Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Beginning

Read the Bible from start to finish, from Genesis to Revelation.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
ইষ্রা 8-10

ইষ্রার সঙ্গে প্রত্যাবর্তনকারী নেতাদের তালিকা

রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বকালে যে সব পরিবারের প্রধানরা আমার সঙ্গে বাবিল থেকে জেরুশালেমে এসেছিলেন নীচে তাঁদের নামের তালিকা দেওয়া হল:

পীনহসের উত্তরপুরুষদের মধ্যে: গের্শোম; ঈথামরের উত্তরপুরুষদের মধ্যে: দানিয়েল; দায়ূদের উত্তরপুরুষদের মধ্যে: হটূশ,

শখনিয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে পরোশ, সখরিয় ও আরো 150 জন পুরুষ;

পহৎ মোয়াবের উত্তরপুরুষদের মধ্যে সখরিয়র পুত্র ইলীয়ৈনয় ও আরো 200 জন পুরুষ;

জট্টর উত্তরপুরুষদের মধ্যে মহসীয়েলের সন্তান শখনিয় ও আরো 300 জন পুরুষ;

আদীনের উত্তরপুরুষদের মধ্যে যোনাথনের পুত্র এবদ ও আরো 50 জন পুরুষ;

এলমের উত্তরপুরুষদের মধ্যে অথলিয়ের পুত্র যিশায়াহ ও আরো 70 জন পুরুষ;

শফটিয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে মীখায়েলের পুত্র সবদিয় ও আরো 80 জন পুরুষ;

যোয়াবের উত্তরপুরুষদের মধ্যে যিহিয়েলের পুত্র ওবদিয় ও আরো 218 জন পুরুষ;

10 বানির উত্তরপুরুষদের মধ্যে যোষিফিয়ের পুত্র শলোমীত ও আরো 160 জন পুরুষ;

11 বেবয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে বেবয়ের পুত্র সখরিয় ও আরো 28 জন পুরুষ;

12 অস‌্গদের উত্তরপুরুষদের মধ্যে হকাটনের পুত্র যোহানন ও আরো 110 জন পুরুষ;

13 অদোনীকামের শেষ উত্তরপুরুষদের মধ্যে ইলীফেলট, যিয়ূয়েল, শময়িয় ও আরো 60 জন পুরুষ,

14 এবং বিগ্‌বয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে ঊথয়, সব্বূদ ও তার সঙ্গী 70 জন পুরুষ।

জেরুশালেমে প্রত্যাবর্তন

15 আমি এই সমস্ত ব্যক্তিদের অহবা-গামিনী নদীর কাছে জড় হতে বলেছিলাম। সেখানে তাঁবু খাটিয়ে আমরা তিন দিন ছিলাম। আমি কয়েকজন যাজককে সেখানে দেখলাম, কিন্তু কোন লেবীয়কে নয়। তাই আমি 16 ইলীয়েষর, অরীয়েল, শময়িয়, ইল‌্নাথন, যারিব, ইল‌্নাথন, নাথন, সখরিয় ও মশুল্লম প্রভৃতি নেতৃবৃন্দকে এবং 17 যোয়ারীব ও ইল‌্নাথন নামে দুজন শিক্ষককে ডেকে কাসিফিয়া নগরের প্রধান ইদ্দোরের কাছে তাঁকে ও তাঁর লোকদের কি বলতে হবে তার নির্দেশ দিয়ে পাঠিয়েছিলাম যাতে ইদ্দো আমাদের ঈশ্বরের মন্দিরে কাজ করার মত কিছু সহকারী পাঠাতে পারেন। 18 যেহেতু ঈশ্বর আমাদের সহায় ছিলেন ইদ্দো নিম্নলিখিত ব্যক্তিদের আমাদের কাছে পাঠালেন: মহলির উত্তরপুরুষ শেরেবিয় (মহলি ছিলেন একজন লেবি। লেবি ছিল ইস্রায়েলের সন্তান) শেরেবিয়র সঙ্গে তার পুত্ররা এবং ভাইরা মোট 18 জন পুরুষ এসেছিল। 19 হশবিয় ও তার সঙ্গে মরারির সন্তান যিশায়াহ এবং তাদের ভাইরা ও ছেলেরা, মোট 20 জন পুরুষ। 20 তারা 220 জন মন্দির কর্মীও পাঠিয়েছিল। (তাদের পূর্বপুরুষরা লেবীয়দের সাহায্য করবার জন্য দায়ূদ ও তাঁর কর্মচারীবর্গদ্বারা নিযুক্ত হয়েছিলেন। তাদের নাম তালিকা ভুক্ত ছিল।)

