Chronological
নৈশ ভোজে আমন্ত্রিত লোকদের কাহিনী
(লূক 14:15-24)
22 দৃষ্টান্তের মাধ্যমে যীশু আবার তাদের বলতে শুরু করলেন। 2 তিনি বললেন, “স্বর্গরাজ্যের বিষয়ে এই তুলনা দেওয়া যেতে পারে, একজন রাজা যিনি তাঁর ছেলের বিয়ের ভোজ প্রস্তুত করলেন। 3 সেই ভোজে নিমন্ত্রিত লোকদের ডাকবার জন্য তিনি তাঁর দাসদের পাঠালেন, কিন্তু তারা আসতে চাইল না।
4 “রাজা আবার তাঁর অন্য দাসদের পাঠালেন, বললেন, ‘যারা নিমন্ত্রিত তাদের সকলকে বল, দেখ, আমার ভোজ প্রস্তুত, আমার বলদ ও হৃষ্টপুষ্ট বাছুরগুলো সব মারা হয়েছে, আর সব কিছুই প্রস্তুত। তোমরা বিবাহ ভোজে যোগ দিতে এস।’
5 “কিন্তু নিমন্ত্রিত লোকেরা তাদের কথায় কান না দিয়ে যে যার কাজে চলে গেল। কেউ বা তার ক্ষেতের কাজে গেল, আবার কেউ গেল তার ব্যবসার কাজে। 6 অন্যরা রাজার সেই দাসদের ধরে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করল ও তাদের খুন করল। 7 এতে রাজা খুব রেগে গেলেন, তিনি তাঁর সৈন্য পাঠিয়ে সেই খুনীদের মেরে ফেললেন, সৈন্যরা তাদের শহরটিও পুড়িয়ে দিল।
8 “এরপর রাজা তাঁর দাসদের বললেন, ‘বিয়ের ভোজ প্রস্তুত কিন্তু যারা নিমন্ত্রিত হয়েছিল তারা তার যোগ্য ছিল না। 9 তাই তোমরা রাস্তার মোড়ে মোড়ে যাও আর যত লোকের দেখা পাও, তাদের সকলকে এই ভোজে যোগ দেবার জন্য ডেকে আনো।’ 10 তখন সেই দাসরা রাস্তায় রাস্তায় গিয়ে ভাল ও মন্দ যাদের পেল তাদের সকলকে ডেকে আনল। তাতে বিয়ে বাড়ির ভোজের ঘর অতিথিতে ভরে গেল।
11 “কিন্তু রাজা অতিথিদের সঙ্গে দেখা করতে এসে সেখানে একজন লোককে দেখতে পেলেন যে বিয়ে বাড়ির পোশাক পরে আসে নি। 12 রাজা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘বন্ধু, বিয়ে বাড়ির উপযুক্ত পোশাক ছাড়াই তুমি কেমন করে এখানে এলে?’ কিন্তু সে চুপ করে থাকল। 13 তখন রাজা তাঁর পরিচারকদের বললেন, ‘এর হাত পা বেঁধে একে বাইরে অন্ধকারে ফেলে দাও, যেখানে লোকেরা কান্নাকাটি করে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষে।’
14 “কারণ অনেকেই আহুত, কিন্তু অল্পই মনোনীত।”
ইহুদী নেতারা যীশুকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করল
(মার্ক 12:13-17; লূক 20:20-26)
15 তখন ফরীশীরা সেখান থেকে চলে গেল, আর কেমন করে যীশুকে তাঁর কথার ফাঁদে ফেলা যায় সেই পরিকল্পনা করল। 16 তারা হেরোদীয়দের কয়েকজনের সঙ্গে নিজেদের কয়েকজন অনুগামীকে যীশুর কাছে পাঠাল। এই লোকেরা এসে বলল, “গুরু, আমরা জানি আপনি একজন সৎ লোক। ঈশ্বরের পথের বিষয়ে সঠিকভাবে শিক্ষা দিয়ে থাকেন। আর কে কি বলে তার ধার ধারেন না কারণ লোকে কি ভাববে তাতে আপনার কিছু যায় আসে না। 17 তাহলে আপনার কি মত, কৈসরকে কর দেওয়া উচিত কি না?”
