M’Cheyne Bible Reading Plan
ইফ্রয়িম এবং মনঃশির জন্য জমি-জায়গা
16 যোষেফ পরিবার যে দেশ পেয়েছিল তা শুরু হয়েছে যিরীহোর কাছে যর্দন নদী থেকে আর যিরীহোর পূর্ব দিকের নদী পর্যন্ত চলে গেছে। যিরীহো থেকে বৈথেলের পাহাড়ী দেশ পর্যন্ত এদেশের সীমানা প্রসারিত। 2 তারপর সীমানা গেছে বৈথেল (লূস) থেকে অটারোতে অর্কীয়দের সীমা পর্যন্ত। 3 তারপর সীমানা গেছে পশ্চিমে যফ্লেট বংশীয় লোকদের সীমা পর্যন্ত। তারপর নিম্ন বৈৎ-হোরোণ, গেষর হয়ে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত।
4 মনঃশি এবং ইফ্রয়িমের লোকরা জমি-জায়গা পেয়েছিল। (মনঃশি আর ইফ্রয়িম হল যোষেফের পুত্র।)
5 সেই দেশের পূর্ব সীমা যেটা ইফ্রয়িমের উত্তরপুরুষদের দেওয়া হয়েছিল সেটির শুরু অটারোত্-অদ্দর থেকে যেটি ছিল উচ্চ বৈৎ-হোরোণের কাছে পশ্চিম সীমানার শুরু মিক্মথাথ থেকে। 6 এই সীমানা পূর্বদিকে বাঁক নিয়েছে তানোৎ-শীলোর দিকে এবং আরো পূর্ব দিকে এগিয়ে গেছে যানোহ পর্যন্ত। 7 তারপর নেমে গিয়ে যানোহ থেকে অটারোত্ এবং নারঃ পর্যন্ত। এইভাবেই যিরীহো পর্যন্ত সীমানা প্রসারিত হয়ে যর্দন নদীতে এসে থেমেছে। 8 সীমানাটি তপূহ থেকে পশ্চিমদিকে কানা নদীর দিকে গেছে এবং শেষ হয়েছে ভূমধ্যসাগরে। এই সমস্ত জায়গা ইফ্রয়িমের বংশধরদের দেওয়া হয়েছিল। সেই পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেক পরিবার একটা করে অংশ পেয়েছিল। 9 ইফ্রয়িমের অধিকাংশ সীমান্ত শহরই আসলে মনঃশির সীমানায়, কিন্তু ইফ্রয়িমের বংশধররা এইসব শহর এবং মাঠঘাট পেয়েছিল। 10 ইফ্রয়িম পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা গেষর শহর থেকে কনান বংশীয় লোকদের তাড়িয়ে দিতে পারে নি। তাই ইফ্রয়িম বংশীয় লোকদের সঙ্গেই তারা আজও বসবাস করছে। কিন্তু কনান বংশীয়রা ইফ্রয়িমের ক্রীতদাস হয়েই থেকে গিয়েছিল।
17 তারপর মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীকে জমি-জায়গা দেওয়া হল। মনঃশি ছিলেন যোষেফের প্রথম পুত্র। মনঃশির জ্যেষ্ঠ পুত্র মাখীর গিলিয়দের পিতা। মাখীর ছিলেন মস্ত বড় যোদ্ধা, তাই গিলিয়দ এবং বাশনের সমস্ত জায়গা মাখীর পরিবারকে দেওয়া হল। 2 মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অন্যান্য পরিবারকেও জমি দান করা হয়েছিল। এইসব পরিবারের কর্তা হচ্ছে অবীয়েষর, হেলক, অস্রীয়েল, শেখম, হেফর এবং শমীদা। এরা সব মনঃশির অন্যান্য পুত্র আর মনঃশি হলেন যোষেফের পুত্র। এদের পরিবারগুলি জমির ভাগ পেয়েছিল।
