M’Cheyne Bible Reading Plan
সপ্তম দিন—বিশ্রাম
2 এইভাবে পৃথিবী, আকাশ এবং তাদের আভ্যন্তরীণ যাবতীয় জিনিস সম্পূর্ণ হল। 2 যে কাজ ঈশ্বর শুরু করেছিলেন তা শেষ করে সপ্তম দিনে তিনি বিশ্রাম নিলেন। 3 সপ্তম দিনটিকে আশীর্বাদ করে ঈশ্বর সেটিকে পবিত্র দিনে পরিণত করলেন। দিনটিকে ঈশ্বর এক বিশেষ দিনে পরিণত করলেন কারণ ঐ দিনটিতে পৃথিবী সৃষ্টির সমস্ত কাজ থেকে তিনি বিশ্রাম নিলেন।
মানব জাতির শুরু
4 এই হল আকাশ ও পৃথিবীর ইতিহাস। ঈশ্বর যখন পৃথিবী ও আকাশ সৃষ্টি করেছিলেন, তখন যা কিছু ঘটেছিল এটা তারই গল্প। 5 পৃথিবীতে তখন কোন গাছপালা ছিল না। মাঠে তখন কিছুই জন্মাতো না। কারণ প্রভু তখনও পৃথিবীতে বৃষ্টি পাঠান নি এবং ক্ষেতে চাষবাস করার জন্য তখন কেউ ছিল না।
6 পৃথিবী থেকে জল[a] উঠে চারপাশের জমিতে ছড়িয়ে পড়ল। 7 তখন প্রভু ঈশ্বর মাটি থেকে ধুলো তুলে নিয়ে একজন মানুষ তৈরী করলেন এবং সেই মানুষের নাকে ফুঁ দিয়ে প্রাণবায়ু প্রবেশ করালেন এবং মানুষটি জীবন্ত হয়ে উঠল। 8 তখন প্রভু ঈশ্বর পূর্বদিকে একটি বাগান বানালেন আর সেই বাগানটির নাম দিলেন এদন এবং প্রভু ঈশ্বর তাঁর সৃষ্টি করা মানুষটিকে সেই বাগানে রাখলেন। 9 এবং সেই বাগানে প্রভু ঈশ্বর সবরকমের সুন্দর বৃক্ষ এবং খাদ্যোপযোগী ফল দেয় এমন প্রতিটি বৃক্ষ রোপণ করলেন। বাগানের মাঝখানটিতে প্রভু ঈশ্বর রোপণ করলেন জীবন বৃক্ষটি যা ভাল এবং মন্দ বিষয়ে জ্ঞান দেয়।
10 এদন হতে এক নদী প্রবাহিত হয়ে সেই বাগান জলসিক্ত করল। তারপর সেই নদী বিভক্ত হয়ে চারটি ছোট ছোট ধারায় পরিণত হল। 11 প্রথম ধারাটির নাম পীশোন। এই নদী ধারা পুরো হবীলা দেশটিকে ঘিরে প্রবাহিত। 12 (সে দেশে সোনা রয়েছে আর তা উঁচু মানের। এছাড়া এই দেশে গন্ধদ্রব্য, গুগ্গুল আর মূল্যবান গোমেদকমণি পাওয়া যায়।) 13 দ্বিতীয় নদীর নাম গীহোন, এই নদীটি সমস্ত কুশ দেশটিকে ঘিরে প্রবাহিত। 14 তৃতীয় নদীটির নাম হিদ্দেকল। এই নদী অশূরিয়া দেশের পূর্ব দিকে প্রবাহিত। চতুর্থ নদীটির নাম ফরাৎ।
15 কৃষিকাজ আর বাগানের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রভু ঈশ্বর মানুষটিকে এদন বাগানে রাখলেন। 16 প্রভু ঈশ্বর মানুষটিকে এই আদেশ দিলেন, “বাগানের যে কোনও বৃক্ষের ফল তুমি খেতে পারো। 17 কিন্তু যে বৃক্ষ ভালো আর মন্দ বিষয়ে জ্ঞান দেয় সেই বৃক্ষের ফল কখনও খেও না। যদি তুমি সেই বৃক্ষের ফল খাও, তোমার মৃত্যু হবে!”
