M’Cheyne Bible Reading Plan
বিলিয়মের প্রথম বার্তা
23 বিলিয়ম বালাককে বললেন, “এখানে সাতটি বেদী তৈরী করো এবং আমার জন্য সাতটি ষাঁড় এবং সাতটি মেষ তৈরী রাখো।” 2 বিলিয়মের কথামতো বালাক কাজগুলো করলেন। এরপর বালাক এবং বিলিয়ম প্রত্যেকটি বেদীর ওপরে একটি করে মেষ এবং একটি করে ষাঁড় উৎসর্গ করলেন।
3 তখন বিলিয়ম বালাককে বললেন, “আপনি আপনার হোমবলির কাছে দাঁড়িয়ে থাকুন। আমি অন্য জায়গায় যাবো। হয়তো প্রভু আমার কাছে আসবেন এবং আমার যা বলা উচিৎ সেটা উনি আমায় বলে দেবেন।” এরপর বিলিয়ম একটি উঁচু জায়গায় চলে গেলেন।
4 ঈশ্বর সেই স্থানে বিলিয়মের কাছে এলে বিলিয়ম বললেন, “আমি সাতটি বেদী তৈরী করেছি এবং উৎসর্গ হিসেবে প্রত্যেকটি বেদীর ওপরে একটি ষাঁড় এবং একটি মেষ হত্যা করেছি।”
5 তখন প্রভু বিলিয়মকে তাঁর যা বলা উচিৎ তা বললেন। আর বললেন, “বালাকের কাছে ফিরে যাও, এবং আমি তোমাকে যা বলতে বলেছি সেই কথাগুলো বলো।”
6 তাই বিলিয়ম বালাকের কাছে ফিরে গেলেন। বালাক তখনও সেই হোমবলির কাছে দাঁড়িয়েছিলেন। মোয়াবের সমস্ত নেতারাও তাঁর সঙ্গে সেখানে দাঁড়িয়েছিলেন। 7 তখন বিলিয়ম এই কথাগুলো বললেন:
“মোয়াবের রাজা বালাক
অরামের পূর্বদিকে পর্বত থেকে আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন।
বালাক আমাকে বললেন,
‘আসুন, আমার জন্য যাকোবের বিরুদ্ধে বলুন।
আসুন, ইস্রায়েলের লোকদের বিরুদ্ধে বলুন।’
8 কিন্তু ঈশ্বর এইসব লোকদের বিরুদ্ধে নন,
সুতরাং আমিও তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারবো না।
ঈশ্বর তাদের খারাপ হোক্ এমন কিছু চান না।
সুতরাং আমিও সেটা করতে পারবো না।
9 আমি পর্বতের ওপর থেকে ঐ লোকদের দেখছি।
আমি উঁচু পর্বতশৃঙ্গ থেকে তাদের দেখছি।
ঐ সমস্ত লোকরা একাই বাস করে।
তারা অন্য কোনো জাতির অংশ নয়।
10 যাকোবের লোকদের কে গণনা করতে পারবে?
তারা ধূলোর কণার মতোই সংখ্যায় প্রচুর।
ইস্রায়েলের এক চতুর্থাংশ লোককেও কেউ গণনা করতে পারবে না।
একজন ভালো লোকের মতো আমাকে মরতে দাও।
তাদের মতো সুখে আমার জীবন শেষ হতে দাও।”
11 বালাক বিলিয়মকে বললেন, “আপনি আমার জন্য কি করলেন? আমার শত্রুদের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য আমি আপনাকে এখানে এনেছিলাম। কিন্তু আপনি তাদের কেবলমাত্র আশীর্বাদ করলেন!”
