Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Historical

Read the books of the Bible as they were written historically, according to the estimated date of their writing.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
2 বংশাবলি 22-24

যিহূদার রাজা অহসিয়

22 যিহোরামের পর, লোকরা তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র অহসিয়কে নতুন রাজা হিসাবে নির্বাচিত করলেন কারণ আরবদের সঙ্গে যারা প্রাসাদ আক্রমণ করেছিল তারা অহসিয় ছাড়া যিহোরামের আর সব পুত্রদের হত্যা করেছিল। কনিষ্ঠ পুত্র হয়েও তিনি রাজত্বের দায়িত্ব পেলেন। অহসিয় 22 বছর বয়সে যিহূদায় রাজা হয়ে মাত্র 1 বছর জেরুশালেম শাসন করেছিলেন।[a] অহসিয়র মাতা অথলিয়া ছিলেন অম্রির কন্যা। অহসিয় আহাব পরিবারের মতোই প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ আচরণ করেছিলেন, কারণ তাঁর পিতার মৃত্যুর পর তাঁর মাতা তাঁকে এক জন পাপীর মত রাজ্য শাসন করতে উপদেশ দিয়েছিলেন। এবং তিনি আহাবের পরিবারের মত প্রভুর চোখে যা মন্দ তাই করেছিলেন, কারণ তাঁর পিতার মৃত্যুর পর তারাই তাঁর উপদেষ্টা হয়েছিল এবং তারা তাঁকে নষ্ট করেছিল। 5-6 তাই, অহসিয় আহাব পরিবারের লোকদের কুপরামর্শ অনুযায়ী জীবনযাপন করত। তাদের পরামর্শতেই অহসিয় রামোৎ-গিলিয়দে আহাবের পুত্র যোরামের সঙ্গে অরামীয় রাজা হসায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যান, যেখানে তিনি আহত হয়েছিলেন এবং সুস্থ হতে যিষ্রিয়েলে গিয়েছিলেন। এরপর, যিহূদার প্রাক্তন শাসক যিহোরামের পুত্র অহসিয়, যিষ্রিয়েলে আহাবের পুত্র যোরামের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন কারণ যোরাম আহত হয়েছিলেন।

ঈশ্বরের পরিকল্পনা অনুযায়ী, যোরামের সঙ্গে অহসিয়র সাক্ষাৎ তাঁর মৃত্যু ঘনিয়ে এনেছিল কারণ যখন তিনি এসেছিলেন, তিনি এবং যোরাম নিম্‌শির পুত্র যেহূর সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন যাকে প্রভু আহাবদের শাস্তি দেবার জন্য আহাব বংশ ধ্বংস করতে বেছে নিয়েছিলেন। আহাব বংশের সদস্যদের হত্যা করার পর তিনি যিহূদার নেতাদের এবং অহসিয়র আত্মীয়দের, যারা তাঁর সেবা করেছিল, তাদের খুঁজে বার করলেন। তাদের তিনি হত্যা করলেন। তারপর যেহূ অহসিয়র সন্ধান শুরু করেছিলেন। তাঁর লোকরা শমরিয়ায় লুকিয়ে থাকা অহসিয়কে ধরে যেহূর কাছে নিয়ে এলো। তাকে হত্যা করে তারা তাকে সমাধিস্থ করলো। তারা বলল, “যিহোশাফট, যিনি সর্বান্তঃকরণে প্রভুকে মেনে চলতেন, ইনি তাঁর নাতি।” এরপর অহসিয়র পরিবার আর যিহূদার রাজ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন নি।

রাণী অথলিয়া

10 অহসিয়র মাতা, রাণী অথলিয়া যখন দেখলেন যে তাঁর নিজের পুত্র অহসিয় মারা গিয়েছে তিনি তখন আদেশ দিলেন যে যিহূদার রাজত্বের উত্তরাধিকারী প্রত্যেককে হত্যা করতে হবে। 11 যিহোরামের কন্যা যিহোসেবা, যাজক যিহোয়াদার স্ত্রী, অহসিয়র অন্য পুত্ররা নিহত হবার আগে তাঁর পুত্র যোয়াশ আর তাঁর ধাইমাকে শোবার ঘরে লুকিয়ে রেখেছিলেন। তিনি এরকম করেছিলেন যাতে অথলিয়া যোয়াশকে হত্যা করতে না পারেন। 12 প্রভুর মন্দিরে যাজকদের সঙ্গে যোয়াশ যখন লুকিয়েছিলেন সে সময়ে অথলিয়া রাণী হিসেবে ছয় বছর রাজ্যটি শাসন করেছিলেন।

