M’Cheyne Bible Reading Plan
পাথর থেকে জল নির্গত হল
17 সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা একসঙ্গে সীন মরুভূমি থেকে তাদের যাত্রা শুরু করল। প্রভু যেমনভাবে তাদের নেতৃত্ব দিলেন তারা সেইভাবে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় যেতে শুরু করল। ঘুরতে ঘুরতে তারা রফীদীমে গিয়ে শিবির স্থাপন করল। সেখানে কোনও পানীয় জল ছিল না। 2 তাই ঐসব লোকরা আবার মোশির সঙ্গে তর্ক শুরু করল এবং বলল, “আমাদের পানীয় জল দাও।”
মোশি তাদের বলল, “তোমরা কেন আমার বিরোধিতা করছো? কেনই বা তোমরা প্রভুকে পরীক্ষা করছো?”
3 কিন্তু লোকরা তখন প্রচণ্ড তৃষ্ণার্ত ছিল। তাই তারা পুনরায় মোশির কাছে নালিশ জানাতে শুরু করল। তারা বলল, “কেন তুমি আমাদের মিশর থেকে বার করে আনলে? তুমি কি আমাদের, আমাদের সন্তানদের এবং গবাদি পশুদের পানীয় জলের অভাবে মারার জন্য মিশর থেকে বাইরে নিয়ে এসেছো?”
4 তারপর মোশি প্রভুর কাছে কেঁদে পড়ল এবং বলল, “আমি এদের নিয়ে কি করি? যদি এখুনি কিছু না করা যায় তাহলে এরা তো সত্যি সত্যি আমাকে পাথর দিয়ে মেরে ফেলবে।”
5 প্রভু মোশিকে বললেন, “কিছু প্রবীণ নেতাদের নিয়ে ইস্রায়েলের লোকের সামনে গিয়ে দাঁড়াও। সঙ্গে তোমার পথ চলার লাঠিকেও নেবে যে লাঠি দিয়ে তুমি নীল নদে আঘাত করেছিলে। 6 আমি তোমার সামনে হোরেব পর্বতের (সীনয় পর্বত) ওপর দাঁড়াব। পথ চলার লাঠি দিয়ে ঐ পাথরে আঘাত করো আর তখনই দেখবে পাথর থেকে জল বেরিয়ে আসছে। ঐ জল লোকরা পান করতে পারবে।”
মোশি তাই করল এবং ইস্রায়েলের প্রবীণ নেতারাও তা স্বচক্ষে দেখতে পেল। 7 মোশি ঐ স্থানের নাম দিল মঃসা ও মরীবা, কারণ ঐ স্থানেই ইস্রায়েলের লোকরা তার বিরোধিতা করেছিল এবং ঈশ্বরের পরীক্ষা নিয়েছিল। লোকজন চেয়েছিল প্রভু তাদের সঙ্গে আছেন কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে।
অমালেকীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ
8 সেই সময় অমালেক গোষ্ঠীর লোকরা এল এবং রফীদীমে ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ বাধিয়ে দিল। 9 তখন মোশি যিহোশূয়কে বলল, “কিছু লোককে বেছে নিয়ে আগামীকাল থেকে অমালেকদের সঙ্গে যুদ্ধ করো। আমি তোমাকে পথ চলার লাঠি যেটাতে ঈশ্বরের পরাক্রম বিদ্যমান, সেইটা নিয়ে পাহাড়ের ওপর থেকে লক্ষ্য করব।”
10 পরদিন যিহোশূয় মোশির আদেশ মেনে যুদ্ধ করতে গেল। একই সময়ে মোশি, হারোণ এবং হূর পাহাড়ের চূড়ায় উঠল। 11 যতক্ষণ পর্যন্ত মোশি তার হাত তুলে রইল, ইস্রায়েলীয়রা যুদ্ধ জিতছিল, যখন সে তার হাত নামিয়েছিল তখন তারা হেরে যাচ্ছিল।
12 কিছু সময় পরে হাত তুলে থাকতে থাকতে মোশি ক্লান্ত হয়ে উঠল। তখন হারোণ ও হূর একটা বিশাল পাথরে মোশিকে বসিয়ে তারা উভয়ে মোশির দুদিকে গিয়ে তার হাত তুলে ধরল। সূর্য না ডোবা পর্যন্ত তারা এইভাবেই মোশির হাত দুটোকে তুলে ধরে রইল। 13 আর যিহোশূয় অমালেকদের যুদ্ধে পরাজিত করল।
14 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, “এই যুদ্ধ নিয়ে একটা বই লেখ যাতে লোকরা মনে রাখে এখানে কি ঘটেছিল এবং যিহোশূয়ের কাছে এটা জোরে পড়ে শোনাও যাতে সে জানতে পারে যে আমি অমালেকদের এই পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন করে দেব।”
15 এরপর মোশি একটি বেদী তৈরী করল। সেই বেদীর নাম হল “প্রভুই আমার পতাকা।” 16 মোশি বলল, “আমি প্রভুর সিংহাসনের দিকে হাত বাড়িয়ে ছিলাম বলেই প্রভু অমালেকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন, যেমন তিনি সর্বদা করেন।”
ইহুদী নেতারা যীশুকে প্রশ্ন করলেন
(মথি 21:23-27; মার্ক 11:27-33)
20 একদিন যীশু যখন মন্দিরে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন এবং ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করছিলেন, সেই সময় প্রধান যাজকরা, ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ইহুদী নেতারা একজোট হয়ে তাঁর কাছে এল। 2 তারা তাঁকে প্রশ্ন করল, “কোন ক্ষমতায় তুমি এসব করছ তা আমাদের বল। কে তোমাকে এই অধিকার দিয়েছে?”