প্রথম নারী
18 তারপরে প্রভু ঈশ্বর বললেন, “মানুষের নিঃসঙ্গ থাকা ভালো নয়। আমি ওকে সাহায্য করার জন্যে ওর মত আর একটি মানুষ তৈরী করব।”
19 প্রভু ঈশ্বর পৃথিবীর ওপরে সমস্ত পশু আর আকাশের সমস্ত পাখী তৈরী করবার জন্য মৃত্তিকার ধূলি ব্যবহার করেছিলেন। প্রভু ঈশ্বর ঐ সমস্ত পশুপাখীকে মানুষটির কাছে নিয়ে এলেন আর মানুষটি তাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা নাম দিল। 20 মানুষটি সমস্ত গৃহপালিত পশু, আকাশের সমস্ত পাখীর এবং অরণ্যের সমস্ত বন্য প্রাণীর নামকরণ করল। মানুষটি অসংখ্য পশু পাখী দেখল কিন্তু সে তার যোগ্য সাহায্যকারী কাউকে দেখতে পেল না। 21 তখন প্রভু ঈশ্বর সেই মানুষটিকে খুব গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন করলেন। মানুষটি যখন ঘুমোচ্ছিল তখন প্রভু ঈশ্বর তার পাঁজরের একটা হাড় বার করে নিলেন। তারপর প্রভু ঈশ্বর যেখান থেকে হাড়টি বার করেছিলেন সেখানটা চামড়া দিয়ে ঢেকে দিলেন। 22 প্রভু ঈশ্বর মানুষটির পাঁজরের সেই হাড় দিয়ে তৈরি করলেন একজন স্ত্রী। তখন সেই স্ত্রীকে প্রভু ঈশ্বর মানুষটির সামনে নিয়ে এলেন। 23 এবং সেই মানুষটি বলল,
“অবশেষে আমার সদৃশ একজন হল।
আমার পাঁজরা থেকে তার হাড়,
আর আমার শরীর থেকে তার দেহ তৈরী হয়েছে।
যেহেতু নর থেকে তার সৃষ্টি হয়েছে,
সেহেতু ‘নারী’ বলে এর পরিচয় হবে।”
24 এইজন্য পুরুষ পিতামাতাকে ত্যাগ করে স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয় এবং এইভাবে দুজনে এক হয়ে যায়।
25 তখন নর-নারী উলঙ্গ ছিল, কিন্তু সেজন্যে তাদের কোন লজ্জাবোধ ছিল না।
পণ্ডিতরা যীশুকে দেখতে আসলেন
2 হেরোদ যখন রাজা ছিলেন, সেই সময় যিহূদিয়ার বৈৎলেহমে যীশুর জন্ম হয়। সেই সময় প্রাচ্য থেকে কয়েকজন পণ্ডিত জেরুশালেমে এসে যীশুর খোঁজ করতে লাগলেন। 2 তাঁরা এসে জিজ্ঞেস করলেন, “ইহুদীদের যে নতুন রাজা জন্মেছেন তিনি কোথায়? কারণ পূর্ব দিকে আকাশে আমরা তাঁর তারা দেখে তাঁকে প্রণাম জানাতে এসেছি।”
3 রাজা হেরোদ একথা শুনে খুব বিচলিত হলেন এবং তাঁর সঙ্গে জেরুশালেমের সব লোক বিচলিত হল। 4 তখন তিনি ইহুদীদের মধ্যে যাঁরা প্রধান যাজক ও ব্যবস্থার শিক্ষক ছিলেন, তাঁদের ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, “মশীহ (খ্রীষ্ট) কোথায় জন্মগ্রহণ করবেন?” 5 তাঁরা হেরোদকে বললেন, “যিহূদিয়া প্রদেশের বৈৎলেহমে, কারণ ভাববাদী সেরকমই লিখে গেছেন:
6 ‘আর তুমি যিহূদা প্রদেশের বৈৎলেহম,
তুমি যিহূদার শাসনকর্তাদের চোখে কোন অংশে নগন্য নও,
কারণ তোমার মধ্য থেকে একজন শাসনকর্তা উঠবেন
যিনি আমার প্রজা ইস্রায়েলকে চরাবেন।’”(A)
