Old/New Testament
7 আমাদের দেওয়াল বানানোর কাজ শেষ হল। তারপর আমরা দরজায় পাল্লা বসালাম ও কারা সেই সব দরজায় পাহারা দেবে তার জন্য লোক ঠিক করলাম। আমরা গায়কদের এবং লেবীয়দেরও নিযুক্ত করলাম। 2 এরপর আমি আমার ভাই হনানি ও হনানিয় নামে আরেক ব্যক্তিকে যথাক্রমে জেরুশালেম শহরের দায়িত্ব ও দুর্গের সেনাপতির দায়িত্ব দিলাম। আমি আমার ভাই হনানিকে বেছে নিয়েছিলাম কারণ অন্যান্যদের থেকে সে খুবই সৎ ও তার ঈশ্বরে বেশী ভয় ছিল। 3 আমি তখন তাদের নির্দেশ দিলাম, “প্রতিদিন সূর্যোদয়ের কয়েক ঘন্টা পরে জেরুশালেমের ফটকগুলি খুলবে। আর সূর্যাস্তের পূর্বেই তোমরা ফটক বন্ধ করে তালা লাগাবে। এছাড়াও, রক্ষী হিসেবে যাদের নিয়োগ করবে তারা যেন এ শহরেরই বাসিন্দা হয়। এই সমস্ত রক্ষীদের কয়েক জনকে শহরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পাহারা দিতে পাঠাবে আর বাদবাকিরা যেন তাদের বাড়ির কাছাকাছি অঞ্চলেই পাহারা দেয়।”
ফিরে আসা বন্দীদের তালিকা
4 জেরুশালেম শহরটি খুবই বড়। শহরে অনেক জায়গা থাকলেও, তুলনায় বাসিন্দার সংখ্যা কম। বাড়ি-ঘরও তখন সমস্ত বানানো হয়নি। 5 এমতাবস্থায ঈশ্বর আমার হৃদয়ে সমস্ত বাসিন্দাদের একত্রিত করার বাসনা প্রবেশ করালেন। আমি তখন সমস্ত গন্যমাণ্য ব্যক্তি, আধিকারিকবর্গ ও সাধারণ লোকদের একসঙ্গে ডেকে পাঠালাম। বসবাসকারী সমস্ত ব্যক্তিদের একটি তালিকা বানানোই আমার মূল উদ্দেশ্য ছিল। ইতিমধ্যে বন্দীদশা থেকে যারা প্রথম এ শহরে ফিরে এসেছিল তার একটি তালিকা আমি পেয়েছিলাম। তাতে লেখা ছিল:
6 এই ইহুদীরা বন্দীদশা থেকে জেরুশালেম এবং যিহূদায় ফিরে এসেছিল। রাজা নবূখদ্নিৎসর এদের বন্দী করে বাবিলে নিয়ে গিয়েছিলেন। এরা হল: যেশূয়, নহিমিয়, অসরিয়, রয়মিয়া, নহমানি, 7 মর্দখয়, বিল্শন, মিস্পরৎ, বিগ্বয়, নহূম ও বানা। তারা সরুব্বাবিলের সঙ্গে ফিরে এসেছিল। ইস্রায়েলের যে সমস্ত লোক ফিরে এসেছিল তাদের নাম ও সংখ্যা নিম্নে দেওয়া হল:
8 পরোশের উত্তরপুরুষ | 2172 |
9 শফটিয়ের উত্তরপুরুষ | 372 |
10 আরহের উত্তরপুরুষ | 652 |
11 যেশূয় ও যোয়াবের পরিবারগোষ্ঠীর পহৎ-মোয়াবের উত্তরপুরুষ | 2818 |
12 এলমের উত্তরপুরুষ | 1254 |
13 সত্তূর উত্তরপুরুষ | 845 |
14 সক্কয়ের উত্তরপুরুষ | 760 |
15 বিন্নূয়ির উত্তরপুরুষ | 648 |
16 বেবয়ের উত্তরপুরুষ | 628 |
17 আস্গদের উত্তরপুরুষ | 2322 |
18 অদোনীকামের উত্তরপুরুষ | 667 |
19 বিগ্বয়ের উত্তরপুরুষ | 2067 |
20 আদীনের উত্তরপুরুষ | 655 |
21 যিহিষ্কিয়ের বংশজাত আটেরের উত্তরপুরুষ | 98 |
22 হশুমের উত্তরপুরুষ | 328 |
23 বেৎসয়ের উত্তরপুরুষ | 324 |
24 হারীফের উত্তরপুরুষ | 112 |
25 গিবিয়োনের উত্তরপুরুষ | 95 |
26 বৈৎলেহম ও নটোফা শহরের লোক | 188 |
27 অনাথোত শহরের | 128 |
28 বৈৎ-অস্মাবৎ শহরের | 42 |
29 কিরিয়ৎ-যিয়ারীম, কফীরা ও বেরোত শহরের | 743 |
30 রামা ও গেবা শহরের | 621 |
31 মিক্মস শহরের | 122 |
32 বৈথেল ও অয় শহরের | 123 |
33 নবো শহরের | 52 |
34 এলম শহরের | 1254 |
35 হারীম শহরের | 320 |
36 যিরীহো শহরের | 345 |
37 লোদ, হাদীদ ও ওনো শহরের | 721 |
38 সনায়া শহরের | 3930 |
39 যাজকগণ হল:
যেশূয়ের বংশজাত যিদয়িয়র উত্তরপুরুষ | 973 |
40 ইম্মেরের উত্তরপুরুষ | 1052 |
41 পশ্হূরের উত্তরপুরুষ | 1247 |
42 হারীমের উত্তরপুরুষ | 1017 |
43 এরা হল লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর লোক:
হোদবিয়র বংশজাত যেশূয় ও কদ্মীয়েলের উত্তরপুরুষ | 74 |
44 এরা হল গায়ক বৃন্দ:
আসফের উত্তরপুরুষ | 148 |
45 এরা হল দ্বার-রক্ষকগণ:
শল্লুম, আটের, টল্মোন, অক্কুব, হটীটা ও শোবয়ের উত্তরপুরুষ | 138 |
46 এরা হল মন্দিরের বিশেষ দাস:
সীহ, হসূফা ও টব্বায়োতের উত্তরপুরুষরা,
47 কেরোস, সীয় ও পাদোনের বংশধরবর্গ,
48 লবানা, হগাব ও শল্ময়ের বংশধরবর্গ,
49 হানন, গিদ্দেল ও গহরের বংশধরবর্গ,
50 রায়া, রৎসীন ও নকোদের বংশধরবর্গ,
51 গসম, ঊষ ও পাসেহের বংশধরবর্গ,
52 বেষয়, মিয়ূনীম ও নফুষয়ীমের বংশধরবর্গ,
53 বকবূক, হকূফা ও হর্হূরের বংশধরবর্গ,
54 বসলীত, মহীদা ও হর্শার বংশধরবর্গ,
55 বর্কোস, সীষরা ও তেমহের বংশধরবর্গ,
56 নৎসীহ ও হটীফার বংশধরবর্গ।
57 শলোমনের উত্তরপুরুষ দাসদের মধ্যে:
সোটয়, সোফেরৎ ও পরীদার বংশধরবর্গ,
58 যালা, দর্কোন ও গিদ্দেলের বংশধরবর্গ,
59 শফটিয়ের, হটীল ও পোখেরৎ-হৎসবায়ীম ও আমোন;
60 মন্দিরের দাস ও শলোমনের দাসদের উত্তরপুরুষ | 392 |
61 কয়েকজন লোক তেল্মেলহ, তেল্হর্শা, করূব, অদ্দন ও ইম্মের শহর থেকে জেরুশালেমে এসেছিল। তাদের পরিবারগুলি ইস্রায়েল থেকে উদ্ভূত কিনা তা তারা প্রমাণ করতে পারেনি।
62 দলায়, টোবিয় ও নকোদের উত্তরপুরুষ | 642 |
63 এরা ছিল যাজক পরিবারের উত্তরপুরুষ:
হবায়, হক্কোস ও বর্সিল্লয়। গিলিয়দের বর্সিল্লয় পরিবারের কন্যাকে যদি একজন পুরুষ বিয়ে করত ওই পুরুষকে বর্সিল্লয়দের উত্তরপুরুষ হিসাবে গণ্য করা হতো।
64 যেহেতু তারা তাদের বংশতালিকা বা তাদের পূর্বপুরুষরা যাজক ছিলেন কিনা তা প্রমাণ করতে পারল না, সেহেতু যাজকদের তালিকায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হল না। 65 রাজ্যপাল ওই সমস্ত ব্যক্তিদের, পবিত্র খাবার খেতে বারণ করলেন যতক্ষণ পর্যন্ত না প্রধান যাজক ঊরীম ও তুম্মীম ব্যবহার করে ঈশ্বরের কাছে জেনে নেন কি করতে হবে।
66-67 7337 জন দাসদাসীকে বাদ দিলে, যারা ফিরে এসেছিল তাদের মধ্যে সব মিলিয়ে ছিল 42,360 জন। এছাড়াও, এদের সঙ্গে ছিল 245 জন গায়ক-গায়িকা, 68-69 তাদের 736 টি ঘোড়া, 245 টি খচ্চর, 435 টি উট ও 6720 টি গাধা ছিল।
70 বেশ কিছু পরিবার প্রধান কাজ চালিয়ে যাবার জন্য অর্থ দান করেন। রাজ্যপাল স্বয়ং কোষাগারে 19 পাউণ্ড স্বর্ণমুদ্রা দিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি 50টি পাত্র ও যাজকদের পোশাকের জন্য 530 পোশাক দান করেন। 71 বিভিন্ন পরিবারের প্রধানরা কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য 375 পাউণ্ড স্বর্ণমুদ্রা এবং 1 1/3 টন পরিমাণ রূপো দান করেছিলেন। 72 সব মিলিয়ে অন্যান্য ব্যক্তিরা 375 পাউণ্ড স্বর্ণমুদ্রা, 1 1/3 টন রূপা এবং যাজকদের জন্য 67 টি বস্ত্রখণ্ড দিয়েছিলেন।
73 যাজকগণ, লেবীয়রা, দ্বাররক্ষীরা, গায়করা ও মন্দিরের সেবাদাসরা ও অন্যান্য সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা যে যার নিজের শহরে বাস করতে লাগল। ওই বছরের সপ্তম মাসের মধ্যেই দেখা গেল ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দারা তাদের নিজেদের বাসভূমিতে বসবাস শুরু করেছে।
