Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
ইয়োব 3-4

যেদিন ইয়োব জন্মেছিলেন সেই দিনকে তিনি অভিশাপ দিলেন

তারপর ইয়োব মুখ খুললেন এবং যে দিন তিনি জন্মেছিলেন সেই দিনটিকে নিন্দা করলেন। তিনি বললেন:

“যে দিনে আমি জন্মেছিলাম সেদিন চিরদিনের জন্য নিশ্চিহ্ন হয়ে যাক।
    যে রাত্রি বলে উঠেছিলো, ‘একটি ছেলে গর্ভে এসেছে!’ সে রাত্রি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাক।
সে দিন যেন অন্ধকারে ঢেকে যায়।
    সেই দিনের কথা ওপরে ঈশ্বর যেন ভুলে যান।
    সেই দিনে যেন আলো প্রকাশ না হয়।
বিষাদ এবং মৃত্যুর অন্ধকার যেন সেই দিনকে নিজেদের বলে দাবী করে।
    মেঘ যেন সেই দিনকে ঢেকে লুকিয়ে রাখে। তিক্ত বিষাদ যেন সেই দিনটিকে গ্রাস করে।
অন্ধকার যেন সেই রাত্রিকে নিয়ে যায়।
    সেই দিনটিকে পঞ্জিকা থেকে বাদ দিয়ে দাও।
    সেই রাত্রিকে কোন মাসের মধ্যে গণনা করো না।
সেই রাত্রি যেন কোন কিছু উৎপন্ন না করে।
    সেই রাতে যেন কোন খুশীর শব্দ শোনা না যায়।
যারা দিনকে অভিশাপ দেয়[a] এবং যারা লিবিয়াথনকে জাগিয়ে তুলতে পারদর্শী,
    তারা যেন সেই রাতটিকে অভিশাপ দেয়।
সেই দিনের প্রভাতী নক্ষত্র যেন অন্ধকার হয়ে যায়।
    সেই রাত্রি যেন প্রভাতের আলোর জন্য অপেক্ষা করে কিন্তু সেই সকাল যেন কোন দিন না আসে।
    সেই দিন যেন সূর্যের প্রথম রশ্মি কোনদিন না দেখে।
10 কেন? কারণ সেই রাত্রি আমাকে জন্মাতে বাধা দেয় নি।
    সেই রাত্রি এইসব সমস্যা দেখা থেকে আমাকে বিরত করে নি।
11 যখন আমি জন্মেছিলাম, তখনই আমি মরে গেলাম না কেন?
    কেন আমি আমার মাতৃজঠর থেকে বেরিয়ে এসেই মারা গেলাম না?
12 কেন আমার মা আমাকে নির্বিঘ্নে জন্ম দিয়েছিলেন?
    আমার মায়ের স্তন কেন আমায় দুধ পান করিয়েছিলো?
13 এই ঘটনাগুলি যদি না ঘটত তাহলে আমি এখন শায়িত থাকতে পারতাম।
    আমি শান্তিতে থাকতাম।
আমি ঘুমিয়ে থাকতে পারতাম এবং বিশ্রাম পেতাম।
14     এই পৃথিবীর যে সব রাজা ও মন্ত্রীরা ধ্বংসপ্রাপ্ত নগরীগুলি নিজেদের জন্য পুনর্নির্মাণ করেছেন[b]
    আমি তাঁদের সঙ্গে থাকতে পারতাম।
15 অথবা আমি সেই রাজপুত্রদের সঙ্গে থাকতে পারতাম যাদের কাছে সোনা ছিল
    এবং যারা তাদের বাড়ীগুলি রূপায় ভর্ত্তি করে রাখত।
16 আমি কেন সেই শিশুর মত হলাম না যে জন্মের সময়ই মারা যায়
    এবং যাকে মাটিতে কবর দেওয়া হয়?
যে শিশু দিনের আলো দেখেনি
    আমি যদি সেই শিশুর মত হতাম!
17 দুষ্ট লোকরা যখন কবরে থাকে তখন তারা কোন অশান্তি অনুভব করে না।
    যারা পরিশ্রান্ত, তারা কবরে বিশ্রাম খুঁজে পায়।
18 এমনকি ক্রীতদাসরাও কবরের মধ্যে সকলে মিলে স্বচ্ছন্দে থাকে।
    ক্রীতদাস তাড়কদের চিৎকার তারা শুনতে পায় না।
19 কবরে সব রকমের লোকই রয়েছে—গুরুত্বপূর্ণ লোক এবং যারা গুরুত্বপূর্ণ নয় তারাও রয়েছে।
    এমনকি একজন দাসও তার প্রভুর কবল থেকে মুক্ত।

