M’Cheyne Bible Reading Plan
লোকেরা মন্দ হলো
6 1-4 পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা ক্রমশঃ বেড়ে চলল। অনেকের অনেক কন্যা হল। ঈশ্বরের পুত্ররা দেখল যে তারা সুন্দরী। সুতরাং ঈশ্বরের পুত্ররা যার যাকে পছন্দ সে তাকে বিয়ে করল। এই নারীরা সন্তানের জন্ম দিল।
তখন প্রভু বললেন, “মানুষ নেহাতই রক্তমাংসের জীব মাত্র। ওদের দ্বারা আমি আমার আত্মাকে চিরকাল পীড়িত হতে দেব না। আমি ওদের 120 বছর করে আয়ু দেব।”
সেই সময় এবং পরবর্তীকালে পৃথিবীতে নেফিলিম জাতীয় মানুষরা বাস করত। প্রাচীনকাল থেকেই নেফিলিমরা মহাবীররূপে বিখ্যাত ছিল।
5 প্রভু দেখলেন যে পৃথিবীতে লোকে শুধু মন্দ কাজই করছে। তিনি দেখলেন যে লোক সারাক্ষণ মন্দ জিনিসের কথাই চিন্তা করছে। 6 পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টি করার জন্যে প্রভুর অনুশোচনা হল এবং তাঁর হৃদয় বেদনায় পূর্ণ হল। 7 তাই তিনি বললেন, “পৃথিবীতে যত মানুষ সৃষ্টি করেছি সবাইকে আমি ধ্বংস করব। প্রত্যেক মানুষ, প্রত্যেক জানোয়ার এবং পৃথিবীর উপরে যা কিছু চলে ফিরে বেড়ায় সব কিছুকে আমি ধ্বংস করব। বাতাসে যত পাখী ওড়ে সেগুলোকেও আমি ধ্বংস করব। কেন? কারণ এই সবকিছু সৃষ্টি করেছি বলে আমি দুঃখিত।”
8 পৃথিবীতে শুধু একজন মানুষের প্রতি প্রভু সন্তুষ্ট ছিলেন, সে হল নোহ।
নোহ ও জলপ্লাবন
9 এই হল নোহের পরিবারের বৃত্তান্ত। নোহ তাঁর প্রজন্মের একজন ভাল ও সৎ মানুষ ছিলেন এবং তিনি সর্বদা ঈশ্বরকে অনুসরণ করতেন। 10 নোহের তিন পুত্র ছিল: শেম, হাম আর যেফৎ।
11-12 ঈশ্বর নীচে পৃথিবীর দিকে দৃষ্টিপাত করলেন এবং দেখলেন যে মানুষ তা ধ্বংস করেছে। সর্বত্র হিংসাত্মক ক্রিয়াকলাপ। মানুষ দুষ্ট এবং নিষ্ঠুর হয়ে গেছে এবং নিজেদের জীবন নষ্ট করেছে।
13 তাই ঈশ্বর নোহকে বললেন, “সমস্ত লোক ক্রোধ আর হিংসা দিয়ে পৃথিবী পরিপূর্ণ করেছে। তাই আমি সমস্ত জীবন্ত প্রাণীদের ধ্বংস করব। পৃথিবী থেকে সব কিছু মুছে ফেলব। 14 গোফর কাঠ দিয়ে একটা নৌকা বানাও। নৌকোর ভেতরে অনেকগুলি কক্ষ তৈরী করবে এবং কাঠ সংরক্ষণের জন্য বাইরে আলকাতরা লাগাবে।
15 “নৌকোটা 300 হাত লম্বা, 50 হাত চওড়া আর 30 হাত উঁচু করে তৈরী করবে। 16 ছাদের থেকে প্রায় 18 ইঞ্চি নীচে একটা জানালা তৈরী করবে। নৌকোর পাশের দিকে একটা দরজা তৈরী করবে। উপরের তলা, মাঝের তলা আর নীচের তলা—এইভাবে নৌকোর তিনটে তলা থাকবে।
