Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
ইষ্টের 3-5

হামনের ইহুদীদের বিনাশ করার পরিকল্পনা

এসব ঘটনা ঘটার পরে রাজা অগাগীয় হম্মদাথার পুত্র হামন নামে এক ব্যক্তিকে সম্মান জানান। রাজা হামনকে উচ্চপদে উন্নীত করেন এবং তাঁর অন্য সমস্ত আধিকারিকদের থেকে উচ্চতর পদে তাকে নিযুক্ত করেন। রাজা নির্দেশ দিয়েছিলেন যে মুখ্যদ্বার দিয়ে ঢোকবার সময় প্রত্যেক ব্যক্তিকে মাথা ঝুঁকিয়ে হামনকে সম্মান জানাতে হবে। তাই রাজার সব নেতারা রাজদ্বারে হামনের কাছে প্রণত হয়ে তাঁকে সম্মান জানাতেন, কিন্তু শুধুমাত্র মর্দখয় তা করতে রাজী হলেন না। তখন অন্যান্য প্রধানরা তাঁকে প্রশ্ন করলেন, “আপনি কেন রাজার নির্দেশ মেনে হামনকে সম্মান দেখান না?”

সমস্ত প্রধানরা এবিষয়ে দিনের পর দিন মর্দখয়কে বলা সত্ত্বেও মর্দখয় হামনের সামনে কোন মতেই মাথা নীচু করতে রাজী হলেন না। তখন হামন কি করে তা দেখার জন্য এই সমস্ত নেতারা হামনকে একথা জানালেন। মর্দখয় এই আধিকারিকদের বলেছিলেন যে তিনি ইহুদী। হামন যখন দেখলেন সত্যি সত্যিই মর্দখয় তাকে সম্মান দেখাতে অনিচ্ছুক তখন তিনি খুবই ক্রুদ্ধ হলেন। মর্দখয় যে ইহুদী হামন সে কথাও জেনেছিলেন। হামনের ইচ্ছা ছিল শুধু মর্দখয় নয়, রাজা অহশ্বেরশের রাজ্যে বসবাসকারী মর্দখয়ের জাতির সবাইকে হত্যা করা হোক্।

অহশ্বেরশের রাজত্বের দ্বাদশ বছরের প্রথম মাসে, নীষণ মাসে হামন অক্ষ নিক্ষেপ করে একটি মাসের একটি বিশেষ দিন বেছে নিলেন। সেই দিনটি ছিল দ্বাদশতম মাস, অদর মাস। (সে সময় অক্ষকে “পূরও” বলা হোত।) তারপর রাজা অহশ্বেরশের কাছে এসে হামন বললেন, “হে রাজন, আপনার রাজ্যের সর্বত্র এক বিশেষ জাতির মানুষরা বাস করছে, যাদের সংস্কৃতি অন্যদের থেকে আলাদা। তারা অন্য কোন জাতির লোকদের সঙ্গে মেলামেশা করে না, এমন কি আপনার বিধিও মেনে চলে না। এই সমস্ত লোকদের আপনার রাজ্যে বসবাস করতে দেওয়া উচিৎ‌ বলে আমি মনে করি না।

“রাজার প্রতি আমার বিনীত নিবেদেন: আমার পরামর্শ হল, এইসব লোকদের শেষ করে দেওয়ার জন্য আপনি নির্দেশ দিন। আর আমি রাজ কোষাগারে 10,000 রৌপ্যমুদ্রা জমা দেবো।”[a]

10-11 রাজা তখন তাঁর আঙুল থেকে একটি আংটি খুলে হামনকে দিলেন। হামন ছিলেন ইহুদীদের শত্রু। তিনি ছিলেন অগাগিয় হম্মদাথার পুত্র। রাজা তাঁকে বললেন, “রৌপ্য মুদ্রাগুলি তুমি তোমার জন্য রাখ এবং ইহুদীদের তুমি যা খুশি করতে পারো।”

12 তখন প্রথম মাসের 13 দিনে রাজার সমস্ত সচিবদের ডেকে পাঠানো হল এবং তারা প্রত্যেক আঞ্চলিক ভাষায় হামনের নির্দেশ লিখে নিলো। তারা সেই নির্দেশ লিখে নিয়ে সমস্ত অঞ্চলের প্রাদেশিক কর্তাকে পাঠিয়ে দিল। এই নির্দেশ স্বয়ং রাজা অহশ্বেরশের হুকুমে লেখা হল এবং জারি করা হল এবং তাঁর অঙ্গুরীয দিয়ে শীলমোহর করা হল।