7 তখন হেরোদ সেই পণ্ডিতদের সঙ্গে একান্তে দেখা করার জন্য তাঁদের ডেকে পাঠালেন। তিনি তাঁদের কাছ থেকে জেনে নিলেন ঠিক কোন সময় তারাটা দেখা গিয়েছিল। 8 এরপর হেরোদ তাদের বৈৎলেহমে পাঠিয়ে দিলেন আর বললেন, “দেখ, তোমরা সেখানে গিয়ে ভাল করে সেই শিশুর খোঁজ কর; আর খোঁজ পেলে, আমাকে জানিয়ে যেও, যেন আমিও সেখানে গিয়ে তাঁকে প্রণাম করতে পারি।”
9 তাঁরা রাজার কথা শুনে রওনা দিলেন। তাঁরা পূর্ব দিকে আকাশে যে তারাটা উঠতে দেখেছিলেন, সেটা তাঁদের আগে আগে চলল এবং শিশুটি যেখানে ছিলেন তার ওপরে থামল। 10 তাঁরা সেই তারাটি দেখে আনন্দে আত্মহারা হলেন।
11 পরে সেই ঘরের মধ্যে ঢুকে শিশুটি ও তাঁর মা মরিয়মকে দেখতে পেয়ে তাঁরা মাথা নত করে তাঁকে প্রণাম করলেন ও তাঁর উপাসনা করলেন। তারপর তাঁদের উপহার সামগ্রী খুলে বের করে তাঁকে সোনা, সুগন্ধি গুগ্গুল ও সুগন্ধি নির্যাস উপহার দিলেন। 12 এরপর ঈশ্বর স্বপ্নে তাঁদের সাবধান করে দিলেন যেন তাঁরা হেরোদের কাছে ফিরে না যান, তাই তাঁরা অন্য পথে নিজেদের দেশে ফিরে গেলেন।
যীশুকে নিয়ে পিতামাতার মিশরে গমন
13 তাঁরা চলে যাবার পর প্রভুর এক দূত স্বপ্নে যোষেফকে দেখা দিয়ে বললেন, “ওঠো! শিশুটি ও তাঁর মাকে নিয়ে মিশরে পালিয়ে যাও। যতদিন না আমি তোমাদের বলি, তোমরা সেখানেই থেকো, কারণ এই শিশুটিকে মেরে ফেলার জন্য হেরোদ এর খোঁজ করবে।”
14 তখন যোষেফ উঠে সেই শিশু ও তাঁর মাকে নিয়ে রাতে মিশরে রওনা হলেন। 15 আর হেরোদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকলেন। এরূপ ঘটল যাতে ভাববাদীর মাধ্যমে প্রভুর কথা সফল হয়; প্রভু বললেন, “আমি মিশর থেকে আমার পুত্রকে ডেকে আনলাম।”(B)
হেরোদ বৈৎলেহমের শিশু পুত্রদের হত্যা করলেন
16 হেরোদ যখন দেখলেন যে সেই পণ্ডিতরা তাঁকে বোকা বানিয়েছে, তখন তিনি প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন। তিনি সেই পণ্ডিতদের কাছ থেকে যে সময়ের কথা জেনেছিলেন, সেই হিসাব মতো দু’বছর ও তার কম বয়সের যত ছেলে বৈৎলেহম ও তার আশেপাশের অঞ্চলে ছিল, সকলকে হত্যা করার হুকুম দিলেন। 17 এর ফলে ভাববাদী যিরমিয়র মাধ্যমে ঈশ্বর যে কথা বলেছিলেন তা পূর্ণ হল:
18 “রামায় একটা শব্দ শোনা গেল,
কান্নার রোল ও তীব্র হাহাকার,
রাহেল তাঁর সন্তানদের জন্য কাঁদছেন।
তিনি কিছুতেই শান্ত হতে চাইছেন না, কারণ তারা কেউ আর বেঁচে নেই।”(C)
মিশর থেকে যোষেফ ও মরিয়মের প্রত্যাবর্তন
19 হেরোদ মারা যাবার পর প্রভুর এক দূত মিশরে যোষেফকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে বললেন, 20 “ওঠো! এই শিশু ও তাঁর মাকে সঙ্গে নিয়ে ইস্রায়েল দেশে ফিরে যাও, কারণ যারা এই ছেলের প্রাণ নাশের চেষ্টা করেছিল তারা সকলে মারা গেছে।”
