14 তিনি পস্-দম্মীমে পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধের সময় দায়ূদকে সঙ্গ দিয়েছিলেন। ইস্রায়েলের লোকরা যখন পলেষ্টীয়দের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য পালাতে শুরু করেছিল সে সময় এই তিন জন বিরোধী সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে এক ক্ষেত ভর্ত্তি যব রক্ষা করে এবং বিপক্ষীয় শত্রুদের প্রভুর সহায়তায় পরাজিত করে।
15 এক দিন যখন দায়ূদ অদুল্লমের গুহাতে আটকা পড়েছেন এবং রফায়ীম উপত্যকা পর্যন্ত পলেষ্টীয় সেনাবাহিনী এগিয়ে এসেছে, সে সময় এই তিন বীর হামাগুড়ি দিয়ে সমস্ত পথটুকু গিয়ে দায়ূদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন।
16 আর এক বার এক দল পলেষ্টীয় সেনা তখন বৈৎলেহমে আর দায়ূদ ছিলেন দুর্গের ভেতরে। 17 নিজের বাসভূমির এক গণ্ডুষ জল পান করার জন্য তৃষ্ণার্ত দায়ূদ কথা প্রসঙ্গে সবে বলেছেন, “ইস, কেউ যদি এখন আমায় বৈৎলেহমের সিংহদরজার পাশের কুঁয়োটা থেকে একটু জল পান করাতে পারত।” দায়ূদ সত্যি করে চাইছিলেন না, কেবল মাত্র বলছিলেন। 18 সঙ্গে সঙ্গে এই তিন বীর যোদ্ধা পলেষ্টীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে গিয়ে বৈৎলেহমের যে কুঁয়োর জল দায়ূদ পান করতে চেয়েছিলেন, সেই জল নিয়ে আসলেন। দায়ূদ তখন সেই জল নিজে পান না করে নৈবেদ্য স্বরূপ ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে মাটিতে ঢেলে দিয়ে বললেন, 19 “হে প্রভু, নিজেদের জীবন তুচ্ছ করে যারা এই জল আমার জন্য এনেছে তা পান করা আর তাদের রুধির পান করা সমতুল্য। তাই দায়ূদ জল পান করতে অস্বীকার করলেন।” দায়ূদের ঐ তিন জন নায়ক এই ধরণের আরো অনেক বীরত্বপূর্ণ কাজকর্ম করেছিলেন।
অন্যান্য বীর সৈনিকরা
20 যোয়াবের ভাই অবীশয় ছিলেন এই তিন বীরের নেতা। তিনি একবার বর্শা দিয়ে 300 জনকে হত্যা করেছিলেন। 21 অবীশয়ের খ্যাতি এদের কারো থেকে কম তো ছিলই না বরঞ্চ সেরা তিরিশ জন সেনার তুলনায়ও দ্বিগুণ ছিল। যদিও তিনি তিন বীরের একজন ছিলেন না, তবুও তিনি তাদের নেতা হয়েছিলেন।
22 যিহোয়াদার পুত্র বনায় একজন বীরযোদ্ধা ছিলেন। তিনি কব্সেলের লোক ছিলেন এবং বহু দুঃসাহসিক কাজ করেছিলেন। তিনি মোয়াবের দুই সাহসী যোদ্ধাকে হত্যা করা ছাড়াও একবার এক তুষারাচ্ছন্ন দিনে একটা গুহায় প্রবেশ করে একটা সিংহ মেরেছিলেন। 23 এছাড়াও বনায়, তাঁতীর দণ্ডের মত সুবিশাল বল্লমধারী 71/2 ফুট দীর্ঘ এক মিশরীয় সেনাকে মেরে ফেলেছিলেন। বনায়ের ছিল শুধু একটা লাঠি কিন্তু মিশরীয়র হাত থেকে তার বল্লমটা কেড়ে নিয়ে তিনি তাই দিয়েই ঐ ব্যক্তিকে হত্যা করেন। 24 যিহোয়াদার এই বীরপুত্রের খ্যাতি ঐ তিন জন নায়কের তুলনায় কোন অংশে কম ছিল না। 25 এমনকি ঐ তিন জনের একজন না হয়েও তাঁর খ্যাতি সেরা তিরিশ জন সৈনিকের থেকে বেশি ছিল। দায়ূদ তাঁকে তাঁর দেহরক্ষীদের নেতা নিযুক্ত করেছিলেন।
30 জন বীর সৈনিক
26 যোয়াবের ভাই অসাহেল,
বৈৎলেহমের দোদোর পুত্র ইল্হানন,
