Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Chronological

Read the Bible in the chronological order in which its stories and events occurred.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
গীতসংহিতা 73

তৃতীয় খণ্ড

(গীতসংহিতা 73–89)

আসফের একটি প্রশংসা গীত।

73 ঈশ্বর সত্যিই ইস্রায়েলের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছেন।
    যাদের হৃদয় শুচি তাদের সঙ্গে ঈশ্বর ভালো ব্যবহার করেন।
আমার প্রায় পদস্খলন হয়েছিলো
    এবং আমি পাপ কাজ করতে শুরু করেছিলাম।
আমি দেখেছি ঐসব দুষ্ট লোকরা কৃতকার্য হয়েছে
    এবং তা দেখে ঐসব উদ্ধত লোকদের প্রতি আমি ঈর্ষা করেছিলাম।
ওরা সবাই বলবান লোক ছিলো।
    বেঁচে থাকবার জন্য ওদের কোন লড়াই করতে হত না।
ঐসব উদ্ধত লোককে আমাদের মত দুর্ভোগ পোহাতে হয় না।
    অন্যান্য লোকেদের মত ওদের কোন সংকট নেই।
তাই ওরা উদ্ধত এবং মানুষকে ঘৃণা করে।
    এই অহঙ্কারকে তারা গলার মালার মত এবং শৌখিন বস্ত্রের মত সহজেই ধারণ করে।
ঐসব লোক যদি ওদের পছন্দের কিছু দেখে, ওরা গিয়ে তা নিয়ে চলে আসে।
    ওরা যা মনে করে, ওরা তাই করতে পারে।
লোকের সম্পর্কে ওরা নির্মম ও অহিতকর কথাবার্তা বলে।
    অন্যদের কাছ থেকে ওরা কিভাবে সুবিধে নেয় সে সম্বন্ধে ওরা গর্বের সঙ্গে কথা বলে।
ঐসব অহঙ্কারী লোকরা নিজেদের দেবতা বলে ভাবে!
    ওরা ভাবে ওরাই পৃথিবীর শাসনকর্তা।
10 এমনকি ঈশ্বরের লোকরা পর্যন্ত সাহায্যের জন্য ওদের কাছে ছুটে যায়।
    ঐ উদ্ধত লোকরা যা বলে, ওরাও তাই করে।
11 ঐ মন্দ লোকরা বলে, “আমরা কি করছি ঈশ্বর তা জানেন না!
    ঈশ্বর, যিনি পরাৎ‌‌পর, তিনি জানেন না!”

12 ঐ অহঙ্কারী লোকরা প্রচণ্ড দুর্জন,
    কিন্তু ওরা ধনী এবং ওরা ক্রমশঃ আরো ধনী হয়ে উঠছে।
13 তাই আমার আত্মাকে কেন শুদ্ধ হতে হবে?
    আমি কেন আমার হাত নির্দোষ রাখব?
14 হে ঈশ্বর, সারাদিন ধরে আমি যন্ত্রণা ভোগ করি।
    প্রত্যেকদিন সকালে আপনি আমায় শাস্তি দেন।

15 ঈশ্বর, এইসব বিষয়ে আমি অন্য লোকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি।
    কিন্তু আমি জানি তাতে আপনার লোকদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে।
16 এইসব বিষয় বোঝার জন্য আমি আপ্রাণ চেষ্টা করেছি।
    কিন্তু এটা আমার পক্ষে ভীষণ কষ্টকর।
17 ততক্ষণ পর্যন্ত আমি আপনার মন্দিরে যাই নি,
    আমি ঈশ্বরের মন্দিরে গেলাম এবং তারপর বুঝতে পারলাম।
18 ঈশ্বর, সত্যিই ঐসব লোককে আপনি ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছেন।
    ওদের পতন এবং বিনাশ এখন সহজ হবে।
19 হঠাৎ‌‌ই সমস্যা আসতে পারে
    এবং ঐ অহঙ্কারী লোকরা ধ্বংস হবে।
ওদের সাংঘাতিক কিছু ঘটতে পারে
    এবং ওরা শেষ হয়ে যাবে।
20 প্রভু, যেমন করে আমরা জেগে উঠে স্বপ্নকে ভুলে যাই,
    ঐসব লোকরা সেই স্বপ্নের মতই বিস্মৃত হবে।
আমাদের রাতের দুঃস্বপ্ন যেমন আপনি অদৃশ্য করে দেন,
    তেমনি করে আপনি ওই লোকগুলোকে অদৃশ্য করে দেবেন।