18 যীশু তাদের বদ মতলব বুঝতে পেরে বললেন, “ভণ্ডের দল আমাকে ফাঁদে ফেলতে চাইছ কেন? 19 যে টাকায় কর দেওয়া হয় তা আমাকে দেখাও।” তারা একটা রূপোর টাকা তাঁর কাছে নিয়ে এল। 20 তখন তিনি তাদের বললেন, “এর ওপরে এই মূর্তি ও নাম কার?”
21 তারা বলল, “রোম সম্রাট কৈসরের।”
তখন তিনি তাদের বললেন, “তবে যা কৈসরের তা কৈসরকে দাও, আর যা ঈশ্বরের তা ঈশ্বরকে দাও।”
22 তারা এই জবাব শুনে আশ্চর্য হয়ে গেল, তাঁকে আর বিরক্ত না করে সেখান থেকে চলে গেল।
কিছু সদ্দূকীর যীশুকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা
(মার্ক 12:18-27; লূক 20:27-40)
23 যাঁরা বলে পুনরুত্থান নেই, সেই সদ্দূকী সম্প্রদায়ের কিছু লোক সেই দিন যীশুর কাছে এসে তাঁকে একটি প্রশ্ন করলেন। 24 তাঁরা বললেন, “গুরু, মোশি বলেছেন যদি কোন লোক নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যায়, তবে তার নিকটতম আত্মীয়রূপে তার ভাই সেই বিধবাকে বিয়ে করবে ও তার ভাইয়ের হয়ে তার বংশ উৎপন্ন করবে।[a] 25 আমাদের জানা এক পরিবারে সাত ভাই ছিল। প্রথম জন বিয়ে করল, তার পরে সে মারা গেল। আর তার কোন সন্তান না থাকাতে, তার ভাই সেই বিধবাকে বিয়ে করল। 26 এই অবস্থা দ্বিতীয়, তৃতীয় ও সপ্তম জন পর্যন্ত হল, তারা সেই স্ত্রীকে বিয়ে করল ও মারা গেল। 27 শেষে সেই স্ত্রীলোকটিও মারা গেল। 28 এখন আমাদের প্রশ্ন হল, পুনরুত্থানের সময় ঐ সাত ভাইয়ের মধ্যে সেই স্ত্রী কার হবে, সকলেই তো তাকে বিয়ে করেছিল?”
29 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “তোমরা ভুল করছ, কারণ তোমরা না জান শাস্ত্র, না জান ঈশ্বরের পরাক্রম। 30 জেনে রাখো, পুনরুত্থানের পর লোকেরা বিয়ে করে না, বা তাদের বিয়েও দেওয়া হয় না, তারা বরং স্বর্গদূতদের মতো থাকে। 31 মৃতদের জীবিত হয়ে ওঠার বিষয়ে তোমাদের ভালোর জন্য ঈশ্বর নিজে যে কথা বলেছেন, তা কি তোমরা পড়নি? 32 তিনি বলেছেন, ‘আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্হাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর।’(A) ঈশ্বর মৃতদের ঈশ্বর নন, কিন্তু জীবিতদেরই ঈশ্বর।”
33 সমবেত লোকেরা তাঁর এই শিক্ষা শুনে আশ্চর্য হয়ে গেল।
কোন্ আদেশ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?
(মার্ক 12:28-34; লূক 10:25-28)
34 ফরীশীরা যখন শুনলেন যে যীশুর জবাবে সদ্দূকীরা নিরুত্তর হয়ে গেছেন তখন তাঁরা দল বেঁধে যীশুর কাছে এলেন। 35 তাঁদের মধ্যে একজন শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিত যীশুকে ফাঁদে ফেলবার জন্য জিজ্ঞাসা করলেন, 36 “গুরু, বিধি-ব্যবস্থার মধ্যে সবচেয়ে মহান আদেশ কোনটি?”
37 যীশু তাঁকে বললেন, “‘তোমার সমস্ত অন্তর ও তোমার সমস্ত প্রাণ ও মন দিয়ে তুমি তোমার প্রভু ঈশ্বরকে ভালবাসবে।’(B) 38 এটিই হচ্ছে সর্বপ্রথম ও মহান আদেশ। 39 আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে এরই অনুরূপ, ‘তুমি নিজেকে যেমন ভালবাস, তেমনি তোমার প্রতিবেশীকেও ভালবাসবে।’(C) 40 সমস্ত বিধি-ব্যবস্থা ভাববাদীদের সমস্ত শিক্ষা, এই দুটি আদেশের উপর নির্ভর করে।”
যীশু ফরীশীদের প্রশ্ন করলেন
(মার্ক 12:35-37; লূক 20:41-44)
41 ফরীশীরা তখনও সেখানে সমবেত ছিলেন, সেই সময় যীশু তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, 42 “খ্রীষ্টের বিষয়ে তোমরা কি মনে কর? তিনি কার বংশধর?”
