Revised Common Lectionary (Semicontinuous)
ইস্রায়েলের লোকদের সমস্যা
8 সেই সময় একজন নতুন রাজা মিশর শাসন করতে লাগলেন। এই রাজা যোষেফকে চিনতেন না। 9 রাজা তাঁর প্রজাদের উদ্দেশ্যে বললেন, “ইস্রায়েলের লোকদের দিকে চেয়ে দেখ, ওরা সংখ্যায় অসংখ্য এবং আমাদের থেকে বেশী শক্তিশালী! 10 তাদের শক্তিবৃদ্ধি বন্ধ করবার জন্য আমাদের কিছু একটা চতুরতার সাহায্য নিতেই হবে। কারণ, এখন যদি যুদ্ধ লাগে তাহলে ওরা আমাদের পরাজিত করবার জন্য ও আমাদের দেশ থেকে বার করে দেবার জন্য আমাদের শত্রুদের সঙ্গে হাত মেলাতে পারে।”
11 মিশরের লোকরা তাই ইস্রায়েলের লোকদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলার ফন্দি আঁটল। অতএব ইস্রায়েলীয়দের তত্ত্বাবধান করবার জন্য মিশরীয়রা ক্রীতদাস মনিবদের নিয়োগ করল। এই দাস শাসকরা ইহুদীদের দিয়ে জোর করে রাজার জন্য পিথোম ও রামিষেষ নামে দুটি শহর নির্মাণ করাল। এই দুই শহরে রাজা শস্য এবং অন্যান্য জিনিসপত্র মজুত করে রাখলেন।
12 মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের কঠিন পরিশ্রম করতে বাধ্য করল। কিন্তু তাদের যত বেশী কঠিন পরিশ্রম করানো হতে থাকল ততই ইস্রায়েলের লোকদের সংখ্যাবৃদ্ধি এবং বিস্তার ঘটতে থাকল। ফলে মিশরীয়রা ইস্রায়েলের লোকদের আরও বেশী ভয় পেতে শুরু করল। 13 আর সেইজন্য তারা উদ্বিগ্ন হয়ে ইস্রায়েলের লোকদের প্রতি আরও বেশী নির্দয় হয়ে উঠল। ফলস্বরূপ মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের আরো কঠিন পরিশ্রম করতে বাধ্য করল।
14 মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের জীবন দুর্বিসহ করে তুলল। তারা ইস্রায়েলীয়দের ইঁট তৈরি করবার জন্য গাদা গাদা ভারী ঢালাই এর মিশ্রণ বহন করতে এবং মাঠে লাঙল চালাতে বাধ্য করেছিল। তারা ইস্রায়েলীয়দের সব রকমের কঠিন কাজ করতে বাধ্য করেছিল।
ঈশ্বরকে অনুসরণকারী ধাইমাগণ
15 ইস্রায়েলীয় মহিলাদের সন্তান প্রসবে সাহায্য করবার জন্য দুজন ধাইমা ছিল। তাদের দুজনের নাম ছিল শিফ্রা ও পূয়া। 16 স্বয়ং রাজা এসে সেই দুই ধাইমাকে বললেন, “দেখছি তোমরা বরাবর হিব্রু মহিলাদের সন্তান প্রসবের সময় সাহায্য করে চলেছো। দেখ, যদি কেউ কন্যা সন্তান প্রসব করে তাহলে ঠিক আছে, তাকে বাঁচিয়ে রেখ, কিন্তু পুত্র সন্তান হলে সঙ্গে সঙ্গেই সেই সদ্যোজাত পুত্র সন্তানকে হত্যা করবে।”
17 কিন্তু ধাইমা দুজন ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস রেখে রাজার আদেশ অমান্য করে পুত্র সন্তানদের বাঁচিয়ে রাখল। 18 রাজা এবার তাদের ডেকে পাঠিয়ে বললেন, “তোমরা এটা কি করলে? কেন তোমরা আমার অবাধ্য হয়েছ এবং পুত্র সন্তানদের বাঁচিয়ে রেখেছ?”
