Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
ইয়োব 25-27

ইয়োবকে বিল‌্দদের উত্তর

25 তখন শূহীয় বিল‌্দদ উত্তর দিলেন:

“ঈশ্বরই শাসক।
    প্রতিটি লোককে তাঁর সামনে সভয়ে দাঁড়াতে হবে।
    তাঁর ঊর্দ্ধলোকের রাজ্যে তিনি শান্তি বজায় রাখেন।
কোন লোকই তাঁর ঐশ্বরীয় সৈন্যবাহিনীকে গুণতে পারে না।
    ঈশ্বরের আলো সবার ওপর প্রতিভাত হয়।
ঈশ্বরের তুলনায় কেই বা অধিকতর পবিত্র?
    কোন মানুষই প্রকৃত অর্থে পবিত্র হতে পারে না।
ঈশ্বরের চোখে চাঁদ পর্যন্ত উজ্জ্বল নয়,
    তারারাও খাঁটি নয়।
মানুষ ঈশ্বরের তুলনায় কম খাঁটি।
    তুলনায়, মানুষ উল্লু এবং কৃমিকীটের মত!”

বিল‌্দদের প্রতি ইয়োবের প্রত্যুত্তর

26 তখন ইয়োব উত্তর দিলেন:

“বিল‌্দদ, সোফর এবং ইলীফস, এই ক্লান্ত ও শ্রান্ত মানুষটির জন্য তোমরা সত্যিই খুব বড় সহায় হয়েছিলে।
    সত্যিই তোমরা আমার মস্তবড় উৎসাহদাতা, আমার দুর্বল বাহুকে তোমরা সত্যিই আবার শক্ত করে তুলেছো!
সত্যিই, যে লোকের কোন প্রজ্ঞা নেই, তাকে তোমরা চমৎ‌‌কার উপদেশ দিয়েছো!
    তোমরা যে কত জ্ঞানী, তোমরা তা প্রদর্শন করেছো।[a]
কে তোমাদের এসব বলতে সাহায্য করেছে?
    কার আত্মা তোমাদের উৎসাহিত করেছে?

“মৃত লোকদের আত্মা,
    মাটির তলায় জলের ভেতরে ভয়ে কাঁপতে থাকে।
কিন্তু ঈশ্বর মৃত্যুর স্থান পরিষ্কার দেখতে পান।
    মৃত্যু ঈশ্বরের কাছ থেকে লুকিয়ে থাকতে পারে না।
ঈশ্বর উত্তর আকাশকে শূন্য লোকে প্রসারিত করে দিয়েছেন।
    ঈশ্বর পৃথিবীকে শূন্যতায় ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
ঘন মেঘকে ঈশ্বর জলে পরিপূর্ণ করেছেন।
    কিন্তু সেই বিপুল ভার নিয়ে ঈশ্বর, মেঘকে ভেঙে পড়তে দেন না।
ঈশ্বর, পূর্ণিমার চাঁদের মুখ ঢেকে দেন।
    তিনি চাঁদের ওপর মেঘকে আবৃত করে তাকে লুকিয়ে ফেলেন।
10 ঈশ্বর সমুদ্রের ওপর একটি দিগন্ত-রেখা এঁকে দিয়েছেন।
    সেই দিগন্ত রেখায় দিনরাত্রি মিলিত হয়।
11 ভূগর্ভস্থ থামগুলি আকাশকে ধারণ করে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
    ঈশ্বর যখন তাদের তিরস্কার করেন তখন তারা ভয়ে চমকে যায় এবং কাঁপতে থাকে।
12 ঈশ্বরের পরাক্রম সমুদ্রকে শান্ত করে দেয়।
    ঈশ্বর তাঁর প্রজ্ঞা দিয়ে রাহাবকে ধ্বংস করেছেন।
13 ঈশ্বর তাঁর নিঃশ্বাস দিয়ে আকাশকে পরিষ্কার করেছেন।
    ঈশ্বরের হাত পলায়মান সর্পকে বিদ্ধ করেছে।
14 ঈশ্বর যা করেন, এগুলি তার দু’একটি বিস্ময়কর উদাহরণ মাত্র।
    আমরা ঈশ্বরের থেকে কেবলমাত্র ফিসফিস শব্দটুকু বজ্রের মত শুনি।
    ঈশ্বর যে কত শক্তিশালী এবং মহৎ‌‌ তা কেউই বুঝতে পারে না।”