21-22 আমি অত্যন্ত নির্বোধ ছিলাম।
    আমি দুষ্ট ও ধনী লোকদের কথা ভাবতাম এবং ক্লেশগ্রস্ত হয়ে পড়তাম।
হে ঈশ্বর, আমি ক্লেশগ্রস্ত ছিলাম এবং আপনার ওপর রাগ করেছিলাম!
    আমি নির্বোধ ও অজ্ঞ পশুর মত ব্যবহার করেছিলাম।
23 আমার যা কিছু দরকার তা আমার আছে!
আমি সর্বদাই আপনার সঙ্গে আছি।
    হে ঈশ্বর আপনি আমার হাত ধরুন।
24 ঈশ্বর, আমায় সুপরামর্শ দিন ও পরিচালিত করুন।
    তাহলে আপনি আমায় গৌরবের পথে নিয়ে যাবেন।
25 হে স্বর্গের ঈশ্বর, আমি সর্বদা আপনার সঙ্গে রয়েছি
    এবং আমি যখন আপনার সঙ্গে রয়েছি তখন এই পৃথিবীতে আমি আর কী চাইতে পারি?
26 আমার এই দেহ মন একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে,
    কিন্তু আমার শিলা, যাঁকে আমি ভালোবাসি তিনি থাকবেন।
    চিরকালের জন্য আমার কাছে ঈশ্বর আছেন!
27 ঈশ্বর যারা আপনাকে ত্যাগ করেছে তারা হারিয়ে যাবে।
    যারা আপনার প্রতি অবিশ্বস্ত তাদের আপনি ধ্বংস করে দেবেন।
28 আমি জানি, আমি ঈশ্বরের কাছে এসেছি এবং তাঁর কাছাকাছি থাকা আমার পক্ষে ভালো।
    আমি আমার প্রভু, সদাপ্রভুকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল করে নিয়েছি।
    ঈশ্বর আপনি যা কিছু করেছেন তাঁর সব কিছু বলতে আমি এসেছি।

গীতসংহিতা 77-78

সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: যিদুথূনের প্রতি আসফের একটি গীত।

77 আমি ঈশ্বরের কাছে কেঁদে পড়েছিলাম এবং সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করেছি।
    হে ঈশ্বর, আমি উচ্চস্বরে আপনাকে ডেকেছি, আমার কথা শুনুন!
আমার প্রভু, যখনই আমি সমস্যায় পড়ি তখনই আমি আপনার কাছে আসি।
    সারা রাত আমি আপনার দিকে আমার দুবাহু বাড়িয়ে দিয়েছিলাম।
    আমার আত্মা আরাম পেতে অস্বীকার করেছিল।
আমি ঈশ্বর বিষয়ে চিন্তা করেছি এবং আমি যা অনুভব করেছি তা বলতে চেয়েছি।
    কিন্তু আমি পারি নি।
আপনি আমাকে ঘুমাতে দেন নি।
    আমি কিছু বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমি এত বিচলিত ছিলাম যে কথা বলতে পারছিলাম না।
আমি অতীতের কথা চিন্তা করছিলাম।
    বহু অতীতে যা ঘটে গেছে আমি সেই সব চিন্তা করেছিলাম।
রাত্রে আমি আমার গানগুলো সম্পর্কে ভাবি।
    আমি নিজের সঙ্গে কথা বলি এবং বুঝতে চেষ্টা করি।
আমি বিস্মিত হই, “আমাদের প্রভু কি চিরদিনের মত আমাদের ত্যাগ করে চলে গেলেন?
    আবার কি তিনি আমাদের চাইবেন?
ঈশ্বরের প্রেম কি চিরদিনের জন্য চলে গেল?
    আবার কি তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলবেন?
ঈশ্বর কি কৃপা দেখাতে ভুলে গেলেন?
    তাঁর সহানুভূতি কি ক্রোধে রূপান্তরিত হয়েছে?”