17 “এবার যা বলছি, মন দিয়ে শোন। পৃথিবীতে আমি এক মহাপ্লাবন ঘটাবো। আকাশের নীচের যত জীবন্ত প্রাণী আছে, সব ধ্বংস করবো। পৃথিবীর সমস্ত কিছুর মৃত্যু হবে। 18 কিন্তু তোমার সঙ্গে আমার একটা বিশেষ চুক্তি হবে। তুমি, তোমার স্ত্রী, তোমার পুত্ররা, তোমার পুত্রবধূরা—তোমরা সবাই ঐ নৌকোতে উঠবে। 19 আর পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীর থেকে তুমি একটি করে পুরুষ আর একটি করে স্ত্রী বেছে নেবে। তুমি অবশ্যই তাদের নৌকোতে তুলে নেবে এবং তোমাদের সঙ্গে তাদেরও বাঁচিয়ে রাখবে। 20 সমস্ত রকম পাখীর এক জোড়া, সমস্ত রকম পশুর এক জোড়া এবং মাটিতে বুকে হেঁটে চলে সেরকম সব প্রাণীর এক-এক জোড়া খুঁজে বার করো। পৃথিবীতে যত রকম জীবজন্তু আছে সে সব গুলোর এক জোড়া স্ত্রী পুরুষ জোগাড় করে তোমার নৌকোতে তাদের বাঁচিয়ে রাখবে। 21 তোমাদের জন্য আর অন্যান্য পশুপাখীর জন্য সমস্ত রকম খাবারও অবশ্যই জোগাড় করে রাখবে।”
22 এই সমস্ত কিছুই নোহ করলেন। ঈশ্বর যেমন আজ্ঞা দিয়েছিলেন, নোহ সবকিছু ঠিক সেইভাবেই পালন করলেন।
দান করার বিষয়ে যীশুর শিক্ষা
6 “সাবধান! লোক দেখানো ধর্ম-কর্ম বা ঈশ্বরের কাজ করো না। তাহলে তোমাদের স্বর্গের পিতার কাছ থেকে কোন পুরস্কার পাবে না।
2 “তাই তুমি যখন কোন অভাবী মানুষকে কিছু দাও, তখন তূরী বাজিয়ে তা দিও না। যারা ভণ্ড তারা লোকদের প্রশংসা পাবার আশায় সমাজ-গৃহে ও পথে-ঘাটে ঐভাবে তূরী বাজিয়ে দান করে। আমি বলছি, তাদের পুরস্কার তারা পেয়ে গেছে। 3 কিন্তু তুমি যখন অভাবী লোকদের কিছু দান কর, তখন তোমার ডান হাত কি করছে তা তোমার বাঁ হাতকে জানতে দিও না, 4 যেন তোমার দান গোপনে দেওয়া হয়। তাহলে তোমার পিতা ঈশ্বর যিনি গোপনে সব কিছু দেখেন, তিনি তোমায় পুরস্কার দেবেন।
প্রার্থনার বিষয়ে যীশুর শিক্ষা
(লূক 11:2-4)
5 “তোমরা যখন প্রার্থনা কর, তখন ভণ্ডদের মতো করো না, তারা লোকদের কাছে নিজেদের দেখাবার জন্য সমাজ-গৃহে ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করতে ভালবাসে। আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে। 6 কিন্তু তুমি যখন প্রার্থনা কর, তখন তোমার ঘরের ভেতরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে তোমার পিতা যাঁকে দেখা যায় না, তাঁর কাছে প্রার্থনা করো। তাহলে তোমার পিতা যিনি গোপনে যা কিছু করা হয় দেখেন, তিনি তোমাকে পুরস্কার দেবেন।
7 “তোমরা যখন প্রার্থনা কর, তখন বিধর্মীদের মতো একই প্রার্থনার পুনরাবৃত্তি করো না, কারণ তারা মনে করে তাদের বাক্য বাহুল্যের গুনে তারা প্রার্থনার উত্তর পাবে। 8 তাই তোমরা তাদের মতো হয়ো না, কারণ তোমাদের চাওয়ার আগেই তোমাদের পিতা জানেন তোমাদের কি প্রয়োজন আছে। 9 তাই তোমরা এইভাবে প্রার্থনা করো,
‘হে আমাদের স্বর্গের পিতা,
তোমার নাম পবিত্র বলে মান্য হোক্।
10 তোমার রাজত্ব আসুক।
তোমার ইচ্ছা যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও পূর্ণ হোক্।
11 যে খাদ্য আমাদের প্রয়োজন তা আজ আমাদের দাও।
12 আমাদের কাছে যারা অপরাধী, আমরা যেমন তাদের ক্ষমা করেছি,
