Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Book of Common Prayer

Daily Old and New Testament readings based on the Book of Common Prayer.
Duration: 861 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
গীতসংহিতা 5-6

পরিচালকের প্রতি: বাঁশীর সঙ্গে গাইবার জন্য দায়ূদের একটি গীত।

হে প্রভু, আমার কথা শুনুন।
    আমি যা বলতে চাইছি তা বুঝে নিন।
হে আমার ঈশ্বর, হে রাজন,
    আমার প্রার্থনা শুনুন।
হে প্রভু, প্রতিদিন সকালে আপনার সামনে আমার নৈবেদ্য রাখি এবং আপনার সাহায্য প্রার্থনা করি।
    প্রতিদিন সকালে আপনি আমার প্রার্থনা শোনেন।

হে ঈশ্বর, মন্দ লোকরা আপনার কাছে থাকুক, এ আপনি চান না।
    দুষ্ট লোকরা আপনার উপাসনা করে না।
বোকারা আপনার কাছে আসতে পারে না।
    লোকদের মন্দ কাজ করাকে আপনি ঘৃণা করেন।
আপনি মিথ্যাবাদীদের বিনাশ করেন।
    যারা অন্য লোকদের আঘাত করার জন্য গোপনে ফন্দি আঁটে সেইসব লোকদেরও আপনি ঘৃণা করেন।

কিন্তু প্রভু, আপনার বিশাল করুণাধন্য হয়ে, আমি আপনার মন্দিরে যাবো।
    প্রভু আমার, আপনার প্রতি ভীতি এবং শ্রদ্ধাসহ আমি আপনার মন্দিরে মাথা নত করবো।
প্রভু আমার, আপনার সঠিক জীবনযাত্রা
    আমার কাছে উদ্ঘাটন করুন।
লোকেরা আমার দুর্বলতা খুঁজছে।
    তাই যেমনভাবে আমার বেঁচে থাকা উচিৎ‌ তা আমায় দেখিয়ে দিন।
লোকজন সত্যি কথা বলে না।
    তারা মিথ্যাবাদী, সত্যকে বিকৃত করে।
তাদের মুখ শূন্য কবরের মত।
    তারা অন্য লোকদের ভালো ভালো কথা বলছে, তারা কেবল তাদের ফাঁদে ফেলতে চাইছে।
10 ঈশ্বর, ওদের শাস্তি দিন।
    তাদের নিজেদের ফাঁদেই তাদের পড়তে দিন।
ঐসব লোকেরা আপনার বিরুদ্ধে গিয়েছে
    অতএব ওদের বহু অন্যায়ের জন্য ওদের শাস্তি দিন।
11 কিন্তু সেই সব লোক যারা ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করে, তাদের সুখী করুন।
    চিরদিনের জন্য সুখী করুন!
    ঈশ্বর আমার, যারা আপনাকে ভালোবাসে, আপনি তাদের রক্ষা করুন ও শক্তি দিন।
12 হে প্রভু, সৎ‌ লোকের জন্য আপনি যখন ভালো কাজ করেন,
    তখন আপনি বিরাট বড় ঢালের মত তাদের রক্ষা করেন।

পরিচালকের প্রতি: শমীনীৎ‌সহ তারবাদ্যে গাইবার জন্য দায়ূদের একটি গীত।

হে প্রভু, ক্রুদ্ধ অবস্থায় আমাকে সংশোধন করবেন না।
    মহাক্রোধে আমাকে শাস্তি দেবেন না।
প্রভু, আমার প্রতি সদয় হোন,
    আমি দুর্বল এবং অসুস্থ।
আমায় সুস্থ করে দিন
    কারণ আমার হাড়গুলো নড়বড় করছে।
    প্রভু আমার সারা দেহ টল্মল্ করছে।
প্রভু সুস্থ হতে আমার আর কতদিন লাগবে?
প্রভু ফিরে আসুন এবং আবার আমাকে শক্তিশালী এবং সবল করে দিন।
    আপনার দয়াগুনে আমাকে পরিত্রাণ করুন।
মৃত লোকরা তাদের কবরে আপনাকে স্মরণ করে না।
    মানুষ মৃত্যুর মুখে এসেও আপনার প্রশংসা করে না।
    তাই আমায় সুস্থ করে দিন!