10 তারপর আমি ভাবলাম, “যে বিষয়টা আমায় সব থেকে বেশী বিব্রত করলো তা হল:
    পরাৎ‌‌পর কি তাঁর ক্ষমতা হারিয়েছেন?”

11 প্রভু কি করেছেন তা আমার স্মরণে আছে।
    হে ঈশ্বর, অতীতে যে সব আশ্চর্য কার্য আপনি করেছিলেন, তা আমার স্মরণে আছে।
12 আপনি যা করেছেন, তা নিয়ে আমি ভেবেছি,
    সে সম্পর্কে আমি চিন্তা করেছি।
13 ঈশ্বর, আপনার পথই পবিত্র পথ।
    ঈশ্বর কেউই আপনার মত মহৎ‌‌ নয়।
14 আপনিই সেই ঈশ্বর, যিনি আশ্চর্য কার্য করেছেন।
    আপনি লোকদের আপনার পরাক্রমের পরিচয় দিয়েছেন।
15 আপনার ক্ষমতাবলে আপনি আপনার লোকদের রক্ষা করেছেন।
    যাকোব এবং যোষেফের উত্তরপুরুষদের আপনি রক্ষা করেছেন।

16 ঈশ্বর, আপনাকে দেখে জলও ভীত হয়েছিলো।
    গভীর জলরাশি আপনাকে দেখে ভয়ে কেঁপে গিয়েছিলো।
17 ঘন মেঘে জল সিঞ্চন করেছিলো।
    লোকে উঁচু মেঘে দারুণ বজ্র নির্ঘোষ শুনেছিলো।
    তারপর আপনার বিদ্যুতের তীর সারা মেঘে ঝলক দিয়ে উঠেছিলো।
18 গুরু গুরু গর্জনের বজ্রধ্বনিতে আকাশ ভরে উঠেছিলো।
    বিদ্যুৎ ঝলকে সারা পৃথিবী আলোকিত হয়ে উঠেছিলো।
    পৃথিবী শিহরিত ও কম্পিত হয়েছিলো।
19 ঈশ্বর, গভীর জলের মধ্যে দিয়ে আপনি হেঁটে গেলেন, গভীর সমুদ্রের মধ্যে দিয়ে হেঁটে গেলেন।
    কিন্তু সেখানে আপনি কোন চরণচিহ্ন রেখে যান নি।
20 মোশি এবং হারোণের মধ্যে দিয়ে
    আপনি আপনার লোকদের মেষের মত পরিচালিত করেছেন।

আসফের একটি মস্কীল।

78 হে আমার লোকরা, আমার শিক্ষামালা শোন।
    আমি যা বলছি তা শোন।
আমি তোমাদের এই গল্প বলবো।
    আমি তোমাদের এই প্রাচীন গল্পটি বলবো।
এই গল্প আমরাও শুনেছি, এই গল্পটা আমরা খুব ভালোভাবে জানি।
    আমাদের পিতা-পিতামহরা এই গল্প বলেছেন।
এই গল্প আমরাও ভুলে যাবো না।
    আমাদের লোকরা শেষ প্রজন্মকে পর্যন্ত এই গল্প বলতে থাকবে।
আমরা সবাই প্রভুর প্রশংসা করবো
    এবং প্রভু যে সব আশ্চর্য কার্য করেছেন তা বলবো।
প্রভু যাকোবের সঙ্গে একটা চুক্তি করেছিলেন।
    ইস্রায়েলকে ঈশ্বর একটা বিধি দিয়েছিলেন।
    আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর আজ্ঞা দিয়েছেন।
    তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের বলেছেন তারা যেন তাদের উত্তরপুরুষদের সেই বিধি সম্পর্কে শিক্ষাদান করে।
নতুন শিশুরা জন্ম নেবে। তারা আস্তে আস্তে বড় হবে।
    তারা তাদের ছেলেমেয়েদের এই গল্পগুলো বলবে।
    এইভাবে শেষ প্রজন্মের মানুষ পর্যন্ত এই বিধি জানতে পারবে।
তাই ঐসব লোকরাই ঈশ্বরকে বিশ্বাস করবে।
    ঈশ্বর কি করেছেন তা তারা ভুলবে না।
    ওরা খুব যত্ন করে তাঁর আজ্ঞাগুলো পালন করবে।
যদি লোকরা তাদের শিশুদের ঈশ্বরের আজ্ঞাগুলো সম্পর্কে শিক্ষা দেয়
    তাহলে ওই শিশুরা ওদের পূর্বপুরুষদের মত হবে না, ওদের পূর্বপুরুষরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে গিয়েছিলো।
তারা তাঁকে মানতে অস্বীকার করেছিলো, ঐসব লোক প্রচণ্ড একগুঁয়ে ছিলো।
    ওরা ঈশ্বরের আত্মার প্রতি নিষ্ঠাবান ছিল না।

