Revised Common Lectionary (Semicontinuous)
দশটি আজ্ঞা
20 তখন ঈশ্বর এইসব কথা বললেন:
2 “আমিই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর। আমিই তোমাদের মিশরের দাসত্ব থেকে মুক্ত করেছি। তাই তোমরা এই নির্দেশগুলি মানবে:
3 “আমাকে ছাড়া তোমরা আর কোনও দেবতাকে উপাসনা করবে না।
4 “তোমরা অবশ্যই অন্য কোন মূর্তি গড়বে না যেগুলো আকাশের, ভূমির অথবা জলের নীচের কোন প্রাণীর মত দেখতে।
7 “তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের নাম ভুল ভাবে ব্যবহার করবে না। যদি কেউ তা করে তাহলে সে দোষী এবং প্রভু তাকে নির্দোষ সাব্যস্ত করবেন না।
8 “বিশ্রামের দিনটিকে বিশেষ দিন হিসাবে মনে রাখবে। 9 সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করো।
12 “তুমি অবশ্যই তোমার পিতামাতাকে সম্মান করবে, তাহলে তোমরা তোমাদের দেশে দীর্ঘ জীবনযাপন করবে। যেটা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের দিচ্ছেন।
13 “কাউকে হত্যা কোরো না।
14 “ব্যাভিচার কোরো না।
15 “চুরি কোরো না।
16 “অন্যদের সম্বন্ধে মিথ্যা বোলো না।
17 “তোমাদের প্রতিবেশীর ঘরবাড়ীর প্রতি লোভ কোরো না। তার স্ত্রীকে ভোগ করতে চেয়ো না। এবং তার দাস-দাসী, গবাদি পশু অথবা গাধাদের আত্মসাৎ করতে চেয়ো না। অন্যদের কোন কিছুর প্রতি লোভ কোরো না।”
লোকরা ঈশ্বরকে ভয় পেল
18 ঐ সময়ে, লোকজন বজ্র নির্ঘোষ শুনতে পেল এবং বিদ্যুৎ দেখতে পেল। তারা শিঙার শব্দ শুনতে পেল এবং দেখল ধোঁয়া ওপর দিকে উঠছে। এই দেখে লোকরা ভয়ে কুঁকড়ে গেল। পর্বত থেকে দূরে দাঁড়িয়ে তারা এই ঘটনা দেখতে লাগল। 19 তখন লোকরা মোশিকে বলল, “তুমি যদি আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চাও তাহলে তা আমরা শুনব। কিন্তু ঈশ্বর যেন আমাদের সঙ্গে কথা না বলেন। তিনি কথা বললে আমরা ভয়ে মারা যাব।”
20 তখন মোশি তাদের বলল, “ভয় পেও না। প্রভু তোমাদের পরীক্ষা করতে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি চান তোমরা তাঁকে সম্মান কর, যাতে তোমরা পাপ কাজ না কর।”
পরিচালকের প্রতি: দায়ূদের একটি গীত।
19 আকাশমণ্ডল ঈশ্বরের মহিমা বর্ণনা করে।
বিতান তাঁর হাতের তৈরী শ্রেষ্ঠ সৃষ্টির কথা ঘোষণা করে।
2 প্রতিটি নতুন দিন, ঈশ্বরের মহত্ত্বের কথা বলে।
প্রতিটি রাত্রি ঘোরতরভাবে ঈশ্বরের জ্ঞান প্রকাশ করে।
3 প্রকৃতপক্ষে তুমি কোন কথা বা শব্দ শুনতে পাবে না।
আমাদের কানে শোনার মত কোন শব্দ তারা সৃষ্টি করে না।
4 কিন্তু তাদের রব সারা পৃথিবী পরিব্যপ্ত করে রাখে।
তাদের শব্দসকল পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত পৌঁছায়।
সূর্যের কাছে আকাশ একটি বাড়ির মত।
5 সকালের সূর্য বাসরঘর থেকে পরিতৃপ্ত বরের মত বেরিয়ে আসে।
সূর্য হচ্ছে একজন দৌড়বাজের মত।
আকাশের এপার থেকে ওপার পর্যন্ত তার দৌড়ের প্রতিযোগিতায় দৌড়বার জন্য উদগ্রীব।
6 সূর্য আকাশের এক দিক থেকে দৌড় শুরু করে
এবং সারা রাস্তা দৌড়ে দৌড়ে আকাশের অন্য প্রান্তে গিয়ে দৌড় শেষ করে।
তার তাপ থেকে কিছুই লুকিয়ে থাকতে পারে না।
প্রভুর শিক্ষাগুলিও ঠিক এই রকম।
7 প্রভুর শিক্ষামালা হচ্ছে নিখুঁত।
সেগুলি ঈশ্বরের লোকদের শক্তি দেয়।
প্রভুর সাক্ষ্য বিশ্বাসযোগ্য।
তা অজ্ঞ মানুষকে জ্ঞানী হতে সাহায্য করে।