যাজক যিহোয়াদা ও রাজা যোয়াশ

23 ছয় বছর চুপচাপ থাকার পর যিহোয়াদার আত্মবিশ্বাস যথেষ্ট বেড়ে উঠল এবং তিনি সেনাপতিদের সঙ্গে একটি চুক্তি করলেন। সেই সেনাপতিরা ছিলেন: যিহোরামের পুত্র অসরিয়, যিহোহাননের পুত্র ইশ্মায়েল, ওবেদের পুত্র অসরিয়, অদায়ার পুত্র মাসেয় আর সিখ্রির পুত্র ইলীশাফট। চুক্তি অনুযায়ী এরা যিহূদা ও যিহূদার পার্শ্ববর্তী থেকে সমস্ত লেবীয়দের ও ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারের নেতাদের একত্রিত করে তারপর জেরুশালেমে গেলেন। এঁরা সবাই একসঙ্গে ঈশ্বরের মন্দিরে রাজার সঙ্গে একটা চুক্তি করেছিলেন।

যিহোয়াদা এঁদের সবাইকে বলেছিলেন, “আমাদের অবশ্যই রাজার ছেলেকে শাসন করতে দেওয়া উচিৎ‌, কারণ প্রভু দায়ূদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে শুধু তাঁর উত্তরপুরুষরাই যিহূদা শাসন করবে। এখন তোমাদের সবাইকে কয়েকটা কর্তব্য পালন করতে হবে। যাজক ও লেবীয়দের মধ্যে যারা বিশ্রামের দিন মন্দিরের নিত্যকর্ম সম্পাদন করতে যান তাঁদের এক তৃতীয়াংশ মন্দিরের দরজার ওপর নজর রাখবেন। আর এক তৃতীয়াংশ যাবেন রাজপ্রাসাদে। আরেক এক তৃতীয়াংশ থাকবেন ভিত্তিমূলের দরজায় আর বাদবাকী সকলেই প্রভুর মন্দিরের আঙিনায় থাকবেন। কাউকে যেন প্রভুর মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া না হয়। শুধুমাত্র যেসব যাজকগণ ও লেবীয়রা মন্দিরের সেবা করেন, তাঁদেরই প্রভুর মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হবে কারণ তাঁরা পবিত্র। অন্যান্যরা প্রভু তাদের যে যে কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন তাই করবে। লেবীয়দের তরবারি ধারণ করতে হবে এবং সব সময় রাজার কাছাকাছি থাকতেই হবে। কেউ যদি মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করে তাকে যেন হত্যা করা হয়।”

লেবীয় ও যিহূদার সমস্ত ব্যক্তি অক্ষরে অক্ষরে যাজক যিহোয়াদার সমস্ত নির্দেশ পালন করেছিলেন। যাজক যিহোয়াদা যাজকবর্গের সবাইকেই কোনো না কোনো কাজে নিযুক্ত করেছিলেন। যে কারণে ছুটির দিন সমস্ত সেনাপতি তাঁদের অধীনস্থ সবাইকে নিয়ে সেদিন যারা মন্দিরে এসেছিল তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। যাজক যিহোয়াদা সমস্ত সেনানায়কদের রাজা দায়ূদের আমলের বল্লম ও ছোট বড় ঢালগুলো বার করে দিয়েছিলেন। রাজা দায়ূদের এই সমস্ত অস্ত্রশস্ত্র প্রভুর মন্দিরেই রাখা হতো। 10 এরপর যিহোয়াদা কাকে কোথায় দাঁড়াতে হবে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। সশস্ত্র প্রহরীরা মন্দিরের দক্ষিণদিক থেকে শুরু করে উত্তরদিক পর্যন্ত মন্দিরের কাছে, বেদীর পাশে আর রাজার চারপাশে দাঁড়িয়েছিল। 11 এরপর, সকলে মিলে বালক রাজপুত্রকে নিয়ে এলেন এবং তার মাথায় রাজমুকুট পরিয়ে তার হাতে চুক্তিটির একটি প্রতিলিপি দিলেন। যাজক যিহোয়াদা আর তাঁর পুত্ররা সবাই পবিত্র তেল ছিটোলেন, বালক যোয়াশকে রাজা বলে ঘোষণা করে জয়ধ্বনি দিয়ে উঠলেন, “মহারাজ দীর্ঘজীবী হোন!”

