Revised Common Lectionary (Semicontinuous)
11 একদল মিথ্যা সাক্ষী আমায় আঘাত করবার জন্য পরিকল্পনা করছে।
ওরা আমায় নানা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবে। আমি কিন্তু জানি না ওরা কি বিষয়ে বলছে।
12 আমি কেবলমাত্র ভাল কাজই করেছি।
কিন্তু ওরা আমার প্রতি খারাপ কাজই করবে।
প্রভু, যে রকম ভালো জিনিস আমার প্রাপ্য তা আমায় দিন।
13 যখন ওরা অসুস্থ হয়েছিলো, আমি ওদের জন্য দুঃখ পেয়েছিলাম।
উপবাসের মাধ্যমে আমি সেই দুঃখ প্রকাশ করেছি।
ওদের জন্য প্রার্থনা করে এটাই কি আমার প্রাপ্য?
14 ঐসব লোকদের জন্য আমি দুঃখের পোশাক পরেছিলাম এবং ওদের আমি আমার বন্ধুর মত, এমন কি ভাইয়ের মত দেখেছিলাম।
মায়ের মৃত্যুর পর যে লোকটা কাঁদে আমি তার মতই দুঃখিত ছিলাম।
ওদের দুঃখের কারণে আমি কালো কাপড় পরেছিলাম এবং দুঃখে মাথা নত করে আমি হাঁটাচলা করতাম।
15 কিন্তু যখন আমি একটু ভুল করলাম, ওরা আমায় উপহাস করলো।
ওরা আসলে প্রকৃত বন্ধু ছিল না।
আমি ওদের চিনতামও না, কিন্তু চারিদিক থেকে ওরা আমায় ঘিরেছিল এবং আক্রমণ করেছিল।
16 অত্যন্ত খারাপ ভাষায় ওরা আমায় বিদ্রূপ করেছে।
ওরা আমার বিরুদ্ধে ক্রোধ দেখিয়ে দাঁত কিড়মিড় করে।
17 হে আমার প্রভু, আর কতদিন আপনি এইসব খারাপ ঘটনা ঘটতে শুধুই দেখে যাবেন?
ওরা আমায় ধ্বংস করতে চাইছে।
হে প্রভু, আমার জীবন রক্ষা করুন।
আমার প্রিয় জীবনকে ওদের থেকে রক্ষা করুন। ওরা সিংহের মত হিংস্র।
18 প্রভু মন্দিরের মহাসমাজে আমি আপনার প্রশংসা করবো।
সেই বলবান জনতার সামনে আমি আপনার প্রশংসা করবো।
19 ঐসব শত্রুকে কোন কারণেই আমাকে ঘৃণা করতে অথবা পরাজিত করতে দেবেন না।
আমাকে ওদের বিদ্রূপের পাত্র হতে দেবেন না।
ওদের গোপন পরিকল্পনার জন্য ওরা অবশ্যই শাস্তি পাবে।
20 আমার শত্রুরা প্রকৃতপক্ষে শান্তির জন্য পরিকল্পনা করছে না।
ওরা দেশের শান্তিপ্রিয় লোকদের বিরুদ্ধে অনিষ্টকর কাজ করার জন্য গোপনে পরিকল্পনা করছে।
21 শত্রুরা আমার সম্পর্কে বাজে কথা বলে চলেছে।
ওরা মিথ্যা কথা বলে, ওরা বলে “হ্যাঁ হ্যাঁ জানি, তুমি কি করছো।”
22 হে প্রভু আপনি অবশ্যই দেখতে পাচ্ছেন প্রকৃতপক্ষে কি ঘটছে।
তাই, চুপ করে থাকবেন না।
আমায় ছেড়ে যাবেন না।
23 প্রভু, উঠুন! জাগুন!
হে আমার প্রভু, আমার ঈশ্বর, আমার জন্য লড়াই করুন, আমাকে ন্যায় বিচার দিন।
24 প্রভু, আমার ঈশ্বর, আপনার নিরপেক্ষতা দিয়ে আমার বিচার করুন।
ঐ লোকগুলোকে আমার প্রতি বিদ্রূপ করতে দেবেন না।
25 ওরা যেন বলতে না পারে, “হ্যাঁ! এইতো আমরা যা চেয়েছি, তাই পেয়েছি!”
