Old/New Testament
14 ইয়োব বললেন, “আমরা প্রত্যেকেই মানুষ।
আমাদের জীবন ক্ষণস্থায়ী এবং সমস্যায় পূর্ণ।
2 মানুষের জীবন ফুলের মত।
সে তাড়াতাড়ি বড় হয় এবং তারপর মারা যায়।
মানুষের জীবন একটা ছায়ার মত যা অল্পক্ষণের জন্য এখানে থাকে এবং তারপর আবার চলে যায়।
3 কিন্তু যদিও আমি নেহাতই একটি মানুষ মাত্র,
আপনি আমার ওপর মনোযোগ দেন এবং আমাকে আদালতে নিয়ে যান।
4 “কিন্তু অশুচি কিছু থেকে কেই বা শুচি কিছু তৈরী করতে পারে? কেউই নয়!
5 মানুষের জীবন সীমিত। ঈশ্বর, আপনিই স্থির করেছেন মানুষ কতদিন বাঁচবে।
আপনিই মানুষের জন্য সেই সীমা নির্ধারণ করেন
এবং কোন কিছুই আর তাকে পরিবর্তন করতে পারে না।
6 তাই ঈশ্বর, আমাদের প্রতি লক্ষ্য রাখা বন্ধ করুন, আমাদের একা ছেড়ে দিন।
আমাদের সময় শেষ হওয়া পর্যন্ত আমাদের কঠিন জীবন আমাদের উপভোগ করতে দিন।
7 “এমনকি একটা গাছেরও আশা আছে।
যদি না তাকে কেটে ফেলা হয় তা আবার বড় হতে পারে।
তা আবার নতুন অঙ্কুর ছড়িয়ে দিতে পারে।
8 এর শিকড় মাটির নীচে বুড়ো হয়ে যেতে পারে,
এর কাণ্ড ধূলায় মরে যেতে পারে,
9 কিন্তু যদি সামান্য একটুও জল পায় আবার তা বাড়তে শুরু করে।
নতুন গাছের মতই তা আবার বড় হতে থাকে।
10 কিন্তু যখন একজন শক্তসমর্থ মানুষ মরে, সে শেষ হয়ে যায়।
যখন মানুষ মরে যায়, সে চলে যায় ঠিক
11 দীঘি যেমন শুকিয়ে যায়
অথবা নদী যেমন শুকিয়ে যায়, তার মতন।
12 যখন একজন মানুষ মরে যায়,
সে শুয়ে পড়ে এবং সে আর ওঠে না।
একজন মৃত লোক উঠে দাঁড়াবার আগে
এই আকাশমণ্ডল অদৃশ্য হয়ে যাবে। না।
সেই নিদ্রা থেকে মানুষ আর জাগবে না।
13 “আমার ইচ্ছা আপনি আমাকে আমার কবরে লুকিয়ে রাখুন।
আমার ইচ্ছা, আপনার ক্রোধ প্রশমিত না হওয়া পর্যন্ত আপনি আমায় সেই খানে লুকিয়ে রাখুন।
তারপর না হয় আমাকে স্মরণ করার জন্য আপনি একটা সময় বার করবেন।
14 যদি কোন লোক মারা যায়, সে কি আবার বাঁচবে?