21 তখন যোষেফ উঠে সেই শিশু ও তাঁর মাকে নিয়ে ইস্রায়েল দেশে গেলেন। 22 কিন্তু যোষেফ যখন শুনলেন যে হেরোদের জায়গায় তাঁর পুত্র আর্খিলায় যিহূদিয়ার রাজা হয়েছে, তখন তিনি সেখানে ফিরে যেতে ভয় পেলেন। পরে আর এক স্বপ্নে তাঁকে সাবধান করে দেওয়া হল, 23 তখন তিনি গালীলে ফিরে নাসরৎ নগরে বসবাস করতে লাগলেন। এই রকম ঘটল যেন ভাববাদীর মাধ্যমে ঈশ্বর যা বলেছিলেন তা পূর্ণ হয়: তিনি নাসরতীয়[a] বলে আখ্যাত হলেন।
ফিরে আসা বন্দীদের তালিকা
2 বাবিলের রাজা নবূখদ্নিৎসর যাদের বন্দী করেছিলেন, তারা জেরুশালেম এবং যিহূদায় যে যার নিজের নগরে ফিরে গেল। 2 এরা সকলে সরুব্বাবিল, যেশূয়, নহিমিয়, সরায়, রিয়েলায়, মর্দখয়, বিলশন, মিস্পর, বিগরয়, রহূম ও বানাদের সঙ্গে প্রত্যাবর্তন করল। যারা ইস্রায়েলে ফিরেছিল তাদের তালিকাটি নিম্নরূপ:
3 পরোশের উত্তরপুরুষ | 2172 |
4 শফটিয়ের উত্তরপুরুষ | 372 |
5 আরহের উত্তরপুরুষ | 775 |
6 যেশূয় এবং যোয়াব পরিবারের পহৎ-মোয়াবের উত্তরপুরুষ | 2812 |
7 এলমের উত্তরপুরুষ | 1254 |
8 সত্তূর উত্তরপুরুষ | 945 |
9 সক্কয়ের উত্তরপুরুষ | 760 |
10 বানির উত্তরপুরুষ | 642 |
11 বেবয়ের উত্তরপুরুষ | 623 |
12 অসগদের উত্তরপুরুষ | 1222 |
13 অদোনীকামের উত্তরপুরুষ | 666 |
14 বিগবয়ের উত্তরপুরুষ | 2056 |
15 আদীনের উত্তরপুরুষ | 454 |
16 যিহিষ্কিয়ের বংশজাত আটেরের উত্তরপুরুষ | 98 |
17 বেৎসয়ের উত্তরপুরুষ | 323 |
18 যোরাহের উত্তরপুরুষ | 112 |
19 হশুমের উত্তরপুরুষ | 223 |
20 গিব্বরের উত্তরপুরুষ | 95 |
21 বৈৎলেহেম শহরের | 123 |
22 নটোফা শহরের | 56 |
23 অনাথোত শহরের | 128 |
24 অস্মাবত শহরের | 42 |
25 কিরিয়ৎ-আরীম, কফীরা ও বেরোত শহরের | 743 |
26 রামা ও গেবা শহরের | 621 |
27 মিকমস শহরের | 122 |
28 বৈথেল ও অয় শহরের | 223 |
29 নবো শহরের | 52 |
30 মগবীশ শহরের | 156 |
31 এলম নামে একটি শহরের | 1254 |
32 হারীম শহরের | 320 |
33 লোদ, হাদীদ ও ওনো শহরের | 725 |
34 যিরিহো শহরের | 345 |
35 সনায়া শহরের | 3630 |
36 যাজকদের মধ্যে ছিলেন:
যেশূয় পরিবারের যিদয়িয়ের উত্তরপুরুষ | 973 |
37 ইম্মেরের উত্তরপুরুষ | 1052 |
38 পশহূরের উত্তরপুরুষ | 1247 |
39 হারীমের উত্তরপুরুষ | 1017 |
40 লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর লোকদের মধ্যে যারা ছিল তারা হল:
হোদবিয়ের পরিবারের মাধ্যমে যেশূয় ও কদমীয়েলের উত্তরপুরুষ | 74 |
41 এরা হল গায়ক বৃন্দ:
আসফের উত্তরপুরুষ | 128 |
42 মন্দিরের দ্বারপালের উত্তরপুরুষের মধ্যে
শল্লূম, আটের, টলমোন, অক্কূব, হটীটা এবং শোবয়ের উত্তরপুরুষের | 139 |
43 মন্দিরের সেবা-দাসদের উত্তরপুরুষের মধ্যে ছিলেন:
