M’Cheyne Bible Reading Plan
নতুন করে শুরু
9 ঈশ্বর নোহ আর তাঁর পুত্রদের আশীর্বাদ করলেন। ঈশ্বর তাদের বললেন, “তোমাদের বহু সন্তান হোক্। তোমাদের উত্তরপুরুষরা পৃথিবী পরিপূর্ণ করুক। 2 পৃথিবীর সমস্ত জন্তু জানোয়ার, আকাশের সমস্ত পাখী, যতরকমের সরীসৃপ জাতীয় জীব যারা মাটির উপরে বুকে হেঁটে চলে এবং জলের সমস্ত মাছ প্রত্যেকে তোমাদের ভয় করবে। সমস্ত প্রাণীগণই তোমাদের শাসনে থাকবে। 3 অতীতে তোমাদের খাদ্য হিসেবে আমি শুধু সবুজ উদ্ভিদ তোমাদের দিয়েছিলাম। এখন থেকে সমস্ত জানোয়ারই তোমাদের খাদ্য হবে। পৃথিবীর সমস্ত কিছুই আমি তোমাদের দিচ্ছি। সব কিছুই তোমাদের। 4 যে মাংসের মধ্যে সেই প্রাণীর প্রাণ (রক্ত) আছে সেই মাংস কখনও খাবে না। 5 আমি তোমাদের জীবনের জন্য তোমাদের রক্ত দাবি করব। অর্থাৎ যদি কোনও জানোয়ার কোনও মানুষকে হত্যা করে তাহলে আমি তার প্রাণ দাবী করব এবং যদি কোন মানুষ অন্য কোনও মানুষের প্রাণ নেয় আমি তারও প্রাণ দাবী করব।
6 “ঈশ্বর মানুষকে আপন ছাঁচে তৈরী করেছেন।
তাই যে মানুষ অপর মানুষকে হত্যা করে তার অবশ্যই মানুষের হাতে মৃত্যু হবে।
7 নোহ, তুমি ও তোমার পুত্রদের অনেক সন্তান-সন্ততি হোক্। আপন পরিজনদের দিয়ে পৃথিবী পরিপূর্ণ করো।”
8 তারপর ঈশ্বর নোহ ও তাঁর পুত্রদের বললেন, 9 “আমি এখন তোমাকে এবং তোমার লোকদের, যারা তোমার পরে বর্ত্তমান থাকবে তাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। 10 নৌকোর মধ্যে থেকে তোমার সঙ্গে যেসব পাখী, যেসব গৃহপালিত জন্তু এবং অন্যান্য যেসব জানোয়ার নেমেছে তাদের সবাইকে আমার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীর কাছে আমার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। 11 তোমাদের কাছে আমার প্রতিশ্রুতি হল এই: পৃথিবীর সমস্ত প্রাণ বন্যা দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছিল। কিন্তু এমন ঘটনা আর কখনও হবে না। কোনও বন্যা আর কখনও পৃথিবী থেকে সমস্ত প্রাণ নিশ্চিহ্ন করবে না।”
12 ঈশ্বর আরও বললেন, “আর আমি যে এই প্রতিশ্রুতি দিলাম এর প্রমাণস্বরূপ আমি তোমাদের একটা জিনিস দেব। এই প্রমাণ থেকে সকলে জানবে যে আমি তোমাদের সঙ্গে এবং পৃথিবীর সমস্ত জীবন্ত জিনিসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। এই চুক্তি চিরকালীন। 13 প্রমাণটা এই যে, আকাশে আমি মেঘে মেঘে সাতরঙের এক রঙধনু বানিয়েছি। ঐ রঙধনুই হল আমার আর পৃথিবীর মধ্যে চুক্তির চিহ্ন। 14 আমি যখন পৃথিবীর উপরে মেঘমালা ছড়িয়ে দেব, তখন তোমরা মেঘে ঐ রঙধনু দেখতে পাবে। 15 আর আমি যখন ঐ রঙধনু দেখতে পাবো, আমার তখন তোমাদের ও পৃথিবীর যাবতীয় জীবন্ত জিনিসের সঙ্গে চুক্তির কথা মনে পড়বে। এই চুক্তির মর্ম হল যে পৃথিবীতে আর কখনও সর্ব বিধ্বংসী এমন বন্যা হবে না। 16 আমি যখন মেঘের মধ্যে ঐ রঙধনু দেখবো তখন চিরকালের জন্য সম্পন্ন ঐ চুক্তির কথা আমার মনে পড়ে যাবে। আমার আর পৃথিবীর প্রত্যেক প্রাণীর মধ্যে ঐ চুক্তির কথা আমি মনে রাখব।”
17 তারপর প্রভু নোহকে বললেন, “পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীর সঙ্গে আমি যে একটা চুক্তি করেছি ঐ রঙধনুই তার প্রমাণ।”
পুনরায় সমস্যার শুরু
18 নোহর সঙ্গে তাঁর পুত্ররাও নৌকো থেকে বেরিয়ে এলো। তাদের নাম শেম, হাম আর যেফৎ। (হামই কনানের পিতা।) 19 ঐ তিনজন হল নোহর পুত্র। ঐ তিন পুত্র হতেই পৃথিবীর সমস্ত মানুষ এসেছে।
