Old/New Testament
43 হে ঈশ্বর, একজন লোক আছে যে আপনার একনিষ্ঠ ভক্ত নয়।
সে লোক অত্যন্ত ঠগ ও মিথ্যাবাদী।
হে ঈশ্বর, আমাকে ঐ লোকটার হাত থেকে রক্ষা করুন!
আমাকে প্রতিরক্ষা করুন এবং প্রমাণ করে দিন যে আমি নির্দোষ।
2 ঈশ্বর, আপনিই আমার দূর্গস্বরূপ!
প্রভু, কেন আপনি আমায় ত্যাগ করে গেছেন?
কেন আমি আমার পীড়নকারী
শত্রুর হাতে এত বিপর্যস্ত হবো?
3 হে ঈশ্বর, আপনার সত্য এবং আলো আমার ওপর বিকীর্ণ হোক্।
আপনার আলো ও সত্য আমায় পথ দেখাবে।
ঐগুলো আমায় আপনার পবিত্র পর্বতে নিয়ে যাবে।
ঐগুলো আমাকে আপনার গৃহের পথ দেখাবে।
4 আমি ঈশ্বরের বেদীর কাছে যাবো।
আমি সেই ঈশ্বরের কাছে যাবো, যিনি আমায় এত সুখী করেছেন।
ঈশ্বর, হে আমার ঈশ্বর,
আমি বীণা বাজিয়ে আপনার প্রশংসা করবো।
5 কেন আমি এত দুঃখিত?
কেন আমি এত অবসন্ন?
আমার ঈশ্বরের সাহায্যের জন্য প্রতীক্ষা করা উচিৎ।
আমি তবুও প্রভুর প্রশংসা করবার একটা সুযোগ পাব।
তিনি আমায় রক্ষা করবেন!
পরিচালকের প্রতি: কোরহ পরিবার থেকে একটি মস্কীল।
44 ঈশ্বর, আমরা আপনার সম্পর্কে শুনেছি।
আমাদের পিতৃপুরুষরা বলে গেছেন তাঁদের জীবদ্দশায় আপনি কি করেছেন।
তাঁরা বলে গেছেন সুদূর অতীতে আপনি কী করেছেন।
2 ঈশ্বর আপনার পরাক্রমী শক্তিবলে এই ভূখণ্ড
আপনি অন্যের কাছ থেকে নিয়ে আমাদের দিয়েছেন।
সেই সব ভিন দেশী লোকেদের আপনি একেবারে ধূলিস্যাৎ করে দিয়েছেন।
এই ভূখণ্ড ছেড়ে যেতে আপনি তাদের বাধ্য করেছেন।
3 আমাদের পিতৃপুরুষরা তাঁদের তরবারির জোরে এই ভূখণ্ড অধিকার করেন নি।
তাঁদের বলিষ্ঠ বাহুর জোরে তাঁরা জয়ী হন নি।
এইসব হয়েছে কারণ, আপনি আমাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে ছিলেন।
ঈশ্বর আপনার বিপুল শক্তি আমার পিতৃপুরুষদের রক্ষা করেছে।
কেন? কারণ আপনি তাদের ভালোবাসতেন!
4 হে ঈশ্বর, আপনিই আমার রাজা।
আপনি আজ্ঞা দিন এবং যাকোবের লোকদের জয়ের পথে পরিচালিত করুন।
5 হে ঈশ্বর, আপনার সাহায্য নিয়েই আমরা আমাদের শত্রুকে পিছু হটিয়ে দেবো।
আপনার ক্ষমতা নিয়ে আমরা আমাদের শত্রুদের ওপর অনায়াসে বিজয়ী হব।
6 আমি আমার তীর-ধনুকে আস্থা রাখি না।
আমি জানি অন্ততঃ আমার তরবারি আমাকে রক্ষা করবে না।
7 ঈশ্বর আপনিই আমাদের শত্রুর হাত থেকে বাঁচিয়েছেন।
আপনিই শত্রুদের লজ্জার মুখে ঠেলে দিয়েছেন।
8 হে ঈশ্বর, সারাদিন ধরে আমরা আপনার প্রশংসা করেছি!
