Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
2 বংশাবলি 6:12-42

শলোমনের প্রার্থনা

12-13 ইস্রায়েলের সমবেত লোকের উপস্থিতিতে দুই হাত প্রসারিত করে শলোমন প্রভুর বেদীর সামনে দাঁড়ালেন। উঠোনের মাঝখানে বসানো পিতলের তৈরী প্রায় 5 হাত লম্বা, 5 হাত চওড়া ও 3 হাত উঁচু একটা মঞ্চে উঠলেন এবং ইস্রায়েলের লোকদের সামনে আভূমি নত হয়ে আকাশের দিকে দুহাত ছড়িয়ে বললেন:

14 “হে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, স্বর্গে অথবা পৃথিবীতে তোমার সমকক্ষ কোনো ঈশ্বর নেই। তুমি তোমার ভালবাসা ও দয়ার চুক্তিতে বিশ্বস্ত। যারা তোমার সামনে বিশ্বস্তভাবে তাদের সর্বান্তঃকরণ দিয়ে জীবনযাপন করে তাদের সঙ্গে তোমার চুক্তি বজায় রাখ। 15 আমার পিতা দায়ূদকে তুমি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে আজ তাকে তুমি সত্যে পরিণত করে বাস্তবায়িত করেছো। 16 এখন প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তাঁকে দেওয়া তোমার সে প্রতিশ্রুতি পালন করো। তুমি এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে যে সবসময়েই ইস্রায়েলের সিংহাসনে তাঁর বংশের কেউ না কেউ অধিষ্ঠিত থাকবে। একথা তুমি ভুলো না। হে প্রভু, তুমি পিতাকে বলেছিলে যদি তাঁর সন্তানরা তাঁর মতোই তোমার প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে তোমার নির্দেশিত পথে জীবন অতিবাহিত করে, তাহলে সদাসর্বদা তাঁর বংশধররাই তোমার সামনে ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসবে। 17 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, এবার তুমি তোমার দাস দায়ূদকে দেওয়া তোমার সেই প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করো।

18 “আমরা জানি যে পৃথিবীর লোকের সঙ্গে প্রভু বাস করেন না। সর্বোচচতম স্বর্গও যখন তোমায় ধরে রাখতে পারে না তখন আমার বানানো এই সামান্য মন্দির কি করে তোমায় ধরে রাখবে? 19 তাহলেও প্রভু, আমার ঈশ্বর, আমার প্রার্থনার প্রতি তোমাকে মনোযোগী হতে মিনতি করি এবং তোমার অনুগ্রহ চাই। আমি, তোমার দাস তোমাকে যে কান্না এবং প্রার্থনা নিবেদন করি তা শোন। 20 যাতে এই মন্দিরে, যেখানে তুমি তোমার নাম রাখবে বলে প্রতিশ্রুতি করেছিলে সেখানে কি হয় তা তুমি সর্বদাই দেখতে পাও এবং যখন আমি এই মন্দিরের দিকে তাকাই তখন আমার প্রার্থনা শুনতে পাও। 21 আমার প্রার্থনা শোনো এবং তোমার লোক ইস্রায়েলের প্রার্থনা শোনো। যখন আমরা এই মন্দিরের দিকে তাকিয়ে প্রার্থনা করব আমাদের প্রার্থনা শুনো। তুমি অনুগ্রহ করে স্বর্গ থেকে আমাদের প্রার্থনা শোনো এবং আমরা যা পাপ করি তা ক্ষমা করে দাও।

22 “কারোর বিরুদ্ধে কোনো অপরাধ করার পর কেউ যখন এই মন্দিরের বেদীর সামনে দাঁড়িয়ে তোমার নামে শপথ নিয়ে কথা বলবে, 23 তখন স্বর্গ থেকে সত্যি মিথ্যা বিচার করে সেই অপরাধীকে তার কৃত অপরাধের যথাযোগ্য শাস্তি দিও। আর যদি কেউ নিরপরাধী হয় তবে তাকে রক্ষা করো।