20 মাটিতে নেমে নোহ কৃষিকাজ শুরু করলেন। একটা জমিতে তিনি দ্রাক্ষা চাষ করলেন। 21 সেই দ্রাক্ষা থেকে নোহ দ্রাক্ষারস বানালেন, তারপর সেই দ্রাক্ষারস পান করে নেশায় চুর হয়ে তাঁবুর ভিতরে শুয়ে পড়লেন। নোহর গায়ে আবরণ থাকল না। 22 কনানের পিতা হাম সেই উলঙ্গ অবস্থায় নিজের পিতাকে দেখে ফেললো। তাঁবুর বাইরে গিয়ে সে কথা ভাইদের বলল। 23 তখন শেম আর যেফৎ এক খণ্ড বস্ত্র নিয়ে নিজেদের পিঠের উপর ছড়িয়ে নিলো। তারপর পিছন দিকে হেঁটে হেঁটে তাঁবুর ভিতরে ঢুকে ঐ বস্ত্রখণ্ড দিয়ে পিতাকে ঢেকে দিল। এইভাবে, তাদের মুখ বিপরীত দিকে ছিল বলে তাদের পিতার নগ্নতা তারা দেখেনি।
24 দ্রাক্ষারসের প্রভাবে নোহ ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তিনি যখন ঘুম থেকে উঠলেন তখন জানতে পারলেন তাঁর তরুণ পুত্র হাম তাঁর প্রতি কি করেছে। 25 তখন নোহ বললেন,
“অভিশাপ কনানের উপরে পড়ুক।
তাকে চিরকাল তার ভাইদের দাস হয়ে থাকতে হবে।”
26 নোহ আরও বললেন,
“শেমের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা কর!
কনান যেন শেমের দাস হয়।
27 ঈশ্বর যেফৎকে আরও জমি দিন,
ঈশ্বর শেমের তাঁবুতে অবস্থান করুন
এবং কনান তাদের দাস হউক।”
28 বন্যার পরে নোহ 350 বছর বেঁচেছিলেন। 29 নোহ বেঁচেছিলেন মোট 950 বছর; তারপর তাঁর মৃত্যু হয়।
বিভিন্ন জাতির বৃদ্ধি ও বিস্তার
10 শেম, হাম ও যেফৎ এই তিনজন ছিল নোহর পুত্র। বন্যার পরে এই তিনজনের আরও বহু সন্তান সন্ততির জন্ম হল। শেম, হাম ও যেফতের উত্তরপুরুষরা:
যেফতের উত্তরপুরুষ
2 যেফতের পুত্রগণ হল: গোমর, মাগোগ, মাদয়, যবন, তূবল, মেশক এবং তীরস।
3 গোমরের পুত্রগণ হল: অস্কিনস, রীফৎ এবং তোগর্ম।
4 যবনের পুত্রগণ হল: ইলীশা, তর্শীশ, কিত্তীম এবং দোদানীম।
5 ভূমধ্যসাগর অঞ্চলে যে সকল মানুষের বাস তারা সকলেই যেফতের সন্তান-সন্ততি। প্রত্যেক পুত্রের নিজস্ব ভূমি ছিল। সমস্ত পরিবারই বৃদ্ধি পেতে পেতে একটি জাতিতে পরিণত হয়। প্রত্যেক জাতির নিজস্ব ভাষা ছিল।
হামের উত্তরপুরুষ
6 হামের পুত্রগণ হল: কূশ, মিশর, পূট এবং কনান।
7 কূশের পুত্রগণ হল: সবা, হবীলা, সপ্তা, রয়মা এবং সপ্তক।
রয়মার পুত্রগণ হল: শিবা এবং দদান।
8 নিম্রোদ নামেও কুশের এক পুত্র ছিল। কালক্রমে নিম্রোদ দারুন শক্তিমান পুরুষে পরিণত হয়। 9 প্রভুর সম্মুখে নিম্রোদ একজন বড় শিকারী হয়ে উঠল। সেজন্য তার সঙ্গে অন্যান্য লোকদের তুলনা করে সকলে বলতো, “ঐ মানুষটি নিম্রোদের মত, এমন কি প্রভুর সামনেও দারুণ শিকারী।”
10 নিম্রোদের রাজত্ব বাবিল থেকে শিনিয়র দেশে এরক অক্কদ এবং কল্নী পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল। 11 নিম্রোদ অশূরেও গিয়েছিল। নিম্রোদ অশূর দেশে নীনবী, রহোবোৎ-পুরী, কেলহ এবং 12 রেষণ (নীনবী এবং কেলহের মধ্যবর্তী ভুভাগে রেষণ মহানগরের পত্তন হয়।)
13 মিশর ছিল লূদীয়, অনামীয়, লহাবীয়, নপ্তুহীয়, 14 পথ্রোষীয়, কস্লূহীয় আর কপ্তোরীয় অঞ্চলগুলির অধিবাসীদের জনক। (পলেষ্টীয়রা কস্লূহীয় দেশ থেকে এসেছিল।)
15 কনান ছিল সীদোনের পিতা। সীদোন কনানের প্রথম সন্তান। কনান হিত্তীয়দের পূর্বপুরুষ হেতেরও পিতা ছিলেন। হেৎ থেকে হিত্তীয়দের উদ্ভব। 16 কনান ছিলেন যিবুষীয়, ইমোরীয় জনগোষ্ঠী, গির্গাশীয়দের পিতা। 17 হিব্বীয় জনগোষ্ঠী, অর্কীয় জনগোষ্ঠী, সীনীয় জনগোষ্ঠী, 18 অর্বদীয় জনগোষ্ঠী, সমারীয় জনগোষ্ঠী এবং হমাতীয় জনগোষ্ঠী কনান থেকে উদ্ভুত হয়।