13 এই সমস্ত চিঠি নিয়ে বার্তাবাহকরা রাজ্যের সমস্ত অঞ্চলে গেলেন। চিঠিটি একটি নির্দিষ্ট দিনে বয়স নির্বিশেষে সমস্ত ইহুদীকে শেষ করবার আদেশ বহন করছিল। দ্বাদশতম মাস, অদর মাসের ত্রয়োদশতম দিনকে এই হত্যালীলার জন্য বাছা হয়েছিল। এছাড়াও, ইহুদীদের সমস্ত বিষয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করবার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল।

14 এই নির্দেশ সম্বলিত চিঠির প্রতিলিপি সমস্ত প্রদেশগুলিতে এবং সব লোকদের কাছে পাঠানো হল। বলা হল এই আদেশকে বিধি হিসেবে মানতে হবে এবং প্রকাশ্য স্থানে রাখতে হবে যাতে ওই সমস্ত লোকরা সেই দিনের জন্য প্রস্তত হতে পারে। 15 রাজার নির্দেশে বার্তাবাহকরা যেখানে এই আদেশ জারি হয়েছিল, সেই রাজধানী শূশন থেকে তৎ‌ক্ষণাৎ‌‌ রওনা হল। তারপর রাজা ও হামন একসঙ্গে দ্রাক্ষারস পান করতে বসলেন। শূশনের সকলে এ নির্দেশে বিচলিত হল। ভুল বোঝাবুঝি হল। লোকে উদ্বিগ্ন হল।

ইষ্টেরের সাহায্য চেয়ে অনুনয় করলেন মর্দখয়

মর্দখয় এসব কথা জানতে পারলেন। তিনি ইহুদীদের বিরুদ্ধে রাজার দেওয়া নির্দেশের কথা জানতে পেরে, নিজের প্রকৃত পোশাক ছিঁড়ে ফেলে শোকের পোশাক পরলেন। তারপর সারা মাথায় ভস্ম মেখে উচ্চস্বরে কাঁদতে কাঁদতে শহরে বেড়ালেন। তিনি এভাবে রাজদ্বার পর্যন্ত গেলেন কারণ শোকের পোশাক পরে কাউকে এভাবে দরজার ভেতরে যেতে দেওয়া হতো না। প্রত্যেকটি প্রদেশে যেখানে যেখানে রাজার নির্দেশ জারি করা হয়েছিল সেখানে ইহুদী সম্প্রদায়ের মধ্যে শোকের ছায়া পড়ে গিয়েছিল। তারা সকলে অভুক্ত থেকে উচ্চস্বরে কান্নাকাটি করছিল। অনেক ইহুদী মাথায় ভস্ম মেখে মাটিতে গড়াগড়ি দিচ্ছিল।

ইষ্টেরের পরিচারিকা ও নপুংসক পরিচারকরা এসে তাঁকে মর্দখয়ের কথা জানালো। সেকথা শুনে ইষ্টের মর্মাহত ও বিষণ্ন হলেন। তিনি শোকের পোশাক ছেড়ে ফেলতে অনুরোধ জানিয়ে মর্দখয়ের জন্য জামাকাপড় পাঠালেন। কিন্তু মর্দখয় তা পরতে রাজী হলেন না। তখন ইষ্টের হথক নামে রাজার এক নপুংসক পরিচারককে ডেকে পাঠালেন। হথককে রাজা ইষ্টেরের পরিচর্যার কাজে নিয়োগ করেছিলেন। তাকে ইষ্টের মর্দখয়ের দুঃখের কারণ অনুসন্ধান করতে বললেন। তখন হথক রাজপ্রাসাদের ফটকের সামনে শহরের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে যেখানে মর্দখয় অপেক্ষা করছিল সেখানে গেল। মর্দখয় হথককে যা যা ঘটেছে সে সব কথাই বললেন। এমনকি ইহুদীদের নিধনের জন্য হামন রাজকোষাগারে যে অর্থ দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার সঠিক পরিমাণও মর্দখয় তাকে জানালেন। মর্দখয় তাকে ইহুদী হত্যার জন্য রাজার দেওয়া নির্দেশ-নামার একটি প্রতিলিপিও দিলেন। এই নির্দেশ-নামাটি শূশনের সর্বত্র পাঠানো হয়েছিল। তিনি হথককে নির্দেশ-নামাটি ইষ্টেরকে দেখিয়ে যা ঘটেছিল তা ব্যাখ্যা করতে বললেন। উপরন্তু তিনি তাকে ইষ্টেরকে রাজার কাছে গিয়ে তাঁর স্বজাতীয়দের জন্য ও মর্দখয়ের জন্য ক্ষমা ভিক্ষা করার জন্য বলতে বললেন।

