Old/New Testament
হিষ্কিয় ঈশ্বরের কাছে সাহায্যপ্রার্থী
37 রাজা হিষ্কিয় ঐসব ঘটনার কথা শুনেছিলেন। তারপর তিনি তাঁর দুঃখ দেখানোর জন্য নিজের পোশাক ছিঁড়ে ফেললেন। তারপর হিষ্কিয় দুঃখের বিশেষ পোশাক পরলেন এবং প্রভুর মন্দিরে গেলেন।
2 হিষ্কিয় প্রাসাদের পরিচালক ইলিয়াকীম, রাজপরিবারের সচিব শিব্ন ও যাজকদের মধ্যে প্রবীণদের আমোসের পুত্র ভাববাদী যিশাইয়র কাছে পাঠালেন। তাঁরা দুঃখ প্রদর্শনের জন্য বিশেষ পোশাক পরেছিলেন। 3 এঁরা যিশাইয়কে বললেন, “রাজা হিষ্কিয় তাদের আদেশ দিয়েছেন যে আজ দুঃখ ও কষ্ট ভোগের বিশেষ দিন। আজকের দিনটি হবে খুব দুঃখের। আজকের দিনটা হবে সেই দিনটার মতো যখন কোন শিশুর জন্মানোর সময় হয়ে যাবে অথচ মায়ের শরীর থেকে বেরিয়ে আসার মতো বলশালী না হওয়ায় সে বেরোতে পারবে না। 4 সেনাপতির মনিব, অশূরদের রাজা তাকে জীবন্ত ঈশ্বরকে বিদ্রূপ করতে পাঠিয়েছে। তোমাদের প্রভু ঈশ্বর হয়তো ঐসব বিষয়গুলি শুনতেও পারেন। প্রভু হয়তো প্রমাণও করবেন যে শত্রুরা ভুল করছে। সুতরাং যে সব লোকরা বেঁচে আছে তাদের জন্য প্রার্থনা কর।”
5 রাজা হিষ্কিয়ের আধিকারিকরা যিশাইয়র কাছে উপস্থিত হন। 6 যিশাইয় তাদের বললেন, “তোমরা তোমাদের মনিব হিষ্কিয়কে জানাও: প্রভু বলেন, ‘সেনাপতির কথা শুনে ভীত হতে হবে না! অশূর রাজের “নাবালকরা” আমার নামে যেসব কুৎসা করেছে সেগুলি বিশ্বাস করবে না। 7 দেখো আমি অশূরের বিরুদ্ধে একটি আত্মা পাঠাব। অশূরের রাজা তার দেশের বিপদ সম্পর্কিত একটি সতর্কবার্তা পাবে। সুতরাং সে তার দেশে ফিরে যাবে। সেই সময় আমি তাকে তার দেশেই তরবারির আঘাতে হত্যা করব।’”
অশূর সেনার জেরুশালেম ত্যাগ
8 রাজা অশূর একটি খবর পেল। 9 সেই খবরে বলা ছিল, “কূশদেশের রাজা তির্হকঃ তোমার সঙ্গে যুদ্ধ করতে আসছে।” সুতরাং অশূররাজ লাখীশ ত্যাগ করে লিব্না চলে গেলেন। সেনাপতি এই বার্তা পেয়ে লিব্নাতে যুদ্ধরত অশূররাজের কাছে চলে গেলেন।
সে হিষ্কিয়ের কাছে দূত পাঠাল। দূতকে বলল, 10 “তুমি যিহূদা রাজ হিষ্কিয়কে এই কথাগুলি বল:
‘তোমরা যে ঈশ্বরের ওপর আস্থাশীল তার দ্বারা বোকা হয়ো না। একথা বলো না যে, “ঈশ্বর জেরুশালেমকে অশূররাজের কাছে পরাজিত হতে দেবে না।” 11 তোমরা শুনেছ অশূরের রাজা অন্যান্য দেশের কি অবস্থা করেছে। সে তাদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছে। তাহলে তোমরা কি রেহাই পাবে? না! 12 তাদের সেই দেবতারা কি তাদের রক্ষা করেছিল? না! আমার পূর্বপুরুষরাই তাদের সকলকে ধ্বংস করেছে। তারা গোষণ, হারণ, রেত্সফ এবং তলঃসর নিবাসী এদনের লোকদের ধ্বংস করেছে। 13 হমাতের রাজা কোথায়? অর্পদের রাজা কোথায়? সফর্বয়িম নগরের রাজা কোথায়? কোথায় হেনা ও ইব্বার রাজা? তারা সকলেই বিনাশপ্রাপ্ত! তারা সকলেই ধ্বংস হয়েছে।’”
ঈশ্বরের কাছে হিষ্কিয়ের মিনতি
14 হিষ্কিয় বার্তাবাহকের হাত থেকে চিঠিগুলো নিয়ে পড়লেন। তারপর তিনি প্রভুর মন্দিরে গেলেন। তারপর তিনি চিঠিগুলো খুলে প্রভুর সামনে রাখলেন। 15 হিষ্কিয় প্রভুর কাছে প্রার্থনা শুরু করলেন। বললেন: 16 “সর্বশক্তিমান প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আপনি করূব দূতদের ওপরে রাজার মত বসে রয়েছেন। আপনি, একমাত্র আপনিই পৃথিবীর সব রাজ্যের শাসক। আপনিই পৃথিবী ও স্বর্গের সৃষ্টিকর্তা। 17 প্রভু অনুগ্রহ করে আমার কথা শুনুন। প্রভু, চোখ মেলে বার্তাটির দিকে তাকান। জীবন্ত ঈশ্বর, আপনাকে অপমান করবার জন্য সন্হেরীব যেসব কথা লিখেছেন সেগুলি দয়া করে শুনুন। 18 এটাই সত্য, প্রভু। অশূরের রাজা সেই সব দেশগুলিকে বিনাশ করেছে। 19 সেই সব দেশের মূর্ত্তিদেরও অশূররাজ পুড়িয়েছে। কিন্তু তারা সত্যিকারের দেবতা ছিল না। তারা ছিল কেবল মানুষের তৈরি কাঠ ও পাথরের মূর্ত্তি। সেই কারণেই অশূররাজ তাদের ধ্বংস করতে পেরেছিল। 20 কিন্তু আপনিই প্রভু, আমাদের ঈশ্বর! সুতরাং অশূররাজের কবল থেকে আমাদের রক্ষা করুন। তাহলে অন্যান্য সমস্ত দেশগুলিও জানতে পারবে যে আপনিই প্রভু, আপনিই একমাত্র ঈশ্বর।”
হিষ্কিয়কে ঈশ্বরের উত্তর
21 তখন আমোসের পুত্র যিশাইয় হিষ্কিয়ের এই বার্তা পাঠালেন। বার্তাটিতে তিনি বললেন, “প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, ‘তোমরা অশূরের রাজা সন্হেরীবের বার্তার বিষয়ে আমার কাছে যে প্রার্থনা করেছিলে আমি তা শুনেছি।’
22 “এটা হল সন্হেরীবের বিষয়ে প্রভুর বার্তা:
‘অশূরের রাজা, সিয়োনের কুমারী কন্যা (জেরুশালেম) তোমাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে না।
তোমার জন্য সে হাসে।
জেরুশালেম কন্যা, তোমাকে নিয়ে সে মজা করে।
23 কিন্তু তুমি কাকে অপমান ও বিদ্রূপ করেছ?
কার বিরুদ্ধে তুমি কথা বলেছ?