3 সল্ফাদ হচ্ছে হেফরের পুত্র। হেফরের পিতা গিলিয়দ। গিলিয়দের পিতা মাখীর আর মাখীরের পিতা হচ্ছে মনঃশি। সল্ফাদের কোন পুত্র ছিল না বটে, কিন্তু পাঁচটি কন্যা ছিল। তাদের নাম মহলা, নোয়া, হগ্লা, মিল্কা আর তির্সা। 4 মেয়েরা সব গেল যাজক ইলিয়াসর, নূনের পুত্র যিহোশূয় এবং অন্যান্য দলপতির কাছে। তারা বলল, “প্রভু মোশিকে বলেছিলেন, ভাইদের যে জমি দেওয়া হবে, মেয়েদেরও যেন সে রকম জমি দেওয়া হয়।” সুতরাং ইলিয়াসর প্রভুর নির্দেশ পালন করলেন। তিনি মেয়েদেরও কিছু জমি-জায়গা দিলেন। তুলনায় মেয়েরাও তাদের কাকাদের মতোই জমি-জায়গা পেল।
5 অতএব মনঃশির পরিবারগোষ্ঠী যর্দন নদীর পশ্চিমে দশটা জমি এবং যর্দন নদীর পূর্ব পারের আরো দুটো জায়গা গিলিয়দ এবং বাশন পেল। 6 সেইজন্য মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর মেয়েরা ছেলেদের সমান জায়গা পেল। মনঃশি গোষ্ঠীর বাদবাকীদের দেওয়া হল গিলিয়দ।
7 মনঃশির জমি জায়গা আশের এবং মিক্মথাথ এর মাঝখানে। সেটা শিখিমের কাছেই। সীমানা সোজা চলে গেছে দক্ষিণে ঐন্-তপূহ অঞ্চলের দিক বরাবর। 8 তপূহকে ঘিরে সব জমি ছিল মনঃশির। কিন্তু খোদ তপূহ শহরটা তার নিজের ছিল না। তপূহ শহরটা মনঃশি এলাকার ধার ঘেঁষে। শহরটা ছিল ইফ্রয়িমের। 9 মনঃশির সীমানা দক্ষিণে কান্না নদী পর্যন্ত গেছে। এই জায়গাটা মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর হলেও শহরগুলো কিন্তু ইফ্রয়িমের দখলে নদীর উত্তরদিকে ছিল মনঃশির সীমানা যা পশ্চিমে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত প্রসারিত। 10 দক্ষিণ দিকের জমি জায়গা ছিল ইফ্রয়িমের। উত্তরদিকটা ছিল মনঃশির দখলে, পশ্চিম সীমা ভূমধ্যসাগর। এই সীমানা উত্তর দিকে আশেরদের দেশ পর্যন্ত এবং পূর্বদিকে ইষাখরের দেশ।
11 ইষাখর এবং আশের অঞ্চলেরও কয়েকটি শহর ছিল মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর আয়ত্ত্বাধীন। তারা বৈৎ-শান, যিব্লিয়ম এবং আশে-পাশের কয়েকটি ছোট শহরেও বাস করত। তারা দোর, ঐন্-দোর, তানক, মগিদ্দো এবং আশেপাশের ছোটখাট শহরগুলোয় থাকত। নাফোতের তিনটি শহরেও ছিল ওদের বসবাস। 12 মনঃশির লোকরা ঐসব শহর দখল করতে পারে নি। সেই জন্য কনানীয় লোকরা এসব অঞ্চলে বসবাস করত। 13 কিন্তু ইস্রায়েলবাসীরা বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠল। তারা জোর করে কনানদের তাদের সব কাজকর্ম করে দিতে বললো। তবে তাদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে জোর করে নি।
14 যোষেফের পরিবারগোষ্ঠী যিহোশূয়কে বলল, “আপনি আমাদের শুধু একটা জায়গাই দিয়েছেন। কিন্তু আমরা এত জন। প্রভুর দেওয়া এতখানি জায়গা থেকে আপনি কেন আমাদের মাত্র এক ভাগ দিলেন?”