হে প্রভু, সারা রাত ধরে প্রার্থনা করে
    আমি নিজেকে ক্ষয় করেছি।
আমার চোখের জলে
    আমার বিছানা ভিজে গেছে।
আমার শত্রুরা আমাকে যা দুঃখ দিয়েছে
    তার দরুণ কেঁদে কেঁদে আমার চোখ দুর্বল হয়ে গেছে।

মন্দ লোকরা, তোমরা চলে যাও।
    কেন? কারণ প্রভু আমার কান্না শুনেছেন।
প্রভু আমার মিনতি শুনেছেন।
প্রভু আমার প্রার্থনা গ্রহণ করেছেন এবং আমায় উত্তর দিয়েছেন।

10 আমার সকল শত্রু হতাশ এবং নিরাশ হবে।
    হঠাৎ‌‌ একটা কিছু ঘটবে এবং ঐসব শত্রুরা লজ্জায় চলে যাবে।

গীতসংহিতা 10-11

10 প্রভু, আপনি এত দূরে থাকেন কেন?
    সমস্যা জর্জরিত মানুষ আপনাকে দেখতে পায় না।
অহঙ্কারী এবং দুষ্ট লোকরা মন্দ ফন্দি আঁটছে
    এবং তারা দরিদ্র লোকেদের আঘাত করে।
মন্দ লোকরা যা চায় তার বড়াই করে।
    ঐসব লোভী লোকরা ঈশ্বরের নিন্দা করে।
    এইভাবেই মন্দ লোকেরা প্রকাশ করে যে তারা প্রভুকে ঘৃণা করে।
মন্দ লোকরা ঈশ্বরকে অনুসরণ করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দাম্ভিক।
    তারা রাশি রাশি মন্দ ফন্দি আঁটে।
    তারা এমন ভাব করে যেন ঈশ্বরের কোন অস্তিত্ব নেই।
মন্দ লোকরা সর্বদাই কুটিল কাজকর্ম করে।
    এমনকি তারা ঈশ্বরের বিধিসকল ও মহান শিক্ষামালাকে লক্ষ্য করে না।[a]
    ঈশ্বরের শত্রুরা তাঁর শিক্ষামালাকে উপেক্ষা করে।
ঐসব লোকজন মনে করে, কোনদিন ওদের খারাপ কিছু হবে না।
    তারা বলে, “আমরা সব দিনই মজা করবো, আমাদের কোন শাস্তি হবে না।”
ঐসব লোকরা সর্বদা অভিশাপ দিচ্ছে।
    অন্যান্য লোকজন সম্পর্কে তারা সর্বদাই কটু ও মিথ্যা কথা বলে চলেছে।
    সর্বদাই তারা অহিতকর কাজ করার ফন্দি আঁটে।
ঐসব লোক অন্যান্য লোকদের ধরার জন্য গোপন স্থানে লুকিয়ে থাকে।
    তারা লুকিয়ে থাকে, মানুষকে আঘাত করার জন্য খুঁজতে থাকে।
    নির্দোষ লোকদের ওরা হত্যা করে।
মন্দ লোকরা সেই সব সিংহের মত
    যারা তাদের আহার্য পশুকে ধরার জন্য ঘাপটি মেরে অপেক্ষা করতে থাকে।
তারা দরিদ্র লোকদের আক্রমণ করে।
    মন্দ লোকদের তৈরী ফাঁদে দরিদ্র লোকরা ধরা পড়ে।
10 ঐসব লোক হতভাগ্য ও বিড়ম্বিত মানুষকে
    বার বার আঘাত করে।
11 এই কারণে ভাগ্যহত লোকরা ভাবে, “ঈশ্বর আমাদের ভুলেই গেছেন
    আমাদের থেকে তিনি চিরদিনের জন্য বিমুখ হয়েছেন!
    আমাদের ওপর যা যা ঘটে চলেছে প্রভু তা দেখছেন না!”

12 প্রভু জেগে উঠুন এবং কিছু করুন!
    ঈশ্বর, ঐসব মন্দ লোককে শাস্তি দিন!
    ঐসব বঞ্চিত দরিদ্র লোকদের ভুলে যাবেন না!

13 মন্দ লোকরা কেন ঈশ্বরকে অবজ্ঞা করে?
    কারণ তারা ভাবে, ঈশ্বর তাদের শাস্তি দেবেন না।
14 প্রভু, মন্দ লোকরা যে সব নির্দয় ও অহিতকর কাজ করে, নিশ্চয় আপনি তা দেখতে পান।
    ঐসবের দিকে দেখুন এবং কিছু করুন!
সমস্যাগ্রস্ত মানুষ আপনার সাহায্যের দিকে চেয়ে রয়েছে।
    হে প্রভু, আপনিই সেইজন যিনি অনাথদের সাহায্য করেন।
    অতএব তাদের সাহায্য করুন!