21 অহবা নদীর কাছে আমি ঘোষণা করলাম, ঈশ্বরের কাছে আমাদের বিনীত প্রতিপন্ন করার জন্য আমরা সকলে উপবাস করব। ঈশ্বরের কাছে আমরা আমাদের ও আমাদের সন্তান-সন্ততিদের এবং আমাদের বিষয় সম্পত্তির নিরাপদ যাত্রার জন্য প্রার্থনা করতে চেয়েছিলাম। 22 আমি আমাদের নিরাপত্তার জন্য রাজার কাছ থেকে আমাদের সঙ্গে আসবার জন্য সৈন্য ও অশ্বারোহী চাইতে অত্যন্ত দ্বিধা বোধ করেছিলাম। কারণ আমরা রাজাকে বলেছিলাম, “যারা প্রভুতে বিশ্বাস করে ও তাঁর প্রতি আস্থা রাখে, আমাদের প্রভু সদা তাদের সহায় হন। কিন্তু যেসব ব্যক্তি তাঁর থেকে দূরে সরে যায় ঈশ্বর তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হন।” 23 আমরা তাই উপবাস করে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলাম এবং তিনি আমাদের প্রার্থনা শুনেছিলেন।

24 এরপর আমি যাজকদের মধ্যে থেকে শেরেবিয়, হশবিয় যারা নেতৃস্থানীয় ছিল ও তাদের 10 জন ভাই প্রমুখ মোট 12 জন যাজককে বেছে নিয়েছিলাম। 25 রাজা অর্তক্ষস্ত, তাঁর উপদেষ্টাগণ, তাঁর প্রধানরা এবং বাবিলের সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা সেই উপহারগুলি ঈশ্বরের মন্দিরের জন্য দিলেন। এবং বাবিলের লোকদের কাছ থেকে আমরা সব সোনা এবং রূপো ওজন করে, মন্দিরের কাজের জন্য ঐ বারো জনকে দিলাম। 26 সব মিলিয়ে 25 টন রূপো, 3 3/4 টন রূপোর থালা ও 3 3/4 টন সোনা ছিল। 27 এছাড়াও আমরা প্রায় 19 পাউণ্ড ওজনের 20টি সোনার বাসন ও দুর্মূল্য 2টি পিতলের থালা দিয়েছিলাম এবং বলেছিলাম, 28 “তোমরা প্রভুর কাছে পবিত্র। এই সামগ্রীগুলিও প্রভুর কাছে পবিত্র। এই সমস্ত সোনা এবং রূপো লোকরা প্রভুকে দান করেছিল, সেই প্রভু, যিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর। 29 যাও এই সমস্ত বস্তু রক্ষা কর। জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরের নেতৃবর্গকে দেওয়ার আগে পর্যন্ত এই সমস্ত সম্পদের দায়িত্ব তোমাদের। ইস্রায়েলের প্রধান পরিবারবর্গের নেতা ও লেবীয়দের হাতে এই সমস্ত কিছু তুলে দেবে। তারা ওজন করে এই সমস্ত জিনিস জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরের ঘরের ভেতরে তুলে রাখবেন।”

30 তখন যাজক ও লেবীয়রা, জেরুশালেমের মন্দিরের জন্য ইষ্রার দেওয়া সামগ্রীগুলি গ্রহণ করল।

