Revised Common Lectionary (Complementary)
94 প্রভু, আপনিই সেই ঈশ্বর যিনি আসেন এবং লোকেদের শাস্তি দেন।
আপনি সেই ঈশ্বর যিনি মানুষের জন্য শাস্তি নিয়ে আসেন।
2 আপনিই সারা পৃথিবীর বিচারক।
উদ্ধত লোকদের যে শাস্তি প্রাপ্য তা আপনি ওদের দিন।
3 প্রভু, দুষ্ট লোকরা আর কতকাল ধরে উল্লাস করবে?
আরও কতদিন প্রভু?
4 আরও কতদিন ধরে ওই দুষ্কৃতকারীরা
তাদের দুষ্কৃতির বড়াই করে যাবে?
5 প্রভু, ওরা আপনার লোকদের আঘাত করে।
ওরা আপনার লোকদের কষ্ট দিয়েছে।
6 আমাদের দেশে যে সব বিধবা ও বিদেশী থাকে, ওই দুর্জনরা তাদের হত্যা করে।
অনাথদেরও ওরা খুন করে।
7 ওরা বলে, ওরা যে সব মন্দ কাজ করে প্রভু তা দেখেন না!
ওরা বলে কি ঘটেছে ইস্রায়েলের ঈশ্বর তাও জানে না।
8 তোমরা নিষ্ঠুর লোকরা সত্যই নির্বোধ মানুষ!
আর কবে তোমরা শিক্ষা লাভ করবে?
তোমরা মন্দ লোকরা সত্যি অপগণ্ড!
তোমরা অবশ্যই বোঝবার চেষ্টা কর।
9 ঈশ্বর আমাদের কান সৃষ্টি করেছেন,
তাই নিশ্চয়ই তাঁরও কান রয়েছে এবং তিনি শুনতেও পান কি ঘটছে!
ঈশ্বর আমাদের চোখ দিয়েছেন,
তাই নিশ্চিতভাবে কি ঘটছে তা তিনি দেখতে পান!
10 ঈশ্বর ওই লোকদের মধ্যে নিয়মানুবর্তিতা আনবেন।
ওই লোকেরা কি করবে তা ঈশ্বরই ওদের শেখাবেন।
11 মানুষ কি ভাবছে তাও ঈশ্বর জানেন।
ঈশ্বর জানেন যে মানুষ বাতাসের একটি ফুৎকারের মত।
12 প্রভু যে লোককে নিয়মানুবর্তী করেন সে সত্যই সুখী হবে।
ঈশ্বর তাকে বেঁচে থাকার প্রকৃত পথ কি তা দেখাবেন।
13 ঈশ্বর, সংকটের সময় যে লোক শান্ত থাকে তাকেই আপনি সাহায্য করবেন।
মন্দ লোকেদের যতক্ষণ পর্যন্ত না কবরে পাঠানো হয় ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি তাকে শান্ত থাকতে সাহায্য করবেন।
14 প্রভু তাঁর লোকদের ত্যাগ করবেন না।
সাহায্য না করে তিনি ওদের ত্যাগ করবেন না।
15 ন্যায্য বিচার ফিরে আসবে এবং ন্যায়পরায়ণতা নিয়ে আসবে।
তারপর সৎ এবং ভাল লোকরা অবশ্যই থাকবে।
16 মন্দ লোকদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কেউই আমায় সাহায্য করে নি।
যারা মন্দ কাজ করে, তাদের সঙ্গে লড়াই করার জন্য কোন লোক আমার পাশে দাঁড়ায় নি।
17 যদি প্রভু আমায় সাহায্য না করতেন
আমি এতদিনে কবরের গর্ভে নীরব হয়ে যেতাম।
18 আমি জানি আমি পতনোন্মুখ ছিলাম,
কিন্তু প্রভু তাঁর অনুগামীদের সাহায্য করেছেন।
19 আমি প্রচণ্ড চিন্তিত ও বিমর্ষ ছিলাম।
কিন্তু প্রভু, আপনি আমায় সান্ত্বনা দিয়ে আমায় সুখী করেছেন!