15 প্রভু, মন্দ লোকদের বিনাশ করুন।
16 প্রভু চিরকালের এবং অনন্তকালের রাজা।
    বিদেশী জাতিগুলি তাঁর দেশ থেকে অদৃশ্য হয়েছে।
17 হে প্রভু, দরিদ্র লোকরা কি চায় তা আপনি শুনেছেন।
    তাদের প্রার্থনা শুনুন এবং তারা যা চায় তাই করুন!
18 প্রভু পিতৃ-মাতৃহীন সন্তানদের রক্ষা করুন।
    দুঃখী লোকেদের অধিক যন্ত্রণার সম্মুখীন করবেন না।
    এমন করুন যেন মন্দ লোকরা এখানে থাকতে ভয় পায়।

পরিচালকের প্রতি: দায়ূদের গীত।

11 আমি প্রভুর ওপর বিশ্বাস রাখি। তবে কেন তোমরা আমায় দৌড়ে গিয়ে লুকিয়ে পড়ার পরামর্শ দিয়েছিলে?
    তুমি আমায় বলেছিলে, “পাখীর মত তোমার পর্বতে উড়ে যেতে!”

মন্দ লোকরা শিকারীর মত, তারা অন্ধকারে লুকিয়ে থাকে।
    তারা ধনুকের ছিলা টেনে ধরে।
    তারা তাদের তীর লোকের দিকে তাক করে এবং সাধু ও সৎ‌ লোকের হৃদয়ে তা সরাসরি বিদ্ধ করে।
সমাজে ভিতগুলোই যদি নষ্ট হয়ে যায়,
    তবে সৎ‌ লোকরা কি করবে?

প্রভু তাঁর পবিত্র মন্দিরে রয়েছেন।
    প্রভু স্বর্গে তাঁর সিংহাসনে বসে আছেন।
এই পৃথিবীতে যা কিছু ঘটে, তার সবই তিনি দেখতে পান।
    লোকরা সত্যিকারের ভাল না মন্দ তা জানবার জন্য প্রভু লোকেদের খুব কাছ থেকে ভালভাবে নিরীক্ষণ করেন।
প্রভু সৎ‌ লোকদের খোঁজেন।
    কিন্তু হিংসাশ্রয়ী বদ লোকদের পরিত্যাগ করেন।
মন্দ লোকদের ওপর তিনি জ্বলন্ত কয়লা ও গন্ধক বর্ষণ করবেন।
    ঐসব মন্দ লোক উত্তপ্ত ও অগ্নিময় বাতাস ছাড়া আর কিছুই পাবে না।
কিন্তু প্রভু ভালো। যেসব লোক ভাল কাজ করে তিনি তাদের ভালোবাসেন।
    সৎ‌ লোকরা তাঁরই সঙ্গে থাকবে এবং তাঁকে দেখতে পাবে।

যোনা 1

ঈশ্বরের আহ্বান আর যোনার পলায়ন

প্রভু অমিত্তয়ের পুত্র যোনার সঙ্গে কথা বলেছিলেন। প্রভু বলেছিলেন, “নীনবী একটা বড় শহর। আমি শুনেছি, সেখানকার লোকরা নানা রকম খারাপ কাজকর্ম করছে। কাজেই সেই শহরে যাও এবং লোকদের বল তারা যেন সেই খারাপ কাজ করা বন্ধ করে।”

যোনা ঈশ্বরের আদেশ মানতে চাননি সেজন্য যোনা প্রভুর কাছ থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। যোনা যাফোতে গেলেন। যোনা সেখানে একটা নৌকা দেখতে পেয়েছিলেন যেটা অনেক দূরের শহর তর্শীশে যাচ্ছিল। যোনা নৌকাতে উঠে যাবার ভাড়া দিলেন। ঈশ্বরের কাছ থেকে পালিয়ে যাবার জন্য যোনা ঐ নৌকায় তর্শীশ পর্যন্ত ভ্রমন করতে চেয়েছিলেন।

ভারী ঝড়

কিন্তু প্রভু সমুদ্রে একটা বড় রকমের ঝড় আনলেন। বাতাস সমুদ্রকে খুবই রুক্ষ করে তুললো। ঝড়টা এতই শক্তিশালী ছিল যে নৌকাটি ভেঙে টুকরো টুকরো হবার উপক্রম হল। ডুবে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য লোকরা নৌকাটিকে হাল্কা করতে চেষ্টা করল। সে জন্য তারা নৌকার মালগুলো ছুঁড়ে সমুদ্রে ফেলে দিতে আরম্ভ করল। মাঝিরা খুবই ভয় পেয়ে গেল। প্রত্যেকে তাদের দেবতাদের উদ্দেশ্যে প্রার্থণা করতে আরম্ভ করল।

