Revised Common Lectionary (Semicontinuous)
111 প্রভুর প্রশংসা কর!
যেখানে সৎ লোকেরা জমায়েত হয়,
সেই মণ্ডলীতে আমি সমস্ত অন্তর দিয়ে প্রভুকে ধন্যবাদ দিই।
2 প্রভু বিস্ময়কর কাজকর্ম করেন।
ঈশ্বরের কাছ থেকে যে সব ভালো জিনিস আসে লোকরা তা চায়।
3 ঈশ্বর প্রকৃতই বিস্ময়কর এবং মহিমাময় কার্য করেন।
তাঁর ধার্মিকতা চিরদিনই বিরাজ করে।
4 ঈশ্বর, আশ্চর্য কার্য করেন যাতে আমরা মনে রাখি
যে প্রভু সত্যিই দয়াময় ও ক্ষমাশীল।
5 ঈশ্বর, তাঁর অনুগামীদের আহার দেন।
ঈশ্বর চিরদিন তাঁর চুক্তি স্মরণে রাখেন।
6 ঈশ্বর যে সব শক্তিশালী জিনিসগুলি করেছেন তা তাঁর লোকজনের কাছে প্রমাণ করেছে
যে তিনি অন্য জাতিসমূহের অধিকারভুক্ত দেশ তাদের দিয়েছিলেন।
7 ঈশ্বর যা কিছু করেন সবই সুন্দর ও যথাযথ।
তাঁর সব আজ্ঞাকেই নির্ভর করা চলে।
8 ঈশ্বরের আজ্ঞাসমূহ চিরদিন বজায় থাকবে।
যে কারণে ঈশ্বর আজ্ঞাগুলি দিয়েছিলেন সেগুলি ছিল সৎ ও আন্তরিক।
9 তাঁর লোকেদের উদ্ধার করার জন্য ঈশ্বর কাউকে পাঠিয়েছিলেন এবং ঈশ্বর তাদের সঙ্গে যে চুক্তি করেছেন তা চিরদিন বজায় থাকবে।
ঈশ্বরের নাম ভয়ঙ্কর এবং পবিত্র।
10 ঈশ্বরের প্রতি ভয় এবং শ্রদ্ধা থেকেই প্রজ্ঞার সূত্রপাত হয়।
যারা ঈশ্বরকে মান্য করে তারা খুব বিচক্ষণ।
চিরদিন ঈশ্বরের প্রতি প্রশংসাগীত গাওয়া হবে।
আদোনিয় রাজা হবার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন
1 রাজা দায়ূদ বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর এতো বয়স হয়েছিল যে কোনো মতেই আর তাঁর শরীর উষ্ণ হয় না। এমন কি ভৃত্যরা তাঁর শরীর কম্বল দিয়ে ঢাকা সত্ত্বেও তাঁর শীত আর কাটে না। 2 তখন ভৃত্যরা রাজাকে বলল, “আমরা তবে আপনার যত্ন করার জন্য একটি যুবতী মেয়েকে খুঁজে আনি। সে আপনার পাশে শয়ন করবে এবং আপনাকে উষ্ণ রাখবে।” 3 তখন রাজকর্মচারীরা রাজাকে উষ্ণ রাখার জন্য ইস্রায়েলের সর্বত্র সুন্দরী যুবতী মেয়ে খুঁজে বেড়াতে লাগল। এমনি করে খুঁজতে খুঁজতে শূনেম শহরে সুন্দরী অবীশগের খোঁজ মিলল। তারা তখন ঐ মেয়েটিকে রাজার কাছে নিয়ে এলো। 4 অবীশগ সত্যি সত্যিই অপরূপ সুন্দরী ছিল। সে রাজার সব রকম যত্ন বা পরিচর্যা করলেও তার সঙ্গে রাজা দায়ূদের কোনো শারীরিক সম্পর্ক ছিল না।
5-6 রাজা দায়ূদ ও রাণী হগীতের পুত্রের নাম আদোনিয়। এই আদোনীয খুবই সুপুরুষ ছিলেন। রাজা দায়ূদ কখনও তাঁকে শোধরাবার চেষ্টা করেন নি। তিনি তাঁকে কখনও জিজ্ঞেস করেন নি, “কেন তুমি এসব করছ?” যদিও অবশালোম নামে তাঁর এক ভাই ছিলেন, উচ্চাকাঙ্খী ও ক্ষমতাভিলাষী। আদোনিয় মনে মনে ঠিক করলেন যে এরপর তিনিই রাজা হবেন; আর একথা স্থির করে তিনি নিজের সুবিধের জন্য তাড়াতাড়ি একটা রথ, কিছু ঘোড়া ও তাঁর রথের সামনে দৌড়োনোর জন্য প্রায় 50 জন লোক জোগাড় করে ফেললেন।
7 রাজা হবার বিষয়টা নিয়ে তিনি সরূয়ার পুত্র যোয়াব ও যাজক অবিয়াথরের সঙ্গে পরামর্শও সেরে ফেললেন। তারা তাঁকে নতুন রাজা হতে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিল। 8 কিন্তু রাজা দায়ূদের প্রতি অনুগত কিছু ব্যক্তির আদোনিয়র এই উচ্চাভিলাষ পছন্দ হয় নি। এরা হল যাজক সাদোক, যিহোয়াদার পুত্র বনায়, ভাববাদী নাথন, শিমিয়ি, রেয়ি ও রাজা দায়ূদের বিশেষ রক্ষীদল। এরা কেউই আদোনিয়র সঙ্গে যোগ দেয় নি।