31 প্রথম মাসের দ্বাদশ দিনে আমরা অহবা নদীর কাছ থেকে জেরুশালেম অভিমুখে যাত্রা শুরু করলাম। ঈশ্বর আমাদের সহায় ছিলেন। তিনি আমাদের পথে শত্রুদের ও দুর্বৃত্তদের হাত থেকে রক্ষা করলেন। 32 এরপর আমরা জেরুশালেমে পৌঁছলাম। সেখানে তিন দিন বিশ্রাম নিলাম। 33 চতুর্থ দিন আমরা মন্দিরে গেলাম এবং দুর্মূল্য বস্তুগুলি ওজন করে যাজক ঊরীয়ের পুত্র মরেমোতকে দিলাম। মরেমোতের সঙ্গে পীনহসের পুত্র ইলিয়াসর এবং যেশূয়ের পুত্র যোষাবদ ও বিন্নূয়ির পুত্র নোয়দিয় নামে দুই লেবীয় ছিল। 34 আমরা সামগ্রীগুলি ওজন করে মোট ওজনের পরিমাণ নথিভুক্ত করেছিলাম।

35 এরপর, যে সব ইহুদীরা নির্বাসন থেকে ফিরে এসেছিল, তারা ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে হোমবলি নিবেদন করল। তারা ইস্রায়েলের মঙ্গলের জন্য 12টি বৃষ, 96টি মেষ, 77টি মেষশাবক ও পাপমোচনের জন্য 12টি পুরুষ ছাগলও বলিদান করল।

36 এরপর আমরা ফরাৎ নদীর পশ্চিম তীরস্থ প্রাদেশিক নেতাদের ও রাজ্যপালদের হাতে রাজার চিঠিটি তুলে দিলাম। তারপর এই সমস্ত নেতারা ইস্রায়েলের বাসিন্দা ও মন্দিরের সহায়তা করেন।

অইহুদীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে বিবাহ

এসব হয়ে যাবার পর ইস্রায়েলীয় লোকদের নেতারা আমাকে এসে বললেন, “ইষ্রা, ইস্রায়েলের লোকরা এখানে বসবাসকারী অন্যান্য ব্যক্তিদের থেকে নিজেদের পৃথক রেখে বাস করেনি। ইস্রায়েলীয়রা কনানীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, যিবূষীয়, অম্মোনীয়, মোয়াবীয়, মিশরীয় এবং ইমোরীয় প্রভৃতি অন্য জাতির লোকদের অসৎ‌ কার্যকলাপে প্রভাবিত। এইভাবে তারা অন্য বংশের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়। ইস্রায়েলীয় বিশেষ জন বলে গণ্য হবার কথা, কিন্তু এখন অন্তর্বিবাহের দরুণ তাদের অন্য জাতির সঙ্গে মিশ্রণ হয়েছে। ইস্রায়েলের নেতৃবর্গ ও প্রশাসকরাই এই ধরণের বিয়ে করে অপরাপরদের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।” আমি যখন একথা জানতে পারলাম, তখন দুঃখ প্রকাশ করবার জন্য আমি আমার পোশাক, চুল, দাড়ি ছিঁড়ে ফেললাম, এবং বিষণ্ন ও অত্যন্ত স্তম্ভিত হয়ে বসে পড়লাম। তখন ধর্মভীরু সমস্ত ব্যক্তি ভয়ে কাঁপতে শুরু করল। ওরা ভয় পেয়েছিল কারণ বন্দীদশা থেকে মুক্তিলাভ করে যেসব ইহুদীরা ফিরে এসেছিল, তারা ঈশ্বরের প্রতি অনুগত ছিল না। ক্ষুদ্ধ ও বিমূঢ় অবস্থায় আমি বৈকালিক উৎসর্গ অনুষ্ঠান পর্যন্ত বসে থাকলাম। ওই সমস্ত ব্যক্তিরা আমার চারপাশে জড়ো হল।

