Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Revised Common Lectionary (Semicontinuous)

Daily Bible readings that follow the church liturgical year, with sequential stories told across multiple weeks.
Duration: 1245 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
যিশাইয় 52:13-53:12

ঈশ্বরের দুর্দশাগ্রস্ত দাস

13 “আমার দাসকে দেখো। সে জ্ঞান অর্জন ও শিক্ষাদানে খুবই সফল হবে। সে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। ভবিষ্যতে লোকে তাকে প্রচুর শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাবে। 14 কিন্তু আমার দাসকে দেখে অনেকের খুব মনোকষ্ট হবে। সে এত বাজে ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল যে অনেকেরই তাকে মানুষ বলে চিনতে কষ্ট হবে। 15 এমনকি অনেক লোক বিহবল হয়ে যাবে এবং একটা কথাও বলতে পারবে না। রাজারা তাকে দেখে বিহ্বল হয়ে গিয়ে একটি কথাও বলতে পারবেন না। তারা আমার দাসের গল্প শোনেনি, কিন্তু কি ঘটেছিল তা দেখেছিল। সেই গল্প তারা শুনতে না পেলেও বুঝতে পারবে কি ঘটেছিল।”

53 কে সত্যিই বিশ্বাস করেছিল, আমাদের ঘোষণার কথা? কে সত্যি সত্যিই গ্রহণ করেছিল প্রভুর শাস্তি?

সে প্রভুর সামনে, ছোট গাছের মত বড় হতে লাগল। সে ছিল শুকনো জমিতে গাছের শিকড়ের বড় হওয়ার মতো। তাকে দেখতে বিশেষ কিছু লাগত না। তার কোন বিশেষ মহিমা ছিল না। যদি আমরা তার দিকে তাকাতাম তবে তাকে ভালো লাগার মত বিশেষ কিছুই চোখে পড়ত না। লোকে তাকে ঘৃণা করেছিল, তার বন্ধুরা তাকে ত্যাগ করেছিল। তার প্রচুর দুঃখ ছিল। অসুস্থতার বিষয়ে তার অভিজ্ঞতা ছিল। লোকরা তার কাছ থেকে লুকিয়ে থাকত। আমরা তাকে ঘৃণা করতাম। আমরা তার কথা চিন্তাও করিনি।

কিন্তু সে আমাদের অসুখগুলোকে বয়ে বেড়িয়েছিল। সে আমাদের যন্ত্রণা ভোগ করেছিল। এবং আমরা মনে করেছিলাম ঈশ্বর তাকে শাস্তি দিচ্ছেন। তার কোন কৃতকর্মের জন্য ঈশ্বর তাকে শাস্তি দিচ্ছেন বলে আমরা মনে করেছিলাম।

কিন্তু আমাদেরই ভুল কাজের জন্য তাকে আহত হতে হয়েছিল। আমাদের পাপের জন্য সে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছিল। আমাদের প্রাপ্য শাস্তি সে পেয়েছিল। তার আঘাতের জন্য আমাদের আঘাত সেরে উঠেছিল। আমরা সবাই হারিয়ে যাওয়া মেষের মত ঘুরে বেড়িয়েছিলাম। আমরা সবাই আমাদের নিজেদের পথে গিয়েছিলাম যখন প্রভু আমাদের সব শাস্তি তাকে দিয়ে ভোগ করাচ্ছিলেন।

তার সঙ্গে নিষ্ঠুর ব্যবহার করা হয়েছিল এবং সে আত্মসমর্পণ করেছিল। সে কখনও প্রতিবাদ করেনি। মেষকে যেমন হত্যার জন্য নিয়ে যাওয়া হলে সে নালিশ করে না তেমনি সেও চুপচাপ ছিল। মেষ যেমন তার পশম কাটার সময় কোন শব্দ করে না, সেও তেমনি তার মুখ খোলে নি। মানুষ শক্তি প্রয়োগ করে তাকে নিয়েছিল এবং তার প্রতি ন্যায্য বিচার করেনি। তার ভবিষ্যৎ পরিবার সম্পর্কে কেউ কিছু বলেনি। কারণ সে জীবিতদের দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। আমার লোকদের পাপের জন্য সে শাস্তি পেয়েছিল। তার মৃত্যু হয়েছিল এবং ধনীদের সঙ্গে তাকে সমাহিত করা হয়েছিল। তাকে দুষ্ট লোকদের সঙ্গে সমাহিত করা হয়েছিল যদিও সে কোন হিংস্র কাজ করেনি। সে কখনও কাউকে প্রতারণা করেনি।

10 প্রভু তাকে মেরে পিষে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। যদি সে দোষমোচনের বলি হিসেবে নিজেকে উৎসর্গ করে, সে তার সন্তানের মুখ দেখবে এবং দীর্ঘ দিন বাঁচবে। ঈশ্বরের অভিপ্রায় তার হাতে সফল হবে। 11 তার আত্মা বহু কষ্ট পেলেও সে অনেক ভালো জিনিস ঘটা দেখতে পাবে। সে যেসব জিনিস শিখেছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট হবে।

