Revised Common Lectionary (Semicontinuous)
পিতরের বক্তব্য
14 তখন পিতর ঐ এগারো জন প্রেরিতের সঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে জোর গলায় তাঁদের উদ্দেশ্যে বললেন, “হে আমার ইহুদী ভাইরা, আজ জেরুশালেমে যত লোক বাস করেন তাঁদের সকলের উদ্দেশ্যে বলছি, আপনাদের এর অর্থ জানা দরকার।
36 “তাই ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবার নিশ্চিতভাবে জানুক যে যাকে আপনারা ক্রুশবিদ্ধ করেছিলেন, সেই যীশুকেই ঈশ্বর প্রভু ও খ্রীষ্ট উভয়ই করেছেন।”
37 লোকেরা এই কথা শুনে খুবই দুঃখিত হল। তারা পিতর ও অন্যান্য প্রেরিতদের বলল, “ভাইরা, আমরা কি করব?”
38 পিতর তাঁদের বললেন, “আপনারা মন-ফিরান, আর প্রত্যেকে পাপের ক্ষমার জন্য যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তাইজ হোন, তাহলে আপনারা দানরূপে এই পবিত্র আত্মা পাবেন। 39 কারণ এই প্রতিশ্রুতি আপনাদের জন্য, আপনাদের সন্তানদের জন্য আর যারা দূরে আছে তাদেরও জন্য। আমাদের ঈশ্বর প্রভু তাঁর নিজের কাছে যাদের ডেকেছেন, এই দান তাদের সকলের জন্য।”
40 পিতর তাঁদের আরো অনেক কথা বলে সাবধান করে দিলেন; তিনি তাঁদের অনুনয়ের সুরে বললেন, “বর্তমান কালের মন্দ লোকদের থেকে নিজেদের বাঁচান!” 41 যাঁরা পিতরের কথা গ্রহণ করলেন, তাঁরা বাপ্তিস্ম নিলেন। এর ফলে সেদিন কম বেশী তিন হাজার লোক খ্রীষ্টবিশ্বাসীবর্গের সঙ্গে যুক্ত হলেন।
116 প্রভু যখন আমার প্রার্থনা শোনেন,
তখন আমার ভালো লাগে।
2 আমি যখন সাহায্যের জন্য ডাকি
তখন তিনি আমার কথা শুনলে আমার ভালো লাগে।
3 আমি প্রায় মৃত হয়ে গিয়েছিলাম!
আমার চার দিকে মৃত্যুর দড়িগুলো জড়ানো ছিল।
কবর আমার ওপর ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে আসছে।
আমি সংকটযুক্ত ও দুঃখিত হলাম।
4 তখন আমি প্রভুর নামকে আমন্ত্রণ করলাম।
আমি বলেছিলাম: “প্রভু, আমায় রক্ষা করুন!”
12 আমি প্রভুকে কি আর দিতে পারি?
আমার যা কিছু আছে সবই প্রভু দিয়েছেন!
13 তিনি আমায় রক্ষা করেছেন,
তাই আমি তাঁকে পেয় নৈবেদ্য উৎসর্গ করবো।
আমি প্রভুর নাম আমন্ত্রণ করবো।
14 যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, প্রভুকে আমি তা দেবো।
আমি এখন তাঁর সকল লোকের সামনে যাবো।
15 প্রভুর অনুগামীদের একজনের মৃত্যু প্রভুর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রভু, আমি আপনার একজন দাস!
16 আমি আপনার দাস,
আমি আপনারই এক দাসীর সন্তান।
প্রভু, আপনিই আমার প্রথম শিক্ষক ছিলেন!
