Revised Common Lectionary (Complementary)
দায়ূদ বৎশেবাকে বিয়ে করলেন
26 বৎশেবা তাঁর স্বামীর মৃত্যুর খবর পেলেন এবং তাঁর জন্য কাঁদলেন। 27 তাঁর দুঃখের দিন অতিক্রান্ত হলে, দায়ূদ তাঁকে তাঁর বাড়ীতে নিয়ে যাবার জন্য ভৃত্য পাঠালেন। তিনি দায়ূদের পত্নী হলেন এবং দায়ূদের জন্য একটা সন্তানের জন্ম দিলেন। কিন্তু দায়ূদের এই পাপ প্রভু পছন্দ করলেন না।
নাথন দায়ূদের সঙ্গে কথা বললেন
12 প্রভু নাথনকে দায়ূদের কাছে পাঠালেন। নাথন দায়ূদের কাছে গেলেন। নাথন বললনে, “এক শহরে দু’জন লোক ছিল। একজন ছিল ধনী, অন্যজন দরিদ্র। 2 ধনী লোকটির অনেক মেষ ও গবাদি পশু ছিল। 3 দরিদ্র লোকটির একটা স্ত্রী মেষ ছাড়া আর কিছুই ছিল না। দরিদ্র লোকটি মেষটাকে খাওয়াতো। মেষটা ঐ দরিদ্র লোক ও তার সন্তান-সন্ততিদের সঙ্গেই বড় হল। মেষটা গরীব লোকটার থেকেই খাবার খেত এবং তার পেয়ালা থেকেই পান করত। মেষটা ঐ লোকটির বুকের ওপর ঘুমাতো। মেষটা লোকটির মেয়ের মতই ছিল।
4 “একদিন এক পথিক ধনী লোকটির সঙ্গে দেখা করতে এলো। ধনী লোকটি পথিককে কিছু খাবার দিতে চাইলো। কিন্তু পথিককে দেবার জন্য ধনী লোকটি তার মেষ বা গবাদি পশুর থেকে কিছুই নিতে চাইল না। ধনী লোকটি, দরিদ্র লোকটির মেষটা নিয়ে এলো এবং তাকে কেটে পথিকের জন্য রান্না করলো।”
5 দায়ূদ ধনী লোকটির ওপর ভীষণ রেগে গেলেন। তিনি নাথনকে বললেন, “এ কথা জীবন্ত প্রভুর মতই সত্য যে, যে লোক এ কাজ করেছে সে অবশ্যই মারা যাবে। 6 তাকে ঐ মেষের মূল্যের চারগুণ বেশী দিতে হবে কারণ সে এমন ভয়াবহ কাজ করেছে এবং তার কোন করুণা ছিল না।”
নাথন দায়ূদকে তার পাপকর্মের কথা বললেন
7 নাথন দায়ূদকে বললেন, “তুমিই সেই ধনী ব্যক্তি। প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর এই কথাই বলেন, ‘আমি তোমাকে ইস্রায়েলের রাজারূপে মনোনীত করেছি। আমি তোমাকে শৌলের হাত থেকে রক্ষা করেছি। 8 আমিই তোমাকে তার পরিবার এবং স্ত্রীগণকে দিয়েছি। এবং আমি তোমাকে ইস্রায়েল এবং যিহূদার রাজা করেছিলাম। তাও যেন যথেষ্ট ছিল না, আমি তোমাকে আরো আরো অনেক কিছু দিয়েছি। 9 কিন্তু কেন তুমি প্রভুর আদেশ অমান্য করলে? কেন তুমি সেই কাজ করলে যা তিনি (ঈশ্বর) গর্হিত বলে ঘোষণা করেছেন? তুমি হিত্তীয় ঊরিয়কে অম্মোনদের দ্বারা হত্যা করালে এবং তার স্ত্রীকে ছিনিয়ে নিলে। এইভাবে তুমি তরবারির দ্বারা ঊরিয়কে হত্যা করালে। 10 এই কারণে তোমার পরিবারও তরবারি থেকে রক্ষা পাবে না। তুমি ঊরিয় হিত্তীয়ের স্ত্রীকে তোমার স্ত্রী করার জন্য নিয়ে এসেছ। এইভাবে তুমি বুঝিয়ে দিয়েছ যে তুমি আমায় ঘৃণা করেছ।’