তাঁরা বললেন, “তিনি দায়ূদের পুত্র।”
43 যীশু তাদের বললেন, “তবে দায়ূদ কিভাবে পবিত্র আত্মার অনুপ্রেরণায় তাঁকে ‘প্রভু’ বলে সম্বোধন করেছেন? তিনি বলেছিলেন,
44 ‘প্রভু আমার প্রভুকে বললেন,
যতক্ষন না আমি তোমার শত্রুদের তোমার পায়ের নীচে রাখি
ততক্ষণ তুমি আমার ডান দিকে বস ও শাসন কর।’(D)
45 তাহলে, দায়ূদ যখন তাঁকে ‘প্রভু’ বলে সম্বোধন করেছেন, তখন তিনি কেমন করে তাঁর সন্তান হতে পারেন?”
46 কিন্তু এর উত্তরে কেউ একটি কথাও তাঁকে বলতে পারলেন না, আর সেই দিন থেকে কেউ তাঁকে আর কিছু জিজ্ঞাসা করতেও সাহস করলেন না।
ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে পাঠালেন
(মথি 21:33-46; লূক 20:9-19)
12 তখন যীশু দৃষ্টান্ত দিয়ে তাদের কাছে বলতে লাগলেন, “একটি লোক দ্রাক্ষা ক্ষেতের চারদিকে বেড়া দিলেন। তিনি দ্রাক্ষা মাড়াই করতে একটি গর্ত খুঁড়লেন, একটি উঁচু ঘর তৈরী করলেন এবং সেই ক্ষেত চাষীদের কাছে জমা দিয়ে অন্য দেশে চলে গেলেন।
2 “এরপর চাষীদের কাছে ফলের পাওনা অংশ পাবার জন্য তাদের কাছে ঠিক সময়ে তাঁর চাকরকে পাঠিয়ে দিলেন। 3 কিন্তু চাষীরা তাকে মারধর করে খালি হাতে ফিরিয়ে দিল। 4 তিনি আর একজন চাকরকে তাদের কাছে পাঠালেন, তারা তার মাথায় আঘাত করল, 5 এবং তাকে অপমান করল। তখন তিনি আর একজন চাকরকে পাঠালেন, তারা তাকে মেরে ফেলল। এইভাবে তিনি আরো অনেককে পাঠালেন। তারা তাদের মধ্যে কয়েকজনকে মারধোর করল এবং কয়েকজনকে মেরেই ফেলল।
6 “তাঁর একমাত্র প্রিয় পুত্র ছিল। তিনি শেষ পর্যন্ত তাঁকেই পাঠালেন, ভাবলেন তারা নিশ্চয়ই তাঁর পুত্রকে সম্মান করবে।
7 “চাষীরা তখন নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, ‘এই তো মালিকের ছেলে, ওর বাবা মরলে ক্ষেতের মালিক তো ওই হবে, এস! একে মেরে ফেলো, তাহলে আমরা ক্ষেতের মালিক হব।’ 8 তখন তারা তাকে মেরেই ফেলল ও তার মৃতদেহটি দ্রাক্ষা ক্ষেতের বাইরে ফেলে দিল।
9 “তখন সেই দ্রাক্ষা ক্ষেতের মালিক কি করবেন? তিনি এসে চাষীদের মেরে ফেলবেন এবং সেই দ্রাক্ষা ক্ষেতটি অন্যদের দিয়ে দেবেন। 10 শাস্ত্রের এই কথা কি তোমরা পড় নি,
‘যে পাথর রাজমিস্ত্রিরা বাতিল করেছিল
সেটিই হয়ে উঠল কোণের প্রধান পাথর?