তুমি ইস্রায়েলের পবিত্রতমরই বিরোধী ছিলে।
তুমি এমন হাবভাব করলে যেন তুমি ঈশ্বরের চেয়ে অনেক ভালো।
24 তুমি তোমার আধিকারিকদের প্রভু, আমার ঈশ্বরকে বিদ্রূপ করতে পাঠিয়েছিলে।
তুমি বলেছিলে, “আমি খুব ক্ষমতাসম্পন্ন।
আমার বহু যুদ্ধযান আছে।
আমার শক্তি দিয়েই আমি লিবানোনকে পরাস্ত করেছিলাম।
আমি লিবানোনের সর্ব্বোচ্চ পর্বতে আরোহণ করেছিলাম।
আমি লিবানোনের মহান গাছগুলিকে কেটে ফেলে দিয়েছিলাম।
আমি উচ্চতম পর্বতগুলিতে এবং অরণ্যের গভীরতম অংশে এসেছিলাম।
25 আমি কূপসমূহ খনন করেছিলাম এবং নতুন জায়গা থেকে জলপান করেছিলাম।
আমি আমার হাতের তালু দিয়ে মিশরের নদীকে শূন্য করে দিয়েছিলাম
এবং ঐ দেশের ওপর হেঁটে গিয়েছিলাম।”
26 ‘আমি যা বলেছিলাম তুমি কি তা শোননি?
আমি (ঈশ্বর) অনেকদিন আগে পরিকল্পনা করেছিলাম।
আমি প্রাচীনকালেই পরিকল্পনা করেছিলাম।
এবং এখন আমি তা ঘটাব।
আমি তোমাদের শক্তিশালী শহরগুলিকে ভেঙে ফেলতে
এবং সেগুলিকে পাথরের স্তূপে পরিণত করতে দিয়েছিলাম।
27 এই শহরগুলির লোকগুলোর কোন ক্ষমতা ছিল না।
তারা ছিল ভীত ও বিভ্রান্ত।
তাদের অবস্থা এমন হয়েছিল যেন
এখুনি ওদের প্রায় ঘাসের মত কেটে ফেলা হবে।
বাড়ির ফাটলে গজিয়ে ওঠা ঘাস যেমন বড় হবার আগে মরে যায়,
তেমনিই শহরবাসীদের অবস্থা ছিল।
28 আমি তোমাদের যুদ্ধের বিষয় সব জানি।
আমি তোমাদের বিশ্রামের বিষয়েও জানি।
যখন তোমরা যুদ্ধে যাও তাও আমি জানি।
আমি জানি কখন তোমরা যুদ্ধ থেকে ফিরে আস।
কখন তোমরা আমার ওপর রেগে গিয়েছিলে তাও আমি জানি।
29 হ্যাঁ, তোমরা আমার ওপর রেগে ছিলে।
আমি তোমাদের গর্বিত বিদ্রূপ শুনেছি।
তাই আমি তোমাদের নাকে লাগাম দেব।
এবং মুখে লাগাব ধাতব লাগাম।
তারপর তোমরা যে পথ দিয়ে এসেছ
সেই পথ দিয়েই তোমাদের ফেরাব।’”
হিষ্কিয়দের প্রতি প্রভুর বার্তা
30 তখন প্রভু হিষ্কিয়কে বললেন, “আমি তোমাকে একটি চিহ্ন দেখাব। সেই চিহ্ন প্রমাণ করবে যে এই কথাগুলি সত্যি। তোমরা বীজ বপন করতে সক্ষম ছিলে না, অতএব এই বছর তোমরা গত বছরের শস্য থেকে আপনিই জমানো শস্য খাবে। কিন্তু তিন বছরেই তুমি তোমার নিজের কোন বীজ থেকেই খাবার মতো ফসল পাবে। তুমিই সেই বীজগুলি লাগাবে এবং যথেষ্ট পরিমাণে খাদ্যশস্য পাবে। তুমি দ্রাক্ষাগাছ রোপণ করবে এবং তার ফল খাবে।
31 “যিহূদা পরিবারের সদস্যরা যারা পালিয়ে গিয়েছিল এবং যারা জীবিত রয়েছে তারা আবার বাড়তে থাকবে। তারা হবে সেই সব গাছেদের মত যাদের শিকড় মাটির অনেক গভীরে থাকে আর ফল থাকে মাটির ওপরে। 32 কারণ এখনও কেউ কেউ বেঁচে থাকবে। তারা জেরুশালেমের বাইরে চলে যাবে। সিয়োন পর্বত থেকে জীবিতরা আসতে থাকবে।” সর্বশক্তিমান প্রভুর গভীর ভালোবাসা এইসব ঘটাবে।
33 তাই প্রভু অশূরের রাজার বিষয়ে একথা বলেন:
“সে এই শহরে আসবে না।
সে এই শহরের দিকে তীর ছুঁড়বে না।
সে এই শহরে তার বর্ম আনবে না।
এই শহরকে আক্রমণ করতে সে ঢিবি বানাবে না।
34 সে তার আসার পথে ফিরে যাবে।
সে এই শহরে ফিরে আসবে না।
প্রভু এইসব বলেন!