যদি তাই সম্ভব হয় আমি আমার মুক্তি পর্যন্ত অপেক্ষা করবো।
15 ঈশ্বর, আপনি আমায় ডাকবেন
এবং আমি আপনার ডাকে সাড়া দেবো।
তাহলে আমি, যাকে আপনি তৈরী করেছেন,
সেই আমি আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠব।
16 আমার প্রত্যেকটি পদক্ষেপে আপনি আমায় লক্ষ্য করুন,
কিন্তু আমার পাপ মনে রাখবেন না।
17 আমার সমস্ত পাপ আপনি একটা থলেতে ভরে,
তার মুখ বন্ধ করে, তাকে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেবেন।
18 “পর্বতও ভেঙে যায় এবং ধূলায় পরিণত হয়; বড় পাথরও আলগা হয়ে ভেঙে পড়ে।
19 তাদের ওপর দিয়ে জলরাশি প্রবাহিত হয়ে তাদের ধুয়ে নিয়ে যায়।
বন্যা ভূমির মাটিকে ধুয়ে নিয়ে যায়।
সেই ভাবেই হে ঈশ্বর, আপনি একজন মানুষের আশা এবং ইচ্ছা ধ্বংস করেন।
20 আপনি তাকে সম্পূর্ণ পরাজিত করেন
এবং সে চলে যায়।
আপনি তাকে দুঃখী করেন
এবং চিরদিনের জন্য তাকে মৃত্যুলোকে পাঠিয়ে দেন।
21 তার ছেলেরা হয়ত সম্মান পেতে পারে, অথবা তারা হয়ত গুরুত্বপূর্ণ না হতে পারে,
কিন্তু সে কখনও জানতে পারবে না।
22 সেই লোকটি তার শরীরে কেবল যন্ত্রণা ভোগ করে
এবং সে উচ্চস্বরে কেবল নিজের জন্যই কাঁদে।”
ইয়োবকে ইলীফসের উত্তর
15 তখন তেমনের ইলীফস ইয়োবকে উত্তর দিলেন:
2 “ইয়োব, যদি তুমি সত্যই জ্ঞানী হতে
তুমি তোমার অর্থহীন ব্যক্তিগত মতামত দিয়ে উত্তর দিতে না!
একজন জ্ঞানী ব্যক্তি পূর্বের গরম বাতাসে নিজেকে পূর্ণ করে না।
3 তুমি কি মনে কর একজন জ্ঞানী মানুষ অর্থহীন কথা দিয়ে তর্ক করবে
এবং এমন কথা বলবে যাতে কোন লাভ নেই?
4 ইয়োব, যদি তোমার নিজেরই পথ থাকতো
তাহলে কেউ আর ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করে তাঁর কাছে প্রার্থনা করতো না।
5 যে সব বিষয় তুমি বলেছো তাতে তোমার পাপ স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে।
ইয়োব, বাক্চাতুরীর সাহায্যে তুমি তোমার পাপকে ঢাকতে চাইছো।
6 তুমি যে ভুল করেছো, এ কথা আমার প্রমাণ করার দরকার নেই।
কেন? নিজের মুখে তুমি যা যা বললে তাই প্রমাণ করে যে তুমি ভুল করেছো।
তোমার নিজের ওষ্ঠদ্বয় তোমার বিরুদ্ধে কথা বলছে।
7 “ইয়োব, তুমি কি মনে কর যে তুমিই প্রথম জন্মেছো?
তুমি কি এই পাহাড়গুলির জন্মের আগে জন্মেছ?
8 তুমি কি ঈশ্বরের গোপন পরিকল্পনা শুনেছিলে?
তুমি কি নিজেকেই একমাত্র জ্ঞানী ভাবো?
9 ইয়োব, তুমি যা জান আমরা ঠিক ততটাই জানি!
তুমি যতটা বোঝ আমরাও ঠিক ততটাই বুঝি।
10 যাদের মাথায় পাকা চুল তারা এবং বয়স্ক লোক আমাদের সঙ্গে একমত হয়।
হ্যাঁ, এমন কি তোমার পিতার চেয়েও যাঁরা বয়স্ক তাঁরাও আমাদেরই পক্ষে।
11 ঈশ্বর তোমাকে স্বস্তি দিতে চেষ্টা করেন
এবং আমরা খুব শান্ত ভাবে তোমার সঙ্গে কথা বলি।
কিন্তু তোমার পক্ষে তা যথেষ্ট নয়।
12 ইয়োব, তুমি কেন এত আবেগপ্রবণ?
কেন তোমার চোখ লাল হয়ে যায়?
