Old/New Testament
15 প্রভু আমাকে বলেছিলেন, “এমন কি যদি মোশি এবং শমূয়েল আমার কাছে যিহূদার লোকদের হয়ে প্রার্থনা করে তাহলেও আমি তাদের প্রতি করুণা করব না, যিরমিয়। যিহূদার লোকদের আমার কাছে আসতে দিও না। ওদের চলে যেতে বলো। 2 ওরা হয়তো তোমাকে জিজ্ঞেস করবে, ‘আমরা কোথায় যাব?’ তুমি ওদের একথা বলো: প্রভু যা বললেন,
“‘আমি কিছু লোককে মৃত্যুর জন্য মনোনীত করেছি।
তারা মরবে।
আমি তরবারি দিয়ে নিহত হবার জন্য কিছু মানুষকে নির্বাচন করেছি।
তারা তরবারির আঘাতেই মারা যাবে।
আমি কিছু লোককে নির্বাচন করেছি অনাহারে মৃত্যুর জন্য।
তারা অনাহারেই মারা যাবে।
আমি কিছু লোককে বন্দী করে বিদেশে পাঠাবার জন্য নির্বাচন করেছি,
তারা বিদেশে কয়েদীদের মতো বন্দী থাকবে।
3 আমি তাদের বিরুদ্ধে চার ধরণের ধ্বংসকারককে পাঠাব।’
এই হল প্রভুর বার্তা।
‘আমি তরবারি হাতে শত্রুকে পাঠাব তাদের মারতে।
আমি সেই মৃতদেহগুলি টেনে নিয়ে যেতে কুকুর পাঠাব।
আমি চিল, শকুন এবং বন্য জন্তুদের পাঠাব
তাদের মাংস খাওয়ার জন্য।
4 আমি যিহূদার লোকদের ভয়ঙ্কর এক উদাহরণ হিসেবে
সারা বিশ্বের সামনে খাড়া করব।
যেহেতু যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের পুত্র
মনঃশি জেরুশালেমে কুকর্ম করেছিল
তাই আমিও যিহূদার সঙ্গে সেই একই জিনিষ করব।’
5 “জেরুশালেম শহর কেউ তোমার জন্য দুঃখ অনুভব করবে না।
কেউ দুঃখে তোমার জন্য কেঁদে উঠবে না।
এমন কি তুমি কেমন আছো এ কথা জিজ্ঞাসা করবার দায় কারো থাকবে না।
6 জেরুশালেম, তুমি আমায় ছেড়ে চলে গিয়েছিলে।”
এই হল প্রভুর বার্তা।
“বারবার তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছো।
তাই আমি তোমাকে শাস্তি দেব এবং ধ্বংস করব।
তোমার শাস্তি পিছোতে পিছোতে আমি ক্লান্ত।
7 যিহূদার লোকদের আমি আমার কাঁটাযুক্ত দণ্ড দিয়ে তুলে আলাদা করে দেব।
শহরের ফটকের সামনে থেকেই তাদের বিচ্ছিন্ন করে দেব।
আমার লোকরা বদলায় নি।
তাই আমি তাদের ধ্বংস করব।
আমি তাদের ছেলেমেয়েদের সরিয়ে নিয়ে যাব।
8 অনেক স্ত্রী তাদের স্বামীকে হারাবে।
সমুদ্রে যত বালি আছে তার থেকেও বেশী সংখ্যার বিধবা সেখানে বাস করবে।
আমি দুপুরে বয়ে আনব এক ধ্বংসকর্তাকে।
সেই ধ্বংসকর্তা যিহূদার যুবকদের মাকে হত্যা করবে,
যিহূদার লোকদের জন্য আমি শুধু ভয় আর যন্ত্রণা বয়ে আনবো।
খুব শীঘ্রই আমি এটি ঘটাবো।
9 তাদের শত্রু তরবারি হাতে আক্রমণ করে হত্যা করবে।
যিহূদার জীবিত সমস্ত লোককে তারা হত্যা করবে।
একজন মায়ের হয়ত সাত জন পুত্র থাকবে,
কিন্তু তার সব পুত্রই মারা যাবে।
সেই মহিলা শুধু কাঁদতেই থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত না তার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়।
সে মানসিকভাবে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।