3 যীশু তাদের বললেন, “আমিও তোমাদের একটা প্রশ্ন করব। 4 বলো তো যোহন বাপ্তিস্ম দেবার অধিকার ঈশ্বরের কাছে থেকে পেয়েছিলেন না মানুষের কাছ থেকে?”
5 তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করল, “আমরা যদি বলি, ‘ঈশ্বরের কাছ থেকে,’ তাহলে ও বলবে ‘তাহলে তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করো নি কেন?’ 6 কিন্তু আমরা যদি বলি, ‘মানুষের কাছ থেকে,’ তাহলে লোকেরা আমাদের পাথর ছুঁড়ে মারবে, কারণ তারা যোহনকে একজন ভাববাদী বলেই বিশ্বাস করে।” 7 তাই তারা বলল, “আমরা জানি না।”
8 তখন যীশু তাদের বললেন, “তাহলে আমিও তোমাদের বলব না, কোন্ অধিকারে আমি এসব করছি।”
ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে পাঠালেন
(মথি 21:33-46; মার্ক 12:1-12)
9 যীশু এই দৃষ্টান্তটি লোকদের বললেন, “একজন লোক একটা দ্রাক্ষা ক্ষেত করে তা চাষীদের কাছে ইজারা দিয়ে বেশ কিছু দিনের জন্য বিদেশে গেল। 10 ফলের সময় হলে সে তার একজন কর্মচারীকে সেই চাষীদের কাছে পাঠাল, যেন তারা ক্ষেতের ফসলের কিছু ভাগ দেয়; কিন্তু চাষীরা সেই কর্মচারীকে মারধর করে খালি হাতে তাড়িয়ে দিল। 11 এরপর সে তার আর একজন কর্মচারীকে পাঠাল; কিন্তু তারা তাকেও মারধর করল। সেই কর্মচারীর প্রতি তারা জঘন্য ব্যবহার করে তাকে শূন্য হাতে ফিরিয়ে দিল। 12 পরে সে তার তৃতীয় কর্মচারীকে পাঠাল, চাষীরা তাকেও ক্ষতবিক্ষত করে বার করে দিল।
13 “তখন সেই দ্রাক্ষা ক্ষেতের মালিক বলল, ‘আমি এখন কি করব? আমি আমার প্রিয় পুত্রকে পাঠাব, হয়তো তারা তাকে মান্য করবে।’ 14 কিন্তু সেই চাষীরা সেই ছেলেকে দেখতে পেয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বলল, ‘এই হচ্ছে সম্পত্তির উত্তরাধিকারী, এস একে আমরা খুন করি, তাহলে আমরাই হব এই সম্পত্তির মালিক।’ 15 এই বলে তারা তাকে দ্রাক্ষা ক্ষেতের বাইরে টেনে নিয়ে গিয়ে হত্যা করল।
“এখন সেই ক্ষেতের মালিক তাদের প্রতি কি করবে? 16 সে এসে ঐ চাষীদের মেরে ফেলবে ও ক্ষেত অন্য চাষীদের হাতে দেবে।”
এই কথা শুনে তারা সবাই বলল, “এরকম যেন না হয়!” 17 কিন্তু যীশু তাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “তাহলে এই যে কথা শাস্ত্রে লেখা আছে এর অর্থ কি,
‘রাজমিস্ত্রিরা যে পাথরটা বাতিল করে দিল,
সেটাই হয়ে উঠল কোণের প্রধান পাথর?’[a]
18 যে কেউ সেই পাথরের ওপর পড়বে, সে ভেঙে টুকরো-টুকরো হয়ে যাবে, আর যার ওপর সেই পাথর পড়বে সে ভেঙে গুঁড়ো হয়ে যাবে।”