20 ঈশ্বর আপনি ক্রুর বিচারকদের সাহায্য করবেন না।
তাই মন্দ বিচারকরা মানুষের জীবনকে আরও কঠিনতর করার জন্য নিয়ম ব্যবহার করে।
21 ওই বিচারকরা ধার্ম্মিক লোকদের আক্রমণ করে।
ওরা নিরপরাধ লোকদের দোষী বলে বিচার করে এবং ওদের হত্যা করে।
22 কিন্তু পর্বতগুলির সু-উচ্চে প্রভুই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
ঈশ্বর আমার শিলা, আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
23 মন্দ কাজ করার জন্য ঈশ্বর ওই দুষ্ট বিচারকদের শাস্তি দেবেন।
পাপ করেছে বলে ঈশ্বর ওদের ধ্বংস করবেন।
প্রভু আমাদের ঈশ্বর, ওই দুষ্ট বিচারকদের ধ্বংস করবেন।
যিহূদায় দুর্ভিক্ষ
1 বহুকাল আগে বিচারকদের[a] রাজত্ব কালে একবার বেশ খারাপ সময় এসেছিল। সেই সময় দেশে খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছিল। ইলীমেলক নামে একজন লোক যিহূদার বৈৎলেহম থেকে চলে গিয়েছিল। সে স্ত্রী ও দুই পুত্রকে নিয়ে পাহাড়ি দেশ মোয়াবে চলে গিয়েছিল। 2 তার স্ত্রীর নাম ছিল নয়মী আর দুই পুত্রের নাম মহলোন ও কিলিয়োন। এরা সব বৈৎলেহমের ইফ্রাথীয় পরিবারের। এরা পাহাড়ি দেশ মোয়াবে বসবাস করতে লাগল।
3 তারপর এক দিন নয়মীর স্বামী ইলীমেলক মারা গেল। নয়মী আর তার দুই পুত্র থেকে গেল। 4 উভয় পুত্ররই মোয়াব দেশের কন্যাদের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল। একজনের স্ত্রীর নাম অর্পা, আরেকজনের নাম রূৎ। তারা দশ বছর মোয়াবে বাস করেছিল। 5 মহলোন এবং কিলিয়োন মারা গেল। স্বামী আর পুত্রদের হারিয়ে নয়মী একাই পড়ে রইল।
নয়মী দেশে ফিরে গেল
6 পাহাড়ি দেশ মোয়াবে থাকার সময় নয়মী শুনল প্রভু তাঁর লোকদের সাহায্য করেছিলেন। তিনি যিহূদার লোকদের খাদ্য দিয়েছিলেন শুনে নয়মী ঠিক করলো, মোয়াব ছেড়ে সে দেশে ফিরে যাবে। তার পুত্রবধূরাও তার সঙ্গে যেতে চাইল। 7 তারা সে দেশ ছেড়ে পায়ে হেঁটে যিহূদায় ফিরে আসার জন্য রওনা হল।
8 নয়মী তার পুত্রবধূদের বলল, “তোমরা দুজনেই দেশে মায়ের কাছে চলে যাও। আমার সঙ্গে আর আমার পুত্রদের সঙ্গে তোমরা খুবই ভাল ব্যবহার করে এসেছো। তাই আমি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করি তিনিও যেন তোমাদের প্রতি সদয় হন। 9 আমি আরও প্রার্থনা করি, তিনি যেন তোমাদের স্বামী আর সুন্দর একটি সুখের ঘরের ব্যবস্থা করে দেন।” এই বলে নয়মী তাদের চুম্বন করলো। তারা কাঁদতে লাগল।
10 পুত্রবধূরা বলল, “কিন্তু আমরা আপনার সঙ্গে আপনার পরিবারেই যেতে চাই।”
11 নয়মী বলল, “না, মেয়েরা, তোমরা তোমাদের বাড়ীতেই ফিরে যাও। আমার সঙ্গে গিয়ে কি হবে? আমি তো তোমাদের কোনো উপকার করতে পারব না। আমার কোনো পুত্র নেই যে তোমাদের বিয়ে করবে। 12 যাও, ঘরে ফিরে যাও। আমি আর এই বৃদ্ধ বয়সে বর জোটাতে পারবো না। এমনকি নতুন করে বিয়ে করার কথা ভাবলেও আমি তোমাদের উপকার করতে পারব না। ধরো, রাত্রেই আমি গর্ভবতী হলাম, ধরো আমার দু-দুটো পুত্রও হয়ে গেল, কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হবে না। 13 যতদিন না তারা বিয়ের যোগ্য হচ্ছে ততদিন তোমাদের অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু আমি তোমাদের এত দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে বলতে পারি না। সত্যিই এসব ভাবলে মনে কষ্ট হয়। এমনিতেই আমি যথেষ্ট দুঃখিত। কারণ প্রভু আমার বিরুদ্ধে অনেক কিছু করেছেন।”