20 “যে মানুষ ভুগছে তাকে আলো দেখান কিজন্য?
    যার জীবন তিক্ত কেন তাকে আয়ু দেওয়া হয়?
21 যে লোক মরতে চায়, কিন্তু মৃত্যু আসে না,
    সেই দুঃখী লোক গুপ্ত সম্পদের চেয়েও বেশি করে মৃত্যুকে খোঁজে।
22 ঐ লোকরা ওদের কবর খুঁজে পেলে অত্যন্ত খুশী হবে
    এবং আনন্দে গান গাইবে।
23 যারা তাদের জীবনের পথ দেখতে পায় না তাদের কেন জীবন দেওয়া হয়?
    ঈশ্বর কেন তাদের মরণ থেকে দূরে সরিয়ে রাখেন?
24 আমার দীর্ঘশ্বাসই আমার খাদ্য।
    আমার গুমরানি জলের মত গড়িয়ে পড়ে।
25 আমি যার ভয়ে ভীত ছিলাম আমার ঠিক তাই ঘটেছে।
    যা আমার আতঙ্ক ছিল, আমার বিরুদ্ধে তাই ঘটেছে।
26 আমি শান্তি খুঁজে পাইনি। আমি স্বস্তি খুঁজে পাইনি।
    আমি শুধু মাত্র অশান্তি খুঁজে পেয়েছি। আমি কষ্টে পড়েছি!”

ইলীফস কথা বললেন

তৈমনীয় ইলীফস উত্তর দিলো:

“যদি কেউ তোমার সঙ্গে কথা বলতে চায়, তুমি কি অধৈর্য্য হবে?
    কিন্তু তোমার সঙ্গে কথা বলা থেকে কে আমাকে থামাতে পারে?
ইয়োব, তুমি অনেক লোককে শিক্ষা দিয়েছো।
    দুর্বলকে তুমি শক্তি দিয়েছো।
যারা প্রায় পড়ে যাচ্ছিল তুমি তাদের উৎসাহিত করেছ।
    যাদের হাঁটু ভেঙে আসছিল তুমি তাদের সবল করেছ।
কিন্তু এখন তুমি সমস্যায় পড়েছ
    এবং তুমি নিরুৎসাহ হয়েছো।
সমস্যা তোমায় আঘাত করেছে
    এবং তুমি বিচলিত।
ঈশ্বরের প্রতি তোমার শ্রদ্ধা কি
    তোমাকে এই পরিস্থিতিতে আত্মবিশ্বাস যোগায় না?
তোমার সরল ও সৎ‌ জীবন কি
    তোমাকে এই পরিস্থিতিতে আশা দেয় না?
ইয়োব, অন্তত একজন নির্দোষ লোকের নাম কর যে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।
    আমাকে ভালো লোকদের দেখাও যারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল।
আমি কিছু সমস্যা সৃষ্টিকারী মানুষ দেখেছি যারা অন্যের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে।
    কিন্তু তারা সর্বদা শাস্তি পেয়েছে।
ঈশ্বরের শাস্তি ঐ লোকদের হত্যা করেছে।
    ঈশ্বরের ক্রোধ তাদের ধ্বংস করেছে।
10 মন্দ লোকরা সিংহের মত গর্জন ও গর্গর্ করে।
    কিন্তু ঈশ্বর ঐ মন্দ লোকদের চুপ করিয়ে দেন এবং ঈশ্বর তাদের দাঁত ভেঙে দেন।
11 হ্যাঁ, ঐ মন্দ লোকরা, সেই সিংহের মত যারা হত্যা করার জন্য কোন প্রাণী পায় না।
    তারা মারা যায় এবং তাদের পুত্ররা যত্রতত্র ঘুরে বেড়ায়।

