Revised Common Lectionary (Semicontinuous)
স্মরণীয় দিনটির জন্য দায়ূদের একটি গীত।
38 প্রভু, ক্রুদ্ধ অবস্থায় আমার সমালোচনা করবেন না।
রাগান্বিত অবস্থায় আমায় শাস্তি দেবেন না।
2 প্রভু আপনি আমায় আঘাত করেছেন।
আপনার তীর আমার হৃদয়ের গভীরে বিদ্ধ হয়েছে।
3 আপনি আমায় শাস্তি দিয়েছেন।
এখন আমার সারা শরীর যন্ত্রণা করছে।
আমি পাপ করেছিলাম, আপনি আমায় শাস্তি দিলেন।
আমার সমস্ত হাড় ব্যথা করছে।
4 মন্দ কাজ করার দায়ে আমি অপরাধী।
আমার সেই পাপের এত ভার যে আমি লজ্জায় আমার মাথা তুলতে পারছি না।
5 আমি মূর্খের মত কাজ করেছি।
এখন আমার আছে দুর্গন্ধময় ক্ষতস্থান।
6 এখন আমি সর্বদা বেদনায় বেঁকে রয়েছি।
সারাদিনই আমি মানসিক অবসাদে কাটাই।
7 আমার সারা শরীর জ্বরে টন্-টন্ করছে।
8 আমি এমনই যন্ত্রণায় কাতর যে আমি কিছু অনুভব করতে পারছি না।
আমার দ্রুত স্পন্দিত হৃদয় আমার আর্তনাদের কারণ!
9 হে প্রভু, আপনি আমার তীব্র আর্তনাদ শুনেছেন।
আমি কোন্ কোন্ জিনিসের আকাঙ্খী তা আপনি জানেন।
10 আমার অন্তরে তীব্র ঘা দিচ্ছে।
আমার সব শক্তি চলে গেছে এবং আমি অন্ধ হতে বসেছি।
11 আমার অসুস্থতার জন্য
আমার বন্ধু এবং প্রতিবেশীদের কেউই আমায় দেখতে আসে না।
আমার পরিবারের কেউ আমার কাছে আসবে না।
12 শত্রুরা যারা আমায় হত্যা করতে চায় তারা আমার নামে মিথ্যা রটনা করে।
ওরা যারা আমায় হত্যা করতে চায়, আমার নামে মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে।
সর্বদাই ওরা আমার বিষয়ে আলোচনা করছে।
13 কিন্তু যে কানে শোনে না আমি তার মতই বধির।
যে কথা বলতে পারে না, আমি তার মতই মূক হয়ে আছি।
14 আমি সেই লোকের মত যে, লোকে তার সম্পর্কে কি বলছে, তা শুনতে পায় না।
আমি যুক্তিতর্কে প্রমাণ করতে অক্ষম যে আমার শত্রুরা মিথ্যা বলছে।
15 তাই প্রভু, আপনি আমায় বাঁচান।
হে প্রভু, আমার ঈশ্বর, আপনি আমার হয়ে কথা বলুন।
16 আমি যদি কিছু বলি, তবে আমার শত্রুরা আমায় নিয়ে মজা করবে।
আমাকে অসুস্থ দেখলে তারা ভাববে কোন অন্যায় কাজের জন্য আমার শাস্তি হয়েছে।
17 আমি জানি খারাপ করার জন্য আমি দোষী।
আমার যন্ত্রণা আমি ভুলতে পারছি না।
18 প্রভু, যে খারাপ কাজ আমি করেছি, তা আমি আপনাকে বলেছি।
আমার পাপের জন্য আমি দুঃখিত।
19 আমার শত্রুরা স্বাস্থ্যবান ও বলবান।
ওরা অনেক অনেক মিথ্যা কথা বলেছে।
20 আমার শত্রুরা আমার প্রতি অনেক খারাপ আচরণ করেছে।
আমি কিন্তু ওদের শুধু ভালো করেছি।
আমি শুধুমাত্র ভাল কাজই করতে চেষ্টা করেছি,
কিন্তু ওই সব লোক আমার বিরুদ্ধে গেছে।
21 প্রভু আমায় ছেড়ে যাবেন না!
হে আমার ঈশ্বর, আমার কাছে থাকুন!
22 শীঘ্র এসে আমায় সাহায্য করুন!
হে ঈশ্বর, আপনি আমায় রক্ষা করুন!