পরে কনানীয় গোষ্ঠীগুলি পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ল।
19 কনানীয়দের দেশ উত্তরে সীদোন থেকে দক্ষিণে গরার পর্যন্ত, পশ্চিমে ঘসা থেকে পূর্বে সদোম ও ঘমোরা পর্যন্ত এবং অদ্মা ও সবোয়ীর থেকে লাশা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
20 এই সমস্ত মানুষই ছিল হামের উত্তরপুরুষ। এইসব পরিবারগুলির নিজস্ব ভাষা ও নিজস্ব দেশ ছিল। তারা ক্রমে ক্রমে পৃথক পৃথক জাতি হয়ে উঠল।
শেমের উত্তরপুরুষ
21 যেফতের বড় ভাই ছিল শেম। শেমের একজন উত্তরপুরুষ হল এবর এবং এবর সমস্ত হিব্রু জনগোষ্ঠীর জনক রূপে পরিচিত।[a]
22 শেমের পুত্ররা হল: এলম, অশূর, অর্ফক্ষদ, লূদ এবং অরাম।
23 অরামের পুত্রেরা হল: উষ, হূল, গোখর এবং মশ।
24 অর্ফক্ষদের পুত্র শেলহ,
শেলহের পুত্র এবর।
25 এবরের দুই পুত্র। এক পুত্রের নাম পেলগ। তার আমলে পৃথিবী বিভক্ত হয় বলে তার ঐ নাম হয়। অন্য পুত্রের নাম যক্তন।
26 যক্তনের পুত্ররা হল: অল্মোদদ, শেলফ, হৎসর্মাবৎ, যেরহ, 27 হদোরাম, উবল, দিক্ল, 28 ওবল, অবীমায়েল, শিবা, 29 ওফীর, হবীলা এবং যোবব। এরা সবাই ছিল যক্তনের পুত্র। 30 পূর্ব দিকে[b] মেষা এবং পার্বত্য দেশের মধ্যবর্তী ভুভাগে তারা বাস করত। মেষা ছিল সফার দেশের দিকে।
31 এরা সবাই ছিল শেমের পরিবারের অন্তর্গত। পরিবার, ভাষা, দেশ ও জাতি অনুসারেই তাদের সাজানো হয়েছে।
32 এই সবগুলোই নোহের পুত্রদের পরিবার। পরিবারগুলির তালিকা তাদের জাতি অনুসারে প্রস্তুত করা হয়েছে। প্লাবনের পরে এই পরিবারগুলি থেকেই সারা পৃথিবীতে মনুষ্য সমাজের বিস্তার হয়েছে।
যীশু একজন পঙ্গু লোককে সুস্থ করলেন
(মার্ক 2:1-12; লূক 5:17-26)
9 এরপর যীশু নৌকায় উঠে হ্রদের অপর পারে নিজের শহরে এলেন। 2 কয়েকজন লোক তখন খাটিয়ায় শুয়ে থাকা এক পঙ্গুকে যীশুর কাছে নিয়ে এল। তাদের এমন বিশ্বাস দেখে তিনি সেই পঙ্গুকে বললেন, “বাছা, সাহস সঞ্চয় কর, তোমার সব পাপের ক্ষমা হল।”
3 তখন কয়েকজন ব্যবস্থার শিক্ষক বলতে লাগলেন, “এই লোকটা দেখছি এধরণের কথা বলে ঈশ্বরের নিন্দা করছে।”
4 তারা কি চিন্তা করছে, তা জানতে পেরে যীশু বললেন, “তোমরা মনে মনে কেন এমন মন্দ চিন্তা করছ? 5-6 কোনটা বলা সহজ, ‘তোমার পাপ ক্ষমা করা হল’ না, ‘তুমি উঠে হেঁটে বেড়াও?’ কিন্তু আমি তোমাদের দেখাব যে এই পৃথিবীতে মানবপুত্রের পাপ ক্ষমা করার ক্ষমতা আছে।” এই বলে যীশু সেই পঙ্গু লোকটির দিকে ফিরে বললেন, “ওঠ, তোমার খাটিয়া নিয়ে বাড়ি চলে যাও।”
7 তখন সেই পঙ্গু লোকটি উঠে তার বাড়ি চলে গেল। 8 লোকেরা এই ঘটনা দেখে ভয় পেয়ে গেল; আর ঈশ্বর মানুষকে এমন ক্ষমতা দিয়েছেন বলে তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল।
যীশু মথিকে মনোনীত করলেন
(মার্ক 2:13-17; লূক 5:27-32)
9 যীশু সেখান থেকে চলে যাবার সময় দেখলেন একজন লোক কর আদায়ের গদিতে বসে আছে। তাঁর নাম মথি। যীশু তাঁকে বললেন, “আমার সঙ্গে এস।” মথি তখনই উঠে তাঁর সঙ্গে গেলেন।
10 পরে মথির বাড়িতে যীশু খেতে বসলে সেখানে অনেক কর আদায়কারী ও পাপী-তাপী মানুষ এসে যীশু ও তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে খেতে বসল। 11 ফরীশীরা তা দেখে যীশুর অনুগামীদের বললেন, “তোমাদের গুরু কর আদায়কারী ও পাপী-তাপীর সঙ্গে কেন খাওয়া-দাওয়া করেন?”