যোনা নৌকার একেবারে পশ্চাদ্ভাগে চলে গেলেন এবং তিনি শুয়ে পড়লেন ও ঘুমোতে গেলেন। নৌকার প্রধান মাঝি যোনাকে দেখতে পেল এবং বলল, “উঠে পড়ো! তুমি কেন ঘুমাচ্ছো? তুমি তোমার দেবতার কাছে প্রার্থনা করো! দেবতা হয়তো তোমার প্রার্থনা শুনবেন এবং আমাদের রক্ষা করবেন!”

এই ঝড়ের কারণ কি ছিল?

তখন লোকরা একে অপরকে বলল, “আমরা অবশ্যই ঘুঁটি চেলে জানতে চেষ্টা করব এই দুর্যোগগুলো কেন আমাদের ভাগ্যে ঘটছে।”

সে জন্য লোকে ঘুঁটি চালল এবং দেখা গেল, যোনার জন্যেই এই দুর্যোগগুলো ঘটছে। তখন লোকরা যোনাকে বলল, “দেখ তোমার দোষেই এই ভয়ঙ্কর ঝড় আমাদের ভাগ্যে ঘটছে! সেজন্য আমাদের বল তুমি কি করেছো? তোমার পেশা কি? তুমি কোথা থেকে আসছো? তোমার দেশ কোথায়? তোমার লোকরা কারা?”

যোনা লোকদের বললেন, “আমি একজন ইব্রীয় (ইহূদী)। আমি প্রভু, স্বর্গের ঈশ্বরের উপাসনা করি, তিনি সেই ঈশ্বর যিনি সমুদ্র ও ভূমি সৃষ্টি করেছেন।”

10 যোনা লোক জনদের বললেন, তিনি প্রভুর কাছ থেকে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। লোকরা এই কথা জেনে খুবই ভয় পেয়ে গেল। যোনাকে তখন তারা জিজ্ঞেস করল, “তুমি তোমার ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কেন এমন ভয়ঙ্কর কাজ করেছ?”

11 বাতাস ও সমুদ্রের ঢেউ ক্রমশঃ শক্তিশালী হতে আরম্ভ করছিল। তাই লোকরা যোনাকে জিজ্ঞেস করল, “আমরা আমাদের রক্ষা করার জন্য কি করবো? সমুদ্রকে শান্ত করবার জন্য আমরা তোমার প্রতি কি করব?”

12 যোনা লোকদের বললেন, “আমি জানি আমি ভুল করেছি সেই জন্যই সমুদ্রে ঝড় এসেছে। আমাকে সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলে দাও। তাহলে সমুদ্র শান্ত হয়ে যাবে।”

13 কিন্তু লোকরা যোনাকে সমুদ্র ছুঁড়ে দিতে চাইল না। নৌকাটিকে তীরে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে লাগল। কিন্তু তারা সফল হল না। প্রচণ্ড বাতাস এবং উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে লাগল!

যোনার শাস্তি

14 সেই জন্য লোকরা প্রভুর কাছে চিৎকার করে বলল, “প্রভু আমরা এই লোকটিকে তার খারাপ কাজের জন্য সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছি। কাজেই দয়া করে বলবেন না যে আমরা এক নির্দোষ লোককে মেরে ফেলার জন্য দয়া করে আমাদের মেরে ফেলবেন না। আমরা জানি আপনি হচ্ছেন প্রভু, এবং আপনি যা চাইছেন তা সবকিছুই করতে পারেন। কিন্তু দয়া করে আপনি আমাদের প্রতি সদয় হোন।”

15 সেই জন্য লোকরা যোনাকে সমুদ্রে ফেলে দিল। ঝড় থেমে গেল—সমুদ্র আবার শান্ত হল! 16 লোকরা এই ঘটনা দেখে ভয় পেয়ে গেল এবং তারা প্রভুকে খুব ভয় পেত। তারা প্রভুর নামে বিশেষ শপথ নিল এবং নৈবেদ্য উৎসর্গ করল।

17 আর প্রভু যোনাকে গিলে ফেলার জন্য একটা বড় মাছ ঠিক করে রেখেছিলেন। যোনা মাছের পেটের মধ্যে তিন দিন ও তিন রাত্রি রইলেন।

প্রেরিত 26:24-27:8

পৌল আগ্রিপ্পকে বোঝালেন

24 পৌল যখন এভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করছেন তখন ফীষ্ট চিৎকার করে বলে উঠলেন, “পৌল তুমি পাগল! অত্যধিক অধ্যয়নের ফলে তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে!”