13 তখন দায়ূদ নাথনকে বললেন, “আমি প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছি।”
নাথন দায়ূদকে বললেন, “এই পাপের জন্যও প্রভু তোমায় ক্ষমা করে দেবেন। তুমি মরবে না। 14 কিন্তু তুমি এমন কাজ করেছ যাতে প্রভুর বিরোধীরা তাঁর ওপর থেকে শ্রদ্ধা হারিয়েছে। তাই তোমার শিশু সন্তান মারা যাবে।”
দায়ূদ ও বৎশেবার সন্তান মারা গেল
15 তারপর নাথন বাড়ী চলে গেলেন। দায়ূদ এবং বৎশেবার যে শিশুপুত্র জন্মেছিল, প্রভু তাকে অসুস্থ করলেন।
দায়ূদের একটি মস্কীল।
32 একজন ব্যক্তি, যার পাপসমূহ ক্ষমা করা হয়েছে,
সে প্রকৃতই ধন্য।
যার পাপ মুছে দেওয়া হয়েছে, সেই লোকও সত্যিই ধন্য।
2 একজন ব্যক্তি সত্যিকারের সুখী
যখন প্রভু তাকে বলেন তার কোন দোষ নেই।
সেই ব্যক্তি ভাগ্যবান, সে তার গোপন পাপ লুকিয়ে রাখে নি।
3 ঈশ্বর, আমি বার বার আপনার কাছে প্রার্থনা করেছি,
কিন্তু আমার গোপন পাপের কথা আমি বলিনি।
তাই যতবার আমি প্রার্থনা করেছি, ততবারই আমি দুর্বল হয়ে পড়েছি।
4 দিন রাত আপনি আমার জীবনকে কঠিন থেকে কঠিনতর করে তুলেছেন।
গ্রীষ্মকালের শুকনো জমির মত আমি শুকিয়ে গিয়েছিলাম।
5 তখন আমি আমার সব পাপ প্রভুর কাছে স্বীকার করার সিদ্ধান্ত নিলাম।
প্রভু, আমি আপনাকে আমার পাপের কথা বলেছি।
আমার কোন অপরাধ আমি লুকিয়ে রাখিনি এবং আপনি আমার সব পাপ ক্ষমা করে দিয়েছেন!
6 এই কারণে, হে ঈশ্বর, সব অনুগামীদের আপনার প্রতি প্রার্থনা করা উচিৎ।
এমনকি, যখন প্লাবনের মত বিপর্যয়গুলি অন্যদের ওপর আসে, তখনও তারা আপনার অনুগামীদের কাছে আসবে না।
7 হে ঈশ্বর, আমার কাছে আপনিই লুকোনোর স্থান।
আমার সমস্যা থেকে আপনি আমায় রক্ষা করেছেন।
আপনি আমায় ঘিরে থাকেন এবং আমায় রক্ষা করেন।
তাই আপনি যে ভাবে আমায় উদ্ধার করেছেন আমি তারই গান গাই।
8 প্রভু বলেন, “যে পথে তুমি বাঁচবে আমি তোমাকে সেই পথের শিক্ষা দেবো।
আমি তোমায় সেই পথে পরিচালিত করবো।
আমি তোমায় রক্ষা করবো এবং তোমার পথ প্রদর্শক হবো।
9 একটা ঘোড়া বা গাধা, যাদের বোধশক্তি নেই, তাদের মত নির্বোধ হয়ো না।
এইসব জন্তুকে বশে আনতে গেলে, লোকদের বল্গা ও লাগাম ব্যবহার করা উচিত।
এইসব জিনিস ছাড়া ঐসব জন্তু আপনার কাছে আসবে না।”
10 মন্দ লোকদের কাছে অনেক যন্ত্রণা আসবে।
কিন্তু যারা প্রভুতে আস্থা রাখে, তাঁর প্রকৃত ভালোবাসা তাদের ঘিরে থাকবে।
11 ভালো লোকেরা, তোমরা আনন্দ কর এবং প্রভুতে আনন্দলাভ কর! তোমরা সৎ লোকেরা আনন্দ কর!