24 “তোমার বিরুদ্ধে পাপ আচরণ করার অপরাধে হয়তো কখনও শত্রুরা তোমার সেবক ইস্রায়েলীয়দের যুদ্ধে পরাজিত করবে। তারপর যদি ইস্রায়েলীয়রা আবার তোমার কাছে এসে এই মন্দিরে দাঁড়িয়ে তোমার নামের প্রশংসা করে এবং প্রার্থনা করে ও ক্ষমা ভিক্ষা করে, 25 তাহলে স্বর্গ থেকে তাদের সেই প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে তুমি তোমার সেবক ইস্রায়েলীয়দের ক্ষমা করে তাদের পূর্বপুরুষকে তুমি যে বাসস্থান দিয়েছিলে তা ফিরিয়ে দিও।

26 “তোমার বিরুদ্ধে পাপ আচরণ করার জন্য হয়তো আকাশ শুকিয়ে গিয়ে প্রচণ্ড খরা হবে। তখন যদি তারা এই মন্দিরের দিকে প্রার্থনা করে, তাদের পাপ স্বীকার করে এবং তুমি তাদের শাস্তি দিয়েছ বলে পাপকাজ করা বন্ধ করে, 27 তাহলে স্বর্গ থেকে তাদের সেই প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে তুমি তাদের ক্ষমা করে দিও। আর তাদের সঠিক পথে পরিচালিত করে, তোমার দেওয়া এই ভূখণ্ডে আবার বৃষ্টি পাঠিও।

28 “যখন দুর্ভিক্ষ অথবা মহামারী লাগবে, তাদের শস্যে রোগসমূহ দেখা দেবে, ফড়িং অথবা পঙ্গপাল শস্য নষ্ট করবে, অথবা শত্রুরা যখন ইস্রায়েলবাসীকে তাদের শহরগুলিতে আক্রমণ করবে অথবা ইস্রায়েলে প্লেগ বা ব্যাধি যাই আসুক, 29 তখন যদি কোন ব্যক্তি অথবা ইস্রায়েলের সব লোকরা, যাদের প্রত্যেকে তার নিজের রোগ এবং ব্যথার কথা জানে যদি দুহাত প্রসারিত করে এই মন্দিরের দিকে তাকিয়ে তোমায় কোন প্রার্থনা বা আবেদন জানায়, 30 তখন তুমি যেখানে বাস কর সেই স্বর্গ থেকে তার ডাকে সাড়া দিয়ে তার অপরাধ ক্ষমা করো। তুমি তো ঈশ্বর, সবার হৃদয় ও মনের কথা তুমি জানো তাই যার যা প্রাপ্য তাকে তাই দিও। 31 তাহলে যে দেশ তুমি তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলে, যতদিন তারা সেখানে বসবাস করবে ততদিন তোমায় সমীহ ও মান্য করবে।

32 “হয়তো তোমার মহিমা ও সাহায্যের কথা শুনে ভিন দেশীদের কেউ এসে এই মন্দিরের দিকে তাকিয়ে তোমার কাছে প্রার্থনা করবে। 33 তখন স্বর্গ থেকে তুমি সেই ভিন দেশীর প্রার্থনার ডাকে সাড়া দিও, তাহলে এই পৃথিবীর সবাই তোমার মহিমার কথা জানতে পারবে এবং ইস্রায়েলীয়দের মতোই তোমায় শ্রদ্ধা করবে। পৃথিবীর সকলে তোমার নাম মাহাত্ম্য প্রচারের জন্য বানানো আমার এই মন্দিরের কথা জানতে পারবে।

34 “তুমি তোমার লোকদের অন্য কোথাও তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পাঠাবে এবং তারা তোমার পছন্দ করা শহর ও মন্দিরের দিকে তাকিয়ে তোমার কাছে প্রার্থনা করবে। 35 তখন তুমি স্বর্গ থেকে তাদের প্রার্থনা এবং আবেদন শুনো এবং তাদের সাহায্য কোরো।