হথক ফিরে গিয়ে ইষ্টেরকে মর্দখয়ের সব কথাই জানাল।

10 ইষ্টের তখন হথককে বললেন, মর্দখয়কে জানাতে: 11 “রাজ্যের সমস্ত বাসিন্দা ও রাজার সমস্ত নেতারাই জানেন, যে ডাক না পড়লে পুরুষ বা নারী যেই হোক্ না কেন রাজার কাছে যেতে পারে না। যদি কেউ রাজার কাছে যায় তবে তার মৃত্যুদণ্ড হয়। এক্ষেত্রে একমাত্র ব্যতিএম হল: রাজা যদি কারো হাতে তাঁর সোনার রাজদণ্ডটি দেন, তাহলে এক্ষেত্রে সে ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ড থেকে নিষ্কৃতি পায়। কিন্তু আমাকে রাজা গত 30 দিনের মধ্যে একবারও ডেকে পাঠান নি।”

12-13 মর্দখয়কে ইষ্টেরের বার্তা জানানো হলে তিনি ইষ্টেরকে বলে পাঠালেন: “ইষ্টের, এমন ভেবো না যে যদিও তুমি রাজপ্রাসাদে বাস করছো, ইহুদী হয়েও নিজে বেঁচে যাবে। 14 তুমি যদি এখন চুপ করে থাকো, ইহুদীদের জন্য সাহায্য ও স্বাধীনতা কোথাও না কোথাও থেকে আসবে, কিন্তু তুমি ও তোমার পিতার পরিবারের সকলে মারা যাবে। কে জানে, হয়তো ঠিক এরকম কোন একটা সময়ের জন্যই তোমাকে রাণী করা হয়েছে!”

15-16 ইষ্টের এর উত্তরে মর্দখয়কে জানালেন: “শূশনের সমস্ত ইহুদীদের সঙ্গে আমার জন্য উপবাস করো। তিন দিন, তিন রাত্রি তোমরা কোন খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করো না। আমি ও আমার পরিচারিকারাও তোমাদের মতোই উপবাস করবো। তারপর আমি রাজার কাছে যাবো। আমি জানি, না ডাকতে রাজার কাছে যাওয়াটা নিয়ম বিরুদ্ধ। কিন্তু আমি তাও যাবো, তাতে যদি আমার মৃত্যুও হয়, তো হবে।”

17 মর্দখয় তখন গিয়ে ইষ্টের তাঁকে যা যা করতে বলেছিলেন সবই করলেন।

ইষ্টের রাজার সঙ্গে কথা বললেন

তৃতীয় দিন ইষ্টের তাঁর বিশেষ পোশাক পরিধান করে রাজার প্রাসাদের ভেতরে গিয়ে রাজ দরবারের সামনে, রাজা যেখানে দরবার কক্ষের প্রবেশ পথের দিকে মুখ করে তাঁর সিংহাসনে বসতেন, সেখানে গিয়ে দাঁড়ালেন। রাণীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রাজা খুবই খুশী হলেন এবং তৎ‌ক্ষণাৎ‌ তাঁর দিকে নিজের সোনার রাজদণ্ডটি এগিয়ে দিলেন। ইষ্টের তখন সভার ভেতরে রাজার সান্নিধ্যে গিয়ে সুবর্ণ রাজদণ্ডের শেষাংশ স্পর্শ করলেন।

তখন রাজা ইষ্টেরকে রশ্ন করলেন, “কি কারণে তোমায় এতো বিমর্ষ দেখাচ্ছে রাণী ইষ্টের? তুমি কি আমায় কিছু জিজ্ঞেস করতে চাও? আমার কাছে যদি তুমি কিছু চাও, এমনকি তুমি যদি রাজ্যের অর্ধেকও চাও তাও আমি তোমায় দেবো।”

ইষ্টের জবাব দিলেন, “আমি আপনার জন্য ও হামনের জন্য একটি ভোজের আয়োজন করেছি। দয়া করে হামনের সঙ্গে আজ সেই ভোজসভায় আসুন।”

রাজা বললেন, “হামনকে শীঘ্রই নিয়ে এসো যাতে ইষ্টের যা বলছে আমরা তাই করতে পারি।”

অতএব রাজা ও হামন ইষ্টেরের আয়োজিত ভোজসভায় গেলেন। যখন তাঁরা দ্রাক্ষারস পান করছিলেন তখন রাজা আবার ইষ্টেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার অনুরোধটা কি? তুমি যদি আমার রাজ্যের অর্ধেকও চাও তা তোমায় দেওয়া হবে।”