12 কিন্তু বিলিয়ম উত্তর দিলেন, “প্রভু আমাকে যে কথা বলেছেন, আমি অবশ্যই সেই কথা বলবো।”
13 তখন বালাক তাঁকে বললেন, “তাহলে আমার সঙ্গে আরেকটি জায়গায় আসুন। সেই জায়গা থেকে আপনি তাদের দেখতে পাবেন। আপনি তাদের সকলকে দেখতে পাবেন না, কেবল প্রান্তভাগ দেখতে পাবেন। সেই জায়গা থেকে আমার জন্য তাদের বিরুদ্ধে আপনার পক্ষে কথা বলা সম্ভব হতে পারে।” 14 সুতরাং বালাক বিলিয়মকে সোফীম ক্ষেত্রের ওপরে নিয়ে গেলেন। এই জায়গাটি ছিল পিস্গা পর্বতের ওপরে। সেই জায়গায় বালাক সাতটি বেদী তৈরী করে প্রত্যেকটি বেদীর ওপরে উৎসর্গস্বরূপ একটি করে ষাঁড় এবং একটি করে মেষ উৎসর্গ করলেন।
15 বিলিয়ম বালাককে বললেন, “এই স্থানে আপনার হোমবলির পাশে থাকুন। আমি ঈশ্বরের সঙ্গে দেখা করতে যাবো।”
16 সুতরাং ঈশ্বর বিলিয়মের কাছে এলেন এবং কি বলতে হবে তা বিলিয়মকে বলে দিলেন। এরপর প্রভু বিলিয়মকে বালাকের কাছে ফিরে গিয়ে সেই কথাগুলো বলতে বললেন। 17 সুতরাং বিলিয়ম বালাকের কাছে ফিরে গেলেন। বালাক তখনও পর্যন্ত হোমবলির কাছে দাঁড়িয়েছিলেন। মোয়াবের নেতারা তাঁর সঙ্গে সেখানেই ছিলেন। বালাক বিলিয়মকে আসতে দেখে বললেন, “প্রভু কি বলেছেন?”
বিলিয়মের দ্বিতীয় বার্তা
18 বিলিয়ম তখন এই ভাববাণী বললেন:
“দাঁড়াও বালাক এবং আমার কথা শোন।
আমার কথা শোন, সিপ্পোরের পুত্র বালাক।
19 ঈশ্বর মানুষ নন;
তিনি মিথ্যে বলবেন না।
ঈশ্বর মানুষ নন;
তাঁর সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হবে না।
যদি প্রভু বলেন যে তিনি কোনো কাজ করবেন,
তখন তিনি অবশ্যই সে কাজ করবেন।
প্রভু যদি কোনো প্রতিজ্ঞা করেন
তাহলে তিনি প্রতিজ্ঞা মতো কাজটি করবেন।
20 প্রভু আমাকে ঐ সমস্ত লোকদের আশীর্বাদ করতে বলেছেন।
প্রভু তাদের আশীর্বাদ করেছেন, সুতরাং আমি সেটা পরিবর্তন করতে পারব না।
21 ঈশ্বর যাকোবের লোকদের মধ্যে কোনো অন্যায় দেখেন নি।
ইস্রায়েলের লোকদের মধ্যেও তিনি কোনো পাপ দেখেন নি।
প্রভু তাদের ঈশ্বর
এবং তিনি তাদের সঙ্গে আছেন।
মহান রাজা তাদের সঙ্গে আছেন।
22 ঈশ্বর ঐসব লোকদের মিশর থেকে নিয়ে এসেছেন।
তিনি তাদের পক্ষে বুনো ষাঁড়ের মতোই শক্তিশালী।
23 যাকোবের লোকদের পরাজিত করতে পারে এমন কোনো ক্ষমতা নেই।
ইস্রায়েলের লোকদের থামাতে পারে এমন কোনো মন্ত্রও নেই।
যাকোব সম্পর্কে এবং ইস্রায়েলের লোকদের সম্পর্কে লোক এই কথা বলবে:
‘ঈশ্বর যে সব মহৎ কাজ করেছেন, তা দেখো!’
24 এইসব লোকরা সিংহের মতোই উঠে দাঁড়ায়
এবং যে পর্যন্ত না তার শিকার খায়
ও তার রক্ত পান করে
সে পর্যন্ত বিশ্রাম করে না।”
25 তখন বালাক বিলিয়মকে বললেন, “আপনি ওদের শাপও দেবেন না, আশীর্বাদও করবেন না।”
26 বিলিয়ম উত্তর দিলেন, “আমি আপনাকে আগেই বলেছিলাম যে প্রভু আমাকে যা বলতে বলবেন, আমি কেবল সেই কথাই বলতে পারবো।”
27 তখন বালাক বিলিয়মকে বললেন, “তাহলে আমার সঙ্গে আপনি আরেকটি জায়গায় আসুন। এমন হতে পারে যে, ঈশ্বর খুশী হবেন এবং সেই স্থান থেকে অভিশাপ দেওয়ার জন্য আপনাকে অনুমতি দেবেন।” 28 তখন বালাক বিলিয়মকে নিয়ে পিয়োর পর্বতের ওপরে গেলেন। সেই পর্বতের ওপর থেকে মরুভূমি দেখা যায়।
29 বিলিয়ম বললেন, “এখানে সাতটি বেদী তৈরী করুন। তারপর সেই বেদীর জন্য সাতটি ষাঁড় এবং সাতটি মেষকে তৈরী রাখুন।” 30 বিলিয়ম যা করতে বলেছিলেন বালাক ঠিক তাই করলেন। বালাক বেদীগুলোর ওপরে ষাঁড় ও মেষগুলোকে উৎসর্গ করলেন।
সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: দায়ূদের একটি গীত।
64 ঈশ্বর, আমার কথা শুনুন।
আমার শত্রু আমায় শাসাচ্ছে। আমাকে তার হাত থেকে রক্ষা করুন!