36 “এমন কোনো ব্যক্তি নেই যে পাপ করে না। লোকরা যখন তোমার বিরুদ্ধে পাপ আচরণ করে তোমায় ক্রুদ্ধ করে তুলবে তুমি তাদের শত্রুদের হাতে যুদ্ধে পরাজিত করে সুদূরের কোনো দেশে বন্দীত্ব বরণে বাধ্য করবে। 37 কিন্তু তারপরে যখন তাদের মনোভাবের পরিবর্তন হবে আর সেই দূর দেশে বন্দীদশার মধ্যে তারা বলে উঠবে, ‘হে প্রভু, আমরা পাপ করেছি এবং দুষ্ট ও খুব নিষ্ঠুর আচরণ করেছি।’ 38 যদি তারা তাদের বন্দী দশার দেশে সর্বান্তঃকরণে তোমার দিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাদের পূর্বপুরুষকে তোমার দেওয়া ভূখণ্ডের দিকে মুখ করে, তোমার এই পবিত্র শহরের উদ্দেশ্যে আকাশের দিকে তাকিয়ে আমার দ্বারা তোমার জন্য বানানো মন্দিরের উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করে, 39 তখন স্বর্গে, তোমার বাসস্থান থেকে তাদের প্রার্থনা এবং আবেদনে তুমি সাড়া দিও, এবং যারা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছে তোমার সেই লোকদের তুমি সাহায্য করো এবং ক্ষমা করে দিও। 40 হে আমার ঈশ্বর, এখন আমি এখানে দাঁড়িয়ে তোমার কাছে যে প্রার্থনা করছি স্বকর্ণে তুমি সেই প্রার্থনা শোনো, তোমার করুণাময় চোখ মেলে আমাদের এই প্রার্থনাস্থলে দৃষ্টিপাত করো।

41 “এখন, হে প্রভু ঈশ্বর, তুমি ওঠ এবং বিশ্রামের জন্য
    তোমার মনোনীত স্থানে সাক্ষ্যসিন্দুক নিয়ে এসো যা তোমার ক্ষমতার প্রতীক।
হে প্রভু, আমার ঈশ্বর, তোমার যাজকদের পরিধানে সদাসর্বদা থাকবে পরিত্রাণের পোশাক,
    আর তোমার একনিষ্ঠ ভক্তরা মঙ্গলে আনন্দ করুক। তোমার সেবক যাজকরা যেন সবসময় ত্যাগের পোশাক পরে থাকে।
42 হে প্রভু ঈশ্বর, তোমার অভিষিক্ত লোকদের বাতিল করো না;
    তোমার অনুগত দাস দায়ূদের বিশ্বস্ত কাজগুলি মনে রেখো।”

1 যোহন 5

ঈশ্বরের সন্তান জগতকে জয় করতে পারে

যারা বিশ্বাস করে যে যীশুই খ্রীষ্ট, তারা ঈশ্বরের সন্তান। যে কেউ পিতাকে ভালবাসে, সে তাঁর সন্তানদের ভালবাসে। আমরা কি করে জানব যে আমরা ঈশ্বরের সন্তানদের ভালবাসি? আমরা জানি যেহেতু আমরা ঈশ্বরকে ভালবাসি ও তাঁর সব আদেশ পালন করি। ঈশ্বরকে ভালবাসার অর্থই হচ্ছে তাঁর আদেশ পালন করা; আর ঈশ্বরের আদেশ ভারী বোঝার মতো নয়। কারণ প্রত্যেক ঈশ্বরজাত সন্তান জগতকে জয় করে। আমাদের বিশ্বাসই আমাদের জগতজয়ী করেছে। কে জগতের ওপরে বিজয়ী হতে পারে? যে বিশ্বাস করে যে, যীশুই ঈশ্বরের পুত্র।

ঈশ্বর তাঁর পুত্রের কথা বললেন

ইনিই যীশু খ্রীষ্ট, যিনি জগতে জল ও রক্তের মধ্য দিয়ে এসেছিলেন। আত্মাই বলছেন এই কথা সত্য, আর সেই আত্মা স্বয়ং সত্য। যীশুর বিষয়ে তিনজন সাক্ষ্য দিচ্ছেন। আত্মা, জল ও রক্ত আর সেই তিনের এক সাক্ষ্য।