প্রভু বলেন, “আমার ভালো দাসটি অনেক মানুষকে ধার্মিক করবে। সে তাদের অপরাধের দরুণ শাস্তি ভোগ করবে। 12 এই কারণে আমি তাকে অনেক লোকের মধ্যে পুরস্কৃত করব। যে সব লোকরা শক্তিশালী তাদের সঙ্গে সমস্ত জিনিসে তার অংশ থাকবে। আমি এটা তার জন্য করব কারণ সে লোকের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে মারা গিয়েছিল। তাকে একজন অপরাধী হিসেবে গণ্য করা হত। কিন্তু সত্যটা হল সে অনেক লোকের পাপ বহন করে ছিল। এবং এখন সে পাপী লোকদের সপক্ষে কথা বলছে।”

গীতসংহিতা 22

পরিচালকের প্রতি: “ভোরের হরিণ” গানটির সুরে বসানো দায়ূদের একটি গীত।

22 হে আমার ঈশ্বর, হে আমার ঈশ্বর!
    কেন আপনি আমায় ছেড়ে চলে গেছেন?
আপনি এত দূরে যে, আমাকে রক্ষা করতে পারবেন না!
    আপনি এত দূরে যে, আমার সাহায্যের জন্য চিৎকারও শুনতে পাবেন না!
ঈশ্বর আমার, সারাদিন ধরে আমি আপনাকে ডেকেছি।
    কিন্তু আপনি সাড়া দেন নি।
সারারাত ধরে আমি আপনাকে ডেকেছি।

ঈশ্বর, আপনি হলেন সেই পবিত্র একজন।
    আপনি রাজার মত থেকে যান। ইস্রায়েলের প্রশংসাই আপনার সিংহাসন।
আমাদের পূর্বপুরুষরা আপনার ওপর বিশ্বাস করেছিলেন।
    হ্যাঁ, হে ঈশ্বর তাঁরা আপনার ওপর বিশ্বাস করেছিলেন এবং আপনি তাঁদের রক্ষা করেছেন।
ঈশ্বর, আমাদের পূর্বপুরুষরা আপনার কাছে সাহায্যের জন্য কেঁদে পড়েছিলেন
    এবং তাঁরা তাঁদের শত্রুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন।
    তাঁরা আপনার ওপর আস্থা রেখেছিলেন এবং তাই তাঁরা আশাহত হন নি!
সুতরাং, আমি কি কীট, মানুষ নই?
    লোকে আমার সম্পর্কে লজ্জা বোধ করে এবং আমাকে ঘৃণা করে।
প্রত্যেকে যারা আমাকে দেখে, আমায় নিয়ে ঠাট্টা করে।
    তারা তাদের মাথা নাড়ায় এবং আমায় জিভ ভেঙ্গায়।
তারা আমায় বলে: “প্রভুর কাছে সাহায্য চাও।
    হয়তো বা তিনি তোমার পরিত্রাণ করবেন।
    তিনি যদি সত্যিই তোমায় পছন্দ করেন, নিশ্চয়ই তিনি তোমায় উদ্ধার করবেন!”

হে ঈশ্বর, এটাই প্রকৃত সত্য যে, একমাত্র আপনার ওপরেই আমি নির্ভর করি।
    এমন কি আমি যখন আমার মায়ের বুকের দুধ খেতাম আপনি আমাকে আশ্বাস এবং স্বস্তি দিতেন।
10 যে দিন আমি জন্মেছি, সে দিন থেকেই আপনি আমার ঈশ্বর।
    মায়ের গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসার পরেই আমি আপনার যত্নে লালিত হয়েছি।

11 তাই, হে আমার ঈশ্বর, আমাকে ছেড়ে যাবেন না!
    কারণ সংকট নিকটবর্ত্তী।
    আমাকে সাহায্য করার মত কেউই নেই।
12 আমার চারপাশে লোকজন রয়েছে, শক্তিশালী বলদের মত
    তারা আমার চারদিকে ঘিরে রয়েছে।
13 তাদের মুখগুলো একটা গর্জনকারী সিংহের মত হাঁ করে খোলা,
    যেন তার শিকারের দিকে সবেগে ছুটে যাচ্ছে।

14 মাটিতে ফেলে দেওয়া জলের মত আমার শক্তি চলে গেছে।
    আমার অস্থিগুলো আলাদা হয়ে গেছে।
    আমি আমার সাহস হারিয়ে ফেলেছি!
15 আমার শক্তি[a] ভাঙ্গা মৃত্‌ পাত্রের মতই শুকিয়ে গেছে।
    আমার জিভ তালুতে আটকে যাচ্ছে।
    আপনি আমাকে মৃত্যুর ধূলায় পৌঁছে দিয়েছেন।
16 আমার চারপাশে “কুকুর” ঘুরে বেড়াচ্ছে।
    সেই সব মন্দ লোকেদের দল আমাকে ফাঁদে ফেলেছে।
    সিংহের মত তারা আমার হাত ও পা বিদ্ধ করে দিয়েছে।
17 আমি আমার হাড়গুলো পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছি।
    লোকজন আমার দিকে চেয়ে রয়েছে!
    তারা ক্রুর দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে!
18 ঐ লোকগুলো ওদের মধ্যে আমার কাপড়গুলো ভাগাভাগি করে নিচ্ছে।
    তারা আমার কাপড়ের জন্য ঘুঁটি চালছে।