12 একথা শুনে যীশু বললেন, “যারা সুস্থ আছে তাদের জন্য ডাক্তারের প্রয়োজন নেই, বরং রোগীদেরই ডাক্তারের প্রয়োজন। 13 বলিদান নয়, আমি চাই তোমরা দয়া করতে শেখ,(A) শাস্ত্রের এই কথার অর্থ কি তা বুঝে দেখ। কারণ সৎ ও ধার্মিক লোকদের নয়, পাপীদেরই আমি ডাকতে এসেছি।”
যীশু, ইহুদী ধর্মীয় নেতাদের মতো ছিলেন না
(মার্ক 2:18-22; লূক 5:33-39)
14 পরে যোহনের অনুগামীরা যীশুর কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, “আমরা ও ফরীশীরা প্রায়ই উপোস করি; কিন্তু আপনার শিষ্যরা কেন উপোস করে না?”
15 তখন যীশু তাদের বললেন, “বর সঙ্গে থাকতে কি বরের বন্ধুরা শোক করতে পারে? কিন্তু দিন আসছে যখন বরকে তাদের কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া হবে, তখন তারা উপোস করবে।
16 “নতুন কাপড়ের টুকরো নিয়ে কেউ পুরানো কাপড়ে তালি দেয় না, তাহলে ছেঁড়াটা আরো বিশ্রী হবে। 17 পুরানো চামড়ার থলিতে কেউ নতুন দ্রাক্ষা রস রাখে না, রাখলে চামড়ার থলিটি ফেটে যায়, ফলে দ্রাক্ষারস পড়ে যায় আর থলিটিও নষ্ট হয়। টাটকা রস নতুন থলিতেই রাখতে হয়, তাতে দুটোই সুরক্ষিত থাকে।”
মৃত মেয়ের জীবনদান ও অসুস্থ স্ত্রীলোকের আরোগ্যলাভ
(মার্ক 5:21-43; লূক 8:40-56)
18 যীশু যখন তাদের এসব কথা বলছিলেন, সেই সময় সমাজ-গৃহের নেতাদের একজন তাঁর কাছে এসে নতজানু হয়ে বললেন, “আমার মেয়েটা এই মাত্র মারা গেল, আপনি এসে তাকে একটু স্পর্শ করুন তাহলে সে বেঁচে উঠবে।”
19 তখন যীশু উঠে তাঁর সঙ্গে গেলেন, আর তাঁর শিষ্যরাও তাঁর সঙ্গে চললেন।
20 পথে যাবার সময় একজন স্ত্রীলোক যীশুর পিছন দিকে এসে তাঁর পোশাকের খুঁট স্পর্শ করল, সে বারো বছর ধরে রক্তস্রাবে কষ্ট পাচ্ছিল। 21 সে মনে মনে ভাবল, “আমি যদি যীশুর পোশাক কেবল ছুঁতে পারি, তাহলেই ভাল হয়ে যাব।”
22 যীশু ঘুরে দাঁড়ালেন আর তাকে দেখতে পেয়ে বললেন, “বাছা, তুমি মনে সাহস রাখো, তোমার বিশ্বাসই তোমায় সুস্থ করল।” তখন থেকে স্ত্রীলোকটি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেল।
23 যীশু সেই নেতার বাড়িতে পরে গিয়ে দেখলেন, যারা করুণ সুরে বাঁশি বাজায় তারা রয়েছে আর লোকরা চিৎকার করে কাঁদছে। 24 যীশু বললেন, “তোমরা বাইরে যাও। মেয়েটি মরে নি, ও তো ঘুমিয়ে আছে।” লোকগুলো এই কথা শুনে তাঁকে নিয়ে হাসাহাসি করতে লাগল। 25 লোকদের ঘর থেকে বার করে দেওয়া হলে, যীশু ভেতরে গিয়ে মেয়েটির হাত ধরলেন, তাতে সে উঠে বসল। 26 এই ঘটনার কথা সেই অঞ্চলের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল।
বহুলোকের আরোগ্যলাভ
27 যীশু যখন সেই জায়গা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, তখন দুজন অন্ধ তাঁর পিছনে পিছনে চলল। তারা চিৎকার করে বলতে লাগল, “হে দায়ূদের পুত্র, আমাদের প্রতি দয়া করুন।”
28 যীশু বাড়িতে এলে সেই দুজন অন্ধ তাঁর কাছে এল। তখন যীশু তাদের বললেন, “তোমরা কি বিশ্বাস কর যে আমি তোমাদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতে পারি?” অন্ধ লোক দুটি বলল, “হ্যাঁ, প্রভু আমরা বিশ্বাস করি।”
29 তখন তিনি তাদের চোখ স্পর্শ করে বললেন, “তোমরা যেমন বিশ্বাস করেছ, তোমাদের প্রতি তেমনি হোক্।” 30 আর তখনই তারা চোখে দেখতে পেল। যীশু তাদের দৃঢ়ভাবে নিষেধ করে বললেন, “দেখ, একথা কেউ যেন জানতে না পারে।” 31 কিন্তু তারা সেখান থেকে গিয়ে যীশুর বিষয়ে সেই অঞ্চলের সব জায়গায় বলতে লাগল।