সীহ, হসূফা ও টব্বায়োতের উত্তরপুরুষরা,
44 কেরোস, সীয় ও পাদোনের সন্তানরা,
45 লবানা, হগাব ও অক্কূবের সন্তানরা,
46 হাগব, শল্ময় ও হাননের সন্তানরা,
47 গিদ্দেল, গহর ও রায়ার সন্তানরা,
48 রৎসীন, নকোদর ও গসমের সন্তানরা,
49 উষ, পাসেহ ও বেষয়ের সন্তানরা,
50 অস্না, মিয়ূনীম ও নফূষীমের সন্তানরা,
51 বক্বূক, হকূফার ও হর্হূরের সন্তানরা,
52 বসলূত, মহীদা ও হর্শার সন্তানরা,
53 বর্কোস, সীষরা ও তেমহের সন্তানরা,
54 নৎসীহ ও হটীফার সন্তানরা।
55 শলোমনের ভৃত্যদের উত্তরপুরুষরা ছিল:
সোটয়, হসসোফেরত ও পরূদা।
56 যালা, দর্কোন ও গিদ্দেল,
57 শফটিয়, হটীল, পোখেরৎ-হৎসবায়ীমের এবং আমীর সন্তানগণ।
58 মন্দিরের সেবা-দাসরা এবং শলোমনের ভৃত্যদের উত্তরপুরুষরা | 392 |
59 তেল্-মেলহ, তেল হর্শা, করূব, অদ্দন ও ইম্মের নগর থেকে জেরুশালেমে এসেছিল নিম্নলিখিত ব্যক্তিরা, কিন্তু তারা ইস্রায়েলের পরিবারবর্গের পরিবার ছিল কিনা তা প্রমাণ করতে পারল না।
60 দলায়, টোবিয় ও নকোদের উত্তরপুরুষ | 652 |
61 হবায়, হক্কোস ও বর্সিল্লয় যাজক পরিবারের উত্তরপুরুষ।
(যদি কোন পুরুষ গিলিয়দের বর্সিল্লয় কন্যাকে বিয়ে করত, তাহলে সেই পুরুষটিকে বলা হত বর্সিল্লয়ের উত্তরপুরুষ।)
62 এরা সকলেই তাদের পরিবারের ইতিহাস স্থাপন করবার চেষ্টা করল। যেহেতু যাজক তালিকায় এদের পূর্বপুরুষদের নামোল্লেখ ছিল না, সেহেতু তাদের পূর্বপুরুষরা সত্যিই যাজক ছিলেন কিনা তা তারা প্রমাণ করতে পারল না। তাই তারাও যাজক হিসেবে কাজ করবার অনুমতি পেল না। 63 রাজ্যপাল তাদের আদেশ দিলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না একজন যাজক ঊরীম এবং তুম্মীম দ্বারা ঈশ্বরের সিদ্ধান্ত না জানাতে পারে ততক্ষণ তারা যেন পবিত্র খাদ্য গ্রহণ না করে।
64-65 যারা ফিরে এল তাদের মধ্যে 42,360 জন ব্যক্তি ছিল। এছাড়াও তাদের সঙ্গে ছিল 7337 জন পুরুষ ও নারী ভৃত্য, 200 জন গায়ক ও গায়িকা। 66-67 তাদের 736টি ঘোড়া, 245টি খচ্চর, 435টি উট ও 6720টি গাধা ছিল।
68 তারা যখন জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরে এসে পৌঁছল তখন পরিবারের কর্তারা, প্রভুর মন্দির নির্মাণের জন্য উপহারগুলি দান করলেন। 69 এই উপহারের মধ্যে ছিল 1100 পাউণ্ড সোনা, 3 টন রূপো ও যাজকদের পরিবারের জন্য 100টি অঙ্গরক্ষক বস্ত্র। আগে যেখানে প্রভুর মন্দিরটি ছিল সেইখানেই তারা মন্দিরটি নির্মাণ করবে।
70 এই কাজের জন্য যাজকগণ, লেবীয় ও অন্যান্য ব্যক্তিরা জেরুশালেমের কাছাকাছি অঞ্চলে বসতি স্থাপন করল। এই দলের মধ্যে মন্দিরের দ্বাররক্ষী, গায়কবর্গ, ও সেবাদাসরা ছিল। ইস্রায়েলের অন্যান্য ব্যক্তিরা তাদের নিজ নিজ শহরে বাসা বাঁধলো।