27 তারপর ইয়োব তাঁর কথা অব্যাহত রাখলেন। ইয়োব বললেন,

“একথা সত্যি যে ঈশ্বর আছেন এবং তিনি আছেন এটা যতখানি সত্য,
    তিনি আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে এসেছেন—এটাও ততখানি সত্য।
ঈশ্বর সর্বশক্তিমান আমার জীবনকে তিক্ত করে তুলেছেন।
    কিন্তু যতক্ষণ আমার মধ্যে জীবন আছে
    এবং আমার নাকে ঈশ্বরের জীবনের শ্বাস-প্রশ্বাস বইছে,
ততক্ষণ আমার ঠোঁট কোন মন্দ কথা উচ্চারণ করবে না
    এবং আমার জিভ একটিও মিথ্যা কথা বলবে না।
আমি কখনও স্বীকার করব না যে তোমরা সঠিক।
    আমার মৃত্যু পর্যন্ত আমি বলে যাবো যে আমি নির্দোষ।
যে সঠিক কাজ আমি করেছি, তা আমি দৃঢ়ভাবে ধরে থাকবো।
    আমি সৎ‌ পথে বাঁচা থেকে বিরত হব না।
    যত দিন পর্যন্ত আমি বাঁচবো, তত দিন পর্যন্ত আমি যা যা করেছি সে সম্বন্ধে আমার কোন অপরাধ বোধ থাকবে না।
আমার শত্রু যেন একজন মন্দ ব্যক্তির মত ব্যবহার পায়।
    যে ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে মাথা তুলবে সে যেন একজন মন্দ ব্যক্তির মত ব্যবহার পায়।
যদি কোন লোক ঈশ্বরের তোয়াক্কা না করে, তবে মৃত্যুর সময়ে সেই লোকের জন্য কোন আশাই নেই।
    ঈশ্বর যখন তার জীবন হরণ করবেন তখন সেই লোকের জন্য কোন আশাই থাকবে না।
ঐ মন্দ লোকটি সংকটে পড়বে।
    সে সাহায্যের জন্য ঈশ্বরের কাছে কেঁদে পড়বে।
কিন্তু ঈশ্বর তার কথা শুনবেন না।
    সে কি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে আনন্দ লাভ করবে?
    সে কি সব সময় ঈশ্বরকে ডাকবে? না!
10 কিন্তু ঐ লোকের সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলার আনন্দ উপভোগ করা উচিৎ‌ ছিল।
    ঐ লোকের সর্বক্ষণ ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা উচিৎ‌ ছিল।

11 “আমি তোমাকে ঈশ্বরের ক্ষমতা সম্পর্কে বলবো,
    আমি তোমার কাছে ঈশ্বর সর্বশক্তিমানের পরিকল্পনা গোপন করবো না।
12 তুমি নিজের চোখেই ঈশ্বরের ক্ষমতা দেখেছো।
    তাহলে তুমি কেন অর্থহীন কথাবার্তা বলছো?

13 “মন্দ লোকরা ঈশ্বরের কাছ থেকে শুধু এইটুকুই পাবে।
    নিষ্ঠুর লোকরা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছ থেকে এই সবই পাবে।
14 একজন মন্দ লোকের অনেক সন্তানাদি থাকতে পারে।
    কিন্তু তার সন্তানরা যুদ্ধে নিহত হবে।
    একজন মন্দ লোকের সন্তানরা যথেষ্ট খাদ্য পাবে না।
15 তার সন্তানরা, যারা বেঁচে যাবে
    তারা রোগ দ্বারা কবরস্থ হবে।
16 একজন মন্দ লোকের প্রচুর রূপো থাকতে পারে কিন্তু তার কাছে সেটি আবর্জনার মতই হবে।
    তার কাছে প্রচুর বস্ত্র থাকতে পারে তাও তার কাছে কাদার স্তূপের মতো হবে।
17 কিন্তু একজন সৎ‌ লোক তার বস্ত্রাদি পাবে।
    নির্দোষ লোক তাদের রূপো পাবে।
18 একজন মন্দ লোক পাখীর বাসার মত একটা বাড়ী বানাতে পারে।
    একজন রক্ষী যেমন মাঠে ঘাসের কুটীর বানায় সে হয়ত তার বাড়ীটা ঐরকমই বানাবে।
19 একজন মন্দ লোক যখন বিছানায় শুতে যায়, তখন সে ধনী থাকতে পারে,
    কিন্তু যখন সে তার চোখ খুলবে তখন তার সব সম্পদ চলে যাবে।
20 বন্যার মতো ভয়ঙ্কর জিনিস ধুয়ে নিয়ে যাবে।
    একটা ঝড় তার সব কিছু মুছে নিয়ে যাবে।
21 পূবের বাতাস তাকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে এবং সে চলে যাবে।
    একটা ঝড় তাকে তার জায়গা থেকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে।
22 মন্দ লোকরা হয়তো ঝড়ের শক্তি থেকে পালিয়ে যেতে চেষ্টা করবে।
    কিন্তু ঝড় তাকে ক্ষমাহীন ভাবে আঘাত করবে।
23 মন্দ লোকগুলো যখন ছুটে পালাবে, তখন লোকরা হাততালি দেবে।
    মন্দ লোকরা যখন তাদের বাড়ী থেকে দৌড় দেবে তখন লোকেরা শিস্ দেবে।”