তার উজ্জ্বল দিনগুলি দুঃখের অন্ধকার গ্রাস করে নেবে।”
যিরমিয় পুনরায় ঈশ্বরকে অভিযোগ জানাল
10 মা, আমি (যিরমিয়) দুঃখিত
যে তুমি আমায় জন্ম দিয়েছো।
আমিই হচ্ছি সেই ব্যক্তি যাকে
পুরো দেশটিকে অভিযুক্ত ও সমালোচনা করতে হবে।
আমি ধারদাতাও নই, ধারগ্রাহকও নই।
তবু আমাকে প্রত্যেকে অভিশাপ দিচ্ছে।
11 প্রভু, আমি সত্যিই আপনাকে ভাল ভাবে সেবা করেছি।
আমার শত্রুরা যখন আমায় বিপদে ফেলেছিল তখন আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করেছি।
যিরমিয়কে ঈশ্বরের উত্তর
12 “যিরমিয় তুমি জানো যে
কেউ লোহাকে চূর্ণ করতে পারে না।
এমন কি পিতলকেও নয়।
আমি উত্তরের[a] লোহার কথা বলছি।
13 যিহূদার লোকদের প্রচুর ধনসম্পত্তি আছে।
আমি সেই সব সম্পত্তি অন্যদের মধ্যে বিলিয়ে দেব।
ঐ লোকদের ঐ সব সম্পত্তি কিনতে হবে না।
কেন? কারণ যিহূদার লোকরা অনেক অনেক পাপ করেছে।
তারা যিহূদার সর্বত্র পাপ করেছে।
14 যিহূদার লোকরা, তোমাদের আমি তোমাদের শত্রুর কাছে দাস করে রাখব।
অচেনা এক দেশে তোমরা দাসত্ব করবে।
আমি প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ।
আমার ক্রোধ হল তপ্ত আগুনের মতোই
এবং তোমরা তাতে পুড়ে মরবে।”
15 প্রভু, আপনি আমাকে বুঝতে পেরেছেন।
আমাকে মনে রেখে আমাকে রক্ষা করুন।
লোকরা আমাকে আঘাত করে চলেছে।
ওদের যোগ্য শাস্তি দিন।
ওদের প্রতি আপনি যে ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিচ্ছেন
তাতে আমি যেন ধ্বংস হয়ে না যাই।
আমার সম্বন্ধে ভাবুন।
আপনার জন্য যে কষ্ট ও যন্ত্রণা আমি ভোগ করছি সে ব্যাপারে একটু ভাবুন প্রভু।
16 আপনার বার্তা আমার কাছে পৌঁছেছিল।
আপনার কথাগুলো আমার কাছে এসেছিল এবং সেগুলি আমি হজম করে ফেললাম।
আপনার বার্তা আমাকে খুশী করেছিল।
আমাকে আপনার নামে ডাকতে পারবার জন্য আমি খুশী হয়েছিলাম।
আপনার নাম হল: “প্রভু সর্বশক্তিমান।”
17 আমি কখনও জনতার সঙ্গে বসিনি।
যেহেতু তারা আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করেছিল।
আমি নিজেকে নিয়ে বসেছিলাম, কারণ আপনার প্রভাব আমার ওপর রয়েছে।
আমার চারপাশে অসততার জন্যই আপনি আমাকে ক্রোধ দিয়ে ভরে দিয়েছিলেন।
18 আমি বুঝতে পারি না কেন এখনও আমি ব্যাথা বোধ করি।
আমি বুঝতে পারি না কেন আমার ক্ষত সেরে ওঠে না।
প্রভু, আমার মনে হয় আপনি বদলে গিয়েছেন।
আপনি হলেন শুকিয়ে যাওয়া ঝর্ণা।
কিংবা হঠাৎ জলের প্রবাহ থেমে যাওয়া একটি ঝর্ণা।
19 তখন প্রভু বলেছিলেন, “যিরমিয়, তুমি নিজেকে বদলিয়ে আমার কাছে ফিরে এসো
তাহলে তোমাকে শাস্তি দেব না।
তুমি যদি নিজেকে পরিবর্তন করে আমার কাছে ফিরে আস
তাহলেই তুমি আমার সেবা করতে পারবে।
ঐসব মূল্যহীন কথা না বলে যদি তুমি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে পারো
