Old/New Testament
ইলীফসের উত্তর
22 তখন তৈমনীয় ইলীফস উত্তর দিল:
2 “ঈশ্বরের কি তোমার সাহায্যের প্রয়োজন আছে?
না! এমনকি একজন খুব জ্ঞানী লোকও ঈশ্বরের কাছে প্রয়োজনীয় নয়।
3 তুমি যদি ন্যায়পরায়ণ হও তাহলে ঈশ্বরের কি কোন সাহায্য হয়?
না! অথবা তুমি যদি অনিন্দনীয় হও তাহলে তা কি ঈশ্বরের পক্ষে লাভজনক হয়? না!
4 ইয়োব, তোমার সমীহর কারণেই কি ঈশ্বর তোমাকে সংশোধন করেন?
এই কারণেই কি তিনি বিচারে তোমার বিরুদ্ধে আসেন?
5 না, এর কারণ তুমি অনেক পাপ করেছো।
ইয়োব, তুমি পাপ করা বন্ধ কর নি।
6 হতে পারে তোমার কোন ভাইকে টাকা ধার দিয়েছিলে, এবং সে যে তোমাকে তা ফেরৎ দেবে তা প্রমাণ করার জন্য তোমাকে কিছু দেওয়ার জন্য তুমি তাকে বাধ্য করেছিলে।
তুমি হয়তো ঋণের বন্ধক হিসেবে কোন দরিদ্র মানুষের বস্ত্র নিয়েছিলে। হয়তো অকারণেই তুমি এসব করেছিলে।
7 তুমি হয়তো বা ক্ষুধার্ত ও শ্রান্ত মানুষকে
খাবার ও জল দাও নি।
8 ইয়োব তোমার প্রচুর খামারবাড়ি আছে।
লোকেও তোমায় সম্মান করে।
9 কিন্তু এমন হতে পারে যে তুমি বিধবাদের কিছু না দিয়েই ফিরিয়ে দিয়েছো।
হয়তো বা তুমি অনাথদের প্রতারিত করেছো।
10 সেই জন্য তোমার চারদিকে ফাঁদ পাতা রয়েছে
এবং আকস্মিক সমস্যা তোমায় ভীত করে।
11 সেই কারণেই এটা এত অন্ধকার যে তুমি দেখতে পাও না,
এবং বন্যার মত জলরাশি তোমায় ডুবিয়ে দেয়।
12 “ঈশ্বর স্বর্গের উচ্চতম স্থানে বাস করেন।
দেখ তারাগুলো কত উঁচুতে রয়েছে।
কিন্তু ঈশ্বর এতই উচ্চে রয়েছেন
যে ঈশ্বর তারাগুলোকে নীচের দিকে চেয়ে দেখেন।
13 কিন্তু ইয়োব তুমি বলেছিলে, ‘ঈশ্বর কি জানেন?
ঈশ্বর কি কালো মেঘের ভেতর দিয়ে দেখতে পান এবং আমাদের বিচার করতে পারেন?
14 ঘন মেঘ আমাদের থেকে তাঁকে আড়াল করে,
যেহেতু তিনি আকাশ সীমার ওপর বহির্দেশে বিচরণ করেন তাই তিনি আমাদের দেখতে পান না।’
15 “ইয়োব তুমি সেই পুরানো পথেই চলছো
যে পথে অতীতের মন্দ লোকরা চলেছিল।
16 সেই মন্দ লোকরা তাদের সময়ের আগেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে গেছে।
বন্যায় তাদের ভিত ভেসে গেছে।
17 ঐ লোকগুলো ঈশ্বরকে বলেছিলো: ‘আমাদের একা ছেড়ে দিন!’
এবং এও বলেছিল, ‘সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের জন্য কিছুই করতে পারবেন না!’
18 এবং ঈশ্বরই নানাবিধ ভালো জিনিস দিয়ে ওদের ঘর ভরিয়ে দিয়েছিলেন!