তেমনি তুমিও আমাদের সব অপরাধ ক্ষমা কর।
13 আমাদের প্রলোভনে পড়তে দিও না,
কিন্তু মন্দের হাত থেকে উদ্ধার কর।’[a]
14 তোমরা যদি অন্যদের অপরাধ ক্ষমা কর, তবে তোমাদের স্বর্গের পিতাও তোমাদের ক্ষমা করবেন। 15 কিন্তু তোমরা যদি অন্যদের ক্ষমা না কর, তবে তোমাদের স্বর্গের পিতা তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন না।
উপবাস বিষয়ে যীশুর শিক্ষা
16 “যখন তোমরা উপবাস কর, তখন ভণ্ডদের মতো মুখ শুকনো করে রেখো না। তারা যে উপবাস করেছে তা লোকেদের দেখাবার জন্য তারা মুখ শুকনো করে ঘুরে বেড়ায়। আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে। 17 কিন্তু তুমি যখন উপবাস করবে, তোমার মাথায় তেল দিও আর মুখ ধুয়ো। 18 যেন অন্য লোকে জানতে না পারে যে তুমি উপবাস করছ। তাহলে তোমার পিতা ঈশ্বর, যাঁকে তুমি চোখে দেখতে পাচ্ছ না, তিনি দেখবেন। তোমার পিতা ঈশ্বর যিনি গোপন বিষয়ও দেখতে পান, তিনি তোমায় পুরস্কার দেবেন।
ঈশ্বর অর্থের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ
(লূক 12:33-34; 11:34-36; 16:13)
19 “এই পৃথিবীতে তোমরা নিজেদের জন্য ধন-সম্পদ সঞ্চয় করো না। এখানে ঘুন ধরে ও মরচে পড়ে তা নষ্ট হয়ে যায়, আর চোরে সিঁধ কেটে তা চুরিও করতে পারে। 20 বরং স্বর্গে তোমার জন্য সম্পদ সঞ্চয় কর, সেখানে ঘুন ধরবে না, মরচেও পড়বে না, চোরেও চুরি করবে না। 21 তোমার ধন-সম্পদ যেখানে রয়েছে, তোমার মনও সেখানে পড়ে থাকবে।
22 “চোখই দেহের প্রদীপ, তাই তোমার চোখ যদি নির্মল হয়, তোমার সারা দেহও উজ্জ্বল হবে। 23 কিন্তু তোমার চোখ যদি অশুচি হয়, তবে তোমার সমস্ত দেহ অন্ধকারে ছেয়ে যাবে। তোমার মধ্যেকার আলো যদি অন্ধকারাচ্ছন্নই হয়, তবে সে অন্ধকার নিজে কি ভীষণ।
24 “কোন মানুষ দুজন কর্তার দাসত্ব করতে পারে না। সে হয়তো প্রথম জনকে ঘৃণা করবে ও দ্বিতীয় জনকে ভালবাসবে অথবা প্রথম জনের প্রতি অনুগত হবে ও দ্বিতীয় জনকে তুচ্ছ করবে। ঈশ্বর ও ধন-সম্পত্তি এই উভয়ের দাসত্ব তোমরা করতে পারো না।
ঈশ্বরের রাজ্যই প্রথম বিষয়
(লূক 12:22-34)
25 “তাই আমি তোমাদের বলছি, বেঁচে থাকার জন্য কি আহার করব বা কি পান করব এ নিয়ে চিন্তা করো না। আর কি পরব একথা ভেবে দেহের বিষয়েও চিন্তা করো না। খাদ্যের চেয়ে জীবন কি মূল্যবান নয়, অথবা পোশাকের চেয়ে দেহটা কি মূল্যবান নয়? 26 আকাশের পাখীদের দিকে একবার তাকাও, দেখ, তারা বীজ বোনে না বা ফসলও কাটে না, অথবা গোলা ঘরে নিয়ে গিয়ে তা জমাও করে না। তোমাদের স্বর্গের পিতা ঈশ্বর তাদের আহার যোগান। তোমরা কি ওদের থেকে আরও মূল্যবান নও? 27 তোমাদের মধ্যে কে ভাবনা চিন্তা করে নিজের আয়ু এক ঘন্টা বাড়াতে পারে?