ইফ্রয়িমের লোকেরা অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত ছিল
    কিন্তু তারা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দৌড়ে পালিয়ে গেল।
10 তারা ঈশ্বরের সঙ্গে তাদের চুক্তি রক্ষা করে নি।
    তারা তাঁর শিক্ষামালা মান্য করতে অস্বীকার করেছিলো।
11 ঈশ্বর যে সব আশ্চর্য কার্য করেছিলেন, ইফ্রয়িমের লোকরা তা ভুলে গিয়েছিলো।
    তিনি যে সব আশ্চর্য কার্য ওদের দেখিয়েছিলেন, তা তারা ভুলে গিয়েছিলো।
12 ঈশ্বর ওদের পিতৃপুরুষদের মিশরের সোয়নে,
    তাঁর পরাক্রম প্রদর্শন করে দেখিয়েছিলেন।
13 ঈশ্বর লোহিত সাগরকে দুভাগ করেছিলেন এবং লোকদের সাগর পার করিয়েছিলেন।
    সেই জল দুধারে একটি শক্তি দেওয়ালের মত দাঁড়িয়েছিলো।
14 প্রতিদিন প্রলম্বিত মেঘের দ্বারা ঈশ্বর ওদের পথ দেখিয়েছিলেন।
    প্রতিটি রাত্রে আগুনের আলো দিয়ে ঈশ্বর ওদের পথ দেখিয়ে ছিলেন।
15 ঈশ্বর মরুভূমির পাথরকে দ্বিধাবিভক্ত করেছেন।
    মাটির গভীর অতল থেকে ওই সব লোকদের তিনি জলও দিয়েছেন।
16 পাথর থেকে আগত ঝর্ণার জলকে
    ঈশ্বরই নদীর প্রবাহ দিয়েছেন!
17 কিন্তু লোকরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ কাজ অব্যাহত রেখেছিল।
    পরাৎ‌‌পরের বিরুদ্ধে তারা মরুভূমিতে পর্যন্ত বিদ্রোহ করেছে।
18 তারা যখন তাদের ইচ্ছা পূর্ণ করবার জন্য খাবার চাইল
    তখন তারা তাদের মনে মনে ঈশ্বরকে পরীক্ষা করল।
19 ওরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছিলো,
    “ঈশ্বর কি আমাদের এই মরুভূমিতে খাবার এনে দিতে পারবেন?
20 তিনি পাথরে আঘাত করলেন এবং বন্যার মতো জলধারা বেরিয়ে এলো।
    কিন্তু তিনি কি আমাদের কিছু রুটি এবং মাংস দিতে পারেন?”
21 ওই লোকগুলো কি বলছে, প্রভু তা শুনলেন।
    যাকোবের ওপর ঈশ্বর প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন।
ইস্রায়েলের ওপর ঈশ্বর প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন।
22 কেন? কারণ লোকরা তাঁকে বিশ্বাস করে নি।
ঈশ্বর যে ওদের রক্ষা করতে পারেন, তা ওরা বিশ্বাস করে নি।
23-24 এর পর ঈশ্বর মেঘকে উন্মুক্ত করে দিলেন
    এবং খাদ্যের জন্য ওদের ওপরে মান্না বর্ষিত হল।
এ যেন আকাশের দ্বার খুলে গেল
    এবং স্বর্গের ভাণ্ডার থেকে শস্যরাশি পড়তে লাগলো।
25 লোকরা দেবদূতদের[a] সেই খাবার খেয়েছিলো।
    ওদের সন্তুষ্ট করার জন্য ঈশ্বর প্রচুর খাবার পাঠিয়েছিলেন।
