Revised Common Lectionary (Semicontinuous)
পরিচালকের প্রতি: যিদূথূনের প্রতি দায়ূদের একটি গীত।
39 আমি বলেছিলাম, “আমি যা বলবো সে সম্পর্কে সতর্ক থাকবো।
আমার জিভকে আমাকে কোন পাপ করতে দেবো না।
যখন আমি দুষ্ট লোকদের মধ্যে থাকবো তখন আমি চুপ করে থাকবো।”
2 তাই আমি কিছু বলি নি।
এমন কি আমি কোন ভালো কথাও বলি নি!
কিন্তু আমি আরো বেশী যন্ত্রণা বোধ করছি।
3 আমি প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ ছিলাম।
এ বিষয়ে আমি যত ভেবেছি, ততই ক্রুদ্ধ হয়েছি।
তাই আমি কিছু বলি নি।
4 হে প্রভু, আমায় বলে দিন, এখন আমার কী হবে?
বলুন, আর কতদিন আমি বাঁচবো?
আমাকে জানতে দিন আসলে আমার জীবন কত ছোট।
5 হে প্রভু আপনি আমায় একটি স্বল্প আয়ু দান করেছেন।
আপনার তুলনায় আমার জীবন কিছুই নয়।
প্রত্যেকটি মানুষের জীবন মেঘের মতই যা তাড়াতাড়ি মিলিয়ে যায়।
কোন মানুষই চিরদিন বাঁচবে না।
6 আমাদের জীবন দর্পণের প্রতিবিম্বের মত, আমাদের সমস্যারও প্রকৃত কোন মূল্য নেই।
আমাদের মৃত্যুর পর কারা এইসব ভোগ করবে
তা না জেনেই আমরা সারা জীবন ধরে জিনিসপত্র সংগ্রহ করে চলেছি।
7 তাই প্রভু, আমি আর কী আশা রাখবো?
আপনিই আমার আশা!
8 প্রভু আমি যে সব মন্দ কাজ করেছি, তা থেকে আমাকে বাঁচান।
আমাকে যেন একজন দুষ্ট মূর্খের লজ্জ্বার সম্মুখীন হতে না হয়।
9 আমি আমার মুখ খুলবো না।
আমি কোন কিছুই বলবো না।
প্রভু যা করণীয়, আপনি তাই করেছেন।
10 কিন্তু হে ঈশ্বর, আমাকে আর শাস্তি দেবেন না।
আপনি যদি না থামেন আপনার হাতে আমি শেষ হয়ে যাবো!
11 হে প্রভু, বাঁচার প্রকৃত পথ সম্পর্কে শিক্ষা দেবার জন্য, যারা ভুল কাজ করে, তাদের আপনি শাস্তি দেন।
মথ যেমন কাপড় কেটে নষ্ট করে, তেমন করে মানুষ যা ভালোবাসে, তা আপনি বিনষ্ট করে দেন।
হ্যাঁ, আমাদের জীবন ক্ষুদ্র মেঘের মত যা তাড়াতাড়ি মিলিয়ে যায়।
12 প্রভু, আমার প্রার্থনা শুনুন!