বিধি পাঠ করলেন ইষ্রা
8 শেষ পর্যন্ত বছরের সপ্তম মাসে ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দা এক জায়গায় জড়ো হল। এরা সকলে একই উদ্দেশ্য নিয়ে একত্রে এসেছিল যেন জলদ্বারের সামনে খোলা চত্বরে তারা ছিল একটি মানুষ। এরা সকলে মিলে শিক্ষক ইষ্রাকে মোশির বিধিপুস্তকটি আনতে অনুরোধ করল। উল্লেখ্য প্রভু ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের জন্য যে বিধিনির্দেশগুলি দেন তা এই গ্রন্থে লিপিবদ্ধ ছিল। 2 সকলের অনুরোধে ইষ্রা জনসমক্ষে বিধিপুস্তকটি বার করলেন। এটি ছিল সপ্তম মাসের প্রথম দিন; ঐ জনসমাগমে ছিল পুরুষ, মহিলা এবং ঈশ্বরের বিধি শোনা ও বোঝার মত বয়স হয়েছে এমন ব্যক্তিরা। 3 ইষ্রা তখন জলদ্বারের সামনের খোলা চত্বরের দিকে মুখ করে জোর গলায় ভোর থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত বিধিপুস্তকটি পাঠ করে শোনালেন। উপস্থিত সকলেই পূর্ণ মনোযোগ সহকারে তা শুনল।
4 ইষ্রা একটি উঁচু কাঠের মঞ্চের ওপর দাঁড়িয়ে এগুলি পাঠ করছিলেন। পাটাতনটি এই উপলক্ষেই বিশেষভাবে বানানো হয়েছিল। ইষ্রার ডানদিকে দাঁড়িয়ে ছিলেন মত্তিথিয়, শেমা, অনায়, ঊরিয়, হিল্কিয় ও মাসেয় এবং তাঁর বাঁদিকে ছিলেন পদায়, মীশায়েল, মল্কিয়, হশুম, হশবদ্দানা, সখরিয় ও মশুল্লম।
5 যেহেতু ইষ্রা উঁচু পাটাতনের ওপর দাঁড়িয়ে ছিলেন সকলেই তাঁকে দেখতে পাচ্ছিল। তিনি বিধিপুস্তকটি খোলার সঙ্গে সঙ্গে সমবেত সকলে উঠে দাঁড়াল। 6 প্রথমে ইষ্রা প্রভু, মহান ঈশ্বরের প্রশংসা করলেন। তখন উপস্থিত সবাই হাত তুলে বলল, “আমেন, আমেন।” তারপর মাথা নীচু করে হাঁটু মুড়ে বসে প্রভুর প্রশংসা করল।
7-8 ঐসব লেবীয়রা ছিলেন যেশূয়, বানি, শেরেবিয়, যামীন, অক্কুব, শব্বথয়, হোদিয়, মাসেয়, কলীট, অসরীয়, যোষাবদ, হানন এবং পলায়। তাঁরা বিধিপুস্তকটি থেকে পাঠ করলেন এবং সহজ ভাষায় সেটি লোকদের বুঝিয়ে দিলেন যাতে যা পড়া হল তারা তার অর্থ বুঝতে পারে।
9 এরপর শাসক নহিমিয়, যাজক ও শিক্ষক ইষ্রা এবং যে সব লেবীয়রা শিক্ষাদান করছিলেন তাঁরা সকলে বক্তব্য রাখলেন। তাঁরা বললেন, “আজকের দিনটি তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের পক্ষে একটি বিশেষ দিন।[a] আজ যেন কেউ মন খারাপ না করে বা চোখের জল না ফেলে।” তাঁদের একথা বলার কারণ হল যে: যখন তাঁরা ঈশ্বরের বিধিপুস্তকটি পড়ে শোনাচ্ছিলেন তখন অনেকেই কাঁদছিল।
10 নহিমিয় বললেন, “যাও তোমরা সকলে মশলাদার ভারী খাদ্য ও সুমিষ্ট পানীয়গুলি উপভোগ করো। আজকের দিনটি প্রভুর কাছে একটি বিশেষ দিন বলে যারা রান্না করেনি তাদেরও খাবার দিও। মন খারাপ করো না কারণ প্রভুর আনন্দ তোমাদের মনকে শক্তিশালী করবে।”
11 লেবীয়বর্গরা লোকদের শান্ত হতে সাহায্য করল। তারা বলল, “চুপ কর এবং শান্ত হও। আজ একটি বিশেষ দিন। মন খারাপ করো না।”
12 তখন উপস্থিত সবাই মিলে বিশেষ ভোজসভায় যোগ দিয়ে খাবার ও পানীয় ভাগ করে খেল। প্রত্যেকেই খুব খুশী ছিল এবং সকলে মিলে এই বিশেষ দিনটি উদ্যাপন করল। শেষ পর্যন্ত শিক্ষকরা তাদের সকলকে প্রভুর যে সমস্ত বিধিগুলি বোঝানোর চেষ্টা করছিল তা বুঝতে পারল।