পবিত্র আত্মার আগমন
2 এরপর পঞ্চাশত্তমীর দিনটি এল, সেই দিনটিতে প্রেরিতরা সকলে একই জায়গায় সমবেত ছিলেন। 2 সেই সময় হঠাৎ আকাশ থেকে ঝোড়ো হাওযার শব্দের মত প্রচণ্ড একটা শব্দ শোনা গেল আর যে ঘরে তাঁরা বসেছিলেন, সেই ঘরের সর্বত্র তা ছড়িয়ে গেল। 3 তাঁরা তাঁদের সামনে আগুনের শিখার মতো কিছু দেখতে পেলেন। সেই শিখাগুলি তাদের উপর ছড়িয়ে পড়ল ও পৃথক পৃথক ভাবে তাঁদের প্রত্যেকের উপর বসল। 4 তাঁরা পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হলেন আর ভিন্ন ভাষায় কথা বলতে লাগলেন। পবিত্র আত্মাই তাঁদের এইভাবে কথা বলার শক্তি দিলেন।
5 সেই সময় প্রত্যেক জাতির থেকে ধার্মিক ইহুদীরা এসে জেরুশালেমে বাস করছিল। 6 সেই শব্দ শুনে বহুলোক সেখানে এসে জড়ো হল। তারা সকলে হতবাক হয়ে গেল, কারণ প্রত্যেকে তাদের নিজের নিজের ভাষায় প্রেরিতদের কথা বলতে শুনছিল।
7 এতে তারা আশ্চর্য হয়ে পরস্পর বলতে লাগল, “দেখ! এই যে লোকরা কথা বলছে, এরা সকলে গালীলের লোক নয় কি! 8 তবে আমরা কেমন করে ওদের প্রত্যেককে আমাদের নিজের নিজের মাতৃভাষায় কথা বলতে শুনছি? 9 এখানে আমরা যারা আছি, আমরা ভিন্ন ভিন্ন দেশের লোক; পার্থীয়, মাদীয়, এলমীয়, মিসপতামিয়া, যিহূদিয়া, কাপ্পাদকিয়া, পন্ত, আশিয়া, ফরুগিয়া, পাম্ফুলিয়া ও মিশর, 10 কুরীনীর লুবিয়ার কাছে কিছু অঞ্চলের লোক, রোম থেকে এসেছে এমন অনেক লোক এবং ইহুদী বা ইহুদী ধর্মে দীক্ষিত অনেকে। 11 ক্রীতীয় ও আরবীয় আমরা সকলেই আমাদের মাতৃভাষায় ঈশ্বরের মহাপরাক্রান্ত কাজের বর্ণনা এদের মুখে শুনেছি।”
12 তারা হতবুদ্ধি হয়ে বিস্ময়ের সঙ্গে পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, “এর অর্থ কি?” 13 কিন্তু অন্য লোকেরা বিদ্রূপের ভঙ্গীতে বলতে লাগল, “ওরা দ্রাক্ষারস পান করে মাতাল হয়েছে।”
পিতরের বক্তব্য
14 তখন পিতর ঐ এগারো জন প্রেরিতের সঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে জোর গলায় তাঁদের উদ্দেশ্যে বললেন, “হে আমার ইহুদী ভাইরা, আজ জেরুশালেমে যত লোক বাস করেন তাঁদের সকলের উদ্দেশ্যে বলছি, আপনাদের এর অর্থ জানা দরকার। 15 আপনারা যা মনে করছেন তা নয়, এই লোকেরা কেউ মাতাল নয়, কারণ এখন মাত্র সকাল ন’টা। 16 কিন্তু ভাববাদী যোয়েল এবিষয়েই বলেছেন,
17 ‘ঈশ্বর বলছেন: শেষের দিনগুলিতে এরকমই হবে;
শেষকালে আমি সকল লোকের উপরে আমার আত্মা ঢেলে দেব,
তাতে তোমাদের ছেলেমেয়েরা ভাববাণী বলবে,
তোমাদের যুবকরা দর্শন পাবে,
আর তোমাদের বৃদ্ধ লোকরা স্বপ্ন দেখবে।
18 হ্যাঁ, আমি আমার সেবকদের,
স্ত্রী ও পুরুষ সকলের উপরে আমার আত্মা ঢেলে দেব,
আর তারা ভাববানী বলবে।
19 আমি উর্দ্ধে আকাশে বিস্ময়কর সব লক্ষণ দেখাবো