ইষ্টের উত্তর দিলেন, “আমার অনুরোধ হল, রাজা যদি আমার ওপর খুশী হয়ে থাকেন এবং তিনি যদি আমার ইচ্ছামত জিনিষ আমাকে দিতে পারেন তাহলে আমার ইচ্ছা হল: আমি চাই রাজা এবং হামন দয়া করে আগামীকাল আমার বাড়ীতে আসুন। আমি একটি ভোজসভার আয়োজন করব এবং ঐ সভায় আমার ইচ্ছা প্রকাশ করব।”

মর্দখয়ের প্রতি হামনের ক্রোধ

হামন সেদিন রাজার বাড়ী থেকে খুবই খুশি মনে ও আনন্দিত চিত্তে আসছিলেন, কিন্তু রাজতোরণের সামনে মর্দখয়কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তিনি খুব রেগে গেলেন। তিনি যখন পাশ দিয়ে গেলেন তখন মর্দখয় মাথা নীচু করলেন না বা হামনকে সম্মান দেখালেন না। তিনি হামনকে কখনও ভয় পেতেন না আর এ ব্যপারে হামন খুব ক্রুদ্ধ ছিলেন। 10 যাই হোক্ কোন মতে রাগ চেপে হামন বাড়ি চলে গেলেন। বাড়ি ফিরে হামন তাঁর বন্ধুদের ও স্ত্রী সেরশকে ডেকে পাঠালেন। 11 তারপর তিনি কত বড়লোক তা নিয়ে, তাঁর পুত্রদের সংখ্যা নিয়ে ও রাজা তাঁকে কিভাবে খাতির করেন তা নিয়ে বড়াই করতে শুরু করলেন। রাজা যে তাঁকে রাজ্যের সর্বোচ্চ পদটি দিয়েছেন একথাও তিনি জানাতে ভুললেন না। 12 “শুধু এই নয়,” হামন বললেন, “রাণী আগামীকাল রাজার জন্য যে ভোজসভার ব্যবস্থা করেছেন তাতে একমাত্র আমাকেই রাজার সঙ্গে যেতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। 13 কিন্তু এসব সত্ত্বেও আমি খুশি হতে পারছি না। যতক্ষণ ওই ইহুদী মর্দখয়টাকে রাজদ্বারের কাছে বসে থাকতে দেখবো ততক্ষণ আমার পক্ষে খুশী হওয়া সম্ভব নয়।”

14 তখন হামনের স্ত্রী সেরশ ও হামনের বন্ধুরা পরামর্শ দিলেন, “কাউকে দিয়ে একটা বড় 75 ফুট মতো থাম্বা বানিয়ে, রাজাকে বলো সকাল বেলা ওটায় মর্দখয়কে ফাঁসি দিতে। আর তারপর খুশি মনে রাজাকে নিয়ে ভোজসভায় যেও!”

এই প্রস্তাবটা হামনের বেশ মনে ধরায়, তিনি মর্দখয়কে ফাঁসি দেবার জন্য স্তম্ভ বানাতে হুকুম দিলেন।

প্রেরিত 5:22-42

22 কিন্তু সেই লোকরা কারাগারে এসে কারাগারের মধ্যে প্রেরিতদের দেখতে পেল না। তাই তারা ফিরে গিয়ে বলল, 23 “আমরা দেখলাম কারাগারের তালা বেশ ভালভাবেই বন্ধ আছে, দরজায় দরজায় পাহারাদাররা দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু দরজা খুলে ভেতরে গিয়ে আমরা কাউকে দেখতে পেলাম না। দেখলাম কারাগার খালি পড়ে আছে।” 24 মন্দির রক্ষীবাহিনীর প্রধান ও প্রধান যাজকরা এই কথা শুনে হতবুদ্ধি হয়ে ভাবতে লাগল এর পরিণতি কি হবে?