19 প্রভু, আমাকে ছেড়ে যাবেন না!
    আপনিই আমার শক্তি।
    শীঘ্রই আমাকে সাহায্য করুন!
20 প্রভু, শত্রুর তরবারি হতে আমায় রক্ষা করুন।
    ওই সব কুকুরদের হাত থেকে আমার মূল্যবান জীবন রক্ষা করুন।
21 আমাকে সিংহের মুখ থেকে রক্ষা করুন।
    বলদের শিং এর আঘাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।

22 প্রভু, আপনার সম্পর্কে আমি আমার ভাইদের বলবো।
    মহাসমাজের সামনে আমি আপনার প্রশংসা করব।
23 তোমরা যারা প্রভুর উপাসনা কর, তারা প্রভুর প্রশংসা কর!
    হে ইস্রায়েলের উত্তরপুরুষগণ প্রভুর প্রতি সম্মান প্রদর্শন কর!
    হে ইস্রায়েলের মানুষ, প্রভুকে ভয় ও শ্রদ্ধা কর।
24 কেন? কারণ প্রভু দরিদ্র লোকদের তাদের সংকটে সাহায্য করেন।
    প্রভু তাদের জন্য লজ্জিত নন।
    যদি মানুষ তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে
    তিনি তাদের কাছ থেকে লুকিয়ে থাকেন না।

25 প্রভু, মহাসমাজে আমার প্রশংসা আপনার কাছ থেকেই আসে।
    এইসব উপাসনাকারী ভক্তদের সামনে, আমার মানত করা বলি আমি আপনাকে উৎসর্গ করবো।
26 দরিদ্র লোকরা খেয়ে তৃপ্ত হবে।
    তোমরা যারা প্রভুকে খুঁজছ, তারা তাঁর প্রশংসা কর!
    তোমাদের অন্তঃকরণ চিরজীবি হউক!
27 তোমরা, সুদূর দেশগুলির জনগণ, প্রভুকে মনে রেখো
    এবং তাঁর কাছে ফিরে এস!
যে সব মানুষ বিদেশে থাকে তারাও যেন প্রভুরই উপাসনা করে।
28     কেন? কারণ প্রভুই রাজা।
    তিনি সব জাতিকে শাসন করেন।
29 বলিষ্ঠ এবং সুদেহী লোকেরা আহারান্তে ঈশ্বরের কাছে প্রণিপাত করবে।
    বস্তুতঃ সকলে যারা মারা যাবে
এবং যারা ইতিমধ্যেই মারা গেছে
    তারা সকলেই ঈশ্বরের কাছে অবনত হবে!
30 এবং ভবিষ্যতে আমাদের উত্তরপুরুষরা প্রভুর সেবা করবে।
    লোকে চিরদিন তাঁর কথা বলবে।
31 প্রত্যেকটি প্রজন্ম তাদের শিশুদের কাছে
    ঈশ্বর যে ভাল জিনিসগুলি করেছেন সে সম্পর্কে বলবে।

ইব্রীয় 10:16-25

16 “ঐ সময়ের পর প্রভু বলেছেন, আমি তাদের সঙ্গে এই চুক্তি করব।
আমি তাদের হৃদয়ে আমার নিয়মগুলো গেঁথে দেব,
    আর তাদের মনে আমি তা লিখে দেব।”(A)

17 এরপর তিনি বলেন:

“আমি তাদের সব পাপ
    ও অধর্ম আর কখনও মনে রাখবো না।”(B)

18 তাই একবার যখন সেইসব পাপ ক্ষমা করা হল, তখন পাপের জন্য বলিদান উৎসর্গ করার আর কোন প্রয়োজন নেই।

ঈশ্বরের নিকটে এস

19 তাই আমার ভাই ও বোনেরা, মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশ করার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা আমাদের আছে। যীশুর রক্তের গুণে আমরা নির্ভীকতার সঙ্গে সেখানে প্রবেশ করতে পারি। 20 খ্রীষ্ট এই নতুন পথ একটি পর্দার মধ্য দিয়ে অর্থাৎ তাঁর দেহের মধ্য দিয়ে আমাদের জন্য খুলে দিয়েছেন। এ এক জীবন্ত পথ। এই নতুন পথে আমরা পর্দার মধ্য দিয়ে অর্থাৎ খ্রীষ্টের দেহের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের সামনে উপস্থিত হতে পারি। 21 তাই আমাদের এক মহান যাজক রয়েছেন যিনি ঈশ্বরের গৃহের ওপর কর্তৃত্ত্ব করেন। 22 আমাদের শুচি করা হয়েছে ও দোষী বিবেকের হাত থেকে মুক্ত করা হয়েছে। আমাদের দেহকে শুচিশুদ্ধ জলে ধৌত করা হয়েছে। তাই এস, আমরা শুদ্ধ হৃদয়ে বিশ্বাসের কৃত নিশ্চয়তায় ঈশ্বরের সামনে হাজির হই। 23 তাই এস, আমরা আমাদের প্রত্যাশাকে দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করে থাকি এবং অপরের কাছে তাকে জানাতে ব্যর্থ না হই। আমরা ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করতে পারি যে তিনি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা তিনি পূরণ করবেন।

