Revised Common Lectionary (Semicontinuous)
পরিচালকের প্রতি: কোরহ পরিবারের একটি গীত। অলামোতের দ্বারা একটি গীত।
46 ঈশ্বর আমাদের আশ্রয় এবং আমাদের শক্তির উৎস।
সমস্যার সময় তাঁর মধ্যেই আমরা সব সাহায্য খুঁজে পাবো।
2 তাই যখন ভূমিকম্প হয়, যখন পর্বত ভেঙে সমুদ্রে পড়ে যায়
তখন আমরা ভয় পাই না।
3 যখন সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠে আর গর্জন করে
এবং পর্বত যখন কেঁপে ওঠে, তখন আমরা ভয় পাই না।
4 একটি নদী আছে যার স্রোত ঈশ্বরের শহরে
পরাৎপরের পবিত্র শহরে আনন্দ বয়ে আনে।
5 সেই শহরে ঈশ্বর আছেন, তাই কোনদিন তা ধ্বংস হবে না।
সূর্যোদয়ের আগেই ঈশ্বর সেখানে সাহায্যের জন্য উপস্থিত থাকবেন।
6 যখন প্রভু গর্জন করবেন, পৃথিবী ভেঙে পড়বে,
জাতিগুলি ভয়ে কাঁপবে এবং রাজত্বগুলি ভেঙে পড়বে।
7 সর্বশক্তিমান প্রভু আমাদের সঙ্গে আছেন।
যাকোবের ঈশ্বরই আমাদের নিরাপদ স্থান।
8 প্রভু যে সব ক্ষমতা সম্পন্ন কাজ করেন তা দেখ।
পৃথিবীতে তিনি যে সব বিস্ময়কর জিনিসগুলি করেছেন সেগুলো দেখ।
9 প্রভু এই পৃথিবীর যে কোন জায়গার যুদ্ধ থামিয়ে দিতে পারেন।
তিনি একজন সৈনিকের ধনু ভেঙে দিতে পারেন।
তিনি তাদের বল্লম চূর্ণবিচূর্ণ করে দিতে পারেন
এবং তিনি তাদের রথও পুড়িয়ে দিতে পারেন।
10 ঈশ্বর বলেন, “লড়াই বন্ধ কর এবং আমিই যে ঈশ্বর এই শিক্ষা গ্রহণ কর!
আমিই সেই জন, যে জাতিগণকে পরাজিত করি!
আমিই পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করি!”
11 সর্বশক্তিমান প্রভু আমাদের সঙ্গে আছেন।
যাকোবের ঈশ্বরই আমাদের নিরাপদ স্থান।
জগৎ সৃষ্টির শুরু
1 শুরুতে, ঈশ্বর আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করলেন। প্রথমে পৃথিবী একেবারে শূন্য ছিল; পৃথিবীতে কিছুই ছিল না। 2 অন্ধকারে আবৃত ছিল জলরাশি আর ঈশ্বরের আত্মা সেই জলরাশির উপর দিয়ে ভেসে বেড়াচ্ছিল।
প্রথম দিন—আলো
3 তারপর ঈশ্বর বললেন, “আলো ফুটুক!” তখনই আলো ফুটতে শুরু করল। 4 আলো দেখে ঈশ্বর বুঝলেন, আলো ভাল। তখন ঈশ্বর অন্ধকার থেকে আলোকে পৃথক করলেন। 5 ঈশ্বর আলোর নাম দিলেন, “দিন” এবং অন্ধকারের নাম দিলেন “রাত্রি।”
সন্ধ্যা হল এবং সেখানে সকাল হল। এই হল প্রথম দিন।
দ্বিতীয় দিন—আকাশ
6 তারপর ঈশ্বর বললেন, “জলকে দুভাগ করবার জন্য আকাশমণ্ডলের ব্যবস্থা হোক্।” 7 তাই ঈশ্বর আকাশমণ্ডলের সৃষ্টি করে জলকে পৃথক করলেন। এক ভাগ জল আকাশমণ্ডলের উপরে আর অন্য ভাগ জল আকাশমণ্ডলের নীচে থাকল। 8 ঈশ্বর আকাশমণ্ডলের নাম দিলেন “আকাশ।” সন্ধ্যা হল আর তারপর সকাল হল। এটা হল দ্বিতীয় দিন।