11 এটা প্রভুই করেছেন,
আর আমাদের চোখে এটা খুব চমকপ্রদ।’”(A)
12 তখন তারা তাঁকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করতে লাগল, কিন্তু লোকদের ভয় পেল, কারণ তারা জানত যে দৃষ্টান্তটি তিনি তাদের উদ্দেশ্যেই বলেছেন, তাই তারা তাঁকে ছেড়ে চলে গেল।
ইহুদী নেতারা যীশুকে ফাঁদে ফেলতে চাইল
(মথি 22:15-22; লূক 20:20-26)
13 পরে ইহুদী নেতারা কয়েকজন ফরীশী এবং হেরোদীয়কে তাঁর কাছে পাঠিয়ে দিল, যাতে তারা যীশুকে কথার ফাঁদে ফেলতে পারে। 14 তারা এসে তাঁকে বলল, “হে গুরু, আমরা জানি আপনিই সৎ, এবং আপনি কোন লোককে ভয় করেন না। আপনি ঈশ্বরের পথের বিষয়ে সত্য শিক্ষা দেন। আচ্ছা, কৈসর সরকারকে কর দেওয়া কি উচিত? আমরা দেব, কি দেব না?”
15 তিনি তাদের ভণ্ডামি বুঝতে পেরে বললেন, “তোমরা আমায় কেন পরীক্ষা করছ? আমাকে একটি দীনার এনে দেখাও।” 16 তারা তাঁকে দীনার এনে দিলে তিনি তাদের বললেন, “এই মুখ এবং এই নাম কার?” তারা তাঁকে বলল, “কৈসরের প্রতিমূর্তি, কৈসরের নাম।”
17 তখন যীশু তাদের বললেন, “কৈসরের যা তা কৈসরকে দাও। আর ঈশ্বরের যা তা ঈশ্বরকে দাও।” তখন তারা তাঁর কথা শুনে বিস্ময়ে হতবাক্ হয়ে গেল।
কয়েকজন সদ্দূকী যীশুকে ফাঁদে ফেলতে চাইল
(মথি 22:23-33; লূক 20:27-40)
18 পরে কয়েকজন সদ্দূকী তাঁর কাছে এল যারা বলত পুনরুত্থান বলে কিছু নেই। তারা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, 19 “গুরু, মোশি আমাদের জন্য লিখেছেন, কারও ভাই যদি স্ত্রী রেখে মারা যায়, আর সে যদি কোন ছেলেমেয়ে না রেখে যায় তবে তার ভাই যেন ঐ বিধবাকে বিয়ে করে নিজের ভাইয়ের বংশ রক্ষা করে।[a] 20 সাত ভাই ছিল, প্রথম জন একজন স্ত্রীলোককে বিয়ে করল আর সে ছেলেমেয়ে না রেখে মারা গেল। 21 পরে দ্বিতীয় জন তাকে বিয়ে করল; কিন্তু সেও ছেলেমেয়ে না রেখে মারা গেল। তৃতীয় ভাই আগের ভাইয়ের মত বিয়ে করে ছেলেমেয়ে না রেখে মার গেল। 22 এই সাত ভাইয়ের কেউই কোন ছেলেমেয়ে রেখে যায় নি। সবশেষে সেই স্ত্রীলোকটিও মারা গেল। 23 মৃত্যুর পরে যখন তারা বেঁচে উঠবে, সে তাদের মধ্যে কার স্ত্রী হবে? কারণ তারা সাতজনই তো তাকে বিয়ে করেছিল।”
24 যীশু তাদের বললেন, “তোমরা কেন এই ভুলের মধ্যে রয়েছ? তোমরা না জান শাস্ত্র, না জান ঈশ্বরের শক্তির কথা। 25 কারণ মৃতদের মধ্যে থেকে পুনরুত্থিত হলে তারা বিয়ে করে না, বা তাদের বিয়ে দেওয়া হয় না, বরং তারা স্বর্গে স্বর্গদূতদের মতোই থাকে। 26 কিন্তু পুনরুত্থান হবে কিনা এ ব্যাপারে মোশির পুস্তকে লেখা জ্বলন্ত ঝোপের[b] অংশটিতে ঈশ্বর তাকে কি বলেছিলেন তা কি তোমরা পড় নি? তিনি বলেছিলেন, ‘আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্হাকের ঈশ্বর এবং যাকোবের ঈশ্বর।’(B) 27 তিনি মৃতদের ঈশ্বর নন, জীবিতদেরই ঈশ্বর। তোমরা বড়ই ভুল করেছ।”
কোন্ আজ্ঞা শ্রেষ্ঠ
(মথি 22:34-40; লূক 10:25-28)
28 ব্যবস্থার শিক্ষকদের মধ্যে একজন কাছে এসে তাদের আলোচনা শুনলেন। যীশু তাদের ঠিক উত্তর দিয়েছেন জেনে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “শাস্ত্রে সমস্ত আদেশের মধ্যে কোনটি প্রধান?”