27 হরোরের শম্মোৎ,
পলোনের হেলস,
28 তকোয়ের ইক্কেশের পুত্র ঈরা,
অনাথোতের অবীয়েষর,
29 হূশাতীয় সিব্বখয়,
অহোহর ঈলয়,
30 নটোফার মহরয়,
নটোফার বানার পুত্র হেলদ,
31 বিন্যামীন পরিবারের গিবিয়ার রীবয়ের পুত্র ইথয়,
পিরিয়াথোনের বনায়,
32 গাশ-উপত্যকা নিবাসী হূরয়,
অর্ব্বতীয় অবীয়েল,
33 বাহরূমের অস্মাবৎ,
শাল্বোনের ইলিয়হবঃ,
34 গিষোণের হাষেমের পুত্র হরারী,
শাগির পুত্র যোনাথন,
35 হরারী সাখরের পুত্র অহীয়াম,
ঊরের পুত্র ইলীফাল,
36 মখেরাতের হেফর,
পলোনার অহিয়,
37 কর্মিলের হিষ্রো,
ইষ্বয়ের পুত্র নারয়,
38 নাথনের ভাই যোয়েল,
হগ্রির পুত্র মিভর,
39 অম্মোনের সেলক,
সরূয়ার পুত্র যোয়াবের অস্ত্রবাহক বেরোতের নহরয়,
40 যিত্রয়ের ঈরা
আর গারেব,
41 হিত্তীয়ের ঊরিয়,
অহলয়ের পুত্র সাবদ,
42 রূবেণ পরিবারগোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান শীষার পুত্র অদীনা ও তাঁর ত্রিশ জন সঙ্গী,
43 মাখার পুত্র হানান,
মিত্নর যোশাফট,
44 অষ্টরোতের উষিয়,
অরোয়েরবের হোথমের দুই পুত্র শাম ও যিয়ীয়েল,
45 শিম্রির পুত্র যিদীয়েল
আর তাঁর ভাই তীষীয় যোহা,
46 মহবীর ইলীয়েল,
ইল্নামের দুই পুত্র যিরীবয় আর যোশবিয়,
মোয়াবের যিৎমা,
47 ইলীয়েল, ওবেদ আর মসোবায়ের যাসীয়েল প্রমুখ সকলেই ছিলেন দায়ূদের “সেরা তিরিশ” সৈন্যদলের সেনা।
যে সমস্ত সাহসী লোকরা দায়ূদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল
12 দায়ূদ যখন কীশের পুত্র শৌলের ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন তখন যে সমস্ত যোদ্ধারা সিক্লগে তাঁর কাছে এসেছিল এটি হল তাদের তালিকা। তারা দায়ূদকে যুদ্ধে সাহায্য করেছিল। 2 এরা যে কোন হাতেই তীর ছুঁড়তে পারতো, দু’হাতে গুলতিও চালাতে পারতো। এরা সকলেই বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠীর সদস্য এবং শৌলের আত্মীয় ছিল।
3 অহীয়েষর ছিলেন এঁদের দলের নেতা, এছাড়াও এই দলে ছিলেন তাঁর ভাই যোয়াশ (এঁরা গিবিয়াতের শমায়ের পুত্র), অস্মাবতের পুত্র যিষীয়েল আর পেলট, অনাথোত শহরের বরাখা আর যেহূ, 4 গিবিয়োনের যিশ্ময়িয় (ইনি সেই ত্রিশ জন বীরের অন্যতম এবং তাদের অধ্যক্ষ ছিলেন।), যিরমিয়, যহসীয়েল, যোহানন, গদেরাথের যোষাবদ, 5 ইলিয়ূষয়, যিরীমোৎ, বালিয়, শমরিয়, হরূফের শফটিয়, 6 ইল্কানা, যিশিয়, অসরেল, যোয়েষর, যাশবিয়াম প্রমুখ কোরহ পরিবারগোষ্ঠীর যোদ্ধারা 7 আর গদোর শহরের যিরোহমের পুত্র যোয়েলা আর সবদিয়।
গাদীয় লোক
8 গাদ পরিবারগোষ্ঠীর একাংশও মরুভূমিতে দায়ূদের দুর্গে গিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। এরাও সকলেই সিংহের মত পরাক্রমশালী এবং কুশলী যোদ্ধা ছিলেন। বর্শা আর ঢাল নিয়ে যুদ্ধ করা ছাড়াও এঁরা সকলেই পাহাড়ী পথে হরিণের মত দৌড়তে পারতেন।
9 গাদ পরিবারগোষ্ঠীর এই দলের নেতা ছিলেন এষর; দ্বিতীয় ওবদিয় এবং তৃতীয় ইলীয়াব। 10 চতুর্থ মিশমান্না, পঞ্চম যিরমিয়, 11 ষষ্ঠ অত্তয়, সপ্তম ইলীয়েল, 12 অষ্টম যোহানন, নবম ইল্সাবাদ, 13 দশম যিরমিয় আর একাদশ মগ্বন্নয়।