ও নীচে পৃথিবীতে নানা অদ্ভুত চিহ্ন,
রক্ত, আগুন ও ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখাবো।
20 প্রভুর সেই মহান ও মহিমাময় দিন আসার আগে,
সূর্য্য কালো ও চাঁদ রক্তের মতো লাল হয়ে যাবে।
21 আর যে কেউ প্রভুর নামে ডাকবে, সে উদ্ধার পাবে।’(A)
22 “হে ইহুদী ভাইরা, একথা শুনুন: নাসরতীয় যীশুর দ্বারা ঈশ্বর বহু অলৌকিক ও আশ্চর্য কাজ করে আপনাদের কাছে প্রমাণ দিয়েছেন যে তিনি সেই ব্যক্তি যাঁকে ঈশ্বর পাঠিয়েছেন; আর আপনারা এই ঘটনাগুলি জানেন। 23 যীশুকে আপনাদের হাতে সঁপে দেওয়া হল, আর আপনারা তাঁকে হত্যা করলেন। মন্দ লোকদের দিয়ে আপনারা তাঁকে ক্রুশের উপর পেরেক বিদ্ধ করলেন। ঈশ্বর জানতেন যে এসব ঘটবে; আর তাই ছিল ঈশ্বরের পরিকল্পনা, যা তিনি বহুপূর্বেই নিরূপণ করেছিলেন। 24 যীশু মৃত্যু যন্ত্রণা ভোগ করলেন, কিন্তু ঈশ্বর সেই বিভীষিকা থেকে তাঁকে উদ্ধার করলেন। ঈশ্বর যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে তুলে আনলেন। মৃত্যু যীশুকে তার কবলে রাখতে সক্ষম হল না। 25 কারণ দায়ূদ যীশুর বিষয়ে বলেছিলেন:
‘আমি প্রভুকে সবসময়ই আমার সামনে দেখেছি;
আমাকে স্থির রাখতে তিনি আমার ডানদিকে অবস্থান করছেন।
26 এইজন্য আমার অন্তর আনন্দিত,
আর আমার জিভ উল্লাস করে।
আমার এই দেহও প্রত্যাশায় জীবিত থাকবে।
27 কারণ তুমি তোমার প্রাণ মৃত্যুলোকে পরিত্যাগ করবে না।
তুমি তোমার পবিত্র ব্যক্তিকে ভয় পেতে দেবে না।
28 তোমার সান্নিধ্যে আমার জীবন
তুমি আনন্দে ভরিয়ে দেবে।’(B)
29 “আমার ভাইরা, আমাদের সেই শ্রদ্ধেয় পূর্বপুরুষ দায়ূদের বিষয়ে আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি যে, তিনি মারা গেছেন ও তাঁকে কবর দেওয়া হয়েছে, আর আজও তাঁর কবর আমাদের মাঝে আছে। 30 কিন্তু তিনি একজন ভাববাদী ছিলেন এবং জানতেন ঈশ্বর শপথ করে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, তাঁর বংশের একজনকে তাঁরই মতো রাজা করে সিংহাসনে বসাবেন।[a] 31 পরে কি হবে তা আগেই জানতে পেরে দায়ূদ যীশুর পুনরুত্থানের বিষয়ে বলেছিলেন:
‘তাঁকে মৃত্যুলোকে পরিত্যাগ করা হয় নি
বা তাঁর দেহ কবরের মধ্যে ক্ষয় প্রাপ্ত হয় নি।’
32 কিন্তু ঈশ্বর মৃত্যুর পর যীশুকেই পুনরুত্থিত করেছেন; আর আমরা সকলে এই ঘটনার সাক্ষী আছি। আমরা সকলে তাঁকে দেখেছি। 33 যীশুকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হল; এখন যীশু ঈশ্বরের কাছে তাঁর ডানদিকে অবস্থান করছেন। পিতা যীশুকে পবিত্র আত্মা দিয়েছেন, পিতা তাঁকে সেই পবিত্র আত্মা দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এখন যীশু সেই পবিত্র আত্মাকে ঢেলে দিলেন, তোমরা এখন তাই দেখছ ও শুনছ। 34 কারণ দায়ূদ স্বর্গারোহন করেন নি, আর তিনি নিজে একথা বলছেন,