9 এক দিন আদোনিয় ঐন্-রোগেলের কাছে সোহেলত্ পাথরে বেশ কিছু মেষ, ষাঁড় ও বাছুর মঙ্গল নৈবেদ্য হিসেবে বলি দিয়ে তাঁর ভাইদের (রাজা দায়ূদের অন্যান্য পুত্রদের) ও যিহূদার সমস্ত আধিকারিকদের নিমন্ত্রণ করলেন। 10 কিন্তু আদোনিয় তাঁর পিতার বিশেষ রক্ষীদের, তাঁর ভাই শলোমন, বনায় ও যাজক নাথনকে এদিন নিমন্ত্রণ করেন নি।
শলোমনের হয়ে নাথন ও বৎশেবা কথা বলল
11 নাথন একথা জানতে পেরে শলোমনের মা বৎশেবার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, “হগীতের পুত্র আদোনিয় কি করছে আপনি কি কিছু জানেন? তিনি রাজা হবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এদিকে রাজা দায়ূদ এসবের বিন্দু-বিসর্গ জানেন না। 12 এক্ষেত্রে আপনার ও আপনার পুত্র শলোমনের প্রাণের আশঙ্কা থাকতে পারে বলেই আমার ধারণা। তবে চিন্তার কোন কারণ নেই, আমি আপনাকে আত্মরক্ষার একটা উপায় বলে দিচ্ছি। 13 রাজা দায়ূদের কাছে যান এবং তাঁকে বলুন, ‘হে রাজাধিরাজ, আপনি আমার কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে আপনার পরে আমার পুত্র শলোমনই পরবর্তী রাজা হবে। তাহলে আদোনিয় কেন পরবর্তী রাজা হচ্ছে?’ 14 আপনি যখন রাজার সঙ্গে কথাবার্তা বলতে থাকবেন, আমি তখন সেখানে গিয়ে উপস্থিত হব এবং তখন আমি রাজাকে সমস্ত কিছু জানাব, তাতে আপনার কথার সত্যতাও প্রমাণ হবে।”
15 বৎশেবা তখন রাজার সঙ্গে দেখা করতে তাঁর শয়ন কক্ষে যেখানে শূনেমীয়া অবীশগ বৃদ্ধ রাজার পরিচর্যা করছিল, সেখানে গিয়ে উপস্থিত হল। 16 বৎশেবা রাজার সামনে আনত হবার পর রাজা জিজ্ঞেস করলেন, “আমি তোমার জন্য কি করতে পারি বল?”
17 বৎশেবা বললেন, “মহাশয়, আপনি আপনার প্রভু, ঈশ্বরের নামে শপথ করে আমার কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, আপনার পর আমার পুত্র শলোমনই রাজা হবে। সে আপনার সিংহাসনে বসবে। 18 কিন্তু আপনি বোধ হয় জানেন না আদোনিয় ইতিমধ্যেই রাজা হবার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। 19 সে মঙ্গল নৈবেদ্য হিসেবে বহু গরু ও মেষ বলি দিয়ে বড়সড় একটা ভোজসভার আয়োজন করে সেখানে আপনার অন্যান্য সমস্ত পুত্রদের নিমন্ত্রণ করেছে। সে যাজক অবিয়াথর, যোয়াব, আপনার সেনাবাহিনীর প্রধানকে এই ভোজসভায় নিমন্ত্রণ করলেও আপনার অনুগত পুত্র শলোমনকে নিমন্ত্রণ করে নি। 20 রাজা, এখন ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা আপনার গতিবিধি লক্ষ্য করছে। আপনার পর কে রাজা হবে, সে বিষয়ে তারা আপনার সিদ্ধান্ত জানতে চায়। 21 আপনার মৃত্যুর আগেই এবিষয়ে আপনাকে অতি অবশ্যই কিছু একটা করতে হবে। তা না হলে, আপনার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে আপনাকে সমাধিস্থ করার সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্ত লোকরা শলোমন ও আমাকে অপরাধী বলবে।”