15 আমরা জন্মসূত্রে ইহুদী, অইহুদী পাপী নই। 16 তবু আমরা জানি যে মানুষ ঈশ্বরের সামনে বিধি-ব্যবস্থা পালনের দ্বারা নয় বরং যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস দ্বারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে নির্দোষ গণিত হয়, তাই আমরা যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস করেছি, যাতে আমরা ঈশ্বরের সামনে বিধি-ব্যবস্থা পালনের দ্বারা নয় বরং খ্রীষ্টে বিশ্বাসী বলেই নির্দোষ গণিত হই। কারণ কেউই বিধি-ব্যবস্থা পালনের দ্বারা ঈশ্বরের সামনে নির্দোষ বলে বিবেচিত হয় না।
17 কিন্তু আমরা ইহুদীরা খ্রীষ্টে নির্দোষ বিবেচিত হতে গিয়ে যদি অইহুদীদের মত নিজেদের পাপী দেখাই, তবে তার অর্থ কি এই যে খ্রীষ্ট পাপকে উৎসাহিত করেন? কখনই না। 18 কারণ যা আমি ভেঙে ফেলেছি তা যদি আবার গঠন করি, তাহলে আমি নিজেকে নিয়ম ভঙ্গকারী হিসাবে প্রমাণ করি। 19 বিধি-ব্যবস্থার দিক থেকে আমি মৃত এবং বিধি-ব্যবস্থা হল আমার মৃত্যুর কারণ। এটা হয়েছে যাতে আমি ঈশ্বরের জন্য বাঁচি। আমি খ্রীষ্টের সঙ্গে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছি। 20 সুতরাং আমি আর জীবিত নই, কিন্তু খ্রীষ্টই আমার মধ্যে জীবিত আছেন; আমার দেহের মধ্যে যে জীবন আমি এখন যাপন করি, এ কেবল ঈশ্বরের পুত্রের ওপর বিশ্বাসের দ্বারাই করি, যিনি আমাকে ভালবেসেছেন এবং আমার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। 21 ঈশ্বরের অনুগ্রহ আমি প্রত্যাখান করি না, কারণ যদি বিধি-ব্যবস্থার দ্বারা ঈশ্বরের সামনে নির্দোষ গণিত হওয়া যায়, তবে খ্রীষ্ট মিথ্যাই প্রাণ দিয়েছিলেন।
শিমোন ফরীশী
36 একদিন একজন ফরীশী তার বাড়িতে যীশুকে নিমন্ত্রণ করল। তাই তিনি তার বাড়িতে গিয়ে সেখানে খাবার আসন নিলেন।
37 সেই নগরে একজন দুশ্চরিত্রা স্ত্রীলোক ছিল। ফরীশীর বাড়িতে যীশু খেতে এসেছেন জানতে পেরে সে একটা শ্বেত পাথরের শিশিতে করে বহুমূল্য আতর নিয়ে এল। 38 সে যীশুর পিছনে তাঁর পায়ের কাছে নতজানু হয়ে কেঁদে কেঁদে চোখের জলে তাঁর পা ভিজাতে লাগল। তারপর সে তার মাথার চুল দিয়ে তাঁর পা মুছিয়ে দিল, আর তাঁর পায়ে চুমু দিয়ে সেই আতর তাঁর পায়ে ঢেলে দিল।
39 যে ফরীশী যীশুকে নিমন্ত্রণ করেছিল, এই দেখে সে মনে মনে বলল, “এই লোকটা যদি ভাববাদী হয় তবে নিশ্চয়ই বুঝতে পারত, যে তার পা ছুঁচ্ছে সে কে এবং কি ধরণের স্ত্রীলোক, এবং এও জানতে পারত যে স্ত্রীলোকটি পাপী।”
40 এর জবাবে যীশু তাকে বললেন, “শিমোন, তোমাকে আমার কিছু বলার আছে।”
শিমোন বলল, “বেশ তো গুরু, বলুন।”
41 যীশু বললেন, “কোন এক মহাজনের কাছে দুজন লোক টাকা ধারত। একজন পাঁচশো রূপোর মুদ্রা আর একজন পঞ্চাশ রূপোর মুদ্রা। 42 কিন্তু তারা কেউই ঋণ শোধ করতে না পারাতে তিনি দয়া করে উভয়ের ঋণই মকুব করে দিলেন। এখন এদের মধ্যে কে তাঁকে বেশী ভালবাসবে?”