15 যিহোশূয় বললেন, “বেশ তোমরা যদি প্রচুর লোকজন হও তাহলে ওপরের অরণ্যে ঢাকা পাহাড়ী দেশে চলে যাও, সেখানকার বন কেটে পরিষ্কার করে ব্যবহারযোগ্য কর। সে জায়গায় এখন পরিষীয় আর রফায়ীয়রা থাকে। কিন্তু যদি পাহাড়ী দেশ ইফ্রয়িম তোমাদের জন্য যথেষ্ট না হয় তাহলে তোমরা আরো উচ্চ পাহাড়ী দেশে যাও এবং সেখানকার সব জায়গা দখল করো।”
16 যোষেফের লোকেরা বলল, “এটা সত্যিই যে পাহাড়ী দেশ ইফ্রয়িম বেশ ছোট জায়গা। কিন্তু সেখানে বসবাসকারী কনানীয়দের কাছে আছে বেশ শক্তিশালী অস্ত্রশস্ত্র। তাদের আবার লোহার রথও আছে। কনানরা যিষ্রিয়েল উপত্যকা বৈৎ-শান আর সেখানকার সব ছোটখাট শহর দখল করে রয়েছে।”
17 তখন যিহোশূয় যোষেফ, ইফ্রয়িম এবং মনঃশির লোকদের বললেন, “কিন্তু তোমরাও সংখ্যায় প্রচুর। আর তোমরাও যথেষ্ট শক্তিশালী। তোমাদের জমির এক অংশের বেশী ভাগ পাওয়া দরকার। 18 তোমরা পাহাড়ী দেশটা নিয়ে নাও। এটা বনজঙ্গল হলেও গাছগুলো কেটে বসবাসের উপযুক্ত করে নিও। সমস্ত জায়গা তোমরাই নিও। সেখান থেকে কনানীয়দের তাড়িয়ে দিও। তারা যদি শক্তিশালী হয় এবং তাদের কাছে যদি বেশী অস্ত্রশস্ত্রও থাকে তবু তোমরা তাদের নিশ্চয়ই পরাজিত করবে।”
148 প্রভুর প্রশংসা কর!
হে দূতগণ স্বর্গ থেকে প্রভুর প্রশংসা কর!
2 তোমরা সব দূতগণ, প্রভুর প্রশংসা কর!
তাঁর সেনাবাহিনীরা[a] প্রভুর প্রশংসা কর!
3 চন্দ্র ও সূর্য প্রভুর প্রশংসা কর।
আকাশের তারকাগণ এবং আলো তাঁর প্রশংসা কর!
4 স্বর্গের উচ্চতম স্থানে প্রভুর প্রশংসা কর!
হে আকাশের উর্দ্ধের জলরাশি, তাঁর প্রশংসা কর!
5 প্রভুর নামের প্রশংসা কর।
কারণ ঈশ্বর আদেশ দিয়েছিলেন এবং তাই প্রতিটি বস্তু অস্তিত্ব পেয়েছে!
6 চিরদিন অব্যাহত থাকবার জন্য ঈশ্বর এইসব সৃষ্টি করেছেন।
ঈশ্বর তাদের অনন্ত বিধিসমুহ দিয়েছেন।
7 পৃথিবীর সব কিছুই প্রভুর প্রশংসা করে!
মহাসাগরের বড় বড় সামুদ্রিক প্রাণীরা, প্রভুর প্রশংসা কর!