2 শত্রুর গোপন চক্রান্ত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
ঐ মন্দ লোকেদের কাছ থেকে আমায় লুকিয়ে রাখুন।
3 ওরা আমার সম্পর্কে খারাপ ও মিথ্যা কথা বলেছে।
ওদের জিভ তীক্ষ্ণ তরবারির মত, ওদের তিক্ত কথা যেন বিভক্ত তীরের মত।
4 ওদের গোপন ডেরা থেকে ওরা নির্ভয়ে
এবং অতর্কিতে সরল ও সৎ মানুষদের দিকে তীর ছোঁড়ে।
5 মন্দ কাজে ওরা একে অন্যকে উৎসাহিত করে।
ওরা ওদের ফাঁদ পাতার কথাবার্তা বলে, ওরা একে অন্যকে বলে, “কেউ এই ফাঁদ দেখতে পাবে না!”
6 ওরা ওদের ফাঁদ লুকিয়ে রেখেছে।
ওরা জীবন্ত বলিসমূহের সন্ধানে আছে।
মানুষ খুব চতুর হতে পারে, তাই ওরা কি ফন্দি করছে তা জানা মুস্কিল।
7 কিন্তু ঈশ্বরও ওদের দিকে “তীর” নিক্ষেপ করতে পারেন!
এটা জানতে পারার আগেই দুষ্ট লোকরা জখম হয়ে যাবে।
8 মন্দ লোকরা অন্য লোকের খারাপ করারই চিন্তা করে।
কিন্তু ঈশ্বর ওদের দুষ্ট পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে পারেন এবং ঐ কু-পরিকল্পনা ওদের ওপরেই ঘটাতে পারেন।
তখন যারাই ওদের দেখবে
তারা বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে মাথা নাড়াবে।
9 লোকরা দেখবে ঈশ্বর কি করেছেন।
তাঁর সম্পর্কে তারা অন্য লোকদের বলবে।
তখন প্রত্যেকে ঈশ্বর সম্পর্কে আরও বেশী জানতে পারবে।
ওরা তাঁকে ভয় ও শ্রদ্ধা করতে শিখবে।
10 একজন ভালো লোক আনন্দের সঙ্গে প্রভুর সেবা করে
এবং তাঁর ওপর নির্ভর করে।
একজন ভাল ও সৎ লোক ঈশ্বরকে তার অন্তর থেকে প্রশংসা করে।
সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: দায়ূদের একটি প্রশংসা গীত।
65 সিয়োনে বিরাজমান হে ঈশ্বর, আমি আপনার প্রশংসা করি।
আপনাকে যা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা আমি দিয়েছি।
2 আপনি যে সব কাজ করেছেন সে সম্পর্কে আমরা বলে থাকি।
আপনিও আমাদের প্রার্থনা শুনেছেন।
যারা আপনার কাছে আসে, তাদের প্রত্যেকের প্রার্থনা আপনি শোনেন।
3 যখন আমাদের পাপের ভার অতিরিক্ত বেড়ে যায়,
তখন আপনি সেই পাপ ভার লাঘব করেন।
4 ঈশ্বর, আপনিই আপনার লোকদের মনোনীত করেন।
আপনার মন্দিরে এসে আপনার উপাসনা করার জন্য আপনিই আমাদের মনোনীত করেছেন।
আপনার মন্দিরে, আপনার পবিত্র প্রাসাদে,
যে সব মনোরম জিনিস আছে, তাই দিয়ে আমরা সন্তুষ্ট হব!