26 ঈশ্বর পূর্বদিক থেকে একটা ঝোড়ো বাতাস প্রবাহিত করলেন
    এবং ওদের কাছে একধরণের পাখি বৃষ্টির মত পড়তে লাগলো।
27 ঈশ্বর তেমানের দিক থেকে সেই বায়ুকে প্রবাহিত করালেন
    এবং যে নীল আকাশের দিকটায় প্রচুর পাখি ছিল সেই দিকটা অন্ধকারময় হয়ে গেল।
28 ওদের তাঁবুর ঠিক মাঝখানে,
    ওদের তাঁবুর চারপাশে পাখিগুলো পড়ে গিয়েছিল।
29 তাদের কাছে বিরাট খাদ্যের ভাণ্ডার ছিল।
    কিন্তু তাদের ক্ষুধা তাদের পাপকার্যে প্ররোচিত করেছিল।
30 তারা তাদের ভোজন নিয়ন্ত্রিত করে নি।
    তাই পাখীগুলোর দেহ থেকে রক্ত বেরিয়ে আসার আগেই তারা পাখীগুলোকে খেয়ে ফেলেছিল।
31 অতএব, খাবার যখন তাদের মুখের মধ্যে তখনও ছিল তখন ঈশ্বর ওইসব লোকের ওপর প্রচণ্ড ক্ষুদ্ধ হলেন
    এবং ওদের অনেককে মেরে ফেললেন। ঈশ্বর বহু স্বাস্থ্যবান তরুণের মৃত্যুর কারণ হলেন।
32 ওইসব লোকরা আবার পাপ করলো!
    ঈশ্বর যে সব আশ্চর্য কার্য করতে পারেন তার ওপর নির্ভর করলো না।
33 তাই ওদের মূল্যহীন জীবনগুলোতে
    ঈশ্বর দুর্বিপাক এনে শেষ করে দিলেন।
34 যখনই ঈশ্বর ওদের কাউকে হত্যা করেছেন, অন্যরা তাঁর কাছে ফিরে এসেছেন।
    ওরা ছুটে ছুটে ঈশ্বরের কাছে ফিরে এসেছে।
35 তখন এইসব লোকরা স্মরণ করবে যে ঈশ্বরই ছিলেন তাদের শিলা।
    ওরা তখন মনে করবে যে পরাৎ‌‌পরই একমাত্র ওদের মুক্তিদাতা।
36 ওরা বলেছিলো, ওরা তাঁকে ভালোবাসে কিন্তু ওরা মিথ্যা কথা বলেছিলো।
    ওই সব লোক একেবারেই আন্তরিক ছিলো না।
37 প্রকৃতপক্ষে ওদের হৃদয় ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলো না।
    চুক্তির প্রতি ওরা একেবারেই বিশ্বস্ত ছিলো না।
38 কিন্তু ঈশ্বর করুণাময় ছিলেন।
    তিনি ওদের সব পাপ ক্ষমা করে দিলেন, তিনি কিন্তু ওদের ধ্বংস করেন নি।
বহুবার ঈশ্বর তাঁর ক্রোধ সংবরণ করেছেন।
    তিনি নিজেকে কখনই অতিরিক্ত ক্রুদ্ধ হতে দেন নি।
39 ঈশ্বর মনে রেখেছিলেন যে ওরা ন্যায়পরায়ণ মানুষ।
    লোকরা বাতাসেরই মত, যারা বয়ে যায় এবং চলে যায়।
40 ওঃ, কতবার ঐ লোকগুলো মরুভূমিতে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে!
    ওরা তাঁকে কত দুঃখই দিয়েছে!
41 ওই লোকগুলো বার বার ঈশ্বরের ধৈর্য্য পরীক্ষা করেছে।
    ইস্রায়েলের পবিত্র একজনকে ওরা সত্যই ক্রুদ্ধ করেছে।
42 ওই লোকরা ঈশ্বরের পরাক্রমের কথা ভুলে গিয়েছিলো।