13 যখন তুমি এইসব ক্রোধের কথা বল
তখন তুমি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে চলে যাও।
14 “একজন মানুষ প্রকৃতই শুদ্ধ হতে পারে না।
একজন মানুষ কখনও ঈশ্বরের চেয়ে বেশী সঠিক হতে পারে না!
15 ঈশ্বর তাঁর বার্তাবাহকদেরও[a] বিশ্বাস করেন না।
এমনকি ঈশ্বরের তুলনায় স্বর্গও শুদ্ধ নয়।
16 মানুষও অপদার্থ।
মানুষ নোংরা এবং নষ্ট।
সে জলের মতই পাপ গলাধঃকরণ করে।
17 “আমার কথা শোন ইয়োব, আমি তোমাকে বুঝিয়ে বলবো।
আমি যা জানি, তোমায় তা বলবো।
18 জ্ঞানী লোকরা আমাকে যা বলেছেন সেই সব কথা আমি তোমায় বলবো।
জ্ঞানী লোকের পূর্বপুরুষরা এই কথাগুলো তাঁদের বলে গিয়েছিলেন।
তাঁরা আমার কাছে কোন গোপন কথা লুকিয়ে রাখেননি।
19 তাঁরা একাই তাঁদের দেশে বাস করেছেন।
সেখান থেকে কোন বিদেশীই যায় নি।
তাই কোন লোকই তাদের কোন অদ্ভুত আদর্শের কথা বলে নি।
20 এইসব জ্ঞানী লোক বলেছেন, একজন দুষ্ট লোক সারা জীবন কষ্ট পায়।
একজন নিষ্ঠুর লোক জীবনের সারা বছর কষ্ট পায়।
21 প্রত্যেকটি শব্দ তাকে ভীত করে।
সে যখন মনে করে যে সে নিরাপদে আছে, তখন শত্রু তাকে আক্রমণ করবে।
22 একজন দুষ্ট লোক প্রচণ্ড হতাশাগ্রস্ত এবং অন্ধকারকে এড়াবার তার কোন পথই নেই।
কোন একটা জায়গায় একটা তরবারী আছে যা তাকে হত্যা করার জন্য অপেক্ষা করছে।
23 সে এখানে ওখানে খাবারের খোঁজে ঘুরে বেড়ায়।
সে জানে যে কঠিন সময় আসন্ন।
24 দুঃখ এবং যন্ত্রণা তাকে ভীত করে।
এগুলো যেন তাকে ধ্বংসের জন্য রাজার মতো আক্রমণ করে।
25 কেন? কারণ দুষ্ট লোকরা ঈশ্বরের বাধ্য হতে চায় না—তারা ঈশ্বরকে ঘুষি দেখায়,
এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে পরাজিত করতে চায়।
26 দুষ্ট লোকরা ভীষণ একগুঁয়ে।
তারা একটা মোটা শক্ত ঢাল নিয়ে ঈশ্বরকে আক্রমণ করে।
27 একজন লোক ধনী এবং মোটা হতে পারে,
28 কিন্তু সে ধ্বংস হয়ে যাওয়া শহরে,
যেখানে কেউ থাকে না অথবা যে সমস্ত বাড়ীগুলো ধ্বংস হবার জন্য ঠিক হয়েছে
সেগুলোতে বাস করবে।
29 দুষ্ট লোকরা দীর্ঘদিন ধরে ধনী থাকবে না।
তাদের সম্পদ স্থায়ী হবে না।
তাদের ফসল বাড়বে না।
30 দুষ্ট লোক অন্ধকারকে এড়াতে পারবে না।
সে সেই গাছের মতো হবে যার পাতা রোগে শুকিয়ে যায়