তবেই তুমি আমার হয়ে কথা বলতে পারবে।
যিহূদার লোকদের নিজেদের বদলে ফেলে তোমার কাছে ফিরে আসতে হবে যিরমিয়।
কিন্তু তুমি নিজেকে তাদের মতো করে বদলিও না।
20 আমি তোমাকে এমন শক্তিশালী করে তুলব
যে লোকে ভাববে তুমি
পিতলের দেওয়ালের মতো কঠিন।
যিহূদার লোকেরা তোমার সঙ্গে যুদ্ধ করলেও
তোমাকে ওরা পরাজিত করতে পারবে না।
কারণ আমি তোমার সঙ্গে আছি।
আমি তোমাকে সাহায্য করব।
আমিই তোমাকে রক্ষা করব।”
এই হল প্রভুর বার্তা।
21 “আমি তোমাকে ঐসব দুষ্ট লোকদের হাত থেকে রক্ষা করব।
ওরা তোমাকে ভয় দেখাবে। কিন্তু আমি তোমাকে ওদের হাত থেকে রক্ষা করবো।”
প্রলয়ের দিন
16 প্রভুর বার্তা আমার কাছে এসেছিল: 2 “যিরমিয় তুমি বিয়ে করতে পারবে না। এখানে তোমার কোন সন্তান থাকবে না।”
3 যিহূদার ছেলেমেয়েদের সম্বন্ধে প্রভু এগুলি বললেন এবং সেই সমস্ত ছেলেমেয়েদের পিতা ও মাতার সম্বন্ধে প্রভু যা বললেন: 4 “ঐ লোকগুলোর ভয়ঙ্কর মৃত্যু আসবে। কেউ তাদের জন্য কাঁদবে না। তাদের জন্য কেউ চিতা জ্বালাবে না। মৃতদেহগুলি বিষ্ঠার মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকবে। ওদের মৃত্যু ঘটবে একজন শত্রুর তরবারির আঘাতে অথবা তারা মারা যাবে অনাহারে। মৃতদেহগুলি শকুন এবং বন্য পশুদের খাদ্য হবে।”
5 সুতরাং প্রভু বললেন, “যিরমিয় কোন শ্রাদ্ধ বাড়ীতে যেও না। তোমার তাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করার দরকার নেই। কারণ আমি আমার আশীর্বাদ ফিরিয়ে নিয়েছি। আমি যিহূদার লোকদের প্রতি দয়া দেখাব না। আমি তাদের জন্য দুঃখও প্রকাশ করব না।” এই হল প্রভুর বার্তা।
6 “যিহূদার সাধারণ এবং গুরুত্বপূর্ণ মানুষ সকলেই মারা যাবে। কেউ তাদের শবদেহ কবর দেবে না, কেউ কাঁদবেও না। কেউ তাদের জন্য শোক প্রকাশ করে মাথার চুল কামিয়ে ফেলবে না। 7 এন্দনরত লোকদের জন্য কেউ খাবার নিয়ে আসবে না। যে সমস্ত লোকরা তাদের অভিভাবকের মৃত্যুতে শোক করছে তাদের কোন ব্যক্তি আরাম দেবে না। যারা কাঁদবে তাদের জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থাও কেউ করে দেবে না।
8 “যিরমিয়, কোন উৎসব মুখর বাড়িতে যাবে না এবং সেই বাড়িতে কোন কিছু খেতেও বসবে না। 9 প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এই কথাগুলি বললেন, ‘খুব শীঘ্রই আমি সমস্ত আনন্দ কোলাহলের শব্দ বন্ধ করে দেব। একটি বিবাহ সভায় লোকেরা যে সব শব্দসমূহ করে আমি সে সব বন্ধ করে দেব। তোমার জীবন কালেই এগুলি ঘটবে। আমি এই কাজগুলি দ্রুত করব।’