    ঈশ্বর যে বহুবার শত্রুদের হাত থেকে ওদের রক্ষা করেছিলেন, তা ওরা ভুলে গিয়েছিলো।
43 মিশরে ঈশ্বর যে সব চমৎ‌‌কার কাজগুলি করেছিলেন তার কথা ওরা ভুলে গিয়েছিলো,
    সোয়ন প্রান্তরের চমৎ‌‌কার কাজের কথা ওরা ভুলে গিয়েছিলো।
44 ঈশ্বর নদীগুলিকে রক্তে পরিণত করেছিলেন!
    মিশরবাসীরা সেই জল পান করতে পারলো না।
45 ঈশ্বর ঝাঁকে ঝাঁকে মাছি পাঠালেন যারা মিশরবাসীদের কামড় দিলো,
    তিনি অগনিত ব্যাঙ পাঠালেন যারা মিশরবাসীর জীবন ধ্বংস করে দিলো।
46 ওদের শস্যকে ঈশ্বর গঙ্গা ফড়িংয়ের কবলে
    এবং ওদের বৃক্ষ লতাকে পঙ্গপালের কবলে করে দিলেন।
47 ঈশ্বর শিলাবৃষ্টির দ্বারা ওদের দ্রাক্ষাক্ষেত নষ্ট করলেন।
    শিলাবৃষ্টির দ্বারা তিনি ওদের বৃক্ষরাজি ধ্বংস করলেন।
48 শিলাবৃষ্টি দিয়ে তিনি ওদের পশুদের মারলেন
    এবং বজ্র-বিদ্যুৎ দিয়ে গবাদি পশুদের মারলেন।
49 ঈশ্বর মিশরের লোকদের তাঁর ক্রোধ দেখালেন।
    ওদের বিরুদ্ধে তিনি তাঁর বিধ্বংসকারী দূতদের পাঠালেন।
50 ক্রোধ প্রদর্শনের জন্য ঈশ্বর একটা রাস্তা পেয়েছিলেন।
    ওদের একটা লোককেও তিনি বাঁচতে দিলেন না।
    এক মহামড়কের মধ্যে দিয়ে তিনি ওদের মরতে দিলেন।
51 মিশরের প্রত্যেকটি প্রথমজাত সন্তানকে ঈশ্বর হত্যা করলেন।
    হাম পরিবারের প্রত্যেকটি প্রথম জাতককে তিনি হত্যা করলেন।
52 তারপর একজন মেষপালকের মত তিনি ইস্রায়েলকে পথ দেখিয়েছিলেন।
    একজন মেষপালকের মত তিনি তাঁর লোকেদের, মেষপালকের মত জনহীন প্রান্তরে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
53 ঈশ্বর তাঁর লোকদের নিরাপদে চালনা করেছিলেন।
    তাঁর লোকদের ভয় করার মত কিছু ছিল না।
    তাদের শত্রুদের তিনি লোহিত সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন।
54 তাঁর পবিত্র ভূখণ্ডে ঈশ্বর তাঁর লোকদের পৌঁছে দিয়েছিলেন।
    তিনি তাঁর লোকদের নিজ ক্ষমতা বলে পাওয়া সেই পর্বতে যেটা তিনি রূপ দিয়েছিলেন সেটাতে নিয়ে গেলেন।
55 ঈশ্বর অন্যান্য জাতিদের সেই ভূখণ্ডের থেকে বাইরে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
    প্রত্যেকটি পরিবারকে বাধ্য করিয়েছেন।
    প্রত্যেকটি পরিবারকে ঈশ্বর সে ভূখণ্ডের অংশ দিয়েছেন।
এখান বাস করার জন্য ইস্রায়েলের প্রত্যেকটি পরিবারগোষ্ঠীকে
    ঈশ্বর সেই ভূখণ্ডে ঘর দিয়েছেন।
56 কিন্তু ওরা পরাৎ‌‌পর ঈশ্বরকে পরীক্ষা করেছিলো এবং তাঁকে দুঃখী করেছিলো।