তৃতীয় দিন—শুকনো জমি ও গাছপালা
9 তারপর ঈশ্বর বললেন, “আকাশের নীচের জল এক জায়গায় জমা হোক্ যাতে শুকনো ডাঙা দেখা যায়।” এবং তা-ই হল। 10 ঈশ্বর শুকনো জমির নাম দিলেন, “পৃথিবী” এবং এক জায়গায় জমা জলের নাম দিলেন, “মহাসাগর।” ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটা ভাল হয়েছে।
11 তখন ঈশ্বর বললেন, “পৃথিবীতে ঘাস হোক্, শস্যদায়ী গাছ ও ফলের গাছপালা হোক্। ফলের গাছগুলিতে ফল আর ফলের ভেতরে বীজ হোক্। প্রত্যেক উদ্ভিদ আপন আপন জাতের বীজ সৃষ্টি করুক। এইসব গাছপালা পৃথিবীতে বেড়ে উঠুক।” আর তাই-ই হল। 12 পৃথিবীতে ঘাস আর শস্যদায়ী উদ্ভিদ উৎপন্ন হল। আবার ফলদায়ী গাছপালাও হল, ফলের ভেতরে বীজ হল। প্রত্যেক উদ্ভিদ আপন আপন জাতের বীজ সৃষ্টি করল এবং ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটা ভাল হয়েছে।
13 সন্ধ্যা হল এবং সকাল হল। এভাবে হল তৃতীয় দিন।
চতুর্থ দিন—সূর্য্য, চাঁদ ও তারা
14 তারপর ঈশ্বর বললেন, “আকাশে আলো ফুটুক। এই আলো দিন থেকে রাত্রিকে পৃথক করবে। এই আলোগুলি বিশেষ সভা[a] শুরু করার বিশেষ বিশেষ সংকেত হিসেবে ব্যবহৃত হবে। আর দিন ও বছর বোঝাবার জন্য এই আলোগুলি ব্যবহৃত হবে। 15 পৃথিবীতে আলো দেওয়ার জন্য এই আলোগুলি আকাশে থাকবে।” এবং তা-ই হল।
16 তখন ঈশ্বর দুটি মহাজ্যোতি বানালেন। ঈশ্বর বড়টি বানালেন দিনের বেলা রাজত্ব করার জন্য আর ছোটটি বানালেন রাত্রিবেলা রাজত্ব করার জন্য। ঈশ্বর তারকারাজিও সৃষ্টি করলেন। 17 পৃথিবীকে আলো দেওয়ার জন্য ঈশ্বর এই আলোগুলিকে আকাশে স্থাপন করলেন। 18 দিন ও রাত্রিকে কর্তৃত্ত্ব দেবার জন্য ঈশ্বর এই আলোগুলিকে আকাশে সাজালেন। এই আলোগুলি আলো আর অন্ধকারকে পৃথক করে দিল এবং ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটা ভাল হয়েছে।
19 সন্ধ্যা হল এবং সকাল হল। এভাবে চতুর্থ দিন হল।
পঞ্চম দিন—মাছ ও পাখী
20 তারপর ঈশ্বর বললেন, “বহু প্রকার জীবন্ত প্রাণীতে জল পূর্ণ হোক্ আর পৃথিবীর ওপরে আকাশে ওড়বার জন্য বহু পাখী হোক্।” 21 সুতরাং ঈশ্বর বড় বড় জলজন্তু এবং জলে বিচরণ করবে এমন সমস্ত প্রাণী সৃষ্টি করলেন। অনেক প্রকার সামুদ্রিক জীব রয়েছে এবং সে সবই ঈশ্বরের সৃষ্টি। যত রকম পাখী আকাশে ওড়ে সেইসবও ঈশ্বর বানালেন। এবং ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটি ভাল হয়েছে।
22 ঈশ্বর এই সমস্ত প্রাণীদের আশীর্বাদ করলেন। ঈশ্বর সামুদ্রিক প্রাণীদের সংখ্যাবৃদ্ধি করে সমুদ্র ভরিয়ে তুলতে বললেন। ঈশ্বর পৃথিবীতে পাখীদের সংখ্যাবৃদ্ধি করতে বললেন।