35 আমি এই শহরটিকে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেব।
আমি আমার নিজের জন্য এবং সেবক দায়ূদের জন্য এসব করব।”
36 সেই রাতে প্রভুর দূত অশূরের শিবিরে গিয়ে 185,000 লোককে হত্যা করলেন। সকালে উঠে লোকেরা দেখল যে চারিদিকে শবদেহ ছড়ানো। 37 তাই অশূররাজ সন্হেরীব নীনবীতে ফিরে গিয়ে সেখানেই বসবাস করা শুরু করল।
38 একদিন সন্হেরীব তার দেবতা নিষ্রোকের মন্দিরে গিয়ে তার উপাসনা করছিল। সেই সময় তার দুই পুত্র অদ্রম্মেলক ও শরেৎসর তাকে তরবারির আঘাতে হত্যা করল। তারপর তারা অরারট দেশে পালাল। আর সন্হেরীব পুত্র এসর-হদ্দোন অশূরের নতুন রাজা হল।
হিষ্কিয়ের অসুস্থতা
38 সেই সময় হিষ্কিয় অসুস্থ হয়ে মৃতপ্রায় হয়ে পড়েছিলেন। আমোসের ভাববাদী যিশাইয় তাঁকে দেখতে যান। যিশাইয় রাজাকে বললেন, “প্রভু আমাকে এই কথাগুলি আপনাকে বলতে বলেছেন: ‘তুমি শীঘ্র মারা যাবে। সুতরাং তুমি তোমার পরিবার পরিজনকে জানিয়ে যাও তোমার মৃত্যু হলে তাদের কি করা উচিৎ। তুমি আর সুস্থ হয়ে উঠবে না।’”
2 হিষ্কিয় উপাসনা গৃহের দিকে মুখ করে প্রার্থনা শুরু করলেন। তিনি বললেন, 3 “প্রভু স্মরণ করে দেখুন আমি সর্বান্তঃকরণে আপনার প্রকৃত সেবা করেছি। আপনি যেসব জিনিসকে ভাল বলেছেন আমি কেবল সে সবই করেছি।” তারপর হিষ্কিয় কান্নায় ভেঙে পড়লেন।
4 যিশাইয় প্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা পেলেন: 5 “হিষ্কিয়ের কাছে গিয়ে তাকে বল যে প্রভু, তোমার পূর্বপুরুষ দায়ূদদের ঈশ্বর বলেছেন, ‘আমি তোমার প্রার্থনা শুনেছি। আমি তোমার চোখের জল দেখেছি, তাই আমি তোমার আয়ু আরো 15 বছর বাড়িয়ে দেব। 6 আমি তোমাকে এবং এই শহরকে অশূর রাজের হাত থেকে রক্ষা করব।’”
7 প্রভু যা যা করবেন বলেছিলেন তার জন্য এই সেই প্রভুর সঙ্কেত চিহ্ন: 8 “তোমার সময় নির্ণায়ক সৌরঘড়ি আহসের সিঁড়ির দিকে তাকাও। দশ পা পিছিয়ে আসার জন্য আমি সিঁড়িতে ছায়া তৈরী করছি। সূর্যের ছায়া দশ ধাপ ফিরে যাবে যেখানে আগে সেটি ছিল।” সেই সময় যিশাইয় হিষ্কিয়কে বললেন, “তুমি ডুমুর ফল থেঁতো করে তোমার ক্ষত ঘায়ের ওপর রাখ। তারপর তুমি সুস্থ হয়ে উঠবে।”
9 হিষ্কিয় সুস্থ হওয়ার পর চিঠি লেখেন। চিঠিটি হল:
10 আমি মনে মনে বলেছিলাম বৃদ্ধ হবার জন্য বাঁচব।
তবে সেই সময়টা ছিল আমার মৃত্যুপথযাত্রী লোকদের মতো পাতালের ফটকে যাওয়ার সময়।
এখন আমার সমস্ত সময় আমি সেখানেই অতিবাহিত করব।