আমি যতক্ষণ ওখানে বসেছিলাম, নিজেকে যতদূর সম্ভব লজ্জিত দেখাতে চেষ্টা করছিলাম। এরপর বৈকালিক প্রার্থনার সময় আমি উঠে দাঁড়ালাম। নোংরা ও ছেঁড়া পরিধেয় সহ আমি হাঁটু গেড়ে বসে, দুহাত প্রসারিত করে আমার প্রভু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে বললাম:

“হে আমার ঈশ্বর, তোমার দিকে ফিরে তাকাতেও আমি লজ্জা বোধ করছি। আমি লজ্জিত কারণ আমাদের পাপকর্ম আমাদের মাথা ছাড়িয়ে গেছে। আমাদের অপরাধ স্বর্গ পর্যন্ত পৌঁছেছে। আমাদের পূর্বপুরুষদের সময় থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আমরা বহু পাপে পাপী। আমাদের পাপের জন্য আমাদের রাজাদের, যাজকদের এবং আমাদের শাস্তিভোগ করতে হয়েছে। বিভিন্ন বিদেশী শাসক আমাদের লুঠ করে আমাদের বন্দী করে নিয়ে গিয়েছে। ঐ বিদেশী আক্রমণকারীরা আমাদের সম্পদ লুঠ করেছে। আজ পর্যন্ত সেই একই পুরানো ঘটনা ঘটে চলেছে।

“কিন্তু এখন অল্প সময়ের জন্য তুমি আমাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করেছ। তুমি আমাদের বন্দী ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে কয়েক জনকে এই পবিত্রস্থানে এসে বাস করার সুযোগ করে দিয়েছ। প্রভু, তুমি আমাদের দাসত্ব থেকে এক নতুন জীবন দান করেছ। হ্যাঁ, আমরা দাস ছিলাম, কিন্তু তুমি আমাদের দাস থাকতে দেবে না বলে পারস্যের রাজাদের দয়ালু করে আমাদের প্রতি তোমার অনুগ্রহ প্রকাশ করেছ। তোমার মন্দিরটি যেটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, সেটি গড়বার জন্য তুমি আমাদের নবজীবন দান করেছ। যিহূদা ও জেরুশালেমকে রক্ষার্থে তুমি আমাদের একটি দেওয়াল তুলতে সাহায্য করেছ।

10 “হে ঈশ্বর, তোমাকে আমরা আর কি বলতে পারি? আমরা আবার তোমার প্রতি অবাধ্য হয়েছি। 11 হে ঈশ্বর, তুমি তোমার ভাববাদীদের মাধ্যমে আমাদের আদেশ করেছ: ‘যে ভূখণ্ডতে তোমরা আপনজ্ঞানে থাকতে চলেছ সেটি ধ্বংসাবশেষ মাত্র। এই ভূখণ্ডটি এখানে বসবাসকারী বাসিন্দাদের অসৎ‌ কর্মের জন্য ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। এখানকার বাসিন্দারা এই ভূখণ্ডকে অপবিত্র করেছে। 12 অতএব, ইস্রায়েলের লোকরা, তোমরা যেন তোমাদের সন্তান-সন্ততিদের ওই সব লোকদের সন্তান-সন্ততিকে বিয়ে করতে দিও না। ওদের সঙ্গে কথাও বলো না। আমার আদেশ শুনলে তোমরা বলিষ্ঠ হয়ে উঠবে এবং এই ভূখণ্ডের যাবতীয় ভালো জিনিষ উপভোগ করতে পারবে এবং তোমাদের সন্তান-সন্ততিদের হাতে এই ভূখণ্ডটি তুলে দিতে পারবে।’