5 ঈশ্বর আপনি আমাদের রক্ষা করেন।
ভালো লোকরা আপনার কাছে প্রার্থনা করে এবং আপনি তাদের প্রার্থনার উত্তর দেন।
তাদের জন্য আপনি আশ্চর্য কার্য করেন।
সারা পৃথিবীতে লোকরা আপনাতে আস্থা রাখে।
6 ঈশ্বর তাঁর শক্তি দিয়ে পর্বত সৃষ্টি করেছেন।
আমাদের চারপাশে আমরা তাঁর শক্তিকে দেখতে পাই।
7 উত্তাল সমুদ্রকে ঈশ্বর শান্ত করেছেন।
ঈশ্বরই পৃথিবীতে “জনসমুদ্রসমূহ” সৃষ্টি করেছেন।
8 আপনি যেসব বিস্ময়কর জিনিস করেন, তাতে সারা পৃথিবীর লোক বিস্ময়-বিহ্বল হয়েছে।
সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত আমাদের প্রচণ্ড সুখী করে!
9 আপনিই জমির যত্ন নেন।
আপনিই জমিতে সেচ দেন এবং তাতে ফসল ফলান।
হে ঈশ্বর, আপনিই সেই জন, যিনি নদী ও খালগুলি জলে ভরে দিয়েছেন
এবং ফসল ফলাতে সাহায্য করেছেন।
10 হাল দেওয়া জমিতে আপনিই বৃষ্টি ঝরান।
আপনিই জমিকে জল দিয়ে সিক্ত করেন।
আপনিই বৃষ্টির জল দিয়ে জমিকে নরম করেন
এবং আপনিই কচি চারা জন্মাতে দেন।
11 আপনি ভালো ফসল দিয়ে নতুন বছর শুরু করেন।
আপনি বিভিন্ন ফসল দিয়ে গাড়ীগুলি ভরে দেন।
12 পাহাড় ও মরুভূমি ঘাসে আচ্ছাদিত হয়ে আছে।
13 চারণ ভূমিগুলো মেষে ভরে রয়েছে।
উপত্যকাগুলো ফসলে পরিপূর্ণ হয়েছে।
প্রত্যেকটি মানুষ আনন্দে ধ্বনি দিচ্ছে এবং গান গাইছে।
বাবিলের প্রতি ঈশ্বরের বার্তা
13 আমোসের পুত্র যিশাইয় ঈশ্বরের কাছ থেকে বাবিল বিষয়ক এই দুঃখজনক বার্তা পান।
2 ঈশ্বর বললেন, “তোমরা বৃক্ষশূন্য পর্বতের ওপরে পতাকা তোল।
লোকদের হাত নেড়ে চিৎকার করে ডাক।
তাদের বল, গুরুত্বপূর্ণ লোকদের জন্য যে প্রবেশপথ
সেই পথ দিয়ে প্রবেশ করতে।”
3 ঈশ্বর বললেন, “আমি ঐসব লোকদের অন্যান্যদের থেকে আলাদা করেছি
এবং তাদের বিষয়ে আমি নিজে আদেশ দিয়েছি।
আমি ক্রুদ্ধ।
আমি লোকদের শাস্তি দেওয়ার জন্য আমার শক্তিশালী যোদ্ধাদের একত্র করেছি,
যারা আমার গর্ব ও আনন্দ।
4 “পর্বতগুলোতে একটা বিরাট শব্দ আছে, সেই শব্দটি শোন!