12 “গোপনে আমার কাছে এক বার্তা এসেছে।
    আমি তা নিজের কানে শুনেছি।
13 সে ছিল একটি দুঃস্বপ্নেব মত
    যেটা লোকরা গভীরভাবে ঘুমিয়ে পড়লে আসে।
14 আমি ভয়ে কেঁপে উঠেছিলাম।
    আমার হাড়গোড় পর্যন্ত কেঁপে উঠেছিল।
15 আমার মুখের সামনে দিয়ে একটা আত্মা চলে গেল।
    আমার সমস্ত শরীর রোমাঞ্চিত হল।
16 সেই আত্মা আমার সামনে থেমে গেল।
    কিন্তু আমি দেখতে পাইনি তা কি ছিল।
আমার চোখের সামনে কিছু একটা অবয়ব ছিল মাত্র
    এবং চারদিক নিস্তদ্ধ ছিল।
তারপর আমি একটি কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম:
17 ‘কোন লোক ঈশ্বরের চেয়ে বেশী সঠিক হতে পারে না।
    কোন ব্যক্তি তার স্রষ্টার চেয়ে বেশী শুদ্ধ হতে পারে না।
18 দেখ, ঈশ্বর তাঁর স্বর্গের দাসদের প্রতিও নির্ভর করতে পারেন না।
    ঈশ্বর তাঁর দূতদের মধ্যেও ভুল ত্রুটি দেখেন।
19 তাই সত্যিই মানুষ নশ্বর।
    ধূলার ভিতযুক্ত মাটির বাড়িতে যারা বাস করে তাদের ঈশ্বর কত কম বিশ্বাস করেন!
ঈশ্বর পতঙ্গের মত তাদের পিষে ফেলেন।
    মানুষ মাটির ঘরে বাস করে (মানুষের দেহ মাটির তৈরী)।
সেই মাটির ঘরের ভিত ধূলায় বা পাঁকের মধ্যে থাকে।
    একটা পতঙ্গের থেকেও সহজে তাদের দেহ নষ্ট করে ফেলা যায়!
20 সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত মানুষ টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙেই চলেছে।
    যেহেতু তারা শুধুই মাটির তৈরী সেহেতু তারা চিরতরে বিনষ্ট হয়।
21 তাদের তাঁবুর দড়ি খুলে নেওয়া হয়
    এবং প্রজ্ঞাবিহীন অবস্থায় তারা মারা যায়।’

প্রেরিত 7:44-60

44 “মরু এলাকায় আমাদের সেই পিতৃপুরুষদের কাছেই সেই পবিত্র তাঁবু ছিল। এই পবিত্র তাঁবু তৈরী হয়েছিল সেই ধারায়, যেভাবে নমুনা দেখিয়ে ঈশ্বর মোশিকে তা করতে বলেছিলেন। 45 পরবর্তীকালে যিহোশূয় আমাদের পিতৃপুরুষদের পরিচালিত করলে তাঁরা ভিন্ন জাতির দেশ দখল করলেন। আমাদের লোকরা সেই দেশে প্রবেশ করলে ঈশ্বর সেখানকার লোকদের সেই দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করলেন। আমাদের লোকরা এই নতুন দেশে গেলে ঐ তাঁবুও সঙ্গে নিয়ে এলেন। পিতৃপুরুষদের কাছ থেকে তাঁরা এই তাঁবু পেয়েছিলেন। সেই তাঁবু রাজা দায়ূদের সময় পর্যন্ত তাঁদের কাছে ছিল। 46 দায়ূদ ঈশ্বরের দৃষ্টিতে বিশেষ অনুগ্রহ লাভ করলেন আর যাকোবের ঈশ্বরের জন্য এক গৃহ নির্মাণ করার অনুমতি চাইলেন। 47 কিন্তু দায়ূদের ছেলে শলোমন তাঁর জন্য মন্দির নির্মাণ করলেন।