22 বৎশেবা যখন রাজার সঙ্গে এ নিয়ে কথাবার্তা বলছেন, তখন ভাববাদী নাথন রাজার সঙ্গে দেখা করতে এলো। 23 রাজার ভৃত্যরা তাঁকে বলল, “ভাববাদী নাথন আপনার কাছে এসেছেন।” নাথন রাজার সামনে আনত হয়ে রাজাকে সম্মান দেখিয়ে বলল, 24 “মহারাজ আপনি কি আদোনিয়কে আপনার পরবর্তী রাজা হিসেবে ঘোষণা করেছেন? আপনি কি ঠিক করেছেন এখন থেকে সে-ই রাজ্য শাসন করবে? 25 আমি একথা বলছি কারণ আদোনিয় আজ উপত্যকায় গিয়ে মঙ্গল নৈবেদ্য হিসেবে বহু গরু ও মেষ বলি দিয়েছে। তারপর যাজক অবিয়াথর, আপনার অন্যান্য পুত্রদের ও সেনাপতিদের সবাইকে ভোজসভায় নিমন্ত্রণ করেছে। ওরা সবাই মিলে এখন আদোনিয়র জয়ধ্বনি দিয়ে বলছে, ‘মহারাজ আদোনিয় দীর্ঘ জীবন লাভ করুন।’ 26 কিন্তু আদোনিয় ভোজসভায় আপনার পুত্র শলোমন, যাজক সাদোক, যিহোয়াদার পুত্র বনায় বা আমাকে নিমন্ত্রণ করে নি। 27 মহারাজ আপনি কি আমাদের কিছু না জানিয়েই সব ঠিক করে ফেললেন? দয়া করে বলুন, আপনার পর কে রাজা হবে।”
28 তখন রাজা দায়ূদ বললেন, “বৎশেবাকে ভেতরে আসতে বলো।” বৎশেবা এসে রাজার সামনে দাঁড়ালেন।
29 এরপর রাজা দায়ূদ ঈশ্বরকে সাক্ষী করে বললেন, “প্রভু আমাকে জীবনের সমস্ত বিপদ-আপদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। আমি সেই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নামে যে কথা আগে শপথ করেছিলাম সে কথাই আবার বলছি। 30 আমি প্রতিশ্রুতি করেছিলাম যে আমার পর তোমার পুত্র শলোমন রাজা হবে। আমি সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করব না। তাই আজও বলছি, আমার পরে শলোমনই আমার সিংহাসনে বসবে।”
স্তিফানের বিরুদ্ধে ইহুদীগণ
8 স্তিফান ঈশ্বরের শক্তি ও অনুগ্রহে পরিপূর্ণ ছিলেন; তিনি জনসাধারণের মধ্যে নানান অলৌকিক ও পরাক্রান্ত কাজ করতে লাগলেন। 9 কিন্তু ইহুদীদের মধ্যে কিছু লোক এসে স্তিফানেব সঙ্গে তর্ক শুরু করল। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সমাজ-গৃহ থেকে এসেছিল যাদের নাম ছিল লিবর্ত্তীনদের সমাজ-গৃহ, আলেকসান্দ্রীয় ও কুরীনীয়। কিছু ইহুদীরা এই সমাজ-গৃহে যেত। অন্য ইহুদীরা কিলিকিয়া ও এশিয়া থেকে এসেছিল। 10 তাদের সঙ্গে বিজ্ঞতায় কথা বলতে পবিত্র আত্মা স্তিফানকে সাহায্য করেছিলেন। তাঁর কথা এতো শক্তিশালী ছিল যে তারা কেউ তাঁর সামনে দাঁড়াতে পারল না।
11 তখন তারা কয়েকজন লোককে ঘুষ দিয়ে মিথ্যে বলাল। যারা বলল, “আমরা শুনেছি যে স্তিফান মোশি ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে নিন্দা করছে।” 12 এইভাবে তারা জনসাধারণ, ইহুদী নেতাদের ও ব্যবস্থার শিক্ষকদের উত্তেজিত করে তুলল। তারা এসে স্তিফানকে ধরে নিয়ে মহাসভার সামনে হাজির করল।
13 এরপর তারা মিথ্যা সাক্ষী দাঁড় করাল, যারা বলল, “এই লোক পবিত্র মন্দিরের বিরুদ্ধে ও বিধি-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলতে কখনও নিবৃত্ত হয় না। 14 আমরা একে বলতে শুনেছি যে এই নাসরতীয় যীশু এই স্থান ধ্বংস করবে আর মোশির দেওয়া প্রথা বদলে দেবে।” 15 তখন মহাসভায় যারা বসেছিল তারা সকলে স্তিফানের দিকে একদৃষ্টে চেয়ে দেখল, স্তিফানের মুখ স্বর্গদূতের মুখের মত উজ্জ্বল।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International