43 শিমোন বলল, “আমি মনে করি যার বেশী ঋণ মকুব করা হল সে-ই।”
যীশু তাকে বললেন, “তুমি ঠিক বলেছ।” 44 এরপর যীশু সেই স্ত্রীলোকটির দিকে ফিরে শিমোনকে বললেন, “তুমি এই স্ত্রীলোকটিকে দেখছ? আমি তোমার বাড়িতে এলাম আর তুমি আমায় পা ধোবার জল পর্যন্ত দিলে না। কিন্তু ও চোখের জলে আমার পা ধুইয়ে দিল আর নিজের চুল দিয়ে তা মুছিয়ে দিল। 45 স্বাগত জানাবার প্রথা অনুসারে তুমি আমায় চুমু দিলে না; কিন্তু আমি আসার পর থেকেই সে আমার পায়ে চুমু দিয়ে চলেছে। 46 তুমি আমার মাথায় তেল দিয়ে অভিষেক করলে না; কিন্তু সে আমার পায়ে সুগন্ধি আতর ঢেলে তা অভিষিক্ত করল। 47 এতেই বোঝা যায় যে সে বেশী ভালবাসা দেখাচ্ছে, সেইজন্যই আমি বলছি, এর পাপ অনেক হলেও তা ক্ষমা করা হয়েছে; কিন্তু যাকে অল্প ক্ষমা করা হয়, সে অল্প ভালবাসে।”
48 এরপর যীশু সেই স্ত্রী লোকটিকে বললেন, “তোমার পাপের ক্ষমা হল।”
49 যারা তাঁর সঙ্গে খেতে বসেছিল, তারা পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, “ইনি কে যে পাপ ক্ষমা করেন?”
50 কিন্তু যীশু সেই স্ত্রী লোকটিকে বললেন, “তোমার বিশ্বাসই তোমায় মুক্ত করেছে, তোমার শান্তি হোক্।”
অনুগামীদের সঙ্গে যীশু
8 এরপর যীশু গ্রামে ও নগরে নগরে ঘুরে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করতে লাগলেন; তাঁর সঙ্গে ছিলেন সেই বারোজন প্রেরিত। 2 এমন কয়েকজন স্ত্রীলোকও তাঁর সঙ্গে ছিলেন, যারা নানারকম রোগ ব্যাধি থেকে সুস্থ হয়েছিলেন ও অশুচি আত্মার কবল থেকে মুক্ত হয়েছিলেন। এঁদের মধ্যে ছিলেন মরিয়ম মগ্দলীনী, এর মধ্যে থেকে যীশু সাতটি মন্দ আত্মা দূর করে দিয়েছিলেন। 3 রাজা হেরোদের বাড়ির অধ্যক্ষ কূষের স্ত্রী শোশন্না ও আরো অনেক স্ত্রীলোক ছিলেন। যীশু ও তাঁর শিষ্যদের সেবা যত্নের জন্য এঁরা নিজেদের টাকা খরচ করতেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International