28 “পোশাকের বিষয়েই বা কেন এত চিন্তা কর? মাঠের লিলি ফুলগুলির দিকে চেয়ে দেখ কিভাবে তারা ফুটে উঠেছে। তারা পরিশ্রম করে না, নিজেদের জন্য পোশাকও তৈরী করে না। 29 কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি, রাজা শলোমন তার সমস্ত জাঁকজমক সত্ত্বেও তার পোশাকে ঐ ফুলগুলির একটির মতোও নিজেকে সাজাতে পারে নি। 30 মাঠে যে ঘাস আছে আর কাল উনুনে ফেলে দেওয়া হবে, ঈশ্বর যখন তাদের এত সুন্দর করে সাজান, তখন হে অল্প বিশ্বাসী লোকেরা, তিনি কি তোমাদের আরও সুন্দর করে সাজাবেন না?
31 “তোমরা এই বলে চিন্তা করো না, ‘আমরা কি খাবো?’ বা ‘কি পান করবো?’ বা ‘কি পরবো’? 32 বিধর্মীরাই এসব নিয়ে চিন্তা করে। তোমাদের স্বর্গের পিতা ঈশ্বর তো জানেন এসব জিনিসের তোমাদের প্রয়োজন আছে। 33 তাই তোমরা প্রথমে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে ও তাঁর ইচ্ছা কি তা পূর্ণ করতে চেষ্টা কর, তাহলে তোমাদের যা কিছু প্রয়োজন সে সব দেওয়া হবে। 34 কালকের জন্য চিন্তা করো না; কালকের চিন্তা কালকের জন্য থাক। প্রতিটি দিনের পক্ষে সেই দিনের কষ্টই যথেষ্ট।
দারিয়াবসের আদেশ
6 তখন রাজা দারিয়াবস তাদের কথার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাচীন রাজাদের নথিপত্র খুঁজে দেখার নির্দেশ দিলেন। এই সমস্ত নথিপত্র বাবিলে কোষাগারে রক্ষিত হত। 2 ভালভাবে অনুসন্ধান করে (মাদীয় প্রদেশের অক্মথা) দুর্গে প্রাচীন তুলোট কাগজে লেখা একটি সরকারি নথি পাওয়া গেল যাতে রাজা কোরস জেরুশালেমে মন্দির নির্মাণের জন্য আদেশ দিয়েছিলেন।
নথিতে এইরূপে লেখা ছিল: 3 কোরস তাঁর রাজা হওয়ার প্রথম বছরে জেরুশালেমের মন্দির সম্পর্কে নির্দেশ দিয়েছিলেন। আদেশটি ছিল এইরূপ:
ঈশ্বরের জন্য মন্দিরটি আবার বানানো হোক্। এই মন্দিরে ঈশ্বরের জন্য উৎসর্গ নিবেদন করা হবে। এই মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করা হোক্। মন্দিরটি 90 ফুট চওড়া ও উচ্চতায় 90 ফুট হবে। 4 মন্দিরকে ঘিরে তিন সারি বড় পাথরের দেওয়াল ও একসারি বড় কাঠের গুঁড়ির দেওয়াল থাকবে। মন্দির নির্মাণের ব্যয় বহন হবে রাজার কোষাগার থেকে। 5 নবূখদ্নিৎসর যে সব সোনা এবং রূপো লুণ্ঠন করে বাবিলে নিয়ে এসেছিলেন সেগুলি সব অবশ্যই ঈশ্বরের মন্দিরে ফেরৎ পাঠাতে হবে।
6 আমি, দারিয়াবস,