19 প্রধান যাজকরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা সেই সময় থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করার জন্য উপায় খুঁজতে লাগল; কিন্তু তারা জনসাধারণকে ভয় পাচ্ছিল। তারা যীশুকে গ্রেপ্তার করতে চাইছিল কারণ তারা বুঝতে পেরেছিল যে যীশু তাদের বিরুদ্ধেই ঐ দৃষ্টান্তটি দিয়েছিলেন।
ইহুদী নেতারা যীশুকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করল
(মথি 22:15-22; মার্ক 12:13-17)
20 তাই তারা তাঁর ওপর নজর রাখতে কয়েকজন লোককে গুপ্তচররূপে তাঁর কাছে পাঠাল, যারা ভাল লোক সেজে তাঁর কাছে গেল যাতে করে যীশুর কথা ধরে তাঁকে রোমীয় রাজ্যপালের ক্ষমতা ও বিচারের অধীনে তুলে দিতে পারে। 21 তাই তারা তাঁকে একটি কথা জিজ্ঞেস করল, “গুরু, আমরা জানি যে, যা ন্যায় আপনি সেই কথাই বলেন ও সেই শিক্ষাই দেন; আর আমরা এও জানিযে আপনি কারোর প্রতি পক্ষপাত করেন না, কিন্তু ঈশ্বরের পথের বিষয়ে সত্য শিক্ষাই দেন। 22 আচ্ছা, কৈসরকে কর দেওয়া কি আমাদের উচিত?”
23 যীশু তাদের চালাকি ধরে ফেলেছিলেন, তাই বললেন, 24 “আমায় একটা রূপোর টাকা দেখাও। এতে কার মূর্ত্তি ও কার নাম আছে?”
তারা বলল, “কৈসরের!”
25 তখন তিনি তাদের বললেন, “তাহলে কৈসরের যা তা কৈসরকে দাও, আর ঈশ্বরের যা তা ঈশ্বরকে দাও।”
26 সমস্ত লোকের সামনে যীশু যা বললেন, তাতে তারা তাঁর কোন ভুল ধরতে পারল না। তাঁর দেওয়া উত্তরে তারা বিস্ময়ে হতবাক্ হয়ে গেল।
কিছু সদ্দূকীর যীশুকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা
(মথি 22:23-33; মার্ক 12:18-27)
27 তখন সদ্দূকী সম্প্রদায়ের কয়েকজন লোক যীশুর কাছে এল। এই সদ্দূকীরা বলত, মৃত্যুর পর পুনরুত্থান বলে কিছু নেই। তারা এসে যীশুকে প্রশ্ন করল, 28 “গুরু, মোশি আমাদের জন্য লিখে রেখে গেছেন যে নিঃসন্তান অবস্থায় যদি কোন লোক তার স্ত্রীকে রেখে মারা যায়, তবে তার ভাই সেই স্ত্রীকে বিয়ে করে ভাইয়ের হয়ে তার বংশ রক্ষা করবে।[b] 29 এরকম একজন যারা সাত ভাই ছিল, তাদের প্রথম ভাই বিয়ে করার পর নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেল। 30 দ্বিতীয় ভাই তখন সেই বিধবাকে বিয়ে করল। 31 এরপর তৃতীয় ভাই, এইভাবে সাত ভাই-ই একজন স্ত্রীকে বিয়ে করল আর তারা সকলেই নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেল। 32 পরে সেই স্ত্রীও মারা গেল। 33 এখন পুনরুত্থানের সময়ে সে কার স্ত্রী হবে? কারণ সাত জনই তো তাকে বিয়ে করেছিল?”