চিরকাল আমরা আপনার প্রশংসা করবো!
9 কিন্তু হে ঈশ্বর আপনি আমাদের ত্যাগ করেছেন।
আপনি আমাদের বিব্রত করেছেন। আপনি আমাদের সঙ্গে যুদ্ধে আসেন নি।
10 আপনিই আমাদের শত্রুদের আমাদের ঠেলে সরিয়ে দেবার সুযোগ করে দিয়েছেন।
শত্রুরা আমাদের সম্পদ নিয়ে গেছে।
11 আপনি আমাদের সেই মেষের মত ফেলে রেখেছিলেন যাদের বধ করতে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেই সব মেষের মত আমাদের পরিত্যাগ করেছেন।
আমাদের আপনি বিদেশী জাতিগুলির মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
12 হে ঈশ্বর, আপনি আপনার লোকদের নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করেছেন।
এমনকি আপনি মূল্য নিয়েও কোন তর্ক করলেন না।
13 প্রতিবেশীদের কাছে আপনি আমাদের হাস্যাস্পদ করে তুললেন।
ওরা আমাদের নিয়ে হাসাহাসি ও মজা করে।
14 আমরা এখন লোকমুখে হাসির গল্পের মত।
এমনকি সেই সব লোক যাদের নিজেদের কোন জাতি নেই তারাও আমাদের দেখে মাথা নাড়িয়ে হাসে।
15 আমি লজ্জায় ডুবে রয়েছি।
সারাদিন ধরে আমি আমার লজ্জাকেই দেখি।
16 যারা আমার প্রতি প্রতিশোধ নিতে ইচ্ছুক,
সেই সব শত্রুর উপহাস এবং অপমান থেকে আমি লজ্জায় নিজেকে লুকিয়ে রাখি।
17 ঈশ্বর, আমরা আপনাকে ভুলি নি।
তথাপি আপনি আমাদের প্রতি ঐসব করলেন।
যখন আপনার চুক্তিতে আমরা স্বাক্ষর করেছিলাম,
তখন আমরা আপনার সঙ্গে মিথ্যাচার করি নি!
18 ঈশ্বর, আমরা আপনার কাছ থেকে মুখ ঘুরিয়ে দূরে চলে যাই নি।
আমরা আপনাকে অনুসরণ করা থেকে বিরত হই নি।
19 কিন্তু হে ঈশ্বর, যেখানে শেয়ালের বাস, সেখানে আপনি আমাদের গুঁড়িয়ে ফেললেন।
মৃত্যুর মত নীরন্ধ্র অন্ধকারে আপনি আমাদের ত্যাগ করে চলে গেছেন।
20 আমরা কি আমাদের ঈশ্বরের নাম ভুলে গিয়েছিলাম?
আমরা কি অন্য কোন দেবতার কাছে প্রার্থনা করেছিলাম?
না! আমরা তা করি নি।
21 নিশ্চিতভাবে ঈশ্বর এইসব জানেন।
আমাদের গভীরতম গোপন কথা পর্যন্ত তিনি জানেন।
22 ঈশ্বর, সারাদিন ধরে আমরা আপনার জন্য প্রাণ দিয়েছি!
যে সব মেষদের কেটে ফেলা হবে আমরা তাদের মতই হয়েছি।
23 হে আমার প্রভু, উঠুন!
কেন আপনি ঘুমাচ্ছেন?
উঠুন! চিরদিনের জন্য আমাদের ত্যাগ করবেন না!
24 প্রভু, কেন আপনি আমাদের থেকে লুকোচ্ছেন?
আপনি কি আমাদের দুঃখ যন্ত্রণা ভুলে গেছেন?
25 আমাদের ধূলোর মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
ধূলোতে উদর ঠেকিয়ে আমরা পড়ে আছি।
26 ঈশ্বর, উঠুন এবং আমাদের সাহায্য করুন!
আপনার চিরন্তণ প্রেম প্রদর্শন করে আমাদের উদ্ধার করুন!