8 আগুন ও শিলাবৃষ্টি, তুষার এবং ধোঁয়া,
এবং ঝোড়ো বাতাস সবই ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন।
9 ঈশ্বর পাহাড় ও পর্বতমালা সৃষ্টি করেছেন,
ফলের বৃক্ষসমুহ ও এরস গাছ সৃষ্টি করেছেন।
10 সমস্ত প্রাণী ও গবাদি পশু এবং সরীসৃপ ও পাখি সৃষ্টি করেছেন।
11 ঈশ্বরই পৃথিবীতে রাজাগণকে এবং জাতিগণকে সৃষ্টি করেছেন।
ঈশ্বরই নেতাদের ও বিচারকদের সৃষ্টি করেছেন।
12 ঈশ্বরই তরুণ তরুণীদের সৃষ্টি করেছেন।
ঈশ্বরই বৃদ্ধ ও যুবকদের সৃষ্টি করেছেন।
13 প্রভুর নামের প্রশংসা কর।
চিরদিনের জন্য তাঁর নামের সম্মান কর!
পৃথিবী এবং স্বর্গে যা কিছু রয়েছে,
তারা সবাই প্রভুর প্রশংসা কর!
14 ঈশ্বর তাঁর মানুষদের শক্তিশালী করবেন।
লোক ঈশ্বরের অনুগামীদের প্রশংসা করবে।
লোকে ইস্রায়েলের প্রশংসা করবে।
ওরা সেই লোক যাদের জন্য ঈশ্বর লড়াই করেন, প্রভুর প্রশংসা কর!
8 এই হল প্রভুর বার্তা: “সেই সময় যিহূদার রাজা এবং গুরুত্বপূর্ণ কর্মচারীদের অস্থিসমূহ, যাজকগণ ও ভাববাদীগণের অস্থিসমূহ এবং জেরুশালেমের লোকদের অস্থিসমূহ তাদের কবরগুলির থেকে বার করে আনা হবে। 2 তারপর তারা সংগ্রহ করা সমস্ত অস্থি ছড়িয়ে দেবে আকাশভরা সূর্য, চন্দ্র এবং তারাদের নীচে এই মাটিতে। জেরুশালেমের লোকরা সূর্য, চন্দ্র, তারাদের ভালোবাসতো। তারা ওদের সেবা করতো, অনুসরণ করতো, উপদেশ চাইতো এবং পূজা করতো। কিন্তু কেউ সেই অস্থি একত্রিত করে পুনরায় সমাধিস্থ করবে না। সুতরাং সেই অস্থিগুলো পশুদের বিষ্ঠার মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকবে।
3 “আমি জোর করে যিহূদার লোকদের ভিটেমাটি ছাড়া করব। তাদের বিদেশের মাটিতে পাঠিয়ে দেব। যুদ্ধে যে সমস্ত যিহূদার মানুষ বেঁচে গিয়েছে তারাও মৃত্যু কামনা করবে।” এই ছিল প্রভুর বার্তা।
পাপ এবং শাস্তি
4 “যিরমিয় এই কথাগুলি যিহূদার লোকদের বলে দাও: ‘প্রভু এই কথাগুলি বললেন:
“‘যদি কোন মানুষ পড়ে যায়,
সে আবার উঠে দাঁড়ায়
এবং যদি কেউ ভুল পথে যায় সে আবার সঠিক পথে ফিরে আসে।
যিহূদার লোকরা ভুল পথে গিয়েছিল।
5 কিন্তু জেরুশালেমের ঐসব লোকরা
কেন সেই একই ভুল পথে চলতে লাগল?
তারা ফিরে এল না,
বরং তারা নিজেদের তৈরী মিথ্যেকেই বিশ্বাস করল।
6 আমি তাদের কথা মন দিয়ে শুনেছি।
কিন্তু তারা সততার সঙ্গে কথা বলে না।
তাদের পাপের জন্য তারা দুঃখ প্রকাশ করল না।
তারা চিন্তা করল না তারা কতখানি অসৎ।
তারা চিন্তা না করে কাজ করে।
তারা যুদ্ধক্ষেত্রে ছুটে বেড়ানো ঘোড়াদের মত।
7 এমন কি আকাশের পাখীরাও
কাজ করবার সঠিক সময়টি জানে।
সারস, পায়রা, বেগবান এবং গায়ক পাখীরাও জানে
নতুন বাসায় কখন উড়ে যেতে হয়।
কিন্তু আমার লোকরা জানেনা প্রভু তাদের কাছ থেকে কি চান।
8 “‘তোমরা বলে চলেছো, “আমরা প্রভুর শিক্ষায় জ্ঞানী হয়ে উঠেছি!”