লোকে যখন সত্য কিছু বলে আমরা তা বিশ্বাস করি, তবে ঈশ্বরের দেওয়া সাক্ষ্য এর থেকে কত না মূল্যবান। বস্তুত ঈশ্বর স্বয়ং আমাদের কাছে এই সাক্ষ্য দিয়েছেন, তিনি তাঁর নিজের পুত্রের বিষয়ে সত্য জানিয়েছেন। 10 ঈশ্বরের পুত্রকে যে বিশ্বাস করে ঐ সত্য তার অন্তরে থাকে। ঈশ্বরের কথায় যে বিশ্বাস করে না, সে তাঁকে মিথ্যাবাদী করেছে, কারণ ঈশ্বর তাঁর পুত্রের বিষয়ে যে কথা বলেছেন সে তাতে বিশ্বাস করে নি। 11 সেই সাক্ষ্য হচ্ছে, ঈশ্বর আমাদের অনন্ত জীবন দিয়েছেন এবং এই জীবন তাঁর পুত্রে আছে। 12 ঈশ্বরের পুত্রকে যে পেয়েছে সেই সত্য জীবন পেয়েছে। ঈশ্বরের পুত্রকে যে পায় নি সে জীবন পায় নি।

অনন্ত জীবন

13 তোমরা যারা ঈশ্বরের পুত্রের ওপর বিশ্বাস করেছ আমি তোমাদের কাছে এই কথা লিখছি যেন তোমরা জানতে পার যে তোমরা অনন্ত জীবন পেয়েছ। 14 আমরা এবিষয়ে সুনিশ্চিত যে আমরা যদি তাঁর ইচ্ছানুসারে তাঁর কাছে কিছু চাই তবে তিনি আমাদের প্রার্থনা শুনবেন; 15 আর আমরা যদি সত্যি জানি যে তিনি আমাদের প্রার্থনা শুনেছেন তবে জানতে হবে যে আমরা তাঁর কাছে যা চেয়েছি তা পেয়ে গিয়েছি।

16 যদি কেউ তার খ্রীষ্টান ভাইকে এমন কোন পাপ করতে দেখে যার পরিণতি অনন্ত মৃত্যু নয়, তবে সে তার ভাইয়ের জন্য প্রার্থনা করবে, আর ঈশ্বর তাকে জীবন দান করবেন। যারা অনন্ত মৃত্যুজনক পাপ করে না, তিনি কেবল তাদেরই তা দেবেন। মৃত্যুজনক পাপ আছে, আর আমি তোমাদের সেরকম পাপ যারা করে তাদের জন্য প্রার্থনা করতে বলছি না। 17 সমস্ত রকম অধার্মিকতাই পাপ; কিন্তু এমন পাপ আছে যার ফল অনন্ত মৃত্যু নয়।

18 আমরা জানি, ঈশ্বরের সন্তানরা পাপের জীবনযাপন করে না। ঈশ্বরের পুত্র তাদের রক্ষা করেন[a] এবং পাপাত্মা তাদের কোনভাবে ক্ষতি করতে পারে না। 19 আমরা জানি যে আমরা ঈশ্বরের লোক; কিন্তু সমস্ত জগত রয়েছে পাপাত্মা শক্তির কবলে। 20 আমরা জানি যে ঈশ্বরের পুত্র এসেছেন, আর তিনি আমাদের সেই বোধ বুদ্ধি দিয়েছেন যার দ্বারা আমরা সেই সত্যময় ঈশ্বরকে জানতে পারি। এখন আমরা সত্য ঈশ্বরে আছি, কারণ আমরা তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টেতে আছি। তিনিই সত্য ঈশ্বর ও অনন্ত জীবন। 21 তাই স্নেহের সন্তানরা, তোমরা মিথ্যা দেবদেবীর কাছ থেকে দূরে থেকো।

হবক‌্কূক 1

ঈশ্বরের কাছে হবক‌্কূকের অভিযোগ

এই বার্তাটি ভাববাদী হবক‌্কূককে দেওয়া হয়েছিল।

প্রভু, আমি আপনার কাছে চিৎকার করে ক্রন্দন করেই চলেছি। কখন আপনি আমার কথা শুনবেন? আমি অত্যাচারের বিষয় আপনার কাছে কেঁদেছিলাম। কিন্তু আপনি আমাকে সাহায্য করবার জন্য কিছুই করেননি। লোকে জিনিস চুরি করছে এবং অন্যদের আঘাত করছে। জনসাধারণ তর্ক এবং মারামারি করছে। এইসব ভয়ঙ্কর জিনিস কেন আপনি আমাকে দেখাচ্ছেন? বিধি দুর্বল এবং সেটা জনসাধারণের কাছে ন্যায়বিচার আনে না। অসৎ‌ লোকরা ভালো লোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হয়। সেজন্য বিধি পক্ষপাতশূন্য নয়। ন্যায়বিচার আর জয়লাভ করছে না।