পরিচালকের প্রতি: “শোশন্নীম” গানটি যে পর্দায় গাওয়া সেই পর্দায় গাওয়া। কোরহ পরিবার থেকে মস্কীল একটি গীত। একটি প্রেম গীত।
45 রাজার জন্য যখন আমি এই গানটি লিখছি,
আমার মন চমৎকার শব্দসমূহে ভরে যাচ্ছে।
একজন দক্ষ লেখকের কলমে যেমন শব্দ আসে,
তেমনি ভাবে আমার মুখে শব্দগুলো আসছে।
2 যে কোন লোকের থেকেই তুমি সুন্দর!
তুমি একজন দারুণ বক্তা।
তাই ঈশ্বর সর্বদাই তোমাকে আশীর্বাদ করবেন!
3 তোমার তরবারি কোমরে বেঁধে নাও।
তোমার গৌরবময় উর্দি পরে নাও।
4 তোমাকে বড় সুন্দর দেখায়! যাও, ন্যায় এবং সত্যের যুদ্ধে বিজয়ী হও।
তোমার বলবান ডান হাত বিস্ময়কর কাজ করবার শিক্ষা পেয়েছে।
5 হে রাজা আপনার ধারালো তীরসমূহ আপনার শত্রুদের হৃদয়ের গভীরে বিদ্ধ হয়েছে, আপনার সামনেই তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়বে।
আপনি চিরকাল আপনার শত্রুদের ওপরে শাসন করবেন।
6 হে ঈশ্বর, আপনার সিংহাসন চিরবিরাজমান থাকবে!
আপনি ন্যায়সঙ্গতভাবে শাসন করেন।
7 আপনি ন্যায় ভালোবাসেন এবং আপনি মন্দ ঘৃণা করেন।
তাই ঈশ্বর, আপনার ঈশ্বর
আপনাকে আপনার অনুগামীদের রাজা করেছেন।
8 আপনার পোশাক চন্দন, ঘৃতকুমারী ও দারুচিনির গন্ধে সুবাসিত।
হাতির দাঁতের কাজ করা আপনার প্রাসাদ থেকে আপনার বিনোদনের জন্য সঙ্গীত ভেসে আসছে।
9 আপনার সভা-নন্দিনীরা সকলেই রাজকন্যা, রাণী
আপনার ডানদিকে খাঁটি সোনার রাজমুকুট পরে বসে আছেন।
10 হে আমার নারী, আমার কথা শোন।
খুব মন দিয়ে শোন, তাহলে তুমি বুঝতে পারবে।
নিজের লোকজন
এবং বাপের বাড়ীর কথা ভুলে যাও।
11 তাহলে রাজা তোমার রূপে খুশী হবেন।
তিনি তোমার নতুন প্রভু হবেন।
তাই তাঁকে তোমার সম্মান করা উচিৎ।
12 সোর প্রদেশের ধনী লোকরা, তোমার সাক্ষাৎ পাবার জন্য
তোমার কাছে মূল্যবান উপহার সামগ্রী নিয়ে আসবে।
13 সোনার সুতো দিয়ে বোনা তাঁর পোশাকে
রাজকন্যাকে দেখতে মহিযসী লাগছে।
14 সেই সুন্দর পোশাক পরে যখন তিনি রাজার কাছে যাবেন
তখন রাজার সভা-নন্দিনীরা তাঁর পিছন পিছন যাবে।
15 নাচে, গানে, আনন্দে মশগুল হয়ে
তারা রাজপ্রাসাদের দিকে যাবে।
16 হে রাজা, আপনার পরে, রাজ্য শাসন করার জন্য
আপনি অনেক পুত্র সন্তান পাবেন। যাতে আপনার পরে তারা রাজ্য শাসন করতে পারে।
17 আমি আপনার নাম চিরদিনের জন্য বিখ্যাত করে যাবো।
লোকে চিরকাল আপনার প্রশংসা করে যাবে!