14 এঁরা সকলেই গাদীয় সেনাবাহিনীর সেনাপতি ছিলেন এবং এই দলের দুর্বলতম ব্যক্তিও একাই 100 জনের সঙ্গে যুদ্ধ করার ক্ষমতা রাখতেন। দলের সর্বাপেক্ষা যিনি শক্তিমান ছিলেন তিনি একা 1000 জনের মোকাবিলা করতে পারতেন। 15 গাদ পরিবারগোষ্ঠীর এই সমস্ত সৈনিকরা বছরের প্রথম মাসে, যখন যর্দন নদীতে প্রবল বন্যা হচ্ছে সে সময়ে নদী পার হয়ে উপত্যকার লোকদের পূর্ব ও পশ্চিমে তাড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন।
অন্যান্য সৈনিকরাও দায়ূদের সঙ্গে যোগ দিলেন
16 বিন্যামীন ও যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর অন্যান্য ব্যক্তিরাও দুর্গে এসে দায়ূদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। 17 দায়ূদ তাঁদের সঙ্গে দেখা করে বললেন, “আপনারা যদি শান্তিতে আমাকে সাহায্য করতে এসে থাকেন তাহলে আমি আপনাদের সকলকে স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু আমি কিছু অন্যায় না করা সত্ত্বেও আপনারা যদি আমার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করতে এসে থাকেন তাহলে আমার পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর যেন তা দেখেন এবং আপনাদের শাস্তি দেন।”
18 অমাসয় ছিলেন সেই তিরিশ জন বীরের নেতা। তখন আত্মার ভর হলে তিনি বলে উঠলেন:
“দায়ূদ আমরা তোমার পক্ষে।
আমরা তোমার সঙ্গে আছি। হে যিশয়ের পুত্র—শান্তি!
তোমার শান্তি হোক্।
এবং যারা তোমায় সাহায্য করে তাদের শান্তি হোক্। কারণ তোমার ঈশ্বর তোমায় সাহায্য করেন।”
দায়ূদ তখন এই সমস্ত ব্যক্তিকেই তাঁর দলে স্বাগত জানিয়ে, তাঁদের ওপর নিজের সেনাবাহিনীর দায়িত্ব দিলেন।
19 মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অনেকেই দায়ূদ যখন পলেষ্টীয়দের সঙ্গে শৌলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। তবে পলেষ্টীয় নেতাদের আপত্তি থাকায় শেষ পর্যন্ত দায়ূদ শৌলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পলেষ্টীয়দের সাহায্য করেন নি। এই সমস্ত পলেষ্টীয় নেতারা বলেছিল, “দায়ূদ যদি তাঁর মনিব, শৌলের কাছে ফিরে যান তবে আমাদের মুণ্ড কাটা পড়বে।” 20 মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর যে সমস্ত ব্যক্তি সিক্লগ শহরে এসে দায়ূদের দলে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁরা হলেন—অদ্ন, যোষাবদ, যিদীয়েল, মীখায়েল, যোষাবদ, ইলীহূ আর সিল্লথয়। এঁরা সকলেই মনঃশি পরিবারে সৈন্যাধ্যক্ষ ছিলেন। 21 অসৎ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তাঁরা দায়ূদকে সাহায্য করেছিলেন। এই সমস্ত অসৎ ব্যক্তিরা সারা দেশে সুযোগ সুবিধে মত চুরি-চামারি চালিয়ে যাচ্ছিল। মনঃশি পরিবারের বীর যোদ্ধারা দায়ূদের সেনাবাহিনীর নেতায় পরিণত হয়েছিলেন।
22 প্রতি দিন দলে দলে লোক এসে দায়ূদের পাশে দাঁড়ানোয় এমশঃ তিনি এক সুবিশাল ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়ে তুললেন।