13 তারপর ঐ একই মাসের দ্বিতীয় দিনে প্রত্যেকটি পরিবার প্রধান ইষ্রা, যাজকবর্গ ও লেবীয়দের সঙ্গে দেখা করতে গেল। সকলেই বিধিগুলি সম্পর্কে পড়াশোনা করার জন্য ইষ্রাকে ঘিরে ধরল।
14-15 বিধিগুলি পড়াশোনা করার পর তারা, মোশির মাধ্যমে প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের, বছরের সপ্তম মাসে কুটির থেকে যে একটি উৎসব পালন করবার আজ্ঞা দিয়েছিলেন, তা জানতে পারল। জেরুশালেমে ফেরবার পথে, তারা বিভিন্ন শহরের মধ্যে দিয়ে যেতে যেতে, লোকদের বলবে: “পর্বত থেকে জলপাই, গুলমেঁদি ও খর্জুর এবং ছায়া শাখাগুলি কাট। বিধিটিতে যেমন বলা আছে ঐ শাখাগুলি ব্যবহার করে পর্ব পালন করবার জন্য অস্থায়ী কুটির তৈরী কর। বিধিতে যেমন বলা আছে তেমনভাবে কর।”
16 একথা শোনার পর লোকরা গিয়ে এইসব গাছের শাখা সংগ্রহ করে নিজেরা নিজেদের জন্য অস্থায়ী কুটির বানালো। তারা তাদের বাড়ির ছাদে, উঠোনে, মন্দির প্রাঙ্গনে, জলদ্বারের কাছে ও ইফ্রয়িম-দ্বারের কাছে উন্মুক্ত স্থানে কুটিরগুলি বানালো। 17 বন্দীদশা থেকে ইস্রায়েলে ফিরে আসা সমস্ত ব্যক্তিরাই এই কুটিরগুলি বানিয়ে তাতে বাস করল। নূনের পুত্র যিহোশূয়ের সময় থেকে সেই দিন পর্যন্ত ইস্রায়েলীয়রা এরকম ভাবে ও এত আনন্দ করে কুটির পর্ব পালন করে নি!
18 পর্বের প্রত্যেকদিন, প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্য্যন্ত রোজ ইষ্রা এদের কাছে বিধিপুস্তক পাঠ করে শোনালেন। বিধি অনুসারে ইস্রায়েলের বাসিন্দারা সাতদিন ধরে পর্ব পালন করার পর, অষ্টম দিনের দিন একটি বিশেষ সভার জন্য মিলিত হল।
ইস্রায়েলীয়দের পাপ স্বীকার
9 ঐ মাসেরই 24 দিনের মাথায় ইস্রায়েলীয়রা উপবাসের জন্য জড়ো হল। সে সময় সকলে দুঃখ প্রকাশের জন্য চটের পোশাক পরা ছাড়াও মাথায় ছাই লাগিয়েছিল। 2 ইস্রায়েলের আদি বাসিন্দারা বিদেশীদের থেকে নিজেদের আলাদা রেখেছিল। তারা সকলে মন্দিরে দাঁড়িয়ে তাদের ও তাদের পূর্বপুরুষদের পাপ স্বীকার করল। 3 তারা সেখানে তিন ঘন্টা দাঁড়িয়ে প্রভু, তাদের ঈশ্বরের বিধিপুস্তক পাঠ করল। তারপর আরো তিন ঘন্টা প্রভু তাদের ঈশ্বরকে প্রার্থনা করবার জন্য এবং পাপ স্বীকার করবার জন্য মাথা নীচু করে রইল।
4 তারপর এইসব লেবীয়রা সিঁড়ির ওপর দাঁড়িয়ে রইল: যেশূয়, বানি, কদ্মীয়েল, শবনিয়, বুন্নি, শেরেবিয়, বানি, কনানী। তারা উচ্চস্বরে তাদের প্রভু, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে লাগল। 5 এরপর যেশূয়, বানি, কদ্মীয়েল, বুন্নি, হশব্নির, শেরেবিয়, হোদিয়, শবনিয়, পথাহিয় প্রমুখ লেবীয়রা বলল, “উঠে দাঁড়াও এবং তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা কর! ঈশ্বর সর্বদা ছিলেন এবং তিনি চির দিন থাকবেনও।
“মানবজাতি তোমার মহান নামের প্রশংসা করুক!
তোমার নাম সব কিছুর ঊর্দ্ধে উঠুক এবং বন্দিত হোক্!
6 হে প্রভু,
একমাত্র তুমিই ঈশ্বর!
তুমিই সেই জন, যে আকাশ তৈরী করেছে!
তুমিই মহান স্বর্গ আর মর্ত্যে যা কিছু আছে সে সব,
পৃথিবী আর অভ্যন্তরস্থ সব কিছু
আর সমুদ্র মধ্যস্থিত সব কিছু সৃষ্টি করেছ।
সবেতে তুমিই দিয়েছো জীবনের ছোঁয়া
এবং সমস্ত স্বর্গীয় দেবদূতরা নত হয়ে তোমার উপাসনা করে!