10 “যিরমিয়, যিহূদার লোকদের তুমি এই কথাগুলি জানিয়ে দাও। তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করবে, ‘প্রভু কেন আমাদের সম্বন্ধে এই ভয়ঙ্কর কথাগুলি বলেছেন? আমরা কি অন্যায় করেছি? আমাদের প্রভু ঈশ্বরের বিরুদ্ধে আমরা কি পাপ করেছি?’ 11 তখন তুমি এগুলি তাদের অবশ্যই বলবে: ‘তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমাকে ত্যাগ করেছিল বলেই তোমাদের জীবনে এসব ভয়ঙ্কর জিনিষ আসবে।’ এই হল প্রভুর বার্তা। ‘তারা আমাকে ত্যাগ করে অন্য দেবতাদের সেবা করেছিল। তারা অন্য দেবতাদের পূজা করেছিল। তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমার বিধানকে অস্বীকার করে আমাকে ত্যাগ করেছিল। 12 কিন্তু তোমরা যে সব পাপ কাজ করেছ তা তোমাদের পূর্বপুরুষদের পাপকাজ থেকে অনেক খারাপ। তোমরা একগুঁয়ে, জেদী। তোমরা আমাকে অমান্য করে যা খুশী তাই করেছো। 13 তাই তোমাদের আমি এদেশের বাইরে ছুঁড়ে ফেলব। আমি তোমাদের জোর করে বিদেশে পাঠাব। এমন এক দেশে পাঠাব যা তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও অচেনা। সেখানে তোমরা অন্যান্য মূর্ত্তিদের সেবা করতে পারবে। আমি তোমাদের কোন রকম সাহায্য করতে যাব না।’
14 “লোকরা প্রতিশ্রুতি করো এবং বলো, ‘প্রভুর অস্তিত্ব যেমন নিশ্চিত, যিনি আমাদের মিশর থেকে বার করে এনেছেন…’ সেই রকম নিশ্চিতরূপে। কিন্তু সময় এগিয়ে আসছে।” এই হল প্রভুর বার্তা, “যখন মানুষ আর ঐ কথা বলবে না। 15 লোকরা তখন নতুন কিছু বলবে। তারা বলবে, ‘প্রভুর অস্তিত্ব যেমন নিশ্চিত যিনি আমাদের উত্তরের দেশ থেকে বার করে এনেছিলেন, সেই রকম নিশ্চিতভাবে। তিনি তাদের নিয়ে এসেছিলেন সেই সব দেশের বাইরে থেকে যেখানে তাদের তিনি পাঠিয়েছিলেন…’ কেন তারা একথা বলবে? কারণ আমি ইস্রায়েলীয়দের পূর্বপুরুষের মাটিতে ফিরিয়ে আনব।
16 “খুব শীঘ্রই আমি অনেক জেলেকে এদেশে পাঠাব” এই হল প্রভুর বার্তা। “ঐ জেলেরা যিহূদার লোকদের ধরবে। তারপর আমি অনেক শিকারীকে এদেশে পাঠাব।[b] তারা পাহাড়ে, পর্বতে, পাথরের খাঁজে যেখানেই যিহূদার লোকদের দেখতে পাবে, সেখানেই তাদের শিকার করবে। 17 তারা যা করে তার সবই আমি দেখতে পাচ্ছি। যিহূদার লোকরা যা করেছে তা আমার কাছে গোপন করা সম্ভব নয়। তাদের পাপ আমার কাছে অজানা নয়। 18 তাদের দুষ্ট কাজের জন্য আমি তাদের দ্বিগুণ পরিমাণ ফেরৎ দেব। তাদের প্রতিটি পাপের জন্য আমি তাদের দ্বিগুণ শাস্তি দেব। কারণ তারা আমার দেশকে ‘অপবিত্র’ করে দিয়েছে। তারা তাদের ভয়ঙ্কর মূর্ত্তিদের দিয়ে আমার দেশকে ‘অপবিত্র’ করে তুলেছে। আমি ঐ মূর্ত্তিদের ঘৃণা করি। সেই জন্য আমি তাদের সঙ্গে এরকম ব্যবহার করব।”
19 প্রভু, আপনি আমার শক্তি, আপনি আমার রক্ষক।
আপনি বিপদের সময়ে আশ্রয় নেওয়ার জন্য এক নিরাপদ জায়গা।
পৃথিবীর সমস্ত দেশ আপনার কাছে আসবে।
তারা বলবে, “আমাদের পিতাদের দেশে ছিল মূর্ত্তি।
তারা ঐ সমস্ত অসার মূর্ত্তিদের পূজা করেছিল।
কিন্তু ঐ মূর্ত্তিরা এতটুকুও সাহায্য করেনি।”
20 মানুষ কি তার নিজের জন্য প্রকৃত দেবতাকে তৈরী করতে পারে?