হবক‌্কূকের কাছে ঈশ্বরের উত্তর

প্রভু উত্তর দিয়েছিলেন, “অন্যান্য জাতিগুলির দিকে তাকিয়ে দেখো। তাদের ভালোভাবে লক্ষ্য কর, তাহলে তুমি আশ্চর্য হয়ে যাবে। আমি তোমার জীবনকালে এমন কিছু করব যা তোমাকে বিস্ময়াভিভূত করবে। সেটা বিশ্বাস করবার জন্য তোমাকে তা অবশ্যই দেখতে হবে। তোমাকে সে বিষয়ে কেউ বললে তোমার বিশ্বাস হবে না। আমি বাবিলবাসীদের শক্তিশালী জাতিতে পরিণত করবো। ঐসব মানুষরা খুবই নীচ এবং শক্তিশালী যোদ্ধা। তারা পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে দাপিয়ে ঘুরে বেড়াবে। অপরের ঘরবাড়ি ও শহরগুলি তারা অধিকার করে নেবে। বাবিলে লোকরা অন্যান্য লোকদের ভয় দেখাবে। বাবিলবাসীরা যা চায় তাই করবে এবং যেখানে যেতে চাইবে সেই খানেই যাবে। তাদের ঘোড়াগুলো চিতাবাঘের চেয়ে অনেক দ্রুতগামী হবে; সূর্যাস্তের সময়ের নেকড়ের চেয়েও তারা বেশী নিষ্ঠুর হবে। তাদের ঘোড়সওয়াররা অনেক দূরের দেশ থেকে আসবে। ক্ষুধার্ত ঈগল যেমন আচমকা ছোঁ মেরে আকাশ থেকে নেমে আসে সেই রকম তারা তাদের শত্রুকে দ্রুত আক্রমণ করবে। তারা সবাই একটি জিনিস চায়, সেটা হচ্ছে, হিংসাত্মক কার্যকলাপ। মরুভূমির তীব্র হাওয়ার মতো তাদের সৈন্যরা দ্রুত কুচকাওয়াজ করে যাবে। বাবিলের সৈন্যরা বালুকণার মত অসংখ্য লোককে বন্দী করে নেবে।

10 “বাবিল সৈন্যরা অন্য জাতির রাজাদের দেখে হাসবে। বিদেশী শাসকরা তাদের কাছে ঠাট্টার মতো মনে হবে। বাবিল সৈন্যরা শহরের লম্বা এবং শক্ত দেওয়াল দেখে হাসবে। সৈন্যরা উঁচু দেওয়ালের চূড়ো পর্যন্ত সহজেই মাটির রাস্তা তৈরী করে সহজেই শহরগুলিকে পরাস্ত করবে। 11 তারপর তারা অন্যান্য শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য বাতাসের মত এগিয়ে যাবে। একটি মাত্র বিষয় যা বাবিলীয়রা উপাসনা করবে তা হল তাদের শক্তি।”

হবক‌্কূকের দ্বিতীয় অভিযোগ

12 এরপর হবক‌্কূক বললেন, “প্রভু, আপনিই হচ্ছেন অনন্তকালীন জীবিত প্রভু।
    আপনিই আমার পবিত্র ঈশ্বর যিনি অমর।
প্রভু, যা করা উচিৎ‌ তাই করতে আপনিই বাবিলীয়দের সৃষ্টি করেছেন।
    আমাদের শিলা, যিহূদাবাসীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য আপনি তাদের সৃষ্টি করেছেন।
13 আপনার চোখগুলি খুবই শুদ্ধ!
    আপনি কি করে মন্দের দিকে তাকাতে পারবেন?
লোকরা যে পাপ করে তা আপনি সহ্য করতে পারেন না।
    তাহলে ঐ অসৎ‌ লোকরা যে জয়ী হচ্ছে তা আপনি কি করে দেখবেন?
আপনি যখন দেখেন যে ভালো লোকরা আমাদের চেয়েও দুষ্ট লোকদের দ্বারা পরাজিত হচ্ছে
    তখন কেন কোন প্রতিকার করেন না?”