এবং বাতাস তাদের সবাইকে উড়িয়ে নিয়ে যায়।
31 দুষ্ট লোকরা অর্থহীন বিষয়ের ওপর কখনো নির্ভর করে না যা তাদের বিপথে নিয়ে যাবে।
কেন? কারণ তারা কিছুই পাবে না।
32 দুষ্ট লোকে তাদের পূর্ণ ব্যাপ্তির জীবনযাপন করতে পারবে না।
তারা হবে একটি গাছের মত যার ডালপালা শুকিয়ে ঝরে গেছে এবং মরে গেছে।
33 দুষ্ট লোকে সেই দ্রাক্ষা গাছের মতো হবে যার দ্রাক্ষা ফল পাকার আগেই শুকিয়ে পড়ে যায়।
ঐ লোকটি সেই জলপাই গাছের মতো হবে যার মুকুল ঝরে যায়।
34 কেন? কারণ এক দল ঈশ্বরবিহীন মানুষ ভাল ফল ফলাতে পারে না।
যারা ঘুস নেয়, আগুন তাদের বাড়ী ধ্বংস করে দেয়।
35 মন্দ লোকরা সমস্যাকে ধারণ করে
এবং মন্দকে জন্ম দেয়। তাদের গর্ভে জন্ম নেয় মিথ্যা।”
ইলীফসকে ইয়োবের উত্তর
16 তখন ইয়োব উত্তর দিলেন,
2 “আমি এইসব কথা আগেই শুনেছি।
তোমরা তিন জন আমাকে কষ্টই দিলে, স্বস্তি নয়।
3 তোমাদের দীর্ঘ ভাষণ আর শেষ হয় না!
কিসে তোমাদের এত বিচলিত করেছে যে তোমরা কথা বলেই চলেছ?
4 যদি তোমরা আমার সমস্যায় পড়তে,
তোমরা যে কথাগুলি আমায় বললে, আমিও তোমাদের সেই কথাগুলি বলতে পারতাম।
আমিও তোমাদের প্রতি জ্ঞানগর্ভ কথা বলতে পারতাম
এবং তোমাদের প্রতি মাথা নাড়াতে পারতাম।
5 কিন্তু আমি তোমাদের উৎসাহ দিতাম এবং যে কথাগুলো বলছি, সেগুলো বলে তোমাদের আমি আশা দিতাম।
6 “কথা বললেও আমার যন্ত্রণা চলে যায় না,
নীরব থাকলেও আমার ব্যথা আমাকে ছেড়ে যায় না।
7 কিন্তু, হে ঈশ্বর, আপনি আমার শক্তি কেড়ে নিয়েছেন।
আপনি আমার সারা পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়েছেন।
8 আপনি আমায় শীর্ণ ও দুর্বল করে দিয়েছেন,
এর অর্থ, লোকে মনে করে যে আমি অপরাধী।
9 “ক্রোধে ঈশ্বর আমাকে আক্রমণ করেছেন
এবং আমার দেহকে ছিন্ন-ভিন্ন করেছেন।
ঈশ্বর আমার বিরুদ্ধে তাঁর দাঁত ঘর্ষন করেছেন।
আমার শত্রু ঘৃণাভরে আমার দিকে তাকায়।
10 আমার চার দিকে লোক জন জড়ো হয়েছে।
তারা আমাকে নিয়ে মজা করে এবং আমার গালে চড় মারে।
11 ঈশ্বর আমাকে মন্দ লোকদের হাতে তুলে দিয়েছেন।
তিনি দুষ্ট লোকের হাতে আমাকে তুলে দিয়েছেন।
12 আমার সব কিছুই সুন্দর ছিলো
কিন্তু ঈশ্বর আমায় ধ্বংস করেছেন!