কিন্তু তা সত্যি নয়। কারণ শাস্ত্রবিদরা মিথ্যা লিখেছিলেন।
9 ঐ “জ্ঞানী ব্যক্তিরা” প্রভুর শিক্ষামালা মেনে চলতে অস্বীকার করেছে।
সুতরাং তারা প্রকৃতপক্ষে জ্ঞানী ব্যক্তি নয়।
সেই “জ্ঞানী ব্যক্তিদের” ফাঁদে ফেলা হয়েছিল।
তারা বিহ্বল এবং লজ্জিত হয়েছে।
10 তাই আমি তাদের স্ত্রীদের অন্য পুরুষদের হাতে তুলে দেব।
আমি তাদের জমিসমূহ দান করে দেব অন্য মালিকদের।
ক্ষুদ্র থেকে গুরুত্বপূর্ণ সবাই শুধু বেশী পয়সা চায়।
ভাববাদী থেকে যাজকদের প্রত্যেকেই মিথ্যা কথা বলে।
11 আমার লোকরা খুব বাজে ভাবে আহত হয়েছে।
কিন্তু ভাববাদী ও যাজকরা ক্ষতগুলিতে পট্টি বেঁধে দেবার বদলে ওগুলোকে সামান্য আঁচড় বলে গণ্য করেছে।
তারা বলে, “সব কিছু ঠিকঠাক আছে!”
আসলে কিছুই ঠিক নেই!
12 মন্দ কাজের জন্য তাদের লজ্জিত হওয়া উচিৎ।
কিন্তু তারা এতটুকু লজ্জিত নয়।
তারা তাদের পাপের ব্যাপারে যথেষ্ট বিব্রত নয়।
তাই অন্যদের মতো তারাও শাস্তি পাবে।
যখন আমি অন্যদের শাস্তি দেব তখন তাদেরও ছুঁড়ে ফেলব মাটিতে।’”
প্রভু এই কথাগুলি বললেন।
13 “‘তোমাদের ফসল ঘরে তোলার উৎসব আর পালিত হবে না।
আমি তোমাদের সমস্ত ফল ও শস্যসমূহ কেড়ে নেব তাই আর ফসল তোলা হবে না।
এই ছিল প্রভুর বার্তা।
দ্রাক্ষা-ক্ষেতে কোন দ্রাক্ষা থাকবে না এবং কোন ডুমুর গাছ থাকবে না।
এমন কি গাছের পাতা পর্যন্ত শুকিয়ে যাবে।
আমি তোমাদের যা দিয়েছিলাম সব কিছু নিয়ে নেব।’”
14 “কেন আমরা এখানে বসে আছি?
আশ্রয়ের জন্য আমাদের দুর্গবিশিষ্ট শহরগুলিতে যাওয়া যাক।
যদি আমাদের প্রভু ঈশ্বর মারতেই চান, তাহলে সেখানে মরাই আমাদের পক্ষে ভাল।
আমরা প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছি।
তাই ঈশ্বর আমাদের বিষাক্ত জল পান করতে দিয়েছেন।
15 আমরা শান্তি আশা করেছিলাম
কিন্তু কিছুই ভালো হল না।
আমরা আশা করেছিলাম তিনি আমাদের ক্ষমা করবেন।
কিন্তু শুধুই বিপর্যয় আসছে।
16 দান পরিবারগোষ্ঠীর দেশ থেকে
শত্রুপক্ষের ঘোড়াদের হ্রেষা ধ্বনি আমরা শুনতে পাচ্ছি।
মাটি কেঁপে উঠেছে তাদের পায়ের ক্ষুরের শব্দে।
তারা এই দেশের সব কিছু ধ্বংস করতে আসছে।
তারা ধ্বংস করতে আসছে এই শহর এবং শহরের লোকেদের।”
17 “যিহূদার লোকরা, আমি তোমাদের আক্রমণ করার জন্য বিষধর সাপ পাঠাচ্ছি।
যিহূদার এই সাপেদের কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।
সাপরা তোমাদের ছোবল মারবে।”
এই ছিল প্রভুর বার্তা।
18 ঈশ্বর, আমি ভীষণ দুঃখিত ও পরম বেদনায় আছি।
19 আমার লোকদের কথা শুনুন।
এদেশের সর্বত্র মানুষ সাহায্যের জন্য আর্ত চিৎকার করছে।
তারা বলছে, “প্রভু কি সিয়োনে এখনও আছেন?