‘প্রভু ঈশ্বর আমার প্রভুকে বলছেন;
35 যে পর্যন্ত না আমি তোমার শত্রুদের তোমার পা রাখার জায়গায় পরিণত করি,
তুমি আমার ডানদিকে বস।’(C)
36 “তাই ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবার নিশ্চিতভাবে জানুক যে যাকে আপনারা ক্রুশবিদ্ধ করেছিলেন, সেই যীশুকেই ঈশ্বর প্রভু ও খ্রীষ্ট উভয়ই করেছেন।”
37 লোকেরা এই কথা শুনে খুবই দুঃখিত হল। তারা পিতর ও অন্যান্য প্রেরিতদের বলল, “ভাইরা, আমরা কি করব?”
38 পিতর তাঁদের বললেন, “আপনারা মন-ফিরান, আর প্রত্যেকে পাপের ক্ষমার জন্য যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তাইজ হোন, তাহলে আপনারা দানরূপে এই পবিত্র আত্মা পাবেন। 39 কারণ এই প্রতিশ্রুতি আপনাদের জন্য, আপনাদের সন্তানদের জন্য আর যারা দূরে আছে তাদেরও জন্য। আমাদের ঈশ্বর প্রভু তাঁর নিজের কাছে যাদের ডেকেছেন, এই দান তাদের সকলের জন্য।”
40 পিতর তাঁদের আরো অনেক কথা বলে সাবধান করে দিলেন; তিনি তাঁদের অনুনয়ের সুরে বললেন, “বর্তমান কালের মন্দ লোকদের থেকে নিজেদের বাঁচান!” 41 যাঁরা পিতরের কথা গ্রহণ করলেন, তাঁরা বাপ্তিস্ম নিলেন। এর ফলে সেদিন কম বেশী তিন হাজার লোক খ্রীষ্টবিশ্বাসীবর্গের সঙ্গে যুক্ত হলেন।
বিশ্বাসীবর্গের সহভাগীতা
42 বিশ্বাসীরা প্রায়ই একত্র হয়ে মনোযোগের সঙ্গে প্রেরিতদের শিক্ষা গ্রহণ করতেন। বিশ্বাসীবর্গ নিজেদের মধ্যে সব কিছু ভাগ করে নিতেন এবং একই সঙ্গে আহার ও প্রার্থনা করতেন। 43 প্রেরিতেরা অনেক অলৌকিক ও আশ্চর্য কাজ করতে লাগলেন; প্রত্যেকের অন্তরে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে গভীর ভক্তি ছিল। 44 বিশ্বাসীরা সকলে একসঙ্গে থাকতেন এবং সবকিছু নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিতেন। 45 তাঁরা তাঁদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে, যাঁর যেমন প্রয়োজন সেই অনুসারে ভাগ করে নিতেন। 46 তাঁরা প্রতিদিন মন্দির প্রাঙ্গণে গিয়ে একত্রিত হতেন, একই উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে তাঁরা সেখানে যেতেন। তাঁরা তাঁদের বাড়িতে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করতেন আর ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে আনন্দের সঙ্গে খাদ্য গ্রহণ করতেন। 47 বিশ্বাসীরা ঈশ্বরের প্রশংসা করতেন, আর সকলেই তাঁদের ভালোবাসতেন। প্রতিদিন অনেকে উদ্ধার লাভ করছিলেন আর যাঁরা উদ্ধার লাভ করছিলেন তাদেরকে প্রভু বিশ্বাসীবর্গের সঙ্গে যুক্ত করতে থাকলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International