না তারা শুধু মূর্ত্তি বানাতে পারে। কিন্তু ঐ সব মূর্ত্তিরা প্রকৃত দেবতা নয়।
21 প্রভু বললেন, “যারা মূর্ত্তি বানায় সেই সব লোকদের আমি শিক্ষা দেব।
ওদের আমি আমার ক্ষমতা ও শক্তির সম্বন্ধে শিক্ষা দেব।
তাহলে তারা উপলব্ধি করতে পারবে যে আমিই ঈশ্বর।
তারা জানবে আমিই প্রভু।
হৃদয়ে লেখা দোষ
17 “যিহূদার লোকদের পাপ এক জায়গায় লেখা আছে
যেখানে সেইগুলো মোছা যায় না।
লোহার কলম দিয়ে এবং ডগায় হীরে[c] দেওয়া কলম দিয়ে
ঐ পাপগুলো পাথরের ওপর লেখা হয়েছে।
এবং ঐ সব পাথরগুলি হল তাদের হৃদয়।
ঐ সব পাপ লেখা হয়েছে তাদের উৎসর্গের বেদীর শৃঙ্গে।
2 তাদের সন্তানরা মনে রাখে সেই উৎসর্গের বেদীর কথা
যা মূর্ত্তিসমূহকে উৎসর্গ করা হয়েছিল।
তারা মনে রাখে সেই কাঠের খুঁটিগুলিকে
যেগুলো উৎসর্গ করা হয়েছিল আশেরাকে।
তারা সেই সব জিনিষ মনে রাখে
পাহাড় চূড়ায় এবং গাছের নীচে।
3 তারা মনে করবে উন্মুক্ত প্রান্তরে
পর্বতের ওপরে কি হয়েছিল।
যিহূদার লোকদের প্রচুর ধনসম্পত্তি।
আমি এইসব অন্য লোকদের বিলিয়ে দেব।
সেই লোকরা তোমাদের দেশে মূর্ত্তিসমূহের
সমস্ত উচ্চ স্থানগুলি ধ্বংস করে দেবে।
তোমরা সেই সমস্ত জায়গায় পূজা করেছো।
এবং সেটা একটা পাপ।
4 আমি তোমাদের যে দেশ দিয়েছিলাম তা তোমরা হারাবে।
তোমাদের শত্রুদের আমি তোমাদের দেশ নিয়ে নিতে দেব এবং তোমাদের তাদের দাস হতে দেব এমন এক দেশে যেটা তোমরা জানো না।
কারণ আমি ভীষণ ক্রুদ্ধ।
আমার ক্রোধ হল গনগনে আগুনের মতো এবং তোমরা সেই আগুনের লেলিহান শিখায় চিরদিনের জন্য পুড়ে ছাই হয়ে যাবে।”
লোকেদের বিশ্বাস এবং ঈশ্বরকে বিশ্বাস
5 প্রভু এগুলি বললেন,
“যারা অন্যদের বিশ্বাস করে,
তাদের জীবনে অমঙ্গল ঘটবে।
অন্যদের শক্তির ওপর যারা ভরসা করে থাকে
তাদের ক্ষেত্রেও অমঙ্গল ঘটবে।
কারণ ঐ লোকরা প্রভুর প্রতি বিশ্বাস হারিয়েছে।
6 ঐ সমস্ত লোকরা হল জনমানবহীন মরুভূমির কাঁটা ঝোপের মতো।
তপ্ত, শুষ্ক এবং অনুর্বর মাটিতেও তারা জন্মায়।
সেই সব ঝোপঝাড় জানে না
ঈশ্বর কত ভাল জিনিস দিতে পারেন।
7 কিন্তু যে ব্যক্তি প্রভুতে বিশ্বাস রাখবে, সে প্রভুর আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত হবে না।
কারণ প্রভু তাকে দেখাবেন যে তাঁকে বিশ্বাস করা যায়।
8 এই ব্যক্তি জলের ধারে রোপণ করা গাছের মতো শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
যে গাছের লম্বা শিকড় জলের সন্ধান পাবে, গ্রীষ্মের সময় সেই গাছ ভীত হবে না।
সেই গাছের পাতা সর্বদা সবুজ থাকবে। খরার বছরেও সে নিশ্চিন্ত থাকবে।
ফলদান থেকে সে কখনও বিরত থাকবে না।
9 “মানুষের মন খুবই কৌশলপূর্ণ।
তার অসুস্থ অবস্থার কোন চিকিৎসা নেই।
10 কিন্তু আমিই প্রভু
এবং আমি মানুষের হৃদয়ও পরিষ্কার দেখতে পাই।
আমি একজন মানুষের মনকে পরীক্ষা করতে পারি।
আমি নির্ধারণ করতে পারি কার কি থাকা উচিৎ।
আমি একজন মানুষের কর্মের ফল নির্ধারণ করতে পারি।
11 কখনো কখনো একটা পাখী
অন্যের ডিমে তা দিয়ে তাকে ফোটায়।
ঠিক একই ভাবে একজন মানুষ ঠকায়
এবং অন্যের টাকা আত্মসাৎ করে।
সেই টাকা সে তার অর্ধেক জীবনে উড়িয়ে দেয়।
জীবনের শেষ পর্যায়ে সে বুঝতে পারে যে সে কত বড় নির্বোধ।”
12 একদম প্রথম থেকেই আমাদের উপাসনাগৃহে ছিল
ঈশ্বরের মহিমান্বিত সিংহাসন।
তা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
13 প্রভু আপনিই ইস্রায়েলের আশা।
প্রভু আপনি জীবন্ত ঝর্ণার মত।
যদি একজন মানুষ আপনার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়,
তার জীবন হয়ে যাবে খুবই ছোট।
যিরমিয়র তৃতীয় অভিযোগ
14 প্রভু, আমাকে সারিয়ে তুলুন
এবং আমি সত্যি সত্যিই সেরে উঠব।
আমায় রক্ষা করুন,
তাহলে আমি সত্যিই রক্ষা পাব।
প্রভু, আমি আপনার প্রশংসা করি!