14 এই কথা শুনে তারা আবার কান্নাকাটি শুরু করল। তারপর এক সময় অর্পা নয়মীকে চুম্বন করে বিদায় নিল। কিন্তু রূৎ তাকে জড়িয়ে ধরেই থেকে গেল।
15 নয়মী বলল, “তোমার বড়জা নিজের লোকের কাছে এবং তার নিজের দেবতাদের কাছে চলে গেল। তোমারও তাই করা উচিৎ।”
16 রূৎ বলল, “আমাকে তুমি তাড়িয়ে দিয়ো না মা! আমাকে দেশে ফিরে যেতে তুমি জোর করো না। আমি তোমার কাছেই থাকবো। তুমি যেখানে যাবে, আমিও সেখানে যাব। তুমি যেখানে শোবে, আমি সেখানেই শোব। যারা তোমার নিজের লোক, তারা আমারও নিজের লোক। তোমার ঈশ্বর হবেন আমারও ঈশ্বর। 17 তোমার মৃত্যু যেখানে, আমারও মৃত্যু সেখানে। সেখানেই হবে আমার কবর। এই আমার প্রতিশ্রুতি। যদি আমি আমার প্রতিশ্রুতি না রাখি, প্রভু আমায় শাস্তি দেবেন। একমাত্র মৃত্যু ছাড়া কেউ আমাকে তোমার কাছ থেকে সরিয়ে নিতে পারবে না।”
ঘরে ফেরা
18 নয়মী বুঝলো রূৎ ভীষণ ভাবে তার সঙ্গে যেতে ইচ্ছুক। সে আর রূতকে কিছু বলল না। 19 নয়মী আর রূৎ বেরিয়ে পড়ল। যেতে যেতে তারা এসে পড়ল বৈৎলেহমে। বৈৎলেহমে পা দিতেই সেখানকার লোকরা তাদের দেখে উত্তেজিত হয়ে উঠলো। তারা বলল, “এই কি নয়মী?”
20 নয়মী তাদের বলল, “তোমরা আমাকে নয়মী বলে ডেকো না। আমাকে তোমরা মারা বলেই ডাকো। এই নামেই তোমরা আমাকে ডাকবে, কারণ সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমার জীবন দুঃখে ভরে দিয়েছেন। 21 যখন চলে গিয়েছিলাম তখন যা চেয়েছি সবই পেয়েছিলাম। কিন্তু আজ প্রভু আমার জন্যে নিজের দেশ ছাড়া আর কিছুই দেন নি। প্রভু আমায় শুধু দুঃখই দিয়েছেন। তাই কেন তোমরা আমাকে ‘সুখী’ বলে ডাকবে? সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমায় অশেষ কষ্ট দিয়েছেন।”
22 এইভাবে নয়মী ও তার মোয়াবীয়া পুত্রবধূ রূৎ পাহাড়ি দেশ মোয়াব থেকে ফিরে এল। এই দুজন নারী যখন বৈৎলেহমে এল তখন সেখানে বার্লি শস্য তোলার পালা শুরু হয়েছে।
5 তোমার চেয়ে বয়োবৃদ্ধ কাউকে কখনও কঠোরভাবে তিরস্কার করবে না; তাকে পিতার মত মনে করে তার কাছে আবেদন কর। তোমার চেয়ে যারা কমবয়সী তাদের সাথে তোমার ভাইয়ের মত ব্যবহার করো। 2 বয়স্কা মহিলাদের মায়ের মতো দেখো। যুবতীদের সঙ্গে পূর্ণ বিশুদ্ধতার সাথে বোনের মত ব্যবহার করো।
বিধবাদের তত্ত্বাবধান সম্পর্কে
3 প্রকৃত বিধবারা যারা সত্যি একাকী ও বঞ্চিত তাদের সম্মান করো; 4 কিন্তু কোন বিধবার যদি ছেলেমেয়ে ও নাতি-নাতনী থাকে তাহলে তারা আগে ঘরের মানুষেরই প্রতি তাদের দায়িত্ব পালন করতে শিখুক। তা করলে তারা তাদের পিতামাতা ও পিতামহ, মাতামহের স্নেহের ঋণ শোধ করতে পারবে। এই কাজ ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে। 5 প্রকৃত বিধবা যে পৃথিবীতে সহায়-সম্বলহীনা সে তো ঈশ্বরের ওপর ভরসা রেখে চলে। সে তো দিনরাত ঈশ্বরের কাছে সাহায্য লাভের জন্য প্রার্থনা জানায়। 6 যে বিধবা বিলাস ব্যসনেই দিন কাটায় তার কথা আলাদা, বলতে গেলে সে জীবিত থেকেও মৃত। 7 এইসব নির্দেশ তুমি বিশ্বাসীদের মনে করিয়ে দাও, যাতে কারো কোন বদনাম না হয়। 8 কোন লোক যদি তার আত্মীয় স্বজন আর বিশেষ করে তার পরিবারের লোকদের ভরণপোষন না করে, তার মানে সে বিশ্বাসীদের পথ থেকে সরে গেছে, সে তো অবিশ্বাসীর চেয়েও অধম।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International