এটা পর্বতমালায় বহু জনসমাগমের শব্দ।
অনেক রাজ্যের লোকরা একসঙ্গে জড়ো হয়েছে।
প্রভু সর্বশক্তিমান তাঁর সেনাবাহিনীকে ডাকছেন।
5 প্রভু এবং তার সেনাদল আসছে।
দূর দেশ থেকে তারা আসছে, দিগন্তের ওপার থেকে।
প্রভু তাঁর ক্রোধ প্রদর্শন করতে সেনাদলকে অস্ত্রের মতো ব্যবহার করবেন,
এই সেনাদল গোটা দেশকে ধ্বংস করবে।”
6 হাহাকার কর, নিজেদের জন্য দুঃখ কর। কেননা প্রভুর বিশেষ দিন আগত প্রায়। সেই সময়ে আসছে যখন শত্রুরা তোমার সম্পদ লুঠ করবে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর স্বয়ং তা ঘটাবেন। 7 লোকরা তাদের সাহস হারাবে। ভয় মানুষকে দুর্বল করবে। 8 প্রতিটি মানুষই ভয় পাবে। এই ভয় মহিলাদের প্রসব বেদনার মতো তাদের কষ্ট দেবে। তাদের মুখ হবে অগ্নিবর্ণ। লোকে একে অপরের দিকে ভয়ার্ত চোখে বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকবে।
বাবিলের বিরুদ্ধে ঈশ্বরের বিচার
9 দেখ, প্রভুর বিশেষ দিন আসছে। এই দিন হবে ভয়ঙ্কর। ঈশ্বর ক্রোধে গোটা দেশকে ধ্বংস করবেন। ঈশ্বর এই দেশের সমস্ত পাপী লোকদের ধ্বংস করবেন। 10 সেই দিন আকাশে অন্ধকার ঘনিয়ে আসবে। সূর্য, চাঁদ এবং তারারা কিরণ দেবে না।
11 ঈশ্বর বললেন, “আমি পৃথিবীতে বিপর্যয় ঘটাব। আমি দুষ্ট লোকদের তাদের পাপের জন্য শাস্তি দেব। আমি অহঙ্কারী লোকদের তাদের দর্প হারিয়ে দেব। আমি নিষ্ঠুর লোকদের গর্ব চূর্ণ করে দেব। 12 শুধুমাত্র অল্প কয়েকজন লোক বেঁচে থাকবে। এদের সংখ্যা এত নগন্য হবে যে তা সোনা খোঁজার মতোই কঠিন। এবং এইসব লোকেরা খাঁটি সোনার থেকেও অনেক বেশী দামী। 13 ক্রোধে আমি আকাশমণ্ডলকে কম্পিত করব। এর ফলে পৃথিবী টলে গিয়ে স্থান ভ্রষ্ট হবে।”
যেদিন প্রভু সর্বশক্তিমান তাঁর ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটাবেন সেদিন এসব ঘটনা ঘটবে। 14 তখন বাবিল থেকে লোকরা আহত হরিণের মতো, মেষপালকবিহীন মেষের মতো নিজ নিজ দেশের দিকে ছুটে পালাবে। 15 কিন্তু শত্রুরা বাবিলের লোকদের তাড়া করবে এবং যে ধরা পড়বে তাকেই তারা তরবারি দিয়ে হত্যা করবে। 16 তাদের বাড়িগুলি লুণ্ঠিত হবে। তাদের স্ত্রীরা ধর্ষিত হবে। আর তাদের চোখের সামনেই তাদের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হবে।
17 ঈশ্বর বললেন, “দেখ আমি মাদীয়দের সেনা দ্বারা বাবিলকে আক্রমণ করাব। রূপো ও সোনা দেওয়া হলেও মাদীয়র সেনারা লড়াই থামাবে না। 18 তীরন্দাজরা যুবকদের হত্যা করবে। শিশুদের তারা ক্ষমা করবে না। তারা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের প্রতিও করুণা করবে না। 19 ঈশ্বর বাবিলকে ধ্বংস করবেন ঠিক যে ভাবে তিনি সদোম ও ঘমোরাকে ধ্বংস করেছিলেন।
