Old/New Testament
দায়ূদের একটি গীত।
26 প্রভু, আমার বিচার করুন। আমি যে সৎ পথে জীবনযাপন করেছি তা প্রমাণ করে দিন।
আমি কখনও প্রভুতে আস্থা রাখা থেকে বিরত হই নি।
2 প্রভু আমায় পরীক্ষা করুন,
আমার হৃদয় ও মনকে খুব ভালোভাবে দেখুন।
3 আমি সর্বদাই আপনার কোমল ভালোবাসা দেখতে পাই।
আপনার সত্যে আমি বাঁচি।
4 আমি মিথ্যাবাদী ও কপটাচারীদের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করি না।
আমি ঐসব অকেজো লোকদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হই না।
5 ঐসব অপরাধীদের দলগুলিকে আমি ঘৃণা করি।
ঐসব শয়তানদের দলে আমি যোগ দেবো না।
6 হে প্রভু আমি যে নিস্পাপ তা দেখাতে
এবং আপনার যজ্ঞবেদীতে যাওয়ার জন্য আমি আমার হাত ধুই।
7 প্রভু আমি আপনার প্রশংসা গান গাই।
আপনার সৃষ্টিকরা আশ্চর্য বিষয় সম্পর্কে আমি গান গাই।
8 প্রভু আমি আপনার মন্দিরকে ভালোবাসি।
আমি আপনার মহিমাময় তাঁবু ভালোবাসি।
9 প্রভু আমাকে ঐসব পাপীদের দলভুক্ত করবেন না।
ঐসব খুনীদের সঙ্গে আমার জীবন গ্রহণ করবেন না।
10 ঐ লোকগুলো সব সময় অন্যদের প্রতারিত করে।
খারাপ কাজ করার জন্য ওরা সর্বদাই উৎকোচ নিতে প্রস্তুত।
11 কিন্তু আমি নির্দোষ।
তাই হে ঈশ্বর, আমার প্রতি সদয় হোন এবং আমায় রক্ষা করুন।
12 সব বিপদ থেকে আমি সুরক্ষিত।
হে প্রভু, আমি আপনার মণ্ডলীগণের সামনে আপনার প্রশংসা করি।
দায়ূদের একটি গীত।
27 প্রভু, আপনিই আমার জ্যোতি এবং আমার পরিত্রাতা।
আমি কাউকেই ভয় পাবো না!
প্রভুই আমার জীবনের সুরক্ষা স্থান,
তাই কোন লোককেই আমি ভয় পাবো না।
2 মন্দ লোকেরা আমায় আক্রমণ করতে পারে
এবং আমার শত্রুরা আমায় ধ্বংস করবার চেষ্টা করতে পারে,
তখন তারা হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবে।
3 যদি একদল সৈন্যও আমার চারদিকে ঘিরে থাকে, আমি ভয় করবো না।
এমনকি যুদ্ধে যদি লোকজন আমায় আক্রমণ করে, আমি ভয় করবো না। কেন? কারণ আমি প্রভুকে বিশ্বাস করি।
4 প্রভুর কাছ থেকে আমি কেবলমাত্র একটা জিনিসই চাইবো:
আমাকে সারাজীবন মন্দিরে তাঁর সৌন্দর্য্য দেখবার জন্য
এবং তাঁকে সাক্ষাৎ করবার জন্য
প্রভুর মন্দিরে বসে থাকতে দিন।
5 যখন আমি বিপদগ্রস্ত তখন প্রভুই আমায় রক্ষা করবেন।
তাঁর তাঁবুতেই তিনি আমায় লুকিয়ে রাখবেন।
তিনি আমাকে তাঁর নিরাপদ আশ্রয়ে তুলে নেবেন।
6 আমার শত্রুরা আমায় ঘিরে রয়েছে, কিন্তু ওদের পরাজিত করতে প্রভু আমায় সাহায্য করবেন!