11 সুতরাং আমি বলেছিলাম: “জীবিতদের দেশে আমি আর কখনও প্রভু ইয়াকে দেখতে পাবো না।
আমি আর কখনও পৃথিবীতে লোকদের জীবিত দেখতে পাব না।
12 আমার জীবনকে তছনছ করে আমার কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
তাঁতী যেমন তাঁত থেকে কাপড়ের টুকরো কেটে নেয় তেমন করে আমি আমার জীবনকে কেটে ছোট করেছি।
এক দিনেই আপনি আমায় শেষ করে দিয়েছেন।
13 সারা রাত ধরে আমি সিংহের মত চিৎকার করে কেঁদেছিলাম।
কিন্তু সিংহের হাড় খাবার মত আমার সব আশা-আকাঙ্খা ভেঙে চূরমার হয়ে গিয়েছিল।
মাত্র এক দিনে আপনি আমার জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটিয়েছিলেন।
14 আমি একটি ঘুঘুর মতো কেঁদেছিলাম,
আমার চোখগুলি ক্লান্ত হয়েছিল,
কিন্তু তবুও আমি স্বর্গের দিকে তাকিয়ে ছিলাম।
আমার প্রভু, মাত্র একদিনের মধ্যে আপনি আমার জীবনের পরিসমাপ্তি এনেছেন।
আমি খুবই সংকটের মধ্যে রয়েছি।
আমাকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিন।”
15 আমি কি বলতে পারি?
আমার প্রভু আমাকে বলেছিলেন কি কি ঘটবে
এবং তিনিই সে ব্যক্তি যিনি সে সব ঘটাবেন!
এইসব সমস্যা বরাবরই আমার আত্মায় রয়েছে।
তাই গোটা জীবন ধরেই আমি এখন নম্র থাকব।
16 প্রভু আমার এই কঠিন সময়কে আমার আত্মার পুনরুজ্জীবনের জন্য ব্যবহার করুন।
আমার আত্মাকে শক্ত ও স্বাস্থ্যবান করতে সহায়তা দান করুন।
আমাকে সুস্থ হতে সাহায্য করুন।
আমাকে পুনরায় বাঁচতে সাহায্য করুন।
17 দেখ আমার সমস্যা চলে গেছে।
এখন আমার শান্তি আছে।
আপনি আমাকে খুব ভালবাসেন।
আপনি আমাকে কবরে পচতে দেননি।
আপনি আমার সব পাপকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।
দূরে ফেলে দিয়েছেন।
18 মৃত লোকরা আপনার প্রশংসার গান গায় না।
পাতালে লোকরা আপনার প্রশংসা করে না।
মৃত লোকরা সাহায্যের জন্য আপনার উপর বিশ্বাস রাখে না।
তারা মাটির ভেতরে একটা গর্তে চলে যায়।
আর, কখনও কথা বলতে পারে না।
19 লোকরা যারা আজ আমার মত বেঁচে আছে,
তারাই আপনার প্রশংসা করে।
একজন পিতার তার সন্তানদের বলা উচিৎ যে আপনার প্রতি আস্থা রাখা যায়।
20 তাই আমি বলি: “প্রভু আমাকে রক্ষা করেছেন।
তাই আমরা প্রভুর মন্দিরে জীবনভর গান গেয়ে এবং গান বাজিয়ে যাব।”
21 তারপর যিশাইয় হিষ্কিয়কে বললেন, “প্রভুর কাছ থেকে এমন কি সঙ্কেত পেয়েছেন যে তার থেকে প্রমাণিত হয় আমি আবার ভালো হয়ে উঠব?”