7 হে প্রভু, তুমিই আমাদের ঈশ্বর।
তুমিই সেই জন যে অব্রামকে মনোনীত করে
বাবিলের ঊর থেকে নেতৃত্ব দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলে
এবং তার নাম বদলে অব্রাহাম রেখেছিলে।
8 তুমিই তার আনুগত্য এবং সততা লক্ষ্য করেছ।
তুমিই সেই জন যে তার সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলে
এবং তাকে ও তার উত্তরপুরুষদের
কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, যিবূষীয় এবং গির্গাশীয়দের জমিগুলি দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে।
তুমি তোমার প্রতিশ্রুতি রেখেছো
কারণ তুমি ভাল।
9 তুমি মিশরে আমাদের পূর্বপুরুষদের দুর্গতি দেখেছিলে
ও লোহিত সাগর থেকে তাদের এন্দন শুনেছিলে।
10 তুমি ফরৌণে তার আধিকারিকদের
ও তার লোকদের কাছে নানা চিহ্ন ও অদ্ভুত কার্য দেখিয়েছিলে।
তুমি জানতে যে, মিশরীয়রা নিজেদের
আমাদের পূর্বপুরুষদের থেকে শ্রেষ্ঠতর ভাবত।
কিন্তু তুমি প্রমাণ করলে, তুমি কত মহান!
আজ পর্যন্ত তারা তা স্মরণ করে।
11 তুমি তাদের চোখের সামনে লোহিত সাগরকে দ্বিখণ্ডিত করলে
আর শুকনো জমির ওপর দিয়ে হেঁটে গেলে
কিন্তু তুমি তাড়া করে আসা শত্রুদের সমুদ্র ফেলে দিলে।
তারা পাথরের মতো সমুদ্রে ডুবে গেল।
12 একটি উঁচু মেঘ দিয়ে দিনের বেলা তুমি তাদের পথ দেখালে।
রাতের বেলা, একটি আলোকস্তম্ভ দিয়ে তুমি তাদের পথ দেখালে।
তুমি তাদের দেখালে কোথায় যেতে হবে।
13 এরপর সীনয় পর্বতে স্বর্গের চূড়া থেকে
তুমি স্বয়ং কথা বলে
তাদের দিলে প্রকৃত শিক্ষা, যা ভালো;
তুমি তাদের বিধিসমূহ ও আজ্ঞা দিলে যেগুলি ভালো।
14 তুমি তোমার দাস, মোশির মাধ্যমে তোমার পবিত্র বিশ্রামের দিনের কথা তাদের জানালে।
তুমি তাদের আজ্ঞা, বিধিসমূহ এবং শিক্ষামালা দিলে।
15 ওরা সকলে ক্ষুধার্ত ছিল,
তাই তুমি স্বর্গ থেকে সবাইকে খাবার দিলে।
ওরা সকলে তৃষ্ণার্ত ছিল,
তাই তুমি পাথর থেকে সবাইকে জল দিলে।
তারপর তুমি ওদের যেতে বললে
ও প্রতিশ্রুত ভূমি দখল করতে বললে।
তোমার ক্ষমতা দিয়ে তুমি সেই ভূখণ্ড
অন্যদের কাছ থেকে নিয়েছিলে।
16 কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষরা গর্বোদ্ধত ও জেদী হল
এবং তোমার আজ্ঞা লঙ্ঘন করল।
17 তারা শুনতে অস্বীকার করল।
তুমি যে আশ্চর্য জিনিষগুলি তাদের জন্য করেছিলে তা তারা ভুলে গেল।
তাদের জেদের কারণে
তারা আবার ক্রীতদাস হয়ে মিশরে ফিরে যাবার সিদ্ধান্ত নিল।
“কিন্তু তুমি দয়ালু ঈশ্বর!