সিয়োনের রাজা এখনও কি সেখানে আছেন?”
কিন্তু ঈশ্বর বললেন, “যিহূদার লোকরা ভিনদেশের মূর্ত্তির পূজা করে এসেছে।
সেটা আমাকে প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ করে তুলেছে।
কেন তারা এই কাজ করেছিল?”
20 এবং লোকরা বলল, “ফসল কাটার সময় পেরিয়ে গিয়েছে।
গ্রীষ্মও চলে গিয়েছে।
তবুও আমরা রক্ষা পেলাম না।”
21 আমার লোকরা কষ্ট পেয়েছে বলে আমিও ব্যথিত।
দুঃখে আমার কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
22 গিলিয়দে নিশ্চয়ই ডাক্তার এবং ওষুধ আছে।
তাহলে আমার লোকদের আঘাত কেন সারে নি?
নৈশ ভোজে আমন্ত্রিত লোকদের কাহিনী
(লূক 14:15-24)
22 দৃষ্টান্তের মাধ্যমে যীশু আবার তাদের বলতে শুরু করলেন। 2 তিনি বললেন, “স্বর্গরাজ্যের বিষয়ে এই তুলনা দেওয়া যেতে পারে, একজন রাজা যিনি তাঁর ছেলের বিয়ের ভোজ প্রস্তুত করলেন। 3 সেই ভোজে নিমন্ত্রিত লোকদের ডাকবার জন্য তিনি তাঁর দাসদের পাঠালেন, কিন্তু তারা আসতে চাইল না।
4 “রাজা আবার তাঁর অন্য দাসদের পাঠালেন, বললেন, ‘যারা নিমন্ত্রিত তাদের সকলকে বল, দেখ, আমার ভোজ প্রস্তুত, আমার বলদ ও হৃষ্টপুষ্ট বাছুরগুলো সব মারা হয়েছে, আর সব কিছুই প্রস্তুত। তোমরা বিবাহ ভোজে যোগ দিতে এস।’
5 “কিন্তু নিমন্ত্রিত লোকেরা তাদের কথায় কান না দিয়ে যে যার কাজে চলে গেল। কেউ বা তার ক্ষেতের কাজে গেল, আবার কেউ গেল তার ব্যবসার কাজে। 6 অন্যরা রাজার সেই দাসদের ধরে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করল ও তাদের খুন করল। 7 এতে রাজা খুব রেগে গেলেন, তিনি তাঁর সৈন্য পাঠিয়ে সেই খুনীদের মেরে ফেললেন, সৈন্যরা তাদের শহরটিও পুড়িয়ে দিল।
8 “এরপর রাজা তাঁর দাসদের বললেন, ‘বিয়ের ভোজ প্রস্তুত কিন্তু যারা নিমন্ত্রিত হয়েছিল তারা তার যোগ্য ছিল না। 9 তাই তোমরা রাস্তার মোড়ে মোড়ে যাও আর যত লোকের দেখা পাও, তাদের সকলকে এই ভোজে যোগ দেবার জন্য ডেকে আনো।’ 10 তখন সেই দাসরা রাস্তায় রাস্তায় গিয়ে ভাল ও মন্দ যাদের পেল তাদের সকলকে ডেকে আনল। তাতে বিয়ে বাড়ির ভোজের ঘর অতিথিতে ভরে গেল।
11 “কিন্তু রাজা অতিথিদের সঙ্গে দেখা করতে এসে সেখানে একজন লোককে দেখতে পেলেন যে বিয়ে বাড়ির পোশাক পরে আসে নি। 12 রাজা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘বন্ধু, বিয়ে বাড়ির উপযুক্ত পোশাক ছাড়াই তুমি কেমন করে এখানে এলে?’ কিন্তু সে চুপ করে থাকল। 13 তখন রাজা তাঁর পরিচারকদের বললেন, ‘এর হাত পা বেঁধে একে বাইরে অন্ধকারে ফেলে দাও, যেখানে লোকেরা কান্নাকাটি করে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষে।’