25 পৌল বললেন, “হে মহামান্য ফীষ্ট, আমি পাগল নই বরং আমি যা বলছি তা সত্য ও বোধগম্য। 26 রাজা আগ্রিপ্প এবিষয়ে সবই জানেন। তাঁর সামনে আমি সাহসের সঙ্গে একথা বলছি। আমি সুনিশ্চিত যে, এসব বিষয় তিনি শুনেছেন, কারণ এসব এমন প্রকাশ্য স্থানে ঘটেছে যাতে তা সকলে দেখতে পায়। 27 আগ্রিপ্প, আপনি কি ভাববাদীরা যা লিখে গেছেন তা বিশ্বাস করেন? আমি জানি আপনি তা করেন।”

28 তখন আগ্রিপ্প পৌলকে বললেন, “তুমি কি মনে করছ, আমাকে এত অল্প সময়ের মধ্যে খ্রীষ্টীয়ান করতে পারবে?”

29 পৌল বললেন, “ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি অল্প সময়ের মধ্যে হোক্ কি অধিক সময়ের মধ্যে হোক্, সেটা বড় কথা নয়, কেবল আপনি নন, আজ যত লোক আমার কথা শুনছেন তারা সকলেই যেন আমারই মত হন; কেবল বন্দীত্বের শেকল ছাড়া!”

30 তখন রাজা, রাজ্যপাল ও বর্ণীকী আর তাঁদের সঙ্গে যাঁরা বসেছিলেন সকলে উঠে পড়লেন। 31 আর অন্য জায়গায় গিয়ে পরস্পর আলোচনা করে বললেন, “প্রাণদণ্ড বা কারাগারে দেবার মতো কোন অপরাধই এই লোকটা করে নি।” 32 আগ্রিপ্প ফীষ্টকে বললেন, “এ যদি কৈসরের কাছে আপীল না করত, তবে একে আমরা মুক্তি দিতে পারতাম।”

রোমের পথে পৌলের যাত্রা

27 যখন ঠিক হল যে আমরা জাহাজে করে ইতালিতে যাব, তখন পৌল ও অন্য কিছু বন্দীকে রাজকীয় রক্ষীবাহিনীর সেনাপতি যুলিয়র হাতে তুলে দেওয়া হল। আমরা আদ্রামুত্তীয় থেকে আসা একটি জাহাজে উঠলাম; এই জাহাজটির এশিয়া উপকূলের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার কথা ছিল। থিষলনীকীয় থেকে আরিষ্টার্খ নামে একজন মাকিদনিয়ান আমাদের সঙ্গে ছিলেন।

পরের দিন আমাদের জাহাজ সীদোনে পৌঁছল। যুলিয় পৌলের সঙ্গে বেশ ভাল ব্যবহার করলেন। তিনি পৌলকে তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করতে যাবার অনুমতি দিলেন। সেই বন্ধুরা পৌলের প্রয়োজনীয় সামগ্রী যোগাতেন। সেখান থেকে আমরা জাহাজ খুলে সীদোন শহর ছেড়ে চললাম। প্রতিকূল বাতাসের জন্য কূপ্র দ্বীপের কাছাকাছি অঞ্চল দিয়ে চললাম আর কিলিকিয়ার ও পাম্ফুলিয়ার প্রদেশ ছেড়ে সমুদ্রপথে লুকিয়া প্রদেশের মুরা বন্দরে এলাম। সেখানে সেনাপতি ইতালিতে যাবার জন্য আলেকসান্দ্রীয়ায় এক জাহাজ দেখতে পেয়ে আমাদের সেই জাহাজে তুলে দিলেন।

বহুদিন ধরে আমরা খুব আস্তে আস্তে চললাম এবং বহুকষ্টে ক্লীদে এসে পৌঁছালাম। বাতাসের কারণে আমরা আর এগোতে পারলাম না, তাই সলমোনী বন্দরের উল্টো দিকে ক্রীতি দ্বীপের ধার ঘেঁসে চললাম। পরে বহুকষ্টে উপকূলের ধার ঘেঁসে চলতে চলতে লাসেয়া শহরের কাছে “সুন্দর” পোতাশ্রয়ে এসে পৌঁছালাম।

