Revised Common Lectionary (Semicontinuous)
পিতরের বক্তব্য
14 তখন পিতর ঐ এগারো জন প্রেরিতের সঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে জোর গলায় তাঁদের উদ্দেশ্যে বললেন, “হে আমার ইহুদী ভাইরা, আজ জেরুশালেমে যত লোক বাস করেন তাঁদের সকলের উদ্দেশ্যে বলছি, আপনাদের এর অর্থ জানা দরকার।
22 “হে ইহুদী ভাইরা, একথা শুনুন: নাসরতীয় যীশুর দ্বারা ঈশ্বর বহু অলৌকিক ও আশ্চর্য কাজ করে আপনাদের কাছে প্রমাণ দিয়েছেন যে তিনি সেই ব্যক্তি যাঁকে ঈশ্বর পাঠিয়েছেন; আর আপনারা এই ঘটনাগুলি জানেন। 23 যীশুকে আপনাদের হাতে সঁপে দেওয়া হল, আর আপনারা তাঁকে হত্যা করলেন। মন্দ লোকদের দিয়ে আপনারা তাঁকে ক্রুশের উপর পেরেক বিদ্ধ করলেন। ঈশ্বর জানতেন যে এসব ঘটবে; আর তাই ছিল ঈশ্বরের পরিকল্পনা, যা তিনি বহুপূর্বেই নিরূপণ করেছিলেন। 24 যীশু মৃত্যু যন্ত্রণা ভোগ করলেন, কিন্তু ঈশ্বর সেই বিভীষিকা থেকে তাঁকে উদ্ধার করলেন। ঈশ্বর যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে তুলে আনলেন। মৃত্যু যীশুকে তার কবলে রাখতে সক্ষম হল না। 25 কারণ দায়ূদ যীশুর বিষয়ে বলেছিলেন:
‘আমি প্রভুকে সবসময়ই আমার সামনে দেখেছি;
আমাকে স্থির রাখতে তিনি আমার ডানদিকে অবস্থান করছেন।
26 এইজন্য আমার অন্তর আনন্দিত,
আর আমার জিভ উল্লাস করে।
আমার এই দেহও প্রত্যাশায় জীবিত থাকবে।
27 কারণ তুমি তোমার প্রাণ মৃত্যুলোকে পরিত্যাগ করবে না।
তুমি তোমার পবিত্র ব্যক্তিকে ভয় পেতে দেবে না।
28 তোমার সান্নিধ্যে আমার জীবন
তুমি আনন্দে ভরিয়ে দেবে।’(A)
29 “আমার ভাইরা, আমাদের সেই শ্রদ্ধেয় পূর্বপুরুষ দায়ূদের বিষয়ে আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি যে, তিনি মারা গেছেন ও তাঁকে কবর দেওয়া হয়েছে, আর আজও তাঁর কবর আমাদের মাঝে আছে। 30 কিন্তু তিনি একজন ভাববাদী ছিলেন এবং জানতেন ঈশ্বর শপথ করে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, তাঁর বংশের একজনকে তাঁরই মতো রাজা করে সিংহাসনে বসাবেন।[a] 31 পরে কি হবে তা আগেই জানতে পেরে দায়ূদ যীশুর পুনরুত্থানের বিষয়ে বলেছিলেন:
‘তাঁকে মৃত্যুলোকে পরিত্যাগ করা হয় নি
বা তাঁর দেহ কবরের মধ্যে ক্ষয় প্রাপ্ত হয় নি।’
32 কিন্তু ঈশ্বর মৃত্যুর পর যীশুকেই পুনরুত্থিত করেছেন; আর আমরা সকলে এই ঘটনার সাক্ষী আছি। আমরা সকলে তাঁকে দেখেছি।
দায়ূদের একটি মিকতাম।
16 হে ঈশ্বর, আমায় রক্ষা করুন।
কারণ আমি আপনার ওপর নির্ভর করি।
2 আমি প্রভুকে বলেছিলাম,
“প্রভু, আপনিই আমার সদাপ্রভু।
যা কিছু ভালো জিনিস এখন আমার আছে তা আপনার কাছ থেকেই এসেছে।”
3 পৃথিবীতে তাঁর অনুচরদের জন্য প্রভু বিস্ময়কর কাজ করেন।