14 “কারণ অনেকেই আহুত, কিন্তু অল্পই মনোনীত।”
ইহুদী নেতারা যীশুকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করল
(মার্ক 12:13-17; লূক 20:20-26)
15 তখন ফরীশীরা সেখান থেকে চলে গেল, আর কেমন করে যীশুকে তাঁর কথার ফাঁদে ফেলা যায় সেই পরিকল্পনা করল। 16 তারা হেরোদীয়দের কয়েকজনের সঙ্গে নিজেদের কয়েকজন অনুগামীকে যীশুর কাছে পাঠাল। এই লোকেরা এসে বলল, “গুরু, আমরা জানি আপনি একজন সৎ লোক। ঈশ্বরের পথের বিষয়ে সঠিকভাবে শিক্ষা দিয়ে থাকেন। আর কে কি বলে তার ধার ধারেন না কারণ লোকে কি ভাববে তাতে আপনার কিছু যায় আসে না। 17 তাহলে আপনার কি মত, কৈসরকে কর দেওয়া উচিত কি না?”
18 যীশু তাদের বদ মতলব বুঝতে পেরে বললেন, “ভণ্ডের দল আমাকে ফাঁদে ফেলতে চাইছ কেন? 19 যে টাকায় কর দেওয়া হয় তা আমাকে দেখাও।” তারা একটা রূপোর টাকা তাঁর কাছে নিয়ে এল। 20 তখন তিনি তাদের বললেন, “এর ওপরে এই মূর্তি ও নাম কার?”
21 তারা বলল, “রোম সম্রাট কৈসরের।”
তখন তিনি তাদের বললেন, “তবে যা কৈসরের তা কৈসরকে দাও, আর যা ঈশ্বরের তা ঈশ্বরকে দাও।”
22 তারা এই জবাব শুনে আশ্চর্য হয়ে গেল, তাঁকে আর বিরক্ত না করে সেখান থেকে চলে গেল।
কিছু সদ্দূকীর যীশুকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা
(মার্ক 12:18-27; লূক 20:27-40)
23 যাঁরা বলে পুনরুত্থান নেই, সেই সদ্দূকী সম্প্রদায়ের কিছু লোক সেই দিন যীশুর কাছে এসে তাঁকে একটি প্রশ্ন করলেন। 24 তাঁরা বললেন, “গুরু, মোশি বলেছেন যদি কোন লোক নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যায়, তবে তার নিকটতম আত্মীয়রূপে তার ভাই সেই বিধবাকে বিয়ে করবে ও তার ভাইয়ের হয়ে তার বংশ উৎপন্ন করবে।[a] 25 আমাদের জানা এক পরিবারে সাত ভাই ছিল। প্রথম জন বিয়ে করল, তার পরে সে মারা গেল। আর তার কোন সন্তান না থাকাতে, তার ভাই সেই বিধবাকে বিয়ে করল। 26 এই অবস্থা দ্বিতীয়, তৃতীয় ও সপ্তম জন পর্যন্ত হল, তারা সেই স্ত্রীকে বিয়ে করল ও মারা গেল। 27 শেষে সেই স্ত্রীলোকটিও মারা গেল। 28 এখন আমাদের প্রশ্ন হল, পুনরুত্থানের সময় ঐ সাত ভাইয়ের মধ্যে সেই স্ত্রী কার হবে, সকলেই তো তাকে বিয়ে করেছিল?”