পরস্পরকে বলশালী হতে সাহায্য কর

24 আমাদের উচিত একে অপরের বিষয়ে চিন্তা করা, যেন ভালবাসতে ও সৎ‌ কাজ করতে পরস্পরকে উৎসাহ দান করতে পারি। 25 আমরা যেন একত্র সমবেত হওয়ার অভ্যাস ত্যাগ না করি, যেমন কেউ কেউ সেইরকম করছে। কিন্তু এস, আমরা পরস্পরকে উৎসাহ ও চেতনা দিই। তোমরা যতই সেই দিন এগিয়ে আসতে দেখছ, ততই এ বিষয়ে আরো বেশী করে উদ্যোগী হও।

ইব্রীয় 4:14-16

ঈশ্বরের সামনে আসতে যীশু আমাদের সাহায্য করেন

14 আমাদের এক মহাযাজক আছেন যিনি স্বর্গে ঈশ্বরের সাথে বাস করতে গেছেন। তিনি যীশু, ঈশ্বরের পুত্র। তাই এসো আমরা বিশ্বাসে অবিচল থাকি। 15 আমাদের মহাযাজক যীশু আমাদের দুর্বলতার কথা জানেন। যীশু এই পৃথিবীতে সবরকমভাবে প্রলুব্ধ হয়েছিলেন। আমরা যেভাবে পরীক্ষিত হই যীশু সেইভাবেই পরীক্ষিত হয়েছিলেন, কিন্তু তিনি কখনও পাপ করেন নি। 16 সেইজন্যে বিশ্বাসে ভর করে করুণা সিংহাসনের সামনে এসো, যাতে আমাদের প্রয়োজনে আমরা দয়া ও অনুগ্রহ পেতে পারি।

ইব্রীয় 5:7-9

খ্রীষ্ট যখন এ জগতে ছিলেন তখন সাহায্যের জন্য তিনি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। ঈশ্বরই তাঁকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে সমর্থ আর যীশু ঈশ্বরের নিকট প্রবল আর্তনাদ ও অশ্রুজলের সঙ্গে প্রার্থনা করেছিলেন। ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি তাঁর নম্রতা ও বাধ্যতার জন্য ঈশ্বর যীশুর প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন। যীশু ঈশ্বরের পুত্র হওয়া সত্ত্বেও দুঃখভোগ করেছিলেন ও দুঃখভোগের মধ্য দিয়ে বাধ্যতা শিখেছিলেন। এইভাবে যীশু মহাযাজকরূপে পূর্ণতা লাভ করলেন; আর তাই তাঁর বাধ্য সকলের জন্য তিনি হলেন চিরকালের পরিত্রাণের পথ।

যোহন 18-19

যীশুকে গ্রেপ্তার

(মথি 26:47-56; মার্ক 14:43-50; লূক 22:47-53)

18 এই প্রার্থনার পর যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে কিদ্রোণ উপত্যকার ওপারে চলে গেলেন। সেখানে একটি বাগান ছিল। যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে সেই বাগানের মধ্যে ঢুকলেন।

যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে প্রায়ই সেখানে আসতেন। এইজন্য যিহূদা সেই স্থানটি জানত। এই যিহূদা যীশুর সঙ্গে প্রতারণা করেছিল। সে ফরীশীদের ও প্রধান যাজকদের কাছ থেকে একদল সৈনিক ও কিছু রক্ষী নিয়ে সেখানে এল। তাদের হাতে ছিল মশাল, লন্ঠন ও নানা অস্ত্র।

তখন যীশু, তাঁর প্রতি কি ঘটতে চলেছে সে সবই তাঁর জানা থাকার ফলে এগিয়ে গিয়ে বললেন, “তোমরা কাকে খুঁজছ?”

তারা তাঁকে বলল, “নাসরতীয় যীশুকে।”

যীশু বললেন, “আমিই তিনি।” (যে যিহূদা যীশুর বিরুদ্ধে গিয়েছিল সেও তাদেরই সঙ্গে সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল।) তিনি যখন তাদের বললেন, “আমিই তিনি।” তখন তারা পিছু হটে গিয়ে মাটিতে পড়ে গেল।

তাই আবার একবার তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, “তোমরা কাকে খুঁজছ?”