“যদিও বাবিল হচ্ছে সব চেয়ে সুন্দর রাজ্য এবং সেখানকার নাগরিকদের গর্বস্বরূপ 20 কিন্তু বাবিল আর সুন্দর থাকবে না। ভবিষ্যতে লোক সেখানে বাস করবে না। আরবীও সে স্থানে তাঁবু ফেলবে না। মেষপালকরা সেখানে মেষ চরাবে না। 21 শুধুমাত্র মরুভূমির হিংস্র বন্য জন্তু জানোয়াররাই সেখানে বাস করবে। বাবিলের বাড়িতে কোন লোক বাস করবে না। সেখানে বন্য জন্তুরা শুয়ে থাকবে। বন্য ছাগলরা খেলা করবে। পেঁচা এবং বড় বড় পাখিতে বাড়িগুলি ভর্ত্তি হয়ে যাবে। 22 বাবিলের সুন্দর প্রাসাদোপম মনোরম বাড়িগুলিতে বন্য কুকুর এবং নেকড়েরা চিৎকার করতে থাকবে। বাবিলকে ধ্বংস করা হবে। বাবিলের শেষ সময় ঘনিয়ে এসেছে। বাবিলের দিন আর বাড়ানো হবে না।”
1 আমি পিতর, প্রভু যীশু খ্রীষ্টের প্রেরিত।
পন্ত, গালাতীয়া, কাপ্পাদকিয়া, এশিয়া ও বিথুনিয়াতে ঈশ্বরের যেসব মনোনীত লোকরা নির্বাসনে ছড়িয়ে আছে তাদের উদ্দেশ্যে এই চিঠি লিখছি। 2 বহুপূর্বেই পিতা ঈশ্বর তাঁর পরিকল্পনা অনুসারে তোমাদের মনোনীত করেছেন, যাতে তোমরা তাঁর পবিত্র লোকসমষ্টি হও। পবিত্র আত্মা তোমাদের পবিত্র করেছেন। ঈশ্বর চেয়েছিলেন, যে তোমরা তাঁর বাধ্য হবে ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের রক্তে শুচি হবে।
ঈশ্বরের অনুগ্রহ ও শান্তি যেন তোমাদের ওপর প্রচুর পরিমানে বর্তায়।
জীবন্ত প্রত্যাশা
3 প্রশংসিত হোন ঈশ্বর ও আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের পিতা! ঈশ্বরের মহাদয়ায় তিনি আমাদের নতুন জীবন দিয়েছেন। খ্রীষ্টের পুনরুত্থান দ্বারা এই নতুন জীবন এনেছে এক নতুন প্রত্যাশা। 4 আমরা এখন ঈশ্বরের আশীর্বাদ প্রত্যাশা করব যা তিনি সন্তানদের জন্য স্বর্গে সঞ্চিত রেখেছেন, যা কখনও ধ্বংস বা বিনষ্ট বা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
5 বিশ্বাসের মাধ্যমে ঈশ্বরের শক্তি তোমাদের রক্ষা করছে এবং যে পর্যন্ত না তোমরা পরিত্রাণ পাও সেই পর্যন্ত নিরাপদে রাখছে। সেই পরিত্রাণের আয়োজন করা আছে যাতে তা শেষকালে তোমরা পাও। 6 আপাততঃ বিভিন্ন দুঃখ কষ্ট তোমাদের ব্যথিত করলেও ঐ কথা ভেবে তোমরা আনন্দ কর। 7 এসব দুঃখ কষ্ট আসে কেন? এরা আসে যাতে তোমাদের বিশ্বাস খাঁটি বলে প্রমাণিত হয়। যে সোনা ক্ষয় পায় তাকেও আগুনে পুড়িয়ে খাঁটি করা হয়, আর তোমাদের খাঁটি বিশ্বাস তো সেই সোনার চাইতেও মূল্যবান। বিশ্বাসের পরীক্ষায় যদি দেখা যায় যে তোমাদের বিশ্বাস অটল আছে, তবে যীশু খ্রীষ্টের পুনরাগমনের সময় তোমরা কত না প্রশংসা, গৌরব ও সম্মান পাবে।
8 তাঁকে না দেখেও তোমরা তাঁকে ভালবাস। তোমরা তাঁকে না দেখতে পেয়েও বিশ্বাস করছ বলে তোমরা এক অনির্বচনীয় গৌরবময় মহা আনন্দে পরিপূর্ণ হচ্ছ। 9 তোমাদের বিশ্বাসের এক লক্ষ্য আছে, আর সেই লক্ষ্য হল তোমাদের আত্মার পরিত্রাণ যা তোমরা লাভ করছ।
10 ঈশ্বরের অনুগ্রহ যে তোমরা লাভ করবে সে বিষয়ে ভাববাদীরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। তাঁরা এই মুক্তির বিষয়েও সযত্নে অনুসন্ধান করেছেন। 11 খ্রীষ্টের আত্মা ঐসব ভাববাদীদের মধ্যে ছিলেন এবং সেই আত্মা তাঁদের জানিয়েছিলেন খ্রীষ্টের প্রতি কি কি দুঃখভোগ ঘটবে এবং সেই দুঃখভোগের পর কত মহিমা আসবে। তাঁরা এও জানতে চেষ্টা করেছিলেন যে সেই আত্মা তাঁদের কি নির্দেশ করছেন, কখন সেই সব ঘটবে এবং তা ঘটার সময় জগৎ কেমন থাকবে।