29 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “তোমরা ভুল করছ, কারণ তোমরা না জান শাস্ত্র, না জান ঈশ্বরের পরাক্রম। 30 জেনে রাখো, পুনরুত্থানের পর লোকেরা বিয়ে করে না, বা তাদের বিয়েও দেওয়া হয় না, তারা বরং স্বর্গদূতদের মতো থাকে। 31 মৃতদের জীবিত হয়ে ওঠার বিষয়ে তোমাদের ভালোর জন্য ঈশ্বর নিজে যে কথা বলেছেন, তা কি তোমরা পড়নি? 32 তিনি বলেছেন, ‘আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্হাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর।’(A) ঈশ্বর মৃতদের ঈশ্বর নন, কিন্তু জীবিতদেরই ঈশ্বর।”
33 সমবেত লোকেরা তাঁর এই শিক্ষা শুনে আশ্চর্য হয়ে গেল।
কোন্ আদেশ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?
(মার্ক 12:28-34; লূক 10:25-28)
34 ফরীশীরা যখন শুনলেন যে যীশুর জবাবে সদ্দূকীরা নিরুত্তর হয়ে গেছেন তখন তাঁরা দল বেঁধে যীশুর কাছে এলেন। 35 তাঁদের মধ্যে একজন শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিত যীশুকে ফাঁদে ফেলবার জন্য জিজ্ঞাসা করলেন, 36 “গুরু, বিধি-ব্যবস্থার মধ্যে সবচেয়ে মহান আদেশ কোনটি?”
37 যীশু তাঁকে বললেন, “‘তোমার সমস্ত অন্তর ও তোমার সমস্ত প্রাণ ও মন দিয়ে তুমি তোমার প্রভু ঈশ্বরকে ভালবাসবে।’(B) 38 এটিই হচ্ছে সর্বপ্রথম ও মহান আদেশ। 39 আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে এরই অনুরূপ, ‘তুমি নিজেকে যেমন ভালবাস, তেমনি তোমার প্রতিবেশীকেও ভালবাসবে।’(C) 40 সমস্ত বিধি-ব্যবস্থা ভাববাদীদের সমস্ত শিক্ষা, এই দুটি আদেশের উপর নির্ভর করে।”
যীশু ফরীশীদের প্রশ্ন করলেন
(মার্ক 12:35-37; লূক 20:41-44)
41 ফরীশীরা তখনও সেখানে সমবেত ছিলেন, সেই সময় যীশু তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, 42 “খ্রীষ্টের বিষয়ে তোমরা কি মনে কর? তিনি কার বংশধর?”
তাঁরা বললেন, “তিনি দায়ূদের পুত্র।”
43 যীশু তাদের বললেন, “তবে দায়ূদ কিভাবে পবিত্র আত্মার অনুপ্রেরণায় তাঁকে ‘প্রভু’ বলে সম্বোধন করেছেন? তিনি বলেছিলেন,
44 ‘প্রভু আমার প্রভুকে বললেন,
যতক্ষন না আমি তোমার শত্রুদের তোমার পায়ের নীচে রাখি
ততক্ষণ তুমি আমার ডান দিকে বস ও শাসন কর।’(D)
45 তাহলে, দায়ূদ যখন তাঁকে ‘প্রভু’ বলে সম্বোধন করেছেন, তখন তিনি কেমন করে তাঁর সন্তান হতে পারেন?”
46 কিন্তু এর উত্তরে কেউ একটি কথাও তাঁকে বলতে পারলেন না, আর সেই দিন থেকে কেউ তাঁকে আর কিছু জিজ্ঞাসা করতেও সাহস করলেন না।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International