New Testament in a Year
রাজ্যপাল পীলাতের কাছে যীশু
(মার্ক 15:1; লূক 23:1-2; যোহন 18:28-32)
27 ভোর হলে প্রধান যাজকরা ও সমাজপতিরা সবাই মিলে যীশুকে হত্যা করার চক্রান্ত করল। 2 তারা তাঁকে বেঁধে রোমীয় রাজ্যপাল পীলাতের কাছে হাজির করল।
যিহূদার আত্মহত্যা
(প্রেরিত 1:18-19)
3 যীশুকে শত্রুদের হাতে যে ধরিয়ে দিয়েছিল, সেই যিহূদা যখন দেখল যীশুকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তখন তার মনে খুব ক্ষোভ হল। সে তখন যাজকদের ও সমাজপতিদের কাছে গিয়ে সেই ত্রিশটা রূপোর টাকা ফিরিয়ে দিয়ে বলল, 4 “একজন নিরপরাধ লোককে হত্যা করার জন্য আপনাদের হাতে তুলে দিয়ে তাঁর প্রতি আমি বিশ্বাসঘাতকতা করেছি, আমি মহাপাপ করেছি।”
ইহুদী নেতারা বলল, “তাতে আমাদের কি? তুমি বোঝগে যাও।”
5 তখন যিহূদা সেই টাকা মন্দিরের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে দিল, পরে বাইরে গিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে মরল।
6 প্রধান যাজকরা সেই রূপোর টাকাগুলি কুড়িয়ে নিয়ে বললেন, “মন্দিরের তহবিলে এই টাকা জমা করা আমাদের বিধি-ব্যবস্থা বিরুদ্ধ কাজ, কারণ এটা খুনের টাকা।” 7 তাই তাঁরা পরামর্শ করে ঐ টাকায় কুমোরদের একটা জমি কিনলেন যাতে জেরুশালেমে যেসব বিদেশী মারা যাবে, তাদের সেখানে কবর দেওয়া যেতে পারে। 8 সেই জন্য ঐ কবরখানাকে আজও লোকে “রক্তক্ষেত্র” বলে। 9 এর ফলে ভাববাদী যিরমিয়র ভাববাণী পূর্ণ হল:
“তারা সেই ত্রিশটা রূপোর টাকা নিল, এটাই হল তাঁর মূল্য, ইস্রায়েলের জনগণই তাঁর মূল্য নির্ধারণ করেছিল। 10 আর প্রভুর নির্দেশ অনুসারেই সেই টাকা দিয়ে তারা কুমোরের জমি কিনেছিল।”[a]
রাজ্যপাল পীলাত ও যীশু
(মার্ক 15:2-5; লূক 23:3-5; যোহন 18:33-38)
11 এদিকে যীশুকে রাজ্যপালের সামনে হাজির করা হল; রাজ্যপাল যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কি ইহুদীদের রাজা?”
যীশু বললেন, “হ্যাঁ, আপনি যেমন বললেন।”
12 কিন্তু প্রধান যাজকরা ও ইহুদী নেতারা সমানে যখন তাঁর বিরুদ্ধে দোষ দিচ্ছিল, তখন তিনি তার একটারও জবাব দিলেন না।
13 তখন পীলাত তাঁকে বললেন, “ওরা, তোমার বিরুদ্ধে কত দোষ দিচ্ছে, তুমি কি শুনতে পাচ্ছ না?”
14 কিন্তু যীশু তাঁকে কোন জবাব দিলেন না, এমন কি তাঁর বিরুদ্ধে একটা অভিযোগেরও উত্তর দিলেন না। এতে পীলাত আশ্চর্য হয়ে গেলেন।
যীশুকে মুক্তি দেবার বিফল চেষ্টা
(মার্ক 15:6-15; লূক 23:13-25; যোহন 18:39–19:16)
15 রাজ্যপালের রীতি অনুসারে প্রত্যেক নিস্তারপর্বের সময় জনসাধারণের ইচ্ছানুযায়ী যে কোন কয়েদীকে তিনি মুক্ত করে দিতেন। 16 সেই সময় বারাব্বা[b] নামে এক কুখ্যাত আসামী কারাগারে ছিল।
17 তাই লোকরা সেখানে একসঙ্গে জড়ো হলে পীলাত তাদের জিজ্ঞেস করলেন, “তোমাদের জন্য আমি কাকে ছেড়ে দেব? তোমরা কি চাও, বারাব্বাকে বা যীশু, যাকে খ্রীষ্ট বলে তাকে?” 18 কারণ পীলাত জানতেন, তারা যীশুর ওপর ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে তাঁকে ধরিয়ে দিয়েছিল।
19 পীলাত যখন বিচার আসনে বসে আছেন, সেই সময় তাঁর স্ত্রী তাঁকে বলে পাঠালেন, “ঐ নির্দোষ লোকটির প্রতি তুমি কিছু করো না, কারণ রাত্রে স্বপ্নে আমি তাঁর বিষয়ে যা দেখেছি তাতে আজ বড়ই উদ্বেগে কাটছে।”
20 কিন্তু প্রধান যাজকরা ও ইহুদী নেতারা জনতাকে প্ররোচনা দিতে লাগল, যেন তারা বারাব্বাকে ছেড়ে দিতে ও যীশুকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার কথা বলে।
21 তখন রাজ্যপাল তাদের জিজ্ঞেস করলেন, “এই দুজনের মধ্যে তোমরা কাকে চাও যে আমি তোমাদের জন্য ছেড়ে দিই?”
তারা বলল, “বারাব্বাকে!”
22 পীলাত তখন তাদের বললেন, “তাহলে যীশু যাকে মশীহ বলে তাকে নিয়ে কি করব?”
তারা সবাই বলল, “ওকে ক্রুশে দেওয়া হোক্।”
23 পীলাত বললেন, “কেন? ও কি অন্যায় করেছে?”
কিন্তু তারা তখন আরো জোরে চিৎকার করতে লাগল, “ওকে ক্রুশে দাও, ক্রুশে দাও!”
24 পীলাত যখন দেখলেন যে তাঁর চেষ্টার কোন ফল হল না, বরং আরো গোলমাল হতে লাগল, তখন তিনি জল নিয়ে লোকদের সামনে হাত ধুয়ে বললেন, “এই লোকের রক্তপাতের জন্য আমি দায়ী নই। এটা তোমাদেরই দায়!”
25 এই কথার জবাবে লোকেরা সমস্বরে বলল, “আমরা ও আমাদের সন্তানরা ওর রক্তের জন্য দায়ী থাকব।”
26 তখন পীলাত তাদের জন্য বারাব্বাকে ছেড়ে দিলেন; কিন্তু যীশুকে চাবুক মেরে ক্রুশে দেবার জন্য সঁপে দিলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International