তারপর আমি তাঁর তাঁবুতে বলি উৎসর্গ করবো।
আনন্দধ্বনি করে আমি উৎসর্গ নিবেদন করব।
প্রভুর সম্মানে আমি গান-বাজনা করবো।
7 প্রভু আমার কথা শুনুন।
আমায় উত্তর দিন এবং আমার প্রতি সদয় হোন।
8 প্রভু, আমি আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাই।
আমার অন্তর থেকে আমি আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাই।
আপনার সঙ্গে কথা বলার জন্য আমি আপনার সামনে এসেছি।
9 প্রভু, আপনার দাস আমি, আমার দিক থেকে আপনি মুখ ফিরিয়ে নেবেন না।
আমায় সাহায্য করুন এবং আমায় সরিয়ে দেবেন না!
আমায় ফেলে চলে যাবেন না! ঈশ্বর আমার, আপনিই আমার পরিত্রাতা।
10 আমার মা বাবা আমায় ছেড়ে চলে গেছেন।
কিন্তু প্রভু আমায় গ্রহণ করেছেন।
তিনি আমায় তাঁর আপনজন করে নিয়েছেন।
11 প্রভু আমার প্রচুর শত্রু আছে।
তাই আপনার পথ আমায় শেখান।
আমায় সঠিক কাজ করতে শেখান।
12 প্রভু, আমার বিরোধী পক্ষকে আমায় পরাজিত করতে দেবেন না।
কারণ মিথ্যে সাক্ষীরা আদালতে আমার বিরুদ্ধে কথা বলেছে।
আমার বিরুদ্ধে হিংসাত্মক কার্যকলাপ উদ্রেক করবার জন্য
তারা এটা করেছিল।
13 আমি প্রকৃতই বিশ্বাস করি যে, আমার মৃত্যুর পূর্বে[a] আমি প্রভুর ধার্মিকতা দেখে যাবো।
14 প্রভুর সাহায্যের জন্য অপেক্ষা কর।
শক্তিমান ও সাহসী হও
এবং প্রভুর সাহায্যের জন্য অপেক্ষা কর!
দায়ূদের একটি গীত।
28 হে প্রভু, আপনি আমার শিলা।
আপনার সাহায্যের জন্য আমি আপনাকে ডাকছি।
আমার প্রার্থনা থেকে কান ফিরিয়ে নেবেন না।
যদি আপনি আমার ডাকে সাড়া না দেন,
লোকে ভাববে আমি কবরের মৃত ব্যক্তির চেয়ে উন্নত কিছু নই।
2 প্রভু, আমার দু হাত তুলে আপনার পবিত্রতম স্থানে আমি প্রার্থনা জানাই।
যখন আমি আপনাকে ডাকি আমার ডাক শুনুন।
আমার প্রতি কৃপা প্রদর্শন করুন।
3 প্রভু, আমাকে খারাপ লোকদের একজন ভাববেন না।
তারা তাদের প্রতিবেশীদের বন্ধুভাবে অভিবাদন করে।
কিন্তু মনে মনে তারা প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে মন্দ ফন্দি আঁটে।
4 প্রভু, ঐসব লোক অন্যান্য লোকদের প্রতি মন্দ আচরণ করে।
অতএব তাদের যাতে খারাপ হয় তাই করুন।
যেমন ওরা অন্যদের করেছিল।
5 মন্দ লোকরা কখনই প্রভুর ভালো কাজগুলো বুঝতে পারে না।
প্রভু যে সব ভালো কাজ করেন তা তারা দেখে না।
না তারা বুঝতে চায় না, তারা শুধু ধ্বংস করতে চায়।
6 প্রভুর প্রশংসা কর!
তিনি আমার প্রতি করুণা করার প্রার্থনা শুনেছেন!
7 প্রভুই আমার শক্তি, তিনিই আমার ঢাল।
আমি তাঁকে বিশ্বাস করেছি।
তিনি আমায় সাহায্য করেছেন এবং আমি প্রচণ্ড খুশী!
এবং তাই আমি তাঁর প্রশংসা করে গান গাইছি।
8 প্রভু যাকে পছন্দ করেন তাঁকে রক্ষা করেন।
প্রভুই তাঁর শক্তি!
9 ঈশ্বর আপনার লোকদের রক্ষা করেন।
আপনার অধিকারভুক্ত যারা তাদের আশীর্বাদ করুন।
তাদের আপনি চিরকালের জন্য নেতৃত্ব দিন এবং তাদের সম্মান দিন!