32 ঐ দুজন লোক যখন চলে যাচ্ছে, এমন সময় কয়েকজন লোক ভূতে পাওয়া একজন লোককে যীশুর কাছে নিয়ে এল, সে কথা বলতে পারত না। 33 সেই ভূতকে তার ভেতর থেকে তাড়িয়ে দেবার পর বোবা লোকটি কথা বলতে লাগল। তাতে সমবেত সব লোক আশ্চর্য হয়ে গেল। তারা বলল, “ইস্রায়েলে এমন কখনও দেখা যায় নি।”
34 কিন্তু ফরীশীরা বলতে থাকল, “সে ভূতদের শাসনকর্তার শক্তিতে তাদের তাড়ায়।”
মানুষের জন্য যীশুর দুঃখবোধ
35 যীশু সেই অঞ্চলের সমস্ত নগর ও গ্রামে গ্রামে ঘুরে ইহুদীদের সমাজ-গৃহে শিক্ষা দিতে এবং স্বর্গরাজ্যের সুসমাচার প্রচার করতে লাগলেন। তাছাড়া তিনি লোকেদের সমস্ত রোগ ব্যাধি ভাল করতে লাগলেন। 36 লোকদের ভীড় দেখে তাদের জন্য যীশুর মমতা হল, কারণ তারা পালকবিহীন মেষপালের মতো ক্লান্ত ও অসহায় ছিল। 37 তখন যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “ফসল প্রচুর কিন্তু কাটার লোক কত অল্প, 38 তাই তোমরা ফসলের মালিকের কাছে অনুরোধ কর, যেন তিনি ফসল কাটার জন্য মজুর পাঠান।”
অইহুদীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে বিবাহ
9 এসব হয়ে যাবার পর ইস্রায়েলীয় লোকদের নেতারা আমাকে এসে বললেন, “ইষ্রা, ইস্রায়েলের লোকরা এখানে বসবাসকারী অন্যান্য ব্যক্তিদের থেকে নিজেদের পৃথক রেখে বাস করেনি। ইস্রায়েলীয়রা কনানীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, যিবূষীয়, অম্মোনীয়, মোয়াবীয়, মিশরীয় এবং ইমোরীয় প্রভৃতি অন্য জাতির লোকদের অসৎ কার্যকলাপে প্রভাবিত। 2 এইভাবে তারা অন্য বংশের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়। ইস্রায়েলীয় বিশেষ জন বলে গণ্য হবার কথা, কিন্তু এখন অন্তর্বিবাহের দরুণ তাদের অন্য জাতির সঙ্গে মিশ্রণ হয়েছে। ইস্রায়েলের নেতৃবর্গ ও প্রশাসকরাই এই ধরণের বিয়ে করে অপরাপরদের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।” 3 আমি যখন একথা জানতে পারলাম, তখন দুঃখ প্রকাশ করবার জন্য আমি আমার পোশাক, চুল, দাড়ি ছিঁড়ে ফেললাম, এবং বিষণ্ন ও অত্যন্ত স্তম্ভিত হয়ে বসে পড়লাম। 4 তখন ধর্মভীরু সমস্ত ব্যক্তি ভয়ে কাঁপতে শুরু করল। ওরা ভয় পেয়েছিল কারণ বন্দীদশা থেকে মুক্তিলাভ করে যেসব ইহুদীরা ফিরে এসেছিল, তারা ঈশ্বরের প্রতি অনুগত ছিল না। ক্ষুদ্ধ ও বিমূঢ় অবস্থায় আমি বৈকালিক উৎসর্গ অনুষ্ঠান পর্যন্ত বসে থাকলাম। ওই সমস্ত ব্যক্তিরা আমার চারপাশে জড়ো হল।
5 আমি যতক্ষণ ওখানে বসেছিলাম, নিজেকে যতদূর সম্ভব লজ্জিত দেখাতে চেষ্টা করছিলাম। এরপর বৈকালিক প্রার্থনার সময় আমি উঠে দাঁড়ালাম। নোংরা ও ছেঁড়া পরিধেয় সহ আমি হাঁটু গেড়ে বসে, দুহাত প্রসারিত করে আমার 6 প্রভু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে বললাম:
“হে আমার ঈশ্বর, তোমার দিকে ফিরে তাকাতেও আমি লজ্জা বোধ করছি। আমি লজ্জিত কারণ আমাদের পাপকর্ম আমাদের মাথা ছাড়িয়ে গেছে। আমাদের অপরাধ স্বর্গ পর্যন্ত পৌঁছেছে। 7 আমাদের পূর্বপুরুষদের সময় থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আমরা বহু পাপে পাপী। আমাদের পাপের জন্য আমাদের রাজাদের, যাজকদের এবং আমাদের শাস্তিভোগ করতে হয়েছে। বিভিন্ন বিদেশী শাসক আমাদের লুঠ করে আমাদের বন্দী করে নিয়ে গিয়েছে। ঐ বিদেশী আক্রমণকারীরা আমাদের সম্পদ লুঠ করেছে। আজ পর্যন্ত সেই একই পুরানো ঘটনা ঘটে চলেছে।