25 সেই সময় একজন এসে তাদের বলল, “শুনুন! যে লোকদের আপনারা কারাগারে রেখেছিলেন, দেখলাম তাঁরা মন্দিরের মধ্যে দাঁড়িয়ে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছেন।” 26 তখন রক্ষীবাহিনীর প্রধান তার লোকদের নিয়ে সেখানে গেল ও প্রেরিতদের নিয়ে এল। তারা কোনরকম জোর করল না, কারণ তারা লোকদের ভয় করতে লাগল, পাছে তারা পাথর ছুঁড়ে তাদের মেরে ফেলে।

27 তারা প্রেরিতদের নিয়ে এসে ইহুদী নেতাদের সামনে দাঁড় করালে মহাযাজক প্রেরিতদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। 28 তিনি বললেন, “ঐ মানুষটির বিষয়ে কোন শিক্ষা দিতে আমরা তোমাদের দৃঢ়ভাবে নিষেধ করেছিলাম। ভেবে দেখ তোমরা কি করেছ? তোমরা তোমাদের শিক্ষায় জেরুশালেম মাতিয়ে তুলেছ, আর সেই লোকের মৃত্যুর জন্য সব দোষ আমাদের ওপর চাপাতে চাইছ।”

29 তখন পিতর ও অন্য প্রেরিতরা এর উত্তরে বললেন, “মানুষের হুকুম মানার চেয়ে বরং ঈশ্বরের আদেশ আমাদের অবশ্যই পালন করতে হবে। 30 আপনারা যীশুকে হত্যা করেছিলেন, তাঁকে বিদ্ধ করে ক্রুশে টাঙ্গিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ঈশ্বর আমাদের সেই পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করেছেন। 31 সেই যীশুকে ঈশ্বর নেতা ও ত্রাণকর্তারূপে উন্নত করে নিজের ডান দিকে স্থাপন করেছেন, যাতে ইহুদীরা তাদের মন ফিরায় ও তিনি তাদের পাপ ক্ষমা করতে পারেন 32 আর আমরা এসব ঘটতে দেখেছি, বলতে পারি যে এসব সত্য। পবিত্র আত্মাও দেখাচ্ছেন যে এসব সত্য। যাঁরা তাঁর বাধ্য তাদের তিনি পবিত্র আত্মা দান করেছেন।”

33 মহাসভার সভ্যরা এসব কথা শুনে প্রচণ্ড রেগে উঠল, আর তারা প্রেরিতদের হত্যা করতে চাইল। 34 কিন্তু সেই মহাসভার একজন সভ্য, গমলীয়েল ইনি ব্যবস্থার শিক্ষক, যাকে সকলে মান্য করত, তিনি উঠে দাঁড়িয়ে ঐ প্রেরিতদের কিছু সময়ের জন্য সভা থেকে বাইরে নিয়ে যেতে বললেন। 35 পরে তিনি তাদের বললেন, “হে ইস্রায়েলীরা, এই লোকদের নিয়ে তোমরা যা করতে যাচ্ছ সে বিষয়ে সাবধান। 36 কারণ এর কিছু আগে থুদা নামে একজন লোক নিজেকে মহান বলে দাবী করেছিল। প্রায় চারশো লোক তার অনুসারী হয়েছিল; আর সে নিহত হলে তার অনুগামীরা সব যে যার পালিয়ে গেল, তার কোন চিহ্নই রইল না। 37 থুদার পরে আদমসুমারীর সময় গালীলীয় যিহূদার উদয় হয়, সেও বেশ কিছু লোককে তার দলে টানে; পরে সেও নিহত হয়, আর তার অনুগামীরাও ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। 38 তাই বর্তমানে এই অবস্থা দেখে আমি তোমাদের বলছি: এই লোকেদের থেকে দূরে থাক, তাদের ছেড়ে দাও, কারণ তাদের এই পরিকল্পনা অথবা এই কাজ যদি মানুষের থেকে হয় তবে তা ব্যর্থ হবে। 39 কিন্তু যদি ঈশ্বরের কাছ থেকে হয়ে থাকে, তাহলে তোমরা তা বন্ধ করতে পারবে না। হয়তো দেখবে যে তোমরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছ।”

তখন তারা এই পরামর্শ গ্রহণ করল। 40 তারা প্রেরিতদের ভেতরে ডেকে এনে চাবুক মারল, যীশুর নামে একটি কথাও বলতে নিষেধ করে তাদের ছেড়ে দিল। 41 প্রেরিতরা মহাসভার সভাস্থল থেকে বেরিয়ে চলে গেলেন, আর যীশুর নামের জন্য তাঁরা যে নির্যাতন ও অপমান সহ্য করার যোগ্য বলে বিবেচিত হযেছেন, এই কথা ভেবে আনন্দ করতে লাগলেন। 42 এবং দমে না গিয়ে প্রতিদিন মন্দিরের মধ্যে ও বিভিন্ন বাড়িতে যীশুর বিষয়ে শিক্ষা ও সুসমাচারের প্রচার করে দেখালেন যে যীশুই হলেন খ্রীষ্ট।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International