Revised Common Lectionary (Semicontinuous)
ঈশ্বর অব্রামকে ডাক দেন
12 প্রভু অব্রামকে বললেন,
“তুমি এই দেশ, নিজের জাতিকুটুম্ব
এবং পিতার পরিবার ত্যাগ করে,
আমি যে দেশের পথ দেখাব সেই দেশে চল।
2 তোমা হতে আমি এক মহাজাতি উৎপন্ন করব।
তোমাকে আশীষ দেব
এবং তুমি বিখ্যাত হবে।
অন্যকে আশীর্বাদ জানাতে
লোকে তোমার নাম নেবে।
3 যারা তোমাকে আশীর্বাদ করবে, সেই লোকদের আমি আশীর্বাদ করব
এবং যারা তোমাকে অভিশাপ দেবে, সেই লোকদের আমি অভিশাপ দেব।
তোমার মাধ্যমে আমি
পৃথিবীর সব লোকদের আশীর্বাদ করব।”
অব্রামের কনান যাত্রা
4 অতঃপর অব্রাম প্রভুর আজ্ঞা পালন করলেন। তিনি হারণ ত্যাগ করলেন এবং লোট তাঁর সঙ্গে গেলেন। অব্রামের বয়স তখন 75 বছর। 5 অব্রাম সঙ্গে নিলেন স্ত্রী সারী, ভ্রাতুষ্পুত্র লোট এবং হারণে তাঁদের যা কিছু ছিল সে সবই নিয়ে গেলেন। হারণে অব্রামের যেসব দাসদাসী ছিল তাদেরও তিনি সঙ্গে নিলেন। দলবল সমেত হারণ ত্যাগ করে অব্রাম কনান দেশে যাত্রা করলেন। 6 অব্রাম কনান দেশের মধ্য দিয়ে শিখিম শহরে গেলেন এবং তারপরে মোরিতে এক বিশাল গাছের কাছে গেলেন। সেই সময় কনানীয়রা সেখানে বাস করতো।
7 প্রভু অব্রামের সকাশে আত্মপ্রকাশ করলেন। প্রভু বললেন, “তোমার উত্তরপুরুষদের আমি এই দেশ দেব।”
প্রভু যেখানে অব্রামকে দর্শন দিয়েছিলেন সেখানে অব্রাম প্রভুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ সম্পাদনের জন্য পাথরের একটা বেদী নির্মাণ করলেন। 8 তারপর অব্রাম সেই স্থান ত্যাগ করে গেলেন বৈথেলের পূর্বদিকে অবস্থিত পর্বতে এবং সেখানে তাঁর শিবির স্থাপন করলেন। বৈথেল নগর ছিল পশ্চিম দিকে আর অয় ছিল পূর্ব দিকে। সেখানে অব্রাম আর একটি বেদী নির্মাণ করলেন এবং প্রভুর উপাসনা করলেন। 9 অতঃপর তিনি পুনরায় তাঁর যাত্রা শুরু করলেন। তিনি নেগেভের দিকে অগ্রসর হলেন।
33 হে ভালো লোকরা, তোমরা প্রভুতে আনন্দ কর!
ভাল লোকদের পক্ষে তাঁর প্রশংসা করাই ভালো!
2 বীণা বাজাও এবং প্রভুর প্রশংসা কর!
দশতারা বাদ্যযন্ত্র সহযোগে প্রভুর গান গাও।
3 তাঁর জন্য একটা নতুন গান গাও।
অত্যন্ত সুন্দরভাবে বাজাও এবং আনন্দ ধ্বনি দাও!
4 প্রভুর বাক্য সত্য। তিনি যা কিছু করেন,
তাতে তোমরা নির্ভর করতে পারো।
5 ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ হতে ও ভাল কাজ করতে ভালবাসেন।
প্রভুর প্রকৃত ভালোবাসা পৃথিবীকে ভরিয়ে দেয়!