17 আমি আপনাকে ধন্যবাদ উৎসর্গ করবো।
আমি প্রভুর নাম স্মরণ করবো।
18 যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি প্রভুকে আমি তা দেবো।
আমি এখন তাঁর সকল লোকের সামনে যাবো।
19 আমি জেরুশালেমের মন্দিরে যাবো।
প্রভুর প্রশংসা কর।
17 ঈশ্বর কারও মুখাপেক্ষী না হয়ে প্রত্যেক লোকের কাজ অনুসারে তার বিচার করেন; সেই ঈশ্বরকে যখন তোমরা পিতা বলে সম্বোধন কর তখন তোমাদের উচিত পৃথিবীতে প্রবাসীর মতো ঈশ্বর ভয়ে জীবনযাপন করা। 18 তোমরা তো জান যে অতীতে তোমরা উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতে, যা তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে পেয়েছিলে। কিন্তু এখন সেই রকম জীবনযাপন করা থেকে তোমরা মুক্তি পেয়েছ। ঈশ্বর নশ্বর সোনা বা রূপোর বিনিময়ে তোমাদের মুক্তি ক্রয় করেন নি। 19 কিন্তু নির্দোষ ও নিখুঁত মেষশাবক, খ্রীষ্টের বহুমূল্য রক্ত দিয়ে তোমাদের ক্রয় করেছেন। 20 জগত সৃষ্টির আগেই খ্রীষ্টকে মনোনীত করা হয়েছিল; কিন্তু এই শেষ সময়ে তোমাদের জন্য তিনি প্রকাশিত হলেন। 21 খ্রীষ্টের মাধ্যমেই তোমরা ঈশ্বরে বিশ্বাসী হয়েছ। ঈশ্বর মৃতদের মধ্য থেকে খ্রীষ্টকে পুনরুত্থিত করে তাঁকে মহিমান্বিত করেছেন। সে জন্যই ঈশ্বরের প্রতি তোমাদের বিশ্বাস ও প্রত্যাশা আছে।
22 সত্যের অনুগামী হয়ে তোমরা নিজেদের শুদ্ধ করেছ, তাই তোমাদের অন্তরে বিশ্বাসী ভাই ও বোনেদের জন্য প্রকৃত ভালবাসা রয়েছে। সুতরাং এখন তোমরা তোমাদের সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে একে অপরকে ভালবাসো। 23 কোন নশ্বর বীজ থেকে তোমাদের এই নতুন জন্ম হয় নি। এই জীবন সম্ভব হয়েছে এক অবিনশ্বর বীজ থেকে। ঈশ্বরের সেই জীবন্ত ও চিরস্থায়ী বাক্য দ্বারাই তোমাদের নতুন জন্ম হয়েছে।
ইম্মায়ুর পথে
(মার্ক 16:12-13)
13 ঐ দিনই দুজন অনুগামী জেরুশালেম থেকে সাত মাইল দূরে ইম্মায়ু নামে একটি গ্রামে যাচ্ছিলেন। 14 এই যে সব ঘটনাগুলি ঘটে গেল, যেতে যেতে তাঁরা সে বিষয়েই পরস্পর আলোচনা করছিলেন। 15 তাঁরা যখন এইসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করছেন, এমন সময় যীশু নিজে এসে তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে চলতে লাগলেন। 16 (ঘটনাটি এমনভাবেই ঘটল যাতে তাঁরা যীশুকে চিনতে না পারেন।) 17 যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা যেতে যেতে পরস্পর কি নিয়ে আলোচনা করছ?”
তাঁরা থমকে দাঁড়ালেন, তাঁদের খুবই বিষন্ন দেখাচ্ছিল। 18 তাঁদের মধ্যে ক্লিয়পা নামে একজন তাঁকে বললেন, “জেরুশালেমের অধিবাসীদের মধ্যে আমাদের মনে হয় আপনিই একমাত্র লোক, যিনি জানেন না গত কদিনে সেখানে কি কাণ্ডটাই না ঘটে গেছে।”
19 যীশু তাঁদের বললেন, “কি ঘটেছে, তোমরা কিসের কথা বলছ?”