22 হিষ্কিয় যিশাইয়কে জিজ্ঞেস করলেন, “এমন কি সঙ্কেত যার থেকে বোঝা যাবে যে আমি আবার প্রভুর মন্দিরে যেতে সক্ষম হব?”
খ্রীষ্টে তোমার নতুন জীবন
3 খ্রীষ্টের সঙ্গে তোমরা মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছ; তাই স্বর্গীয় বিষয়গুলির জন্য চেষ্টা কর, যেখানে খ্রীষ্ট ঈশ্বরের দক্ষিণ পাশে বসে আছেন। 2 সেই স্বর্গীয় বিষয়সকলের কথা ভাব, যে সকল বিষয়বস্তু জগতে আছে সেগুলির বিষয় নয়। 3 কারণ তোমাদের পুরানো সত্ত্বার মৃত্যু হয়েছে আর তোমাদের নতুন জীবন খ্রীষ্টের সঙ্গে ঈশ্বরের মধ্যে নিহিত আছে। 4 খ্রীষ্ট যখন ফিরে আসবেন, তখন তোমরাও তাঁর সঙ্গে মহিমামণ্ডিত হয়ে প্রকাশিত হবে।
5 তাই তোমাদের জাগতিক স্বভাব থেকে সব মন্দ বিষয় দূর করে দাও। যেমন: যৌনপাপ, অপবিত্রতা, অশুচি চিন্তার বশবর্তী হওয়া, মন্দ বিষয়ের লালসা করা এবং লোভ। লোভ এক প্রকার প্রতিমা পূজা। 6 এইসবের জন্য ঈশ্বরের ক্রোধ হচ্ছে। 7 তোমাদের অতীতের পাপময় জীবনে তোমরা সেইসব মন্দ কাজে লিপ্ত ছিলে।
8 কিন্তু এখন তোমাদের জীবন থেকে রাগ, ক্রোধ, ঘৃণাপূর্ণ অনুভূতি, অপমানসূচক আচরণ এবং লজ্জাজনক আলাপ সব দূর করে দাও। 9 পরস্পরের কাছে মিথ্যা বলো না, কারণ তোমরা তোমাদের পুরানো পাপময় সত্ত্বাকে তার সমস্ত মন্দ কর্ম সমেত ত্যাগ করেছ। 10 তোমরা নতুন সত্ত্বাকে পরিধান করেছ; এই নতুন জীবনে তোমাদের নতুন করে তৈরী করা হচ্ছে। তোমাদের যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমরা তাঁর মতো হয়ে উঠছ, এই নতুন জীবনের মাধ্যমে তোমরা ঈশ্বরের সত্য পরিচয় পাচ্ছ। 11 এই নতুন জীবনে ইহুদী কি গ্রীক এর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। যাদের সুন্নত হয়েছে আর যাদের সুন্নত হয় নি, অথবা কোন বিদেশী বা বর্বর এদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। ক্রীতদাস বা স্বাধীনের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। খ্রীষ্ট ঐসব বিশ্বাসীদের মধ্যে বাস করেন। একমাত্র খ্রীষ্টই হলেন প্রয়োজনীয় বিষয়।
পরস্পরের সাহচর্য্যে তোমাদের নতুন জীবন