6 প্রভু নির্দেশবাক্য উচ্চারণ করেছিলেন এবং এই পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছিল।
ঈশ্বরের মুখের নিঃশ্বাস থেকেই পৃথিবীর সবকিছু সৃষ্টি হয়েছে।
7 ঈশ্বর, সমুদ্রের জল এক জায়গায় জমা করেছেন।
তিনি সমুদ্রকে তার জায়গায় রাখেন।
8 সমগ্র পৃথিবীর সকলের উচিৎ ঈশ্বরকে ভয় এবং শ্রদ্ধা করা।
জগতের প্রত্যেকটি মানুষের তাঁকে ভয় করা উচিত।
9 কেন? কারণ ঈশ্বর একটি আজ্ঞা দেন এবং সেটি ঘটে।
যদি তিনি বলেন “থাম” তাহলেই সব কিছু বন্ধ হয়ে যায়।
10 প্রভু প্রত্যেকের উপদেশকেই অর্থহীন করে তুলতে পারেন।
তিনি জাতিদের পরিকল্পনাগুলি মূল্যহীন করে দিতে পারেন।
11 কিন্তু প্রভুর উপদেশ চিরন্তন সত্য।
তাঁর পরিকল্পনাগুলো বংশপরম্পরায় সত্য থাকে।
12 যারা প্রভুকে তাদের ঈশ্বররূপে পেয়েছে তারা সত্যিই ধন্য।
কেন? কারণ ঈশ্বরই তাদের তাঁর নিজের লোক হিসেবে মনোনীত করেছেন।
বিশ্বাসের দ্বারা প্রাপ্ত ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি
13 জগতের উত্তরাধিকারী হবার যে প্রতিজ্ঞা ঈশ্বর অব্রাহাম ও তার বংশধরদের কাছে করেছিলেন, তা বিধি-ব্যবস্থার মাধ্যমে আসেনি কিন্তু বিশ্বাসের দ্বারা যে ধার্মিকতা লাভ হয় তার মধ্য দিয়েই সেই প্রতিজ্ঞা করা হযেছিল। 14 কারণ যদি বিধি-ব্যবস্থায় নির্ভর কেউ জগতের উত্তরাধিকারী হয় তবে বিশ্বাসের কোন অর্থ হয় না এবং সেক্ষেত্রে প্রতিজ্ঞাও মূল্যহীন। 15 কারণ বিধি-ব্যবস্থা মেনে চলা না হলে তা শুধুই ঈশ্বরের ক্রোধ বয়ে আনে। বিধি-ব্যবস্থা যেখানে নেই, সেখানে তার লঙ্ঘনও নেই।
16 তাই ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতির পূর্ণতা বিশ্বাসের ফলেই লাভ হয়, যেন তা অনুগ্রহের দান হিসাবে গ্রহণ করা হয়। এইভাবে অব্রাহামের সব বংশধরদের জন্য সেই প্রতিজ্ঞা দৃঢ়ভাবে রয়েছে। যাদের বিধি-ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে কেবল তাদের জন্যই সেই প্রতিজ্ঞা রয়েছে তা নয়, কিন্তু তাদের জন্যও সেই প্রতিজ্ঞা রয়েছে যাদের অব্রাহামের মতো বিশ্বাস রয়েছে। এই প্রতিশ্রুতি তাদেরই জন্য যারা অব্রাহামের মত বিশ্বাসে চলে। অব্রাহাম আমাদের সকলেরই পিতা। 17 শাস্ত্রে লেখা আছে, “আমি তোমাকে বহু জাতির পিতা করলাম।”(A) ঈশ্বরের দৃষ্টিতে অব্রাহাম আমাদের পিতা। তিনি সেই ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন, যিনি মৃতকে জীবন দেন ও যার অস্তিত্ব নেই তাকে অস্তিত্বে আনেন।
18 অব্রাহামের সন্তান হবার কোন আশা ছিল না। কিন্তু অব্রাহাম ঈশ্বর বিশ্বাসে স্থির ছিলেন। আশা না থাকলেও আশা করে যাচ্ছিলেন, আর এই জন্যই তিনি বহুজাতির পিতা হতে পেরেছিলেন। ঠিক ঈশ্বর যেমন বলেছিলেন, “তোমার বংশধররা আকাশের তারার মত অসংখ্য হবে।”(B) 19 অব্রাহামের বয়স তখন একশ বছর, কাজেই সন্তান লাভের জন্য তাঁর দৈহিক ক্ষমতা শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাঁর স্ত্রী সারার সন্তান ধারণ করার ক্ষমতা ছিল না। অব্রাহাম এসব কথা চিন্তা করেছিলেন, কিন্তু ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসে তিনি দুর্বল হয়ে পড়েন নি। 20 ঈশ্বর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার পূর্ণতার বিষয়ে অব্রাহামের কোন সন্দেহ ছিল না। অব্রাহাম অবিশ্বাস করলেন না বরং তিনি বিশ্বাসে বলবান হয়ে উঠলেন এবং ঈশ্বরের প্রশংসা করলেন। 