23 সন্ধ্যা হয়ে গেল এবং তারপর সকাল হল। এভাবে পঞ্চম দিন কেটে গেল।
ষষ্ঠ দিন—ডাঙার জন্তু জানোয়ার ও মানুষ
24 তারপর ঈশ্বর বললেন, “নানারকম প্রাণী পৃথিবীতে উৎপন্ন হোক্। নানারকম বড় আকারের জন্তু জানোয়ার আর বুকে হেঁটে চলার নানারকম ছোট প্রাণী হোক্ এবং প্রচুর সংখ্যায় তাদের সংখ্যাবৃদ্ধি হোক্।” তখন যেমন তিনি বললেন সব কিছু সম্পন্ন হল।
25 সুতরাং ঈশ্বর সব রকম জন্তু জানোয়ার তেমনভাবে তৈরী করলেন। বন্য জন্তু, পোষ্য জন্তু আর বুকে হাঁটার সবরকমের ছোট ছোট প্রাণী ঈশ্বর বানালেন এবং ঈশ্বর দেখলেন প্রতিটি জিনিসই বেশ ভালো হয়েছে।
26 তখন ঈশ্বর বললেন, “এখন এস, আমরা মানুষ সৃষ্টি করি। আমাদের আদলে আমরা মানুষ সৃষ্টি করব। মানুষ হবে ঠিক আমাদের মত। তারা সমুদ্রের সমস্ত মাছের ওপরে আর আকাশের সমস্ত পাখীর ওপরে কর্তৃত্ত্ব করবে। তারা পৃথিবীর সমস্ত বড় জানোয়ার আর বুকে হাঁটা সমস্ত ছোট প্রাণীর উপরে কর্তৃত্ত্ব করবে।”
27 তাই ঈশ্বর নিজের মতোই মানুষ সৃষ্টি করলেন। মানুষ হল তাঁর ছাঁচে গড়া জীব। ঈশ্বর তাদের পুরুষ ও স্ত্রীরূপে সৃষ্টি করলেন। 28 ঈশ্বর তাদের আশীর্বাদ করে বললেন, “তোমাদের বহু সন্তান-সন্ততি হোক্। মানুষে মানুষে পৃথিবী পরিপূর্ণ করো এবং তোমরা পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণের ভার নাও, সমুদ্রে মাছেদের এবং বাতাসে পাখিদের শাসন করো। মাটির ওপর যা কিছু নড়েচড়ে, যাবতীয় প্রাণীকে তোমরা শাসন করো।”
29 ঈশ্বর বললেন, “আমি তোমাদের শস্যদায়ী সমস্ত গাছ ও সমস্ত ফলদায়ী গাছপালা দিচ্ছি। ঐসব গাছ বীজযুক্ত ফল উৎপাদন করে। এই সমস্ত শস্য ও ফল হবে তোমাদের খাদ্য। 30 এবং জানোয়ারদের সমস্ত সবুজ গাছপালা দিচ্ছি। তাদের খাদ্য হবে সবুজ গাছপালা। পৃথিবীর সমস্ত জন্তু জানোয়ার, আকাশের সমস্ত পাখি এবং মাটির উপরে বুকে হাঁটে যেসব কীট সবাই ঐ খাদ্য খাবে।” এবং এইসব কিছুই সম্পন্ন হল।
31 ঈশ্বর যা কিছু সৃষ্টি করেছেন সেসব কিছু দেখলেন এবং ঈশ্বর দেখলেন সমস্ত সৃষ্টিই খুব ভাল হয়েছে।
সন্ধ্যা হল, তারপর সকাল হল। এভাবে ষষ্ঠ দিন হল।
সপ্তম দিন—বিশ্রাম
2 এইভাবে পৃথিবী, আকাশ এবং তাদের আভ্যন্তরীণ যাবতীয় জিনিস সম্পূর্ণ হল। 2 যে কাজ ঈশ্বর শুরু করেছিলেন তা শেষ করে সপ্তম দিনে তিনি বিশ্রাম নিলেন। 3 সপ্তম দিনটিকে আশীর্বাদ করে ঈশ্বর সেটিকে পবিত্র দিনে পরিণত করলেন। দিনটিকে ঈশ্বর এক বিশেষ দিনে পরিণত করলেন কারণ ঐ দিনটিতে পৃথিবী সৃষ্টির সমস্ত কাজ থেকে তিনি বিশ্রাম নিলেন।