তারা বলল, “নাসরতীয় যীশুকে।”

এর উত্তরে যীশু বললেন, “আমি তো তোমাদের আগেই বলেছি, আমিই তিনি। সুতরাং যদি তোমরা আমাকেই খুঁজছ, তাহলে এদের যেতে দাও।” এটা ঘটল যাতে তাঁর আগের বক্তব্য যথার্থ প্রতিপন্ন হয়, “তুমি আমায় যাদের দিয়েছ তাদের কাউকে আমি হারাই নি।”

10 তখন শিমোন পিতরের কাছে একটা তরোয়াল থাকায় তিনি সেটা টেনে বার করে মহাযাজকের চাকরকে আঘাত করে তার ডান কান কেটে ফেললেন। (সেই চাকরের নাম মল্ক।) 11 তখন যীশু পিতরকে বললেন, “তোমার তরোয়াল খাপে ভরো, যে পানপাত্র পিতা আমায় দিয়েছেন, আমাকে তা পান করতেই হবে।”

হাননের কাছে যীশুকে আনা হল

(মথি 26:57-58; মার্ক 14:53-54; লূক 22:54)

12 এরপর সৈন্যরা ও তাদের সেনাপতি এবং ইহুদী রক্ষীরা যীশুকে গ্রেপ্তার করে বেঁধে প্রথমে হাননের কাছে নিয়ে গেল। 13 সেই বছর যিনি মহাযাজক ছিলেন সেই কায়াফার শ্বশুর এই হানন। 14 এই কায়াফা ইহুদী নেতাদের পরামর্শ দিয়েছিলেন যে জনস্বার্থে একজনের মরণ হওয়া ভালো।

পিতরের যীশুকে অস্বীকার

(মথি 26:69-70; মার্ক 14:66-68; লূক 22:55-57)

15 শিমোন পিতর ও আর একজন শিষ্য যীশুর পেছনে পেছনে গেলেন। এই শিষ্যর সঙ্গে মহাযাজকের চেনা পরিচয় ছিল, তাই তিনি যীশুর সঙ্গে মহাযাজকের বাড়ির উঠোনে ঢুকলেন; কিন্তু পিতর ফটকের বাইরে দাঁড়িয়ে রইলেন। 16 তখন মহাযাজকের পরিচিত শিষ্য বাইরে এসে যে বালিকাটি ফটক পাহারায় ছিল তাকে বলে পিতরকে ভেতরে নিয়ে গেলেন। 17 তখন দ্বাররক্ষীরা পিতরকে বলল, “তুমিও সেই লোকটার শিষ্যদের মধ্যে একজন নও কি?”

পিতর বললেন, “না, আমি নই!”

18 চাকররা ও মন্দিরের রক্ষীরা শীতের জন্য কাঠ কয়লার আগুন তৈরী করে তার চারপাশে দাঁড়িয়ে আগুন পোয়াচ্ছিল। পিতরও তাদের সঙ্গে সেখানে দাঁড়িয়ে আগুন পোয়াচ্ছিলেন।

যীশুকে মহাযাজকের প্রশ্ন

(মথি 26:59-66; মার্ক 14:55-64; লূক 22:66-71)

19 এরপর মহাযাজক যীশুকে তাঁর শিষ্যদের বিষয়ে ও তাঁর শিক্ষার বিষয়ে প্রশ্ন করতে লাগলেন। 20 যীশু এর উত্তরে তাঁকে বললেন, “আমি সর্বদাই সকলের কাছে প্রকাশ্যে কথা বলেছি। আমি মন্দিরের মধ্যে ও সমাজ-গৃহে যেখানে ইহুদীরা একসঙ্গে সমবেত হয় সেখানে সব সময় শিক্ষা দিয়েছি। আর আমি কখনও কোন কিছু গোপনে বলিনি। 21 তোমরা আমায় কেন সে বিষয়ে প্রশ্ন করছ? যাঁরা আমার কথা শুনেছে তাদেরই জিজ্ঞেস কর আমি তাদের কি বলেছি। আমি কি বলেছি তারা নিশ্চয়ই জানবে!”

22 তিনি যখন একথা বলছেন, তখন সেই মন্দির রক্ষীবাহিনীর একজন যে সেখানে দাঁড়িয়েছিল সে যীশুকে এক চড় মেরে বলল, “তোর কি সাহস, তুই মহাযাজককে এরকম জবাব দিলি!”

23 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, “আমি যদি অন্যায় কিছু বলে থাকি, তবে সকলকে বল কি অন্যায় বলেছি; কিন্তু আমি যদি সত্যি কথা বলে থাকি তাহলে তোমরা আমায় মারছ কেন?”

24 এরপর হানন যীশুকে মহাযাজক কায়াফার কাছে পাঠিয়ে দিলেন। যীশু তখনও বাঁধা অবস্থায় ছিলেন।

পিতর আবার মিথ্যা বললেন

(মথি 26:71-75; মার্ক 14:69-72; লূক 22:58-62)

25 এদিকে শিমোন পিতর সেখানে দাঁড়িয়ে আগুন পোয়াচ্ছিলেন, লোকেরা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, “তুমিও কি ওঁর শিষ্যদের মধ্যে একজন?”

কিন্তু তিনি একথা অস্বীকার করে বললেন, “না, আমি নই।”

26 মহাযাজকের একজন চাকর, পিতর যার কান কেটে ফেলেছিলেন তার এক আত্মীয় বলল, “আমি ওর সঙ্গে তোমাকে সেই বাগানের মধ্যে দেখেছি, ঠিক বলেছি না?”