ওরা যেন বলতে না পারে, “আমরা ওকে ধ্বংস করেছি!”
26 আমি আশা করি, আমার সব শত্রু লজ্জিত ও অপমানিত হবে।
যখন আমার কিছু খারাপ হয়েছিল, তখন ওরা খুব খুশী হয়েছিল।
ওরা ভেবেছিলো ওরা আমার থেকে বেশী ভালো!
তাই, ওই সব লোক যেন লজ্জা ও অবমাননায় ঢেকে যায়।
27 কিছু লোক চায় আমার ভালো হোক্। আমি আশা করি, ওরা প্রচণ্ড সুখী হবে!
ওরা সব সময় বলে, “প্রভু মহান!
যা তাঁর দাসের পক্ষে মঙ্গলকর, তিনি তাই চান।”
28 তাই হে প্রভু, আমি লোকদের বলি, আপনি কত ভাল।
প্রতিদিনই আমি আপনার প্রশংসা করি।
ভূমিকা
1 1-3 আমি যাজক বুষির পুত্র যিহিষ্কেল। আমি কবার নদী তীরে বাবিলে নির্বাসনে ছিলাম। সে সময় আকাশ খুলে গিয়েছিল এবং আমি ঈশ্বরীয় দর্শন পেয়েছিলাম। এটা ছিল ত্রিশতম বছরের চতুর্থ মাসের পঞ্চম দিন। যিহোয়াখীন রাজার রাজত্বের সময় নির্বাসনের পঞ্চম বছরের ঐ মাসের পঞ্চম দিনে প্রভুর এই কথাগুলি যিহিষ্কেলের কাছে এসেছিল। প্রভুর ক্ষমতাও ঐ জায়গায় তার ওপর এল।
প্রভুর রথ—ঈশ্বরের সিংহাসন
4 আমি (যিহিষ্কেল) দেখলাম উত্তর দিক থেকে একটা বড় ঝড় আসছে। জোরালো বাতাসের সঙ্গে এক বড় মেঘ, মেঘের মধ্যে থেকে আগুন ঝলসে উঠছিল। তার চারদিকে আলো চমকাচ্ছিল; মনে হচ্ছিল যেন উত্তপ্ত ধাতু আগুনে জ্বলছে। 5 মেঘের মধ্যে ছিল চারটি পশু যাদের মানুষের মত রূপ। 6 প্রত্যেক পশুর চারটি করে মুখ ও চারটি করে ডানা ছিল। 7 তাদের পাগুলো সোজা, দেখতে যেন গরুর পায়ের মত। আর তা পালিশ করা পিতলের মত চক্চক্ করছিল। 8 তাদের পাখার তলায় মানুষের হাত ছিল। চারটি পশুর প্রত্যেকের চারটি করে মুখ ও চারটি করে ডানা ছিল। ডানাগুলি পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত ছিল। 9 যাবার সময় সেই পশুরা পিছন ফেরেনি। তারা সোজা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল।
10 প্রত্যেক পশুর চারটি করে মুখ ছিল। প্রত্যেকের সামনের মুখটা ছিল মানুষের মুখের মত, ডানদিকের মুখটা ছিল সিংহের মত, বাম দিকের মুখটা ছিল গরুর মত, আর পিছনের মুখটা ঈগলের মত। 11 পশুগুলির ডানা তাদের উপর ছড়িয়ে ছিল। প্রত্যেক পশু অপর পশুকে স্পর্শ করার জন্য দুটি করে ডানা বাড়িয়ে রেখেছিল। আর অন্য দুটি ডানা দিয়ে নিজের দেহ ঢেকে রেখেছিল। 12 প্রত্যেক পশু যে দিকে দেখছে সেই দিকেই যাচ্ছিল। আর বাতাস যে দিকে তাদের উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছিল শুধু সেই দিকেই যাচ্ছিল। কিন্তু চলার সময় তারা যে দিকে যেত সেই দিকে তাকাচ্ছিল না। 13 পশুগুলো দেখতে একই রকম ছিল।
পশুদের মধ্যবর্তী স্থানটি দেখতে আগুনে জ্বলা কয়লার আভার মত লাগছিল। এই ছোট ছোট মশালের মত আগুনগুলো পশুদের মধ্য দিয়ে তাদের চারি দিকে ঘুরছিল। আগুন উজ্জ্বল ভাবে জ্বলছিল আর তার থেকে বিদ্যুত চমকাচ্ছিল! 14 সেই সব পশুরা সামনে পেছনে বিদ্যুতের মত দৌড়চ্ছিল!