12 এদিকে রাণী অথলিয়া মন্দিরে অনেক লোকের পদ শব্দ ও জয়ধ্বনি শুনে কি হয়েছে দেখতে প্রভুর মন্দিরে এলেন। 13 সেখানে তিনি নতুন রাজাকে দেখতে পেলেন। সেই সময় যোয়াশ প্রধান ফটকে, রাজার স্তম্ভের কাছে দাঁড়িয়েছিলেন এবং সমস্ত সেনাপতি ও লোকরা তাঁকে ঘিরে আনন্দ সহকারে বাদ্যযন্ত্রসমূহ এবং শিঙা ও ভেরী বাজাচ্ছিল। গায়করা তাদের বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে উৎসবে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। এই দেখে পরণের পোশাক ছিঁড়তে ছিঁড়তে রাণী অথলিয়া বলে উঠলেন, “বিদ্রোহ, বিদ্রোহ করেছে সবাই!”

14 যাজক যিহোয়াদা তখন উপস্থিত সেনানায়কদের নিয়ে এসে নির্দেশ দিলেন, “তোমরা সৈনিকরা অথলিয়াকে মন্দিরের বাইরে নিয়ে যাও। কেউ যদি ওর পিছু নেবার চেষ্টা করে সঙ্গে সঙ্গে তরবারি দিয়ে তাকে হত্যা করবে।” কিন্তু দেখো, অথলিয়াকে যেন প্রভুর মন্দিরের চত্বরে না মারা হয়। 15 রাজপ্রাসাদের অশ্বদ্বার পার হওয়া মাত্রই, সেনাবাহিনীর লোকরা অথলিয়াকে ধরে ফেললো এবং তাকে সেখানে হত্যা করলো।

16 এরপর, যিহোয়াদা সমস্ত প্রজা ও রাজার সঙ্গে চুক্তি করলো। প্রত্যেকে প্রভুর বিশ্বস্ত সেবক হতে সম্মতি জানালো। 17 সবাই মিলে বালদেবতার মূর্ত্তি বসানো মন্দিরে গিয়ে, মন্দির ও সেখানকার বেদী ও মূর্ত্তি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করলো। বালদেবের বেদীর সামনে তারা বালদেবের পূজারী মত্তনকে হত্যা করলো।

18 তখন যিহোয়াদা লেবীয় গোষ্ঠীর যাজকদের আদেশ দিলেন আনন্দের সঙ্গে এবং গান গেয়ে সেবা কাজগুলি করতে যেগুলি দায়ূদ মন্দিরের জন্য নির্দিষ্ট করেছিলেন এবং মোশির বইতে যেমন লেখা আছে সেইমত প্রভুকে বলি উৎসর্গ করতে যেমন দায়ূদ করতেন। 19 অধিকন্তু যিহোয়াদা মন্দিরের দরজায় প্রহরীদের নিয়োগ করেছিলেন যাতে কোন ব্যক্তি যে অশুচি, সে মন্দিরে ঢুকতে না পারে।

20 যিহোয়াদা, সেনাপতিবর্গ, নেতৃবর্গ, শাসকবর্গ ও দেশের লোকেরা রাজাকে যথাযথ সম্মানে বাইরে বার করে আনলেন এবং উত্তর দ্বারের পথ দিয়ে রাজপ্রাসাদে গেলেন এবং সেখানে তারা তাঁকে সিংহাসনে বসালেন। 21 যিহূদার সকলেই সেদিন খুব খুশি ছিল। অনেকদিন পর অত্যাচারী রাণী অথলিয়ার মৃত্যুতে জেরুশালেম শহরে আবার শান্তি নেমে এলো।

যোয়াশ মন্দির পুনর্নির্মাণ করলেন

24 যোয়াশ মাত্র 7 বছর বয়সে রাজা হয়ে 40 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মা সিবিয়া ছিলেন বের্-শেবা শহরের বাসিন্দা। যতদিন পর্যন্ত যাজক যিহোয়াদা জীবিত ছিলেন ততদিন পর্যন্ত যোয়াশ প্রভুর নির্দেশিত পথে জীবনযাপন করেছিলেন। যিহোয়াদা যোয়াশের দুটো বিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের পর, রাজা যোয়াশের অনেকগুলি সন্তান হয়েছিল।