না, আমি মন্দ লোকের উপদেশ মানতে পারব না।
19 ন্যায়পরায়ণ লোকরা ওদের ধ্বংস হতে দেখবে এবং ঐ সব সৎ লোকই সুখী হবে।
নির্দোষ লোকরা মন্দ লোকদের উপহাস করবে।
20 ‘সত্যই তোমার শত্রুরা বিনষ্ট হয়েছে!
অগ্নি ওদের সব সম্পদ জ্বালিয়ে দেবে!’
21 “এখন ইয়োব, নিজেকে ঈশ্বরের কাছে সঁপে দাও এবং তাঁর সঙ্গে শান্তি চুক্তি স্থাপন কর।
এটা কর, তুমি অনেক ভালো জিনিস পাবে।
22 এই শিক্ষা গ্রহণ কর।
তিনি যা বলেন, তাতে মনোযোগ দাও।
23 ইয়োব, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে ফিরে এসো, তুমি উদ্ধার হয়ে যাবে।
কিন্তু তুমি অবশ্যই তোমার তাঁবুগুলি থেকে অহিতকারী মন্দকে দূর করবে।
24 নিজের জমানো সোনাকে আবর্জনার বেশী কিছু ভেবো না,
তোমার শ্রেষ্ঠ সোনাকেও[a] নদীর নুড়ি-পাথরের মত তুচ্ছ জ্ঞান কর।
25 এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে তোমার সোনা করে নাও।
ঈশ্বরকে তোমার রূপোর স্তূপ হতে দাও।
26 তারপর তুমি ঈশ্বরকে উপভোগ করতে পারবে।
তারপর তুমি ঈশ্বরের সামনে দাঁড়াতে পারবে।
27 তুমি তাঁর কাছে প্রার্থনা করবে এবং তিনি তোমার প্রার্থনা শুনবেন।
তবেই তুমি তোমার প্রতিশ্রুতি রাখতে পারবে।
28 যদি তুমি কিছু করবে বলে মনস্থির করে থাকো তাহলে তা ফলপ্রসূ হবে।
এবং তোমার ভবিষ্যৎ অবশ্যই উজ্জ্বল হবে!
29 ঈশ্বর অহঙ্কারী লোকদের লজ্জায় ফেলেন।
কিন্তু তিনি বিনয়ী লোকদের সাহায্য করেন।
30 তখন তুমি যারা ভুল করে তাদের সাহায্য করতে পারবে।
তুমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করবে এবং তিনি তাদের ক্ষমা করে দেবেন।
কেন? কারণ তুমি শুচি-শুদ্ধ হয়ে যাবে।”
ইয়োবের উত্তর
23 তখন ইয়োব উত্তর দিলেন:
2 “আমি আজ পর্যন্ত অভিযোগ করে যাচ্ছি।
কেন? কারণ আমি এখনও ভুগছি।
3 আমার ইচ্ছা হয়, ঈশ্বরকে কোথায় খুঁজে পাওয়া যায় তা যদি জানতাম,
তাহলে আমি সেই জায়গায় যেতাম।
4 আমি আমার কথা ঈশ্বরের কাছে বলতাম,
আমি যে নির্দোষ এটা প্রমাণ করার জন্য আমি আমার যুক্তিগুলো সাজাতাম।
5 কেমন করে ঈশ্বর আমার প্রশ্নের জবাব দেবেন সেটাই আমি জানতে চাই।
আমি ঈশ্বরের উত্তরকে বুঝতে চাই।
6 ঈশ্বর কি আমার বিরুদ্ধে তাঁর শক্তিকে ব্যবহার করবেন?
না, তিনি আমার কথা শুনবেন!
