Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
ইয়োব 36-37

36 ইলীহূ বলে চলল। সে বলল:

“আরো কিছুক্ষণ ধৈর্য্য ধরুন এবং আমি আপনাকে শিক্ষা দেব।
    ঈশ্বরের স্বপক্ষে বলবার মত আরো অনেক জিনিষ রয়েছে।
আমার জ্ঞান আমি সবার সঙ্গে ভাগ করে নেবো।
    ঈশ্বর আমায় সৃষ্টি করেছেন এবং আমি প্রমাণ করব ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ।
ইয়োব, আমি সত্যি কথা বলছি।
    আমি জানি আমি কি বলছি।

“ঈশ্বর প্রচণ্ড শক্তিমান,
    কিন্তু তিনি মানুষকে ঘৃণা করেন না।
ঈশ্বর প্রচণ্ড শক্তিমান
    কিন্তু তিনি ভীষণ রকমের জ্ঞানীও বটে।
ঈশ্বর মন্দ লোকদের বাঁচতে দেবেন না।
    ঈশ্বর গরীব লোকদের সঙ্গে সর্বদাই ভালো ব্যবহার করেন।
যারা সৎ‌পথে জীবনযাপন করে ঈশ্বর তাদের ওপর নজর রাখেন।
    তিনি সৎ ‌লোকদেরই শাসক হতে দেন। সৎ ‌লোকদেরই ঈশ্বর চির দিনের জন্য সম্মান দেন।
তাই যদি মানুষকে শাস্তি দেওয়া হয়ে থাকে
    এবং যদি তাদের শিকল ও দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়ে থাকে, তাহলে তারা নিশ্চয় কিছু ভুল কাজ করেছে।
তারা কি করেছিলো তা ঈশ্বর ওদের বলবেন।
    ওরা কি পাপ করেছিলো তা ঈশ্বর ওদের বলবেন।
    ঈশ্বর ওদের বলবেন যে ওরা ভীষণ অহঙ্কারী ছিলো।
10 ঈশ্বর ওই লোকগুলিকে তাঁর সতর্কবাণী শুনতে বাধ্য করবেন।
    তিনি ওদের পাপ বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেবেন।
11 যদি তারা ঈশ্বরের কথা শোনে এবং তাঁকে মান্য করে,
    তাহলে তারা তাদের জীবনের বাকী দিনগুলো সুখে ও সমৃদ্ধিতে যাপন করবে।
12 কিন্তু এই লোকগুলো যদি ঈশ্বরকে মানতে অস্বীকার করে তাহলে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে।
    তাদের নির্বোধের মত মৃত্যু হবে।

13 “যে লোকরা ঈশ্বরের তোয়াক্কা করে না তারা সর্বদাই তিক্ত স্বভাবের হয়।
    এমনকি ঈশ্বর যখন ওদের শাস্তি দেন তখনও ওরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে চায় না।
14 ঐ লোকগুলো পুরুষ দেহ-জীবীর মত
    অল্প বয়সেই মারা যাবে।
15 কিন্তু বিনীত লোকদের ঈশ্বর সংকট থেকে উদ্ধার করবেন।
    মানুষ জেগে উঠবে এবং ঈশ্বরের কথা শুনবে বলে ঈশ্বর মানুষকে সমস্যা দেন।

16 “ইয়োব, ঈশ্বর আপনাকে সাহায্য করতে চান।
    ঈশ্বর আপনাকে সমস্যা থেকে মুক্ত করতে চান।
আপনার জীবনকে ঈশ্বর আরও সাবলীল করতে চান।
    ঈশ্বর আপনার সামনে প্রচুর খাদ্য দিতে চান।
17 কিন্তু ইয়োব, আপনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।
    তাই একজন মন্দ লোকের মত আপনি শাস্তি পেয়েছিলেন।
18 ইয়োব, সম্পদের দ্বারা আপনি নির্বোধ হয়ে যাবেন না।
    অর্থ যেন আপনার মনের পরিবর্তন না করে।
19 আপনার অর্থ এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারবে না।
    এবং শক্তিশালী লোকরাও এখন কোন ভাবে সাহায্য করতে পারবে না!
20 রাত্রির আগমনের প্রত্যাশা করবেন না।
    লোকে অন্ধকারে অদৃশ্য হয়ে যেতে চায়।
    তারা ভাবে তারা ঈশ্বরের কাছ থেকে লুকিয়ে থাকবে।
21 ইয়োব, আপনি প্রচুর কষ্টভোগ করেছেন, কিন্তু মন্দকে পছন্দ করবেন না।
    ভুল করবেন না, সতর্ক থাকবেন।