12 ঐ ভাববাদীদের জানানো হয়েছিল যে ঐ সব সেবা কাজ তাঁদের জন্য নয়, বরং ভাববাদীরা তোমাদেরই সেবা করেছিলেন। স্বর্গ থেকে পাঠানো পবিত্র আত্মায় পরিচালিত হয়ে যাঁরা তোমাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করেছিলেন, তাঁদের কাছ থেকে তোমরা সেই সব কথা শুনেছ। তোমরা যে সব বিষয় শুনেছ, সে সব বিষয় স্বর্গদূতরাও শুনতে আগ্রহী।
পবিত্রভাবে জীবনযাপন করতে আহ্বান
13 সেবা করবার উপযোগী করে তোমাদের মনকে প্রস্তুত রেখো, আর আত্মসংযমী হও। যীশু খ্রীষ্টের আগমনের সময় যে অনুগ্রহ তোমাদের দেওয়া হবে তার ওপর সম্পূর্ণ প্রত্যাশা রাখ। 14 অতীতে তোমরা এটা বুঝতে না তাই তোমাদের অভিলাষ অনুসারে মন্দ পথে চলতে; এখন তোমরা ঈশ্বরের বাধ্য সন্তান, তাই অতীতে তোমরা যেভাবে চলতে সেভাবে চলো না। 15 কিন্তু যে ঈশ্বর তোমাদের আহ্বান করেছেন সেই ঈশ্বর যেমন পবিত্র তেমনি তোমরাও তোমাদের সকল কাজে পবিত্র থাক। 16 শাস্ত্রে লেখা আছে, “আমি পবিত্র বলে তোমরা পবিত্র হও।” (A)
17 ঈশ্বর কারও মুখাপেক্ষী না হয়ে প্রত্যেক লোকের কাজ অনুসারে তার বিচার করেন; সেই ঈশ্বরকে যখন তোমরা পিতা বলে সম্বোধন কর তখন তোমাদের উচিত পৃথিবীতে প্রবাসীর মতো ঈশ্বর ভয়ে জীবনযাপন করা। 18 তোমরা তো জান যে অতীতে তোমরা উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতে, যা তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে পেয়েছিলে। কিন্তু এখন সেই রকম জীবনযাপন করা থেকে তোমরা মুক্তি পেয়েছ। ঈশ্বর নশ্বর সোনা বা রূপোর বিনিময়ে তোমাদের মুক্তি ক্রয় করেন নি। 19 কিন্তু নির্দোষ ও নিখুঁত মেষশাবক, খ্রীষ্টের বহুমূল্য রক্ত দিয়ে তোমাদের ক্রয় করেছেন। 20 জগত সৃষ্টির আগেই খ্রীষ্টকে মনোনীত করা হয়েছিল; কিন্তু এই শেষ সময়ে তোমাদের জন্য তিনি প্রকাশিত হলেন। 21 খ্রীষ্টের মাধ্যমেই তোমরা ঈশ্বরে বিশ্বাসী হয়েছ। ঈশ্বর মৃতদের মধ্য থেকে খ্রীষ্টকে পুনরুত্থিত করে তাঁকে মহিমান্বিত করেছেন। সে জন্যই ঈশ্বরের প্রতি তোমাদের বিশ্বাস ও প্রত্যাশা আছে।
22 সত্যের অনুগামী হয়ে তোমরা নিজেদের শুদ্ধ করেছ, তাই তোমাদের অন্তরে বিশ্বাসী ভাই ও বোনেদের জন্য প্রকৃত ভালবাসা রয়েছে। সুতরাং এখন তোমরা তোমাদের সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে একে অপরকে ভালবাসো। 23 কোন নশ্বর বীজ থেকে তোমাদের এই নতুন জন্ম হয় নি। এই জীবন সম্ভব হয়েছে এক অবিনশ্বর বীজ থেকে। ঈশ্বরের সেই জীবন্ত ও চিরস্থায়ী বাক্য দ্বারাই তোমাদের নতুন জন্ম হয়েছে। 24 তাই শাস্ত্র বলে:
“মানুষ মাত্রেই ঘাসের মতো
আর ঘাসের ফুলের মতোই তাদের মহিমা।
ঘাস শুকিয়ে যায়,
ফুল ঝরে পড়ে;
25 কিন্তু ঈশ্বরের বাক্য চিরকাল থাকে।” (B)
বাক্য হচ্ছে সেই সুসমাচার যা তোমাদের কাছে প্রচার করা হয়েছে।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International