পৌলের আত্মপক্ষ সমর্থণ
22 পৌল বললেন, “ভাইরা ও পিতৃতুল্য ব্যক্তিরা, এখন শুনুন, আমি আপনাদের সামনে আত্মপক্ষ সমর্থন করছি!”
2 ইহুদীরা যখন পৌলকে ইহুদীদের প্রচলিত ইব্রীয় ভাষায় কথা বলতে শুনল, তারা শান্ত হল। তখন তিনি বললেন,
3 “আমি একজন ইহুদী, আমি কিলিকিয়ার তার্ষের শহরে জন্মেছি; কিন্তু এই শহরে আমি বড় হয়ে উঠেছি। গমলীয়েলের[a] চরণে বসে আমি আমাদের পিতৃপুরুষদের দেওয়া বিধি-ব্যবস্থা শিক্ষালাভ করেছি। আজ আপনারা সকলে যেমন, তেমনি আমিও ঈশ্বরের সেবার জন্য উদ্যোগী ছিলাম। 4 খ্রীষ্টের পথে যারা চলত তাদের আমি নির্যাতন করতাম, এমনকি কারো কারো মৃত্যুও ঘটিয়েছিলাম। স্ত্রী, পুরুষ সকলকেই আমি গ্রেপ্তার করে কারাগারে রাখতাম।
5 “মহাযাজক ও ইহুদী সমাজপতিরা সকলে এই কথার সত্যতা প্রমাণ দিতে পারেন। তাদের কাছ থেকে চিঠি নিয়ে ইহুদী ভাইদের কাছে যাবার জন্য আমি দম্মেশকের পথে রওনা হয়েছিলাম। যীশুর অনুগামী যারা সেখানে ছিল তাদের গ্রেপ্তার করে জেরুশালেমে আনবার জন্য গিয়েছিলাম, যেন তাদের শাস্তি দেওয়া হয়।
পৌল তাঁর মন-পরিবর্তন সম্পর্কে বললেন
6 “আর একটা ব্যাপার ঘটল। আমি চলতে চলতে দম্মেশকের কাছাকাছি এলে, দুপুর বেলা হঠাৎ আকাশ থেকে তীব্র আলোর ছটা আমার চারদিকে ছেয়ে গেল। 7 আমি মাটিতে পড়ে গেলাম আর এক রব শুনলাম, ‘শৌল, শৌল, তুমি কেন আমায় নির্যাতন করছ?’
8 “আমি বললাম, ‘প্রভু, আপনি কে?’ তিনি আমায় বললেন, ‘যাকে তুমি নির্যাতন করছ, আমি সেই নাসরতীয় যীশু।’ 9 যারা আমার সঙ্গে ছিল তারা সেই আলো দেখতে পেয়েছিল, কিন্তু যিনি আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন, তাঁর রব তারা শুনতে পায় নি।
10 “আমি বললাম, ‘প্রভু আমায় কি করতে হবে?’ প্রভু আমায় বললেন, ‘ওঠ, দম্মেশকে যাও। যে কাজের জন্য তোমাকে মনোনীত করা হয়েছে তা সেখানেই তোমাকে বলা হবে।’ 11 সেই তীব্র আলোর ঝলকে আমি অন্ধ হয়ে গেছিলাম। তাই আমার সঙ্গীরা আমার হাত ধরে দম্মেশকে নিয়ে গেল।
12 “সেখানে অননিয় নামে একজন ধার্মিক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালন করতেন। সেখানকার ইহুদীদের মধ্যে তাঁর সুনাম ছিল। 13 তিনি আমার কাছে এসে আমার পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘ভাই শৌল, তুমি দৃষ্টিশক্তি লাভ কর।’ আর সেই মুহূর্তে আমি তাঁকে দেখতে পেলাম।
14 “তিনি বললেন, ‘আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর তোমায় বহুপূর্বেই মনোনীত করেছেন, যাতে তুমি তাঁর পরিকল্পনা জানতে পার এবং সেই ধার্মিকজনকে দেখতে পাও ও তাঁর রব শুনতে পাও। 15 তুমি যা দেখলে ও শুনলে সকল লোকের কাছে সে বিষয়ে সাক্ষ্য দেবে। 16 এখন আর দেরী না করে ওঠ, বাপ্তিস্ম নাও আর তোমার পাপ ধুয়ে ফেল। উদ্ধার লাভের জন্য যীশুতে বিশ্বাস কর।’