21 ঈশ্বর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা যে তিনি সফল করতে পারবেন সেই সম্বন্ধে অব্রাহাম সুনিশ্চিত ছিলেন। 22 আর তাই, “এই বিশ্বাস তাকে ঈশ্বরের সম্মুখে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেছিল।” 23 শাস্ত্রে এই কথা শুধু যে তাঁর জন্যই লেখা হয়েছিল তা নয়, 24 ঐ কথাগুলি আমাদের জন্যও লেখা হয়েছে। আমাদের বিশ্বাসকেও ঈশ্বর আমাদের পক্ষে ধার্মিকতা হিসাবে প্রতিপন্ন করলেন। কারণ যিনি প্রভু যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করেছেন, সেই ঈশ্বরে আমরা বিশ্বাস করি। 25 আমাদের পাপের জন্য সেই যীশুকে মৃত্যুর হাতে সমর্পণ করা হল এবং আমাদের ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন করার জন্য যীশু মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হয়ে উঠলেন।
যীশু মথিকে মনোনীত করলেন
(মার্ক 2:13-17; লূক 5:27-32)
9 যীশু সেখান থেকে চলে যাবার সময় দেখলেন একজন লোক কর আদায়ের গদিতে বসে আছে। তাঁর নাম মথি। যীশু তাঁকে বললেন, “আমার সঙ্গে এস।” মথি তখনই উঠে তাঁর সঙ্গে গেলেন।
10 পরে মথির বাড়িতে যীশু খেতে বসলে সেখানে অনেক কর আদায়কারী ও পাপী-তাপী মানুষ এসে যীশু ও তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে খেতে বসল। 11 ফরীশীরা তা দেখে যীশুর অনুগামীদের বললেন, “তোমাদের গুরু কর আদায়কারী ও পাপী-তাপীর সঙ্গে কেন খাওয়া-দাওয়া করেন?”
12 একথা শুনে যীশু বললেন, “যারা সুস্থ আছে তাদের জন্য ডাক্তারের প্রয়োজন নেই, বরং রোগীদেরই ডাক্তারের প্রয়োজন। 13 বলিদান নয়, আমি চাই তোমরা দয়া করতে শেখ,(A) শাস্ত্রের এই কথার অর্থ কি তা বুঝে দেখ। কারণ সৎ ও ধার্মিক লোকদের নয়, পাপীদেরই আমি ডাকতে এসেছি।”
মৃত মেয়ের জীবনদান ও অসুস্থ স্ত্রীলোকের আরোগ্যলাভ
(মার্ক 5:21-43; লূক 8:40-56)
18 যীশু যখন তাদের এসব কথা বলছিলেন, সেই সময় সমাজ-গৃহের নেতাদের একজন তাঁর কাছে এসে নতজানু হয়ে বললেন, “আমার মেয়েটা এই মাত্র মারা গেল, আপনি এসে তাকে একটু স্পর্শ করুন তাহলে সে বেঁচে উঠবে।”
19 তখন যীশু উঠে তাঁর সঙ্গে গেলেন, আর তাঁর শিষ্যরাও তাঁর সঙ্গে চললেন।
20 পথে যাবার সময় একজন স্ত্রীলোক যীশুর পিছন দিকে এসে তাঁর পোশাকের খুঁট স্পর্শ করল, সে বারো বছর ধরে রক্তস্রাবে কষ্ট পাচ্ছিল। 21 সে মনে মনে ভাবল, “আমি যদি যীশুর পোশাক কেবল ছুঁতে পারি, তাহলেই ভাল হয়ে যাব।”
22 যীশু ঘুরে দাঁড়ালেন আর তাকে দেখতে পেয়ে বললেন, “বাছা, তুমি মনে সাহস রাখো, তোমার বিশ্বাসই তোমায় সুস্থ করল।” তখন থেকে স্ত্রীলোকটি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেল।
23 যীশু সেই নেতার বাড়িতে পরে গিয়ে দেখলেন, যারা করুণ সুরে বাঁশি বাজায় তারা রয়েছে আর লোকরা চিৎকার করে কাঁদছে। 24 যীশু বললেন, “তোমরা বাইরে যাও। মেয়েটি মরে নি, ও তো ঘুমিয়ে আছে।” লোকগুলো এই কথা শুনে তাঁকে নিয়ে হাসাহাসি করতে লাগল। 25 লোকদের ঘর থেকে বার করে দেওয়া হলে, যীশু ভেতরে গিয়ে মেয়েটির হাত ধরলেন, তাতে সে উঠে বসল। 26 এই ঘটনার কথা সেই অঞ্চলের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International