চিৎকার করে আমি যে প্রার্থনা করি তা শুনুন।
আমার চোখের জলের দিকে তাকান।
আমি একজন পথিক মাত্র যে এই জীবন আপনার সঙ্গে ভোগ করছি।
আমার পূর্বপুরুষদের মত আমি ক্ষণিকের জন্য এখানে থাকবো।
13 মৃত্যুর পূর্বে, আমার চলে যাওয়ার আগে,
আমাকে একা থাকতে দিন, আমাকে সুখী হতে দিন।
ইলীহূ তর্কে যোগ দিল
32 তখন ইয়োবের তিনজন বন্ধু তাকে উত্তর দেওয়া থেকে বিরত হলেন। তাঁরা বিরত হলেন কারণ তাঁরা দেখালেন যে ইয়োব যে নির্দোষ সে বিষয়ে তাঁরা একেবারে দৃঢ় প্রত্যয় ছিলেন। 2 কিন্তু বারখেলের পুত্র ইলীহূ সেখানে উপস্থিত ছিল। বারখেল ছিল বূষীয় বংশধর। (বূষ ছিল রাম পরিবারের একজন।) ইলীহূ ইয়োবের ওপর ভীষণ রেগে গেল। কারণ ইয়োব ভেবেছিল যে সে ঈশ্বরের চেয়েও ধার্মিক। 3 ইলীহূ ইয়োবের তিনজন বন্ধুর ওপরেও রেগে ছিল। কেন? কারণ ইয়োবের তিনজন বন্ধু ইয়োবের প্রশ্নর উত্তর দিতে পারছিল না। তবু তারা ইয়োবকে দোষী বলে অভিযুক্ত করেছিল। 4 ইলীহূই সেখানে সব থেকে কনিষ্ঠ ছিল, তাই সবার কথা শেষ হওয়া পর্যন্ত সে অপেক্ষা করছিল। তখন তার মনে হল সে কথা বলা শুরু করতে পারে। 5 কিন্তু সেই সময় সে দেখলো, ইয়োবের তিন বন্ধুর আর কিছুই বলার নেই। তাই সে রেগে গেল। 6 তখন ইলীহূ (বূষ পরিবার উদ্ভূত বারখেলের পুত্র) কথা বলতে শুরু করলো। সে বলল:
“আমি একজন যুবক, আপনারা বয়স্ক ব্যক্তি।
সেই জন্য আমি যা ভাবছি তা বলতে আমি ভয় পাচ্ছি।
7 আমি নিজের মনে ভেবেছি, ‘বয়স্ক লোকরা আগে কথা বলবে।
বয়স্ক লোকরা বহুদিন জীবিত আছেন, তাই তাঁরা বহু বিষয়ে শিক্ষা লাভ করেছেন।’
8 কিন্তু ঈশ্বরের আত্মাই একজনকে জ্ঞানী করে।
ঈশ্বর সর্বশক্তিমানের সেই নিঃশ্বাস মানুষের বোধশক্তিকে সব কিছু বুঝতে সাহায্য করে।
9 শুধুমাত্র বৃদ্ধ লোকরাই জ্ঞানী মানুষ নয়।
কোনটা প্রকৃত ঠিক তা শুধুমাত্র বৃদ্ধ লোকরাই বোঝে এমনও নয়।
10 “তাই, আমার কথা শুনুন!
আমি কি ভাবছি তা আপনাদের বলবো।
11 আপনারা যখন কথা বলছিলেন আমি তখন অপেক্ষা করছিলাম।
আমি আপনাদের যুক্তিসমূহ শুনেছি এবং যথাযোগ্য উত্তর দেবার জন্য আপনাদের প্রচেষ্টা দেখেছি।
ইয়োবকে আপনারা যে উত্তর দিয়েছেন তা আমি শুনেছি।
12 আপনারা যা বলেছেন আমি তা যত্ন করে শুনেছি।
আপনাদের মধ্যে কেউই ইয়োবকে তিরস্কার করেননি।
আপনাদের মধ্যে কেউই ওঁর যুক্তির উত্তর দেননি।
13 আপনাদের প্রজ্ঞা আছে এ কথা আপনাদের তিন জনের বলা উচিৎ হয়নি।
মনুষ্য জাতি নয়, শুধুমাত্র ঈশ্বর যেন তাঁকে তর্কযুদ্ধে পরাজিত করেন।
আপনারা অবশ্যই যুক্তির উত্তর দেবেন, সাধারণকে নয়।
14 ইয়োব তাঁর যুক্তিগুলো আমার কাছে বলেন নি।
তাই, আপনারা তিন জন যে যুক্তিগুলি উত্থাপন করেছিলেন, আমি তা বলবো না।
15 “ইয়োব, এই তিন জন যুক্তি হারিয়ে ফেলেছে।
ওঁদের আর বেশী কিছু বলার নেই।
ওঁদের আর বেশী কিছু উত্তরও নেই।
16 ইয়োব, এই তিন ব্যক্তি আপনাকে উত্তর দেবে—আমি এমন আশায় প্রতীক্ষা করছিলাম।
কিন্তু ওঁরা চুপ করে গেলেন।
ওঁরা আপনার সঙ্গে তর্ক বন্ধ করে দিলেন।
17 তাই, এখন আমি আপনাকে আমার উত্তর দেবো।