8 প্রভুর সকল বিধি যথাযথ।
সেগুলি মানুষকে সুখী করে।
প্রভুর আজ্ঞাগুলিও উত্তম।
সেগুলি মানুষকে বাঁচার যথার্থ পথ দেখায়।
9 প্রভুর উপাসনা সেই আলোর মত,
যার দীপ্তি চিরদিন ভাস্বর।
প্রভুর সিদ্ধান্তগুলি ভাল এবং ন্যায়সঙ্গত।
10 প্রভুর শিক্ষামালা সব থেকে খাঁটি সোনার চেয়েও মূল্যবান।
তা শ্রেষ্ঠ মধু, যা মৌচাক থেকে সরাসরি পাওয়া যায় তার থেকেও মিষ্টি।
11 প্রভুর শিক্ষামালা তাঁর দাসকে সতর্ক করে।
সেগুলি পালন করলে মহাফল হয়।
12 প্রভু, কোন ব্যক্তিই তার নিজের সব দোষ দেখতে পায় না।
তাই হে প্রভু, গোপনে পাপ করা থেকে আমায় বিরত করুন।
13 আমার যে সব পাপ করতে ইচ্ছা হয়, সেগুলো আমায় করতে দেবেন না।
ঐ পাপগুলিকে আমার ওপর প্রভুত্ব করতে দেবেন না।
আপনি যদি আমায় সাহায্য করেন, তবে আমি পাপমুক্ত ও শুচি থাকবো।
14 আমার বাক্য এবং চিন্তাসমূহ আপনাকে প্রসন্ন করুক।
হে প্রভু, আপনিই আমার শিলা। আপনিই সেই জন যিনি আমার রক্ষা করেন।
4 যদিও আমি নিজের ওপর আস্থা রাখতে পারতাম, তবুও আমি তা করি না। যদি কোন লোকের মনে হয় যে সে নিজের ওপর আস্থা রাখতে পারে তবে তার জানা ভাল যে নিজের ওপর আস্থা রাখার জন্য আরো বড় কারণ আমার আছে। 5 জন্মের পর যখন আমার বয়স আট দিন তখন আমার সুন্নত হয়েছে; আমি ইস্রায়েলীয়, বিন্যামীন গোষ্ঠীর লোক। আমি একজন ইব্রীয়, আমার বাবা-মা ইব্রীয়। মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালনে গোঁড়া হওয়ায় আমি ফরীশী হয়েছিলাম। 6 আমার নিজের ইহুদী ধর্মের বিষয়ে আমি এতই উৎসাহী ছিলাম যে আমি খ্রীষ্ট মণ্ডলীর প্রতি নির্যাতন করতাম। আমি এমন নিখুঁতভাবে মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালন করতাম যে তার মধ্যে কোন ত্রুটি ছিল না।
7 এক সময়ে ঐসব বিষয় আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল; কিন্তু আমি খ্রীষ্টকে পেয়েছি, তাই ঐসব বিষয়ের মূল্য আর আমার কাছে রইল না। 8 কেবল ঐসব বিষয় নয়, বরং সমস্ত কিছুই আমার প্রভু যীশু খ্রীষ্টের জ্ঞানের শ্রেষ্ঠতার কাছে নিতান্তই নগন্য বলে মনে করলাম। তাঁর জন্য আমি সবই বর্জন করেছি। এখন আমি ঐ সবকিছু আবর্জনার মতোই মনে করি, আর খ্রীষ্টকে আরো বেশী করে পেতে এ আমায় সাহায্য করে, 9 এবং তাঁর সঙ্গে সংযুক্ত রাখে। খ্রীষ্টেতে আমি ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছি। এই ধার্মিক প্রতিপন্ন হওয়া আমার বিধি-ব্যবস্থা পালনের মধ্য দিয়ে আসে নি। ঈশ্বরের কাছ থেকে দানরূপে এ আমি পেয়েছি। খ্রীষ্টে আমার সে বিশ্বাস আছে, এই বিশ্বাসের মাধ্যমে ঈশ্বর আমাকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন। 10 আমি চাই খ্রীষ্টকে ও মৃতদের মধ্য থেকে তাঁর পুনরুত্থানের শক্তিকে জানতে। আমি খ্রীষ্টের দুঃখভোগের সহভাগীতা লাভ করতে চাই। এইভাবে যেন তাঁর মৃত্যুতে তাঁর সমরূপ হই। 11 আমি যদি এসবের সহভাগী হই, তবে আমি প্রত্যাশা করতে পারি যে আমিও মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হতে পারব।
লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা কর