15-16 আমি পশুদের দিকে তাকালাম এবং সেই সময় আমি দেখলাম চারটি চাকা মাটি স্পর্শ করে রয়েছে। প্রত্যেক পশুর একটি করে চাকা ছিল। প্রত্যেকটা চাকা দেখতে একই রকম, দেখে মনে হচ্ছিল যেন স্বচ্ছ হলুদ রঙের কোন অলঙ্কার থেকে তৈরী। দেখে মনে হচ্ছিল যেন চাকার ভেতরে চাকা রয়েছে। 17 চাকাগুলি যে কোনো দিকে যাবার জন্য ঘুরতে পারত, কিন্তু চলবার সময় চাকাগুলো তাদের দিক্ পরিবর্ত্তন করেনি।
18 চাকার ধারগুলো ছিল লম্বা এবং ভয়ঙ্কর! চার চাকার ধার ছিল চোখে পূর্ণ।
19 চাকাগুলি সব সময় পশুদের সঙ্গেই যাচ্ছিল। পশুরা আকাশে গেলে চাকাগুলিও তাদের সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছিল। 20 বাতাস যেখানে তাদের নিয়ে যেতে চাইছিল তারা সেখানেই যাচ্ছিল, আর চাকাগুলোও তাদের সঙ্গে যাচ্ছিল। কারণ চাকার মধ্যে পশুগুলোর আত্মা ছিল। 21 তাই পশুরা চললে চাকাগুলোও চলছিল, থামলে চাকাগুলোও থামছিল। চাকাগুলো শূন্যে গেলে পশুরাও তাদের সঙ্গে যাচ্ছিল। কারণ চাকাগুলির মধ্যেই বাতাস ছিল।
22 পশুগুলির মাথার ওপর খুব আশ্চর্য কোন একটা জিনিস ছিল। সেটা ছিল ওলটানো এক পাত্রের মত কোন একটা জিনিষ আর সেই ওলটানো পাত্র ছিল স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ। 23 এই পাত্রের ঠিক নীচেই একটি পশুর ডানাসমূহ পরবর্তী পশুকে স্পর্শ করার চেষ্টা করছিল। দুটি ডানা এক দিকে ছড়িয়ে থাকছিল আর অন্য দুটি অন্যদিকে ছড়িয়ে দেহকে ঢেকে রেখেছিল।
24 তারপর আমি ঐ ডানাগুলোর শব্দ শুনলাম। প্রত্যেকবার ভ্রমণের সময় পশুদের ঐ ডানাগুলো খুব জোরে শব্দ করত, যেন একটি বিশাল জলপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের শব্দের মতোই উচ্চ ছিল। সেটা সৈন্যদলের আওয়াজের মত জোর ছিল। আর চলা শেষ হলে পশুগুলো তাদের ডানাগুলো নামিয়ে দিচ্ছিল।
25 পশুরা চলা বন্ধ করে তাদের ডানাগুলো নামাল। তারপর আরেকটি শব্দটি শোনা গেল; ঐ শব্দ তাদের মাথার ওপরের পাত্র থেকে এসেছিল। 26 সেই পাত্রের ওপরে সিংহাসনের মত একটা কিছু যেন দেখা গেল। আর তা ছিল নীলকান্ত মণির মত নীল। সেই সিংহাসনে মানুষের মত একজনকে বসে থাকতে দেখা গেল! 27 আমি তার কোমরের ওপরটা দেখতে পেলাম। তাকে দেখতে যেন গরম ধাতুর মত, যেন তার চারিদিকে আগুন! আর আমি তার কোমরের নীচেও তাকালাম, দেখলাম তার চারিদিকে তাপযুক্ত আগুন। 28 তার চারি দিকের জাজ্বল্যমান আলো ছিল মেঘের মধ্যে একটি ধনুর মত। যেটা প্রভুর মাহাত্ব্যের চিত্র। আমি তা দেখামাত্র মাটিতে পড়ে প্রণাম করলাম। তারপর শুনলাম একটি শব্দ আমায় কিছু বলছে।