হিব্রোণে দায়ূদের সঙ্গে যোগদানকারী অন্যান্য লোকরা
23 এইসব ব্যক্তিবর্গ যাঁরা হিব্রোণ শহরে দায়ূদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন এবং যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন এবং প্রভু যা বলেছিলেন সেই অনুযায়ী শৌলের রাজধানী দায়ূদের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলেন, তাঁরা সংখ্যায় হলেন নিম্নরূপ:
24 যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর 6800 জন কুশলী ও তৎপর যোদ্ধা। এঁরা সকলেই বর্শা ও বল্লমধারী ছিলেন।
25 শিমিয়োনের পরিবারগোষ্ঠীর 7100 জন বীর যোদ্ধা ছিলেন।
26 লেবি পরিবারগোষ্ঠীর 4600 জন। 27 হারোণ বংশের নেতা যিহোয়াদাও 3700 জন নিয়ে এই দলে যোগ দিয়েছিলেন। 28 এছাড়া পরিবারের আরো 22 জন নেতাসহ যোগ দিয়েছিলেন সাহসী ও তরুণ সেনা সাদোক।
29 শৌলের আত্মীয় এবং তখনও পর্যন্ত তার প্রতি অনুগত বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর 3000 জনও যোগ দিয়েছিলেন এই দলে।
30 ইফ্রয়িমের পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছিলেন 20,800 জন বীরযোদ্ধা। তারা তাদের পরিবারে বিখ্যাত ছিল।
31 মনঃশি পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছিলেন 18,000 জন দায়ূদকে রাজা বানাতে।
32 ইষাখরের পরিবার থেকে আত্মীয়সহ এসেছিলেন 200 জন প্রাজ্ঞ নেতা। তাঁরা হলেন সেই সব লোক যাঁরা ইস্রায়েলের মঙ্গলের জন্য কখন কি করা প্রয়োজন তা ভাল ভাবেই বুঝতেন।
33 সবূলূনের পরিবারগোষ্ঠী থেকে যোগ দিয়েছিলেন সর্বাস্ত্রে পারদর্শী 50,000 জন কুশলী যোদ্ধা। এঁরা সকলেই দায়ূদের একান্ত অনুগত ছিলেন।
34 নপ্তালির পরিবারগোষ্ঠী থেকে 1000 জন অধ্যক্ষ ছিল। তাঁদের সঙ্গে 37,000 জন ব্যক্তি ছিল। তাঁরা বর্শা ও ঢাল নিয়ে এসেছিলেন।
35 দান পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছিলেন 28,600 জন রণ-কুশলী যোদ্ধা।
36 আশের পরিবারগোষ্ঠী থেকেও রণ-কুশলী 40,000 জন এসেছিলেন।
37 এবং যর্দন নদীর পূর্বদিক থেকে রূবেণ, গাদ ও অর্ধেক মনঃশি পরিবার মিলিয়ে মোট 120,000 ব্যক্তি বিভিন্ন রকমের অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে এই দলে যোগ দিয়েছিলেন।
38 এই সমস্ত বীর যোদ্ধারা দায়ূদকে ইস্রায়েলের রাজা করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে হিব্রোণে এসেছিলেন। ইস্রায়েলের অবশিষ্ট লোকদেরও এই প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন ছিল। 39 এঁরা সকলে হিব্রোণে দায়ূদের সঙ্গে তিন দিন পানাহার করে ও তাঁদের আত্মীয়-পরিজনের বানানো খাবার-দাবার খেয়ে কাটালেন। 40 ইষাখর, সবূলূন ও নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠীরা উট, ঘোড়া, গাধা ও ষাঁড়ের পিঠে চড়িয়ে ময়দা, ডুমুরের পিঠে, কিস্মিস্, দ্রাক্ষারস, তেল, ছাগল এবং মেষ প্রভৃতি এনেছিলেন। ইস্রায়েলের সকলেই খুব খুশী হয়েছিলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International