22 “দেখুন, ঈশ্বরের শক্তি তাঁকে মহান করেছে।
    ঈশ্বর প্রত্যেকেরই মহানতম শিক্ষক।
23 কি করতে হবে তা কোন লোকই ঈশ্বরকে বলতে পারে না।
    কোন লোকই ঈশ্বরকে বলতে পারে না, ‘আপনি ভুল করেছেন।’
24 ঈশ্বর যা করেছেন তার জন্য তাঁকে প্রশংসা করার কথা মনে রাখবেন।
    ঈশ্বরের প্রশংসা করে লোকে অনেক গান লিখেছে।
25 ঈশ্বর কি করেছেন তা প্রত্যেকেই দেখতে পায়।
    কিন্তু লোকরা ঈশ্বরের কাজ শুধু মাত্র দূর থেকে দেখে।
26 হ্যাঁ, আমাদের কল্পনার চেয়েও ঈশ্বর মহান।
    ঈশ্বর কতদিন ধরে বেঁচে আছেন, আমরা জানি না।

27 “ঈশ্বর পৃথিবী থেকে জল নিয়ে
    তাকে বৃষ্টিতে পরিণত করেন।
28 তাই মেঘ জল দেয়
    এবং বহু লোকের ওপর বৃষ্টি পড়ে।
29 কেমন করে ঈশ্বর মেঘকে ছড়িয়ে দেন,
    কেমন করে আকাশে বজ্র খেলে যায় তা কেউই জানে না, বুঝতে পারে না।
30 দেখুন, ঈশ্বর তাঁর বিদ্যুৎকে আকাশে পাঠিয়েছেন
    এবং সমুদ্রের গভীরতম অংশকে আবৃত করে দিয়েছেন।
31 জাতিগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য
    এবং তাদের প্রচুর খাবার দেওয়ার জন্য ঈশ্বর ওগুলিকে ব্যবহার করেন।
32 ঈশ্বর তাঁর হাতে বিদ্যুৎকে ধরে থাকেন
    এবং যেখানে তিনি চান, সেখানেই বিদ্যুৎকে আছড়ে ফেলেন।
33 বজ্রপাত মানুষকে সতর্ক করে দেয় যে ঝড় আসছে।
    তাই গবাদি পশুরাও জানতে পারে ঝড় আসছে।

37 “ওই বজ্রপাত এবং বিদ্যুৎ আমাকে ভীত করে,
    বুকের ভেতর আমার হৃত্‌পিণ্ড ধুকপুক করতে থাকে।
প্রত্যেকে শুনুন! ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর বজ্রের মত শোনায়।
    ঈশ্বরের মুখ থেকে যে বজ্রময় ধ্বনি নির্গত হয়, তা শুনুন।
আকাশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত ঝলকে ওঠার জন্য ঈশ্বর বিদ্যুৎ প্রেরণ করেন।
    সারা পৃথিবী জুড়ে তা চমক দিয়ে ওঠে।
বিদ্যুৎ ঝলকের ঠিক পরেই ঈশ্বরের বজ্র নির্ঘোষ কণ্ঠস্বর শোনা যায়।
    ঈশ্বরের মহত্ব ও মহিমাপূর্ণ স্বর বজ্রের গুরুগুরু শব্দে প্রকাশ পায়।
যখন বিদ্যুৎ ঝলকে ওঠে তখনই বজ্রের ভেতর ঈশ্বরের কণ্ঠ শোনা যায়।
ঈশ্বরের বজ্রময় কণ্ঠ অসম্ভব সুন্দর।
    তাঁর মহৎ‌‌ কার্যকলাপ আমরা বুঝতে পারি না।
ঈশ্বর তুষারকে বলেন,
    ‘পৃথিবীতে পতিত হও।’
ঈশ্বর বৃষ্টিকে বলেন,
    ‘পৃথিবীতে ঝরে পড়।’
ঈশ্বর তা করেন যাতে প্রত্যেকটি লোক যাদের তিনি সৃষ্টি করেছেন তারা জানতে পারে যে,
    তিনি (ঈশ্বর) কি করতে পারেন। এটাই তার প্রমাণ।
পশুরা তাদের গুহাতে ছুটে চলে যায় এবং সেখানে থাকে।
দক্ষিণ থেকে ঝোড়ো বাতাস ছুটে আসে।
    উত্তরদিক থেকে ঠাণ্ডা বাতাস আসে।
10 ঈশ্বরের নিঃশ্বাস থেকে বরফ সৃষ্টি হয়
    এবং জলের বিশাল আধার জমে যায়।
11 ঈশ্বর মেঘকে জলে পূর্ণ করেন
    এবং মেঘের ভেতর থেকে বিদ্যুৎ পাঠান।
12 মেঘগুলো ঘুরে যায় এবং ঈশ্বরের আদেশ মত নড়াচড়া করে।
    মেঘগুলোও ঈশ্বর যা আদেশ দেন সেই মত করে।
13 ঈশ্বর মেঘকে নিয়ে আসেন বন্যা এনে মানুষকে শাস্তি দেওয়ার জন্য
    অথবা, জল এনে তাঁর প্রেম প্রদর্শনের জন্য।