14 আপনি মানুষকে যেন সমুদ্রের মধ্যে মাছের মত তৈরী করেছেন।
    তারা যেন নেতাবিহীন ছোট ছোট সামুদ্রিক জীব।
15 শত্রু বঁড়শি এবং জাল দিয়ে তাদের সবাইকে ধরছে।
শত্রু তাদের জাল দিয়ে ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে
    এবং শত্রু যা ধরছে তাতে খুবই খুশী।
16 তার জাল তাকে ধনী লোকের মতো জীবনধারন করতে
    এবং সব থেকে ভাল খাবার উপভোগ করতে সাহায্য করছে।
সেজন্য শত্রু তার জালকে পূজো করে।
    তার জালকে সম্মান দেওয়ার জন্য উৎসর্গ করে আর ধূপ-ধূনো দেয়।
17 সে কি জাল দিয়ে সম্পদ সংগ্রহ করার অভিযান চালিয়ে যাবে?
সে কি কোন করুণা না করে লোককে ধ্বংস করে যাবে?

লূক 20

ইহুদী নেতারা যীশুকে প্রশ্ন করলেন

(মথি 21:23-27; মার্ক 11:27-33)

20 একদিন যীশু যখন মন্দিরে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন এবং ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করছিলেন, সেই সময় প্রধান যাজকরা, ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ইহুদী নেতারা একজোট হয়ে তাঁর কাছে এল। তারা তাঁকে প্রশ্ন করল, “কোন ক্ষমতায় তুমি এসব করছ তা আমাদের বল। কে তোমাকে এই অধিকার দিয়েছে?”

যীশু তাদের বললেন, “আমিও তোমাদের একটা প্রশ্ন করব। বলো তো যোহন বাপ্তিস্ম দেবার অধিকার ঈশ্বরের কাছে থেকে পেয়েছিলেন না মানুষের কাছ থেকে?”

তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করল, “আমরা যদি বলি, ‘ঈশ্বরের কাছ থেকে,’ তাহলে ও বলবে ‘তাহলে তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করো নি কেন?’ কিন্তু আমরা যদি বলি, ‘মানুষের কাছ থেকে,’ তাহলে লোকেরা আমাদের পাথর ছুঁড়ে মারবে, কারণ তারা যোহনকে একজন ভাববাদী বলেই বিশ্বাস করে।” তাই তারা বলল, “আমরা জানি না।”

তখন যীশু তাদের বললেন, “তাহলে আমিও তোমাদের বলব না, কোন্ অধিকারে আমি এসব করছি।”

ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে পাঠালেন

(মথি 21:33-46; মার্ক 12:1-12)

যীশু এই দৃষ্টান্তটি লোকদের বললেন, “একজন লোক একটা দ্রাক্ষা ক্ষেত করে তা চাষীদের কাছে ইজারা দিয়ে বেশ কিছু দিনের জন্য বিদেশে গেল। 10 ফলের সময় হলে সে তার একজন কর্মচারীকে সেই চাষীদের কাছে পাঠাল, যেন তারা ক্ষেতের ফসলের কিছু ভাগ দেয়; কিন্তু চাষীরা সেই কর্মচারীকে মারধর করে খালি হাতে তাড়িয়ে দিল। 11 এরপর সে তার আর একজন কর্মচারীকে পাঠাল; কিন্তু তারা তাকেও মারধর করল। সেই কর্মচারীর প্রতি তারা জঘন্য ব্যবহার করে তাকে শূন্য হাতে ফিরিয়ে দিল। 12 পরে সে তার তৃতীয় কর্মচারীকে পাঠাল, চাষীরা তাকেও ক্ষতবিক্ষত করে বার করে দিল।