48 “কিন্তু যিনি পরমেশ্বর তিনি কখনও মানুষের হাতে তৈরী গৃহে বাস করেন না। এ বিষয়ে ভাববাদী বলেছেন:

‘প্রভু বলেন,
49 স্বর্গ আমার সিংহাসন।
    পৃথিবী আমার পা রাখার জায়গা।
তুমি আমার জন্য কিরূপ গৃহ নির্মাণ করবে?
    আমার বিশ্রামের স্থান কোথায়!
50 আমার হাতই কি এই বস্তুগুলি নির্মাণ করে নি!’(A)

51 “আপনারা একগুঁয়ে লোক! ঈশ্বরকে আপনারা নিজ নিজ হৃদয় সঁপে দেন নি! আপনারা তাঁর কথা শুনতে চান নি! আপনারা সব সময় পবিত্র আত্মা যা বলতে চাইছেন তা প্রতিরোধ করে এসেছেন। আপনাদের পিতৃপুরুষরা যেমন করেছিলেন, আপনারাও তাদের মতোই করছেন। 52 এমন কোন ভাববাদী ছিলেন কি যাকে আপনাদের পিতৃপুরুষরা নির্যাতন করেন নি? সেই ধার্মিক ব্যক্তির আগমণের কথা যাঁরা বহুপূর্বে ঘোষণা করেছিলেন আপনাদের পিতৃপুরুষরা তাদের খুন করেছেন; আর এখন আপনারা সেই ধার্মিককে শত্রুর হাতে সঁপে দিয়ে হত্যা করছেন। 53 আপনারা মোশির বিধি-ব্যবস্থা পেয়েছিলেন, ঈশ্বরই তাঁর স্বর্গদূতদের মাধ্যমে তা দিয়েছিলেন, কিন্তু আপনারা তা পালন করেন নি!”

স্তিফানকে হত্যা

54 ইহুদী নেতারা স্তিফানের এইসব কথা শুনে প্রচণ্ড রেগে গেল। স্তিফানের প্রতি তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে দাঁতে দাঁত ঘষতে লাগল। 55 স্তিফান পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে স্বর্গের দিকে তাকালেন আর দেখলেন ঈশ্বরের মহিমা, দেখলেন যীশু ঈশ্বরের ডানদিকে দাঁড়িয়ে আছেন। 56 তিনি বললেন, “দেখ! আমি দেখছি স্বর্গ খোলা রয়েছে; আর মানবপুত্র ঈশ্বরের ডানদিকে দাঁড়িয়ে আছেন!”

57 তখন ইহুদী নেতারা জোরে চিৎকার করে উঠল, আর নিজেদের কানে হাত চাপা দিল। এরপর সবাই মিলে এক সঙ্গে তাঁর দিকে ছুটে গেল। 58 তারা স্তিফানকে মেরে ফেলার জন্য তাঁকে টানতে টানতে শহর থেকে বাইরে নিয়ে গিয়ে পাথর মারতে লাগল। যারা স্তিফানের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে এসেছিল, তারা শৌল নামে এক যুবকের পায়ের কাছে তাদের আলখাল্লা খুলে জমা রাখল। 59 তারা যখন স্তিফানকে পাথর মেরে চলেছে তখন তিনি প্রার্থনা করে বললেন, “প্রভু যীশু আমার আত্মাকে গ্রহণ কর!” 60 এরপর তিনি হাঁটু গেড়ে বসে চিৎকার করে বললেন, “প্রভু, এদের বিরুদ্ধে এই পাপ গন্য করো না!” এই বলে তিনি মৃত্যুতে ঢলে পড়লেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International