2 সেই শব্দটি আমায় বলল, “মনুষ্যসন্তান,[a] উঠে দাঁড়াও, আমি তোমার সঙ্গে কথা বলব।”
23 তখন পিতর তাদের ভেতরে নিয়ে গিয়ে রাতটা তাঁর ওখানে থাকার ব্যবস্থা করলেন।
পর দিন পিতর প্রস্তুত হয়ে সেই লোকদের সঙ্গে রওনা হয়ে গেলেন। যাফো থেকে কয়েকজন বিশ্বাসী ভাইও পিতরের সঙ্গে গেলেন। 24 পরের দিন তাঁরা কৈসরিয়া শহরে এলেন। কর্ণীলিয়াস তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তিনি তাঁর আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের তাঁর বাড়িতে ডেকেছিলেন।
25 পিতর যখন ভেতরে গেলেন তখন কর্ণীলিয়াস এসে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন; আর উপুড় হয়ে পড়ে পিতরকে প্রণাম জানালেন। 26 কিন্তু পিতর তাঁকে বললেন, “আহা, কি করছেন, উঠুন! আমি তো একজন সামান্য মানুষ মাত্র।” 27 পিতর তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বলতে ভেতরে গিয়ে দেখলেন, সেখানে বহুলোক এসে জড়ো হয়েছে।
28 পিতর তাঁদের বললেন, “আপনারা জানেন, অন্য জাতের লোকের সঙ্গে মেলামেশা করা বা তাদের বাড়ি যাওয়া ইহুদীদের পক্ষে বিধি-সম্মত কাজ নয়; কিন্তু ঈশ্বর আমাকে দেখিয়ে দিয়েছেন যে, কোন মানুষকে ‘অশুচি’ বা ‘অপবিত্র’ বলা ঠিক নয়। 29 তাই আমাকে ডেকে পাঠান হল, আর আমি বিনা আপত্তিতে চলে এলাম। এখন আমি জানতে চাই আপনারা কি কারণে আমায় ডেকে পাঠিয়েছেন।”
30 কর্ণীলিয়াস বললেন, “চারদিন আগে এই সময় আমি আমার ঘরে বসে প্রার্থনা করছিলাম বেলা তখন প্রায় তিনটে, সেই সময় হঠাৎ এক ব্যক্তি আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন, তাঁর গায়ে ছিল উজ্জ্বল পোশাক। 31 তিনি বললেন, ‘কর্ণীলিয়াস তোমার প্রার্থনা গ্রাহ্য হয়েছে, আর তুমি গরীব দুঃখীদের যে সাহায্য কর তা-ও ঈশ্বর দেখেছেন। ঈশ্বর তোমাকে স্মরণ করেছেন; 32 তাই তুমি যাফোয় কিছু লোক পাঠাও এবং শিমোন যাকে পিতর বলে তাকে এখানে নিয়ে এস। সমুদ্রের ধারে শিমোন নামে যে চামড়ার ব্যবসায়ী আছে, সে তার বাড়িতে আছে।’ 33 তাই আমি সঙ্গে সঙ্গে আপনার কাছে লোক পাঠালাম; আর আপনি বড় অনুগ্রহ করে এখানে এসেছেন। এখন আমরা সকলে এখানে ঈশ্বরের সামনে আছি; প্রভু আপনাকে যে সব কথা বলতে আদেশ করেছেন আমরা সকলে তা শুনব।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International