15 যিহূদার লোকরা আমাকে প্রশ্ন করেই চলেছে।
তারা বলছে, “যিরমিয়, প্রভুর বার্তার কি হল?
আমাদের দেখতে হবে ঐ বার্তা সত্যি হবে।”
16 প্রভু, আমি আপনার কাছ থেকে দৌড়ে পালাই নি
বরং আমি আপনাকেই অনুসরণ করে চলেছি।
আমি আপনারই ইচ্ছে মতো মেষপালক হয়েছি।
আমি কখনোই চাইনি ভয়ঙ্কর দিন আসুক।
প্রভু আমি যা বলেছিলাম, তা সব আপনি জানেন।
যা ঘটেছে তার সব কিছুই আপনি নিজের চোখে দেখেছেন।
17 প্রভু আমাকে ধ্বংস করবেন না।
আমি অশান্তির সময়গুলোতে আপনার ওপরে নির্ভর করে থাকি।
18 লোকরা আমাকে নির্যাতন করছে।
ওদের লজ্জিত করুন।
কিন্তু আমাকে নিরাশ করবেন না।
ঐ মানুষদের ভয় পেতে দিন।
কিন্তু আমাকে ভীত করে তুলবেন না।
প্রলয়ের সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলো আমার শত্রুদের জীবনে আসুক।
তাদের চূর্ণ করুন এবং বারবার তাদের চূর্ণ করুন।
বিশ্রামের দিনকে পবিত্র রাখা হোক্
19 প্রভু, আমাকে এই কথাগুলি বললেন: “যিরমিয়, যাও লোকদের ফটকের কাছে গিয়ে দাঁড়াও যেটার মধ্যে দিয়ে যিহূদার রাজা ভেতরে ঢোকে এবং বাইরে যায়। লোকদের আমার বার্তা শোনাও এবং তারপর জেরুশালেমের প্রত্যেকটি ফটকে গিয়ে একই কাজ করো।”
20 ঐ লোকদের বলো: “প্রভুর বার্তা শোন। শোন যিহূদার রাজা এবং যিহূদার সাধারণ মানুষ। এই ফটক দিয়ে জেরুশালেমে যাতায়াত করা প্রত্যেকটি মানুষ আমার কথা শোন! 21 প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: ‘সতর্ক থেকো, তোমরা বিশ্রামের দিনে জেরুশালেমের ফটক দিয়ে কোন মালপত্র নিয়ে যাতায়াত করতে পারবে না। 22 বিশ্রামের দিনে ঘরের মালপত্রও নিয়ে যাতায়াত করতে পারবে না। সেদিন কাজেও যেতে পারবে না। বিশ্রামের দিন তোমরা পবিত্র দিন হিসেবে যাপন করবে। আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও এই আদেশ দিয়েছিলাম। 23 কিন্তু তারা আমার কথা শোনেনি। তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমাকে অমান্য করেছিল। তোমাদের পূর্বপুরুষরা ছিল একগুঁয়ে ও জেদী। আমি তাদের শাস্তি দিয়েছিলাম কিন্তু তাতে কোন ফল হয়নি। তারা আমার কোন কথা শোনেনি। 24 কিন্তু তোমরা মন দিয়ে আমার কথা শোন। আমাকে মান্য করো। এই হল প্রভুর বার্তা: বিশ্রামের দিন জেরুশালেমের ফটক দিয়ে কোন মালপত্র বয়ে এনো না। বিশ্রামের দিন কাজ করা বন্ধ রেখো এবং ঐ দিনটি পবিত্র ভাবে কাটাও।
25 “‘যদি তোমরা আমার আদেশ মান্য করো, তাহলে দায়ূদের সিংহাসনে উপবিষ্ট রাজগণ জেরুশালেমের ফটক দিয়ে প্রবেশ করবে। রথে চড়ে, ঘোড়ায় চড়ে বিভিন্ন রাজারা আসবে। যিহূদা এবং জেরুশালেমের নেতারা হবে সেই রাজা এবং জেরুশালেম চিরকালের জন্য বসবাসকারী লোক পাবে। 26 যিহূদা শহর থেকে লোকরা আসবে জেরুশালেমে। জেরুশালেমের আশপাশের ছোট্ট গ্রাম থেকে, বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর দেশ থেকে, পশ্চিম পাহাড়ের পাদদেশ থেকে এবং নেগেভ থেকে লোকরা আসবে জেরুশালেমে। ওরা সবাই সঙ্গে নিয়ে আসবে ধুপধূনা, হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য। তারা সেই সমস্ত উপহার এবং নৈবেদ্য আনবে প্রভুর উপাসনা গৃহের জন্য।