19 ধাইমারা রাজাকে বলল, “হে রাজা, ইস্রায়েলীয় মহিলারা মিশরের মহিলাদের থেকে অনেক বেশী শক্তিশালী। আমরা তাদের সাহায্যের জন্য পৌঁছাবার আগেই ইস্রায়েলীয় মহিলারা সন্তান প্রসব করে ফেলে।” 20-21 ঈশ্বর ঐ ধাইমাদের এই আচরণে খুশী হলেন। তাই ঈশ্বর ধাইমাদের আশীর্বাদ করলেন এবং তাদের নিজেদের পরিবার তৈরী করতে দিলেন। ইস্রায়েলীয়রা সংখ্যায় আরও বাড়তে থাকল এবং আরও শক্তিশালী হয়ে উঠল।
22 পরে ফরৌণ নিজস্ব লোকদের আদেশ দিলেন, “তোমরা কন্যা সন্তান বাঁচিয়ে রাখতে পারো। কিন্তু পুত্র সন্তান হলে তাকে নীলনদে ছুঁড়ে ফেলতে হবে।”
শিশু মোশি
2 লেবি পরিবারের একজন পুরুষ লেবি পরিবারেরই এক কন্যাকে বিয়ে করেছিল। 2 সে সন্তানসম্ভবা হল এবং একটা সুন্দর ফুট-ফুটে পুত্র সন্তানের জন্ম দিল। পুত্র সন্তান দেখতে এত সুন্দর হয়েছিল যে তার মা তাকে তিন মাস লুকিয়ে রেখেছিল। 3 তিন মাস পরে যখন সে তাকে আর লুকিয়ে রাখতে পারছিল না, তখন সে একটি ঝুড়িতে আলকাতরা মাখালো এবং তাতে শিশুটিকে রেখে নদীর তীরে লম্বা ঘাসবনে রেখে এলো। 4 শিশুটির বড় বোন তার ভাইয়ের কি অবস্থা হতে পারে দেখবার জন্য দূরে দাঁড়িয়ে ভাইয়ের ঝুড়ির দিকে লক্ষ্য রাখছিল। 5 ঠিক তখনই ফরৌণের মেয়ে নদীতে স্নান করতে এসেছিল। সে দেখতে পেল ঘাসবনে একটি ঝুড়ি ভাসছে। তার সহচরীরা তখন নদী তীরে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। তাই সে তার সহচরীদের একজনকে ঝুড়িটা তুলে আনতে বলল। 6 তারপর রাজকন্যা ঝুড়িটা খুলে দেখল যে তাতে রয়েছে একটি শিশুপুত্র। শিশুটি তখন কাঁদছিল। আর তা দেখে রাজকন্যার বড় দয়া হল। ভাল করে শিশুটিকে লক্ষ্য করার পর সে বুঝতে পারল যে শিশুটি হিব্রু।
7 এবার শিশুটির দিদি আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে রাজকন্যাকে বলল, “আমি কি আপনাকে সাহায্যের জন্য কোনও হিব্রু ধাত্রীকে ডেকে আনব যে অন্তত শিশুটিকে দুধ খাওয়াতে পারবে?”
8 রাজকন্যা বলল, “বেশ যাও।”
সুতরাং মেয়েটি গেল এবং শিশুটির মাকে ডেকে আনল।
9 রাজকন্যা তাকে বলল, “আমার হয়ে তুমি এই শিশুটিকে দুধ পান করাও। এরজন্য আমি তোমাকে টাকা দেব।” তারই মা শিশুটিকে যত্ন করে বড় করে তুলতে লাগল। 10 শিশুটি বড় হয়ে উঠলে মহিলাটি তার সন্তানকে রাজকন্যাকে দিয়ে দিল। রাজকন্যা শিশুটিকে নিজের ছেলের মতোই গ্রহণ করে তার নাম দিল মোশি। শিশুটিকে সে জল থেকে পেয়েছিল বলে তার নামকরণ করা হল মোশি।
মন্দির পর্যন্ত যাওয়ার জন্য দায়ূদের রচিত একটি গীত।
124 যদি প্রভু আমাদের দিকে না থাকতেন তাহলে কি হতে পারত?
হে ইস্রায়েল, আমাকে উত্তর দাও।
2 যখন লোকে আমাদের আক্রমণ করেছিলো,
তখন যদি প্রভু আমাদের দিকে না থাকতেন তাহলে কি অবস্থা হত?
3 যখন আমাদের শত্রুরা আমাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছিলো,
তখন হয়তো তারা আমাদের জ্যান্ত গিলে ফেলত।
4 আমাদের শত্রুরা আমাদের বন্যার মত ধুয়ে দিয়ে যেতো,
নদীর মত ডুবিয়ে দিয়ে যেতো।
5 ঐ গর্বিত লোকরা মুখের ওপর ছাড়িযে যাওয়া জলের মত হত
এবং আমাদের ডুবিয়ে দিত।
6 প্রভুর প্রশংসা কর!