29 যীশু উত্তর দিলেন, “এটাই প্রধান! ‘শোন, হে ইস্রায়েল, আমাদের ঈশ্বর প্রভু একমাত্র প্রভু। 30 তুমি তোমার সমস্ত হৃদয়, মন, প্রাণ ও সমস্ত শক্তি দিয়ে তোমার ঈশ্বর প্রভুকে ভালবাসবে।’(C) 31 আর দ্বিতীয় আদেশ হল, এই, ‘তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবাসবে।’(D) এই আদেশ দুটি থেকে আর কোন বড় আদেশ নেই।”
32 তখন ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাঁকে বললেন, “বেশ, গুরু, আপনি ঠিক বলেছেন যে ঈশ্বরই প্রভু, তিনি ছাড়া অন্য কেউ নেই। 33 আর সমস্ত হৃদয়, সমস্ত শক্তি দিয়ে তাঁকে ভালবাসো এবং প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবাসা হচ্ছে সমস্ত রকম বলিদান ও উৎসর্গের থেকে অনেক ভাল।”
34 তখন তিনি বুদ্ধির সঙ্গে উত্তর দিয়েছেন দেখে যীশু তাঁকে বললেন, “ঈশ্বরের রাজ্য থেকে তুমি খুব বেশী দূরে নও।” এরপরে তাঁকে কোন কথা জিজ্ঞেস করতে আর কারো সাহস হল না।
খ্রীষ্ট কি দায়ূদের পুত্র অথবা দায়ূদের প্রভু?
(মথি 22:41-46; লূক 20:41-44)
35 যীশু মন্দিরে শিক্ষা দেবার সময় বললেন, “ব্যবস্থার শিক্ষকরা কেমন করে বলে যে খ্রীষ্ট দায়ূদের পুত্র? 36 দায়ূদ তো নিজেই পবিত্র আত্মার প্রেরণাতেই এই কথা বলেছেন:
‘প্রভু আমার প্রভুকে বললেন,
তুমি আমার ডানদিকে বস
যতক্ষণ না তোমার শত্রুদের তোমার পায়ের তলায় রাখি।’(E)
37 দায়ূদ নিজেই খ্রীষ্টকে ‘প্রভু’ বলেন। তবে কেমন করে খ্রীষ্ট দায়ূদের পুত্র হলেন?” অনেক লোক আনন্দের সাথে তাঁর কথা শুনল।
যীশু ব্যবস্থার শিক্ষকদের সমালোচনা করলেন
(মথি 23:6-7; লূক 11:43; 20:45-47)
38 আর তাঁর শিক্ষায় তিনি তাদের বললেন, “ব্যবস্থার শিক্ষকদের থেকে সাবধান, তারা লম্বা লম্বা পোশাক পরতে চায়, হাটে বাজারে লোকদের সম্মান, 39 সমাজগৃহে গুরুত্বপূর্ণ আসন এবং নৈশ ভোজে গুরুত্বপূর্ণ আসন পেতে ভালবাসে। 40 এই লোকেরাই বিধবাদের বাড়িগুলি আত্মসাতৎ করে, আর সেই দোষ ঢাকতে লম্বা লম্বা প্রার্থনা করে। ঐ সমস্ত লোকেরা বিচারে আরো কড়া শাস্তি পাবে।”
বিধবার দেওয়া দানের দৃষ্টান্ত
(লূক 21:1-4)
41 যীশু দানের বাক্সের সামনে বসে, লোকেরা কেমন করে তাতে টাকা পয়সা ফেলছে তা দেখছিলেন। বহু ধনী লোক প্রচুর টাকা পয়সা তার মধ্যে রাখল। 42 পরে একজন গরীব বিধবা এসে তাতে দুটি তামার মুদ্রা ফেলল, যার মূল্য এক সিকিরও কম।
43 তখন যীশু নিজের শিষ্যদের কাছে ডেকে বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, দানবাক্সে যাঁরা টাকা পয়সা রেখেছে, তাদের সবার থেকে এই গরীব বিধবা বেশী রাখল। 44 কারণ তারা সকলে নিজের নিজের অতিরিক্ত অর্থ থেকে কিছু কিছু রেখেছে কিন্তু এই গরীব বিধবা তার যা কিছু সম্বল ছিল, তার সবটুকুই দিয়ে গেল।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International