8 “কিন্তু এখন অল্প সময়ের জন্য তুমি আমাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করেছ। তুমি আমাদের বন্দী ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে কয়েক জনকে এই পবিত্রস্থানে এসে বাস করার সুযোগ করে দিয়েছ। প্রভু, তুমি আমাদের দাসত্ব থেকে এক নতুন জীবন দান করেছ। 9 হ্যাঁ, আমরা দাস ছিলাম, কিন্তু তুমি আমাদের দাস থাকতে দেবে না বলে পারস্যের রাজাদের দয়ালু করে আমাদের প্রতি তোমার অনুগ্রহ প্রকাশ করেছ। তোমার মন্দিরটি যেটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, সেটি গড়বার জন্য তুমি আমাদের নবজীবন দান করেছ। যিহূদা ও জেরুশালেমকে রক্ষার্থে তুমি আমাদের একটি দেওয়াল তুলতে সাহায্য করেছ।
10 “হে ঈশ্বর, তোমাকে আমরা আর কি বলতে পারি? আমরা আবার তোমার প্রতি অবাধ্য হয়েছি। 11 হে ঈশ্বর, তুমি তোমার ভাববাদীদের মাধ্যমে আমাদের আদেশ করেছ: ‘যে ভূখণ্ডতে তোমরা আপনজ্ঞানে থাকতে চলেছ সেটি ধ্বংসাবশেষ মাত্র। এই ভূখণ্ডটি এখানে বসবাসকারী বাসিন্দাদের অসৎ কর্মের জন্য ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। এখানকার বাসিন্দারা এই ভূখণ্ডকে অপবিত্র করেছে। 12 অতএব, ইস্রায়েলের লোকরা, তোমরা যেন তোমাদের সন্তান-সন্ততিদের ওই সব লোকদের সন্তান-সন্ততিকে বিয়ে করতে দিও না। ওদের সঙ্গে কথাও বলো না। আমার আদেশ শুনলে তোমরা বলিষ্ঠ হয়ে উঠবে এবং এই ভূখণ্ডের যাবতীয় ভালো জিনিষ উপভোগ করতে পারবে এবং তোমাদের সন্তান-সন্ততিদের হাতে এই ভূখণ্ডটি তুলে দিতে পারবে।’
13 “আমরা নিজেরাই এই অবস্থার জন্য দায়ী। আমরা পাপ আচরণ করেছি এবং আমরা অপরিসীম দোষী। কিন্তু তুমি আমাদের অনেক কম দণ্ডে দণ্ডিত করেছ। আমাদের অনেক মারাত্মক পাপের জন্য আমাদের খুব কঠিন শাস্তি প্রাপ্য ছিল। তা সত্ত্বেও তুমি আমাদের কয়েক জনকে বন্দীদশা থেকে মুক্তি দিয়েছ। 14 অতএব তোমার আদেশ আমাদের অমান্য করা উচিৎ নয়। আমাদের ওই সমস্ত লোকদের সঙ্গে অন্তর্বিবাহ করা উচিৎ নয় যারা খারাপ কাজ করে। আমরা জানি যে আমরা যদি ওদের সঙ্গে বিবাহ সম্পর্ক চালিয়ে যাই, তাহলে, হে ঈশ্বর, তুমি আমাদের ওপর খুব রেগে যাবে এবং যতদিন না সমস্ত ইস্রায়েলীয় নির্বংশ হবে তত দিন আমাদের ধ্বংস করবে।
15 “হে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তুমি এত ভালো যে আমরা এত দোষ করা সত্ত্বেও তুমি আমাদের কয়েক জনকে বেঁচে থাকতে দিয়েছ। আমরা দোষী, তাই সে কারণে আমাদের কারোরই তোমার সামনে দাঁড়াবার কথা নয়।”
শৌলের মন পরিবর্তন
9 এদিকে শৌল জেরুশালেমে যীশুর অনুগামীদের তখনও হত্যার হুমকি দিচ্ছিলেন। তিনি মহাযাজকের কাছে গেলেন। 2 দম্মেশকস্থ সমাজ-গৃহে ইহুদীদের দেবার জন্য মহাযাজকের কাছে চিঠিগুলি চাইলেন, যেন স্ত্রী হোক্ বা পুরুষ হোক্, খ্রীষ্টের অনুগামী এমন কোন লোককে পেলেই গ্রেপ্তার করে জেরুশালেমে নিয়ে আসতে পারেন।
3 তাই শৌল দম্মেশকে রওনা হয়ে গেলেন। যেতে যেতে তিনি যখন দম্মেশকের কাছাকাছি এলেন, সেই সময় হঠাৎ আকাশ থেকে এক উজ্জ্বল আলো তাঁর চারিদিকে চমকে উঠল। 4 তিনি মাটিতে পড়ে গেলেন এবং এক রব শুনতে পেলেন, সেই রব তাঁকে বলছে, “শৌল, শৌল! কেন তুমি আমাকে এত কষ্ট দিচ্ছ?”
5 শৌল বললেন, “প্রভু আপনি কে?”