ফরাৎ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্যপাল তত্তনয়কে, শথর-বোষণয়কে ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের জেরুশালেম থেকে সরে যেতে আদেশ দিচ্ছি। 7 এই ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণের কাজ বন্ধ করবার চেষ্টা করো না। কর্মীদের বিরক্ত করো না। ইহুদীদের রাজ্যপাল এবং ইহুদীদের নেতারা আদিস্থানের ওপর মন্দির পুনর্নির্মাণ করুক।
8 এখন আমি এই আদেশ করছি যে তোমরা এসব কাজ ইহুদী নেতাদের জন্য করবে, যারা মন্দির নির্মাণের কাজে লিপ্ত। মন্দির নির্মাণের খরচ আসবে রাজার কোষাগার থেকে এবং ঐ অর্থ আসবে ফরাৎ নদীর পশ্চিম পারের অঞ্চলে সংগৃহীত কর থেকে। এইসব নির্দেশগুলি তাড়াতাড়ি পালন কর যাতে কাজটি বন্ধ না হয়ে যায়। 9-10 স্বর্গের ঈশ্বরের মন্দিরে উৎসর্গ করবার জন্য যা যা লাগবে সবই ওদের দাও। জেরুশালেমের যাজকদের যদি ষাঁড়, মেষ, পাঁঠা, এমন কি গম, নুন, দ্রাক্ষারস অথবা তেল এসবের প্রয়োজন হয় তবে এসবই ওদের প্রত্যেক দিন দিও; এর যেন অন্যথা না হয়। তাহলে তারা হয়ত স্বর্গের ঈশ্বরকে সুগন্ধ সম্বলিত হোম উৎসর্গ করবে এবং ঈশ্বরের কাছে আমার ও আমার পুত্রদের জন্য প্রার্থনা করবে।
11 আমি এও আদেশ দিচ্ছি, কেউ যদি এই আদেশ বদলে দেয় তবে তার বাড়ীর থেকে একটি কড়ি কাঠ খুলে নেওয়া হবে, এবং সেই ব্যক্তিকে ঐ কড়ি কাঠে ফাঁসি দেওয়া হবে এবং তার বাড়ীটি ধ্বংস করে একটি বারোয়ারী শৌচালয়ে পরিনত করা হবে।
12 ঈশ্বর তাঁর নাম জেরুশালেমে রেখে দেবেন। কোন রাজা অথবা দেশ অথবা কেউ যদি এই আদেশ বদলাবার চেষ্টা করে অথবা জেরুশালেমে মন্দির ধ্বংস করবার চেষ্টা করে তাহলে যেন ঈশ্বর তাদের পরাজিত ও ধ্বংস করেন।
আমি, দারিয়াবস এই আদেশ দিয়েছি। এই আদেশ অতি সত্ত্বর এবং সম্পূর্ণভাবে পালন করা চাই।
মন্দির নির্মাণের সমাপ্তি ও উৎসর্গীকরণ
13 তখন ফরাৎ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্যপাল তত্তনয়, শথর-বোষণয় ও তাঁর লোকরা রাজা দারিয়াবসের আদেশ তাড়াতাড়ি ও পুরোপুরিভাবে মেনে নিলেন। 14 ইহুদীদের প্রবীণরা ভাববাদী হগয় ও ইদ্দোর পুত্র সখরিয়ের ভবিষ্যৎ বাণীর দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত হয়ে মন্দির নির্মাণের কাজ চালিয়ে গেলেন। ইস্রায়েলের ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে এবং পারস্যের বিভিন্ন রাজা কোরস, দারিয়াবস এবং অর্তক্ষস্তের নির্দেশ পালন করে তাঁরা মন্দির নির্মাণের কাজে সাফল্যলাভ করেছিলেন। 15 দারিয়াবসের রাজত্বের ষষ্ঠ বছরের অদর মাসের তৃতীয় দিনে মন্দির নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছিল।