ক্ষমা, করুণা, ধৈর্য্য
ও ভালোবাসায় পরিপূর্ণ তোমার হৃদয়।
তাই তুমি তাদের পরিত্যাগ করনি।
18 এমনকি যখন তারা সোনার বাছুরের মূর্ত্তি বানিয়ে বলেছে, ‘এই মূর্ত্তিগুলোই আমাদের মিশর থেকে বাইরে এনেছে,’
তখনও তুমি তাদের বাতিল কর নি।
19 কিন্তু তোমার মহান করুণার জন্য
তুমি ওদের মরুভূমিতে পরিত্যাগ করনি।
তুমি দিনের বেলা উঁচু মেঘটিকে সরিয়ে নাওনি,
রাতেও আগুনের স্তম্ভটি সরিয়ে নাওনি।
তুমি তোমার পবিত্র আলো দিয়ে
তাদের পথ আলোকিত করা
এবং তাদের পথ দেখিয়ে চলা অব্যাহত রেখেছ।
20 তুমি তাদের বিচক্ষণ করে তোলার জন্য তোমারই ভাল আত্মা দিয়েছ।
খাদ্য হিসেবে তুমি ওদের মান্না দিয়েছ
এবং জল দিয়েছ তাদের তৃষ্ণা মেটাতে।
21 তুমি 40 বছর ধরে এদের প্রতিপালন করেছো।
তুমি মরুভূমিতে যা কিছু প্রয়োজন ছিল তা দিয়েছো।
ওদের পোশাকগুলি ছিঁড়ে যায়নি।
ওদের পা ফুলে যায়নি।
22 হে প্রভু, তুমি ওদের রাজত্ব, জাতি
এবং বহু দূরের জায়গাগুলি যেখানে অল্প কিছু লোক বাস করত, তা দিয়েছ।
তুমি ওদের সীহোনের ভূখণ্ড, হিষ্বোণের রাজা,
ওগের ভূখণ্ড এবং বাশনের রাজা দিয়েছিলে।
23 তুমি আকাশের নক্ষত্রের মতো
ওদের উত্তরপুরুষদের সংখ্যায় বাড়িয়েছো।
তুমি তাদের সেই ভুখণ্ডে বাস করতে নিয়ে গিয়েছ
যা তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিশ্রুত ছিল।
24 তারা এই ভূখণ্ডে প্রবেশ করল
এবং কনানীয়দের পরাজিত করে সেটি অধিকার করল।
তুমি তাদের দিয়ে ঐসব লোকদের পরাজিত করিয়েছিলে।
ঐসব জাতি, তাদের রাজা এবং ঐসব লোকের প্রতি
তারা যা করতে চেয়েছিল,
তুমিই তাদের দিয়ে তাই করিয়েছিলে।
25 তারা শক্তিশালী নগরগুলি
এবং উর্বর জমি দখল করল।
তারা ভালো ভালো জিনিষে পরিপূর্ণ বাড়ীগুলি অধিকার করল।
ইতিমধ্যেই যে সব কূপগুলি খনন হয়েছিল সেগুলি, দ্রাক্ষাক্ষেত,
জলপাই গাছ এবং অনেক ফলের গাছসমূহ তারা পেয়েছিল।
তারা খেলো এবং তৃপ্ত হল।
তুমি তাদের যে ভাল জিনিসগুলি দিয়েছিলে সেগুলি তারা উপভোগ করেছিল।
26 তারা তোমার বিরুদ্ধে গেল
এবং তোমার শিক্ষামালা ছুঁড়ে ফেলে দিল।
তারা তোমার ভাববাদীদেরও হত্যা করল,
যারা তাদের সতর্ক করে
তোমার কাছে ফেরাতে চেয়েছিল।
কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষরা তোমার বিরুদ্ধে বীভৎস সব কাজ করলো।
27 তাই তুমি তাদের শত্রুদের হাতে ওদের পরাজিত হতে দিলে।
শত্রুরা তাদের নানান সংকটের মধ্যে ফেললো।
তাই বিপদের সময়ে তারা তোমার সাহায্যের জন্য কেঁদে পড়ল।
স্বর্গে বসে তুমি তাদের আর্ত চিৎকার শুনলে।
তুমি করুণাময়,
তাই লোক পাঠালে তাদের পরিত্রাণের জন্য।
তারা এসে শত্রুদের হাত থেকে ওদের উদ্ধার করলো।
28 কিন্তু যে মূহুর্তে আমাদের পূর্বপুরুষরা তাদের শত্রুদের হাত থেকে মুক্তি পেল,
তারা পাপ কার্য শুরু করলো।
তাই তুমি তাদের শত্রুদের পরাজিত করতে এবং তাদের ওপর নিষ্ঠুরভাবে শাসন করতে দিলে।
তারা তোমার সাহায্যের জন্য কান্নাকাটি করল।
স্বর্গে তুমি তাদের কান্না শুনলে
এবং তোমার করুণাবশতঃ আবার তাদের উদ্ধার করলে।
এ ঘটনা বহুবার ঘটেছে।
29 তুমি তাদের সতর্ক করেছিলে,
যাতে তারা তোমার শিক্ষামালার শরণ নেয়,
কিন্তু ওরা উদ্ধত ছিল
এবং তোমার আজ্ঞাসমূহ মানতে অস্বীকার করেছিল।
তারা তোমার বিধিসমূহ, যে সেগুলো পালন করে
তাকে সত্য জীবন দেয়, তা ভেঙেছিল।
কিন্তু তারা তাদের জেদবশতঃ তোমার বিধিসমূহ ভেঙেছিল।
তারা তোমার দিকে পেছন ফিরে ছিল
এবং শুনতে অস্বীকার করেছিল।
30 “তুমি আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি
বহু বছর ধরে খুব ধৈর্য্যশীল ছিলে,
তোমার আত্মায় পূর্ণ তোমার ভাববাদীদের মাধ্যমে
তুমি তাদের সতর্ক করেছিলে।
কিন্তু তারা শুনতে অস্বীকার করেছিল,
তাই তুমি তাদের বিজাতীয়দের হাতে তুলে দিয়েছিলে।
31 “কত দরদী এবং করুণাময় ঈশ্বর তুমি।
তবুও তুমি তাদের ধ্বংস করোনি,
ছেড়েও যাওনি।
তুমি দয়াময়, করুণাধর ঈশ্বর!
32 হে আমাদের ঈশ্বর, তুমি মহান!
ভয়ঙ্কর এবং ক্ষমতাশালী ঈশ্বর!