তাঁরা যীশুকে বললেন, “নাসরতীয় যীশুর বিষয়ে বলছি। তিনি ছিলেন এমন একজন মানুষ, যিনি তাঁর কথা ও কাজের শক্তিতে ঈশ্বর ও সমস্ত মানুষের চোখে নিজেকে এক মহান ভাববাদীরূপে প্রমাণ করেছেন। 20 কিন্তু আমাদের প্রধান যাজকরা ও নেতারা তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেবার জন্য ধরিয়ে দিল, তারা তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করে মারল। 21 আমরা আশা করেছিলাম যে তিনিই সেই যিনি ইস্রায়েলকে মুক্ত করবেন।
“কেবল তাই নয়, আজ তিন দিন হল এসব ঘটে গেছে। 22 আবার আমাদের মধ্যে কয়েকজন স্ত্রীলোক আমাদের অবাক করে দিলেন। তাঁরা আজ খুব ভোরে সমাধির কাছে গিয়েছিলেন; 23 কিন্তু সেখানে তাঁরা যীশুর দেহ দেখতে পান নি। সেখান থেকে ফিরে এসে তাঁরা আমাদের বললেন যে তাঁরা স্বর্গদূতদের দর্শন পেয়েছেন, আর সেই স্বর্গদূতরা তাঁদের বলেছেন যে যীশু জীবিত। 24 এরপর আমাদের সঙ্গে যাঁরা ছিলেন তাদের মধ্যে কয়েকজন সেই সমাধির কাছে গিয়েছিলেন; আর তাঁরা দেখলেন স্ত্রীলোকরা যা বলেছেন তা সত্য। তাঁরা যীশুকে সেখানে দেখতে পান নি।”
25 তখন যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা সত্যি কিছু বোঝ না, তোমাদের মন বড়ই অসাড়, তাই ভাববাদীরা যা কিছু বলে গেছেন তোমরা তা বিশ্বাস করতে পার না। 26 খ্রীষ্টের মহিমায় প্রবেশ লাভের পূর্বে কি তাঁর এইসব কষ্টভোগ করার একান্ত প্রয়োজন ছিল না?” 27 আর তিনি মোশির পুস্তক থেকে শুরু করে ভাববাদীদের পুস্তকে তাঁর বিষয়ে যা যা লেখা আছে, শাস্ত্রের সে সব কথা তাঁদের বুঝিয়ে দিলেন।
28 তাঁরা যে গ্রামে যাচ্ছিলেন তার কাছাকাছি এলে পর যীশু আরো দূরে যাবার ভাব দেখালেন। 29 তখন তাঁরা যীশুকে খুব অনুরোধ করে বললেন, “দেখুন, বেলা পড়ে গেছে, এখন সন্ধ্যা হয়ে এল, আপনি আমাদের এখানে থেকে যান।” তাই তিনি তাঁদের সঙ্গে থাকবার জন্য ভেতরে গেলেন।
30 তিনি যখন তাঁদের সঙ্গে খেতে বসলেন, তখন রুটি নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন। পরে সেই রুটি টুকরো টুকরো করে তাঁদের দিলেন। 31 সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের চোখ খুলে গেল, তাঁরা যীশুকে চিনতে পারলেন, আর তিনি সেখান থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। 32 তখন তাঁরা পরস্পর বলাবলি করলেন, “তিনি যখন রাস্তায় আমাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন ও শাস্ত্র থেকে আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, তখন আমাদের অন্তর কি আবেগে উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠে নি?”
33 তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে উঠে জেরুশালেমে গেলেন। সেখানে তাঁরা সেই এগারোজন প্রেরিত ও তাঁদের সঙ্গে আরো অনেককে দেখতে পেলেন। 34 প্রেরিত ও অন্যান্য যাঁরা সেখানে ছিলেন তাঁরা বললেন, “প্রভু, সত্যি জীবিত হয়ে উঠেছেন। তিনি শিমোনকে দেখা দিয়েছেন।”
35 তখন সেই দুজন অনুগামীও রাস্তায় যা ঘটেছিল তা তাঁদের কাছে ব্যক্ত করলেন। আর যীশু যখন রুটি টুকরো টুকরো করছিলেন তখন কিভাবে তাঁরা তাঁকে চিনতে পারলেন তাও জানালেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International