প্রভু দেখিয়ে দেন যে প্রকৃতই তিনি ঐসব লোকেদের ভালোবাসেন।
4 কিন্তু যারা অন্যান্য দেবতার পূজা করতে ছুটে যায় তারা অনেক যন্ত্রণায় পড়বে।
যে রক্ত তারা ঐসব দেবমূর্ত্তিতে উৎসর্গ করে, আমি সেই উৎসর্গের সামিল হব না।
এমনকি আমি ঐসব দেবমূর্ত্তির নামও উচ্চারণ করবো না।
5 না, আমার ভাগের অংশ, আমার পানপাত্র প্রভুর কাছ থেকে আসে।
প্রভু আপনি আমায় সহায়তা দিয়েছেন।
আপনি আমায় আমার অংশ দিয়েছেন।
6 আমার অংশটুকু অবশ্যই চমৎকার।
আমার উত্তরাধিকার সত্যিই সুন্দর।
7 আমি প্রভুর প্রশংসা করি, কারণ তিনি আমায় উত্তমরূপে শিক্ষাদান করেছেন।
এমনকি নিশাকালে, তাঁর নির্দেশসমূহ তিনি আমার অন্তরের গভীরে রেখে যান।
8 আমি সর্বদাই প্রভুকে আমার সামনে রাখি।
আমি কখনই তাঁর দক্ষিণ পাশ ছেড়ে যাবো না।
9 তাই, আমার হৃদয় এবং আত্মা অত্যন্ত খুশী হবে।
আমার দেহও নিরাপদে বেঁচে থাকবে।
10 কেন? কারণ হে প্রভু পাতালে আপনি আমার আত্মা ছেড়ে চলে যাবেন না।
আপনার বিশ্বস্ত জনকে আপনি কবরে পচতে দেবেন না।
11 আপনি আমাকে বাঁচার প্রকৃত পথ সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান করবেন।
হে প্রভু, শুধুমাত্র আপনার সঙ্গে থাকলেই জীবনের চরম শান্তি লাভ হবে।
আপনার ডানদিকে থাকতে পারলেই চিরন্তন সুখ আসবে।
জীবন্ত প্রত্যাশা
3 প্রশংসিত হোন ঈশ্বর ও আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের পিতা! ঈশ্বরের মহাদয়ায় তিনি আমাদের নতুন জীবন দিয়েছেন। খ্রীষ্টের পুনরুত্থান দ্বারা এই নতুন জীবন এনেছে এক নতুন প্রত্যাশা। 4 আমরা এখন ঈশ্বরের আশীর্বাদ প্রত্যাশা করব যা তিনি সন্তানদের জন্য স্বর্গে সঞ্চিত রেখেছেন, যা কখনও ধ্বংস বা বিনষ্ট বা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
5 বিশ্বাসের মাধ্যমে ঈশ্বরের শক্তি তোমাদের রক্ষা করছে এবং যে পর্যন্ত না তোমরা পরিত্রাণ পাও সেই পর্যন্ত নিরাপদে রাখছে। সেই পরিত্রাণের আয়োজন করা আছে যাতে তা শেষকালে তোমরা পাও। 6 আপাততঃ বিভিন্ন দুঃখ কষ্ট তোমাদের ব্যথিত করলেও ঐ কথা ভেবে তোমরা আনন্দ কর। 7 এসব দুঃখ কষ্ট আসে কেন? এরা আসে যাতে তোমাদের বিশ্বাস খাঁটি বলে প্রমাণিত হয়। যে সোনা ক্ষয় পায় তাকেও আগুনে পুড়িয়ে খাঁটি করা হয়, আর তোমাদের খাঁটি বিশ্বাস তো সেই সোনার চাইতেও মূল্যবান। বিশ্বাসের পরীক্ষায় যদি দেখা যায় যে তোমাদের বিশ্বাস অটল আছে, তবে যীশু খ্রীষ্টের পুনরাগমনের সময় তোমরা কত না প্রশংসা, গৌরব ও সম্মান পাবে।
8 তাঁকে না দেখেও তোমরা তাঁকে ভালবাস। তোমরা তাঁকে না দেখতে পেয়েও বিশ্বাস করছ বলে তোমরা এক অনির্বচনীয় গৌরবময় মহা আনন্দে পরিপূর্ণ হচ্ছ। 9 তোমাদের বিশ্বাসের এক লক্ষ্য আছে, আর সেই লক্ষ্য হল তোমাদের আত্মার পরিত্রাণ যা তোমরা লাভ করছ।