34 তখন যীশু তাদের বললেন, “এই যুগের লোকরাই বিয়ে করে আর তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। 35 কিন্তু মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়ে আগামী যুগের যোগ্য বলে যাদের গন্য করা হবে, তারা বিয়ে করবে না বা তাদের বিয়ে দেওয়াও হবে না। 36 তারা আর মরতে পারে না, কারণ তারা স্বর্গদূতদের মতো, মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছে বলে তারা ঈশ্বরের সন্তান। 37 জ্বলন্ত ঝোপের[c] বিষয়ে যেখানে লেখা হয়েছে, সেখানে মোশিও দেখিয়েছেন যে মৃতেরা পুনরুত্থিত হয়। সেখানে মোশি প্রভু ঈশ্বরকে ‘অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্হাকের ঈশ্বর, ও যাকোবের ঈশ্বর(A) বলে উল্লেখ করেছেন।’ 38 ঈশ্বর মৃত লোকদের ঈশ্বর নন, তিনি জীবিত লোকদেরই ঈশ্বর। যারা আগামী যুগের যোগ্য লোক তারা সকলেই ঈশ্বরের চোখে জীবিত থাকে।”
39 ব্যবস্থার শিক্ষকদের মধ্যে কয়েকজন বলল, “গুরু, আপনি ঠিকই বলেছেন!” 40 এরপর তাঁকে আর কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস কারো হল না।
খ্রীষ্ট কি দায়ূদের পুত্র?
(মথি 22:41-46; মার্ক 12:35-37)
41 কিন্তু তিনি তাদের বললেন, “তারা কি করে বলে যে খ্রীষ্ট রাজা দায়ূদের পুত্র? 42 কারণ গীতসংহিতায় দায়ূদ নিজেই বলেছেন,
‘প্রভু পরমেশ্বর আমার প্রভুকে বললেন,
43 যতদিন না আমি তোমার শত্রুদের তোমার পাদপীঠে পরিণত করি,
তুমি আমার ডানদিকে বস।’(B)
44 দায়ূদ তো খ্রীষ্টকে এইভাবে ‘প্রভু’ বলে সম্বোধন করলেন, তাহলে খ্রীষ্ট কিভাবে তাঁর সন্তান হলেন?”
ব্যবস্থার শিক্ষকদের প্রতি সতর্কবাণী
(মথি 23:1-36; মার্ক 12:38-40; লূক 11:37-54)
45 সমস্ত লোক যখন এসব কথা শুনছিল, তখন যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, 46 “ব্যবস্থার শিক্ষকদের থেকে সাবধান। তারা লম্বা লম্বা পোশাক পরে ঘুরে বেড়াতে ও হাটে বাজারে লোকদের কাছ থেকে সম্মান পেতে ভালবাসে; আর সমাজগৃহে বিশেষ সম্মানের স্থানে বসতে ও ভোজসভায় সম্মানের আসন দখল করতেও ভালবাসে। 47 তারা একদিকে লোক দেখানো লম্বা লম্বা প্রার্থনা করে, অপরদিকে বিধবাদের সর্বস্ব গ্রাস করে, এদের ভয়ঙ্কর শাস্তি হবে।”
35 ইলীহূ কথা বলে চলল। সে বলল:
2 “ইয়োব, আপনার পক্ষে একথা বলা ঠিক নয় যে,
‘ঈশ্বর অপেক্ষা আমিই অধিকতর সঠিক।’
3 এবং ইয়োব, আপনি ঈশ্বরকে জিজ্ঞাসা করেছেন,
‘কেউ যদি ঈশ্বরকে খুশী করতে চায় তাহলে সে কি পাবে?
যদি আমি পাপ না করি তাহলেই বা আমার কি ভাল হবে?’
4 “ইয়োব, আমি আপনাকে এবং আপনার সঙ্গে আপনার যে বন্ধুরা রয়েছে তাঁদের উত্তর দিতে চাই।
5 ইয়োব, আকাশের দিকে দেখুন, সেই মেঘের দিকে দেখুন
যা আপনার থেকে অনেক অনেক উচে্চ।
6 ইয়োব, যদি আপনি পাপ করেন, তা ঈশ্বরকে স্পর্শমাত্র করে না।
যদি আপনার অনেক পাপও থাকে তাতেও ঈশ্বরের কিছু এসে যায় না।
7 এবং ইয়োব, যদি আপনি ভালো হন তাতেও ঈশ্বরের কিছু এসে যায় না।
ঈশ্বর আপনার কাছ থেকে কিছুই পান না।
8 ইয়োব, যে ভাল বা মন্দ কাজ আপনি করেন তা আপনারই মত অন্য লোকদের প্রভাবিত করে মাত্র।
তা ঈশ্বরকে সাহায্যও করে না, আঘাতও করে না।
9 “যদি মন্দ লোকরা আহত হয় তারা সাহায্যের জন্য চিৎকার করে।
তারা শক্তিশালী লোকের কাছে যায় এবং তাদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে।
10 তারা বলবে না, ‘ঈশ্বর কোথায় যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন?