27 “‘কিন্তু যদি তোমরা আমাকে অমান্য করো এবং আমার কথা না শোন তাহলে অমঙ্গল ঘনিয়ে আসবে। যদি তোমরা বিশ্রামের দিন জেরুশালেমের ফটক দিয়ে বোঝা বহন করো এবং তাকে অপবিত্র করো, তাহলে আমি জেরুশালেমের ফটকগুলোতে আগুন জ্বালিয়ে দেব, সেই আগুন যা নেভানো যায় না। সেই আগুন জেরুশালেমের ফটক থেকে শুরু করে সব কিছু পুড়িয়ে ছাই করে ফেলবে।’”
খ্রীষ্ট যীশুর বিশ্বস্ত সৈনিক
2 তীমথিয় তুমি আমার সন্তানের মতো, খ্রীষ্ট যীশুতে আমাদের যে অনুগ্রহ আছে তার দ্বারা তুমি শক্তিমান হয়ে ওঠ। 2 তুমি ও অন্যান্য অনেকে আমি যে বিষয় শিক্ষা দিয়েছি তা শুনেছ; সেইসব এমন বিশ্বস্ত লোকদের শেখাও যারা অন্য লোকদের শিক্ষা দিতে সক্ষম হবে। 3 খ্রীষ্ট যীশুর বিশ্বস্ত সৈনিকের মত আমাদের সাথে কষ্টভোগ কর। 4 সৈনিক, যুদ্ধ করার সময় তার সেনাপতিকে সন্তুষ্ট করবার কথা মনে রাখে, জনসাধারণের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে না। 5 আবার কোন ব্যক্তি যদি ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে, তবে তাকে প্রতিযোগিতার সমস্ত নিয়ম মেনে চলতে হয় যেন সে বিজয়ী হতে পারে। 6 যে কৃষক কঠোর পরিশ্রম করে, সেই প্রথমে ফসলের ভাগ পায়। 7 আমি যা বলি, তা ভেবে দেখ, কারণ এসব বিষয় বুঝতে প্রভু তোমাকে বুদ্ধি দেবেন।
8 যীশু খ্রীষ্টের কথা মনে কর, তিনি দায়ূদের বংশে জন্মেছিলেন, যীশু মৃত্যুর পর মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন। এই তো সেই সুসমাচার যা লোকদের কাছে আমি প্রচার করি। 9 সুসমাচার প্রচার করেছি বলে আমি কষ্টভোগ করছি, একজন অপরাধীর মত আমাকে শেকলে বেঁধে বন্দী করে রাখা হয়েছে। কিন্তু ঈশ্বরের বার্তাকে শেকল দিয়ে বাঁধা যায় না। 10 তাই ধৈর্য্য্যের সঙ্গে ঈশ্বর যাদের মনোনীত করেছেন তাদের জন্য আমি সব কিছু সহ্য করি, যাতে তারাও খ্রীষ্ট যীশুতে অনন্ত মহিমার সাথে যে পরিত্রাণ ও অনন্ত জীবন আছে তা লাভ করে।
11 এই কথা বিশ্বাসযোগ্য:
কারণ আমরা যদি তাঁর সঙ্গে মৃত্যুবরণ করে থাকি, তবে তাঁর সঙ্গে জীবিতও থাকব।
12 এখন যদি কষ্ট সহ্য করি তবে তাঁর সাথে রাজত্বও করব।
যদি তাঁকে অস্বীকার করি, তিনিও আমাদের অস্বীকার করবেন।
13 আমরা যদি অবিশ্বস্ত হই, তিনি কিন্তু বিশ্বস্ত থাকেন;
কারণ তিনি নিজেকে অস্বীকার করতে পারেন না।
অনুমোদিত কর্মী