    ওই সব লোক ঈশ্বরের আজ্ঞা মান্য করে নি।
57 ওরা ঠিক ওদের পূর্বপুরুষদের মতই ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলো।
    ওরা একটি বঞ্চক ধনুকের মত[b] দিক পরিবর্তন করেছিলো।
58 ইস্রায়েলের লোকরা উচ্চস্থান তৈরী করেছিলো এবং ঈশ্বরকে ক্রুদ্ধ করেছিলো।
    তারা মূর্ত্তিসমূহ তৈরী করেছিলো এবং ঈশ্বরকে অত্যন্ত ঈর্ষান্বিত করে তুলেছিল।
59 এইসব শুনে ঈশ্বর ক্রোধান্বিত হয়েছিলেন।
    ঈশ্বর ইস্রায়েলকে তীব্রভাবে অস্বীকার করেছিলেন!
60 ঈশ্বর পবিত্র তাঁবুটি শীলোতে রেখেছিলেন।
    সাধারণ লোকদের মধ্যে ঈশ্বর সেই তাঁবুতে থাকতেন।
61 ঈশ্বর অন্য জাতিকে তাঁর লোকদের অধিকার করতে দিয়েছেন।
    শত্রুরা ঈশ্বরের সুন্দরতম রত্ন নিয়ে গিয়েছিলো।
62 ঈশ্বর তাঁর লোকদের বিরুদ্ধে ক্রোধ প্রকাশ করলেন।
    তিনি তাদের যুদ্ধে নিহত হতে দিলেন।
63 তরুণরা সব পুড়ে মারা গেল
    এবং যে মেয়েদের ওরা বিয়ে করবে ভেবেছিলো তারা কেউই বিয়ের গান গাইছিলো না।
64 যাজকরা মারা গেল
    কিন্তু তাদের বিধবারা ওদের জন্য কাঁদে নি।
65 শেষ কালে, যেমন করে একজন লোক ঘুম থেকে ওঠে,
    প্রচুর দ্রাক্ষারস পান করে যেমন একজন সৈনিক ওঠে,
    তেমন করে আমাদের প্রভু উঠলেন।
66 ঈশ্বর তাঁর শত্রুদের জোর করে হঠিয়ে দিয়ে ওদের পরাজিত করালেন।
    ঈশ্বর তাঁর শত্রুদের পরাজিত করে চিরদিনের জন্য ওদের অসম্মানিত করলেন।
67 তারপর ঈশ্বর যোষেফের তাঁবুটিকে[c] বাতিল করলেন
    এবং ইফ্রয়িমের শাসন ক্ষমতা কেড়ে নিলেন।
68 তারপর ঈশ্বর যিহূদা জাতিকে শাসক জাতি হিসেবে মনোনীত করলেন
    এবং তাঁর প্রিয় জেরুশালেমকে মন্দির নির্মাণের স্থান হিসেবে বেছে নিলেন।
69 সেই পাহাড়ের উঁচু জায়গায় ঈশ্বর তাঁর মন্দির নির্মাণ করলেন।
    পৃথিবীর মত তিনি তাঁর মন্দির চিরকালের জন্য স্থাপন করলেন।
70 ঈশ্বর তাঁর বিশেষ সেবকরূপে দায়ূদকে মনোনীত করলেন।
    দায়ূদ মেষ চরাচ্ছিলো, কিন্তু ঈশ্বর সেই কাজ থেকে তাকে নিয়ে এলেন।
71 ঈশ্বর দায়ূদকে, তাঁর লোকদের মেষপালক হওয়ার দায়িত্ব,
    যাকোবের লোকদের দায়িত্ব এবং ইস্রায়েলের লোকদের ও তাদের সম্পত্তির দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
72 দায়ূদ পবিত্র মনে তাদের নেতৃত্ব দিলেন।
    তিনি খুব প্রজ্ঞার সঙ্গে তাদের পরিচালিত করলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International