মানব জাতির শুরু
4 এই হল আকাশ ও পৃথিবীর ইতিহাস। ঈশ্বর যখন পৃথিবী ও আকাশ সৃষ্টি করেছিলেন, তখন যা কিছু ঘটেছিল এটা তারই গল্প।
ইহুদীরা এবং বিধি-ব্যবস্থা
17 তোমার অবস্থা কেমন? তুমি নিজেকে ইহুদী বলে পরিচয় দাও এবং বিধি-ব্যবস্থার উপর নির্ভর কর ও গর্ব কর যে তুমি ঈশ্বরের কাছাকাছি রয়েছ। 18 তুমি জান যে ঈশ্বর তোমার কাছ থেকে কোন্ কাজ আশা করেন; আর কোন্টা গুরুত্বপূর্ণ তাও তুমি জান, কারণ তুমি বিধি-ব্যবস্থা শিক্ষা করেছ। 19 যারা ঠিক পথ চেনে না তুমি মনে কর এমন লোকদের তুমি একজন পথ প্রদর্শক। তুমি মনে কর যারা অন্ধকারে আছে তুমি তাদের কাছে জ্যোতিস্বরূপ। 20 তুমি মনে কর যে, যাদের মৌলিক শিক্ষার প্রয়োজন তুমি তাদের শিক্ষক হতে পার। তোমার কাছে বিধি-ব্যবস্থা আছে তাই তুমি মনে কর যে তুমি সবই জান ও সব সত্য তোমার কাছেই রয়েছে। 21 তুমি অপরকে শিক্ষা দিয়ে থাক; কিন্তু তুমি কি নিজেকেও শিক্ষা দাও? চুরি করো না বলে তুমি অপরকে শিক্ষা দাও। কিন্তু তুমি নিজে চুরি কর। 22 তুমি বল লোকে যেন যৌন পাপে লিপ্ত না হয়; কিন্তু তুমি নিজে সেই পাপে পাপী। তুমি প্রতিমা ঘৃণা কর কিন্তু মন্দির থেকে চুরি কর। 23 তুমি ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা নিয়ে গর্ব কর আবার সেই একই বিধি-ব্যবস্থা লঙ্ঘন করে ঈশ্বরেরই অবমাননা কর। 24 শাস্ত্রে যেমন লেখা আছে: “ইহুদীরা, তোমাদের জন্যই অইহুদীরা ঈশ্বরের নিন্দা করে।”(A)
25 সুন্নতের মূল্য আছে যদি তুমি বিধি-ব্যবস্থা মান; কিন্তু যদি বিধি-ব্যবস্থা লঙ্ঘন কর তাহলে তা সুন্নত না হওয়ার সমান। 26 অইহুদীরা সুন্নত করায় না; কিন্তু সুন্নত ছাড়াই যদি তারা বিধি-ব্যবস্থার নির্দেশ মেনে চলে তাহলে কি তারা সুন্নতের মতই হবে না? 27 ইহুদীরা, তোমাদের লিখিত বিধি-ব্যবস্থা ও সুন্নত প্রথা আছে; কিন্তু তোমরা বিধি-ব্যবস্থা লঙ্ঘন কর। তাই যাদের দৈহিকভাবে সুন্নত হয়নি অথচ বিধি-ব্যবস্থা মেনে চলে, তারা দেখিয়ে দেবে যে তোমরা ইহুদীরা দোষী।
28 বাহ্যিকভাবে ইহুদী হলেই প্রকৃত ইহুদী হওয়া যায় না, এবং পূর্ণ অর্থে বাহ্যিক সুন্নত প্রকৃত সুন্নত নয়। 29 যে অন্তরে ইহুদী সেই প্রকৃত ইহুদী। প্রকৃত সুন্নত সম্পন্ন হয় অন্তরে; বিধি-ব্যবস্থায় লিখিত অক্ষরের মাধ্যমে তা হয় না কিন্তু অন্তরে আত্মা দ্বারা সাধিত হয়। আত্মার দ্বারা যে ব্যক্তির হৃদয়ের সুন্নত হয় সে মানুষের প্রশংসা নয়, ঈশ্বরের প্রশংসা পায়।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International