7 সেখানে একটি ন্যায়পরায়ণ লোক ঈশ্বরের সঙ্গে তর্ক করতে পারে।
তখন আমার বিচারক আমাকে মুক্তি দিতে পারেন।
8 “কিন্তু আমি যদি পূর্ব দিকে যাই সেখানে ঈশ্বর নেই।
আমি যদি পশ্চিমে যাই, তখনও আমি ঈশ্বরকে দেখতে পাই না।
9 যখন ঈশ্বর উত্তরে কর্মরত থাকেন আমি তাঁকে দেখি না।
যখন ঈশ্বর দক্ষিণে আসেন, তখনও তাঁকে দেখতে পাই না।
10 কিন্তু ঈশ্বর জানেন আমি কেমন লোক।
তিনি আমাকে পরীক্ষা করছেন এবং তিনি দেখবেন যে আমি সোনার মতোই পবিত্র।
11 আমি সর্বদাই ঈশ্বরের চাওয়া পথে জীবনধারণ করেছি।
আমি কখনও ঈশ্বরকে অনুসরণ করা থেকে বিরত হইনি।
12 আমি সর্বদাই ঈশ্বরের নির্দেশ মেনে এসেছি।
আমি আমার খাবারকে যত না ভালোবাসি, তার থেকে বেশী ভালোবাসি ঈশ্বরের মুখ নিঃসৃত বাণী।
13 “কিন্তু ঈশ্বর কখনও পরিবর্তিত হন না।
ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়াতে পারে না।
ঈশ্বর যা চান তাই করতে পারেন।
14 আমার প্রতি ঈশ্বরের যা পরিকল্পনা আছে তিনি তাই করবেন।
এবং আমার সম্পর্কে তাঁর অনেক পরিকল্পনা আছে।
15 সেই কারণেই আমি ঈশ্বরের দ্বারা আতঙ্কিত।
আমি এই জিনিসগুলো বুঝতে পারি।
সেই কারণেই আমি ঈশ্বরের সম্পর্কে ভীত।
16 ঈশ্বর আমার হৃদয়কে দুর্বল করে দেন এবং আমি সাহস হারিয়ে ফেলি।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাকে ভীত করেন।
17 যে মন্দ ঘটনাগুলো আমার ক্ষেত্রে ঘটেছে তা আমার মুখে কালো মেঘের মত ছেয়ে আছে।
সেই অন্ধকার আমাকে চুপ করে থাকতে দেবে না।”
24 “এমন কেন হয় যে মানুষের জীবনে যখন মন্দ ঘটনা ঘটতে চলেছে তা সর্বশক্তিমান ঈশ্বর জানেন,
কিন্তু তাঁর অনুগামীরা এমনকি অনুমানও করতে পারে না যে কখন তিনি সে বিষয়ে কিছু করতে চলেছেন?”
2 “লোকে তাদের জমির সীমারেখা সরিয়ে দেয় আরও জমি দখল করার জন্য।
লোকে মেষের পাল চুরি করে তাদের অন্য চারণক্ষেত্রে নিয়ে চলে যায়।
3 তারা অনাথদের গাধা চুরি করে।
তারা বিধবাদের বলদগুলো বন্ধক রাখে।
4 তারা দরিদ্র লোকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়।
সব গরীব লোকই এই মন্দ লোকগুলোর কাছ থেকে লুকিয়ে থাকতে বাধ্য হয়।
5 “দরিদ্র লোকগুলো খাবারের সন্ধানে বুনো গাধার মত মরুভূমিতে ঘুরে বেড়ায়।
খাদ্যের সন্ধানে তারা খুব সকালে উঠে পড়ে।
তাদের ছেলেমেয়েদের খাদ্যের জন্য তারা জনহীন স্থানে খাবার খুঁজে বেড়ায়।
6 দরিদ্র লোকরা মন্দ লোকেদের মাঠে গবাদি পশুর জাব কাটে।
মন্দ লোকেদের দ্রাক্ষা ক্ষেত থেকে তারা পড়ে থাকা দ্রাক্ষা নিজেদের জন্য জোগাড় করে।
7 দরিদ্র লোককে সারা রাত্রি বিনা বস্ত্রে শুতে হয়।
শীত থেকে নিজেদের রক্ষা করার মত কোন আবরণ তাদের নেই।
8 তারা পাহাড়ের বৃষ্টিতে ভিজে যায়।