দায়ূদ শৌলকে লজ্জায় ফেললেন
24 শৌল পলেষ্টীয়দের হারিয়ে দিলেন। এরপর লোকরা তাঁকে জানাল, “দায়ূদ ঐন্-গদীর কাছাকাছি একটা মরুভূমি অঞ্চলে রয়েছে।”
2 তখন শৌল ইস্রায়েল থেক 3000 জন পুরুষ বেছে নিলেন। শৌল তাদের সঙ্গে বুনো ছাগলের শিলার কাছে দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীদের খোঁজ করতে লাগলেন। 3 শৌল রাস্তার ধারে একটা মেষের গোয়ালে এসে পড়লেন। কাছাকাছি একটা গুহা ছিল। শৌল হাল্কা হতে গুহাটির ভিতর গেলেন। দায়ূদ এবং তাঁর লোকরা গুহার ভিতরে অনেক দূরে লুকিয়ে ছিল। 4 সঙ্গীরা দায়ূদকে বলল, “প্রভু আজকের দিনটার কথাই বলেছিলেন। তিনি আপনাকে বলেছিলেন, ‘আমি তোমার কাছে তোমার শত্রুকে এনে দেব। তারপর তুমি একে নিয়ে যা খুশি তাই করো।’”
দায়ূদ হামাগুড়ি দিয়ে এসে ক্রমে শৌলের বেশ কাছে এসে পড়লেন। তারপর তিনি শৌলের জামার একটা কোণ কেটে ফেললেন। শৌল দায়ূদকে দেখতে পান নি। 5 পরে এর জন্য দায়ূদের মন খারাপ হয়ে গেল। 6 দায়ূদ তাঁর সঙ্গীদের বললেন, “আমি আশা করি আমার মনিবের বিরুদ্ধে এই ধরণের কাজ প্রভু আর আমায় করতে দেবেন না। শৌল হচ্ছেন প্রভুর মনোনীত রাজা। আমি তাঁর বিরুদ্ধে কিছু করব না।” 7 এই কথা বলে দায়ূদ তাঁর সঙ্গীদের থামিয়ে দিলেন। শৌলকে আঘাত করতে তাদের নিষেধ করে দিলেন।
শৌল গুহা ছেড়ে নিজ রাস্তায় চললেন। 8 দায়ূদ গুহা থেকে বেরিয়ে এসে চেঁচিয়ে শৌলকে ডাকলেন, “হে রাজা, হে মনিব।”
শৌল পেছন ফিরে তাকালেন। দায়ূদ আভূমি মাথা নোয়ালেন। 9 তিনি শৌলকে বললেন, “লোকরা যখন বলে, ‘দায়ূদ আপনাকে হত্যা করতে চায়, তখন সে কথায় আপনি কান দেন কেন?’ 10 আমি আপনাকে মারতে চাই না। আপনি নিজের চোখেই দেখে নিন। এই গুহাতে আজ প্রভু আপনাকে আমার হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু আমি আপনাকে হত্যা করতে চাই না। আমি আপনার ওপর সদয় ছিলাম। আমি বললাম, ‘আমি আমার মনিবকে হত্যা করতে চাই না। শৌল হচ্ছেন প্রভুর অভিষিক্ত রাজা।’ 11 আমার হাতের এই টুকরো কাপড়টার দিকে চেয়ে দেখুন। আপনার পোশাক থেকে আমি এটা কেটে নিয়েছিলাম। আমি আপনাকে হত্যা করতে পারতাম, কিন্তু করিনি। একটা ব্যাপার আমি আপনাকে বোঝাতে চাই। আপনার বিরুদ্ধে আমি কোন ষড়যন্ত্র করি নি। আপনার প্রতি আমি কোন অন্যায় করি নি বরং আপনিই আমাকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন, আমায় হত্যা করার জন্য। 12 স্বয়ং প্রভুই এর বিচার করবেন। তিনিই আমার ওপর অবিচার করার জন্য আপনাকে শাস্তি দেবেন। আমি নিজে আপনার সঙ্গে যুদ্ধ করব না। 13 একটা পুরানো প্রবাদ আছে:
‘মন্দ লোকদের কাছ থেকেই মন্দ জিনিসগুলো আসে।’
“আমি আপনার ওপর কোনো মন্দ কাজ করি নি, আমি আপনার ক্ষতি করবো না। 14 কার পেছনে আপনি ধাওয়া করছেন? কার সঙ্গে ইস্রায়েলের রাজা যুদ্ধ করতে চলেছেন? আপনাকে আঘাত করবে এমন কারোর পেছনে আপনি ছুটছেন না। মনে হচ্ছে আপনি যেন একটা মৃত কুকুর অথবা একটা নীল মাছির পেছনে তাড়া করছেন। 15 প্রভু এর সুবিচার করুন। তিনিই ঠিক করুন আপনার এবং আমার মধ্যে কে ভাল, কে খারাপ। প্রভু আমাকে সমর্থন করবেন এবং প্রমাণ করবেন যে আমি ঠিক কাজটি করেছি। প্রভু আপনার হাত থেকে আমাকে রক্ষা করবেন।”