27 এইভাবে ঝড়ের মধ্যে চৌদ্দ রাত আদ্রিয়া সমুদ্রে ইতস্ততঃ ভাসমান অবস্থায় থাকার পর মাঝ রাতে নাবিকদের মনে হল যে জাহাজটি কোন ডাঙার দিকে এগিয়ে চলেছে। 28 সেখানে তারা জলের গভীরতা মাপলে দেখা গেল তা একশো কুড়ি ফুট। এর কিছু পরে আবার জল মাপলে জলের গভীরতা নব্বুই ফুটে দাঁড়াল। 29 তারা ভয় করতে লাগল যে জাহাজটি হয়তো কিনারে পাথরের গায়ে ধাক্কা খাবে। তাই নাবিকরা জাহাজের পেছন দিক থেকে চারটি নোঙর নামিয়ে দিল, প্রার্থনা করল যেন শীঘ্র ভোর হয়। 30 নাবিকদের মধ্যে কেউ কেউ জাহাজ ছেড়ে পালাবার মতলব করল, তাই নোঙর ফেলার আছিলায় জাহাজের মধ্য থেকে ডিঙিখানি নীচে নামিয়ে দিল। 31 কিন্তু পৌল সেনাপতি ও সৈন্যদের উদ্দেশ্যে বললেন, “এই লোকরা যদি জাহাজে না থাকে তবে আপনারা রক্ষা পাবেন না।” 32 তখন সৈন্যরা ডিঙির দড়ি কেটে দিল, আর তা জলে গিয়ে পড়ল।
33 এরপর ভোর হয়ে এলে পৌল সকলকে কিছু খেয়ে নেবার জন্য অনুরোধ করে বললেন, “আজ 14 দিন হল আপনারা অপেক্ষা করে আছেন, কিছু না খেয়ে উপোস করে আছেন। 34 আমি আপনাদের অনুরোধ করছি কিছু খেয়ে নিন, বেঁচে থাকার জন্য এর প্রয়োজন আছে, কারণ আপনাদের কারোর একগাছি চুলেরও ক্ষতি হবে না।” 35 এই কথা বলে পৌল রুটি নিয়ে তাদের সকলের সামনে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন, আর তা ভেঙে খেতে শুরু করলেন। 36 তখন সকলে উৎসাহ পেয়ে খেতে শুরু করল। 37 (আমরা মোট 276 লোক জাহাজে ছিলাম।) 38 সকলে পরিতৃপ্তির সঙ্গে খাবার পর বাকী শস্য সমুদ্রে ফেলে দিয়ে জাহাজটি হাল্কা করা হল।
জাহাজ ধ্বংস হল
39 দিন হলে পর তারা সেই জায়গাটা চিনতে পারল না; কিন্তু এমন এক খাড়ি দেখতে পেল যার বড় বালুতট ছিল। তারা ঠিক করল যদি সম্ভব হয় তবে ঐ বালুতটের ওপরে জাহাজটা তুলে দেবে। 40 এই আশায় তারা নোঙ্গর কেটে দিল আর তা সমুদ্রেই পড়ে রইল। এরপর হালের বাঁধন খুলে দিয়ে বাতাসের সামনে পাল তুলে সেই বেলাভূমি লক্ষ্য করে এগিয়ে চলল। 41 কিন্তু একটু এগোতেই তারা বালিয়াড়িতে ধাক্কা পেল, জাহাজের সামনের দিকটা বালিতে বসে গিয়ে অচল হয়ে পড়ল, ফলে ঢেউয়ের আঘাতে পিছনের দিকটা ভেঙে যেতে লাগল।
42 তখন সৈন্যরা বন্দীদের হত্যা করবে বলে ঠিক করল, পাছে তাদের কেউ সাঁতার কেটে পালায়। 43 কিন্তু সেনাপতি পৌলকে বাঁচাবার আশায় তাদের এই কাজ করতে নিষেধ করলেন, হুকুম দিলেন যেন যারা সাঁতার জানে তারা ঝাঁপ দিয়ে আগে ডাঙ্গায় ওঠে। 44 বাকী সকলে যেন জাহাজের ভাঙ্গা তক্তা বা কোন কিছু ধরে কিনারে যেতে চেষ্টা করে। এইভাবে সকলেই নিরাপদে তীরে এসে পৌঁছলো।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International