13 “আমরা নিজেরাই এই অবস্থার জন্য দায়ী। আমরা পাপ আচরণ করেছি এবং আমরা অপরিসীম দোষী। কিন্তু তুমি আমাদের অনেক কম দণ্ডে দণ্ডিত করেছ। আমাদের অনেক মারাত্মক পাপের জন্য আমাদের খুব কঠিন শাস্তি প্রাপ্য ছিল। তা সত্ত্বেও তুমি আমাদের কয়েক জনকে বন্দীদশা থেকে মুক্তি দিয়েছ। 14 অতএব তোমার আদেশ আমাদের অমান্য করা উচিৎ‌ নয়। আমাদের ওই সমস্ত লোকদের সঙ্গে অন্তর্বিবাহ করা উচিৎ‌ নয় যারা খারাপ কাজ করে। আমরা জানি যে আমরা যদি ওদের সঙ্গে বিবাহ সম্পর্ক চালিয়ে যাই, তাহলে, হে ঈশ্বর, তুমি আমাদের ওপর খুব রেগে যাবে এবং যতদিন না সমস্ত ইস্রায়েলীয় নির্বংশ হবে তত দিন আমাদের ধ্বংস করবে।

15 “হে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তুমি এত ভালো যে আমরা এত দোষ করা সত্ত্বেও তুমি আমাদের কয়েক জনকে বেঁচে থাকতে দিয়েছ। আমরা দোষী, তাই সে কারণে আমাদের কারোরই তোমার সামনে দাঁড়াবার কথা নয়।”

লোকরা তাদের পাপ স্বীকার করল

10 প্রভুর মন্দিরের সামনে কাঁদতে কাঁদতে ইষ্রা প্রার্থনা করছিলেন ও দোষ স্বীকার করছিলেন। সেই সময়ে বহু ইস্রায়েলীয় নারী, পুরুষ ও শিশু তাঁর চারপাশে জড়ো হয়েছিল। তারাও কাঁদছিল। তখন এলামের একজন উত্তরপুরুষ যিহীয়েলের পুত্র শখনিয়, ইষ্রাকে বলল, “আমরা ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করেছি এবং আমাদের আশেপাশে বসবাসকারী অন্যান্য জাতির বংশের লোকদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্বন্ধ স্থাপন করেছি, তবুও আমার মনে হয় এখনো ইস্রায়েলের সব আশা হারিয়ে যায়নি। এখন আমরা ঈশ্বরের সামনে একটি চুক্তি করি যে এইসব বিজাতীয় স্ত্রীলোক ও তাদের সন্তানদের আমরা ফেরৎ‌ পাঠিয়ে দেব। ইষ্রার উপদেশ মেনে চলবার জন্য ও যেসব ব্যক্তি আমাদের ঈশ্বরের প্রতি আস্থাবান তাঁদের অনুসরণ করবার জন্য আমরা এই কাজ করব এবং আমরা ঈশ্বরের বিধান মেনে চলবো। ইষ্রা, আপনি উঠে দাঁড়ান এবং শক্ত হোন। ঈশ্বরের বিধির প্রতি আমাদের আস্থাবান করে তোলার যে ব্রত আপনি নিয়েছেন তা সফল করে তুলতে আমরা আপনাকে সহায়তা করব।”

ইষ্রা উঠে দাঁড়ালেন এবং প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী প্রধান যাজকগণ, লেবীয় ও ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের শপথ গ্রহণ করালেন। এরপর ইষ্রা ইলিয়াশীবের পুত্র যিহোহাননের ঘরে প্রবেশ করলেন। যেটুকু সময় ইষ্রা ওখানে ছিলেন, উনি কোন খাবার খেলেন না বা কিছু পান করলেন না, কারণ প্রত্যাগত বন্দীদের ঈশ্বরের বিধির প্রতি অনাস্থা বশতঃ তিনি তখনও দুঃখিত ও শোকসন্তপ্ত ছিলেন। অতঃপর তিনি ইহুদী ও জেরুশালেমের সর্বত্র একটি বার্তা পাঠালেন। সেই বার্তায় তিনি বন্দীত্ব থেকে মুক্তি লাভ করা সমস্ত ইহুদীদের জেরুশালেমে এসে সমবেত হতে বললেন। যে সব ব্যক্তি তিনদিনের মধ্যে এসে উপস্থিত হবে না তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং সেই ব্যক্তিকে সে যে দলের সঙ্গে বাস করে তার থেকেও বহিষ্কার করা হবে। প্রধান আধিকারিক ও নেতৃবৃন্দরা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন।