তাদের কোন আশ্রয় নেই, তাই তারা বড়বড় পাথরগুলোর কাছে গা ঘেঁসাঘেঁসি করে দাঁড়িয়ে থাকে।
9 মন্দ লোকরা কচি কচি বাচ্চাগুলোকে তাদের মায়ের বুক থেকে টেনে নিয়ে যায়।
দুষ্ট লোকরা ধারশোধের টাকা হিসেবে গরীবদের কাছ থেকে তাদের শিশুদের ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
10 দরিদ্র লোকদের কোন কাপড়-চোপড় নেই। তারা উলঙ্গ হয়ে ঘুরে বেড়ায়।
তারা শস্যের বোঝা বয়ে নিয়ে যায়।
11 দরিদ্র লোকরা জলপাই পিষে তার তেল বার করে।
যেখানে আঙ্গুর পেষা হয় সেখানে তারা দ্রাক্ষা মর্দন করে।
কিন্তু তারা কিছু পান করতে পায় না।
12 এই শহরে যারা মারা যাচ্ছে এমন লোকদের দুঃখের বিষাদময় কান্না তুমি শুনতে পাবে।
ওই আহত লোকরা সাহায্যের জন্য কাতর হয়ে কাঁদে।
কিন্তু ঈশ্বর তাতে মনোযোগ দেন না।
13 “কিছু লোক আলোর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।
তারা জানে না ঈশ্বর কি চান।
ঈশ্বর যে পথে চান, তারা সে পথে জীবন ধারণ করে না।
14 একজন হত্যাকারী খুব সকালে ওঠে এবং সে দরিদ্র অসহায় লোকদের হত্যা করে।
রাত্রিবেলা সে একজন চোর হয়ে যায়।
15 যে লোক যৌন অপরাধ করে সে রাত্রির প্রতীক্ষায় থাকে।
সে মনে করে, ‘কোন লোকই আমাকে দেখতে পাবে না।’
কিন্তু তখনও সে তার মুখ আবৃত করে রাখে।
16 রাতে যখন অন্ধকার নামে, মন্দ লোকরা বাইরে আসে এবং অন্য লোকের ঘর ভেঙে প্রবেশ করে।
কিন্তু দিনের আলোয়, তারা নিজেদের ঘরে নিজেদের বন্দী করে রাখে এবং আলোকে এড়াতে চায়।
17 মন্দ লোকদের কাছে অন্ধকারতম রাত্রিই সকালের মত মনে হয়।
হ্যাঁ, তারা ঐ সাংঘাতিক অন্ধকারের ভয়ঙ্করতাকে খুব ভালো করে জানে!
18 “তুমি দাবী কর যে মন্দ লোকরা শুধু জলে ভাসমান খড়ের মত।
তারা যে জমি অর্জন করে তা অভিশপ্ত, তাই তারা তাদের জমি থেকে দ্রাক্ষা সংগ্রহ করতে পারে না।
19 শীতের তুষার থেকে খরা এবং তাপ জল শুষে নেয়।
একই রকম ভাবে, পাতাল পাপীদের হরণ করে নেয়।
20 তার নিজের মা পর্যন্ত তাকে ভুলে যাবে।
পোকাদের কাছে ওর দেহটা মিষ্টি লাগবে।
লোকে তাকে মনে রাখবে না।
অতএব মন্দত্ব একটা লাঠির মত ভেঙে যাবে।
21 মন্দ লোকরা সন্তানহীন নারীদের আঘাত করে।
তারা বিধবা নারীদের সাহায্য করতে অস্বীকার করে।
22 মহানুভব লোকদের ধ্বংস করার জন্য মন্দ লোকরা তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করে।
মন্দ লোকরা শক্তিশালী হতে পারে কিন্তু ওদের নিজের জীবন সম্পর্কে ওরা নিশ্চিত হতে পারবে না।
23 মন্দ লোকরা খুব অল্প সময়ের জন্য নিরাপদ ও সুনিশ্চিত হতে পারে।
ওরা ক্ষমতাসম্পন্ন হতে চাইতে পারে।
24 মন্দ লোকরা অল্প সময়ের জন্য সফল হতে পারে, কিন্তু তারাও চলে যাবে।
আর লোকদের মত তাদেরও ফসলের মত কেটে ফেলা হবে।
25 “কিন্তু আমি বলি
কে আমাকে ভুল বলে প্রমাণ করতে পারে?