27 তখন পিতর আবার একবার অস্বীকার করলেন; আর তখনই মোরগ ডেকে উঠল।

যীশুকে পীলাতের কাছে আনা হল

(মথি 27:1-2, 11-31; মার্ক 15:1-20; লূক 23:1-25)

28 এরপর তারা যীশুকে কায়াফার বাড়ি থেকে রাজ্যপালের প্রাসাদে নিয়ে গেল। তখন ভোর হয়ে গিয়েছিল। তারা নিজেরা রাজ্যপালের প্রাসাদের ভেতরে যেতে চাইল না, পাছে অশুচি[a] হয়ে পড়ে, কারণ তারা নিস্তারপর্বের ভোজ খেতে চাইছিল। 29 তারপর রাজ্যপাল পীলাত তাদের সামনে বেরিয়ে এসে বললেন, “তোমরা এই লোকটার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ এনেছ?”

30 এর উত্তরে তারা পীলাতকে বলল, “এই লোক যদি দোষী না হত, তাহলে আমরা তোমার হাতে একে তুলে দিতাম না।”

31 তখন পীলাত তাদের বললেন, “একে নিয়ে যাও এবং তোমাদের বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে এর বিচার কর।”

ইহুদীরা তাকে বলল, “আমরা কাউকে মৃত্যুদণ্ড দিতে পারি না।” 32 (কিভাবে তাঁর মৃত্যু হবে সে বিষয়ে যীশু যা ইঙ্গিত করেছিলেন তা পূরণ করতেই এই ঘটনাগুলি ঘটল।)

33 তখন পীলাত আবার প্রাসাদের মধ্যে গিয়ে যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কি ইহুদীদের রাজা?”

34 যীশু বললেন, “তুমি কি নিজে থেকে একথা বলছ, অথবা অন্য কেউ আমার বিষয়ে তোমাকে বলেছে?”

35 পীলাত বললেন, “আমি কি ইহুদী? তোমার নিজের লোকেরা ও প্রধান যাজকরা তোমাকে আমার হাতে সঁপে দিয়েছে। তুমি কি করেছ?”

36 যীশু বললেন, “আমার রাজ্য এই জগতের নয়। যদি আমার রাজ্য এই জগতের হত তাহলে আমার লোকেরা ইহুদীদের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করার জন্য লড়াই করত; কিন্তু না, আমার রাজ্য এখানকার নয়।”

37 তখন পীলাত তাঁকে বললেন, “তাহলে তুমি একজন রাজা?”

যীশু এর উত্তরে বললেন, “আপনি বলছেন যে আমি রাজা। আমি এই জন্যই জন্মেছিলাম, আর এই উদ্দেশ্যেই আমি জগতে এসেছি, যেন সত্যের পক্ষে সাক্ষ্য দিই। যে কেউ সত্যের পক্ষে আছে, সে আমার কথা শোনে।”

38 পীলাত তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, “সত্য কি?” এই কথা জিজ্ঞেস করে তিনি পুনরায় ইহুদীদের কাছে গেলেন, আর তাদের বললেন, “আমি তো এই লোকটির মধ্যে কোন দোষ দেখতে পাচ্ছি না। 39 কিন্তু তোমাদের এমন এক রীতি আছে, সেই অনুসারে নিস্তারপর্বের সময়ে একজন বন্দীকে মুক্তি দিয়ে থাকি। বেশ তোমাদের কি ইচ্ছা, আমি তোমাদের জন্য ‘ইহুদীদের রাজাকে’ ছেড়ে দেব?”

40 তারা আবার চিৎকার করে বলল, “একে নয়! বারাব্বাকে!” (এই বারাব্বা ছিল একজন বিদ্রোহী।)

19 তখন পীলাত আদেশ দিলেন যে যীশুকে চাবুক মারার জন্য নিয়ে যাওয়া হোক্। সেনারা কাঁটালতা দিয়ে একটা মুকুট তৈরী করে সেটা যীশুর মাথায় পরিয়ে দিল। তারা যীশুকে বেগুনে রঙের পোশাক পরাল, এরপর তাঁর কাছে এগিয়ে এসে বলতে লাগল, “ইহুদীদের রাজা দীর্ঘজীবি হোক্!” এই বলে তারা তাঁর গালে চড় মারতে লাগল।

পীলাত আর একবার বাইরে বেরিয়ে এসে তাদের বললেন, “শোন, আমি যীশুকে তোমাদের সামনে নিয়ে আসছি। আমি চাই যে, তোমরা বুঝবে আমি এর কোনই দোষ খুঁজে পাচ্ছি না।” এরপর যীশু বাইরে এলেন, তখন তাঁর মাথায় কাঁটার মুকুট ও পরণে বেগুনে পোশাক ছিল। পীলাত তাদের বললেন, “এই দেখ, সেই মানুষ!”

প্রধান যাজকরা ও মন্দিরের রক্ষীরা যীশুকে দেখে চিৎকার করে বলল, “ওকে ক্রুশে দাও, ক্রুশে দিয়ে ওকে মেরে ফেল!”