তুমি দয়ালু ও বিশ্বস্ত।
তুমি সবসময় তোমার চুক্তি বজায় রাখো!
আমাদের অনেক সমস্যা ছিল।
সে সবই তোমার কাছে জরুরী!
আমাদের লোকদের নানান সঙ্কটে পড়তে হয়েছিল।
আমাদের যাজকগণ ও ভাববাদীগণ সংকটে ছিল।
অশূরের রাজাদের রাজত্বের সময় থেকে
আজ পর্যন্ত বহু ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে গেছে।
33 কিন্তু হে আমাদের প্রভু,
আমাদের প্রতি যা কিছু ঘটেছে তাতে তুমি ছিলে ন্যায়সঙ্গত। হ্যাঁ, আমরাই ভুল করেছি!
34 আমাদের রাজারা, নেতারা, যাজকরা ও পূর্বপুরুষরা
তোমার আদেশগুলি মানেনি।
তারা তোমার সাবধানবাণী অবজ্ঞা করে নির্দেশ অমান্য করেছে।
35 আমাদের পূর্বপুরুষরা, তুমি তাদের যে বিশাল উর্বর জমি দিয়েছিলে তা উপভোগ করেছিল।
কিন্তু তারা তোমার সেবা করেনি
বা তাদের পাপ আচরণ থেকে সরে আসেনি।
36 এখন আমরা এই ভূখণ্ডে ক্রীতদাস।
যে ভূখণ্ড তুমি আমাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলে,
যাতে তারা সেখানকার ফলমূল
ও যা কিছু সুন্দর জিনিস ভোগ করতে পারে,
সেখানেই আমরা ক্রীতদাস।
37 এই জমিতে বহু ফসল ফলত,
কিন্তু সমস্ত ফলন যায় রাজার কাছে। এই জমির মহতী ফসল যায় রাজাদের কাছে যাদের তুমি আমাদের পাপ আচরণের জন্য আমাদের ওপর শাসন করতে নিযুক্ত করেছ।
ঐসব রাজারা আমাদের শাসন করে, আমাদের গবাদি পশু তারা নিয়ন্ত্রণ করে
এবং তারা তাদের যা ইচ্ছে তাই করে।
সত্যিই, আমাদের পক্ষে তা একটা দুর্ভোগ।
38 “এসব কারণেই, আমাদের নেতারা, লেবীয়রা এবং যাজকগণ তোমার সঙ্গে চুক্তিটি করেছিল যেটা বদলানো যায় না। আমরা যা প্রতিজ্ঞা করছি লিখে তাতে স্বাক্ষর করছে আমাদের নেতারা, লেবীয়রা ও যাজকরা আর সেই চুক্তিপত্র শীলমোহর করে রাখছি।”
খোঁড়া লোককে পিতর আরোগ্য করলেন
3 একদিন পিতর ও যোহন মন্দিরে গেলেন, তখন বেলা প্রায় তিনটে। এই সময়েই মন্দিরে রোজ প্রার্থনা হত। 2 যখন তাঁরা মন্দির প্রাঙ্গনে যাচ্ছিলেন, সেখানে একটা লোককে দেখা গেল। সে জন্ম থেকেই খোঁড়া, চলতে পারত না। তার বন্ধুরা প্রতিদিন তাকে মন্দির চত্বরে বয়ে নিয়ে আসত আর মন্দিরের “সুন্দর” নামে যে ফটক আছে সেখানে নিয়ে গিয়ে তাকে বসিয়ে রাখত। যারা মন্দিরে ঢুকত, সে তাদের কাছে কিছু অর্থ ভিক্ষা চাইত। 3 সেদিন এই লোকটা পিতর ও যোহনকে মন্দিরে ঢুকতে দেখে তাদের কাছ থেকে ভিক্ষা চাইতে লাগল।
4 পিতর ও যোহন সেই খোঁড়া লোকটির দিকে একদৃষ্টে চেয়ে বললেন, “আমাদের দিকে তাকাও!” 5 সেই লোকটা তখন কিছু অর্থ পাবার আশায় তাঁদের দিকে তাকালো। 6 কিন্তু পিতর তাকে বললেন, “আমার কাছে সোনা বা রূপো নেই, আমার কাছে যা আছে আমি তোমাকে তাই দিচ্ছি। নাসরতীয় যীশুর নামে তুমি উঠে দাঁড়াও ও হেঁটে বেড়াও।”
7 এই বলে পিতর তার ডান হাত ধরে তাকে তুললেন, সঙ্গে সঙ্গে সে তার পায়ে ও গোড়ালিতে বল পেল, 8 আর লাফিয়ে উঠে দাঁড়াল ও চলতে লাগল। তারপর সে তাঁদের সঙ্গে মন্দিরের মধ্যে ঢুকে সেখানে হেঁটে লাফিয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল। 9-10 লোকরা দেখল সেই লোকটি হাঁটছে ও ঈশ্বরের প্রশংসা করছে। তারা চিনতে পারল মন্দিরের “সুন্দর” নামে ফটকের সামনে বসে ভিক্ষা করত যে লোক, সেই লোকই হেঁটে বেড়াচ্ছে ও ঈশ্বরের প্রশংসা করছে। ঐ লোকটির জীবনে যা ঘটেছে তা দেখে তারা আশ্চর্য হয়ে গেল, তারা বুঝে উঠতে পারল না এমন বিস্ময়কর ব্যাপার কি করে ঘটল।
পিতরের সাক্ষ্য