13 “তখন সেই দ্রাক্ষা ক্ষেতের মালিক বলল, ‘আমি এখন কি করব? আমি আমার প্রিয় পুত্রকে পাঠাব, হয়তো তারা তাকে মান্য করবে।’ 14 কিন্তু সেই চাষীরা সেই ছেলেকে দেখতে পেয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বলল, ‘এই হচ্ছে সম্পত্তির উত্তরাধিকারী, এস একে আমরা খুন করি, তাহলে আমরাই হব এই সম্পত্তির মালিক।’ 15 এই বলে তারা তাকে দ্রাক্ষা ক্ষেতের বাইরে টেনে নিয়ে গিয়ে হত্যা করল।

“এখন সেই ক্ষেতের মালিক তাদের প্রতি কি করবে? 16 সে এসে ঐ চাষীদের মেরে ফেলবে ও ক্ষেত অন্য চাষীদের হাতে দেবে।”

এই কথা শুনে তারা সবাই বলল, “এরকম যেন না হয়!” 17 কিন্তু যীশু তাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “তাহলে এই যে কথা শাস্ত্রে লেখা আছে এর অর্থ কি,

‘রাজমিস্ত্রিরা যে পাথরটা বাতিল করে দিল,
    সেটাই হয়ে উঠল কোণের প্রধান পাথর?’[a]

18 যে কেউ সেই পাথরের ওপর পড়বে, সে ভেঙে টুকরো-টুকরো হয়ে যাবে, আর যার ওপর সেই পাথর পড়বে সে ভেঙে গুঁড়ো হয়ে যাবে।”

19 প্রধান যাজকরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা সেই সময় থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করার জন্য উপায় খুঁজতে লাগল; কিন্তু তারা জনসাধারণকে ভয় পাচ্ছিল। তারা যীশুকে গ্রেপ্তার করতে চাইছিল কারণ তারা বুঝতে পেরেছিল যে যীশু তাদের বিরুদ্ধেই ঐ দৃষ্টান্তটি দিয়েছিলেন।

ইহুদী নেতারা যীশুকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করল

(মথি 22:15-22; মার্ক 12:13-17)

20 তাই তারা তাঁর ওপর নজর রাখতে কয়েকজন লোককে গুপ্তচররূপে তাঁর কাছে পাঠাল, যারা ভাল লোক সেজে তাঁর কাছে গেল যাতে করে যীশুর কথা ধরে তাঁকে রোমীয় রাজ্যপালের ক্ষমতা ও বিচারের অধীনে তুলে দিতে পারে। 21 তাই তারা তাঁকে একটি কথা জিজ্ঞেস করল, “গুরু, আমরা জানি যে, যা ন্যায় আপনি সেই কথাই বলেন ও সেই শিক্ষাই দেন; আর আমরা এও জানিযে আপনি কারোর প্রতি পক্ষপাত করেন না, কিন্তু ঈশ্বরের পথের বিষয়ে সত্য শিক্ষাই দেন। 22 আচ্ছা, কৈসরকে কর দেওয়া কি আমাদের উচিত?”

23 যীশু তাদের চালাকি ধরে ফেলেছিলেন, তাই বললেন, 24 “আমায় একটা রূপোর টাকা দেখাও। এতে কার মূর্ত্তি ও কার নাম আছে?”

তারা বলল, “কৈসরের!”

25 তখন তিনি তাদের বললেন, “তাহলে কৈসরের যা তা কৈসরকে দাও, আর ঈশ্বরের যা তা ঈশ্বরকে দাও।”

26 সমস্ত লোকের সামনে যীশু যা বললেন, তাতে তারা তাঁর কোন ভুল ধরতে পারল না। তাঁর দেওয়া উত্তরে তারা বিস্ময়ে হতবাক্ হয়ে গেল।

কিছু সদ্দূকীর যীশুকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা

(মথি 22:23-33; মার্ক 12:18-27)