পীলাত তাদের বললেন, “তোমরা নিজেরাই একে নিয়ে গিয়ে ক্রুশে দাও, কারণ আমি এর কোন দোষ দেখতে পাচ্ছি না।”

ইহুদীরা তাঁকে বলল, “আমাদের যে বিধি-ব্যবস্থা আছে, সেই ব্যবস্থানুসারে ওর প্রাণদণ্ড হওয়া উচিত, কারণ ও নিজেকে ঈশ্বরের পুত্র বলে দাবী করে।”

এই কথা শুনে পীলাত ভীষণ ভয় পেয়ে গেলেন। তিনি আবার প্রাসাদের মধ্যে গেলেন। পীলাত যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কোথা থেকে এসেছ?” কিন্তু যীশু এর কোন উত্তর দিলেন না। 10 তখন পীলাত যীশুকে বললেন, “তুমি কি আমার সঙ্গে কথা বলতে চাও না? তুমি কি জান না যে তোমাকে মুক্তি দেওয়ার বা ক্রুশে বিদ্ধ করে মারবার ক্ষমতা আমার আছে?”

11 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, “ঈশ্বর না দিলে আমার ওপর আপনার কোন ক্ষমতা থাকত না। তাই যে লোক আমাকে আপনার হাতে তুলে দিয়েছে সে আরও বড় পাপে পাপী।”

12 একথা শুনে পীলাত তাঁকে ছেড়ে দেবার জন্য চেষ্টা করলেন, কিন্তু ইহুদীরা চিৎকার করল, “যদি তুমি ওকে ছেড়ে দাও, তাহলে তুমি কৈসরের বন্ধু নও। যে কেউ নিজেকে রাজা বলবে, বুঝতে হবে সে কৈসরের বিরোধিতা করছে।”

13 এই কথা শোনার পর পীলাত যীশুকে আবার বাইরে নিয়ে এলেন ও বিচারালয়ে বসলেন। এই বিচারাসন ছিল “পাথরে বাঁধানো” নামে জায়গাতে। (ইহুদীদের ভাষায় একে “গব্বথা” বলে।) 14 সেই দিনটা ছিল নিস্তারপর্ব আয়োজনের দিন।[b] তখন প্রায় বেলা বারোটা, পীলাত ইহুদীদের বললেন, “এই দেখ, তোমাদের রাজা।”

15 তখন তারা চিৎকার করতে লাগল, “ওকে দূর কর! দূর কর! ওকে ক্রুশে দিয়ে মার!”

পীলাত তাদের বললেন, “আমি কি তোমাদের রাজাকে ক্রুশে দেব?”

প্রধান যাজকরা জবাব দিলেন, “কৈসর ছাড়া আমাদের আর কোন রাজা নেই।”

16 তখন পীলাত যীশুকে ক্রুশে বিদ্ধ করে মারবার জন্য তাদের হাতে তুলে দিলেন।

যীশুর ক্রুশারোহণ

(মথি 27:32-44; মার্ক 15:21-32; লূক 23:26-39)

শেষ পর্যন্ত তারা যীশুকে হাতে পেল। 17 যীশু তাঁর নিজের ক্রুশ বইতে বইতে “মাথার খুলি” নামে এক জায়গায় গেলেন। (ইহুদীদের ভাষায় যাকে বলা হোত “গলগথা।”) 18 সেখানে তারা যীশুকে ক্রুশে বিদ্ধ করল। তাঁর সঙ্গে তাঁর দুপাশে আরও দুজনকে ক্রুশে দিল, যীশু ছিলেন তাদের মাঝখানে।

19 পীলাত যীশুর মাথার দিকে ক্রুশের ওপর একটি ফলক টাঙ্গিয়ে দিলেন। সেই ফলকে লেখা ছিল, “নাসরতীয় যীশু, ইহুদীদের রাজা।” 20 তখন অনেক ইহুদী সেই ফলকটি পড়ল, কারণ যীশুকে যেখানে ক্রুশে দেওয়া হয়েছিল তা নগরের কাছেই ছিল, আর সেই ফলকের লেখাটি ইহুদীদের ভাষা, গ্রীক ও রোমীয় ভাষায় ছিল।

21 ইহুদীদের প্রধান যাজকরা পীলাতকে বললেন, “‘ইহুদীদের রাজা’ লিখো না, তার পরিবর্তে লেখো, ‘এই লোক বলেছিল, আমি ইহুদীদের রাজা।’”

22 পীলাত বললেন, “আমি যা লিখেছি তা লিখেছি।”

23 যীশুকে ক্রুশে দিয়ে সেনারা যীশুর সমস্ত পোশাক নিয়ে চারভাগে ভাগ করে প্রত্যেকে এক এক ভাগ নিল। আর তাঁর উপরের লম্বা পোশাকটিও নিল, এটিতে কোন সেলাই ছিল না, ওপর থেকে নীচে পর্যন্ত সমস্তটাই বোনা। 24 তাই তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, “এটাকে আর ছিঁড়ব না। আমরা বরং ঘুঁটি চেলে দেখি কে ওটা পায়।” শাস্ত্রের এই বাণী এইভাবে ফলে গেল:

“তারা নিজেদের মধ্যে আমার পোশাক ভাগ করে নিল,
    আর আমার পোশাকের জন্য ঘুঁটি চালল।”(A)