হ্যাঁ, আমি যা জানি তা আপনাকে বলব।
18 আমার এত কিছু বলার আছে যে
আমার প্রায় বিস্তারিত হওয়ার উপক্রম।
19 আমি একটি দ্রাক্ষারসের থলির মত যা এখনও খোলা হয় নি।
আমি একটি নতুন দ্রাক্ষারসের আধারের মতো যেটি প্রায় ফেটে গিয়ে খোলবার উপক্রম হয়েছে।
20 আমাকে কথা বলতেই হবে এবং আমার ভেতরের বাষ্প বার করে দিতে হবে।
আমাকে অবশ্যই ইয়োবের যুক্তির উত্তর দিতে হবে।
21 আমি কারো প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখাব না।
আমি কারো স্তাবকতা করব না।
22 আমি একজনের সঙ্গে অন্য একজন লোকের চেয়ে ভালো আচরণ করতে পারি না।
আমি যদি তা করি আমার সৃষ্টিকর্তা আমায় শাস্তি দেবেন।
ধনী ব্যক্তি ও লাসারের কাহিনী
19 “এক সময় একজন ধনী ব্যক্তি ছিল, সে বেগুনী রঙের কাপড় ও বহুমূল্য পোশাক পরত; আর প্রতিদিন বিলাসে দিন কাটাতো। 20 তারই দরজার সামনে লাসার নামে একজন ভিখারী পড়ে থাকত, যার সারা শরীর ঘায়ে ভরে গিয়েছিল। 21 সেই ধনী ব্যক্তির টেবিল থেকে টুকরো-টাকরা যে খাবার পড়ত তাই খেয়ে সে পেট ভরাবার আশায় থাকত, এমনকি কুকুররা এসে তার ঘা চেটে দিত।
22 “একদিন সেই গরীব ভিখারী মারা গেল, আর স্বর্গদূতরা এসে তাকে নিয়ে গেল এবং সে অব্রাহামের কোলে স্থান পেল। সেই ধনী ব্যক্তিও একদিন মারা গেল, আর তাকে সমাধি দেওয়া হল। 23 সেই ধনী ব্যক্তি পাতালে নরকে খুব যন্ত্রণার মধ্যে কাটাতে থাকল। এই অবস্থায় সে মুখ তুলে তাকাতে বহুদূরে অব্রাহামকে দেখতে পেল; আর অব্রাহামের কোলে সেই লাসারকে দেখতে পেল। 24 সেই ধনী ব্যক্তি তখন চিৎকার করে বলে উঠল, ‘হে পিতা, অব্রাহাম, আমার প্রতি দয়া করুন, লাসারকে এখানে পাঠিয়ে দিন, যেন সে এখানে এসে ওর আঙ্গুলের ডগা জলে ডুবিয়ে আমার জিভ জুড়িয়ে দেয়, কারণ আমি এই আগুনের মধ্যে বড়ই কষ্ট পাচ্ছি!’
25 “কিন্তু অব্রাহাম বললেন, ‘হে আমার বৎস, মনে করে দেখ, জীবনে সুখের সব কিছুই তুমি ভোগ করেছ আর সেই সময় লাসার অনেক কষ্ট পেয়েছে। কিন্তু এখন এখানে সে সুখ পাচ্ছে আর তুমি কষ্ট পাচ্ছ। 26 এছাড়া তোমাদের ও আমাদের মাঝে এক মহাশূন্য স্থান আছে, যাতে ইচ্ছা থাকলেও কেউ এখানে থেকে পার হয়ে তোমাদের কাছে যেতে না পারে, আর ওখান থেকে পার হয়ে কেউ আমাদের কাছে আসতে না পারে।’
27 “সেই ধনী ব্যক্তি তখন বলল, ‘তাহলে পিতা দয়া করে লাসারকে আমার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিন! 28 যেন আমার যে পাঁচ ভাই সেখানে আছে, তাদের সে সাবধান করে দেয়, যাতে তারা এই যন্ত্রণার জায়গায় না আসে।’
29 “কিন্তু অব্রাহাম বললেন, ‘মোশি ও অন্যান্য ভাববাদীরা তো তাদের জন্য আছেন, তাঁদের কথা তারা শুনুক।’
30 “তখন ধনী লোকটি বলল, ‘না, না, পিতা অব্রাহাম মৃতদের মধ্য থেকে কেউ যদি তাদের কাছে যায়, তবে তারা অনুতাপ করবে।’
31 “অব্রাহাম তাকে বললেন, ‘তারা যদি মোশি ও ভাববাদীদের কথা না শোনে, তবে মৃতদের মধ্য থেকে উঠে গিয়েও যদি কেউ তাদের সঙ্গে কথা বলে তবু তারা তা শুনবে না।’”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International