তিন দিনের মধ্যে ইহুদী ও বিন্যামীনের পরিবারের সমস্ত ব্যক্তি জেরুশালেমে জড়ো হল। এবং নবম মাসের কুড়ি দিনের মাথায় তারা মন্দির প্রাঙ্গণে সমবেত হল। তারা সকলে এই সমাবেশের কারণে ও প্রবল বর্ষণের জন্য কাঁপছিল। 10 তখন ইষ্রা উঠে দাঁড়ালেন এবং সেই সমাবেশকে সম্ভাষণ করলেন, “তোমরা সকলে ঈশ্বরের বিধি অমান্য করে তাঁর প্রতি অনাস্থা দেখিয়েছিলে এবং তোমরা বিজাতীয় নারীদের বিয়ে করে ইস্রায়েলকে আরো দোষী করেছ। 11 এখন তোমরা ঈশ্বরের সামনে তোমাদের পাপ স্বীকার করো। প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, তাঁর বিধি তোমাদের অবশ্য পালনীয়। এই ভূখণ্ডে তোমাদের আশেপাশের বিজাতীয় ব্যক্তি বর্গের সঙ্গে তোমরা সমস্ত রকম সম্পর্ক ত্যাগ কর এবং তোমাদের বিদেশী স্ত্রীদের থেকে তোমরা নিজেদের আলাদা করে নাও।”

12 তখন ওখানে সমবেত সমস্ত ব্যক্তি সমস্বরে চিৎকার করে ইষ্রাকে বলল: “আপনি ঠিকই বলেছেন। আপনি যা বলছেন তা আমাদের অবশ্যই পালন করা উচিৎ‌। 13 এখানে অনেক ব্যক্তি আছে আর এই বৃষ্টির মধ্যে আমাদের পক্ষে বাইরে থাকা সম্ভব নয়। এই সমস্যাটির সমাধানও দু-একদিনের মধ্যে সম্ভব নয় কারণ আমরা গুরুতর পাপ আচরণ করেছি। 14 আমাদের নেতারাই আমাদের পুরো দলের জন্য এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিক। তারপর তাদের বিদেশী স্ত্রীলোকদের, যাদের তারা বিয়ে করেছিল, তাদের ফেরৎ‌ পাঠাবে, তারা তাদের জন্য নির্দ্দিষ্ট সময়ে জেরুশালেমে আসবে। প্রতিটি শহর থেকে প্রধান নেতারা এবং বিচারকগণ ঐ লোকদের সঙ্গে আসবেন। তাঁরা এরকম করে যাবেন যতক্ষণ না সবাই এসে যাবে। তাহলে ঈশ্বর আমাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হওয়া থেকে বিরত হবেন।”

15 অসাহেলের পুত্র যোনাথন, তিক্বের পুত্র যহসিয়, মশুল্লম ও লেবীয় শব্বথয় এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করল।

16 অতঃপর জেরুশালেমে প্রত্যাবর্তনকারী ইহুদীরা পরিকল্পনাটিকে গ্রহণ করতে সম্মত হল। যাজক ইষ্রা পরিবার নেতাদের বেছে নিলেন, প্রতিটি পরিবারবর্গ থেকে একটি করে মানুষের নাম বাছা হল এবং তাঁরা দশম মাসের প্রথম দিনে একত্র হয়ে প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করলেন। 17 দশম মাসের প্রথম দিনে ওই বাছাই করা ব্যক্তিগণ যে সব লোকরা অন্তর্বিবাহ করেছে তাদের সম্পর্কে পর্যালোচনা করবার জন্য একসঙ্গে বসলেন।