তিনি বললেন, “আমি যীশু; তুমি যার ক্ষতি করার চেষ্টা করছ। 6 ওঠ, ঐ শহরে যাও আর তোমায় কি করতে হবে তা তোমায় বলা হবে।”
7 যে সব পুরুষ তাঁর সঙ্গে যাচ্ছিল তারা নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। তারা সেই রব শুনতে পেল, কিন্তু কাউকে দেখতে পেল না। 8 শৌল মাটি থেকে উঠলেন, কিন্তু তিনি যখন চোখ খুললেন তখন কিছুই দেখতে পেলেন না। তাই তারা তাঁকে হাত ধরে দম্মেশকে নিয়ে গেল। 9 তিন দিন তিনি সম্পূর্ণ অন্ধ অবস্থায় রইলেন, সেই সময় তিনি অন্ন জল কিছুই মুখে তুললেন না।
10 দম্মেশকে অননিয় নামে একজন খ্রীষ্টের অনুগামী ছিলেন। এক দর্শনের মাধ্যমে প্রভু তাঁকে বললেন, “অননিয়!”
তিনি বললেন, “প্রভু, এই তো আমি।”
11 প্রভু তাকে বললেন, “ওঠ, আর ‘সরল’ নামে রাস্তায় যাও। সেখানে যিহূদার বাড়ীর খোঁজ কর। সেখানে তার্ষ থেকে এসেছে শৌল বলে একজন লোক, তার খোঁজ কর, কারণ সে প্রার্থনা করছে। 12 তার এই দর্শনলাভ হয়েছে যে অননিয় নামে একজন লোক এসে তার ওপর হাত রাখাতে সে আবার তার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছে।”
13 অননিয় বললেন, “প্রভু, আমি অনেক লোকের কাছে এই লোকের বিষয়ে শুনেছি। জেরুশালেমে আপনার পবিত্র লোকদের প্রতি সে যে সব জঘন্য কাজ করেছে তাও আমি শুনেছি। 14 আর এখানে যত লোক আপনাকে বিশ্বাস করে,[a] তাদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাবার জন্য সে প্রধান যাজকদের কাছ থেকে বিশেষ পরোয়ানা নিয়ে এসেছে।”
15 কিন্তু প্রভু তাকে বললেন, “তুমি যাও, কারণ অইহুদীদের কাছে, রাজাদের ও ইস্রায়েলীয়দের কাছে আমার নাম নিয়ে যাবার জন্য আমি তাকে মনোনীত করেছি। 16 আমার নামের জন্য তাকে কত দুঃখভোগ করতে হবে, আমি নিজে তাকে তা দেখিয়ে দেব।”
17 তখন অননিয় যিহূদার বাড়িতে গেলেন। তিনি শৌলের ওপর দুহাত রেখে বললেন, “ভাই শৌল, প্রভু যীশু আমাকে তোমার কাছে পাঠিয়েছেন। এখানে আসার পথে তোমায় তিনি দর্শন দিয়েছিলেন। যীশু তোমার কাছে আমাকে পাঠালেন, যেন তুমি আবার দেখতে পাও আর পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হতে পার।” 18 সঙ্গে সঙ্গে তাঁর চোখ থেকে মাছের আঁশের মত একটা কিছু খসে পড়ল, আর শৌল আবার দেখতে পেলেন। পরে তিনি উঠে গিয়ে বাপ্তিস্ম নিলেন। 19 এরপর কিছু খাওয়া-দাওয়া করে সবল হলেন।
দম্মেশকে শৌলের প্রচার কার্য্য
তিনি কিছুদিন দম্মেশেকে অনুগামীদের সঙ্গে থাকলেন। 20 এরপর তিনি সরাসরি সমাজ-গৃহে গিয়ে যীশুর কথা প্রচার করতে লাগলেন। তিনি বললেন, “এই যীশুই হচ্ছেন ঈশ্বরের পুত্র।”
21 তার কথা শুনে সকলে আশ্চর্য হয়ে গেল। তারা বলল, “একি, সেই লোক নয় যে জেরুশালেমে যাঁরা যীশুর নামে বিশ্বাস করত তাদের ধ্বংস করত? আর এখানে সে যীশুর অনুগামীদের গ্রেপ্তার করে প্রধান যাজকের কাছে নিয়ে যাবার জন্য কি আসে নি?”