12 একথা বলছি না যে আমি লক্ষ্যে পৌঁছে গেছি বা পূর্ণতা পেয়েছি। আমি সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে চেষ্টা করছি এবং যে উদ্দেশ্যে খ্রীষ্ট আমাকে ধরেছিলেন তাঁর সেই উদ্দেশ্য পর্যন্ত আমি পৌঁছতে চাই। 13 ভাই ও বোনেরা, আমি জানি যে আমি সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি নি। 14 কিন্তু একটি বিষয়ে আমি চেষ্টা করে চলেছি; অতীতের সবকিছু ভুলে সামনের লক্ষ্যে পৌঁছতে প্রাণপণ চেষ্টা করছি যাতে পুরস্কার লাভ করি। উর্ধস্থ জীবনের জন্য খ্রীষ্ট যীশুতে ঈশ্বরের আহ্বানস্বরূপ এই পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি আমাকে দেওয়া হয়েছে।
ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে পাঠালেন
(মার্ক 12:1-12; লূক 20:9-19)
33 “আর একটি দৃষ্টান্ত শোন! এক জমিদার একটি দ্রাক্ষা ক্ষেত তৈরী করে তার চারদিকে বেড়া দিলেন। পরে সেই ক্ষেতের মধ্যে দ্রাক্ষা মাড়াবার জন্য গর্ত খুঁড়লেন। পাহারা দেবার জন্য একটা উঁচু পাহারা ঘর তৈরী করলেন। পরে কয়েকজন চাষীর কাছে সেই দ্রাক্ষা ক্ষেত ইজারা দিয়ে বিদেশে চলে গেলেন। 34 যখন দ্রাক্ষা তোলার সময় হল, তখন তিনি তাঁর ভাগ নিয়ে আসবার জন্য তাঁর ক্রীতদাসদের সেই চাষীদের কাছে পাঠালেন।
35 “কিন্তু চাষীরা তাঁর দাসদের একজনকে মারল, একজনকে খুন করল আর তৃতীয়জনকে পাথর ছুঁড়ে খুন করল। 36 এরপর তিনি প্রথম বারের চেয়ে আরো বেশী দাস সেখানে পাঠালেন, আর সেই চাষীরা ঐ দাসদের সঙ্গে একই রকম ব্যবহার করল। 37 পরে তিনি তাঁর নিজের ছেলেকে তাদের কাছে পাঠালেন; তিনি ভাবলেন, ‘ওরা নিশ্চয়ই ওঁর ছেলেকে মান্য করবে।’
38 “কিন্তু চাষীরা যখন দেখল যে মালিকের ছেলে আসছে, তখন তারা নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে বলল, ‘দেখ, এই হচ্ছে আইনসম্মত উত্তরাধিকারী, এস, একে আমরা খুন করি, তাহলে আমরাই তার সম্পত্তির মালিক হয়ে যাব।’ 39 তখন তারা সেই ছেলেকে ধরে দ্রাক্ষা ক্ষেতের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিল ও তাকে হত্যা করল।
40 “এক্ষেত্রে দ্রাক্ষা ক্ষেতের মালিক যখন ফিরে আসবেন, তখন ঐ চাষীদের তিনি কি করবেন, তোমরা কি বল?”
41 ইহুদী যাজকরা যীশুকে বললেন, “তারা দুষ্ট লোক বলে তিনি তাদের নির্মমভাবে ধ্বংস করবেন ও সেই দ্রাক্ষা ক্ষেত অন্য চাষীদের হাতে দেবেন, যারা ফলের মরশুমে তাঁকে তাঁর প্রাপ্য অংশ দেবে।”
42 তখন যীশু তাদের বললেন, “তোমরা কি শাস্ত্রের এই অংশ পড় নি:
‘রাজমিস্ত্রিরা যে পাথরটা বাতিল করে দিয়েছিল,
সেই পাথরটাই হয়ে উঠেছে কোণের প্রধান পাথর।
এটা প্রভুরই কাজ,
এটা আমাদের চোখে আশ্চর্য লাগে।’(A)
43 “অতএব, আমি তোমাদের বলছি, ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হবে, আর এমন লোকদের দেওয়া হবে, যারা ঈশ্বরের রাজ্যের পক্ষে উপযুক্ত ব্যবহার করবে। 44 আর ঐ যে পাথর তার ওপরে যে পড়বে সে ভেঙে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে, আর সেই পাথর যার ওপরে পড়বে তাকে গুঁড়িয়ে ধূলিসাৎ করবে।”[a]
45 প্রধান যাজকরা ও ফরীশীরা যীশুর দেওয়া এই দৃষ্টান্তগুলি শুনে বুঝতে পারলেন যীশু তাঁদেরই বিষয়ে এই কথাগুলি বললেন। 46 তাই তাঁরা যীশুকে গ্রেপ্তার করাতে চাইলেন, কিন্তু জনসাধারণের ভয়ে তা করলেন না, কারণ সাধারণ লোকে তাঁকে ভাববাদী বলে মনে করত।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International