পরবর্তীকালে, রাজা যোয়াশ প্রভুর মন্দিরকে নবরূপ দেবার পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি সমস্ত লেবীয় ও যাজকদের একসঙ্গে ডেকে বললেন, “যাও, ইস্রায়েলের প্রত্যেকে প্রতি বছর যে কর দেয় তা সংগ্রহ কর এবং তোমাদের প্রভুর মন্দিরকে নতুন রূপ দাও। যাও, আর দেরী করো না।” কিন্তু লেবীয়রা এতে বিশেষ উৎসাহ দেখালেন না।

তখন রাজা যোয়াশ প্রধান যাজক যিহোয়াদাকে ডেকে বললেন, “আপনি কেন লেবীয়দের যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের কাছ থেকে কর সংগ্রহ করতে আদেশ দেন নি যা প্রভুর দাস মোশি ও ইস্রায়েলের লোকরা পবিত্র তাঁবুর জন্যই ব্যবহার করতেন।”

অতীতে, দুষ্ট রাণী অথলিয়ার পুত্ররা প্রভুর মন্দির থেকে পবিত্র জিনিসপত্র নিয়ে গিয়েছিলেন এবং সেগুলো বালদেবতার আরাধনার জন্য ব্যবহার করেছিলেন।

রাজা যোয়াশ প্রভুর মন্দিরের দরজার বাইরে একটা প্রণামীর সিন্দুক বানিয়ে বসানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর লেবীয়রা যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের প্রভুর জন্য কর দেবার কথা ঘোষণা করেন। ঈশ্বরের জন্য ইস্রায়েলীয়রা যখন মরুভূমিতে দিন কাটাচ্ছিল তখন এইভাবে মোশি এই কর সংগ্রহ করেছিলেন। 10 সমস্ত নেতা ও লোকরা খুশি মনে কর নিয়ে এসে প্রণামীর সিন্দুকে জমা দিল। সিন্দুকটা যতক্ষণ পর্যন্ত না ভরে গেল ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই সিন্দুকে অর্থ জমা করতে লাগলো। 11 সিন্দুকটা ভরে গেলে লেবীয়রা সেটা রাজকর্মচারীদের কাছে নিয়ে গেল। যখন রাজার সচিব ও প্রধান যাজকের সহকারী সিন্দুক খালি করে তার থেকে যাবতীয় অর্থ বার করে নিলেন, ওটা আবার ভরে যাওয়া পর্যন্ত একই জায়গায় ফেরৎ‌ দেওয়া হয়েছিল। এইভাবে বেশ কিছু পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ হয়েছিল। 12 রাজা যোয়াশ ও যিহোয়াদা দুজনে এই অর্থ প্রভুর মন্দিরের তদারকির কাজ যাঁরা করতেন তাঁদের দিলেন। তারা প্রভুর মন্দির সারানোর জন্য সুদক্ষ পাথর কাটিয়ে ও ছুতোর মিস্ত্রি ভাড়া করলেন। এছাড়াও লোহা ও পিতলের কাজ জানা কারিগরদেরও ভাড়া করা হয়েছিল।

13 যারা প্রভুর মন্দির তদারকির কাজ করতো তারা সকলেই নিষ্ঠাবান ও সৎ‌ হওয়ায় ঈশ্বরের মন্দির পুনর্নির্মাণের কাজ সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়েছিল এবং প্রভুর মন্দিরকে ঠিক আগের মতো ও আরো দৃঢ় করে বানানো হয়। 14 কাজটি শেষ হলে কর্মচারীরা অবশিষ্ট অর্থ রাজা যোয়াশ ও যাজক যিহোয়াদার কাছে ফিরিয়ে আনলো। এই অর্থ দিয়ে প্রভুর মন্দিরের জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র বানানো ছাড়াও, এই অর্থ প্রভুর মন্দিরের নিত্যসেবা ও হোমবলি নিবেদনের কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল। এছাড়াও এই অবশিষ্ট অর্থ দিয়ে সোনা ও রূপোর পাত্র ও টুকিটাকি জিনিসপত্র বানানো হয়েছিল। যিহোয়াদার জীবদ্দশায় যাজকরা নিয়মিত প্রভুর মন্দিরে হোমবলি উৎসর্গ করতেন।

15 অবশেষে, যিহোয়াদা বৃদ্ধ হলেন এবং 130 বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হল। 16 লোকরা দায়ূদ নগরীতে রাজাদের সমাধি ক্ষেত্রে যিহোয়াদাকে সমাধিস্থ করেছিলেন কারণ তিনি ইস্রায়েলের ঈশ্বর ও তাঁর মন্দিরের জন্য বহু ভাল ভাল কাজ করেছিলেন।