22 কিন্তু শৌল ক্রমাগত শক্তিশালী হয়ে উঠলেন, আর দম্মেশকে যে সব ইহুদী বাস করত, শৌল তর্কে তাদের নীরব করে দিলেন, তিনি প্রমাণ দিতে থাকলেন যে যীশুই খ্রীষ্ট।
শৌল ইহুদীদের থেকে মুক্ত
23 বেশ কিছু দিন পর ইহুদীরা শৌলকে হত্যা করার চক্রান্ত করতে লাগল। 24 কিন্তু শৌল তাদের চক্রান্ত জানতে পারলেন। ইহুদীরা তাকে হত্যা করার জন্য শহরের প্রধান ফটকগুলির ওপর দিন রাত নজর রাখতে লাগল। 25 কিন্তু যারা শৌলের কাছ থেকে শিক্ষা পেয়েছিল, তারা শৌলকে শহর ত্যাগ করতে সাহায্য করল। তারা শৌলকে একটা ঝুড়িতে রেখে শহরের প্রাচীরের এক গর্ত দিয়ে ঝুড়িশুদ্ধ শৌলকে বাইরে নামিয়ে দিল।
জেরুশালেমে শৌল
26 এরপর শৌল জেরুশালেমে গেলেন। সেখানে তিনি যীশুর অনুগামীদের সঙ্গে যোগ দিতে চেষ্টা করলেন; কিন্তু তাঁরা সকলে তাঁকে ভয় করলেন। তাঁরা বিশ্বাস করতে চাইলেন না যে তিনি সত্যিকার যীশুর অনুগামী হয়েছেন। 27 কিন্তু বার্ণবা শৌলকে গ্রহণ করে তাঁকে নিয়ে প্রেরিতদের কাছে গেলেন। দম্মেশকের পথে শৌল কিভাবে যীশুর দেখা পেয়েছেন ও প্রভু যীশু যে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আর কিভাবে তিনি দম্মেশকে সাহসের সঙ্গে যীশুর নাম প্রচার করেছেন, সেসব কথা তাদের সবিস্তারে জানালেন।
28 শৌল খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের সঙ্গে জেরুশালেমে থাকতেন, তিনি সেখানে সব জায়গায় গিয়ে সাহসের সঙ্গে প্রভুর নাম প্রচার করতেন। 29 তিনি গ্রীকভাষী ইহুদীদের সঙ্গে তর্ক করেছিলেন বলে তারা তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করতে লাগল। 30 ভাইরা সে কথা জানতে পেরে তাঁকে কৈসরিয়াতে নিয়ে গেলেন ও সেখান থেকে তার্ষে পাঠিয়ে দিলেন।
31 সেই সময় যিহূদিয়া, গালীল ও শমরিয়ায় বিশ্বাসী মণ্ডলীগুলিতে শান্তি বিরাজ করছিল। বিশ্বাসীরা প্রভুর ভয়ে জীবনযাপন করত ও পবিত্র আত্মায় উৎসাহিত হত; এর ফলে দলটি শক্তিশালী হয়ে উঠল এবং ক্রমে ক্রমে সংখ্যায় বৃদ্ধিলাভ করতে লাগল।
যাফোতে পিতর
32 পিতর জেরুশালেমের আশে পাশে বিভিন্ন শহরে ভ্রমণ করতে করতে লুদ্দার খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের কাছে এলেন। 33 লুদ্দায় তিনি ঐনিয় নামে একজন পঙ্গু লোকের দেখা পান; সে আট বছর ধরে পক্ষাঘাতে শয্যাশায়ী ছিল। 34 পিতর তাকে বললেন, “ঐনিয় যীশু তোমায় সুস্থ করেছেন, তুমি ওঠ, বিছানা গুটিয়ে নাও। তুমি নিজেই তা পারবে।” সঙ্গে সঙ্গে ঐনিয় উঠে দাঁড়াল। 35 তখন লুদ্দা ও শারোণের সব লোক তাকে দেখে প্রভুর প্রতি ফিরল ও বিশ্বাসী হল।
36 যাফোতে টাবিথা বা দর্কা যার অর্থ “হরিণী” নামে এক শিষ্য ছিলেন। তিনি সব সময় লোকের উপকার করতেন, বিশেষ করে গরীবদের সাহায্য করতেন। 37 পিতর যখন লুদ্দায় ছিলেন টাবিথা অসুস্থ হয়ে মারা যান; তাই তারা তাঁর দেহ স্নান করিয়ে ওপরের ঘরে শুইয়ে রাখল। 38 লুদ্দা যাফোর কাছাকাছি ছিল। অনুগামীরা যখন শুনলেন যে পিতর লুদ্দায় আছেন, তখন তাঁরা দুজন লোককে সেখানে পাঠিয়ে অনুরোধ করলেন, “যেন পিতর তাড়াতাড়ি করে একবার তাদের ওখানে আসেন!”
39 তখন পিতর প্রস্তুত হয়ে তাদের সঙ্গে চললেন। তিনি সেখানে হাজির হলে তারা তাঁকে ওপরের সেই ঘরে নিয়ে গেল; আর বিধবারা সকলে তাঁর চারদিকে দাঁড়িয়ে কাঁদতে লাগল, দর্কা জীবিত অবস্থায় তাদের সঙ্গে থাকবার সময়ে যেসব পোশাকগুলি তৈরী করেছিলেন তা দেখাতে লাগল। 40 পিতর সকলকে ঘরের বাইরে বার করে দিয়ে হাঁটু গেড়ে প্রার্থনা করলেন। তারপর সেই দেহের দিকে ফিরে তিনি বললেন, “টাবিথা, ওঠ!” তাতে তিনি চোখ খুললেন ও পিতরকে দেখে উঠে বসলেন। 41 তখন পিতর হাত বাড়িয়ে তাঁকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করলেন। এরপর তিনি বিশ্বাসীদের ও সেই বিধবাদের ডেকে তাঁকে জীবিত দেখালেন।
42 এই কথা যাফোর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল আর অনেক লোক প্রভুর ওপর বিশ্বাস করল। 43 পিতর যাফোতে শিমোন নামে এক চামড়া ব্যবসায়ীর ঘরে অনেক দিন রইলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International