প্রেরিত 12

আগ্রিপ্পার মণ্ডলীর উপর হেরোদের অত্যাচার

12 সেই সময় রাজা হেরোদ বিশ্বাসী মণ্ডলীর কিছু লোকের ওপর নির্যাতন শুরু করলেন। যোহনের ভাই যাকোবকে হেরোদ তরবারির আঘাতে হত্যা করার নির্দেশ দিলেন। তিনি যখন দেখলেন এতে ইহুদীরা খুব খুশী হল, তখন তিনি পিতরকে গ্রেপ্তার করলেন। তখন ছিল ইহুদীদের নিস্তারপর্বের[a] সময়। পিতরকে গ্রেপ্তার করে হেরোদ তাঁকে কারাগারে রাখলেন। তাঁকে পাহারা দেবার জন্য চারজন করে ষোল জন সৈনিককে নিয়োগ করলেন। তিনি মনে করলেন নিস্তারপর্বের পরে পিতরকে জনসাধারণের কাছে বিচারের জন্য হাজির করবেন। তাই পিতরকে কারাগারে বন্দী করে রাখা হল, কিন্তু বিশ্বাসী মণ্ডলী তাঁর জন্য ঈশ্বরের কাছে একাগ্রভাবে প্রার্থনা করতে থাকলেন।

পিতর কারাগার থেকে মুক্ত হলেন

সেই রাতে পিতর দুজন প্রহরারত সৈনিকের মাঝখানে শুয়ে ঘুমাচ্ছিলেন, দুটি শেকল দিয়ে তাঁকে বেঁধে রাখা হয়েছিল এবং সৈনিকরা ফটকে পাহারা দিচ্ছিল। হেরোদ ঠিক করেছিলেন যে পরদিন সকালে বিচারের জন্য পিতরকে কারাগারের বাইরে আনবেন। হঠাৎ‌ প্রভুর এক দূত সেখানে এসে দাঁড়ালেন; আর কারাগারের মধ্যে একটা আলো ঝলসে উঠল। স্বর্গদূত পিতরের গায়ে মৃদু আঘাত দিয়ে তাঁকে জাগিয়ে বললেন, “শিগগির ওঠ!” তখন তাঁর দুহাতের শেকল খসে পড়ল। এরপর সেই স্বর্গদূত পিতরকে বললেন, “পোশাক পর, আর পায়ে জুতো দাও।” পিতর সেই মত কাজ করলেন। তখন স্বর্গদূত পিতরকে বললেন, “তোমার আলখাল্লাটি গায়ে দিয়ে আমাকে অনুসরণ কর।”

স্বর্গদূত বার হলেন আর পিতর তাঁর পিছু পিছু বাইরে বেরিয়ে গেলেন; কিন্তু স্বর্গদূত যা করলেন তা যে বাস্তবে সত্য তা তিনি বুঝে উঠতে পারছিলেন না। তিনি মনে করলেন হয়তো কোন দর্শন দেখছেন। 10 তাঁরা প্রথম ও দ্বিতীয় পাহারাদারদের পেছনে ফেলে এগিয়ে গেলেন, আর যেখান দিয়ে শহরে যাওয়া যায়, লোহার সেই বিরাট ফটকের কাছে এলেন। সেই ফটক তাঁদের জন্য নিজে থেকে খুলে গেল আর তাঁরা সেখান দিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলেন। তাঁরা দুজনে যখন একটা রাস্তার শেষ পর্যন্ত গেলেন, অমনি সেই স্বর্গদূত পিতরের কাছ থেকে হঠাৎ‌ কোথায় মিলিয়ে গেলেন।