17 যিহোয়াদার মৃত্যুর পর, ইস্রায়েলের নেতৃবর্গ রাজা যোয়াশকে অভ্যর্থনা করলেন এবং ধীরে ধীরে তাঁর স্তুতি করতে শুরু করলেন। যোয়াশ তাদের পরামর্শগুলি গ্রহণ করেছিলেন। 18 রাজা ও নেতারা, প্রভু তাঁদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের মন্দিরের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। পরিবর্তে, তারা আশেরার খুঁটি ও অন্যান্য ভ্রান্ত মূর্ত্তি পূজো শুরু করলেন। রাজা ও নেতাদের অপরাধের জন্য ঈশ্বর যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের ওপর ক্রুদ্ধ হলেন। 19 ঈশ্বর লোকদের মন তাঁর প্রতি ফিরিয়ে আনার জন্য ভাববাদীদের পাঠালেন। কিন্তু লোকরা সদুপদেশে কর্ণপাত পর্যন্ত করলো না।

20 তারপর ঈশ্বরের আত্মা যাজক যিহোয়াদার পুত্র সখরিয়র ওপর ভর করলো। তিনি লোকদের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “ঈশ্বর এই কথা বলেছেন: ‘তোমরা কেন প্রভুর বিধিসমূহ ও আজ্ঞা অমান্য করছো? এভাবে তোমরা কখনোই কোনো কাজে কৃতকার্য হতে পারবে না। তোমরা প্রভুকে ত্যাগ করেছো, তাই তিনিও তোমাদের ত্যাগ করেছেন।’”

21 কিন্তু বিচারবুদ্ধিহীন লোকরা তখন একসঙ্গে চক্রান্ত করলো এবং রাজা যখন তাদের সখরিয়কে হত্যা করতে আদেশ দিলেন, তারা পাথর ছুঁড়ে মন্দির চত্বরেই তাঁকে হত্যা করলো। 22 একবারও রাজা যোয়াশ তাঁর প্রতি সখরিয়র পিতা যাজক যিহোয়াদার করুণার কথা মনে করলেন না। মারা যাবার আগের মূহুর্তে সখরিয় বললেন, “প্রভু যেন তোমার এই অপরাধ দেখতে পান এবং তোমাকে এর যোগ্য শাস্তি দেন।”

23 এক বছরের মধ্যে অরামীয় সেনাবাহিনী এসে রাজা যোয়াশের রাজ্য আক্রমণ করলো। তারা যিহূদা ও জেরুশালেম আক্রমণ করল এবং সমস্ত নেতাদের হত্যা করবার পর সেনাবাহিনী যাবতীয় দুর্মূল্য জিনিসপত্র লুঠ করে দম্মেশকে রাজার কাছে সেগুলি পাঠিয়ে দিল। 24 অরামীয়রা ছোট সেনাবাহিনী নিয়ে এলেও প্রভু তাদের যিহূদার সেনাবাহিনী, যেটা তাদের সেনাবাহিনীর চেয়ে বড় ছিল, তাকে পরাজিত করতে দিলেন। কারণ যিহূদার লোকরা তাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরকে পরিত্যাগ করেছিল। এইভাবে রাজা যোয়াশের শাস্তি বিধান হল। 25 অরামীয়রা যখন চলে গেল তখন তিনি ভীষণভাবে আহত। তাঁর নিজের ভৃত্যরাই তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে তাঁকে তাঁর বিছানায় হত্যা করলো। এরপর লোকরা তাঁকে দায়ূদ নগরীতে সমাধিস্থ করলো, তবে তা রাজাদের জন্য নির্দিষ্ট সমাধি ক্ষেত্রে নয়। যাজক যিহোয়াদার পুত্র সখরিয়কে হত্যা করার জন্যই যোয়াশের ভৃত্যরা তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিল।

26 যোয়াশের বিরুদ্ধে যারা চক্রান্ত করেছিল তাঁরা হল অম্মোনের শিমিয়তের পুত্র সাবদ ও মোয়াবের শিম্রীতের পুত্র যিহোষাবদ। 27 যোয়াশের পুত্রদের গল্প, তাঁর বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্বাণী ও তিনি কিভাবে আবার প্রভুর মন্দির নবরূপে নির্মাণ করেছিলেন সেসব কথা রাজাদের সম্বন্ধে বিবরণী গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। যোয়াশের পর তাঁর পুত্র অমৎসিয় নতুন রাজা হলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International