সেই ঈশ্বর কোথায় যিনি রাত্রে আমাকে সঙ্গীত দেন?
11 ঈশ্বর আমাদের পশুপাখীদের চেয়ে বুদ্ধিমান করেছেন।
তাই, কোথায় তিনি?’
12 “বা যদি ঐ মন্দ লোকরা সাহায্যের জন্য ঈশ্বরকে ডাকে, ঈশ্বর ওদের কোন উত্তর দেবেন না।
কেন? কারণ ঐ লোকগুলো অহঙ্কারী।
ওরা এখনও ভাবে ওরাই বেশী গুরুত্বপূর্ণ লোক।
13 একথা সত্য যে ঈশ্বর ওদের অর্থহীন চাওয়ায় কোন কান দেবেন না।
ঈশ্বর সর্বশক্তিমান ওদের দিকে মনোযোগই দেবেন না।
14 তাই ইয়োব, আপনি যখন বলেছেন আপনি ঈশ্বরকে দেখেন না,
তখন তিনি আপনার কথা শুনবেন না।
আপনি বলেছেন যে আপনি নিজেকে নিষ্পাপ প্রমাণ করার জন্য,
ঈশ্বরের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়ার সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন।
15 “ইয়োব ভাবেন যে ঈশ্বর মন্দ লোকদের শাস্তি দেন না,
তিনি মনে করেন ঈশ্বর পাপের দিকে কোন দৃষ্টি দেন না।
16 তাই ইয়োব অর্থহীন কথাবার্তা বলেন।
তিনি অনেক কথা বলেন কিন্তু কিছু জানেন না।”
5 আমরা জানি পৃথিবীতে আমরা তাঁবুর মত যে বাড়িতে বাস করি তা যদি নষ্ট হয়ে যায় তবে আমাদের একটি ঈশ্বরদত্ত বাড়ি আছে, যে বাড়ি মানুষের তৈরী নয়, স্বর্গে সে বাড়ি চিরকাল ধরেই আছে। 2 বাস্তবিক আমরা এই তাঁবুতে থাকতে থাকতে কাতরভাবে আর্তনাদ করছি। আমরা মনেপ্রাণে কামনা করছি যে আমাদের স্বর্গীয় আবাস দিয়ে আমাদের ঢেকে দেওয়া হোক্। 3 কারণ আমরা বিশ্বাস করি যে এই পোশাক পরবার পর দেখা যাবে যে আমরা উলঙ্গ নই। 4 বাস্তবে আমরা এই দেহের মধ্যে থেকে ভারাক্রান্ত হওয়াতে আর্তনাদ করছি। আমাদের বর্তমান (দেহরূপ) পোশাকটি ত্যাগ করার ইচ্ছা আমাদের নেই; বরং আমরা চাই যে নতুন (স্বর্গীয় দেহরূপ) পোশাকটি পুরাতনের ওপর পরি যাতে নশ্বর জীবন আবৃত হয়ে যায়। 5 আর এর জন্য ঈশ্বর আমাদের প্রস্তুত করেছেন। এইজন্য তিনি পবিত্র আত্মাকে আমাদের কাছে জামিনস্বরূপ পাঠিয়েছেন।
6 আমাদের মনে সর্বদা ভরসা আছে; আমরা জানি যতদিন এই দেহের ঘরে বাস করব ততদিন আমরা প্রভুর কাছ থেকে দূরে থাকব। 7 আমরা বিশ্বাসের দ্বারা চলি, বাইরের দৃশ্যের দ্বারা নয়। 8 তাই আমি বলি যে আমাদের নিশ্চিত ভরসা আছে এবং বাস্তবিক আমরা এই দেহ ত্যাগ করে, আমাদের প্রকৃত আবাস প্রভুর কাছে থাকাই ভাল মনে করি। 9 আমাদের লক্ষ্য এই যে আমরা এই দেহের ঘরে বাস করি বা না করি, আমরা যেন ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে চলি। 10 কারণ আমাদের সকলকে খ্রীষ্টের বিচারাসনের সামনে দাঁড়াতে হবে; আর এই নশ্বর দেহে বাস করার সময় আমরা ভাল বা মন্দ যা কিছু করেছি তার উপযুক্ত প্রতিদান আমাদের প্রত্যেককে দেওয়া হবে।
ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন
11 তাই প্রভুর ভয় কি, তা জানাতে পেরে আমরা প্রত্যেক মানুষকে বোঝাচ্ছি যেন তারা আমাদের কথায় বিশ্বাস করে। ঈশ্বর আমাদের অন্তরের কথা সুস্পষ্টভাবে জানেন; আর আমি আশাকরি তোমরাও আমাদের অন্তরের কথা জান। 12 আমরা আবার তোমাদের কাছে নিজেদের যোগ্য পাত্র বলে প্রমাণ দিতে চাইছি না, কিন্তু আমাদের জন্য গর্ব করার সুযোগ তোমাদের দিচ্ছি; উদ্দেশ্য এই যারা কোন ব্যক্তির হৃদয়ের কথা বিবেচনা না করে দৃশ্যমান বিষয়গুলি নিয়ে গর্ব করে, এইসব লোকদের যেন তোমরা উচিত জবাব দিতে পার। 13 যদি আমরা হতবুদ্ধি হয়ে থাকি তবে তা ঈশ্বরের জন্য এবং যদি আমাদের বিচার বুদ্ধি ঠিক থাকে তবে তা তোমাদের জন্য। 14 খ্রীষ্টের ভালবাসা আমাদের নিয়ন্ত্রিত করে, কারণ আমরা নিশ্চিতভাবে বুঝেছি তিনি (খ্রীষ্ট) সকলের জন্য মৃত্যুবরণ করলেন, তাতে সকলেরই মৃত্যু হল। 15 খ্রীষ্ট সকলের জন্য মৃত্যুবরণ করলেন। তাই যারা জীবন পেল, তারা আর নিজেদের উদ্দেশ্যে নয়, বরং যিনি তাদের জন্য মৃত্যুবরণ করেছিলেন ও পুনরুত্থিত হয়েছেন, তাঁরই উদ্দেশ্যে যেন জীবনযাপন করে।
16 তাই এখন থেকে আমরা আর কাউকেই জাগতিক দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে বিচার করি না। যদিও আগে খ্রীষ্টকে আমরা জাগতিক দৃষ্টিভঙ্গী দিয়েই বিচার করেছি তবু এখন আর তা করি না। 17 সুতরাং কেউ যদি খ্রীষ্টের সঙ্গে মিলিত হয়, তবে সে এক নতুন সৃষ্টি হয়ে ওঠে, তার জীবনের পুরানো বিষয়গুলি অতীত হয়ে যায়; দেখ, তার সবই এখন নতুন হয়ে উঠেছে। 18 সমস্ত কিছুই ঈশ্বর থেকে এসেছে, যিনি খ্রীষ্টের মাধ্যমে নিজের সাথে আমাদের পুনর্মিলিত করেছেন এবং অন্যদের তাঁর সঙ্গে আবার মিলন করিয়ে দেওয়ার কাজ আমাদের দিয়েছেন। 19 যেমন বলা হয়ে থাকে: ঈশ্বর খ্রীষ্টের মাধ্যমে জগতকে পুনরায় তাঁর নিজের সঙ্গে মিলিত করার কাজ করছিলেন। তিনি খ্রীষ্টে মানুষের সকল পাপকে পাপ বলে গন্য না করে মিলনের বার্তা জানাবার ভার আমাদের দিয়েছেন। 20 খ্রীষ্টের হয়েই আমরা কথা বলেছি। খ্রীষ্টের হয়ে কথা বলতে আমাদের পাঠানো হয়েছে, এইভাবে আমাদের মাধ্যমে ঈশ্বর লোকদের ডাকছেন। আমরা খ্রীষ্টের হয়ে তোমাদের অনুরোধ করছি, তোমরা ঈশ্বরের সাথে মিলিত হও। 21 খ্রীষ্ট কোন পাপ করেন নি; কিন্তু ঈশ্বর খ্রীষ্টের ওপর আমাদের পাপের সব দোষ চাপিয়ে দিয়েছেন, যেন খ্রীষ্টের মধ্যে ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক স্থাপিত হয়।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International