11 তখন পিতর বুঝলেন কি ঘটেছে এবং বলে উঠলেন, “আমি নিশ্চয় জানলাম যে এসবই বাস্তব। প্রভু তাঁর দূতকে পাঠিয়েছিলেন আর তিনিই হেরোদের ও যে ইহুদীরা নির্যাতন দেখবে ভেবেছিল তাদের হাত থেকে আমায় উদ্ধার করেছেন।”

12 এই কথা বুঝতে পেরে তিনি মরিয়মের বাড়ির দিকে রওনা দিলেন। এই মরিয়ম হলেন যোহনের মা। এই যোহনকে আবার মার্কও বলে। এদের বাড়িতে অনেকে জড়ো হয়ে প্রার্থনা করছিলেন। 13 পিতর এসে বাইরের দরজায় ঘা দিলে রোদা নামে একজন চাকরানী এসে দরজায় কে তা জিজ্ঞেস করল। 14 পিতরের কন্ঠস্বর চিনতে পেরে তার এত আনন্দ হল যে সে দরজা খুলতে ভুলে গেল, আর দৌড়ে ভেতরে গিয়ে এই খবর জানাল। সে বলল, “পিতর দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন!” 15 তাঁরা তাকে বললেন, “তোমার মাথা খারাপ হয়েছে!” কিন্তু সে যখন বারবার বলতে লাগল, তার কথাই ঠিক, তখন তাঁরা বললেন, “তবে ও নিশ্চয়ই স্বর্গদূত।”

16 কিন্তু পিতর দরজায় আঘাত করেই চললেন, আর তাঁরা দরজা খুলে তাঁকে দেখতে পেয়ে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। 17 তিনি হাত দিয়ে ইঙ্গিতে তাদের চুপ করতে বললেন এবং প্রভু কিভাবে সেই কারাগার থেকে তাঁকে উদ্ধার করে এনেছেন সে কথা জানালেন। তিনি বললেন, “তোমরা যাকোবকে ও অন্যান্য ভাইদের এই ঘটনার কথা জানাও।” পরে তিনি সেখান থেকে অন্য জায়গায় চলে গেলেন।

18 সকাল হলে প্রহরারত সৈনিকদের মধ্যে একটা হৈচৈ পড়ে গেল। পিতরের কি হল, এই ভেবে তারা আশ্চর্য হয়ে গেল। 19 এরপর হেরোদ পিতরকে অনেক খোঁজাখুঁজি করলেন, কিন্তু তাঁকে না পেয়ে প্রহরীদের নানাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে তিনি সেই প্রহরীদের প্রাণদণ্ডের আদেশ দিলেন।

হেরোদ আগ্রিপ্পার মৃত্যু

এরপর হেরোদ যিহূদা ছেড়ে কৈসরিয়া শহরে গিয়ে কিছুকাল সেখানে থাকলেন। 20 হেরোদ সোরীয় ও সীদোনীয়ের লোকদের ওপর খুবই ক্রুদ্ধ ছিলেন। তারা দল বেঁধে হেরোদের সঙ্গে দেখা করতে এল। রাজার একান্ত সচিব ব্লাস্তকে নিজেদের দলে টেনে তারা হেরোদকে শাস্তির জন্য অনুরোধ করল, কারণ তাদের দেশ রাজার দেশের ওপর খাদ্যের জন্য নির্ভরশীল ছিল।

21 এক নিরূপিত দিনে, হেরোদ রাজকীয় পোশাক পরে সিংহাসনে এসে বসলেন এবং লোকদের কাছে ভাষণ দিতে লাগলেন। 22 লোকরা চিৎকার করতে লাগল, “এ-তো মানুষের কন্ঠস্বর নয়, এ যে ঈশ্বরের কন্ঠস্বর!” 23 হেরোদ এই প্রশংসা কুড়ালেন। ঈশ্বরকে তাঁর প্রাপ্য গৌরব দিলেন না। হঠাৎ‌ প্রভুর এক দূত এসে হেরোদকে আঘাত করলে তিনি অসুস্থ হলেন। তাঁর শরীর কীটে খেয়ে ফেলল, ফলে তিনি মারা গেলেন।

24 এদিকে ঈশ্বরের বার্তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল আর বহু লোক তাতে বিশ্বাস করল।

25 বার্ণবা ও শৌল জেরুশালেমে তাঁদের কাজ সেরে আন্তিয়খিয়ায় ফিরে গেলেন। তাঁরা যোহন, যাকে মার্ক বলে, তাঁকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International