লূক 8:40-56

মৃত বালিকাকে জীবন দান ও স্ত্রীলোককে আরোগ্যদান

(মথি 9:18-26; মার্ক 5:21-43)

40 যীশু যখন ফিরে এলেন তখন এক বিরাট জনতা তাঁকে স্বাগত জানাল, কারণ তারা সকলে যীশুর ফিরে আসার অপেক্ষায় ছিল। 41-42 ঠিক সেই সময় যায়ীর নামে একজন লোক সেখানে এলেন, ইনি সেখানকার সমাজগৃহের নেতা। তিনি যীশুর পায়ের কাছে উপুড় হয়ে পড়ে তাঁকে অনুরোধ করলেন, যেন যীশু তাঁর সঙ্গে তাঁর বাড়িতে যান। কারণ তখন তাঁর একমাত্র সন্তান, বারো বছরের মেয়েটি মৃত্যুশয্যায় ছিল।

যীশু যখন যাচ্ছিলেন, লোকেরা তাঁর চারদিকে ভীড় করে ধাক্কা-ধাক্কি করতে লাগল। 43 সেই ভীড়ের মধ্যে একজন স্ত্রীলোক ছিল যে বারো বছর ধরে রক্তস্রাব রোগে ভুগছিল। চিকিৎসকদের পিছনে সে তার যথাসর্বস্ব ব্যয় করেছিল,[a] কিন্তু কেউ তাকে ভাল করতে পারে নি। 44 সে যীশুর পেছন দিকে এসে তাঁর পোশাকের ঝালর স্পর্শ করল, সঙ্গে সঙ্গে তার রক্তস্রাব বন্ধ হয়ে গেল। 45 তখন যীশু বললেন, “কে আমাকে স্পর্শ করল?”

সবাই অস্বীকার করল, তখন পিতর বললেন, “গুরু, লোকেরা আপনার চারপাশে ধাক্কা-ধাক্কি করে আপনার ওপর পড়ছে।”

46 কিন্তু যীশু বললেন, “কেউ আমায় স্পর্শ করেছে! কারণ আমি জানি আমার মধ্যে থেকে শক্তি বার হয়েছে।” 47 সেই স্ত্রীলোকটি যখন দেখল যে সে কোনমতেই এড়িয়ে যেতে পারবে না, তখন কাঁপতে কাঁপতে যীশুর কাছে এসে তার সামনে উপুড় হয়ে পড়ল এবং সকলের সামনে বলল কেন সে যীশুকে স্পর্শ করেছে, আর কিভাবে সঙ্গে সঙ্গে ভাল হয়ে গেছে। 48 তখন যীশু সেই স্ত্রীলোকটিকে বললেন, “তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সুস্থ করেছে, তোমার শান্তি হোক্।”

49 তিনি তখনও কথা বলছেন, এমন সময় সমাজ-গৃহের নেতার বাড়ি থেকে একজন এসে বলল, “আপনার মেয়ে মারা গেছে! গুরুকে আর কষ্ট দেবেন না।”

50 যীশু এই কথা শুনতে পেয়ে সমাজ-গৃহের নেতাকে বললেন, “ভয় পেও না! কেবল বিশ্বাস রাখো, সে নিশ্চয়ই সুস্থ হয়ে উঠবে।”

51 যীশু সেই বাড়িতে পৌঁছে পিতর, যাকোব, যোহন ও মেয়েটির মা-বাবা ছাড়া আর কাউকে সেই ঘরে ঢুকতে দিলেন না। 52 সেখানে অনেক লোক মেয়েটির জন্য শোক করছিল ও কাঁদছিল। যীশু তাদের বললেন, “কান্না বন্ধ কর, কারণ ও তো মরে নি, ও ঘুমোচ্ছে।”

53 তাঁর কথা শুনে লোকেরা হাসাহাসি করতে লাগল, কারণ তারা জানত মেয়েটি মারা গেছে। 54 যীশু মেয়েটির হাত ধরে ডাক দিলেন, “খুকুমনি ওঠ!” 55 সেই মুহূর্তে তার আত্মা ফিরে এল, আর সে উঠে দাঁড়াল। যীশু তাদের আদেশ করলেন, “যেন তাকে কিছু খেতে দেওয়া হয়।” 56 মেয়েটির মা বাবা খুবই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। যীশু তাদের বারণ করলেন যেন তারা এই ঘটনার কথা কাউকে না বলে।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International