যীশু শিষ্যদের দেখা দিলেন
(মথি 28:16-20; মার্ক 16:14-18; লূক 24:36-49)
19 দিনটা ছিল রবিবার, সেদিন সন্ধ্যায় শিষ্যরা একটি ঘরে জড়ো হলেন। ইহুদীদের ভয়ে তাঁরা ঘরের দরজায় চাবি দিয়ে দিলেন। এমন সময় যীশু এসে তাঁদের মাঝে দাঁড়ালেন, আর বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক্।” 20 একথা বলার পর তিনি তাঁদের তাঁর হাত ও পাঁজরের পাশটা দেখালেন। শিষ্যেরা প্রভুকে দেখতে পেয়ে খুবই আনন্দিত হলেন।
21 এরপর যীশু আবার তাঁদের বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক্! পিতা যেমন আমাকে পাঠিয়েছেন, আমিও তেমনি তোমাদের পাঠাচ্ছি।” 22 এই বলে তিনি তাঁদের ওপর ফুঁ দিলেন, আর বললেন, “তোমরা পবিত্র আত্মা গ্রহণ কর। 23 যদি তোমরা কোন লোকের পাপ ক্ষমা কর, তবে তাদের পাপ ক্ষমা পাবে, আর যদি কারো পাপ ক্ষমা না কর তার পাপের ক্ষমা হবে না।”
যীশু থোমাকে দেখা দিলেন
24 কিন্তু যীশু যখন সেখানে এসেছিলেন তখন সেই বারোজন শিষ্যের একজন থোমা, যাঁর অপর নাম দিদুমঃ তিনি তাঁদের সঙ্গে ছিলেন না। 25 অন্য শিষ্যরা তাঁকে বললেন, “আমরা প্রভুকে দেখেছি!” কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, “আমি যদি তাঁর দুহাতে পেরেকের চিহ্ন না দেখি, আর সেই পেরেক বিদ্ধ জায়গায় আমার আঙ্গুল না দিই, আর তাঁর পাঁজরের নীচে আমার হাত না দিই, তাহলে আমি কিছুতেই বিশ্বাস করব না।”
26 এক সপ্তাহ পর তাঁর শিষ্যরা আবার একটি ঘরের মধ্যে ছিলেন, আর সেদিন থোমা তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। ঘরেব দরজাগুলি তখন চাবি দেওয়া ছিল। এমন সময়ে যীশু সেখানে এলেন ও তাঁদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক্।” 27 এরপর তিনি থোমাকে বললেন, “এখানে তোমার আঙ্গুল দাও, আর আমার হাত দুটি দেখ। তোমার হাত বাড়িয়ে আমার পাঁজরের নীচে দাও। সন্দেহ কোরো না, বিশ্বাস কর।”
28 এর উত্তরে থোমা তাঁকে বললেন, “প্রভু, আমার, ঈশ্বর আমার।”
29 যীশু তাঁকে বললেন, “তুমি আমায় দেখেছ তাই বিশ্বাস করেছ। ধন্য তারা, যাঁরা আমাকে না দেখেও বিশ্বাস করে।”
যোহন কেন এই বই লিখেছিলেন
30 যীশু তাঁর শিষ্যদের সামনে আরো অনেক অলৌকিক চিহ্নকার্য করেছিলেন, যা এই বইতে সব লেখা হয় নি। 31 কিন্তু এসব লেখা হয়েছে যাতে তোমরা বিশ্বাস করতে পার যে যীশুই খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র; আর এই বিশ্বাসের দ্বারা তাঁর নামের মধ্য দিয়ে তোমরা সকলে যেন শাশ্বত জীবন লাভ করতে পার।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International