প্রভু আমাদের শত্রুদের হাতে, আমাদের ধরা পড়তে ও হত হতে দেন নি।
7 আমরা সেই পাখির মত, যে জালে জড়িয়ে পড়েও পালিয়ে গিয়েছিলো।
জাল ছিঁড়ে গেল এবং আমরা পালিয়ে গেলাম।
8 প্রভুর কাছ থেকে আমাদের সাহায্য আসে।
প্রভুই স্বর্গ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন।
ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে জীবন উৎসর্গ কর
12 ভাই ও বোনেরা, আমার মিনতি এই, ঈশ্বর আমাদের প্রতি দয়া করেছেন বলে তোমাদের জীবন ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে জীবিত বলিরূপে উৎসর্গ কর, তা তাঁর কাছে পবিত্র প্রীতিজনক হোক্। ঈশ্বরের উপাসনা করার জন্য তোমাদের কাছে এ এক আত্মিক উপায়। 2 এই জগতের লোকদের মতো নিজেদের চলতে দিও না, বরং নতুন চিন্তাধারায় নিজেদের পরিবর্তন কর; যেন বুঝতে পার ঈশ্বর কি চান, কোনটা ভাল, কোনটা তাঁকে খুশী করে ও কোনটা সিদ্ধ।
3 ঈশ্বর আমাকে একটি বিশেষ বর দান করেছেন, তাই তোমাদের মধ্যে প্রত্যেককে আমার কিছু বলার আছে। নিজের সম্বন্ধে যেমন ধারণা থাকা উচিত তার থেকে উঁচু ধারণা পোষণ করো না; কিন্তু ঈশ্বর যাকে যে পরিমাণ বিশ্বাস দিয়েছেন তোমরা সেইমতো নিজেদের সম্বন্ধে ধারণা পোষণ কর। 4 আমাদের সকলের দেহ আছে আর সেই দেহে অনেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আছে। এই অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলি একই কাজ করে না। 5 ঠিক তেমনই আমরা অনেকে মিলে খ্রীষ্টেতে দেহ গঠন করি। আমরা সেই দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত।
6 আর ঈশ্বরের অনুগ্রহ অনুসারেই আমরা ভিন্ন ভিন্ন বরদান পেয়েছি। কেউ যদি ভাববাণী বলার বরদান পেয়ে থাকে তবে সে তার বিশ্বাসের পরিমাণ অনুসারে ভাববাণী বলুক। 7 যার সেবা করবার বরদান আছে সে তা সেবা কর্মেই প্রয়োগ করুক। যে শিক্ষক, সে শিক্ষার দ্বারা লোকদের উৎসাহ দিক। 8 যে উপদেষ্টা, সে উপদেশ দানের কাজ করুক। যার অপরকে সাহায্যদানের ক্ষমতা আছে, সে উদারভাবেই সাহায্য করুক। কর্ত্তৃত্ব যার হাতে সে সযত্নেই কর্ত্তৃত্ব করুক। যে দয়া করে, সে আনন্দের সঙ্গেই তা করুক।
পিতর বললেন যীশুই খ্রীষ্ট
(মার্ক 8:27-30; লূক 9:18-21)
13 এরপর যীশু কৈসরিয়া, ফিলিপী অঞ্চলে এলেন। তিনি তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞেস করলেন, “মানবপুত্র[a] কে? এ বিষয়ে লোকে কি বলে?”
14 তাঁরা বললেন, “কেউ কেউ বলে আপনি বাপ্তিস্মদাতা যোহন, কেউ বলে এলিয়,[b] আবার কেউ বলে আপনি যিরমিয়[c] বা ভাববাদীদের মধ্যে কেউ একজন হবেন।”
15 তিনি তাঁদের বললেন, “কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে?”
16 এর উত্তরে শিমোন পিতর বললেন, “আপনি সেই মশীহ (খ্রীষ্ট), জীবন্ত ঈশ্বরের পুত্র।”
17 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, “যোনার ছেলে শিমোন, তুমি ধন্য, কোনো মানুষের কাছ থেকে একথা তুমি জাননি, কিন্তু আমার স্বর্গের পিতা একথা তোমায় জানিয়েছেন। 18 আর আমিও তোমাকে বলছি, তুমি পিতর[d] আর এই পাথরের ওপরেই আমি আমার মণ্ডলী গেঁথে তুলব। মৃত্যুর কোন শক্তি[e] তার ওপর জয়লাভ করতে পারবে না। 19 আমি তোমাকে স্বর্গরাজ্যের চাবিগুলি দেব, তাতে তুমি এই পৃথিবীতে যা বাঁধবে তা স্বর্গেও বেঁধে রাখা হবে। আর পৃথিবীতে যা হতে দেবে তা স্বর্গেও হতে দেওয়া হবে।”
20 এরপর যীশু তাঁর শিষ্যদের দৃঢ়ভাবে নিষেধ করে দিলেন, যেন তারা কাউকে না বলে তিনিই খ্রীষ্ট।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International