16 ইস্রায়েলের বাসিন্দারা মন্দির উৎসর্গীকরণের উৎসবটি আনন্দ সহকারে পালন করল। বন্দীদশা থেকে মুক্তি পাওয়া সমস্ত যাজকগণ ও লেবীয়রাও উৎসবে যোগদান করলেন।
17 100টি ষাঁড়, 200টি মেষ, 400টি পুরুষ মেষশাবক বলি দিয়ে মন্দিরটিকে প্রভুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত করা হল। এছাড়াও ইস্রায়েলের পাপস্খালনের জন্য 12টি ছাগল বলি দেওয়া হল। ইস্রায়েলের 12টি পরিবারের প্রত্যেকটির জন্য 12টি ছাগল উৎসর্গ করা হয়েছিল। 18 এরপর তারা জেরুশালেমের মন্দিরে ঈশ্বরের সেবার জন্য তাদের দল অনুযায়ী মোশির পুস্তকে লিপিবদ্ধ নির্দেশ অনুযায়ী যাজকগণ ও লেবীয়দের বেছে নিলেন।
নিস্তারপর্ব
19 প্রথম মাসের চৌদ্দ দিনের মাথায় বন্দীদশা থেকে ফিরে আসা ইহুদীরা নিস্তারপর্ব পালন করলেন। 20 যাজক ও লেবীয়রা সকলে পরিচ্ছন্ন হয়ে বিশেষ দিনটির জন্য প্রস্তুত হলেন। লেবীয়রা বন্দীদশা থেকে ফিরে আসা ইহুদীদের সকলের জন্য, তাঁদের নিজেদের জন্য এবং তাঁদের যাজক ভাইদের জন্য নিস্তারপর্বের উৎসর্গীকৃত মেষটিকে বলি দিলেন। 21 এরপর বন্দীদশা থেকে ইস্রায়েলে ফিরে আসা সকলে মিলে সেই মেষের মাংস গ্রহণ করলেন। ঐ শহরের অন্য লোকরাও ঐ দেশেরই বাসিন্দা অন্য লোকদের অপবিত্রতা থেকে নিজেদের পবিত্র করে ঐ মেষের মাংস গ্রহণ করলেন। তাঁরা সকলে ঈশ্বরের সামনে প্রার্থনা করার জন্য নিজেদের পবিত্র করলেন। 22 এই সমস্ত ব্যক্তিরা সাতদিন ধরে মহানন্দে খামিরবিহীন রুটির উৎসব পালন করলেন। ঈশ্বর তাদের সকলকে আনন্দিত করে তুললেন কারণ তিনি অশূররাজের মনোবৃত্তিতে পরিবর্তন এনেছিলেন এবং তার ফলে অশূর-রাজ[a] তাঁদের ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণের কাজে সমর্থন জানিয়েছিলেন।
বিশেষ কাজের জন্য সাতজন মনোনীত
6 বহুলোক দলে দলে খ্রীষ্টের অনুগামী হতে লাগল। সেই সময় গ্রীক ভাষাভাষী বিশ্বাসীরা অপর ইহুদী বিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করল যে দৈনিক প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণের সময়ে তাদের বিধবাদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে। 2 তখন সেই বারোজন প্রেরিত সমস্ত অনুগামীদের ডেকে বললেন,
“লোকদের খাদ্য পরিবেশন করার জন্যে ঈশ্বরের বাক্য প্রচারের কাজ বন্ধ করা ঠিক নয়। 3 তাই আমার ভাইরা, তোমরা নিজেদের মধ্য থেকে সাতজন বিজ্ঞ, পবিত্র আত্মায় পূর্ণ ও সুনাম সম্পন্ন লোককে বেছে নাও। আমরা তাদের ওপর এই কাজের ভার দেব। 4 এর ফলে আমরা প্রার্থনা ও ঈশ্বরের বাক্য প্রচারের কাজে আরো বেশী সময় দিতে পারব।”