12 ঈশ্বর তোমাদের মনোনীত করেছেন ও তোমাদের তাঁর পবিত্র লোক বলে নিরূপণ করেছেন। তিনি তোমাদের ভালবাসেন, তাই এইসব ভাল গুণগুলি ধরে রেখে সহানুভূতিপূর্ণ, দয়ালু, নম্র, ভদ্র এবং ধৈর্য্য্যবান হও। 13 পরস্পরের প্রতি ক্রুদ্ধ ভাব রেখো না কিন্তু একে অপরকে ক্ষমা কর। কেউ যদি তোমার বিরুদ্ধে কোন অন্যায় করে, তবে একে অপরকে ক্ষমা করো। অপরকে ক্ষমা করো, কারণ প্রভু তোমাদের ক্ষমা করেছেন। 14 এসব তো করবেই কিন্তু সবার ওপরে পরস্পরের প্রতি ভালবাসা রেখো, সেই ভালোবাসা তোমাদের একসূত্রে গাঁথে আর পরিপূর্ণতা দেয়। 15 প্রভু খ্রীষ্ট যে শান্তি দেন তা তোমাদের অন্তরের সমস্ত চিন্তাকে সংযত রাখুক। তোমরা তো সেই কারণেই শান্তি পেতে একদেহে আহূত হয়েছ। তোমরা সব সময় কৃতজ্ঞ থাক।
16 খ্রীষ্টের শিক্ষা তোমাদের অন্তরে প্রচুর পরিমাণে থাকুক। সকল বিজ্ঞতা ব্যবহার করে পরস্পরকে বলিষ্ঠ কর এবং শিক্ষা দাও। কৃতজ্ঞচিত্তে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে গীতসংহিতার গীত, প্রশংসার গীত এবং আত্মিক গীত গাও। 17 কথায় বা কাজে যা কিছু করো, সবই প্রভুর নামে কর এবং পিতা ঈশ্বরকে যীশুর মাধ্যমে ধন্যবাদ দাও।
অন্যের সঙ্গে তোমার নতুন জীবন
18 স্ত্রীরা, তোমরা তোমাদের স্বামীর অনুগতা থাক, এটাই হবে প্রভুর অনুসারীদের উপযুক্ত কাজ।
19 স্বামীরা, তোমরা তোমাদের স্ত্রীকে ভালবাস, তাদের সঙ্গে মধুর ব্যবহার করো।
20 সন্তানরা, তোমরা সব বিষয়ে তোমাদের বাবা-মার বাধ্য হয়ো, এতে প্রভু সন্তুষ্ট হন।
21 পিতারা তোমরা তোমাদের সন্তানদের বিরক্ত করো না, তাদের খুশী মতো চলতে না পারলে তারা উৎসাহ হারাবে।
22 ক্রীতদাসরা, তোমাদের মনিবদের সব বিষয়ে মান্য করবে। তাঁরা দেখুন বা না দেখুন তোমরা সব সময় তাঁদের বাধ্য থেকো। এতে তোমরা মানুষকে খুশী করতে নয়, কিন্তু প্রভুকেই খুশী করতে চেষ্টা করছ, সুতরাং সততার সঙ্গে মনিবদের মান্য করো, কারণ তোমরা প্রভুকে সম্মান করো। 23 তোমরা সমস্ত কাজ আন্তরিকতার সঙ্গে করো। মানুষের জন্য যে করছ তা নয়, কিন্তু প্রভুর কাজ মনে করেই কাজ করে যাও। 24 মনে রেখো, প্রভুর কাছ থেকেই তোমরা তার পুরস্কার পাবে। ঈশ্বর তাঁর আপনজনদের দেবেন বলে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তোমরা তার অংশীদার হবে। তোমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টেরই সেবা করছ। 25 মনে রেখো, কেউ যদি অন্যায় কাজ করে, সেই ব্যক্তিকে তার অন্যায় কাজের জন্য শাস্তি পেতে হবে। প্রভু সকলকেই সমভাবে বিচার করেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International