সৈনিকরা তাই করল।

25 যীশুর ক্রুশের কাছে তাঁর মা, মাসীমা ক্লোপার স্ত্রী মরিয়ম ও মরিয়ম মগ্দলিনী দাঁড়িয়েছিলেন। 26 যীশু তাঁর মাকে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন আর যে শিষ্যকে তিনি ভালোবাসতেন, দেখলেন তিনিও সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন। তখন তিনি তাঁর মাকে বললেন, “হে নারী, ঐ দেখ তোমার ছেলে।” 27 পরে তিনি তাঁর সেই শিষ্যকে বললেন, “ঐ দেখ, তোমার মা।” আর তখন থেকে তাঁর মাকে সেই শিষ্য নিজের বাড়িতে রাখার জন্য নিয়ে গেলেন।

যীশুর মৃত্যু

(মথি 27:45-56; মার্ক 15:33-41; লূক 23:44-49)

28 এরপর যীশু বুঝলেন যে সবকিছু এখন সম্পন্ন হয়েছে। শাস্ত্রের সকল বাণী যেন সফল হয় তাই তিনি বললেন, “আমার পিপাসা পেয়েছে।”[c] 29 সেখানে একটা পাত্রে সিরকা ছিল, তাই সৈন্যরা একটা স্পঞ্জ সেই সিরকায় ডুবিয়ে এসোব নলে করে তা যীশুর মুখের কাছে ধরল। 30 যীশু সেই সিরকার স্বাদ নেবার পর বললেন, “সমাপ্ত হল!” এরপর তিনি মাথা নীচু করে প্রাণ ত্যাগ করলেন।

31 ঐ দিনটা ছিল আয়োজনের দিন। যেহেতু বিশ্রামবার একটি বিশেষ দিন, ইহুদীরা চাইছিল না যে দেহগুলি ক্রুশের ওপরে থাকে। তাই ইহুদীরা পীলাতের কাছে গিয়ে তাঁকে আদেশ দিতে অনুরোধ করল, যেন ক্রুশবিদ্ধ লোকদের পা ভেঙ্গে দেওয়া হয় যাতে তাড়াতাড়ি তাদের মৃত্যু হয় এবং মৃতদেহগুলি ঐ দিনই ক্রুশ থেকে নামিয়ে ফেলা যায়। 32 সুতরাং সেনারা এসে প্রথম লোকটির পা ভাঙ্গল, আর তার সঙ্গে যাকে ক্রুশে দেওয়া হয়েছিল তারও পা ভাঙ্গল। 33 কিন্তু তারা যীশুর কাছে এসে দেখল যে তিনি মারা গেছেন, তখন তাঁর পা ভাঙ্গল না।

34 কিন্তু একজন সৈনিক যীশুর পাঁজরের নীচে বর্শা দিয়ে বিদ্ধ করল, আর সঙ্গে সঙ্গে সেখান দিয়ে রক্ত ও জল বেরিয়ে এল। 35 এই ঘটনা যে দেখল সে এবিষয়ে সাক্ষ্য দিল তা আপনারা সকলেই বিশ্বাস করতে পারেন, আর তার সাক্ষ্য সত্য। আর সে জানে যে সে যা বলছে তা সত্য। 36 এই সকল ঘটনা ঘটল যাতে শাস্ত্রের এই কথা পূর্ণ হয়: “তাঁর একটি অস্থিও ভাঙ্গবে না।”(B) 37 আবার শাস্ত্রে আর এক জায়গায় আছে, “তারা যাঁকে বিদ্ধ করেছে তাঁরই দিকে দৃষ্টিপাত করবে।”(C)

যীশুর সমাধি

(মথি 27:57-61; মার্ক 15:42-47; লূক 23:50-56)

38 এরপর অরিমাথিয়ার যোষেফ, যিনি যীশুর শিষ্য ছিলেন, কিন্তু ইহুদীদের ভয়ে তা গোপনে রাখতেন, তিনি যীশুর দেহটি নিয়ে যাবার জন্য পীলাতের কাছে অনুমতি চাইলেন। পীলাত তাঁকে অনুমতি দিলে তিনি এসে যীশুর দেহটি নামিয়ে নিয়ে গেলেন।

39 নীকদীমও এসেছিলেন (যোষেফের সঙ্গে)। এই সেই ব্যক্তি যিনি যীশুর কাছে আগে একরাতের অন্ধকারে দেখা করতে এসেছিলেন। নীকদীম আনুমানিক ত্রিশ কিলোগ্রাম গন্ধ-নির্যাস মেশানো অগুরুর প্রলেপ নিয়ে এলেন। 40 এরপর ইহুদীদের কবর দেওয়ার রীতি অনুসারে যীশুর দেহে সেই প্রলেপ মাখিয়ে তাঁরা তা মসীনার কাপড় দিয়ে জড়ালেন। 41 যীশু সেখানে ক্রুশ বিদ্ধ হয়েছিলেন, তার কাছে একটি বাগান ছিল, সেই বাগানে একটি নতুন কবর ছিল সেখানে আগে কাউকে কখনও কবর দেওয়া হয় নি। 42 এই কবরটি নিকটেই ছিল, যীশুর দেহ তাঁরা সেই কবরেব মধ্যে রাখলেন, কারণ ইহুদীদের বিশ্রামের দিনটি শুরু হতে চলেছিল।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International