5 তাদের এই প্রস্তাব সকল বিশ্বাসীকে খুশী করল, তাই তারা এদের মনোনীত করলেন: স্তিফান (ইনি ঈশ্বরে বিশ্বাসী ও পবিত্র আত্মায় পূর্ণ ছিলেন।), ফিলিপ, প্রখর, নীকানর, তীমোন, পার্মিনা ও নিকলায় (ইনি ছিলেন আন্তিয়খিয়ার লোক, যিনি ইহুদী ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।) 6 তারা এদের সকলকে প্রেরিতদের সামনে হাজির করল; আর প্রেরিতরা প্রার্থনা করে তাঁদের ওপর হাত রাখলেন।
7 ঈশ্বরের বাক্যের বহুল প্রচার হল, ফলে জেরুশালেমে অনুগামীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকল, এমনকি যাজক সম্প্রদায়ের মধ্যেও একটা বড় দল য়াাখ্রীষ্টে বিশ্বাস করে আনুগত্য স্বীকার করল।
স্তিফানের বিরুদ্ধে ইহুদীগণ
8 স্তিফান ঈশ্বরের শক্তি ও অনুগ্রহে পরিপূর্ণ ছিলেন; তিনি জনসাধারণের মধ্যে নানান অলৌকিক ও পরাক্রান্ত কাজ করতে লাগলেন। 9 কিন্তু ইহুদীদের মধ্যে কিছু লোক এসে স্তিফানেব সঙ্গে তর্ক শুরু করল। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সমাজ-গৃহ থেকে এসেছিল যাদের নাম ছিল লিবর্ত্তীনদের সমাজ-গৃহ, আলেকসান্দ্রীয় ও কুরীনীয়। কিছু ইহুদীরা এই সমাজ-গৃহে যেত। অন্য ইহুদীরা কিলিকিয়া ও এশিয়া থেকে এসেছিল। 10 তাদের সঙ্গে বিজ্ঞতায় কথা বলতে পবিত্র আত্মা স্তিফানকে সাহায্য করেছিলেন। তাঁর কথা এতো শক্তিশালী ছিল যে তারা কেউ তাঁর সামনে দাঁড়াতে পারল না।
11 তখন তারা কয়েকজন লোককে ঘুষ দিয়ে মিথ্যে বলাল। যারা বলল, “আমরা শুনেছি যে স্তিফান মোশি ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে নিন্দা করছে।” 12 এইভাবে তারা জনসাধারণ, ইহুদী নেতাদের ও ব্যবস্থার শিক্ষকদের উত্তেজিত করে তুলল। তারা এসে স্তিফানকে ধরে নিয়ে মহাসভার সামনে হাজির করল।
13 এরপর তারা মিথ্যা সাক্ষী দাঁড় করাল, যারা বলল, “এই লোক পবিত্র মন্দিরের বিরুদ্ধে ও বিধি-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলতে কখনও নিবৃত্ত হয় না। 14 আমরা একে বলতে শুনেছি যে এই নাসরতীয় যীশু এই স্থান ধ্বংস করবে আর মোশির দেওয়া প্রথা বদলে দেবে।” 15 তখন মহাসভায় যারা বসেছিল তারা সকলে স্তিফানের দিকে একদৃষ্টে চেয়ে দেখল, স্তিফানের মুখ স্বর্গদূতের মুখের মত উজ্জ্বল।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International