14 তুমি লোকদের এইসব কথা মনে করিয়ে দিও: ঈশ্বরের সামনে তাদের সতর্ক করে দাও যেন লোকেরা বাক্য নিয়ে তর্ক বিতর্ক না করে, কারণ তাতে কোন লাভ হয় না, বরং যারা শোনে তাদের সর্বনাশ হয়। 15 যে কর্মী সঠিকভাবে সত্য শিক্ষাকে ব্যবহার করে এবং নিজের কাজকর্ম সম্বন্ধে লজ্জিত নয় এমন একজন কর্মী হিসেবে ঈশ্বরের অনুমোদন পাবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা কর।
16 কিন্তু বাজে জাগতিক আলোচনা, যার মধ্যে ঈশ্বরের কোন প্রেরণা নেই তার থেকে দূরে থাকো। ঐ ধরণের কথাবার্তা মানুষকে ক্রমে ক্রমে ঈশ্বর থেকে দূরে নিয়ে যায়। 17 যারা এই ধরণের আলোচনা করে তাদের শিক্ষা কর্কট রোগের মতো ছড়িয়ে পড়ে। হুমিনায় ও কিলীত হল এই ধরণের লোক। 18 এরা সত্য শিক্ষা থেকে সরে গেছে। তারা বলছে, মৃতদের পুনরুত্থান হয়ে গেছে। এই দুজন লোক কিছু কিছু লোকের বিশ্বাস নষ্ট করেছে।
19 ঈশ্বর তাঁর মণ্ডলীর জন্য যে শক্ত ভিত স্থাপন করেছেন তা হেলানো যাবে না। সেই ভিতের ওপর এও লেখা আছে, “ঈশ্বর সেই সব লোকদের জানেন যারা তাঁর”(A) এবং “যে কেউ নিজেকে ঈশ্বরের লোক বলে সে মন্দ কাজ হতে অবশ্যই দূরে থাকুক।”
20 কিন্তু কোন বড় বাড়িতে কেবল সোনার ও রূপোর বাসন নয়, কাঠের ও মাটির পাত্রও থাকে, তাদের মধ্যে কিছু বাসন থাকে বিশেষ ব্যবহারের জন্য, আবার কিছু বাসন থাকে সাধারণ ব্যবহারের জন্য। 21 সুতরাং যদি কেউ নিজেকে এইসব মন্দ বিষয় হতে পরিষ্কার করে তবে সে বিশেষ ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত বাসনই হয়ে উঠবে; সেই ব্যক্তি পবিত্র হয়ে উঠবে আর তার কর্তা তাকে ব্যবহার করতে পারবে। সেই ব্যক্তি যে কোন সৎ কাজ করবার জন্য প্রস্তুত থাকবে।
22 তুমি যৌবনের সমস্ত কামনা বাসনা থেকে পালাও এবং যাদের অন্তঃকরণ বিশুদ্ধ, যারা তাদের প্রভুতে ভরসা রাখে, সেই সমস্ত লোকের সাথে বিশ্বাস, ভালবাসা ও শান্তির সাথে সঠিক জীবনযাপনের জন্য আগ্রহী হও। 23 কিন্তু মূর্খতাপূর্ণ ও জ্ঞানহীন তর্কের মধ্যে জড়িয়ে পড়ো না, তুমি জান যে ঐসব শূন্যগর্ভ তর্কবিতর্ক থেকে লড়াইয়ের সৃষ্টি হয়। 24 যে মানুষ প্রভুর সেবক তার কোন বিবাদে জড়িয়ে পড়া ঠিক নয়, সে হবে সকলের প্রতি দয়ালু। প্রভুর সেবককে একজন উত্তম শিক্ষক হতে হবে, তাকে সহিষ্ণু হতে হবে। 25 যারা তার বিরুদ্ধে কথা বলে বিনীতভাবেই তাদের ভুল দেখিয়ে দিতে হবে। হয়তো ঈশ্বর তাদের হৃদয়ের পরিবর্তন করবেন যাতে তারা সত্যকে গ্রহণ করতে পারে। 26 দিয়াবল ঐ লোকদের ফাঁদে ফেলেছে ও তার ইচ্ছা পালন করার জন্য দাসে পরিণত করেছে। কিন্তু এমন হতে পারে যে তারা চেতনা পেয়ে জেগে উঠবে ও বুঝতে পারবে যে শয়তান তাদের নিয়ে খেলছে আর দিয়াবলের ফাঁদ থেকে তারা নিজেদের মুক্ত করতে পারবে।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International