14 “ইয়োব, এটা শুনুন।
    ঈশ্বর যে সব বিস্ময়কর কাজ করেন সে বিষয়ে চিন্তা করুন।
15 ইয়োব, আপনি কি জানেন কেমন করে ঈশ্বর মেঘকে নিয়ন্ত্রণ করেন?
    আপনি কি জানেন কেমন করে ঈশ্বর তাঁর বিদ্যুৎ ঝলক সৃষ্টি করেন?
16 আপনি কি জানেন কেমন করে মেঘ আকাশে ভেসে থাকে?
    আপনি কি সেই “একজনের” বিস্ময়কর কাজগুলো জানেন যাঁর জ্ঞান নিখুঁত?
17 কিন্তু ইয়োব, আপনি এসবের কিছু জানেন না।
    আপনি যা জানেন তা হল এই, যে আপনি ঘামেন, আপনার জামাকাপড় আপনার গায়ে জড়িয়ে থাকে
    এবং যখন দক্ষিণ থেকে উষ্ণ বাতাস আসে তখন সব কিছু স্থির ও শান্ত থাকে।
18 ইয়োব, আপনি কি মেঘকে প্রসারিত করে ঈশ্বরকে সাহায্য করতে পারেন?
    মেঘকে উজ্জ্বল পিতলের মত ঝকঝকে তৈরী করেন?

19 “ইয়োব, বলুন আমরা ঈশ্বরকে কি বলবো?
    আমাদের অজ্ঞতাবশতঃ সেটা চিন্তা করতে পারি না, কি বলতে হবে।
20 আমি ঈশ্বরকে বলবো না যে আমি তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম।
    তা ধ্বংসকে আবাহন করার সামিল হবে।
21 একজন লোক সূর্যের দিকে তাকাতে পারে না।
    বাতাস মেঘকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার পর সূর্য আকাশে অত্যন্ত উজ্জ্বল ও কিরণময় হয়ে ওঠে।
22 ঈশ্বরও সেই রকম! পবিত্র পর্বত[a] থেকে ঈশ্বরের স্বণার্ভ মহিমা বিকীর্ণ হয়।
    ঈশ্বরের চারদিকে উজ্জ্বল আলো আছে।
23 ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, অত্যন্ত মহান।
    আমরা ঈশ্বরকে বুঝতে পারি না।
ঈশ্বর অত্যন্ত শক্তিমান, সেই সঙ্গে তিনি আমাদের প্রতি সদয় ও নিষ্ঠাবান।
    ঈশ্বর আমাদের আঘাত করতে চান না।
24 সেই জন্যই লোকে ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করে।
    কিন্তু যারা নিজেদের জ্ঞানী মনে করে ঈশ্বর সেই অহঙ্কারীদের প্রতি মনোযোগ দেন না।”

প্রেরিত 15:22-41

অইহুদী বিশ্বাসীদের উদ্দেশ্যে পত্র

22 তখন প্রেরিতরা ও প্রাচীনরা মণ্ডলীর বিশ্বাসীবর্গের সঙ্গে একযোগে তাঁদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে মনোনীত করে পৌল ও বার্ণবার সঙ্গে আন্তিয়খিয়ায় পাঠাবার বিষয়ে ঠিক করলেন। তাঁরা যিহূদা (বার্ণবা) ও সীলকে মনোনীত করলেন, এরা ভাইদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় ছিলেন।

23 তাঁদের সঙ্গে তাঁরা এইরকম এক পত্র লিখে পাঠালেন:

আন্তিয়খিয়ায়, সুরিয়া ও কিলিকিয়ার অইহুদী সমবিশ্বাসী ভাইদের কাছে

প্রেরিতদের ও মণ্ডলীর প্রাচীনদের শুভেচ্ছা।

প্রিয় ভাইরা,

24 আমরা শুনতে পেয়েছি যে আমাদের নির্দেশ ছাড়াই এমন কয়েকজন লোক এখান থেকে গিয়ে নানা কথা বলে তোমাদের মন অস্থির করে তুলেছে ও তোমাদের নানা সমস্যার মধ্যে ফেলেছে! 25 আমরা সকলে একমত হয়েছি যে কয়েকজনকে মনোনীত করে আমাদের প্রিয় ভাই বার্ণবা ও পৌলের সঙ্গে তোমাদের কাছে পাঠান। 26 এই লোকেরা আমাদের প্রভু, যীশু খ্রীষ্টের নামে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। 27 তাই এঁদের সঙ্গে আমরা যিহূদা ও শীলকে পাঠাচ্ছি, এঁরা তোমাদের একই কথা বলবেন। 28 কারণ পবিত্র আত্মার কাছে এবং আমাদের কাছেও এটাই ভাল মনে হল যে এই প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি ছাড়া অতিরিক্ত কোন কিছুই তোমাদের ওপর ভারস্বরূপ চাপিয়ে দেব না।

29 তোমরা প্রতিমার সামনে উৎসর্গ করা কোন খাদ্যবস্তু খাবে না,

রক্ত এবং গলা টিপে মারা কোন প্রাণীর মাংস খাবে না,

আর যৌন পাপ কর্ম থেকে দূরে থাকবে।

তোমরা যদি নিজেদের এর থেকে দূরে রাখ তাহলে তোমাদের মঙ্গল হবে। তোমাদের সকলের জন্য আমাদের শুভেচ্ছা রইল।

30 তাই পৌল, বার্ণবা, যিহূদা ও সীল জেরুশালেম থেকে রওনা হয়ে আন্তিয়খিয়ায় এলেন। তাঁরা লোকদের সমবেত করে সেই চিঠিটি দিলেন। 31 চিঠিটি পড়ার পর তাঁরা সবাই সেই উৎসাহোদ্দীপক চিঠির জন্য আনন্দ করতে থাকলেন। 32 যিহূদা ও সীল উভয়ে ভাববাদী হওয়াতে ভাইদের সঙ্গে অনেকক্ষণ ধরে কথা বলে তাদের উৎসাহ দিলেন ও শক্তি জোগালেন। 33 যিহূদা ও সীল কিছুদিন সেখানে থাকার পর যাঁরা তাঁদের পাঠিয়েছিলেন, তাঁদের কাছে অর্থাৎ জেরুশালেমে ফিরে যাবার জন্য ভাইদের কাছ থেকে শান্তিতে বিদায় পেলেন। 34 [a]

35 কিন্তু পৌল ও বার্ণবা আন্তিয়খিয়াতে কিছু সময় কাটালেন। তাঁরা অন্যান্য আরো অনেকের সঙ্গে প্রভুর বার্তা শিক্ষা দিতেন ও সুসমাচার প্রচার করতেন।

পৌল ও বার্ণবা আলাদা হলেন

36 কিছু সময় পর পৌল বার্ণবাকে বললেন, “চল আমরা ফিরে যাই, প্রতিটি শহরে যেখানে আমরা প্রভুর বার্তা প্রচার করেছিলাম, সেইসব জায়গায় গিয়ে দেখি ভাইরা কেমন আছে।”

37 বার্ণবা চাইলেন যেন যোহন অর্থাৎ মার্কও তাঁদের সঙ্গে যান। 38 কিন্তু পৌল ভাবলেন, একবার যে পাম্ফুলিয়াতে তাঁদের ছেড়ে চলে গিয়েছিল, তাকে সঙ্গে না নেওয়াই ভাল। 39 এর ফলে তাঁদেব মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিল। শেষ পর্যন্ত তাঁরা পরস্পর আলাদা হয়ে গেলেন। বার্ণবা মার্ককে সঙ্গে নিয়ে জাহাজে করে কুপ্রের দিকে রওনা দিলেন।

40 পৌল সীলকে সঙ্গে নিলেন। ভাইরা আন্তিয়খিয়াতে প্রভুর সেবার ভার পৌলকে দিলেন। 41 পৌল এবং সীল সুরিয়া ও কিলিকিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে যেতে বিভিন্ন মণ্ডলীকে আরও সুদৃঢ় করলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International