এবং আমার কথাগুলো কে ঈশ্বরের কাছে বহন করে নিয়ে যাবে?”
পিতর জেরুশালেমে ফিরলেন
11 যিহূদিয়ার প্রেরিতরা এবং বিশ্বাসী ভাইরা শুনতে পেলেন যে অইহুদীরাও ঈশ্বরের শিক্ষা গ্রহণ করেছে। 2 পিতর যখন জেরুশালেমে এলেন, তখন কিছু ইহুদী সম্প্রদায়ের খ্রীষ্ট বিশ্বাসী তাঁর সমালোচনা করতে লাগল। 3 তারা বলল, “দেখ, তুমি যারা ইহুদী নয় এবং যাদের সুন্নত হয় নি তাদের ঘরে গিয়েছিলে, এমনকি সেখানে খাওয়া-দাওয়া করেছিলে!”
4 তখন পিতর তাদের আগের সব ঘটনা বিস্তারিতভাবে জানিয়ে বললেন, 5 “আমি যাফো শহরে প্রার্থনা করছিলাম, সেই সময় ভাবাবিষ্ট অবস্থায় এক দর্শন পেলাম। আমি দেখলাম, একটা বড় চাদরের মত কিছু, তার চারটি খুঁট ধরে আকাশ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। তা আমার কাছে এলে 6 আমি ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখলাম তার মধ্যে ভূচর গৃহপালিত পশু, সকল হিংস্র বন্য জন্তু, সরীসৃপ ও আকাশের পাখিরা আছে। 7 তখন আমি এক রব শুনতে পেলাম যা আমায় বলছে, ‘পিতর ওঠ, এদের মেরে খাও!’
8 “কিন্তু আমি বললাম, ‘না, প্রভু এ হতে পারে না! কারণ অপবিত্র অশুদ্ধ কোন কিছু কখনও আমি খাই না!’
9 “আকাশ থেকে সেই রব দ্বিতীয় বার ভেসে এল, ‘ঈশ্বর যা শুদ্ধ করেছেন তুমি তা অপবিত্র বলো না।’
10 “এইভাবে তিনবার সেই রব শোনা গেল, পরে সে সব আবার আকাশে টেনে তুলে নেওয়া হল, 11 আর আমি যেখানে ছিলাম সেই বাড়িতে তখনই তিন জন লোক এল। তাদের কৈসরিয়া থেকে আমার কাছে পাঠানো হয়েছিল; 12 আর আত্মা আমায় বললেন কোনরকম দ্বিধা না করে তুমি ওদের সঙ্গে যাও। এই ছ’জন ভাইও আমার সঙ্গে গিয়েছিলেন; আর আমরা কর্ণীলিয়াসের বাড়িতে গেলাম। 13 তিনি কিভাবে একজন স্বর্গদূতকে তাঁর বাড়িতে দাঁড়াতে দেখেছিলেন তা আমাদের জানালেন। সেই স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, ‘যাফোতে লোকদের পাঠাও; সেখান থেকে শিমোন, যাকে পিতর বলে, তাকে আমন্ত্রণ দিয়ে আনাও। 14 তিনি এসে যে সব কথা বলবেন তারই দ্বারা তুমি ও তোমার গৃহের সকলে উদ্ধার লাভ করবে।’
15 “আমি যখন কথা বলতে শুরু করলাম, পবিত্র আত্মা তখন তাদের ওপর নেমে এলেন, যেমন শুরুতে আমাদের ওপর এসেছিলেন। 16 এরপর প্রভু যা বলেছিলেন তা আমার মনে পড়ল। প্রভু যীশু বলেছিলেন, ‘যোহন জলে বাপ্তাইজ করছেন, কিন্তু তোমরা পবিত্র আত্মায় বাপ্তাইজিত হবে।’ 17 আমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে বিশ্বাস করলে ঈশ্বর আমাদের যে দান দিয়েছিলেন, তেমনি তারা বিশ্বাসী হলে ঈশ্বর তাদের সমান বরদান করলেন, সেক্ষেত্রে আমি কি ঈশ্বরের কাজে বাধাদান করতে পারি? না!”