বিজাতীয় স্ত্রীলোকদের বিবাহ করা ব্যক্তিদের তালিকা

18 নিম্নলিখিত ব্যক্তিরা যে সব যাজক বিদেশী স্ত্রীলোকদের বিবাহ করেছিল, তাদের উত্তরপুরুষ:

যিহোষাদকের পুত্র যেশূয় ও তার ভাইরা মাসেয়, ইলীয়েষর, যারিব ও গদলিয়। 19 এঁরা সকলে তাঁদের স্ত্রীদের পরিত্যাগ করতে সম্মত হলেন। তারপর তাঁরা পাপস্খালনের বলিদানের জন্য একটি করে মেষও উৎসর্গ করেছিলেন।

20 হনানি ও সবদিয় ছিল ইম্মেরের পুত্র।

21 হারীমের উত্তরপুরুষদের মধ্যে মাসেয়, এলিয়, শময়িয়, যিহীয়েল ও উষিয়;

22 পশহূরের উত্তরপুরুষদের মধ্যে: ইলিয়ৈনয়, মাসেয়, ইশ্মায়েল, নথনেল, যোষাবদ ও ইলিয়াসা;

23 লেবীয়দের মধ্যে:

যোষাবদ, শিমিয়ি ও কলায় বা কলীট, পথাহিয়, যিহূদা ও ইলিয়েষর;

24 গায়কদের মধ্যে ইলীয়াশীব;

দ্বারপালদের মধ্যে শল্লুম, টেলম ও ঊরি;

25 ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে:

পরিয়োসের উত্তরপুরুষদের মধ্যে রমিয়, যিষিয়, মল্কিয়, মিয়ামীন, ইলিয়াসর, মল্কিয় ও বনায়;

26 এলমের পুত্রদের মধ্যে মত্তনিয়, সখরিয়, যিহীয়েল, অব্দি, যিরেমোৎ ও এলিয়।

27 সত্তূর পুত্রদের মধ্যে ইলিয়ৈনয়, ইলিয়াশীব, মত্তনিয়, যিরেমোৎ, সাবদ ও অসীসা;

28 বেবয়ের পুত্রদের মধ্যে যিহোহানন, হনানিয়, সব্বয় ও অৎলয়;

29 বানির পুত্রদের মধ্যে মশুল্লম, মল‌্লূক, অদায়া, যাশূব, শাল ও যিরমোৎ।

30 পহৎ—মোয়াবের পুত্রদের মধ্যে অদ্ন, কলাল, বনায়, মাসেয়, মত্তনিয়, বৎসলেল, বিন্নূয়ী ও মনঃশি;

31 হারীমের পুত্রদের মধ্যে ইলিয়েষর, যিশিয়, মল্কিয়, শময়িয়, শিমিয়োন, 32 বিন্যামীন, মলূ্লূক, শমরিয়;

33 হশূমের পুত্রদের মধ্যে মত্তনয়, মত্তত্ত, সাবদ, ইলীফেলট, যিরেময়, মনঃশি ও শিমিয়ি;

34 বানির পুত্রদের মধ্যে মাদয়, অম্রাম, ঊয়েল, 35 বনায়, বেদিয়া, কলূহূ, 36 বনিয়, মরেমোৎ, ইলিয়াশীব, 37 মত্তনিয়, মত্তনয় এবং যাসয়,

38 বিন্নূয়ীর পুত্রদের মধ্যে শিমিয়ি, 39 শেলিমিয়, নাথন, অদায়া, 40 মকদ্বয়, শাশয়, শারয়, 41 অসরেল, শেলিমিয়, শমরিয়, 42 শল্লুম, অমরিয় এবং যোষেফ;

43 নবোর উত্তরপুরুষদের মধ্যে যিয়ীয়েল, মত্তিথিয়, সাবদ, সবীনঃ, যাদয় যোয়েল ও বনায়।

44 এরা সকলেই বিদেশী স্ত্রীলোকদের বিবাহ করেছিল এবং এদের মধ্যে অনেকের স্ত্রী-ই সন্তানদের জন্ম দিয়েছিল।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International