হ্যাঁ, তিনিই আমার ঘাড় ধরে
আমায় খণ্ড-বিখণ্ড করেছেন।
ঈশ্বর আমাকে লক্ষ্যভেদের বস্তুতে পরিণত করেছেন।
13 ঈশ্বরের তীরন্দাজ সৈন্যরা আমার চারদিকে ঘুরছে।
তিনি আমার বৃক্কে তীর ছুঁড়ছেন।
তিনি আমাকে কোন দয়া দেখান না।
তিনি আমার পিত্তকে মাটিতে ফেলে দেন।
14 বার বার ঈশ্বর আমায় আক্রমণ করেন।
যুদ্ধের সৈন্যরা যেমন তেড়ে আসে তেমন করে তিনি আমার দিকে ছুটে আসেন।
15 “আমি নিদারুণ ভাবে দুঃখী,
তাই আমি এই দুঃখের বস্ত্র পরেছি।
আমি এই ধূলো ও ছাইয়ের ওপর বসে অনুভব করি
যে আমি পরাজিত।
16 কেঁদে কেঁদে আমার মুখ লাল হয়ে গেছে।
আমার চোখে ঘন অন্ধকার নেমে এসেছে।
17 আমি কারো প্রতিই নৃশংস ছিলাম না।
কিন্তু এই মন্দ ঘটনাগুলি আমার ক্ষেত্রে ঘটেছে। আমার প্রার্থনা যথাযথ ও পবিত্র।
18 “আমার প্রতি যে অন্যায় ঘটেছে, হে পৃথিবী, তুমি তা গোপন করো না।
ন্যায়ের জন্য আমার আর্তিকে স্তব্ধ হতে দিও না।
19 এখনও পর্যন্ত স্বর্গে কেউ আছে যে আমার পক্ষে কথা বলবে।
এখনও পর্যন্ত ওপরে কেউ আছে যে আমার পক্ষে সাক্ষী দেবে।
20 আমার চোখ যখন ঈশ্বরের জন্য অশ্রু বিসর্জন করে,
আমার বন্ধুরা আমার হয়ে কথা বলে।
21 একজন যে ভাবে বন্ধুর জন্য তর্ক করে,
সেইভাবেই সে আমার জন্য ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলে।
22 “আর মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই আমি সেখানে যাবো যেখান থেকে ফেরা যায় না।
22 কিন্তু শৌল ক্রমাগত শক্তিশালী হয়ে উঠলেন, আর দম্মেশকে যে সব ইহুদী বাস করত, শৌল তর্কে তাদের নীরব করে দিলেন, তিনি প্রমাণ দিতে থাকলেন যে যীশুই খ্রীষ্ট।
শৌল ইহুদীদের থেকে মুক্ত
23 বেশ কিছু দিন পর ইহুদীরা শৌলকে হত্যা করার চক্রান্ত করতে লাগল। 24 কিন্তু শৌল তাদের চক্রান্ত জানতে পারলেন। ইহুদীরা তাকে হত্যা করার জন্য শহরের প্রধান ফটকগুলির ওপর দিন রাত নজর রাখতে লাগল। 25 কিন্তু যারা শৌলের কাছ থেকে শিক্ষা পেয়েছিল, তারা শৌলকে শহর ত্যাগ করতে সাহায্য করল। তারা শৌলকে একটা ঝুড়িতে রেখে শহরের প্রাচীরের এক গর্ত দিয়ে ঝুড়িশুদ্ধ শৌলকে বাইরে নামিয়ে দিল।
জেরুশালেমে শৌল
26 এরপর শৌল জেরুশালেমে গেলেন। সেখানে তিনি যীশুর অনুগামীদের সঙ্গে যোগ দিতে চেষ্টা করলেন; কিন্তু তাঁরা সকলে তাঁকে ভয় করলেন। তাঁরা বিশ্বাস করতে চাইলেন না যে তিনি সত্যিকার যীশুর অনুগামী হয়েছেন। 27 কিন্তু বার্ণবা শৌলকে গ্রহণ করে তাঁকে নিয়ে প্রেরিতদের কাছে গেলেন। দম্মেশকের পথে শৌল কিভাবে যীশুর দেখা পেয়েছেন ও প্রভু যীশু যে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আর কিভাবে তিনি দম্মেশকে সাহসের সঙ্গে যীশুর নাম প্রচার করেছেন, সেসব কথা তাদের সবিস্তারে জানালেন।