18 ইহুদী বিশ্বাসীরা যখন এইসব কথা শুনল, তারা তর্ক থামিয়ে দিয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে বলল, “তাহলে আমাদেরই মত অইহুদীদেরও ঈশ্বর জীবন লাভ করার জন্য মন-ফিরানোর সুযোগ দিলেন!”
আন্তিয়খিয়ায় সুসমাচার প্রচার
19 স্তিফানের হত্যার পর নির্যাতন শুরু হয়েছিল, ফলে বিশ্বাসীরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিযেছিলেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে বহুদূর অর্থাৎ ফৈনীকিয়া, কুপ্র ও আন্তিয়খিয়ায় পালিয়ে গিয়ে কেবলমাত্র ইহুদীদের কাছেই সুসমাচার প্রচার করেছিলেন। 20 তাঁদের মধ্যে কয়েকজন বিশ্বাসী কুপ্রীয় ও কুরিণীয় দেশের লোক ছিলেন, যারা আন্তিয়খিয়ায় এসে গ্রীক ভাষাবাদী ইহুদীদের কাছে প্রভু যীশুর সুসমাচার প্রচার করেছিলেন। 21 প্রভুর পরাক্রম তাঁদের সাথে ছিল, ফলে বহুলোক প্রভু যীশুর ওপর বিশ্বাস করে তাঁর অনুগামী হল।
22 জেরুশালেমের বিশ্বাসী মণ্ডলী যখন সেই সংবাদ শুনলেন, তাঁরা বার্ণাবাকে আন্তিয়খিয়ায় পাঠালেন। 23-24 বার্ণবা একজন ভালো লোক ছিলেন; তিনি পবিত্র আত্মায় ও বিশ্বাসে পরিপূর্ণ ছিলেন। আন্তিয়খিয়ায় গিয়ে বার্ণবা দেখলেন যে ঈশ্বর সেখানকার লোকদের আরো কত আশীর্বাদ করেছেন। এতে তিনি খুবই সন্তুষ্ট হয়ে, তাদের হৃদয় দিয়ে প্রভুর প্রতি সদাই বিশ্বস্ত থাকতে উৎসাহ দিলেন; আর বহুসংখ্যক লোক প্রভুর সঙ্গে যুক্ত হলেন।
25 বার্ণবা শৌলের খোঁজে তার্ষে গেলেন। 26 সেখানে শৌলের দেখা পেয়ে তিনি তাঁকে আন্তিয়খিয়াতে নিয়ে এলেন। তাঁরা সম্পূর্ণ এক বছর বিশ্বাসী সমাবেশে থেকে বহু লোককে শিক্ষা দিলেন। আন্তিয়খিয়াতেই অনুগামীরা প্রথম “খ্রীষ্টীয়ান” নামে অভিহিত হলেন।
27 এই সময় কয়েকজন ভাববাদী জেরুশালেম থেকে আন্তিয়খিয়াতে এলেন। 28 তাঁদের মধ্যে আগাব নামে এক ভাববাদী উঠে দাঁড়িয়ে পবিত্র আত্মার প্রেরণায় ভাববাণী করলেন, “সারা জগতে এক মহা দুর্ভিক্ষ আসছে। লোকদের খাদ্যের অভাব হবে।” (সম্রাট ক্লৌদিয়ের সময় এই দুর্ভিক্ষ হয়েছিল।) 29 প্রত্যেক শিষ্য তাঁদের নিজ-নিজ সামর্থ্য অনুসারে যিহূদার বিশ্বাসী ভাইদের সাহায্য পাঠাবার জন্য মনস্থির করলেন। 30 তাই তাঁরা বার্ণবা ও শৌলের মাধ্যমে তাঁদের সংগৃহীত অর্থ পাঠিয়ে এই কাজ করলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International