17 “পরে আমি জেরুশালেমে ফিরে এসে যখন মন্দিরের চত্বরে প্রার্থনা করছিলাম, সেই সময় এক দর্শন পেলাম। 18 দর্শনে দেখলাম যীশু আমায় বলছেন, ‘শীঘ্র ওঠ! এখুনি জেরুশালেম থেকে চলে যাও! কারণ আমার বিষয়ে তুমি যে সাক্ষ্য দিচ্ছ, তারা তা গ্রহণ করবে না।’
19 “আমি বললাম, ‘প্রভু, তারা তো ভাল করেই জানে যে যারা তোমায় বিশ্বাস করে, তাদের গ্রেপ্তার করে মারধর করার জন্য আমি সমাজ-গৃহগুলিতে যেতাম। 20 যখন তোমার সাক্ষী স্তিফানের রক্তপাত হচ্ছিল, তখন আমি সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে তার অনুমোদন করেছিলাম, আর যারা তাকে মারছিল তাদের পোশাক আগলাচ্ছিলাম।’
21 “তখন যীশু আমায় বললেন, ‘এখন যাও! আমি তোমাকে বহুদূরে অইহুদীদের কাছে পাঠাচ্ছি।’”
22 পৌল অইহুদীদের কাছে যাওয়ার কথা বললে লোকেরা তা আর শুনতে চাইল না। ইহুদীরা সকলে জোরে চিৎকার করে উঠল, “মার বেটাকে! একে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দাও! এ বেঁচে থাকার অযোগ্য!” 23 তারা যখন এভাবে চিৎকার করছে ও তাদের পোশাক খুলে ছুঁড়ে ফেলে বাতাসে ধুলো ওড়াচ্ছে, 24 তখন সেই সেনাপতি পৌলকে দুর্গের মধ্যে নিয়ে যেতে হুকুম দিয়ে বললেন, “একে চাবুক মেরে দেখ এ কি বলে, লোকেরা কেন এর বিরুদ্ধে এমনি করে চিৎকার করছে!” 25 সৈনিকরা যখন পৌলকে চাবুক মারার জন্য বাঁধছে তখন যে সেনাপতি সেখানে দাঁড়িয়েছিল পৌল তাকে বললেন, “একজন রোমান নাগরিকের বিচার করে তার কোন দোষ না পেলেও তাকে চাবুক মারা কি আইনসম্মত কাজ হবে?”
26 এই কথা শুনে সেই সেনাপতি তার ওপরওয়ালার কাছে গিয়ে বলল, “আপনি জানেন আপনি কি করতে যাচ্ছেন? এ লোকটা তো একজন রোমান।”
27 তখন সেই সেনাপতি পৌলের কাছে এসে বলল, “আমায় বল দেখি, তুমি কি রোমীয়?”
পৌল বললেন, “হ্যাঁ।”
28 তখন সেই সেনাপতি বলল, “এই নাগরিকত্ব লাভ করতে আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে।”
পৌল বললেন, “কিন্তু আমি জন্মসূত্রেই রোমীয়।”
29 যারা তাকে প্রশ্ন করার জন্য প্রস্তুত হয়েছিল তারা এই কথা শুনে পিছিয়ে গেল। সেনাপতিও ভয় পেয়ে গেল যখন বুঝতে পারল যে পৌল একজন রোমান নাগরিক, আর সে তাকে বেঁধেছে।
পৌল ইহুদী নেতাদের সঙ্গে কথা বললেন
30 পরদিন ইহুদীরা কেন পৌলের ওপর দোষ দিচ্ছে তা জানবার জন্য রোমান সেনাপতি ইহুদীদের প্রধান যাজকদের ও মহাসভার সকল সভ্যকে জড়ো হতে হুকুম দিল; আর পৌলকে সেখানে তাদের মাঝে মুক্ত অবস্থায় হাজির করল।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International