28 শৌল খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের সঙ্গে জেরুশালেমে থাকতেন, তিনি সেখানে সব জায়গায় গিয়ে সাহসের সঙ্গে প্রভুর নাম প্রচার করতেন। 29 তিনি গ্রীকভাষী ইহুদীদের সঙ্গে তর্ক করেছিলেন বলে তারা তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করতে লাগল। 30 ভাইরা সে কথা জানতে পেরে তাঁকে কৈসরিয়াতে নিয়ে গেলেন ও সেখান থেকে তার্ষে পাঠিয়ে দিলেন।
31 সেই সময় যিহূদিয়া, গালীল ও শমরিয়ায় বিশ্বাসী মণ্ডলীগুলিতে শান্তি বিরাজ করছিল। বিশ্বাসীরা প্রভুর ভয়ে জীবনযাপন করত ও পবিত্র আত্মায় উৎসাহিত হত; এর ফলে দলটি শক্তিশালী হয়ে উঠল এবং ক্রমে ক্রমে সংখ্যায় বৃদ্ধিলাভ করতে লাগল।
যাফোতে পিতর
32 পিতর জেরুশালেমের আশে পাশে বিভিন্ন শহরে ভ্রমণ করতে করতে লুদ্দার খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের কাছে এলেন। 33 লুদ্দায় তিনি ঐনিয় নামে একজন পঙ্গু লোকের দেখা পান; সে আট বছর ধরে পক্ষাঘাতে শয্যাশায়ী ছিল। 34 পিতর তাকে বললেন, “ঐনিয় যীশু তোমায় সুস্থ করেছেন, তুমি ওঠ, বিছানা গুটিয়ে নাও। তুমি নিজেই তা পারবে।” সঙ্গে সঙ্গে ঐনিয় উঠে দাঁড়াল। 35 তখন লুদ্দা ও শারোণের সব লোক তাকে দেখে প্রভুর প্রতি ফিরল ও বিশ্বাসী হল।
36 যাফোতে টাবিথা বা দর্কা যার অর্থ “হরিণী” নামে এক শিষ্য ছিলেন। তিনি সব সময় লোকের উপকার করতেন, বিশেষ করে গরীবদের সাহায্য করতেন। 37 পিতর যখন লুদ্দায় ছিলেন টাবিথা অসুস্থ হয়ে মারা যান; তাই তারা তাঁর দেহ স্নান করিয়ে ওপরের ঘরে শুইয়ে রাখল। 38 লুদ্দা যাফোর কাছাকাছি ছিল। অনুগামীরা যখন শুনলেন যে পিতর লুদ্দায় আছেন, তখন তাঁরা দুজন লোককে সেখানে পাঠিয়ে অনুরোধ করলেন, “যেন পিতর তাড়াতাড়ি করে একবার তাদের ওখানে আসেন!”
39 তখন পিতর প্রস্তুত হয়ে তাদের সঙ্গে চললেন। তিনি সেখানে হাজির হলে তারা তাঁকে ওপরের সেই ঘরে নিয়ে গেল; আর বিধবারা সকলে তাঁর চারদিকে দাঁড়িয়ে কাঁদতে লাগল, দর্কা জীবিত অবস্থায় তাদের সঙ্গে থাকবার সময়ে যেসব পোশাকগুলি তৈরী করেছিলেন তা দেখাতে লাগল। 40 পিতর সকলকে ঘরের বাইরে বার করে দিয়ে হাঁটু গেড়ে প্রার্থনা করলেন। তারপর সেই দেহের দিকে ফিরে তিনি বললেন, “টাবিথা, ওঠ!” তাতে তিনি চোখ খুললেন ও পিতরকে দেখে উঠে বসলেন। 41 তখন পিতর হাত বাড়িয়ে তাঁকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করলেন। এরপর তিনি বিশ্বাসীদের ও সেই বিধবাদের ডেকে তাঁকে জীবিত দেখালেন।
42 এই কথা যাফোর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল আর অনেক লোক প্রভুর ওপর বিশ্বাস করল। 43 পিতর যাফোতে শিমোন নামে এক চামড়া ব্যবসায়ীর ঘরে অনেক দিন রইলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International