16 দায়ূদ থামলেন। শৌল জিজ্ঞেস করলেন, “দায়ূদ পুত্র আমার, এ কি তোমার স্বর? এ কার স্বর শুনছি?” এই বলে শৌল কাঁদতে শুরু করলেন। তিনি খুব কাঁদতে লাগলেন। 17 শৌল বললেন, “তুমিই ঠিক, আমি ভুল করেছি। তুমি আমার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করলেও আমি তোমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছি। 18 যা যা ভালো তুমি করেছ সবই আমাকে বলেছ। প্রভু আমাকে তোমার কাছে এনে দিয়েছিলেন, কিন্তু তুমি আমাকে হত্যা করো নি। 19 এতেই প্রমাণ হয় যে আমি তোমার শত্রু নই। একবার শত্রুকে ধরলে কেউ আবার তাকে ছেড়ে দেয়? শত্রুর জন্য সে কখনও ভালো কাজ করে না। আজ তুমি আমায় যে অনুগ্রহ করলে তার জন্য প্রভু তোমায় পুরস্কৃত করবেন। 20 আমি জানি তুমি ইস্রায়েলের রাজা হবে। আমি জানি যে তুমি ইস্রায়েল রাজ্যের ওপর শাসন করবে। 21 আমাকে তুমি কথা দাও, প্রভুর নামে এই শপথ করো, কথা দাও আমার উত্তরপুরুষদের কাউকে তুমি হত্যা করবে না। কথা দাও, আমার নাম আমাদের বংশ থেকে তুমি মুছে দেবে না।”
22 দায়ূদ শৌলকে প্রতিশ্রুতি দিলেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিলেন তিনি শৌলের পরিবারের কাউকে হত্যা করবেন না। তারপর শৌল ফিরে গেলেন। দায়ূদ এবং তাঁর সঙ্গীরা দুর্গে চলে গেলো।
প্রভুর ভোজ
17 কিন্তু এখন আমি যে বিষয়ে তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছি সেই বিষয়ে আমি তোমাদের প্রশংসা করতে পারি না, কারণ তোমরা যখন একত্রিত হও তাতে ভাল না হয়ে শুনছি তোমাদের ক্ষতি হচ্ছে। 18 প্রথমতঃ আমি শুনেছি যে তোমরা যখন মণ্ডলীতে সমবেত হও, তখন তোমাদের মধ্যে অনেক দল থাকে, আর আমি এই ব্যাপারে কিছুটা বিশ্বাস করি। 19 তোমাদের মধ্যে ভিন্নতা অবশ্যই থাকবে, যাতে তোমাদের মধ্যে যারা যথার্থ খাঁটি তারা স্পষ্ট হয়।
20 তাই যখন তোমরা সমবেত হও, তখন তোমরা প্রকৃতপক্ষে প্রভুর ভোজ খাও না। 21 কারণ খাবার সময় প্রত্যেকে নিজের নিজের খাবার আগে খেয়ে নেয়, তাতে কেউ বা ক্ষুধার্ত থাকে; আর কেউ কেউ অতিরিক্ত পানাহার করে বেহুঁস হয়ে যায়। 22 পানাহার করার জন্য তোমাদের কি নিজেদের বাড়ীঘর নেই? তোমরা কি ঈশ্বরের মণ্ডলীকে তুচ্ছ জ্ঞান কর? আর যাদের কিছু নেই তাদের কি লজ্জায় ফেলতে চাও? আমি তোমাদের কি বলব? এমন কাজ করার জন্য আমি কি তোমাদের প্রশংসা করব? এবিষয়ে আমি তোমাদের প্রশংসা করব না।
27 তাই যে কেউ অযোগ্যভাবে প্রভুর এই রুটি খায় ও পানপাত্রে পান করে, সে প্রভুর দেহের ও রক্তের জন্য দায়ী হবে। 28 এই রুটি খাওয়ার ও সেই পানপাত্রে পান করার আগে প্রত্যেকের উচিত নিজের হৃদয় পরীক্ষা করা। 29 কারণ যে অযোগ্যভাবে এই রুটি খায় ও পানপাত্রে পান করে, সে যদি দেহের অর্থ কি তা না বোঝে তবে সেই খাদ্য পানীয় ঈশ্বরের বিচারদণ্ডেই পরিণত হয়। 30 সেই জন্য তোমাদের মধ্যে অনেকে আজ দুর্বল ও অসুস্থ, অনেকে মারাও পড়েছে। 31 কিন্তু যদি নিজেদের ঠিক মতো পরীক্ষা করতাম, তাহলে ঈশ্বরকে আমাদের বিচার করতে হত না। 32 কিন্তু যখন প্রভু আমাদের বিচার করেন, তিনি আমাদের শাসনও করেন, যাতে আমরা জগতের জন্য লোকদের সঙ্গে বিচারপ্রাপ্ত না হই।
33 তাই, আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা যখন খাওয়া-দাওয়া করার জন্য সমবেত হও, তখন একজন অন্য জনের জন্য অপেক্ষা করো।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International