27 তখন সদ্দূকী সম্প্রদায়ের কয়েকজন লোক যীশুর কাছে এল। এই সদ্দূকীরা বলত, মৃত্যুর পর পুনরুত্থান বলে কিছু নেই। তারা এসে যীশুকে প্রশ্ন করল, 28 “গুরু, মোশি আমাদের জন্য লিখে রেখে গেছেন যে নিঃসন্তান অবস্থায় যদি কোন লোক তার স্ত্রীকে রেখে মারা যায়, তবে তার ভাই সেই স্ত্রীকে বিয়ে করে ভাইয়ের হয়ে তার বংশ রক্ষা করবে।[b] 29 এরকম একজন যারা সাত ভাই ছিল, তাদের প্রথম ভাই বিয়ে করার পর নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেল। 30 দ্বিতীয় ভাই তখন সেই বিধবাকে বিয়ে করল। 31 এরপর তৃতীয় ভাই, এইভাবে সাত ভাই-ই একজন স্ত্রীকে বিয়ে করল আর তারা সকলেই নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেল। 32 পরে সেই স্ত্রীও মারা গেল। 33 এখন পুনরুত্থানের সময়ে সে কার স্ত্রী হবে? কারণ সাত জনই তো তাকে বিয়ে করেছিল?”

34 তখন যীশু তাদের বললেন, “এই যুগের লোকরাই বিয়ে করে আর তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। 35 কিন্তু মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়ে আগামী যুগের যোগ্য বলে যাদের গন্য করা হবে, তারা বিয়ে করবে না বা তাদের বিয়ে দেওয়াও হবে না। 36 তারা আর মরতে পারে না, কারণ তারা স্বর্গদূতদের মতো, মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছে বলে তারা ঈশ্বরের সন্তান। 37 জ্বলন্ত ঝোপের[c] বিষয়ে যেখানে লেখা হয়েছে, সেখানে মোশিও দেখিয়েছেন যে মৃতেরা পুনরুত্থিত হয়। সেখানে মোশি প্রভু ঈশ্বরকে ‘অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস‌্হাকের ঈশ্বর, ও যাকোবের ঈশ্বর(A) বলে উল্লেখ করেছেন।’ 38 ঈশ্বর মৃত লোকদের ঈশ্বর নন, তিনি জীবিত লোকদেরই ঈশ্বর। যারা আগামী যুগের যোগ্য লোক তারা সকলেই ঈশ্বরের চোখে জীবিত থাকে।”

39 ব্যবস্থার শিক্ষকদের মধ্যে কয়েকজন বলল, “গুরু, আপনি ঠিকই বলেছেন!” 40 এরপর তাঁকে আর কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস কারো হল না।

খ্রীষ্ট কি দায়ূদের পুত্র?

(মথি 22:41-46; মার্ক 12:35-37)

41 কিন্তু তিনি তাদের বললেন, “তারা কি করে বলে যে খ্রীষ্ট রাজা দায়ূদের পুত্র? 42 কারণ গীতসংহিতায় দায়ূদ নিজেই বলেছেন,

‘প্রভু পরমেশ্বর আমার প্রভুকে বললেন,
43 যতদিন না আমি তোমার শত্রুদের তোমার পাদপীঠে পরিণত করি,
    তুমি আমার ডানদিকে বস।’(B)

44 দায়ূদ তো খ্রীষ্টকে এইভাবে ‘প্রভু’ বলে সম্বোধন করলেন, তাহলে খ্রীষ্ট কিভাবে তাঁর সন্তান হলেন?”

ব্যবস্থার শিক্ষকদের প্রতি সতর্কবাণী

(মথি 23:1-36; মার্ক 12:38-40; লূক 11:37-54)

45 সমস্ত লোক যখন এসব কথা শুনছিল, তখন যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, 46 “ব্যবস্থার শিক্ষকদের থেকে সাবধান। তারা লম্বা লম্বা পোশাক পরে ঘুরে বেড়াতে ও হাটে বাজারে লোকদের কাছ থেকে সম্মান পেতে ভালবাসে; আর সমাজগৃহে বিশেষ সম্মানের স্থানে বসতে ও ভোজসভায় সম্মানের আসন দখল করতেও ভালবাসে। 47 তারা একদিকে লোক দেখানো লম্বা লম্বা প্রার্থনা করে, অপরদিকে বিধবাদের সর্বস্ব গ্রাস করে, এদের ভয়ঙ্কর শাস্তি হবে।”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International