11 লোকটি পিতর ও যোহনকে ধরে দাঁড়িয়ে ছিল; তাই সকলেই এই লোকটির সুস্থতা দেখে আশ্চর্য হয়ে শলোমনের বারান্দায় পিতর ও যোহনের কাছে দৌড়ে এল।
12 এই দেখে পিতর জনতার উদ্দেশ্যে বললেন, “হে আমার ইহুদী ভাইরা, আপনারা এতে আশ্চর্য হচ্ছেন কেন? আপনারা আমাদের দিকে এমনভাবে দেখছেন, যেন আমরা নিজেদের ক্ষমতার গুণে একে চলবার শক্তি দিয়েছি। আপনারা কি মনে করেন যে আমরা খুব ধার্মিক, তাই এই কাজ করতে পেরেছি? 13 না! ঈশ্বরই একাজ করেছেন। তিনি অব্রাহামের, ইস্হাকের ও যাকোবের ঈশ্বর, আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, তিনিই তাঁর দাস যীশুকে মহিমান্বিত করেছেন। এই যীশুকেই আপনারা মৃত্যুদণ্ডের জন্য শত্রুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। সেদিন পীলাত যখন তাঁকে ছেড়ে দেবেন বলে মনস্থ করেছিলেন, তখন আপনারা তাঁকে অগ্রাহ্য করেছিলেন। আপনারা বলেছিলেন যে যীশুকে আপনারা চান না। 14 আপনারা সেই পবিত্র ও নির্দোষ ব্যক্তিকে অগ্রাহ্য করে তাঁর বদলে একজন খুনীকে আপনাদের জন্য ছেড়ে দিতে বলেছিলেন। 15 যিনি জীবনদাতা, আপনারা তাঁকে হত্যা করেছিলেন; কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে মৃতদের মধ্যে থেকে পুনরুত্থিত করেছেন। আমরা এসবের সাক্ষী।
16 “এই যীশুর পরাক্রমেই এই খোঁড়াটি সুস্থতা লাভ করেছে। এসব ঘটেছে কারণ আমরা যীশুর ক্ষমতায় বিশ্বাস করেছি। আপনারা এই লোকটিকে দেখেছেন ও তাকে চেনেন। যীশুর উপর নির্ভর করায় সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেছে; নিজ চক্ষে আপনারা তা দেখেছেন।
17 “এখন আমার ভাইরা, আমি জানি যে অজ্ঞতা বশতঃই আপনারা এমন কাজ করেছিলেন, আর আপনাদের নেতারাও তাই করেছিলেন। 18 কিন্তু ভাববাদীদের মাধ্যমে ঈশ্বর তাঁর খ্রীষ্টের দুঃখভোগের কথা যা জানিয়েছেন, সে সবই তিনি এইভাবে পূর্ণ করেছেন। 19 তাই আপনারা মন-ফিরান এবং ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসুন, যেন আপনাদের পাপ মুছে দেওয়া হয়। 20 এইভাবে যেন প্রভুর কাছ থেকে আত্মিক বিশ্রামের সময় আসে; আর তিনি যেন আপনাদের জন্য আগেই যে খ্রীষ্টকে মনোনীত করেছেন সেই যীশুকে পাঠান।
21 “যতক্ষণ পর্যন্ত না সব কিছু পুনঃস্থাপন হয় যা বহুপূর্বে ঈশ্বর তাঁর পবিত্র ভাববাদীদের মুখ দিয়ে বলেছেন, ততক্ষণ খ্রীষ্টকে অবশ্যই স্বর্গে থাকতে হবে। 22 কারণ মোশি বলেছেন, ‘প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের জন্য তোমাদের ভাইদের মধ্য থেকে আমার মত এক ভাববাদীকে উৎপন্ন করবেন। তিনি তোমাদের যা যা বলবেন, তোমরা তাঁর সকল কথা শুনবে। 23 যে কেউ তাঁর কথা না শুনবে, সে লোকদের কাছ থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হবে।’(A)
24 “হ্যাঁ, সমস্ত ভাববাদী, এমনকি শমূয়েল ও তাঁর পরে যে সকল ভাববাদী এসেছেন তাঁরা সকলে এই দিনের কথা বলে গেছেন। 25 আপনারা তো ভাববাদীদের বংশধর, আপনারা ঈশ্বরের সেই চুক্তির উত্তরাধিকারী, যে চুক্তি ঈশ্বর আপনাদের পিতৃপুরুষের সাথে করেছিলেন। তিনি তো অব্রাহামকে বলেছিলেন, ‘তোমার বংশ দ্বারা পৃথিবীর সকল জাতিই আশীর্বাদ লাভ করবে।’(B) 26 ঈশ্বর তাঁর দাসকে পুনরুত্থিত করে প্রথমে তাঁকে আপনাদের কাছেই পাঠাবেন, যেন আপনাদের প্রত্যেককে মন্দ থেকে ফিরিয়ে এনে আশীর্বাদ করতে পারেন।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International